ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।
উদ্দেশ্য
ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।
প্রকাশিত বইসমূহ
আল কুরআনের আলোকে মুরতাদ হত্যার অবৈধতা: মূল প্রতিপাদ্য এবং বইটি সম্পর্কে
এক নজরে মূল প্রতিপাদ্য
১. মুসলিমদের মধ্য থেকে কেউ ইসলাম ত্যাগ করলে তাকে ‘মুরতাদ’ বলা হয়। দাবি করা হয় যে, কেউ মুরতাদ হলে তাকে শাস্তিস্বরূপ হত্যা করতে হবে। একইভাবে ধর্মীয় বিষয়ে নিন্দা বা ধর্মানুভূতিতে আঘাতের জন্যও মৃত্যুদণ্ডের দাবি করা হয়। আল কুরআনের আলোকে পর্যালোচনা করলে এরূপ হত্যা সম্পূর্ণ অবৈধ হিসেবে প্রমাণিত হয়।
২. ‘মুরতাদ হত্যার অবৈধতা’ বিষয়টি দ্বীন বা জীবনব্যবস্থা বিষয়ে আল কুরআনের বিভিন্ন মৌলিক নীতিমালার সাথে সম্পর্কিত। এর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হলো: (ক) ‘রসূলের দায়িত্ব শুধুমাত্র প্রচার করা, তিনি সত্য ধর্ম গ্রহণের জন্য বলপ্রয়োগ করতে পারবেন না’, (খ) যার ইচ্ছা সেই ঈমান আনতে পারে অথবা কুফর বা প্রত্যাখ্যানও করতে পারে, (গ) যে ইসলাম গ্রহণ করবে সে ইসলাম চর্চা করবে আর যে অন্য ধর্ম অবলম্বন করবে সে তার ধর্ম চর্চা করবে, প্রত্যেকের ধর্মীয় স্বাধীনতা রয়েছে ইত্যাদি।
৩. আল কুরআনে শিরককে সবচেয়ে বড় অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। শিরক হলো আল্লাহর সত্তা, গুণাবলী, ক্ষমতা ও অধিকারে কাউকে কোনোরূপ অংশীদার সাব্যস্ত করা এবং আল্লাহ প্রদত্ত বিধানের মতো অন্য কোনো বিধানকে নিরংকুশ ও শর্তহীনভাবে গ্রহণ করা। কিন্তু কুরআনে কাউকে বলপ্রয়োগ করে শিরক থেকে বিরত রাখার সুযোগ দেয়া হয়নি বা শিরক করার কারণে কাউকে পৃথিবীতে কোন ধরনের দৈহিক অথবা মানসিক শাস্তি দেয়ার অধিকারও দেয়া হয়নি। শিরক সবচেয়ে বড় অপরাধ হলেও এটি এক ব্যক্তি কর্তৃক অন্য ব্যক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার বিষয় নয়, বরং এর মাধ্যমে ব্যক্তি নিজে বিশ্বাসগত ও জীবনাচারগত ক্ষতির সম্মুখীন হবে। আল্লাহর ঘোষণা অনুসারে শিরক সবচেয়ে বড় অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও এ বিষয়ে মনস্তাত্বিক স্বাধীনতা রয়েছে।
৪. ধর্মীয় বিষয় যেমন আল্লাহ, তাঁর কিতাব ও তাঁর রসূল সম্পর্কে মিথ্যারোপ করা, কটুক্তি এবং অপপ্রচারের জবাবে রসূল ও মু’মিনদেরকে ধৈর্য ধারণ এবং আল্লাহর পবিত্রতা জ্ঞাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সাথে বলা হয়েছে যে, যারা এরূপ করে তাদের মোকাবেলায় প্রকৃত সত্য উপস্থাপন করা এবং তাদেরকে উপেক্ষা করা উচিত।
৫. ধর্ম বা যেকোনো বিষয়ে তার সত্যাসত্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়া মানুষকে পর্যালোচনার মাধ্যমে সত্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। কিন্তু সঠিক কর্মনীতি অবলম্বন না করে নিছক নেতিবাচক সন্দেহ পোষণ করা উচিত নয়। কুরআনের দাবি হলো কুরআনের যাবতীয় তথ্য বিশ্বপ্রভুর পক্ষ থেকে আগত সত্য। তাই এর প্রতি সন্দেহ পোষণ করা উচিত নয়। সন্দেহ নিরসনের ক্ষেত্রে যৌক্তিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। আর সমালোচনামুখী দৃষ্টিভঙ্গিতে যাচাই করাই হলো সেই যৌক্তিক পদ্ধতি। যারা অযথা সন্দেহে নিপতিত থাকবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু সন্দেহ প্রকাশ বা সমালোচনার জন্য কাউকে শাস্তি প্রদানের অবকাশ নেই।
৬. শিরক এবং অনুরূপভাবে যা কিছু শুধুমাত্র ধর্মীয় অপরাধ সেজন্য কুরআনে কোনো দণ্ডবিধি দেয়া হয়নি। অন্য কথায় ধর্মীয় স্বাধীনতার সম্পূরক নীতি হিসেবে কুরআনে প্রকৃত সত্য ধর্মের বিপরীত বিশ্বাস ও আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ধর্মীয় অপরাধ সংঘটিত হলে সেজন্য কোনো মানুষ অপর মানুষকে শাস্তি দেয়ার অবকাশ রাখা হয়নি। অন্যদিকে সামাজিক অপরাধ তথা যেসব অপরাধের মাধ্যমে সামাজিক ক্ষতি (এক ব্যক্তি কর্তৃক অন্য ব্যক্তির ক্ষতি) সাধিত হয়, সেরূপ অপরাধের জন্য দণ্ডবিধি রয়েছে। যেমন: চুরি, ডাকাতি, ব্যভিচার, যৌন হয়রানি, নরহত্যা ইত্যাদি।
৭. একটি রাষ্ট্রে একাধিক ধর্মীয় সম্প্রদায় বসবাস করতে পারে। কুরআনে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং শুধুমাত্র সামাজিক অপরাধের ক্ষেত্রে দণ্ডবিধি প্রণয়নের নীতির সাথে সমন্বয় রেখে রাষ্ট্রকে ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থানে রাখা হয়েছে। মুসলিম উম্মাহ যদি রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব অর্জন করতে পারে, সেক্ষেত্রে তারা কুরআনে থাকা সামাজিক দণ্ডবিধি কার্যকর করবে, অন্যথায় তারা ধর্মীয় স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দাবি করবে। রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বে থাকা অবস্থায় অমুসলিমদের কর্তৃত্বাধীন রাষ্ট্রের সাথে শান্তিচুক্তির প্রয়াস নিতে হবে।
৮. মুরতাদ (ধর্মত্যাগী), ইলহাদ (ধর্মীয় বিষয়ে অবমাননা ও ধর্মানুভূতিতে আঘাত) এবং তাহরীফ (ধর্মীয় তথ্যের বিকৃতি) বিষয়ক আয়াতসমূহের সমন্বিত অধ্যয়ন থেকে দেখা যায় যে, এসব বিষয়কে যৌক্তিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে, কিন্তু এসবের জন্য কাউকে অন্য কারো কর্তৃক দণ্ডযোগ্য সাব্যস্ত করা যাবে না।
৯. কুরআনে মৃত্যুদণ্ডের অপরাধকে মৌলিকভাবে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথা: (১) কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা, (২) জান, মাল, ইজ্জতের উপর হামলার মাধ্যমে ফাসাদ বা বিপর্যয় সৃষ্টি, যেজন্য মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বা অবকাশ রয়েছে। এই দ্বিতীয় বিভাগের মধ্যে আল্লাহ প্রদত্ত ও তাঁর রসূলের প্রবর্তিত আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মাধ্যমে ফাসাদ সৃষ্টি এবং নারীদেরকে যৌন হয়রানি করা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। কুরআনে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য হিসেবে সাব্যস্ত অপরাধের বাইরে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিলে তা অবৈধ হত্যা হিসেবে সাব্যস্ত হবে। যেমন: কাউকে চুরির শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ড দিলে তা অবৈধ হত্যা হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
১০. আল কুরআনে থাকা বিধান ও অধিকারকে বলা যেতে পারে মুসলিম উম্মাহর জন্য পরম সাংবিধানিক বিধান ও অধিকার। কুরআন প্রদত্ত কোনো বিধান ও অধিকারকে লঙ্ঘন না করে প্রয়োজনীয় নির্বাহী বিধান প্রণীত ও বাস্তবায়িত হতে পারে। কিন্তু কোনো নির্বাহী বিধানের মাধ্যমে কখনো সাংবিধানিক বিধান রহিত হতে পারে না। তাই কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো হাদীসকে সত্য বলা যায় না এবং একইভাবে হাদীসে থাকা এরূপ কোনো কথাকে রসূলের নির্দেশ মনে করে কুরআন প্রদত্ত বিধান ও অধিকারকে লঙ্ঘন করা যেতে পারে না।
বইটি সম্পর্কে
মুরতাদ বা ধর্মত্যাগীকে এবং ধর্মীয় বিষয়ে সমলোচনা ও ধর্মানুভূতিতে আঘাতের জন্য মৃত্যুদণ্ডের দাবি ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও উগ্রতার বহির্প্রকাশ হলেও এর পেছনে ধর্মের প্রকৃত নির্দেশনা সম্পর্কে বিভ্রান্তিও বহুলাংশে দায়ী। বিশ্বব্যাপী ধর্মের নামে জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে শুধু কঠোর উদ্যোগই যথেষ্ট নয়, বরং এ বিষয়ে যে ধর্মীয় বিভ্রান্তি রয়েছে তার অপনোদনও জরুরি। আর এই বিভ্রান্তি অপনোদনের জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মানবাধিকার বিষয়ে আল কুরআনের শিক্ষার বস্তুনিষ্ঠ প্রচারই সর্বাধিক কার্যকর মহৌষধ।
এ বইয়ে আল কুরআনের আলোকে মুরতাদ হত্যার অবৈধতা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। যেহেতু ধর্মীয় বিশ্বাস-অবিশ্বাস, গ্রহণ এবং ধর্মত্যাগের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা স্রষ্টা প্রদত্ত, তাই মুরতাদ বা ধর্মত্যাগের জন্য পার্থিব শাস্তির দাবি এবং মুরতাদ হত্যা উভয়টি সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। এ অবৈধতার বিষয়টি কুরআনে ধর্ম ও সমাজ জীবন সম্পর্কে যে ন্যায়সঙ্গত ও কল্যাণকর রূপরেখা উপস্থাপন করা হয়েছে তার সামগ্রিক কাঠামোর সাথে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ একটি বিষয়। তাই এ বইয়ে বিষয়টির বস্তুনিষ্ঠ অনুধাবনের জন্য এর সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রসঙ্গের আলোচনা করা হয়েছে।
মুরতাদ হত্যার নীতি কুরআনে উল্লেখিত ধর্মীয় স্বাধীনতার নীতিমালাকে লঙ্ঘন করে। যেহেতু কুরআনের দণ্ডবিধিতে মুরতাদকে কোনোরূপ শাস্তি প্রদানের অবকাশ নেই, তাই মুরতাদ হত্যা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ হত্যা।
ইসলামের সুমহান শিক্ষার প্রচার এবং মুসলিম উম্মাহর উদ্ভব ঘটানোর পেছনে থাকা উদ্দেশ্য অর্জন তথা মানবজাতির কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য ‘আল কুরআনের আলোকে মুরতাদ হত্যার অবৈধতার’ বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচারিত ও পর্যালোচিত হওয়া প্রয়োজন। যারা জঙ্গীবাদ ও ধর্মীয় উগ্রতার বৈশ্বিক হুমকি মোকাবেলা করে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ার প্রত্যাশা করেন তাদের সবার জন্যই এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ববহ।
সূচীপত্র
ভূমিকা
এক নজরে মূল প্রতিপাদ্য
প্রাথমিক কথা
রসূলের দায়িত্ব ও ধর্মীয় স্বাধীনতা
শিরকের অপরাধ ও ধর্মীয় স্বাধীনতা
ধর্মীয় বিষয়ে মিথ্যারোপ, কটুক্তি ও অপপ্রচারের মোকাবেলায় রসূল ও মু’মিনদের করণীয়
ধর্মবিষয়ে সন্দেহ, সমালোচনামুখী দৃষ্টিভঙ্গি, জিজ্ঞাসা ও জবাব
ধর্মীয় অপরাধ বনাম সামাজিক অপরাধ
রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব কাঠামো, রাজনৈতিক চুক্তি ও ধর্মীয় স্বাধীনতা
মুরতাদ, ইলহাদ ও তাহরীফ প্রসঙ্গ
ন্যায়সঙ্গত মৃত্যুদণ্ড ও অন্যায় হত্যা
ধর্মত্যাগের জন্য হত্যা অবৈধ
মুরতাদ হত্যা প্রসঙ্গে উপস্থাপিত আয়াতের প্রকৃত তাৎপর্য
সাংবিধানিক আইন-বিধান বনাম নির্বাহী আইন-বিধান
মুরতাদ হত্যা প্রসঙ্গে উপস্থাপিত হাদীসের পর্যালোচনা
In logic there are two ways of reasoning: inductive and deductive. Inductive reasoning uses a large number of specific observations to reach a general principle. Deductive reasoning, on the other hand, uses a premise (a general principle assumed as true) to decide what must be true in a specific case. An example of inductive reasoning […]
কুরআনের ৫২তম সুরা, আয়াত সংখ্যা ৪৯ - শব্দে শব্দে পাঠ করছেন জনাব মোস্তফা ওয়াহিদুজ্জামান। যারা শব্দে শব্দে কুরআন আরবী ও বাংলায় অর্থসহ বুঝতে চান তাদের জন্য এই ভিডিওগুলো সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।
Is Hajj just for Mulsims? What is the Purpose of Hajj according to the Quran? Who said that the Quran's Hajj is religious tourism?
With an open mind, let's let the Quran describe its Hajj for 'mankind' -- not just for 'muslims'.
This study will look at the sects named in the Qur'ān to demonstrate that what the Muslim holy book describes as “Islam,” a verbal activity which - along with the higher grade of “faith” (īmān) - is a general action engaged in by existing religious communities to which the Qur’ān was orated, rather than being […]
The video compares The Study Quran to two English translations of the Quran: I compare "The (new) Study Quran" by Harper Collins (Edited by Dr. Sayyed Nasr), The Meaning of the Quran" by Muhammad Asad, and "The Holy Quran: Text and Commentary" by Yusuf Ali. Reviewed by Mark Sequeira Another Review by Caner Dagli Approaching […]
মোস্তফা ওয়াহিদুজ্জামান বাংলাদেশের অন্যতম কুরআন প্রচারক ও কুরআনের ধারাবাহিক পাঠক। এখানে সুরা নং ৫৬: সুরা ওয়াক্বিয়াহ - ১ থেকে শেষ আয়াত পাঠের ভিডিও শেয়ার করা হলো
This lecture by American Muslim Scholar Joseph E. B. Lumbard examines the manner in which the legacy of colonialism continues to influence the analysis of the Quran in the Euro-American academy. Epistemic colonialism continues to prevail in the privileging of Eurocentric systems of knowledge production to the detriment and even exclusion of modes of analysis […]