দি  ইন্সটিটিউট ফর কুরআনিক রিসার্চ এন্ড এ্যাপ্লিকেশন (ইক্বরা)

লক্ষ্য

ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।

উদ্দেশ্য

ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।

প্রকাশিত বইসমূহ

কুরানের তথাকথিত রূপক আয়াত ও প্রকৃত বাস্তবতা

হে আমার প্রতি-পালক! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররোচনা হইতে। (২৩ঃ৯৭)

আল-কোরআন থেকে মানুষকে দূরে রেখে এর প্রকৃত অর্থকে বিকৃত বা গোপন করার জন্য কিংবা নিজস্ব মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য সূরা আল ইমরান এর ৭ নম্বর আয়াতের অর্থকে কে পরিবর্তন করা হয়েছে। যেখানে বলা হচ্ছে আল কুরআনের কিছু আয়াত স্পষ্ট আর কিছু আয়াত অস্পষ্ট বা রুপক। কিন্তু কোন আয়াত গুলো স্পষ্ট এবং কোন আয়াত গুলো অস্পষ্ট বা রুপক তা বলা হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই এই স্পষ্ট এবং অস্পষ্ট আয়াতগুলো বাছাই করার দায়িত্ব নিয়ে আমাদের ধর্মীয় প্রতিনিধিগন তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করছেন।

উক্ত আয়াতের প্রচলিত অনুবাদ লক্ষ করুন:

তিনিই তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছেন, তার মধ্যে আছে মুহকাম আয়াতসমূহ। সেগুলো কিতাবের মূল, আর অন্যগুলো মুতাশাবিহ্। ফলে যাদের অন্তরে রয়েছে সত্যবিমুখ প্রবণতা, তারা ফিতনার উদ্দেশ্যে এবং ভুল ব্যাখ্যার অনুসন্ধানে মুতাশাবিহ্ আয়াতগুলোর পেছনে লেগে থাকে। অথচ আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে পরিপক্ক, তারা বলে, আমরা এগুলোর প্রতি ঈমান আনলাম, সবগুলো আমাদের রবের পক্ষ থেকে। আর বিবেক সম্পন্নরাই উপদেশ গ্রহণ করে। (৩:৭) (বায়ান্ন ফাউন্ডেশন)

এই প্রচলিত অনুবাদ অনুযায়ী আল কুরআনের কিছু আয়াত অস্পষ্ট। যা কোরআনের স্ববিরোধী বক্তব্য। কেননা আল কুরানের অন্যত্র বলা হয়েছে

“قُرآنًا عَرَبِيًّا غَيْرَ ذِي عِوَجٍ لَّعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ” (39:28)

“Quran is in plain Arabic without any ambiguity for their becoming righteous/perfect”(39:28) ( correct translation)

কোরান কোনো অস্পষ্টতা ছাড়াই সরল আরবি ভাষা, তাদের ধার্মিক/নিখুঁত হওয়ার জন্য" (৩৯:২৮) ( সঠিক অনুবাদ)

وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْـكِتٰبَ تِبْيَانًا لِّـكُلِّ شَىْءٍ

and Our revealed book towards you clearly explain everything. (16:89) ( correct translation)

এবং তোমার প্রতি আমাদের প্রকাশিত গ্রন্থ স্পষ্টভাবে সবকিছু ব্যাখ্যা/বর্ণনা করে। (১৬:৮৯)

“فَإِنَّمَا يَسَّرْنَاهُ بِلِسَانِكَ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ”

In fact it is merely facilitated by Us with your tongue to justify those who remember it.(44:58) ( correct translation)

প্রকৃতপক্ষে কেবলমাত্র আমাদের দ্বারা ইহাকে (কুরান) তোমার ভাষায় সহজতর করা হয়েছে তাদের সত্যতা যাচাই করতে যারা ইহাকে স্মরণে রাখে।

আসলে কুরানে কোন গোপন, অস্পষ্ট বা রুপকতা নেই, এর সবগুলো আয়াতই বিশদ, সুস্পষ্ট ও সহজ ভাষায় বর্ণিত। আল্লাহ বলেন

کِتٰبٌ فُصِّلَتۡ اٰیٰتُہٗ قُرۡاٰنًا عَرَبِیًّا لِّقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ۙ

এমন এক কিতাব, যার আয়াতগুলো জ্ঞানী কওমের জন্য বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, কুরআনরূপে আরবী ভাষায়।(৪১:৩) ( বায়ান্ন ফাউন্ডেশন)

৪১:৩ নং আয়াতে কোরআনের কিছু আয়াত নয় বরং সবগুলো আয়াতের কথা বলা হয়েছে। যাইহোক, ৭:৩ নং আয়াতের প্রতিটি শব্দের বিশ্লেষণের মাধ্যমে সঠিক অনুবাদ করলে আপনি দেখতে পাবেন কিভাবে কুরানের এই আয়াতকে বিকৃত করে আমাদেরকে ধোকা দেয়া হয়েছে।

"هُوَ الَّذِي أَنزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلاَّ اللّهُ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا وَمَا يَذَّكَّرُ إِلاَّ أُوْلُواْ الْأَلْبَابِ"(3:7)

এখানে هُوَ শব্দটি উত্তম পূরুষের এক বচনে কর্তৃবাচক সর্বনাম (first person singular subjective pronoun) যা পুর্ববর্তী আয়াতে উল্লেখিত اللّٰهُ শব্দের সর্বনাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। যার অর্থ তিনি/সে (He)।

সকল অনুবাদকগন আরবি ব্যাকরণ এর নিয়মকে উপেক্ষা করে الَّذِىْۤ শব্দটিকে শুধুমাত্র اسم موصول বা কর্তৃবাচক সর্বনাম (subjective pronoun) হিসেবে এর অর্থ করেন যিনি/যাহার/যে(who/which/that) ইত্যাদি। هُوَ الَّذِىْۤ এর অর্থ করা হয়েছে "তিনি হচ্ছেন যিনি" এটি শ্রুতিমধুর না হওয়াতে অনেকে الَّذِىْۤ শব্দটির অর্থ বাদ দিয়ে অনুবাদ করেন "তিনিই"।

আরবি ব্যাকরন অনুসারে “الَّذِي” শব্দটি শুধুমাত্র তখনি কর্তৃবাচক সর্বনাম হিসাবে ব্যবহৃত হবে যখন এটি “ال” যুক্ত নির্দিষ্ট বাচক পদ অথবা কোন ব্যাক্তি নাম অনুসরন করে। অর্থাৎ الَّذِىْۤ শব্দটির পূর্বে যদি আলিফ লাম যুক্ত কোন শব্দ কিংবা কোন নাম বাচক শব্দ থাকে যাকে الَّذِىْۤ শব্দটি উপস্থাপন করে। যেমন ৫৯:২৩ ہُوَ اللّٰہُ الَّذِیۡ অর্থ তিনি আল্লাহ যিনি। যদি এই শর্ত পূরণ না করে তাহলে الَّذِىْۤ শব্দটি ক্রিয়া বা বিশেষন হিসেবে لذ অথবা “لذۃ” মূল শব্দের একটি রুপ হিসেবে এর অর্থ হবে: উৎফুল্ল হওয়া (to delight), উপভোগ করা( to enjoy), স্বাদ/মজা (taste), আনন্দ (pleasure), উপকার/সুবিধা (have the benifit of) ইত্যাদি।

আল্লাহ তাআলা কুরআনে الَّذِي শব্দটি ক্রিয়াবাচক বা বিশেষন হিসেবে বিভিন্ন আয়াতে ব্যাবহার করেছেন। যেভাবে আমরা বিভিন্ন দাপ্তরিক চিঠিপত্রে লিখি যেমন "আমি এটি ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত/উৎফুল্ল বোধ করছি ...." বা "আমি আপনাকে এই বিষয়ে জানাতে উপভোগ করি...।" এবং মানুষের সুবিধার জন্য ইত্যাদি

অতএব ৭:৩ নং আয়াতে الَّذِي শব্দের অর্থ হবে "এটা আনন্দের যে (it is delighted that), এটা উপভোগ্য যে ( it is enjoyed that) ইত্যাদি।

আরবী ক্রিয়া রুপের ৪র্থ রুপের শব্দ اَنْزَلَ হচ্ছে আদেশ সুচক ক্রিয়া(imperative verb) যা তুলনামুলক ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য (elative noun) হিসেবেও ব্যাবহৃত হয়। যার অর্থ প্রকাশের কারণ (cause to reveal) প্রকাশ করা (revelation), চালু করা (launch) ইত্যাদি।

পরবর্তী শব্দগুচ্ছ عَلَيْكَ যেখানে عَلَيْ অব্যয় (preposition) এর অর্থ উপর(on/over),প্রতি(to) , এবং ك শব্দটি মধ্যম পূরুষ একবচনের কর্মবাচক সর্বনাম (second person singular objective pronoun), যার অর্থ "তোমার" (your)। তুমি নয় (not you)। ك শব্দটি পরবর্তী الْكِتٰبَ শব্দটির সাথে সম্বন্ধযুক্ত। الْكِتٰبَ অর্থ বই, গ্রন্থ,লিখিত ইত্যাদি যা দ্বারা আল কুরানকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। উল্লেখিত আয়াত সহ কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে ك শব্দটির অর্থ বিজ্ঞ অনুবাদকগন তাদের কল্পিত অনুবাদের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে কখনো "তুমি/তোমাকে" আবার কখনো তোমরা নিয়েছেন। আলোচ্য আয়াতের বাংলা অনুবাদে ك শব্দটিকে ভুলভাবে অর্থ করা হয়েছে "তুমি" যা বাংলা অনুবাদ থেকে বুঝা না গেলেও ইংরেজি অনুবাদে (has sent down to you) তা বেশ স্পষ্ট।

সুতরাং عَلَيْكَ الْكِتٰبَ এর সঠিক অনুবাদ হল তোমার গ্রন্থে (on your book)

পরবর্তী শব্দগুচ্ছ مِنْهُ এর مِنْ অব্যয়টির (preposition) অর্থ হইতে (from/than), র/এর (of) ইত্যাদি। هُ সর্বনামটি আয়াতের শুরুতে উল্লেখিত সর্বনাম هُوَ এর কর্মবাচক (objective) রুপ। هُ এর অর্থ তাহার/ উহার (His/it)। এখানে هُ সর্বনামটি اللّٰهُ শব্দের সম্বন্ধসূচক সর্বনাম হিসেবে ব্যাবহৃত হয়েছে যার অর্থ তাহার/তার (আল্লাহর) (His)। কিন্তু এই আয়াতের অর্থকে পরিবর্তন করার জন্য অত্যন্ত সুচতুরভাবে هُ সর্বনামটিকে الْكِتٰبَ শব্দের সম্বন্ধসূচক সর্বনাম হিসেবে অর্থ করা হয়েছে উহার (it)।

পরবর্তী শব্দ اٰيٰتٌ যা اٰيتٌ এর বহুবচন যার অর্থ আয়াতসমুহ (verses), নিদর্শনসমুহ(signs), বিধানাবলী(regulations), নিয়মসমুহ(rules) ইত্যাদি। اٰيٰتٌ শব্দটির শেষে তানভীন থাকায় শব্দটি অনির্দিষ্ট বাচক বিশেষ্য এবং এটি পরবর্তী তানভীন যুক্ত শব্দ مُّحْكَمٰت এর সাথে সম্বন্ধযুক্ত যা مُّحْكَمٰت এর অনুবাদে "র/এর"(of) যুক্ত করবে।

পরবর্তী مُّحْكَمٰتٌ শব্দটি একটি অনির্দিষ্টবাচক বিশেষ্য যার অর্থ "একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মের" (of a precise rulings), " একটি স্পষ্ট রায় সম্বলিত" (containing a clear verdicts)। هُنَّ শব্দটি اٰيٰتٌ এর সর্বনাম অর্থ তারা/সেগুলো (they) । اُمُّ অর্থ প্রসূতি (mother), ভিত্তি (base/foundation), উৎস (source), মজ্জা (core), মূল (root) ইত্যাদি। সুতরাং اُمُّ الْكِتٰبِ অর্থ কিতাবের ভিত্তি (base/foundation of the book), কিতাবের উৎস (source of the book), কিতাবের মূল (root of the book) ইত্যাদি।

অতএব, ৭:৩ নং আয়াতের প্রথম বাক্যাংশের সঠিক অনুবাদ হল

“هُوَ الَّذِي أَنزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ”

“It is delighted that, He caused to reveal on your book of His verses of a precise rulings or verses of a clear verdict, they are the foundation of the Book”.

এটা আনন্দের বিষয় যে তিনি তোমার কিতাবে একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মের বা একটি স্পষ্ট রায় সম্বলিত তার আয়াত সমুহের প্রকাশ করেছেন। এগুলো হল কিতাবের মূল ভিত্তি।

পরবর্তী বাক্যাংশের সাথে সংযোগকারী অব্যয় “وَ” আসন্ন বাক্যাংশকে স্বাধীন রাখে এবং একই সাথে পূর্ববর্তী বাক্যাংশের সাথেও সামঞ্জস্য রাখে।

পরবর্তী শব্দ “أُخَرُ” হল “خَرَّ শব্দের একটি আদেশসুচক (imperative) ক্রিয়া এবং একটি ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য। যার অর্থ অবসান করা (terminate), বিলুপ্তি করা (collapse), ভাঙা (break), শেষ করা (ended), বিচ্ছিন্ন করা (cut off), বহিষ্কার করা (suspend), মুলতবি রাখা(defer),কমানো (retard), প্রতিহত করা (set back) ,পশ্চাতে ঠেলা (put back), প্রতিরোধ করা (block), অন্তরায় করা(handicap), নিষ্ক্রয় করা (disable), প্রস্থান করা (depart), দূর করা (remove), অপসারণ করা (dispossess), দূরে রাখা (keep away), স্তগিত করা (adjourn) ইত্যাদি। আরবি “خَرَّ” শব্দটি “سَقَطَ” এর প্রতিশব্দ যার অর্থ আঘাত (hit upon), পতন (decline), কলহ করা(fallout), স্থানচ্যুত হওয়া (lapse), বাতিল করা (abort)।

এই আয়াতে أُخَرُ শব্দটিকে বিকৃত করে এর অনুবাদ করা হয়েছে " অন্য (other)", পরবর্তী (next), যাতে করে বুঝানো যায় যে পরবর্তী আয়াতগুলো হল দ্ব্যর্থক, অনিশ্চিত, অস্পষ্ট, আসার ও রুপক।

'পরের' আয়াতের প্রশ্ন তখনই ওঠে যখন 'প্রথম' আয়াত সম্পর্কে কোথাও উল্লেখ করা থাকে বা যদি "آيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ" নামক আয়াতগুলি প্রথমে এক সারিতে আসে বা একটি ক্রমানুসারে পাওয়া যায়। অন্যথায় পরবর্তী' বা 'অন্য' শব্দ ব্যবহার করার কোন যুক্তিকতা নেই যদি না প্রথমে বা "آيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ" নামক আয়াতগুলি সমগ্র কুরআনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে এবং একটি ক্রমানুসারে না আসে।

অধিকন্তু, “مُتَشَابِهَاتٌ” শব্দটি এই আয়াতের গুরুত্বপুর্ণ শব্দ (key word), যা কুরআনবাদী সহ তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতদের সকল সম্প্রদায়ের দ্বারা বাজেভাবে অপব্যবহার ও বিকৃত করা হয়েছে। এর কারণ হল তারা সম্পূর্ণ কুরআনের মনগড়া অনুবাদ উদ্ভাবনে মানুষকে চুপ করে রাখার জন্য কুরআন থেকে কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা পেতে চেয়েছিল। আল্লাহর প্রকৃত বার্তাকে ধ্বংস করার জন্য তারা এই ৩:৭ নং আয়াতকে তাদের মন্দ ইচ্ছা পূরণের একটি সহজ লক্ষ্য হিসাবে বেছে নিয়েছে । এ জন্য এই ৩:৭ নং আয়াতের অনুবাদে তারা মনগড়াভাবে ঘোষণা করেছে যে কুরআনের কিছু আয়াত রূপক ফলে তাদের অর্থ স্থির নয়। এই দুষ্ট পণ্ডিতরা "مُتَشَابِهَاتٌ" এর অনুবাদ করেছেন দ্ব্যর্থক, অনিশ্চিত, অস্পষ্ট, আসার ও রুপক আয়াত এবং কিছু অবিশ্বাসী উদ্ভাবন করেছে যে "مُتَشَابِهَاتٌ" অর্থ সম্ভাব্যতা এবং বিভ্রান্তিযুক্ত আয়াত।

এমনকি এই অন্ধ পণ্ডিতেরা ৭:৩ নং আয়াতের আরবী মূদ্রিত অংশের দিকে তাকায় না যেখানে "آيَاتٌ" শব্দটি না "مُتَشَابِهَاتٌ" এর সাথে এসেছে এবং না এটি পরবর্তী বাক্যাংশে “مُّحْكَمَاتٌ” শব্দের সাথে উল্লেখিত আয়াত (آيَاتٌ) শব্দটিকে উদ্দেশ্য করেছে। তথাপি এই আয়াতের ভুল অনুবাদে “آيَاتٌ” শব্দটিকে “مُتَشَابِهَاتٌ” শব্দের সাথে মিথ্যা ভাবে যুক্ত করা হয়েছে এই বিষয়টি উপেক্ষা করে যে “مُتَشَابِهَاتٌ” শব্দটি শুধুমাত্র “أُخَرُ” শব্দের সাথে এসেছে যা পূর্ববর্তী বাক্যাংশ উল্লেখিত “آيَاتٌ” শব্দটির সাথে প্রয়োগ যোগ্য নয়। এমনিভাবে এই আয়াতের ভুল অনুবাদে সুচতুরভাবে “مُتَشَابِهَاتٌ” কে آيَاتٌ مُتَشَابِهَاتٌ করা হয়েছে যাতে তারা কুরআন থেকে তাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস অনুসারে কুরআনের বক্তব্যকে অবাধে পরিবর্তন করার মিথ্যা কর্তৃত্ব পায়।

এর অর্থ হল একই কুরআনে আল্লাহ তাঁর পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন যেখানে তিনি বলেছন যে কুরআনকে সহজ, সরল এবং স্পষ্ট আরবী ভাষায় তৈরি করেছেন যাতে মানুষের কাছে তাঁর বাণী না বোঝার অজুহাত না থাকে। অন্যদিকে আল্লাহ বলেছেন যে কুরআনের আয়াতগুলো রূপক, অস্পষ্ট, দ্ব্যর্থক, অসাড় , বিভ্রান্তিতে পূর্ণ, সন্দেহজনক, সন্দেহপূর্ণ এবং নির্দিষ্ট অর্থহীন!

যাইহোক, আরবি শব্দ “مُتَشَابِهَاتٌ” হল “مْتشابه”-এর বহুবচন এই প্রসঙ্গ অনুযায়ী এর অর্থ হল অলীক বিশ্বাস/ভ্রম সংশ্লিষ্ট (corresponding to delusion), কল্পনাসমুহ ( imaginations), বিভ্রান্তিকর চিত্র (deceptive figures),

সাদৃশ্য (resemblance), অন্য কিছুর সাথে মিল, সমান্তরাল, সমান বা অভিন্ন কিছু গ্রহণ করা, 'বিশেষ রোগের উপসর্গের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ' (চিকিৎসা পরিভাষা) ইত্যাদি। প্রকৃতপক্ষে, এই "مُتَشَابِهَاتٌ" (মুতাশাবিহাত) শব্দটি পরবর্তী শব্দগুচ্ছ "فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ" এর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। فَأَمَّا الَّذِينَ শব্দগুচ্ছটির অর্থ যাহা কিছুই, যে কোন কিছুই (whatever)। এখানে فَ শব্দটি আসন্ন أَمَّا الَّذِينَ এর উপর জোর বা গুরুত্ব দিতে ব্যাবহৃত হয়েছে। فِي অর্থ মধ্য (in)। قُلُوبِهِمْ এর هِمْ কর্মবাচক সর্বনামটির (objective pronoun) অর্থ তাদের এবং قُلُوبِ শব্দটি قلب এর বহুবচন যার অর্থ অন্তরসমুহ। সুতরাং فِي قُلُوبِهِمْ অর্থ তাদের অন্তরে।

এই আয়াতের মনগড়া অনুবাদ তৈরি করার জন্য কথিত ইসলামি পন্ডিতগন هِمْ (তাদের) এর অনুবাদ করেননি, এটিকে অনাবশ্যক (redundant) হিসেবে নিয়েছেন! বস্তুত আল-কোরআনের কোন শব্দই অপ্রয়োজনীয় নয়। কোরআনের সঠিক অনুবাদে প্রতিটি মূল শব্দের সাথে সাথে শব্দগুলোর সাথে সংযোগকারী অব্যয়, পদান্বয়ী অব্যয়, সর্বনাম ইত্যাদি পার্টিকেল (particles) গুলোর অর্থও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পার্টিকেল গুলো শব্দের সাথে শব্দের সংযোগ ঘটিয়ে অর্থপূর্ণ বাক্য গঠন করে। এ পার্টিকেল গুলো সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে বাক্যের অর্থ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। যেমনটি আমরা দেখেছি অলোচ্য আয়াতে هِمْ এর অর্থ বাদ দিয়ে "فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ" এর অর্থ করা হয়েছ "অতঃপর যাদের অন্তরে রয়েছে"।

সুতরাং وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ এর সঠিক অর্থ

And keep away/remove whatever imaginations/delusions/confused thoughts/wrong resemblances are in their hearts”.

এবং তাদের অন্তরের যে কোন কল্পনা/অলিক বিশ্বাস /বিভ্রান্ত চিন্তা/ভুল সাদৃশ্য দূর করে দাও/সরিয়ে ফেল।

পরবর্তী শব্দ “زَيْغٌ” অর্থ স্খলন (aberration), বিচ্যুতি (deviation), অস্বাভাবিকতা (abnormality), ত্রুটি (flaw), বিকৃতি (deformity), কুটিলতা (crookedness), দুষ্টামি ( evil), ন্যাক্কারজনক (repulsiveness), ইত্যাদি। “زَيْغٌ”

পরবর্তী শব্দ “فَيَتَّبِعُونَ” বর্তমান কালের বহুবচনিক ক্রিয়া (plural present verb) যার অর্থ যারা অনুসরণ করে (those who follow), যারা খোঁজ করে (those who seek), যারা পিছনে দৌড়ায় (those run after), যারা অন্বেষণ করে (those who pursue), যারা তাড়া করে (those who chase) ইত্যাদি । শুরুতে "ف" অক্ষরটির অর্থ বস্তত, প্রকৃতপক্ষে, সত্যিই।

কুরআনের মনগড়া অনুবাদ উদ্ভাবনের জন্য “مَا” পার্টিকেল টির অপব্যবহার করা হয়েছে। مَا শব্দটি ব্যবহারের একটি সহজ ব্যাকরণগত নিয়ম হল যদি এটি একটি সমাপিকা ক্রিয়া (অতীত ক্রিয়া/past verb) বা বিশেষ্যেপদের (noun) আগে আসে তাহলে “مَا” নেতিবাচক (ما النافیہ) হিসেবে "না" অর্থে ব্যাবহৃত হবে। আর যদি "مَا" শব্দটি অসমাপিকা ক্রিয়াপদের (imperfect verb) আগে আসে তবে এটিকে একটি কর্তিবাচক সর্বনাম (subjective pronoun) হিসেবে "কি (what),যা (which), যে/যাহা (that)" অর্থে ব্যাবহৃত হবে।

অতএব مَا تَشَابَهَ এর “مَا” শব্দটি নেতিবাচক নয় বরং কর্তিবাচক সর্বনাম হিসাবে এর অর্থ হবে "যা/যাহা"। কারন “تَشَابَهَ” একটি বর্তমান কালের বহুবচন ক্রিয়া। যা ঐ সকল কুটিল লোকদের কাজকে বুঝায় যাদের অন্তরে কুরআনের সুস্পষ্ট আয়াত সম্পর্কে বিভ্রান্তি, সন্দেহ ও অনুমানের কারণে বিচ্যুতি, বিপথগামীতা, বা সীমালংঘন ঘটেছে। তাদের উন্মাদনা, বিভ্রান্তি, বিচ্যুতি এবং চিন্তা বা বিশ্বাসের পার্থক্যের কারণে তারা সাদৃশ্য কিছু উদ্ভাবন করে এবং তারা যা বিশ্বাস করে তার সমতুল্য বস্তু তৈরি করে তোলে। অতএব مَا تَشَابَهَ এর অর্থ যা তারা সাদৃশ্য করে/ যা তারা কল্পনা করে। مِنْهُ অর্থ উহা থেকে (from it)। ابْتِغَاءَ অর্থ অন্বেষণ করতে (to seek)। الْفِتْنَةِ অর্থ প্ররোচনা (instigation), অশান্তি/বিশৃঙ্খলা (agitation), অবাধ্যতা (sedition), বিপর্যয় (subversion), বিদ্রোহের প্ররোচনা (incitement to rebel) ইত্যাদি।

সুতরাং زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ এর সঠিক অর্থ

indeed those who follow crookedness of what is creating deception

বস্তুত যা বিভ্রান্তি তৈরি করে সেই কুটিলতা যারা অনুসরন করে ।

এবং “مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ” এর সঠিক অর্থ

they seek instigation, agitation, sedition, subversion and incitement to rebel from it”.

তারা উহা থেকে প্ররোচনা,বিশৃঙ্খলা, অবাধ্যতা, বিপর্যয় অথবা বিদ্রোহের প্ররোচনা অন্বেষণ করে।

পরবর্তী শব্দ “ابْتِغَاءَ” মানে 'উদ্দেশ্য সহ (with the aim of)', 'দৃঢ়ভাবে কিছু কামনা করার অবস্থা (state of desiring something strongly)', 'লক্ষ্য (goal)', 'উদ্দেশ্য (purpose)', 'আকাঙ্খা করা (aspiring)', 'লোভ করা (coveting)', 'অনুসন্ধান করা (seeking)' চাওয়া (wanting) , 'ইচ্ছা করা (wishing)' ইত্যাদি।

পরবর্তী শব্দ "تَأْوِيلِ" অর্থ 'কোন কিছু একত্র করা (putting things together)', 'কিছু প্রসারিত করা (stretching something over)', 'ব্যাখ্যা উদঘাটন (exposition)' এবং 'ব্যাখ্যা করা (exegeses)'।

অতএব, “وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِه” এর অর্থ "এবং এই লক্ষে উহার (“زَيْغٌ”) জন্য কিছু একত্র করা (and putting things together on purpose)", উহার (বিপর্যয়) বৃদ্ধির জন্য লক্ষ্য স্থির করা (and aiming at stretching it over), এবং উহার ব্যাখ্যা উদ্ভাবনের জন্য অনুসন্ধান করে (and seeking exposition of it)।

৩:৭ নং আয়াতের পরবর্তী অংশ “وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلاَّ اللّهُ” যেখানে “مَا" পার্টিকেলটি বর্তমানকালের (present verb) অসমাপিকা ক্রিয়া “يَعْلَمُ” এর পূর্বে এসেছে। অতএব ব্যাকরণের নিয়ম অনুসারে এই “مَا" পার্টিকেলটি না বোধক হবে না, এর অর্থ হবে কি (what)/ যাহা (which)/যে (that)।

কিন্তু আমাদের স্কলারগণ এই আয়াতের মনগড়া অর্থ করার জন্য স্বীকৃত ব্যাকরণের নিয়মের বাইরে গিয়ে “مَا" শব্দটির "না বোধক" অর্থ করেছেন।

সুতরাং “وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلاَّ اللّهُ” এর সঠিক অর্থ হলো "এবং একমাত্র আল্লাহ জানেন উহার (কুটিলতা বৃদ্ধির) জন্য তারা কি একত্র করেছে"। and only Allah knows what they put together of it.

এবং একমাত্র আল্লাহ জানেন তারা উহার কি ব্যাখ্যা করেছে।and only Allah knows what they expose of it.

উল্লেখিত আয়াত এর পরবর্তী অংশ “وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا” যেখানে “الرَّاسِخُونَ” তাদেরকে বুঝায় যারা তুষ্ট (content), দৃঢ় (firm), সুদৃঢ় (deep rooted), পরিপূর্ণ (sound), স্থিতিশীল (steady) ইত্যাদি। “فِي” অর্থ মধ্যে (in)। “الْعِلْمِ” অর্থ জ্ঞান (the knowledge)। “يَقُولُونَ” শব্দটি পরোক্ষ উক্তির বর্তমান কালবাচক ক্রিয়া যার অর্থ "তাদের দ্বারা বলা হয়েছিল (it is said by them)" প্রত্যক্ষ ভাষায় "তারা বলে (they say)"। “آمَنَّا بِهِ” অর্থ "আমরা বিশ্বাসের সহিত ইহাকে গ্রহণ করলাম (we accept it with believe in)। “كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا” অর্থ সবকিছুই আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে (everything from our Sustainer)।

তাহলে “وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا” এর সঠিক অর্থ:

And those who are content/firm in the Knowledge they say we accept it with believe in everything from our Sustainer.

এবং যারা জ্ঞানে তুষ্ট/দৃঢ় তারা বলে আমরা বিশ্বাসের সাথে একে গ্রহন করলাম, সবকিছুই আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে।

আয়াতের শেষ অংশ “وَمَا يَذَّكَّرُ إِلاَّ أُوْلُواْ الْأَلْبَابِ” যেখানে “مَا" পার্টিকেলটি বর্তমানকালের (present verb) অসমাপিকা ক্রিয়া يَذَّكَّرُ এর পূর্বে আসার কারনে এটি না বোধক হবে না এর অর্থ হবে "যারা (who)"। يَذَّكَّرُ অর্থ মনে রাখা (remember),মনে করিয়ে দেওয়া (remind), স্মরণ করা (recall)। “إِلاَّ” অর্থ শুধুমাত্র/কেবল (only/just), ব্যাতিত (except), কিন্ত (but)। “أُوْلُواْ” শব্দটি أُول থেকে উদ্ভুদ অর্থ তাদেরকে বুঝায় যার সর্ব প্রধান/সর্ব প্রথম/সবচেয়ে বেশি (foremost)। "الْأَلْبَابِ” শব্দটি “لُبّ” হতে উৎপন্ন যা আরবী “جَوْهَر” এর সমার্থক শব্দ অর্থ : কেন্দ্রবস্তু/ শাঁস (kernel), শাঁস/মজ্জা (pulp), মূল (core), সারাংশ/নির্যাস (essence), সর্বাপেক্ষা ভিতরে (innermost), বুদ্ধি (intellect), মনোযোগ দেওয়া (mind) ইত্যাদি।

সুতরাং “وَمَا يَذَّكَّرُ إِلاَّ أُوْلُواْ الْأَلْبَابِ” এর সঠিক অর্থ

And who remember it they are only the foremost intellect/minds.

এবং যারা এটি মনে রাখে তারাই কেবল সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান/মনোযোগী।

এখন, আমরা উপরোক্ত শাব্দিক বিশ্লেষণ হতে ৩ঃ৭ নং আয়াতের সঠিক অনুবাদ করতে পারি

"هُوَ الَّذِي أَنزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلاَّ اللّهُ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا وَمَا يَذَّكَّرُ إِلاَّ أُوْلُواْ الْأَلْبَابِ"(3:7)

"It is delighted that, He caused to reveal on your book of His verses of a clear verdict, they are the foundation of the Book. And keep away whatever delusions are in their hearts.indeed those who follow crookedness of what is creating deception they seek sedition from it, and seeking exposition of it, and only Allah knows what they expose of it. And those who are content in the knowledge they say we accept it with believe in, everything from our Sustainer. And who remember it they are only the foremost intellectual minds” (3:7 (word to word correct translation)

"এটা আনন্দের বিষয় যে তিনি তোমার কিতাবে একটি স্পষ্ট রায় সম্বলিত তার আয়াত সমুহের প্রকাশ করেছেন। এগুলো হল কিতাবের মূল ভিত্তি। আর তাদের অন্তরের যে কোন অলিক বিশ্বাস দূর করে দাও। বস্তুত যাহা বিভ্রান্তি তৈরি করে সেই কুটিলতা যারা অনুসরন করে তারা উহা থেকে বিশৃঙ্খলা /অবাধ্যতা অন্বেষণ করে,এবং উহার ব্যাখ্যা উদ্ভাবনের জন্য অনুসন্ধান করে, এবং একমাত্র আল্লাহ জানেন তারা উহার কি ব্যাখ্যা করেছে। এবং যারা জ্ঞানে তুষ্ট/পরিপূর্ণ তারা বলে আমরা বিশ্বাসের সাথে একে গ্রহন করলাম, সবকিছুই আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে। এবং যারা এটি মনে রাখে তারাই কেবল সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান। ( ৩:৭) (শব্দে শব্দে সঠিক অনুবাদ)

অতএব, আল্লাহ কখনই বলেননি যে তার আয়াত সমুহ রূপক, অস্পষ্ট, দ্ব্যর্থক, অসাড় , বিভ্রান্তিতে পূর্ণ, সন্দেহজনক, সন্দেহপূর্ণ এবং নির্দিষ্ট অর্থহীন!, যা আমাদের দুষ্ট আলেমদের সম্পূর্ণ বাজে কথা, যারা আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করছে। এছাড়া, মানুষের হেদায়েতের জন্য কুরআন নাযিল করার মানে কি? যদি একমাত্র আল্লাহই উহার অর্থ জানেন?

উপরে উল্লিখিত ৩:৭ নং আয়াতের শাব্দিক বিশ্লেষণ হতে এটা পরিষ্কার যে সমগ্র কুরানের অনুবাদ নির্ভুল নয়। অতএব, আমরা যদি বিশ্বাস করি যে আমরা মুসলিম এবং কুরআন আল্লাহর প্রকৃত প্রত্যাদেশ, তাহলে দুষ্ট আলেমদের মনগড়া অনুবাদ থেকে কুরআন শেখার পরিবর্তে আল্লাহর নিজের বাণী থেকে কুরআনকে বুঝতে হবে।


লেখক : আব্দুল্লাহিল কাউছার

(ডঃ কাশিফ খান এর লেখা অবলম্বনে)

ট্যাগ / কী-ওয়ার্ড:

অন্যান্য প্রবন্ধ

December 8, 2023
Quran & Inductive Reasoning

In logic there are two ways of reasoning: inductive and deductive. Inductive reasoning uses a large number of specific observations to reach a general principle. Deductive reasoning, on the other hand, uses a premise (a general principle assumed as true) to decide what must be true in a specific case. An example of inductive reasoning […]

November 24, 2023
সুরা আত তুর - শব্দে শব্দে কুরআন পাঠ

কুরআনের ৫২তম সুরা, আয়াত সংখ্যা ৪৯ - শব্দে শব্দে পাঠ করছেন জনাব মোস্তফা ওয়াহিদুজ্জামান। যারা শব্দে শব্দে কুরআন আরবী ও বাংলায় অর্থসহ বুঝতে চান তাদের জন্য এই ভিডিওগুলো সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।

November 18, 2023
Is Hajj just for Muslims? What is the Purpose of Hajj?

Is Hajj just for Mulsims? What is the Purpose of Hajj according to the Quran? Who said that the Quran's Hajj is religious tourism?
With an open mind, let's let the Quran describe its Hajj for 'mankind' -- not just for 'muslims'.

November 15, 2023
People of the Book: What the Religions Named in the Qur'an Can Tell Us About the Earliest Understanding of "Islam" - Book Review

This study will look at the sects named in the Qur'ān to demonstrate that what the Muslim holy book describes as “Islam,” a verbal activity which - along with the higher grade of “faith” (īmān) - is a general action engaged in by existing religious communities to which the Qur’ān was orated, rather than being […]

November 12, 2023
Quran Translation Compared: The Study Quran - Video Review

The video compares The Study Quran to two English translations of the Quran: I compare "The (new) Study Quran" by Harper Collins (Edited by Dr. Sayyed Nasr), The Meaning of the Quran" by Muhammad Asad, and "The Holy Quran: Text and Commentary" by Yusuf Ali. Reviewed by Mark Sequeira Another Review by Caner Dagli Approaching […]

November 11, 2023
সুরা আল ওয়াক্বিয়াহ - শব্দে শব্দে কুরআন পাঠ

মোস্তফা ওয়াহিদুজ্জামান বাংলাদেশের অন্যতম কুরআন প্রচারক ও কুরআনের ধারাবাহিক পাঠক। এখানে সুরা নং ৫৬: সুরা ওয়াক্বিয়াহ - ১ থেকে শেষ আয়াত পাঠের ভিডিও শেয়ার করা হলো

November 10, 2023
সুরা আল জুমুুআ - শব্দে শব্দে কুরআন পাঠ

মোস্তফা ওয়াহিদুজ্জামান সুরা জুমুআর ১ম থেকে শেষ আয়াত পর্যন্ত শব্দে শব্দে কুরআন পাঠ শেয়ার করেছেন এই ভিডিও অধিবেশনে

November 9, 2023
Decolonizing Quranic Studies by Joseph Lumbard

This lecture by American Muslim Scholar Joseph E. B. Lumbard examines the manner in which the legacy of colonialism continues to influence the analysis of the Quran in the Euro-American academy. Epistemic colonialism continues to prevail in the privileging of Eurocentric systems of knowledge production to the detriment and even exclusion of modes of analysis […]