১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে’ যে মূলনীতিসমূহ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য যে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ কর্তৃক পেশ করা হয়েছে তাতে অন্যতম তিনটি মূলনীতি হলো, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’। বস্তুত এই মূলনীতিসমূহ সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বিশ্বজনীন ও শাশ্বত মূলনীতি হিসেবে অনস্বীকার্য। আলোকিত ও সমৃদ্ধ সভ্যতা বিনির্মাণের জন্য এই মূলনীতিসমূহের মৌলিক ও স্থায়ী গুরুত্ব অনুধাবনের জন্য জানা প্রয়োজন যে, এগুলো মানবজাতির কাছে তাদের স্রষ্টার প্রেরিত বিধানগ্রন্থ ‘আল কুরআন’ থেকে উৎসারিত মূল্যবোধন ও নীতিমালা।
মূলনীতিসমূহের প্রকৃত তাৎপর্য : মূলনীতিসমূহ বাস্তবায়নের গুরুত্ব অনুধাবনের জন্য প্রথমে সেগুলোর সঠিক তাৎপর্য সম্পর্কে জানা জরুরি। কারণ কোনো মূলনীতিকে সঠিক অর্থে না বুঝলে তার প্রয়োগ সম্পর্কে দ্বিধা ও ভুলের অবকাশ থেকে যাবে।
সাম্য শব্দটির শাব্দিক অর্থ সমান বিবেচনা করা। এর প্রায়োগিক অর্থ হিসেবে যদি নেয়া হয়, মানুষকে যোগ্যতা-বৈশিষ্ট্য, কর্মদক্ষতা, মর্যাদা, অধিকার ও কর্তব্য ইত্যাদি সব দিক থেকে একে অন্যের সমান বলে বিবেচনা করতে হবে, তাহলে সেটা বাস্তবসম্মত নয়। বস্তুত ‘সাম্য’ বা ‘বৈষম্যহীনতা’ শব্দটির প্রকৃত প্রায়োগিক অর্থ হলো, মানুষকে একই ধরনের নীতিতে মর্যাদা, অধিকার ও কর্তব্য অর্পণ করতে হবে। যে বিষয়গুলোতে মানুষের ইচ্ছা ও নৈতিক গুণের প্রভাব নেই সেগুলোতে তারা পরস্পর সমান হিসেবে বিবেচিত হবে। এবং যেখানে তাদের ইচ্ছা ও নৈতিক গুণের প্রভাব রয়েছে, সেখানে তাদেরকে একই ধরনের নীতির আওতায় ভারসাম্যপূর্ণ মর্যাদা, অধিকার ও কর্তব্য অর্পণ করা হবে, নীতিগতভাবে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের মধ্যে ‘সাম্য’ প্রতিষ্ঠা করা হবে, যেখানে প্রকৃতিগত দায়িত্ব বণ্টন বা নৈতিক নীতিমালার আওতায় বিচ্ছিন্নভাবে তাদের মধ্যে তারতম্য দেখা যেতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মানুষ হিসেবে প্রত্যেকের মানবিক মর্যাদা সমান এবং তারা সঙ্গত ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকারী। জাতি-ধর্ম-গোত্র-বর্ণ-লিঙ্গ-পেশা, অঞ্চল ও ভাষা নির্বিশেষে সমাজের সকল সদস্য যোগ্যতা অনুযায়ী সমান সুযোগ-সুবিধার অধিকারী। সবাই যোগ্যতা অনুযায়ী বৈধ পেশা গ্রহণ বা কাজ করার ও ন্যায্য মজুরি পাওয়ার অধিকারী। যোগ্যতা অনুযায়ী সবাই রাজনৈতিক অংশগ্রহণের অধিকারী। প্রত্যেকেই নিজের কাজের জন্য দায়ী হবে, একের দোষে অন্যকে শাস্তি দেয়া যাবে না। প্রত্যেক অভিযুক্তের জন্য আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, পক্ষপাতমুক্ত বিচার ও নিশ্চিত প্রমাণ ছাড়া শাস্তি না পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
অন্যদিকে সৃষ্টিপ্রকৃতিগত কারণে নারী ও পুরুষের পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দায়-দায়িত্বে তারতম্য হলে কিন্তু তার মধ্যে ভারসাম্য স্থাপিত হলে এবং ন্যায্যতা লঙ্ঘিত না হলে, সেটাকে বৈষম্য বলা যায় না। জন্মগত অধিকার ও দায়িত্ব এবং সামাজিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যোগ্যতার বিকাশ ও প্রায়োগিকতা অনুসারে সৃষ্ট অধিকার ও অর্পিত দায়িত্ব দুটি ভিন্ন মাত্রার বিষয়। যেমন, যোগ্যতা অনুসারে কেউ রাষ্ট্রনায়ক হলে, রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তার মর্যাদা, অধিকার ও দায়িত্ব একজন সাধারণ নাগরিকের তুলনায় ভিন্নরূপ হবে, এটাই স্বাভাবিক এবং এতে বৈষম্য নেই। কিন্তু যদি মানবিক মর্যাদার প্রশ্নে, মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণের প্রশ্নে রাষ্ট্রনায়ক ও সাধারণ নাগরিকের মধ্যে তারতম্য হয়, যদি রাষ্ট্রনায়ককে জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে স্থান দেয়া হয় বা তাকে বিচারের সম্মুখীন করা না যায়, তাহলে সেটা বৈষম্য।
‘সাম্য’ ও ‘বৈষম্য’ এর এই যুক্তিসিদ্ধ সংজ্ঞা অনুসারে, মানবজাতির মধ্যে ‘সাম্য প্রতিষ্ঠা’ এবং ‘বৈষম্যবিরোধিতা’-র মূল্যবোধ কুরআন তথা আল্লাহর নাজিলকৃত বিধানগ্রন্থ থেকে উৎসারিত এবং তাতে এর প্রকৃত রূপরেখা সুসংবদ্ধ রয়েছে।
নিম্নে এ বিষয়ে কুরআনের নির্দেশনা তুলে ধরা হলো:
১. আল্লাহর বান্দা হিসেবে সাম্য
২:২১ :: হে মানুষ, তোমরা তোমাদের প্রভুর দাসত্ব করো, যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্ববর্তীদের সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা স্রষ্টা-সচেতন জীবন যাপন করতে পারো।
৫১:৫৬ :: আর আমি মানুষ ও জিনকে শুধুমাত্র আমার দাসত্ব ছাড়া অন্য (কারো দাসত্বের) উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করি নি।
২. আল্লাহর খলিফা হিসেবে সাম্য
৬:১৬৫ :: আর তিনিই যিনি তোমাদেরকে পৃথিবীতে খলিফা করেছেন এবং একের তুলনায় অন্যকে যোগ্যতা-সামর্থ্য ও সুযোগ-সুবিধার উচ্চমাত্রা দিয়েছেন, যেন যাকে যা (কম বা বেশি) দেয়া হয়েছে তা বিবেচনায় রেখে পরীক্ষা করেন। অবশ্যই তোমার প্রভু দ্রুত প্রতিদান প্রদানকারী আর অবশ্যই তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
৩. একই আদি পিতামাতার সন্তান হিসেবে সাম্য
৪:১ :: হে মানুষ, তোমরা তোমাদের প্রভুর প্রতি সচেতন হও, যিনি তোমাদেরকে একটি একক নফস থেকে সৃষ্টি করেছেন, আর তার থেকে তার জোড়াকে সৃষ্টি করেছেন, আর ছড়িয়ে দিয়েছেন তাদের দুজন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। আর আল্লাহর প্রতি সচেতন হও, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট অধিকার দাবি করে থাকো। আর আত্মীয়তার বন্ধনের বিষয়ে সচেতন হও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর দৃষ্টিবান।
৪৯:১৩ :: হে মানুষ, নিশ্চয় আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি। আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হও। নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে অধিক মর্যাদাবান, যে স্রষ্টার প্রতি অধিক সচেতন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও সম্যক অবগত।
৪. ঈমান ও আমলে সালেহের পুরস্কারে সাম্য
৩:১৯৫ :: তারপর তাদের রব তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বলেন, নিশ্চয় আমি তোমাদের কোনো পুরুষ অথবা নারী আমলকারীর আমল নষ্ট করব না। তোমরা একে অপরের অংশ। …
১৬:৯৭ :: যে মুমিন অবস্থায় নেক আমল করবে, পুরুষ হোক বা নারী, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তারা যা করত তার তুলনায় অবশ্যই আমি তাদেরকে উত্তম প্রতিদান দেব।
৪:১২৪ :: পুরুষ হোক কিংবা নারী, যে ব্যক্তিই কোনো সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি সামান্য পরিমাণও জুলুম (বৈষম্য) করা হবে না।
৩৩:৩৫ :: নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, সিয়ামপালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন।
৫. শাস্তি বিধানে সাম্য
২:১৭৮ :: হে যারা ঈমান এনেছ ! নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের উপর কিসাসের বিধান লিখে দেয়া হয়েছে। হত্যকারী স্বাধীন ব্যক্তি হলে সেই স্বাধীন ব্যক্তি, ক্রীতদাস হলে সেই ক্রীতদাস, নারী হলে সেই নারী দন্ডিত হবে। তবে তার ভাইয়ের (তথা নিহতের উত্তরাধিকারীদের) পক্ষ থেকে কোনো ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সাথে তার রক্ত-বিনিময় আদায় করা কর্তব্য। এটা তোমাদের রব-এর পক্ষ থেকে শিথিলতা ও অনুগ্রহ। সুতরাং এর পরও যে সীমালঙ্ঘন করে তার জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।
৬. নিজ নিজ ধর্ম চর্চায় সাম্য
১০৯:৬ :: তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম এবং আমার জন্য আমার ধর্ম।
২:২৫৬ :: দীন গ্রহণের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই। নিশ্চয় হিদায়াত স্পষ্ট হয়েছে ভ্রষ্টতা থেকে। অতএব, যে ব্যক্তি তাগূতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, অবশ্যই সে মজবুত রশি আঁকড়ে ধরে, যা ছিন্ন হবার নয়। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
৭. উপার্জনের অধিকারে সাম্য
৪:৩২ :: আর তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো না সে সবের, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের এক জনকে অন্য জনের উপর বিশিষ্টতা দিয়েছেন। পুরুষদের জন্য রয়েছে অংশ, তারা যা উপার্জন করে তা থেকে এবং নারীদের জন্য রয়েছে অংশ, যা তারা উপার্জন করে তা থেকে। আর তোমরা আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ চাও। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।
মানবিক মর্যাদা : মানুষ প্রাণীজগতের অন্য সব প্রাণীর থেকে স্বতন্ত্র ও বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। কারণ, মানুষকে ইচ্ছা ও কর্মের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে এবং প্রতিনিধিত্বের আমানাত অর্পণ করা হয়েছে। এই মানবিক মর্যাদার অনিবার্য শর্ত হলো, সে কারো প্রভু সেজে বসবে না এবং আল্লাহ ছাড়া কারো দাসত্ব ও উপাসনা করবে না এবং প্রবৃত্তি পুজা থেকে নিবৃত্ত থেকে সব মানুষের মানবিক মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে কাজ করবে। এ বিষয়ে কুরআনের কিছু আয়াত নিম্নরূপ-
১৭:৭০ :: আমি আদম-সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, স্থলে ও সমুদ্রে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি; আর তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছি এবং আমি যাদেরকে সৃষ্টি করেছি তাদের অনেকের উপর তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি।
৪৯:১১ :: হে যারা ঈমান এনেছ, কোন সম্প্রদায় যেন অপর কোন সম্প্রদায়কে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর কোন নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ উপনামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নাম কতইনা নিকৃষ্ট! আর যারা তাওবা করে না, তারাই তো যালিম।
সামাজিক ন্যায়বিচার : সামাজিক ন্যায়বিচারের বিষয়ে কুরআন সুস্পষ্ট, পরিপূর্ণ ও সুদৃঢ় নির্দেশনা প্রদান করে। যেমন-
১৬:৯০ :: নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচার, সদাচার ও নিকট আত্মীয়দের দান করার আদেশ দেন এবং তিনি আশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও সীমালঙ্ঘন থেকে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
৪:৫৮ :: নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত তার হকদারকে ফিরিয়ে দিতে। তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকার্য পরিচালনা করবে তখন ন্যায়বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন তা কত উৎকৃষ্ট! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
৪:১৩৫ :: হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে এবং আল্লাহর জন্য সাক্ষ্যদাতা হবে, যদিও তা তোমাদের নিজেদের বা পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে হয়। সে ধনী হোক বা দরিদ্র, আল্লাহ উভয়েরই ঘনিষ্ঠতর। অতএব, তোমরা খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না, যাতে ন্যায়বিচার করতে পার। আর যদি তোমরা পেঁচিয়ে কথা বল বা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমরা যা কর, সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।
৫:৮ :: হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা ন্যায়ের সাক্ষ্যদাতা হিসেবে আল্লাহর পথে দৃঢ়ভাবে দন্ডায়মান থাক। কোন বিশেষ দলের শত্রুতা তোমাদেরকে যেন এতদূর উত্তেজিত করিয়া না দেয় যে, (তাহার ফলে) ইনছাফ ত্যাগ করিয়া ফেলিবে। ন্যায় বিচার কর। বস্তুত খোদাপরস্তির সহিত ইহার গভীর সামঞ্জস্য রহিয়াছে। খোদাকে ভয় করিয়া কাজ করিতে থাক।
১৭:১৫ :: যারা পথনির্দেশ অবলম্বন করবে তারাতো নিজেদেরই মঙ্গলের জন্য তা অবলম্বন করবে এবং যারা পথভ্রষ্ট হবে তারাতো পথভ্রষ্ট হবে নিজেদেরই ধ্বংসের জন্য এবং কেউ অন্য কারও ভার বহন করবেনা (তথা একজনের দোষে অন্যজন শাস্তি পাবে না); আমি রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত কাউকেও শাস্তি দিইনা।
উপর্যুক্ত আয়াতসমূহ থেকে স্পষ্টভোবে প্রতীয়মান হয় যে, কুরআনই প্রকৃত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের সুস্পষ্ট, পরিপূর্ণ ও সুদৃঢ় নির্দেশনা প্রদান করেছে। এতে এ মূল্যবোধসমুহের যে রূপরেখা অংকিত হয়েছে তা মানবীয় বিবেকবোধ ও বাস্তব যুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং স্রষ্টা-সচেতনতার সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। এ মূল্যবোধসমূহের স্বরূপ ও প্রয়োগ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের অবসানের জন্য কুরআনের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে অনুশীলন অত্যাবশ্যক।
শওকত জাওহার
রিসার্চ ফেলো
দি ইক্বরা
১৯.০২.২০২৫