পাঠসূচী

বহুল জিজ্ঞাস্য প্রশ্নোত্তর

এখানে পাঠক ও ভিজিটরদের ইক্বরা এবং এর কাজ সম্পর্কে কিছু সম্ভাব্য প্রশ্নের উত্তর প্রদান করার চেষ্টা করা হয়েছে


ইক্করা কি?

’ইক্বরা’ শব্দটি কুরআন নাজিল হওয়ার ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুসারে নবী মুহাম্মদ স. এর নিকট আসা প্রথম নির্দেশ ছিলো যা পরবর্তীতে সূরা আলাকের প্রথম আয়াত হিসাবে সংরক্ষিত। বিশেষজ্ঞরা শব্দটিকে প্রথম নাজিল হওয়া আয়াতের অংশ বলেও ধারণা করেন। ’ইক্বরা’ যার আক্ষরিক অর্থ পাঠ করা, অধ্যয়ন করা - তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সম্পূর্ণ নাম, The Institute for Quranic Research & Application, দি ইন্সটিটিউট ফর কুরআনিক রিসার্চ এন্ড এ্যাপ্লিকেশন এর সংক্ষেপিত রূপ হিসেবে দি ইক্বরা (The IQRA) বা সংক্ষেত্রে ইক্বরা (IQRA) রাখা হয়েছে।

এটি সুউচ্চ মহান প্রতিপালক, যিনি দুর্বল বান্দার জন্য সহায়, সেই সার্বভৌমত্বের প্রকৃত অধিকারী আল্লাহর অনুমতি ও তাঁর প্রদত্ত সামর্থ্যের উপর নির্ভরশীল একটি প্রস্তাবিত ইন্সটিটিউট বা প্রতিষ্ঠান যার কাজ কুরআনের বিধান অধ্যয়ন, গবেষণা, শিক্ষালাভ এবং বাস্তব জীবন ও পৃথিবীতে প্রয়োগের লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া।

ইন্সটিটিউট বা প্রতিষ্ঠান কেন?

আর আল্লাহ তাদেরকে বাড়িয়ে দিবেন হিদায়াত যারা সঠিক পথে চলে। আর স্থায়ী সৎকর্মসমূহই তোমার রবের কাছে উত্তম, প্রতিফলের বিষয় হিসাবেও আর উত্তম, পরিণতির বিষয় হিসাবেও। - ১৯:৭৬

যখন কোনো কাজ কোনো ব্যক্তি কেন্দ্রিক বা কয়েকজন ব্যক্তি নির্ভর না হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক হয় তখনি কাজটি টেকসই ও দীর্ঘস্থায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। কুরআনে ইব্রাহিম আ. এর কাবার ভিত্তি স্থাপনের পর মহান প্রভুর কাছে যে দোয়া করেন, তা থেকে আমরা এই শিক্ষা পাই যে তিনি আগামী দিনের দিকে লক্ষ্য স্থির রেখে সামনের মানুষদের জন্য টেকসই ও দীর্ঘস্থায়িত্বের দোয়া করেন যেন তাঁর এই প্রয়াস ভবিষ্যতের মানুষদের জন্য পাথেয় হয়, যেন তারা ঐশী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাঁর শুরু করা কাজে অংশগ্রহণ করতে ও উপকৃত হতে পারে।

কুরআনকে অবহেলা, অকেজো ও পেছনে ফেলে রাখার যে রূগ্নতায় আমরা আজ রুগ্ন, তা থেকে উত্তরণ একটি দীর্ঘসময়ের কাজ। এ কাজ কয়েক বছরের বা কয়েকজনের নয়, এটা দীর্ঘ এবং সম্ভবত কয়েক জেনারেশনের বটেই। সেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে আমরা মনে করছি যে এই কাজটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেলেই সেটি টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। কুরআনের জ্ঞানকে যুগোপযোগী করে অধ্যয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এর বাস্তবায়নও স্বাভাবিক কারণেই চলমান থাকবে। এ কারণেই আমাদের চিন্তা ও প্রচেষ্টা ইন্সটিটিউট কেন্দ্রিক বা প্রাতিষ্ঠানিক।

এর ফান্ডিং বা অর্থায়ন কিভাবে হয়? কোথা থেকে আসে?

ইক্বরার কার্যক্রম ২০২২ সালের জানুয়ারী অবদি সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে এবং নিজেদের উপার্জনের একটি অংশ থেকে অর্থায়ন করে। এটিই কুরআনের একটি নির্দেশ, পরিশুদ্ধতার বিধান বা যাকাতের একটি বাস্তব প্রয়োগ বলে আমরা বিশ্বাস করি যার ‍কবুল করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। আমরা দেশি বা বৈদেশিক কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে দায়বদ্ধ নই। ভবিষ্যতে কারো আর্থিক সহায়তা আমরা গ্রহণ করলেও তার সাথে কোনো শর্ত বা এজেন্ডা আমরা প্রত্যাশা করি না।

আপনারা কি ডোনেশন নেন?

জ্বি। আমরা যে ভিশন এবং মিশন নিয়ে কাজ করতে চাই তার ব্যাপ্তি আল্লাহ চাইলে অনেক। কিন্তু আমাদের রিসোর্স সীমিত। প্রত্যাশা আমাদের প্রভুর নিয়ামতের যা অসীম। তিঁনি যাকে ইচ্ছা করেন অবারিত দিয়ে থাকেন। কেউ যদি দি ইক্বরার কাজে আর্থিক ও অন্যান্যভাবে সহায়তা দিতে ইচ্ছুক হন, আমরা তা গ্রহণ করতে অনাগ্রহী নই। কেবল আমাদের অনুরোধ থাকবে দি ইক্বরার কাজ ও ভিশন মিশন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়েই কোনো শর্তহীনভাবে যদি কেউ ডোনেশন করেন তাহলেই মঙ্গল। কবুল করার মালিক একমাত্র প্রতিপালক। ডোনেশন দিতে প্রত্যাশী বা অন্যান্য প্রশ্নের উত্তরের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগের পাতাটি ব্যবহার করতে পারেন।

ইক্বরা কি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান বা কনসার্ন?

জ্বি না। আমাদের সাথে আর কোনো প্রতিষ্ঠান (প্রকাশ্য বা গোপন, দেশী বা বিদেশী)-এর সাথে কোনো ধরনের এফিলিয়েশন বা সম্পর্ক নেই।

আপনাদের রাজনৈতিক পরিচয় বা দর্শন কি?

দি ইক্বরা প্রচলিত অর্থে একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও অলাভজনক গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান যার সাথে কোনো আনুষ্ঠানিক অথবা অনানুষ্ঠানিক রাজনৈতিক দলের সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক, লেনদেন, অঙ্গসংগঠন ইত্যাদি নেই। আমাদের যাবতীয় যোগসূত্র কুরআনের সাথে।

আপনারা কি মুনকারে হাদীস বা হাদীস অস্বীকারকারী?

জ্বি না। আমরা মনে করি হাদীস ইসলামের ইতিহাস পাঠের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। হাদীসের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরী, তার শুদ্ধতা, সেগুলোর মধ্যে কোনটি গ্রহণযোগ্য এবং কোনটি অগ্রহণযোগ্য, কোনটি সহীহ এবং কোনটি জাল এ বিষয়ে প্রচলিত ইসলামে যথেষ্ট কাজ হয়েছে যার প্রেক্ষিতে হাদীস বিশেষজ্ঞদেরই এ বিষয়ে বিভিন্ন গবেষণা রয়েছে। আমাদের অধ্যয়নের বিষয় কুরআন এবং সে বিষয়েই আমরা নিজেদের সীমিত রাখতে আগ্রহী যেহেতেু এটি একটি কুরআন কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান।

আপনাদের কি রাষ্ট্রীয় প্রাতিষ্ঠানিক রেজিস্ট্রেশন আছে?

আমাদের প্রতিষ্ঠানটি এ পেইজটি আপডেট হওয়ার সময় (জানুয়ারী ২০২২ পর্যন্ত) প্রস্তাবিত স্ট্যাটাসে আছে। এটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রাতিষ্ঠানিক রেজিস্ট্রেশনের দিকে যাওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ এখনো পর্যাপ্ত নয়।

ইক্বরার শুরু কবে থেকে?

প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানের বয়সের দিক থেকে আমরা একেবারে শৈশবে আছি। ২০১৯ এর শেষের দিক, তথা নভেম্বর থেকে আমাদের গবেষণামূল কাজ, অধ্যয়ন ও লেখালেখি শুরু হয়। ২০২০ সাল জুড়ে আমরা মূলত বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক অধ্যয়ন এবং সেই অধ্যয়নের ফসল হিসেবে, প্রতিপালকের সহায়তায় কুরআনের কিছু মৌলিক বিষয়ে বই লিখতে সক্ষম হয়েছি যা এই ওয়েবসাইটে ফ্রি পাঠ ও ডাউনলোডের জন্য আপলোড করা আছে।

আপনাদের বই কিভাবে কিনতে পারি?

জানুয়ারী ২০২২ অবধি আমাদের বই প্রকাশ করার প্রস্তুতি সর্ম্পূণ হয়নি। বইয়ের পান্ডুলিপিগুলোর প্রস্তুতি চলছে। এরপর কারেকশন এবং অন্যান্য প্রেস সর্ম্পকিত কাজ শেষ হলে এবং অর্থায়নের সক্ষমতা তৈরি হলে আমরা বই প্রকাশে যেতে পারবো। তখন এই ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য অনলাইন বুক স্টোরে বই অর্ডার দেওয়ার সুযোগ থাকবে বলে আমরা আশা করছি।

আপাতত কেনা নয়, বরং বিনামূল্যে ওয়েবসাইটে এবং পিডিএফ ডাউনলোড করে কম্পিউটারে অথবা প্রিন্ট করে প্রিন্ট কপি পড়তে পারবেন।

প্রতিষ্ঠানটির পেছনে আপনারা কতজন আছেন?

বর্তমানে (জানুয়ারী ২০২২) অবদি আমাদের টিম সংখ্যা ৫ জনের কম যারা কেবল ইক্বরার কাজের সাথে সরাসরিযুক্ত। এদের মধ্যে যেসব দায়িত্ব রয়েছে তার মধ্যে গবেষণা ও লেখালেখি, সম্পাদনা, অনুবাদ ও অন্যান্য সাপোর্ট এবং ওয়েবসাইট সার্ভার ইত্যাদির টেকনিক্যাল দিকসমূহ উল্লেখযোগ্য।

ইক্বরার বই যদি অন্য কেউ প্রকাশ করতে চায়?

যেহেতু আমাদের কাজটি মুনাফামুখী বা জীবিকামুখী নয়, ‍সুতরাং কুরআনের কাজ যতটা মানুষের কাছে পৌছাবে ততই মঙ্গল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে অন্য কেউ ইক্বরার গবেষণাধর্মী বইগুলো প্রকাশ করতে চান, ব্যক্তিগত সহায়তায় অথবা প্রকাশনী হিসেবে, সেক্ষেত্রে আমরা তাদের স্বাগতম জানাই। আগ্রহ প্রকাশের জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের যোগাযোগ পাতার ইমেইলে সংযুক্ত হতে পারেন।