দি  ইন্সটিটিউট ফর কুরআনিক রিসার্চ এন্ড এ্যাপ্লিকেশন (ইক্বরা)

লক্ষ্য

ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।

উদ্দেশ্য

ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।

প্রকাশিত বইসমূহ

মা মালাকাত আইমান প্রসঙ্গ

কুরআনে বিবাহের বিধানের মধ্যে দাস-দাসীর বিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। কুরআনের বস্তুনিষ্ঠ অধ্যয়নের পরিবর্তে এক শ্রেণির মোল্লার অপব্যাখ্যার ভিত্তিতে একটি ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে, ইসলামে দাসীদের সাথে বিয়ে ছাড়াই দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। অথচ কুরআন থেকে এটা স্পষ্ট যে, নারী-পুরুষের মধ্যে যৌনসম্পর্ক স্থাপিত হতে পারে শুধুমাত্র বিয়ের মাধ্যমে, অন্য কোনোভাবে নয়। বিয়ে ছাড়া যৌনসম্পর্ক যদি নারী-পুরুষের পারস্পরিক সম্মতিক্রমেও ঘটে তবুও তা অবৈধ এবং সেটা ব্যভিচার নামে অভিহিত, যা একটি দণ্ডযোগ্য সামাজিক অপরাধ। স্বাধীন-স্বাধীনা বা দাস-দাসী কেউ এ বিধানের বাহিরে নয় এবং দাসীর সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তাকে বিয়ে করতে হবে এবং তার জন্য বিধিবদ্ধ মোহরানাও প্রদান করতে হবে।

কুরআনে দাস-দাসীকে ব্যাপকভাবে ‘মা মালাকাত আইমান’ শব্দের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে ‘মা মালাকাত আইমান’ শব্দের অর্থ ও তাৎপর্য সম্পর্কেও জানা প্রয়োজন। তাই দাস-দাসী ও ‘মা মালাকাত আইমান’ এবং তাদেরকে বিয়ে করার প্রসঙ্গে উল্লেখিত নির্দেশনার বিভিন্ন দিক নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো।

স্বাধীন নারী-পুরুষ ও দাস-দাসী বুঝাতে ব্যবহৃত শব্দাবলির তাৎপর্য

তৎকালীন দাসপ্রথাকে শক্তিপ্রয়োগে উৎখাত করার পরিবর্তে কুরআনে দাসমুক্তির জন্য বিশেষ নির্দেশনা প্রদান ও সংস্কার কর্মনীতির প্রবর্তন করা হয়। তাই স্বাধীন নারী-পুরুষ ও দাস-দাসী বুঝাতে বিভিন্ন শব্দাবলি ব্যবহৃত হয় এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় নির্দেশ ও নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এই প্রেক্ষিতে কুরআনে স্বাধীনা নারী ও দাসী প্রসঙ্গে থাকা শব্দগুলোর তাৎপর্য নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

স্বাধীনা নারী বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত মূল শব্দটি হচ্ছে ‘মুহসনাত। আর দাসী বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত মূল শব্দটি হচ্ছে ‘আমাতুন’ (বহুবচনে ইমাউন)। অন্যদিকে মুহসনাত এর বিপরীতে মা মালাকাত আইমান’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহৃত হয়েছে (৪:২৪-২৫)। আবার ‘মা মালাকাত আইমান শব্দগুচ্ছ ‘আজওয়াজ’ এর বিপরীতেও ব্যবহৃত হয়েছে (২৩:৫-৭, ৭০:২৯-৩১)। নিম্নে এসব শব্দ বা শব্দগুচ্ছ ব্যবহৃত হওয়া আয়াতগুলোর বক্তব্যস্থান / বক্তব্য কাঠামো অনুসারে শব্দগুলো যে ধরনের অর্থ প্রকাশ করে তা উল্লেখ করা হলো।

১. মুহসনাত শব্দটি যেসব অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো হলো: (ক) সতী নারী, হোক বিবাহিত বা অবিবাহিত, হোক স্বাধীনা বা ‘মা মালাকাত আইমান’; (খ) স্বাধীনা নারী, হোক বিবাহিত বা অবিবাহিত। (গ) স্বাধীনা অবিবাহিতা / তালাকপ্রাপ্তা / বিধবা নারী।

যখন বলা হয় যে, “মুহসনাত নারী হারাম কিন্তু মা মালাকাত আইমান নয়” তখন এর অর্থ হচ্ছে স্বাধীনা বিবাহিতা (সধবা) নারীকে বিয়ে করা হারাম, কিন্তু সধবা ‘মা মালাকাত আইমানকে বিবাহ করা হারাম নয়।

যখন বলা হয় যে, মুহসনাতকে বিয়ে করতে না পারলে সে ‘মা মালাকাত আইমান’ নারীকে তার আহলের/ অভিভাবকের অনুমতিক্রমে বিবাহ করবে, তখন এর অর্থ হচ্ছে স্বাধীনা অবিবাহিতা /তালাকপ্রাপ্তা / বিধবা নারীকে বিয়ে করতে না পারলে সে ‘মা মালাকাত আইমান’ নারীকে বিয়ে করবে তার অভিভাবকের অনুমতিক্রমে। 

মা মালাকাত আইমান’ যখন বিবাহিত হয়, তখন সে ‘মুহসনাত মা মালাকাত আইমান’ হয়, তথা ‘বিবাহিত ও স্বাধীনতাপ্রাপ্ত মা মালাকাত আইমান’ হয়। তারপর যদি সে অশ্লীল কাজ করে তবে তার শাস্তি হচ্ছে ‘মুহসনাতের অর্ধেক’ তথা ‘স্থায়ী স্বাধীনা নারীর অর্ধেক, সে স্বাধীনা নারী বিবাহিতা হোক, বা অবিবাহিতা হোক’।

একজন পুরুষের জওজ বলতে বুঝায় তার স্ত্রীকে তথা বিবাহিতা স্বাধীনা নারীকে (মুহসনাত মুহসনাতকে)।

২. আমাতুন (বহুবচনে ইমায়ি) অর্থ হচ্ছে ‘দাসী’ (২:২২১, ২৪:৩৩)। ২৪:৩৩ আয়াতে আছে ‘ইমায়িকুম যার শাব্দিক অর্থ হচ্ছে ‘তোমাদের দাসী’। এখানে তোমাদের দাসী মানে তোমাদের সমাজস্থ দাসী। অর্থাৎ বৃহত্তর পরিসরে সমাজকে তাদের নিজেদের বলয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পক্ষান্তরে মু’মিনদের নিজেদের সরাসরি আয়ত্তে যারা আছে তাদেরকে বলা হয়েছে ‘মা মালাকাত আইমান’ (২৪:৩৩), যাদেরকে মুক্ত করে দেয়ার প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছিল। আর সমাজে অন্য যাদের অধীনে তখনো দাসী ছিল তাদের থেকে জোর করে দাসদাসীদেরকে দাসত্ব মুক্ত করানো হয় নি, বরং মু’মিনরা ক্রয়ে অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে দাসদাসীকে মুক্ত করার ফর্মুলাই দেয়া হয়েছে, যাতে সমাজ সংস্কার হয়, গঠনমূলক পরিবর্তন হয়, ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়ায় বিপ্লব না হয়। কিন্তু মু’মিনরা কাউকে নিজের আবদ/ দাস এবং আমাত/ দাসী বানিয়ে রাখতে পারে না, কারণ আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন যে, মানুষ ও জিনকে একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত/ দাসত্ব করার জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে (৫১:৫৬)।

মা মালাকাত আইমান শব্দের তাৎপর্য: এর দ্বারা কাদেরকে বুঝায়?

মা মালাকাত আইামান এর অর্থ নির্ণয়ের জন্য যা জানা প্রয়োজন তা হলো, মা মালাকাত আইমানের দুটি বিশেষ অবস্থা হলো:

(১) মা মালাকাত আইমান হলো তারা যারা অপ্রাপ্তবয়স্ক বালকদের মতো স্তরে রয়েছে (২৪:৫৮)।

(২) মা মালাকাত আইমানকে স্বাধীনভাবে উপার্জনের সীমিত সুযোগ দিয়ে তার যোগ্যতার বিকাশের সুযোগ দিতে হবে যাতে সে স্বাধীন হবার জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সুযোগ পায় (২৪:৩৩)।

সুতরাং মা মালাকাত আইমান এর মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যথা: (ক) মু’মিনদের কাছে থাকা তাদের পূর্ববর্তী ক্রীতদাস-ক্রীতদাসী, (খ) যুদ্ধবন্দী নারী-পুরুষদের মধ্য থেকে যাদেরকে কোনো মু’মিনের তত্ত্বাবধানে দেয়া হয়েছে, কারণ তাদের মধ্যে তখনো স্বাধীনভাবে জীবিকা নির্বাহের যোগ্যতা তৈরি হয়নি, (গ) অনুরূপভাবে কাফির আত্মীয়দেরকে ত্যাগ করে হিজরত করে আসা নারী-পুরুষদের মধ্য থেকে যাদেরকে কোনো মু’মিনের তত্ত্বাবধানে দেয়া হয়েছে, কারণ তাদের মধ্যে তখনো স্বাধীনভাবে জীবিকা নির্বাহের যোগ্যতা তৈরি হয়নি। এ বিষয়টি পরবর্তী ‘আনুষঙ্গিক ধারাসমূহ’ অনুচ্ছেদের আলোচনায় বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে।

মা মালাকাত আইমান শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে ‘যাদেরকে অধিকৃত করেছে তোমাদের ডানহাতসমূহ’। ডানহাত কথাটি ইতিবাচক তৎপর্য বহন করে, যার অর্থ হচ্ছে নিরাপত্তা বিধানের প্রতিশ্রুতি দানকারী বা চুক্তি সম্পাদনকারী শক্তিসম্পন্ন হাত। এভাবে মু’মিনদের নিজেদের আওতাধীনে থাকা তৎকালীন দাস-দাসী যেন একটা নিরাপত্তা বলয়ে থাকে এবং যেন তাদের যোগ্যতার সমৃদ্ধি সাধনের মাধ্যমে তাদেরকে মুক্ত করে দেয়া যায় বা তাদেরকে বিয়ে করে নিয়ে স্বাধীনা করে দেয়া যায় সেরূপ বিধানও প্রদান করা হয়েছে।

মা মালাকাত আইমানুকুম এর একটি অবস্থা হচ্ছে ‘আল্লাযীনা আক্বাদাত আইমানুকুম (তোমাদের ডানহাত যাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, দ্র: ৪:৩৩)। সুতরাং মা মালাকাত আইমানকে তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য উপযুক্ত হয় এরূপ পরিমিত পরিমাণে (নাসীব) প্রদান করতে হবে।

মা মালাকাত আইমান কথাটি নিরাপত্তাবিধানের অর্থে মানবসম্পদের মালিকানার সাথে জড়িত, তাদের ব্যক্তিসত্তাকে বস্তুসত্তার মতো সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করে তার মালিক হয়ে যাওয়া হিসেবে সাব্যস্ত নয়। তাই মামলূকুকুম’ বা ‘তোমাদের অধিকৃত’ বলার পরিবর্তে বলা হয়েছে ‘মা মালাকাত আইমানুকুম’ তথা ‘যাদেরকে তোমাদের ডান হাত নিরাপত্তা প্রদানের প্রতিশ্রুতির আওতায় অধিকৃত করেছে’।

মা মালাকাত আইমানের সাথে দৈহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিবাহের আবশ্যকতা

প্রচলিত ধারণা হলো মা মালাকাত আইমান নারীকে বিয়ে করা ছাড়াই তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার অনুমতি রয়েছে এবং এ বিষয়ে তথ্যসূত্র হিসেবে ২৩:৫-৭ ও ৭০:২৯-৩১ আয়াতের উল্লেখ করা হয়। অথচ এ প্রচলিত ধারণা সম্পূর্ণরূপে কুরআনবিরুদ্ধ ধারণা। আল কুরআনে বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ককে যিনা হিসেবে সাব্যস্ত করে তাকে একটি ফৌজদারি অপরাধের অন্তর্ভুক্ত করে দণ্ডবিধি দেয়া হয়েছে। ৪:৩ এবং ৪:২৪-২৫ আয়াত অনুসারে মা মালাকাত আইমানকে বিয়ে করা ছাড়া তাদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা নিষিদ্ধ। তাই নিম্নে ২৩:৫-৭ এবং ৭০:২৯-৩১ আয়াতের প্রকৃত তাৎপর্য সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।

২৩:৫-৭ :: এবং যারা তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযতকারী (সংরক্ষণকারী)। তাদের স্বাধীনা স্ত্রী এবং ‘মা মালাকাত আইমান’ স্ত্রী (যাদেরকে তাদের প্রতিশ্রুতি ও নিরাপত্তা প্রদায়ক ডানহাত পূর্ণরূপে অধিকৃত করেছে এরূপ স্ত্রী) প্রসঙ্গে ছাড়া। এক্ষেত্রে তারা নিন্দিত হবে না। সুতরাং যারা সেটার বাইরে কাউকে তালাশ করবে, তারাই সীমালংঘনকারী হবে।

৭০:২৯-৩১ :: এবং যারা তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযতকারী (সংরক্ষণকারী)। তাদের স্বাধীনা স্ত্রী এবং ‘মা মালাকাত আইমান’ স্ত্রী (যাদেরকে তাদের প্রতিশ্রুতি ও নিরাপত্তা প্রদায়ক ডানহাত পূর্ণরূপে অধিকৃত করেছে এরূপ স্ত্রী) প্রসঙ্গে ছাড়া। এক্ষেত্রে তারা নিন্দিত হবে না। সুতরাং যারা সেটার বাইরে কাউকে তালাশ করবে, তারাই সীমালংঘনকারী হবে।

আয়াতসমূহের তাৎপর্য নির্ণয়র জন্য প্রথমেই জ্ঞাতব্য যে, মা মালাকাত আইমানুকুম শব্দগুচ্ছের দুটি অর্থ রয়েছে। বৃহত্তর পরিসরে এর অর্থ হচ্ছে, তোমাদের (মু’মিনদের) তত্ত্বাবধানে থাকা মা মালাকাত আইমান। আর দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে সীমিত পরিসরে তথা বক্তব্য প্রসঙ্গ অনুসারে ‘তোমাদের (মু’মিনদের) নিজ নিজ বিবাহকৃত মা মালাকাত আইমান। এর প্রমাণ হচ্ছে, ‘আজওয়াজুকুম শব্দটিরও দুটি অর্থ আছে। বৃহত্তর পরিসরে এর অর্থ হচ্ছে, ‘তোমাদের (পুরুষদের) সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ বা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার যোগ্য জোড়া শ্রেণি / পরিপূরক শ্রেণি নারীগণ’। অর্থাৎ এক্ষেত্রে নারী পুরুষ নিয়ে সাধারণ বক্তব্য দেয়া হয়, কিন্তু এই আজওয়াজকে যৌন সম্পর্কে পেতে হলে তাকে বিয়ে করে নিজের বিবাহকৃত আজওয়াজে পরিণত করতে হবে (এ বিষয়ে ৩০:২১ আয়াত দ্রষ্টব্য)। আর দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে সীমিত পরিসরে তথা বক্তব্য প্রসঙ্গ অনুসারে ‘তোমাদের নিজ নিজ বিবাহকৃত স্বাধীনা নারীগণ’ (এ বিষয়ে ৪:১২ আয়াত দ্রষ্টব্য) । 

২৩:৫-৭ এবং ৭০:২৯-৩১ আয়াতে “মা মালাকাত আইমানুহুম” শব্দগুচ্ছ “তাদের বিবাহিত মা মালাকাত্ আইমান” অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। এ আয়াতসমূহে ‘আজওয়াজ’ বলতে ‘মুহসনাত মুহসনাত’ তথা বিবাহকৃত স্বাধীনা নারী এবং ‘মা মালাকাত আইমান’ বলতে ‘মুহসনাত মা মালাকাত আইমান’ তথা ‘বিবাহকৃত মা মালাকাত আইমানকে’ বুঝানো হয়েছে। ‘মা মালাকাত আইমানকে বিবাহ করলে সে ‘মুহসনাত তথা স্বাধীনা হয়ে যায়’ কিন্তু তার পূর্ববর্তী অবস্থা বিবেচনায় রেখে তার জন্য অশ্লীল আচরণে পূর্ব থেকেই স্বাধীনা এরূপ নারীর অর্ধেক শাস্তি নির্ধারিত হয়েছে (৪:২৫)। আর তাই তাকে বিবাহকৃত অবস্থায়ও ‘মা মালাকাত আইমান’ শব্দগুচ্ছ দ্বারাই উল্লেখ করা হয়েছে।

মা মালাকাত আইমানকে বিয়ের প্রসঙ্গে আনুষঙ্গিক ধারাসমূহ

(১) যদি নিজেই ‘মা মালাকাত আইমানের’ আহল বা অভিভাবক হয়, তাহলে শুধু ‘মা মালাকাত  আইমানের’ সম্মতিক্রমে তাকে বিবাহ করতে পারবে। আর যেখানে “তোমাদের মা মালাকাত আইমানকে তার আহলের অনুমতিক্রমে বিবাহ করো” বলা হয়েছে, তার অর্থ হলো, মু’মিনদের অভিভাবকত্বে থাকা মা মালাকাত আইমান’ কিন্তু যে মু’মিনের বিবাহের প্রসঙ্গ আলোচিত স্বয়ং তার অভিভাবকত্বে নয়, বা সে নিজে তার আহল/ অভিভাবক নয়। যেহেতু সে মুহসনাত বা স্বাধীনা নারীকে বিবাহের সামর্থ্য নেই বা সেরূপ স্বচ্ছল নয়, তাই তার অভিভাবকত্বে আগে থেকে ‘মা মালাকাত আইমান’ থাকা সম্ভবও নয়।

(২) ৫৯:৬-৭ আয়াত অনুযায়ী যুদ্ধ ছাড়াই কাফিরদের থেকে যে সম্পদ রসূল ও মু’মিনদের অধিকৃত হয়েছে সেটাকে “আল্লাহ রসূলকে ফায় দিয়েছেন” বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ৩৩:৫০ আয়াতে রসূলের মা মালাকাত ইয়ামীন (ডান হাত যাকে অধিকৃত করেছে) সম্পর্কেও বলা হয়েছে, “যাদেরকে আল্লাহ রসূলকে ফায় দিয়েছেন”। সুতরাং ফায় হলো সেই সম্পদ যা যুদ্ধ ছাড়াই কাফিরদের থেকে মু’মিনদের হস্তগত হয়। অনুরূপভাবে “ফায়” হলো সেই লোকজন যারা প্রথমে কাফিরদের কাছে ছিল, কিন্তু পরে তাদেরকে পরিত্যাগ করে মু’মিনদের কাছে চলে এসেছে। আমরা ৬০:১০-১১ আয়াতে এর প্রমাণ পাই যে, অনেক স্ত্রীলোক তাদের কাফির স্বামীর সাথে আনুষ্ঠানিক তালাক ছাড়াই তাদেরকে পরিত্যাগ করে মু’মিনদের কাছে চলে এসেছে। এ ধরনের নারীদের মধ্য থেকে কাউকে যখন কোনো মু’মিনের পূর্ণকালীন তত্ত্বাবধানে দেয়া হয় তখন সে ঐ মু’মিনের মা মালাকাত আইমান হিসেবে সাব্যস্ত হয়।

এই প্রেক্ষিতে যে সধবা মা মালাকাত আইমানকে বিয়ে করা যাবে সে হলো যার স্বামীর সাথে তার বাস্তব দূরত্ব তৈরি হয়েছে, কিন্তু আনুষ্ঠানিক বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে নি। কারণ নারীর ক্বাওয়াম/ দায়িত্বশীল একাধিক হবে না, তাই মা মালাকাত আইমান সধবা নারীর স্বামীর সাথে বাস্তব সম্পর্ক বজায় থাকা অবস্থায় তাকে বিয়ে করা যাবে না। আবার বিয়ে করার পর সে নতুন করে ‘মুহসনাত’ (বিবাহিতা ও স্বাধীনা) হয়ে যাবে, সুতরাং এই বিয়ের বৈধতা একবারই প্রযোজ্য, দ্বিতীয়বার প্রযোজ্য নয়।

(৩) পিতা তার যে মা মালাকাত আইমানকে বিয়ে করবে, বিয়ের পরে তাকে তালাক দিলেও বা পিতার মৃত্যু ঘটলেও সে নারী পুত্রের জন্য মা ও মুহাররমা (যাকে বিয়ে করা হারাম বা অবৈধ এরূপ) হিসেবে সাব্যস্ত হবে (৪:২২)। আর যারা মনে করেন যে, নিকাহ মানে যৌন সম্পর্ক, এজন্য বিয়ে আবশ্যক নয়, তাদের মতবাদ কুরআনের জিনা (ব্যভিচার) ও তালাক সম্পর্কিত বিধি-বিধানের বিরোধী। (দ্র. ৩৩:৪৯)। সুতরাং মা মালাকাত আইমানকে বিয়ে করার পর সে পুরুষটির স্বাধীনা স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তানেরও সৎমা হয়ে যায়।

(৪) “যে ব্যক্তি ‘মুহসনাতকে (স্বাধীনা অবিবাহিতা/তালাকপ্রাপ্তা/বিধবা নারীকে) বিবাহ করার সামর্থ রাখে না সে ‘মা মালাকাত আইমানকে বিবাহ করবে” (দ্র: ৪:২৫) নির্দেশনাটির দ্বারা এ কথা বুঝায় না যে, মুহসনাতকে বিবাহ করার সামর্থ থাকলে ‘মা মালাকাত আইমানকে বিবাহ করা যাবে না। বরং এ কথার কারণ হচ্ছে- সাধারণত স্বাধীন পুরুষের প্রবণতা থাকে মুহসনাতকে বিবাহ করার জন্য। কিন্তু যে ব্যক্তি মুহসনাতকে বিবাহ করার সামর্থ রাখে না সে যেন মুহসনাতকেই বিবাহ করার মানসিকতা লালন করতে না থাকে বরং তার উচিত মা মালাকাত আইমানকে বিবাহ করা। যেহেতু মুহসনাত ও মা মালাকাত আইমান উভয়ে ঈমান অবলম্বনের দিক থেকে সমমর্যাদার। এছাড়া, ৪:৩ ও ৩৩:৫০ আয়াতে কোনোরূপ শর্ত ছাড়াই স্বাধীনা নারী ও ‘মা মালাকাত আইমানকে বিবাহ করার সমান সুযোগ দেয়া হয়েছে। এমনকি ২৪:৩২ ও ২:২২১ আয়াত অনুসারে দাস-দাসীকে বিবাহ করাও মহৎ গুণ।

(৫) ৪:২৫ আয়াতে যে সবর করার কথা বলা হয়েছে ২৪:৩৩ আয়াত অনুসারে উহার সম্পর্ক হচ্ছে ঐ ব্যক্তির স্বীয় অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার সাথে। যে মুহসনাতকে বিবাহ করার সামর্থ রাখে না কিন্তু ‘মা মালাকাত আইমানকে’ বিবাহ করার সামর্থ রাখে সে মা মালাকাত আইমানকে বিবাহ করবে। যে মুহসনাতকে বিবাহ করার সামর্থ রাখে সে মুহসনাতকে বা মা মালাকাত আইমানকে বিবাহ করবে। আর যে শুধু মা মালাকাত আইমানকে বিবাহ করার সামর্থ রাখে সেও  ‘মা মালাকাত আইমানকে বিবাহ করার তুলনায় অধিকতর সামর্থ্য  অর্জনের পর ‘মুহসনাতকে’ বা মা মালাকাত আইমানকে, যাকে সে বিবাহ করতে চায়, বিবাহ করা তার জন্য অধিকতর কল্যাণকর।

মনে রাখতে হবে যে, সব মুহসনাতই মা মালাকাত আইমানের’ চেয়ে ভাল, তা নয়। বরং কিছু ‘মা মালাকাত আইমান মুহসনাতের চেয়ে ভাল হয়। কিন্তু ‘মা মালাকাত আইমানের পরিস্থিতিগত জটিল অবস্থান বিবেচনায় তার অশ্লীল কাজের ক্ষেত্রে তার শাস্তি মুহসনাতের তুলনায় অর্ধেক ধার্য করা হয়েছে। আয়াতের বক্তব্য এরূপ নয় যে, মা মালাকাত আইমানের তুলনায় মুহসনাতকে বিবাহ করা অধিক উত্তম।

অনেকে ৪:২৫ এর শেষ অংশের যালিকা সর্বনামের ভুল ব্যাখ্যা করে থাকে, যা কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক হয়। অথচ যালিকা দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে ২৪:৩৩ আয়াতের প্রথম অংশ পড়লে তা বুঝতে কোনো জটিলতা থাকে না। আয়াতটির সাপেক্ষে এবং অন্যান্য আয়াতের তথ্য সমন্বয়ের ভিত্তিতে বুঝা যায় যে, ৪:২৫ আয়াতে ‘যালিকা অর্থ হচ্ছে ‘অধিকতর সামর্থ্য অর্জনের আগেই বিবাহ করা’। এটি তাদের জন্য ব্যবস্থাপত্র যারা আত্মসংযম হারানোর ভয় আছে।

স্বাধীনা ও মা মালাকাত আইমান নারীর পার্থক্যের বাস্তব কার্যকারণ

আমাত (দাসী) এবং “মা মালাকাত আইমান” নারীকে স্বাধীনা নারীদের থেকে স্বতন্ত্রভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং তাদের প্রসঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে বিধানগত ভিন্নতা রয়েছে।

সর্বপ্রধান দৃষ্টি আকর্ষণের বিষয় হলো, ‘মা মালাকাত আইমান’ এবং সমাজস্থ  দাস-দাসীকে মুমিন হিসেবে স্বাধীন নারী-পুরুষের সমমর্যাদা (আদর্শিক ও মানবিক মর্যাদা) দেয়া হয়েছে। আদর্শগতভাবে মু’মিন দাস ও দাসীকে মুশরিক স্বাধীন পুরুষ ও নারীর চেয়ে উত্তম হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। কারণ একজন মুশরিক আল্লাহর সত্তা, গুণাবলি, ক্ষমতা ও অধিকারে অংশীদার স্থাপন করে, যেখানে একজন মু’মিন এসব ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্বের প্রতি বিশ্বাসী।

মু’মিনদের দায়িত্ব হলো তারা স্বীয় অর্থব্যয়ের মাধ্যমে দাসত্বের জিঞ্জিরে আবদ্ধ ঘাড়কে তথা দাস-দাসীকে মুক্ত করার জন্য সচেষ্ট থাকবে, যা তাদের পুণ্যকর্ম ও সৎকাজে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র।

মা মালাকাত আইমান যেন স্বাধীনভাবে কিছু জীবিকা উপার্জন ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন করে নিজের ও সমাজের কল্যাণের জন্য কাজে আসতে পারে সে সুব্যবস্থা করে তাকে স্বাধীন হয়ে যাওয়ার যুক্তিসঙ্গত প্রক্রিয়া হিসেবে অভিভাবকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সুব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া মু’মিন সমাজের উপর দাস-দাসীদের জন্যও উপযুক্ত জীবনসঙ্গী খুঁজে পাওয়ার সুযোগ তৈরিতে তাকে সাহায্য করার দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে।

স্বাধীনা স্ত্রী ও ‘মা মালাকাত আইমান’ স্ত্রীকে আলাদাভাবে উল্লেখ করার তথা স্বাধীনা ও মা মালাকাত আইমান নারীর মধ্যে পার্থক্য করার অন্যতম কার্যকারণ হলো ‘মা মালাকাত আইমান’ নারীর ক্ষেত্রে দণ্ডবিধি হ্রাসের বিধান। এক্ষেত্রে মা মালাকাত আইমানের তুলনামূলক নাজুক সামাজিক জীবন পদ্ধতির বিবেচনায় তাদের প্রতি বিশেষ মহানুভবতা প্রদর্শন করা হয়েছে।

পরিশেষে বলা যায় যে, আল কুরআনের আলোকে কোনো নারী-পুরুষের মধ্যে বিবাহ-বহির্ভুত যৌনসম্পর্ক জিনা বা ব্যভিচার হিসেবে সাব্যস্ত হয়, তা কোনো স্বাধীন নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে হোক বা দাস-দাসী, চাকর-চাকরানীর ক্ষেত্রে হোক সর্বাবস্থায় একই কথা প্রযোজ্য। দাসপ্রথার ক্রম বিলুপ্তির জন্য এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার বাস্তবভিত্তিক কার্যকর পদ্ধতি অবলম্বনের জন্য আল কুরআনে দাসপ্রথাকে সরাসরি নিষিদ্ধ করা হয়নি, কিন্তু এতে যেসব বিধি-বিধান রয়েছে তা স্বাধীন নারী-পুরুষ ও দাস-দাসী সকলের সামগ্রিক কল্যাণের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রণীত হয়েছে। কিছু বিশেষ বিধানের প্রেক্ষিতে স্বাধীনা নারীর পাশাপাশি দাসীদের প্রসঙ্গ স্বতন্ত্রভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো আয়াতে তাদের সাথে বিয়ে বহির্ভুত দৈহিক সম্পর্কের অনুমোদন দেয়া হয়নি, বরং স্পষ্টভাবে তাদেরকেও মোহরানা প্রদানপূর্বক যথানিয়মে বিবাহের মাধ্যমে বৈধ করা হয়েছে। এক কথায়, কোনো দাসী বা চাকরানীর সাথেও বিবাহ বহির্ভূত দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন আল কুরআন অনুসারে সম্পূর্ণত অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।


লেখক: শওকত জাওহার

রিসার্চ ফেলো, দি ইনস্টিটিউট ফর কুরআনিক রিসার্চ এন্ড এ্যাপ্লিকেশন (ইক্বরা)

১১ জানুয়ারি ২০২২

ট্যাগ / কী-ওয়ার্ড:

অন্যান্য প্রবন্ধ

May 16, 2025
Explaining the Qur'an through the Qur'an

Introductory presentation for a series applying the intratextual approach to the exegesis of Surat al-An'am, here on CASQI's channel.

May 3, 2025
কুরআনকে কি সংবিধান বলা যেতে পারে?

সাধারন ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে একটি কমন ধারনা হলো: ইসলামের সংবিধান হলো কুরআন এবং আধুনিক সময়ে যেসব সেকুলার সংবিধান করা হয় তা হলো "তাগুত"। বিষয়টি কি সত্যিই এরকম সাদা কালো? কুরআন কি সংবিধানি? একজন ইসলামে বিশ্বাসীর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে এই প্রশ্নের মিমাংসায় পৌছতে হলে আমাদের প্রথমে কয়েকটি কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে এগুতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে […]

May 2, 2025
কোরআন বোঝা কি কঠিন?

মুসলিমদের জীবন বিধানের সকল মূলনীতি কোরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর তোমার ওপর যে কিতাব (কোরআন) নাজিল করা হয়েছে ‎তাতে রয়েছে সকল বিষয়ের বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৮৯) দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ দেশের মুসলিমদের কোরআন দেখে শুদ্ধ করে পড়ার প্রতি গুরুত্ব থাকলেও ইসলামি জীবন বিধানের মৌলিক উৎস […]

April 15, 2025
সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার : কুরআনে সামাজিক মূল্যবোধ

১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে’ যে মূলনীতিসমূহ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য যে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ কর্তৃক পেশ করা হয়েছে তাতে অন্যতম তিনটি মূলনীতি হলো, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’। বস্তুত এই মূলনীতিসমূহ […]

April 11, 2025
নাসর হামিদ আবু যায়েদ - একজন আধুনিক কুরআন স্কলারের কর্ম-পরিচিতি

নাসর হামিদ আবু যায়েদ: এক মুক্তচিন্তার কুরআন গবেষকের জীবনচিত্র পূর্ণ নাম: নাসর হামিদ আবু যায়েদ (Nasr Hamid Abu Zayd)জন্ম: ১০ জুলাই ১৯৪৩, তানতা, মিসরমৃত্যু: ৫ জুলাই ২০১০, কায়রো, মিসরপরিচয়: কুরআন গবেষক, সাহিত্য সমালোচক, ধর্মতাত্ত্বিক ও মুক্তচিন্তার ইসলামী চিন্তাবিদ 🎓 শিক্ষা ও পেশাজীবন নাসর হামিদ আবু যায়েদ কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও ইসলামি শিক্ষায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ […]

April 1, 2025
Recovering Orignal Qur’anic Vocabulary - How the Qur’an Evolved?

In this interview, the host discuss with Dr. Munther Younes of Cornell University to discuss his research on the transmission and evolution of the Qur'anic text. Dr. Younes is Reis Senior Lecturer of Arabic Language and Linguistics at Cornell University and a renowned expert in the Arabic language. They discuss the Arabic of the Qur'an, […]

March 30, 2025
রহমানের ভাষার নিয়ামত এবং নোম চমস্কির ইউনিভার্সাল ল্যাংগুয়েজ থিওরী

আর রহমান দয়াময় সত্তা আল্লামাল ক্বুরআন তিনি শিক্ষা দিয়েছেন পঠন ক্ষমতা খালাক্বাল ইনসান তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষ আল্লামাহুল বায়ান তিনি তাকে শিক্ষা দিয়েছেন স্পষ্টভাবে বিবৃত করার ভাষা। - সুরা আর-রাহমান, আয়াত ১-৪ সুরা আর-রাহমান কুরআনের ৫৫তম সুরা এবং মুসলিমদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি সুরা। এই সুরার সুচনায় আমরা মানুষের পাঠ করার ক্ষমতা এবং কথা বলার […]

March 24, 2025
Fractal Design of the Quran

The concept of fractals in the Quran can be explored through the lens of recurring patterns in nature, self-similarity, and divine order. While the Quran does not explicitly mention "fractals" (a term coined in modern mathematics), it frequently describes natural patterns that align with fractal geometry, reinforcing the idea of a unified and recursive design […]