Introductory presentation for a series applying the intratextual approach to the exegesis of Surat al-An'am, here on CASQI's channel.
ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।
ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।
পারভেজ আলম - লেখক, একটিভিস্ট, অক্সিডেন্টালিস্ট
সূরা কাহফে কয়েকটা প্যারাবল বা দৃষ্টান্তমূলক গল্প আছে। এরমধ্যে দুইটা ধারাবাহিক প্যারাবলকে একসাথে পাঠ করা যাইতে পারে। প্রথমটা মুসার সাথে খোয়াজ খিজিরের সাক্ষাতের দৃষ্টান্ত, এবং দ্বিতীয়টা জুলকারনাইনের দেয়াল তৈরির।
পাঠক খেয়াল করলে দেখবেন যে দুইটা গল্পের দৃষ্টান্তের মধ্যে সম্পর্ক আছে। দুইটা গল্পে মোট চার ধরণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও আইনের প্যারাডাইম হাজির করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম তিনটা পরিষ্কারভাবেই দুনিয়াবি ক্ষমতা ও আইনের প্যারাডাইম, যাদেরকে যথাক্রমে মুসা প্যারাডাইম, খিজির প্যারাডাইম ও জুলকারনাইন প্যারাডাইম নাম দেয়া যায়।
মুসা, খিজির ও জুলকারনাইনের মধ্যে মিল হলো যে তারা আইনের ঊর্ধে (এই হিসাবে যে, তারা নিজেরাই আইন কায়েম করেন)। চার নম্বর প্যারাডাইম খোদ আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা ও বিচারের প্যারাডাইম।
মুসা প্রতিনিধিত্ব করেন নবুয়তের প্যারাডাইম। নবীদের আইন ও শাসন হলো ওহি নির্ভর। তারা নিজ নিজ জাতি বা সমাজের মধ্যে আইন ও বিচার ব্যবস্থা কায়েম করেন স্থান-কাল, সামাজিক অভ্যাস ও ভাষাগত প্রেক্ষিতের সীমার মধ্যে। তারা মালাকুতের জগতে উড্ডিন হয়ে যে জ্ঞান লাভ করেন, তার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তাদের অবতরণ করতে হয় মানুষের ভাষায় দুনিয়ায় - নিজ সময়ের সিম্বলিক অর্ডারের মধ্যে।
আর জুলকারনাইন প্রতিনিধিত্ব করেন রাজা বাদশাহদের মতো সার্বভৌম শাসকদের ক্ষমতাকে। এই ধরণের দুনিয়াবী সার্বভৌম ক্ষমতা হাজির হয় নানান রকম পরের (ইয়াজুজ মাজুজ যাদের প্যারাডাইম) কাছ থেকে জাতিগুলাকে আলাদা করার ও নিরাপত্তা দেয়ার প্রয়োজনে। নিরাপত্তার প্রয়োজনেই রাজারা আইন ও বিচার কায়েম করেন। আধুনিক রাষ্ট্রও চলে এই প্যারাডাইমে। এই ধরণের সার্বভৌম ক্ষমতার টিকে থাকার জন্যে দেয়াল বা সীমান্তের প্রয়োজন হয়। এই ধরণের সার্বভৌম শাসন যতোই ভাল হউক না কেন (যেমনঃ জুলকারনাইনের ক্ষমতা), তা টিকে থাকবে কেবল কেয়ামত পর্যন্ত। কেননা কেয়ামতের সময় দেয়াল ধ্বসে পড়বে। তারপরই কায়েম হবে আল্লার বিচার।
খোয়াজ খিজিরের প্যারাডাইমই এরমধ্যে সবচাইতে রহস্যময়। তিনি যেই আইনে চলেন তা নবুয়তি ধরণের। যদিও এই আইনের মধ্যে সমাজের সার্বিক কল্যান রয়েছে, কিন্তু এই আইন সমাজের সকলের জন্যে উপযুক্ত নয়। এমনকি মুসার মতো নবীর জন্যেও নয়। খিজিরের সামনে যেই দিগন্ত হাজির, তিনি সেই অনুযায়ী আইনি সিদ্ধান্ত নেন। তিনি যা দেখতে পান, তা অন্যরা দেখতে পায় না। এই কারনে মুসাও তাকে ভুল বোঝেন, বারবার। এই ধরণের প্যারাডাইমকে আপনি সমাজ ও রাষ্ট্রে অপব্যবহারও করতে পারবেন না, যেহেতু খিজির কোন আইনি ব্যবস্থা কায়েম করেন না। তিনি নিভৃতে নিজের কাজ করতে থাকেন - একান্তের সাথে একান্তে।
তার মানে কি খিজিরের কোন সামাজিক গুরুত্ব নাই? তা না। কোরানের মুসার মতোই তার অনেক ছাত্র পাওয়া যায় - বাস্তব ইতিহাসে। যেমন ধরেন যে ইবনে আরাবী এবং বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী সরাসরি খিজিরের দেখা ও তার কাছে দীক্ষা পাওয়ার দাবি করেছেন। আধুনিক পাশ্চাত্যের গবেষকরা এইগুলাকে সাধারণত রূপকধর্মী গল্প বা হেজিওগ্রাফি ভাবেন। বা এই নিয়ে আলোচনা করা থেকেই বিরত থাকেন। কিন্তু আসলে, আরাবী বা জিলানী হয়তো এমন গুরুর সন্ধান পাইছিলেন যারা খিজিরের প্যারাডাইমের লোক।
এক হিসাবে, খিজিরের বিচার বা সহিংসতা হইল সেই ধরণের সহিংসতা, যাকে ওয়াল্টার বেনিয়ামিন বলেছেন - ডিভাইন ভায়লেন্স। এই ভায়লেন্স খোদায়ি বিচার। কিন্তু দুনিয়াবি কোন সংবিধান বা শরিয়তের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা যায় না। সংবিধান লিখিত হয়, ধ্বংস হয়। রাজা আসে, রাজা যায়। দেয়াল তৈরি হয়। ভেঙে পড়ে। গতকালের ইয়াজুজ-মাজুজ হয়তো আজকের সুলতান। আগামীকালের ধুলাবালি। কিন্তু খিজির জীবিত থাকেন "আসল জরুরি অবস্থায়"। শাসক শ্রেণীর কায়েম করা কোন কাল্পনিক "জরুরি অবস্থা”র মধ্যে তিনি আপনাকে দেখা দেবেন না।
- লেখাটি লেখকের ফেসবুকে প্রকাশিত, লেখার তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২২
খিজিরের দিগন্ত হইল বিশুদ্ধ সম্ভাবনার দিগন্ত। যা এখনো বর্তমান হয় নাই, কিন্তু হওয়ার সম্ভাবনা রাখে, তিনি তা দেখতে পান। একটা সম্ভাবনাকে তিনি রেখে দিতে পারেন সম্ভাবনার জগতে। বর্তমান করতে পারেন ভিন্ন কোন সম্ভাবনাকে। কার্যকারনের নিয়মে যা আপনার কাছে নিয়তি, খিজিরের কাছে তা একটা সম্ভাবনা মাত্র। যেই বস্তুগত কার্যাকারনের আসমানের নিচে আমরা বাস করি, তিনি উড়ে বেড়ান তার অনেক ঊর্ধে। সেই আসমানে, যাকে আবদুল কাদের জিলানী বলবেন তৃতীয় আসমান। যা বাণী (কালাম/লোগোস), আল্লার নামসমূহ এবং লাওহে মাহফুজ তথা বিশুদ্ধ সম্ভাবনার দিগন্ত।
আল্লাহ আমাদের নিয়তি জানেন, এর মানে হইল তিনি আমাদের সকল সম্ভাব্য নিয়তি জানেন। ইসলামি কালামতত্ত্বে এই ব্যাপারে অনেক আলাপ হইছে অতীতে। আমরা কোন নিয়তিকে বর্তমান করবো, তা আমাদের কর্মের উপরে নির্ভরশীল। তবে, সচেতনভাবে নিয়তি পাল্টাইতে পারেন তারা, যারা কিছুটা হইলেও খিজিরের মতো। তার মানে এই না যে খিজিরের ইচ্ছা একান্তই তার আপন ইচ্ছা। কেননা, খিজিরের দিগন্তে মানুষের ইচ্ছা আর আল্লার ইচ্ছায় ফারাক থাকে না।
বর্তমানতার বাইরের কোন কিছু যারা দেখতে পান না, বা উপলদ্ধি করতে পারেন না, তাদের পক্ষে খিজিরের কাজের অর্থ বোঝা কঠিন। কিন্তু খিজিরের জন্যে সেইটা কোন সমস্যা না। তিনি আনমনে খেলিতে থাকেন। নিরজনে।
- লেখাটি লেখকের ফেসবুকে প্রকাশিত
আরো দেখতে / পড়তে পারেন:
Moses and Khizr | Esoteric Narrative of Tasawwuf
Khidr, friends of God and ilm ladunni
Temporary Autonomous Zone to Permanent Autonomous Zone and Surah al-Kahf
Introductory presentation for a series applying the intratextual approach to the exegesis of Surat al-An'am, here on CASQI's channel.
সাধারন ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে একটি কমন ধারনা হলো: ইসলামের সংবিধান হলো কুরআন এবং আধুনিক সময়ে যেসব সেকুলার সংবিধান করা হয় তা হলো "তাগুত"। বিষয়টি কি সত্যিই এরকম সাদা কালো? কুরআন কি সংবিধানি? একজন ইসলামে বিশ্বাসীর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে এই প্রশ্নের মিমাংসায় পৌছতে হলে আমাদের প্রথমে কয়েকটি কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে এগুতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে […]
মুসলিমদের জীবন বিধানের সকল মূলনীতি কোরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর তোমার ওপর যে কিতাব (কোরআন) নাজিল করা হয়েছে তাতে রয়েছে সকল বিষয়ের বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৮৯) দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ দেশের মুসলিমদের কোরআন দেখে শুদ্ধ করে পড়ার প্রতি গুরুত্ব থাকলেও ইসলামি জীবন বিধানের মৌলিক উৎস […]
১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে’ যে মূলনীতিসমূহ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য যে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ কর্তৃক পেশ করা হয়েছে তাতে অন্যতম তিনটি মূলনীতি হলো, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’। বস্তুত এই মূলনীতিসমূহ […]
নাসর হামিদ আবু যায়েদ: এক মুক্তচিন্তার কুরআন গবেষকের জীবনচিত্র পূর্ণ নাম: নাসর হামিদ আবু যায়েদ (Nasr Hamid Abu Zayd)জন্ম: ১০ জুলাই ১৯৪৩, তানতা, মিসরমৃত্যু: ৫ জুলাই ২০১০, কায়রো, মিসরপরিচয়: কুরআন গবেষক, সাহিত্য সমালোচক, ধর্মতাত্ত্বিক ও মুক্তচিন্তার ইসলামী চিন্তাবিদ 🎓 শিক্ষা ও পেশাজীবন নাসর হামিদ আবু যায়েদ কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও ইসলামি শিক্ষায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ […]
In this interview, the host discuss with Dr. Munther Younes of Cornell University to discuss his research on the transmission and evolution of the Qur'anic text. Dr. Younes is Reis Senior Lecturer of Arabic Language and Linguistics at Cornell University and a renowned expert in the Arabic language. They discuss the Arabic of the Qur'an, […]
আর রহমান দয়াময় সত্তা আল্লামাল ক্বুরআন তিনি শিক্ষা দিয়েছেন পঠন ক্ষমতা খালাক্বাল ইনসান তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষ আল্লামাহুল বায়ান তিনি তাকে শিক্ষা দিয়েছেন স্পষ্টভাবে বিবৃত করার ভাষা। - সুরা আর-রাহমান, আয়াত ১-৪ সুরা আর-রাহমান কুরআনের ৫৫তম সুরা এবং মুসলিমদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি সুরা। এই সুরার সুচনায় আমরা মানুষের পাঠ করার ক্ষমতা এবং কথা বলার […]
The concept of fractals in the Quran can be explored through the lens of recurring patterns in nature, self-similarity, and divine order. While the Quran does not explicitly mention "fractals" (a term coined in modern mathematics), it frequently describes natural patterns that align with fractal geometry, reinforcing the idea of a unified and recursive design […]