দি  ইন্সটিটিউট ফর কুরআনিক রিসার্চ এন্ড এ্যাপ্লিকেশন (ইক্বরা)

লক্ষ্য

ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।

উদ্দেশ্য

ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।

প্রকাশিত বইসমূহ

আল কিতাব ও আল কুরআন - পার্থক্য ও সর্ম্পক

কুরআনে আল কিতাব বলতে কি বুঝায়? আল কুরআন বলতে আমরা ওহীকে বুঝবো নাকি ছাপানো বই বুঝবো নাকি অন্য কিছু বোঝার বিষয় আছে?

প্রথম পর্ব

আলোচনার মূল পয়েন্ট:

কিতাব শব্দের সাথে সর্ম্পকিত অর্থ যা পাওয়া যায় তা হলো: write, inscribe, compile, compose, formulate, produce, framework, register, record, law, compilations, literature, manual - এ সব ধরনের অর্থ ‘কিতাব’ শব্দটির etymology অনুসারে পাওয়া যায় যা একটি umbrella ওয়ার্ডের মতো ধারন করে। মূল অক্ষর কা, তা, বা

The triliteral root kāf tā bā (ك ت ب) occurs 319 times in the Quran, in seven derived forms:

49 times as the form I verb kataba (كَتَبَ)
once as the form III verb kātibu (كَاتِبُ)
once as the form VIII verb ik'tataba (ٱكْتَتَبَ)
260 times as the noun kitāb (كِتَٰب)
once as the noun kitābī (كِتَٰبِى)
six times as the active participle kātib (كَاتِب)
once as the passive participle maktūb (مَكْتُوب)

কিতাব শব্দটির বিভিন্ন অর্থ থাকায় কুরআনে এর প্রায়োগিক অর্থ বুঝতে হলে কনটেক্সট থেকে বুঝতে হয়।

কুরআনে কিতাব অনির্দিষ্ট বা indefinite এবং আল যুক্ত করে নির্দিষ্ট বা definite - দুই ভাবেই দেখতে পাই।

কুরআনের মূল অক্ষর কাফ রা হামযা

The triliteral root qāf rā hamza (ق ر أ) occurs 88 times in the Quran, in four derived forms:

16 times as the form I verb qara-a (قَرَأَ)
once as the form IV verb nuq'ri-u (نُقْرِئُ)
once as the noun qurū (قُرُوٓء)
70 times as the nominal qur'ān (قُرْءَان)

কিতাবের ও কুরআনের প্রায়োগিক অর্থ বোঝার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ আয়াত হলো:

১০:৩৭
ওয়া = আর। মা কানা = সম্ভব নয়। হাযাল কুরআনু = এই কুরআন। আইঁ ইউফতারা = রচনা করা। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো দ্বারা। ওয়ালাকিন্না = কিন্তু। তাসদীক্বাল্লাযী বায়না ইয়াদাইহি = ইহা তাসদীক/ সত্যতা প্রতিপাদন করে তার পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের। ওয়া = আর। তাফসীলাল কিতাবি = ইহা আল কিতাবের তফসীল/ বিস্তারিত বর্ণনা। লা রাইবা ফীহি = ইহাতে কোন সন্দেহ নেই। মির রব্বিল আলামীনা = ইহা রব্বুল আলামীনের তথা সমগ্র মহাবিশ্বের রবের পক্ষ থেকে (নাযিলকৃত)।

আর সম্ভব নয় এই কুরআন রচনা করা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো দ্বারা। কিন্তু ইহা তাসদীক/ সত্যতা প্রতিপাদন করে তার পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের। আর ইহা আল কিতাবের তফসীল/ বিস্তারিত বর্ণনা। ইহাতে কোন সন্দেহ নেই। ইহা রব্বুল আলামীনের তথা সমগ্র মহাবিশ্বের রবের পক্ষ থেকে (নাযিলকৃত)।

১০:৯৪
ফাইন = তারপর যদি। কুনতা = তুমি থাকো। ফী শাককিন = সন্দেহের মধ্যে। মিম্মা = সে ব্যাপারে যা। আনযালনা = আমরা নাযিল করেছি। ইলাইকা = তোমার প্রতি। ফাছআলিল্লাযীনা = তাহলে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করো যারা। ইয়াক্বরাউনাল কিতাবা = কিতাব পাঠ করে। মিন ক্বাবলিকা = তোমার আগে। লাক্বাদ = নিশ্চয়। জাআকাল হাক্বক্বু = তোমার কাছে এসেছে সত্য। মির রব্বিকা = তোমার রবের পক্ষ থেকে। ফালা তাকূনান্না = সুতরাং তুমি হয়ো না। মিনাল মুমতারীনা = সন্দেহ পোষণকারীদের অন্তর্ভুক্ত।

তারপর যদি তুমি থাকো সন্দেহের মধ্যে সে ব্যাপারে যা আমরা নাযিল করেছি তোমার প্রতি, তাহলে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করো যারা কিতাব পাঠ করে তোমার আগে (= কিতাব বহনকারী আহলে কিতাব)। নিশ্চয় তোমার কাছে এসেছে সত্য, তোমার রবের পক্ষ থেকে। সুতরাং তুমি হয়ো না সন্দেহ পোষণকারীদের অন্তর্ভুক্ত।

৭৫:১৭
ইন্না আলাইনা = নিশ্চয় আমাদেরই দায়িত্ব। জামআহু = উহা জমা/ সংকলন করা। ওয়া ক্বুরআনাহু = আর উহার কুরআন/ পাঠ ঠিক করা।

নিশ্চয় আমাদেরই দায়িত্ব উহা জমা/ সংকলন করা আর উহার কুরআন/ পাঠ ঠিক করা।

৭৫:১৮
ফাইযা = সুতরাং যখন। ক্বারা’নাহু = আমরা উহা পাঠ করি। ফাত্তাবি’ = তখন তুমি ইত্তেবা/ অনুসরণ কর। ক্বুরআনাহু = উহার কুরআন/ পাঠ।

সুতরাং যখন আমরা উহা পাঠ করি তখন তুমি ইত্তেবা/ অনুসরণ কর উহার কুরআন/ পাঠ।

৭:২০৪ 

ওয়া = আর। ইযা = যখন। ক্ব ‍ুরিয়াল কুরআনা = কেরাআত/ পাঠ করা হয় আল কোরআন। ফাছতামিঊ লাহু = তখন তোমরা উহা মনোযোগ সহকারে শুনো। ওয়া = আর। আনসিতূ = তোমরা চুপ থাকো। লাআল্লাকুম তুরহামূনা = যেন তোমরা রহমত পেতে পারো। 

আর যখন কেরাআত/ পাঠ করা হয় আল কোরআন, তখন তোমরা উহা মনোযোগ সহকারে শুনো আর তোমরা চুপ থাকো, যেন তোমরা রহমত পেতে পারো। 

৩৯:১
তানযীলুল কিতাবি = নাযিল করা হয়েছে এ বিধান / ঐশী সংবিধান। মিনাল্লাহিল আযীযিল হাকীমি = আল্লাহর পক্ষ থেকে যিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।

নাযিল করা হয়েছে এ বিধান আল্লাহর পক্ষ থেকে যিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।

৩৯:৩
আলা = জেনে রাখো। লিল্লাহিদ দ্বীনুল খালিসু = খালেস/ খাঁটি দ্বীন/ জীবনব্যবস্থা আল্লাহরই উদ্দেশ্যে। ওয়াল্লাযীনাত্তাখাযূ = আর যারা গ্রহণ করেছে। মিন দূনিহী = তাঁকে বাদ দিয়ে। আওলিয়াআ = অন্য আওলিয়াকে/ ওলিদেরকে/ অভিভাবকদেরকে। মা না’বুদুহুম = (আর বলে) ‘আমরা তাদের ইবাদাত/ দাসত্ব/ উপাসনা করি না। ইল্লা লিইউক্বাররিবূনা = এজন্য ছাড়া যে, তারা আমাদেরকে নিকটবর্তী করে দেবে। ইলাল্লাহি = আল্লাহর কাছে। যুলফা = নিকটবর্তী সত্তা হিসাবে। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। ইয়াহকুমু = ফায়সালা করে দেবেন। বায়নাহুম = তাদের মধ্যে। ফীমা হুম ফীহি ইয়াখতালিফূনা = ঐ বিষয়ে যাতে তারা ইখতেলাফ/ মতভেদ করছে। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। লা ইয়াহদি = হিদায়াত করেন না। মান = তাকে। হুয়া = যে। কাযিবুন কাফফারুন = মিথ্যাবাদী ও কাফের/ অবিশ্বাসী/ অস্বীকারকারী।

জেনে রাখো, খালেস/ খাঁটি দ্বীন/ জীবনব্যবস্থা (System) আল্লাহরই উদ্দেশ্যে। আর যারা গ্রহণ করেছে তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য আওলিয়াকে/ ওলিদেরকে/ অভিভাবকদেরকে, (আর বলে) ‘আমরা তাদের ইবাদাত/ দাসত্ব/ উপাসনা করি না এজন্য ছাড়া যে, তারা আমাদেরকে নিকটবর্তী করে দেবে আল্লাহর কাছে, নিকটবর্তী সত্তা হিসাবে’। নিশ্চয় আল্লাহ ফায়সালা করে দেবেন তাদের মধ্যে ঐ বিষয়ে যাতে তারা ইখতেলাফ/ মতভেদ করছে। নিশ্চয় আল্লাহ হিদায়াত করেন না তাকে যে মিথ্যাবাদী ও কাফের/ অবিশ্বাসী/ অস্বীকারকারী।

৪১:২
তানযীলুম মির রহমানির রহীমি = ইহা (কুরআন) নাযিল করা হয়েছে রহমানুর রহীম/ দয়াময় দয়াশীল সত্তার (আল্লাহর) পক্ষ থেকে।

ইহা (কুরআন) নাযিল করা হয়েছে রহমানুর রহীম/ দয়াময় দয়াশীল সত্তার (আল্লাহর) পক্ষ থেকে।

৪১:৩
কিতাবুন ফুসসিলাত আয়াতুহু = ইহা এমন একটি কিতাব তফসীল/ বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহকারে বিবৃত হয়েছে যার আয়াতসমূহ। কুরআনান আরাবিয়্যান = আরবী ভাষার কুরআন। লিক্বাওমি ইয়া’লামূনা = সেই কওমের জন্য যারা ইলম/ জ্ঞান রাখে।

ইহা এমন একটি কিতাব তফসীল/ বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহকারে বিবৃত হয়েছে যার আয়াতসমূহ, আরবী ভাষার কুরআন, সেই কওমের জন্য যারা ইলম/ জ্ঞান রাখে।

১৭:১০৬
ওয়া = আর। ক্বুরআনান = ক্বুরআনকে। ফারাক্বনাহু = আমরা পৃথক পৃথক করে নাযিল করেছি। লিতাক্বরআহু = যেন তুমি উহা পাঠ করো। আলান্নাছি = মানুষের কাছে। আলা মুকছিন = থেমে থেমে। ওয়া = আর। নাযযালনাহু = আমরা উহাকে নাযিল করেছি। তানযীলান = ক্রমশ: অবতরণ পদ্ধতিতে।

আর ক্বুরআনকে আমরা পৃথক পৃথক করে নাযিল করেছি, যেন তুমি উহা পাঠ করো মানুষের কাছে থেমে থেমে, আর আমরা উহাকে নাযিল করেছি ক্রমশ: অবতরণ পদ্ধতিতে।

. . .

কুরআন বলতে যখন যে অংশটি পড়া হয়, পাঠ করা হয়, পাঠ করে শুনানো হয় তখন সেটিকে রিডিং বা পঠিত বা কুরআনান বলা হচ্ছে। আর যখন সবগুলো রিডিংকে এক সাথে নির্দেশ করা হচ্ছে তখন সেটি আল-কুরআন।

কিতাব বলতে আমরা বুঝতে পারি আল্লাহর বিধান বা ঐশী বিধান। কিতাব হলো সেই আইন বিধান প্রাকৃতিক নিয়ম যা সৃষ্টির শুরু থেকে অপরিবর্তিত, আল্লাহর সুন্নাহ বা রীতি - এ কারনেই বলা হয় আল্লাহর সুন্নাহয় কোন পরিবর্তন নেই। কিতাব দ্বারা স্রষ্টার সৃষ্টি উদ্দেশ্য এবং সিস্টেমকেও বুঝায়।

সিরিয়াক শব্দ ক্বিরাইআনা (Scripture, Revelation Reading, Taking Lesson) কে আরেকভাবে কুরআনের অর্থ বুঝা যায় সেটি হলো: কিতাব বা ঐশী কিতাব, ঐশী আইন (Divine Principles) বা ঐশী নির্দেশনার পাঠকেই কুরআন বলে।

কিতাবকে বা বিধানকে এক্সপ্লেইন / ব্যাখ্যা করার জন্য যে বাণী সেটা পাঠ বা কুরআনের অংশ।

দ্বিতীয় পর্ব

উল্লেখযোগ্য আয়াত:

৪৬:২
তানযীলুল কিতাবি = নাযিল করা হয়েছে এ কিতাব। মিনাল্লাহিল আযীযিল হাকীমি = আল্লাহর পক্ষ থেকে যিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।

নাযিল করা হয়েছে এ কিতাব আল্লাহর পক্ষ থেকে যিনি মহাশক্তিমান ও মহাবিজ্ঞ।

৪৬:৩
মা খালাক্বনাছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদা ওয়া মা বায়নাহুমা = আমরা নাযিল করিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সেসবকিছু। ইল্লা বিল হাক্বক্বি = যথাযথভাবে ছাড়া। ওয়া = আর। আজালিম মুসাম্মা = আজালুম মুসাম্মা/ নির্দিষ্ট শেষ সময়সীমার জন্য ছাড়া। ওয়াল্লাযীনা কাফারূ = আর যারা কুফর করেছে তারা। আম্মা উনযিরূ = যে বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে তা থেকে। মু’রিদ্বূনা = বিমুখ হয়ে আছে।

আমরা নাযিল করিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সেসবকিছু যথাযথভাবে ছাড়া আর নির্দিষ্ট শেষ সময়সীমার জন্য ছাড়া। আর যারা কুফর করেছে তারা যে বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে তা থেকে বিমুখ হয়ে আছে।

৪৬:৪
ক্বুল = বল। আরাআইতুম মা তাদঊনা = তোমরা কি তাদের অবস্থা ভেবে দেখেছ যাদেরকে তোমরা ডাক। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে? আরূনী = তোমরা আমাকে দেখাও। মা যা খালাক্বূ = তারা কী সৃষ্টি করেছে। মিনাল আরদি = পৃথিবীর মধ্য থেকে। আম = নাকি। লাহুম = তাদের জন্য আছে। শিরকুন ফিছ ছামাওয়াতি = আকাশমন্ডলীতে কোন শিরক/ অংশীদারিত্ব? ঈতূনী = তোমরা আমার কাছে আন। বিকিতাবিম মিন ক্বাবলি হাযা = এর সমর্থনে এর আগের কোন কিতাব। আও = অথবা। আছারাতিম মিন ইলমিন = পরম্পরাগত জ্ঞান। ইন = যদি। কুনতুম = তোমরা হও। সদিক্বীনা = সাদেক্বীন/ সত্যবাদী।

বল, ‘তোমরা কি তাদের অবস্থা ভেবে দেখেছ যাদেরকে তোমরা ডাক, আল্লাহকে বাদ দিয়ে? তোমরা আমাকে দেখাও তারা কী সৃষ্টি করেছে পৃথিবীর মধ্য থেকে, নাকি তাদের জন্য আছে আকাশমন্ডলীতে কোন শিরক/ অংশীদারিত্ব? তোমরা আমার কাছে আন এর সমর্থনে এর আগের কোন কিতাব অথবা পরম্পরাগত জ্ঞান, যদি তোমরা হও সত্যবাদী।

৪৬:৫
ওয়া = আর। মান আদ্বল্লু মিম্মান = তার চেয়ে বড় পথভ্রষ্ট কে হতে পারে যে। ইয়াদঊ = ডাকে। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে ছাড়া এমন সত্তাকে। মাল্লা ইয়াছতাজিব লাহু = যে তার ডাকে সাড়া দিতে পারবে না। ইলা ইয়াওমিল ক্বিয়ামাতি = ইয়াওমুল কিয়ামাত/ কিয়ামাত দিবস পর্যন্ত। ওয়া = আর। হুম = তারা। আন দুআয়িহিম = তাদের দোয়া সম্পর্কে। গাফিলূনা = গাফেল/ অনবহিত।

আর তার চেয়ে বড় পথভ্রষ্ট কে হতে পারে যে ডাকে আল্লাহকে ছাড়া এমন সত্তাকে যে তার ডাকে সাড়া দিতে পারবে না ইয়াওমুল কিয়ামাত/ কিয়ামাত দিবস পর্যন্ত আর তারা তাদের দোয়া সম্পর্কে গাফেল/ অনবহিত?

৪৬:৬
ওয়া = আর। ইযা = যখন। হুশিরান্নাছু = হাশর/ সমবেত করা হবে মানুষকে। কানূ = তখন তারা হবে। লাহুম = তাদের জন্য। আদওয়াআন = শত্রু। ওয়া = আর। কানূ = তারা হবে। বিইবাদাতিহিম = তাদের ইবাদাত/ দাসত্ব/ উপাসনা সম্পর্কে। কাফিরূনা = কাফের/ অবিশ্বাসী।

আর যখন হাশর/ সমবেত করা হবে মানুষকে তখন তারা হবে তাদের জন্য শত্রু। আর তারা হবে তাদের ইবাদাত/ দাসত্ব/ উপাসনা সম্পর্কে কাফের/ অবিশ্বাসী।

৪৬:৭
ওয়া = আর। ইযা = যখন। তুতলা = তিলাওয়াত/ আবৃত্তি করা হয়। আলাইহিম = তাদের কাছে। আয়াতুনা বাইয়িনাতিন = আমাদের স্পষ্ট আয়াতসমূহ। ক্বলাল্লাযীনা = তখন তারা বলে যারা। কাফারূ লিল হাক্বক্বি = সত্যের প্রতি কুফর/ অবিশ্বাস করেছে। লাম্মা জাআহুম = যখন তা তাদের কাছে এসেছে। হাযা = ইহা। ছিহরুম মুবীনুন = স্পষ্ট (কথার) যাদু।

আর যখন তিলাওয়াত/ আবৃত্তি করা হয় তাদের কাছে আমাদের স্পষ্ট আয়াতসমূহ, তখন তারা বলে যারা সত্যের প্রতি কুফর/ অবিশ্বাস করেছে যখন তা তাদের কাছে এসেছে, ‘ইহা স্পষ্ট (কথার) যাদু’।

৪৬:৮
আম = নাকি। ইয়াক্বূলূনাফতারাহু = তারা বলে যে, ‘সে ইহা রচনা করেছে’। ক্বুল = বলো। ইনিফতারায়তুহূ = যদি তা আমি রচনা করে থাকি। ফালা তামলিকূনা = তোমরা সক্ষম হবে না। লী = আমাকে বাঁচাতে। মিনাল্লাহি = আল্লাহর পাকড়াও থেকে। শাইয়ান = কিছুমাত্রও। হুয়া = তিনি। আ’লামু = জানেন। বিমা তুফীদ্বূনা ফীহি = উহা সম্পর্কে যা তোমরা আলোচনা করে বেড়াচ্ছো। কাফা = তিনি যথেষ্ট। বিহী = উহার ব্যাপারে। শাহীদাম বায়নী ওয়া বায়নাকুম = আমার ও তোমাদের মধ্যে স্বাক্ষী হিসাবে। ওয়া = আর। হুয়াল গাফূরুর রহীমু = তিনি গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল।

নাকি তারা বলে যে, ‘সে ইহা রচনা করেছে’। বলো, ‘যদি তা আমি রচনা করে থাকি, তাহলে তোমরা সক্ষম হবে না আমাকে বাঁচাতে আল্লাহর পাকড়াও থেকে কিছুমাত্রও। তিনি জানেন উহা সম্পর্কে যা তোমরা আলোচনা করে বেড়াচ্ছো। তিনি যথেষ্ট উহার ব্যাপারে আমার ও তোমাদের মধ্যে স্বাক্ষী হিসাবে। আর তিনি গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল।

৪৬:৯
ক্বুল = বল। মা কুনতু = আমি নই। বিদআম মিনার রুসুলি = রসূলদের মধ্যে নতুন/ ব্যতিক্রম কেউ। ওয়া = আর। মা আদরী = আমি জানি না। মা ইউফআলু = কী করা হবে। বী = আমার সাথে। ওয়া = আর। লা বিকুম = না (আমি জানি কী করা হবে) তোমাদের সাথে। ইন আত্তাবিউ = আমি ইত্তেবা/ অনুসরণ করি না। ইল্লা মা ইউহা ইলাইয়া = উহা ছাড়া যা ওহী করা হয় আমার প্রতি। ওয়া = আর। মা আনা = আমি নই। ইল্লা নাযীরুম মুবীনুন = নাযীরুম মুবীন/ প্রকাশ্য ও স্পষ্ট সতর্ককারী ছাড়া অন্য কিছু।

বল, “আমি নই রসূলদের মধ্যে নতুন/ ব্যতিক্রম কেউ। আর আমি জানি না কী করা হবে আমার সাথে আর না (আমি জানি কী করা হবে) তোমাদের সাথে। আমি ইত্তেবা/ অনুসরণ করি না উহা ছাড়া যা ওহী করা হয় আমার প্রতি। আর আমি নই নাযীরুম মুবীন/ স্পষ্ট সতর্ককারী ছাড়া অন্য কিছু”।

৪৬:১০
ক্বুল = বল। আরাআয়তুম = তোমরা কি ভেবে দেখেছ। ইন = যদি। কানা = উহা (= কুরআন) হয়। মিন ইনদিল্লাহি = আল্লাহর পক্ষ থেকে। ওয়া = আর। কাফারতুম বিহী = তোমরা কুফর/ অবিশ্বাস করে থাক উহার প্রতি। ওয়া = অথচ। শাহিদা = স্বাক্ষ্য দিয়েছে। শাহীদুম মিম বানী ইসরাঈলা = বনী ইসরাইলের একজন স্বাক্ষী। আলা মিছলিহী = উহার অনুরূপ (কিতাবের) ব্যাপারে। ফাআমানা = তারপর সে ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ওয়াছতাকবারতুম = আর তোমরা অহংকার করেছো। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। লা ইয়াহদিল ক্বাওমায যলিমীনা = হিদায়াত করেন না যালিমদের কওমকে/ সম্প্রদায়কে।

বল, ‘তোমরা কি ভেবে দেখেছ যদি উহা (= কুরআন) হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে, আর তোমরা কুফর/ অবিশ্বাস করে থাক উহার প্রতি; অথচ স্বাক্ষ্য দিয়েছে বনী ইসরাইলের একজন স্বাক্ষী উহার অনুরূপ (কিতাবের) ব্যাপারে। তারপর সে ঈমান/ বিশ্বাস করেছে আর তোমরা অহংকার করেছো। নিশ্চয় আল্লাহ হিদায়াত করেন না যালিমদের কওমকে/ সম্প্রদায়কে।

৪৬:১১
ওয়া = আর। ক্বলাল্লাযীনা = তারা বলে যারা। কাফারূ = কুফর/ অবিশ্বাস করেছে। লিল্লাযীনা = তাদেরকে উদ্দেশ্য করে যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। লাও = যদি। কানা = উহা হতো। খায়রান = খায়ের/ কল্যাণকর। মা ছাবাক্বূনা = তাহলে তারা অগ্রগামী হতে পারতো না। ইলাইহি = উহার ক্ষেত্রে। ওয়া = আর। ইয = যখন। লাম ইয়াহতাদূ = তারা হিদায়াত পায়নি। বিহী = উহার প্রতি। ফাছাইয়াক্বূলূনা = তাই শীঘ্রই তারা বলবে। হাযা = ইহা। ইফকুন ক্বাদীমুন = পুরাতন মিথ্যা।

আর তারা বলে যারা কুফর/ অবিশ্বাস করেছে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে, ‘যদি উহা হতো খায়ের/ কল্যাণকর, তাহলে তারা অগ্রগামী হতে পারতো না উহার ক্ষেত্রে’। আর যখন তারা হিদায়াত পায়নি উহার প্রতি, তাই শীঘ্রই তারা বলবে, ‘ইহা পুরাতন মিথ্যা’।

৪৬:১২
ওয়া = আর। মিন ক্বাবলিহী = তার পূর্বে এসেছিল। কিতাবু মূসা = মূসার কিতাব। ইমামান = ইমাম/ অগ্রবর্তীস্বরূপ। ওয়া = ও। রহমাতান = রহমত/ দয়াস্বরূপ। ওয়া = আর। হাযা কিতাবুম মুসাদ্দিক্বুন = এ কিতাব তার সত্যায়নকারী। লিছানান আরাবিয়্যান = আরবী ভাষায়। লিইউনযিরাল্লাযীনা = তাদেরকে সতর্ক করার জন্য যারা। যলামূ = যুলুম করেছে। ওয়া = আর। বুশরা লিল মুহছিনীনা = মুহসিনদের/ উত্তম আচরণকারীদের জন্য সুসংবাদ।

আর তার পূর্বে এসেছিল মূসার কিতাব ইমাম/ অগ্রবর্তীস্বরূপ ও রহমত/ দয়াস্বরূপ। আর এ কিতাব তার সত্যায়নকারী, আরবী ভাষায়, তাদেরকে সতর্ক করার জন্য যারা যুলুম করেছে আর মুহসিনদের/ উত্তম আচরণকারীদের জন্য সুসংবাদ।

২:১২১
আল্লাযীনা আতাইনাহুমুল কিতাবা = যাদেরকে আমরা কিতাব দিয়েছি। ইয়াতলূনাহু = যারা তা তিলাওয়াত/ অধ্যয়ন করে। হাক্কা তিলাওয়াতিহী = উহাকে তিলাওয়াতের হক্ব আদায় করে। উলায়িকা = তারাই। ইউ’মিনূনা বিহী = উহার প্রতি (কিতাবের প্রতি) ঈমান রাখে। ওয়া মান ইয়াকফুর বিহী = আর যে উহার প্রতি কুফর/ অবিশ্বাস করে। ফাউলায়িকা হুমুল খাছিরূন = তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।

যাদেরকে আমরা কিতাব দিয়েছি (তাদের মধ্য থেকে) যারা তা তিলাওয়াত/ অধ্যয়ন করে উহাকে তিলাওয়াতের হক্ব আদায় করে, তারাই উহার প্রতি (= কিতাবের প্রতি) ঈমান রাখে। আর যে উহার প্রতি কুফর/ অবিশ্বাস করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।

২:১২৯
রব্বানা = আমাদের রব। ওয়াবআছ = সমুত্থিত (প্ররণ) করুন। ফীহিম = তাদের মধ্যে। রসূলান = একজন রসূল। মিনহুম = তাদের মধ্য থেকে। ইয়াতলূ আলাইহিম আয়াতিকা = যে তিলাওয়াত করবে তাদের সামনে আপনার আয়াতসমূহ। ওয়া ইউআল্লিমুহুমুল কিতাবা ওয়াল হিকমাতা = আর তাদেরকে শিক্ষাদান করবে কিতাব ও হিকমাত। ওয়া ইউযাক্কিহিম = আর তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবে। ইন্নাকা আনতাল আযীযুল হাকীম = নিশ্চয় আপনি আল আযীয/ মহাশক্তিমান, আল হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।

আমাদের রব, সমুত্থিত (প্রেরণ) করুন তাদের মধ্যে একজন রসূল তাদের মধ্য থেকে যে তিলাওয়াত করবে তাদের সামনে আপনার আয়াতসমূহ আর তাদেরকে শিক্ষাদান করবে কিতাব ও হিকমাত, আর তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবে। নিশ্চয় আপনি আল আযীয/ মহাশক্তিমান, আল হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।

. . .

কিতাব বললেই যে বই বুঝা হয়, কুরআনে কিতাব প্রেক্ষিত অনুসারে সেটি বুঝায় না। বরং কিতাব একটি আমব্রেলা টার্ম বা যে শব্দের মধ্যে অনেকগুলো অর্থ রয়েছে এবং ব্যাপকও বটে। প্রেক্ষিত অনুসারে এর প্রায়োগিক অর্থ ভিন্ন।

কুরআনের যে অংশগুলো বিধান নয়, কিন্তু বিধানকে ব্যাখ্যা করার জন্য, বিধানকে অন্যের কাছে পৌছানোর জন্য নির্দেশনার অংশ সেগুলো বিধান নয়, বরং কুরআন যা পঠিত হয়। যেমন: নবীকে সম্বোধন করে কিছু ব্যক্তিগত নির্দেশনা, নবীকে সতর্ক করা বা অন্যদের নবীর সাথে আচার আচরনে সংশোধন করা - এ সবগুলোই কুরআন / পাঠ - কিন্তু কিতাব নয়। এই আলোচনায় এ ধরনের একটি বৈশিষ্ট্যময় পার্থক্য করা হয়েছে কিতাব ও কুরআনের মধ্যে।

যেকোন ঐশী বাণী যখন পাঠ করা হয়, তখন তার পাঠকেও কুরআন বলা হয়, কারন কুরআন মানেই হলো যা পঠিত হয়। যদি ঐ বাণী স্রষ্টার প্রেরিত হয়, সেটি মানুষকে পাঠ করে শুনানো হলো ‍কুরআন। আর কুরআনের মধ্যে যে সাশ্বত বিধান সেটি হলো আল কিতাবের অংশ।

কিতাব যদি হয় আল্লাহর প্রিন্সিপ্যাল বা ভ্যালু সিস্টেম, হিকমাত হলো সেটির বাস্তব প্রয়োগ, মানব সমাজে বিভিন্ন যুগে যুগে কিতাবের শিক্ষার প্রায়োগিক প্রজ্ঞা।


ক্রেডিট: The TruthSeeker - The Hanif YouTube Channel

ট্যাগ / কী-ওয়ার্ড:

অন্যান্য প্রবন্ধ

December 5, 2025
test

test

December 5, 2025
По какой причине мы обращаемся к эпизодам успеха в воображении

По какой причине мы обращаемся к эпизодам успеха в воображении Наш разум организован таким образом, что яркие положительные происшествия оставляют значительный марку в сознании. Мы постоянно возвращаемся к периодам триумфа, свершения и фортуны, испытывая их вновь и еще раз в своем воображении. Этот эффект обладает основательные психологические истоки и исполняет важные роли для нашего чувственного […]

December 5, 2025
По какой причине боязнь неудачи усиливает внутреннее возбуждение

По какой причине боязнь неудачи усиливает внутреннее возбуждение Опасение неудачи формирует характерный аффективный фоновой уровень, который может существенно усилить степень внутреннего напряга а также стимулировать стремление к активному шагам. Данный ход Кент казино основан на работе базовых эмоционально-психологических закономерностей, связанных с анализом опасностей, ожиданием итога и откликом тела на неопределённость. Со временем страх трансформируется в […]

December 5, 2025
Ungeachtet dies Dorf stieg nv casino erst inoffizieller mitarbeiter fruhen 21

Nv casino: Geschichte Unser Geschichte des Casinos Kraulen-Baden war massiv unter zuhilfenahme von ein Sage diverses Ortes Kraulen-Kraulen oder dessen Stufen zum internationalen Erholungsort zusammen.

December 5, 2025
Каким образом человеческий разум откликается на неожиданные победы исключительно выразительно

Каким образом человеческий разум откликается на неожиданные победы исключительно выразительно Людской интеллект сконструирован так, что внезапные положительные происшествия порождают более сильную реакцию, чем прогнозируемые результаты. Этот явление обладает основательные прогрессивные истоки и играет значимую роль в создании поступков. Leon Casino становится чрезвычайно значимым элементом, влияющим на биохимические механизмы в мозгу. Актуальные анализы свидетельствуют, что Леон […]

December 5, 2025
Как переживания трансформируют повседневные события в незабываемые

Как переживания трансформируют повседневные события в незабываемые Человеческая память организована таким образом, что эмоциональные переживания создают в памяти более устойчивые следы, чем обычные события. Эта характеристика мозга дает возможность нам образовывать яркие воспоминания о эпизодах, которые на поверхности могут показаться простыми. Осознание принципов эмоциональной памяти помогает постичь, почему определенные дни запоминаются на всю жизнь, а […]

December 5, 2025
Как чувства превращают обычные события в запоминающиеся

Как чувства превращают обычные события в запоминающиеся Наша мозг устроена таким образом, что чувственные ощущения формируют в ней более глубокие следы, чем безэмоциональные моменты. Такая характеристика мозга дает возможность нам образовывать четкие воспоминания о эпизодах, которые на первый взгляд могут показаться простыми. Осознание принципов эмоциональной памяти помогает постичь, по какой причине определенные дни фиксируются на […]

December 5, 2025
Почему личности дорожат чувственные подъемы

Почему личности дорожат чувственные подъемы Чувственные подъемы являются собой острые эмоции, которые выходят за край обычного ряда переживаний. Невзирая на то, что мощные ощущения умеют вызывать неудобство, человек бессознательно склонны к подобным ощущениям. Дэдди казино процессы построения эмоциональной запоминания толкают нас добиваться яркие ощущения, которые умеют изменить наш понимание бытия и расширить бытовой багаж. Органическая […]