শেষ জামানা বা আখিরুজ্জামান সম্পর্কে কুরআনে কি বলে? বিস্তারিত জানাচ্ছেন একজন কুরআনের স্কলার
ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।
ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।
সাধারন ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে একটি কমন ধারনা হলো: ইসলামের সংবিধান হলো কুরআন এবং আধুনিক সময়ে যেসব সেকুলার সংবিধান করা হয় তা হলো "তাগুত"।
বিষয়টি কি সত্যিই এরকম সাদা কালো?
কুরআন কি সংবিধানি? একজন ইসলামে বিশ্বাসীর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে এই প্রশ্নের মিমাংসায় পৌছতে হলে আমাদের প্রথমে কয়েকটি কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে এগুতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে "সংবিধানের ধারনা" বিশেষ করে আধুনিক রাষ্ট্রের পরিভাষায় "সংবিধান বলতে কি বুঝি" এ ধারনাটি। তার জন্য আমাদের সংবিধানের সংজ্ঞা এবং আধুনিক রাষ্ট্র ও এর ইতিহাসেটা দেখে আসা যাক।
আধুনিক রাষ্ট্রের প্রেক্ষিতে "সংবিধান" বলতে একটি লিখিত বা অলিখিত নথি বা নিয়মাবলী বোঝায়, যা কোনো রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার মূল কাঠামো, নীতি, এবং আইনের ভিত্তি নির্ধারণ করে। "সংবিধান" এমন একটি মৌলিক আইনি দলিল যা রাষ্ট্রের কাঠামো, সরকারের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষমতা ও কার্যাবলী, এবং নাগরিক ও রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে। এটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন হিসেবে বিবেচিত হয় এবং অন্য সকল আইন এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে বাধ্য।
এটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইনি দলিল, যা সরকারের ক্ষমতা, নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য, এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রণ করে। সংবিধান রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, শৃঙ্খলা, এবং নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা রোধ করে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের সংবিধান ১৯৭২ সালে প্রণীত হয়, যা দেশের শাসনব্যবস্থা ও নাগরিক অধিকারের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
আধুনিক সংবিধানে সাধারণত নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে:
আধুনিক রাষ্ট্রের জন্য সংবিধানের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি কেবল একটি আইনি দলিল নয়, বরং এটি একটি জাতির পরিচয়, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও মূল্যবোধের প্রতিফলন। সংবিধান রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, জনগণের অধিকার সুরক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আধুনিক রাষ্ট্র হলো একটি সুনির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমানা, সার্বভৌম ক্ষমতা, কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা, এবং নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত রাজনৈতিক সত্তা। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
সার্বভৌমত্ব: রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা, যা অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিকভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করে।
ভৌগোলিক সীমানা: নির্দিষ্ট অঞ্চল, যেখানে রাষ্ট্রের আইন প্রযোজ্য।
নাগরিকত্ব: রাষ্ট্রের সঙ্গে নাগরিকদের আইনি সম্পর্ক, যা অধিকার ও কর্তব্য নির্ধারণ করে।
আইনের শাসন: সংবিধান ও আইনের অধীনে শাসন, যা স্বেচ্ছাচারিতা রোধ করে।
প্রতিষ্ঠান: সংসদ, বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ, এবং আমলাতন্ত্রের মতো সংগঠিত কাঠামো।
আধুনিক রাষ্ট্র সাধারণত গণতান্ত্রিক, সমাজকল্যাণমুখী, এবং নাগরিকদের অধিকার ও স্বাধীনতা সুরক্ষার দিকে মনোযোগী হয়।
আধুনিক রাষ্ট্রের ধারণা মূলত ইউরোপে ১৬-১৭ শতকে গড়ে ওঠে, যদিও এর শিকড় আরও পূর্বে রয়েছে। এর উৎপত্তি ও বিকাশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়:
ওয়েস্টফালিয়ার শান্তিচুক্তি (১৬৪৮): ত্রিশ বছরের যুদ্ধের পর এই চুক্তি আধুনিক রাষ্ট্রের ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করে। এটি সার্বভৌমত্বের ধারণাকে সুস্পষ্ট করে, যেখানে রাষ্ট্রগুলো নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্বাধীন হলো এবং ধর্মীয় হস্তক্ষেপ কমে গেলো।
মধ্যযুগীয় থেকে আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তর: মধ্যযুগে ইউরোপে সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থা ও ধর্মীয় কর্তৃত্ব প্রাধান্য পেত। ১৫-১৬ শতকে কেন্দ্রীয় রাজতন্ত্র (যেমন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড) শক্তিশালী হলে রাষ্ট্রের ধারণা জোরালো হয়।
আলোকিত যুগ (১৭-১৮ শতক): জন লক, হবস, রুশো, মন্তেস্কু প্রমুখ দার্শনিকদের সমাজচুক্তি তত্ত্ব আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি তৈরি করে। এই তত্ত্বে রাষ্ট্রকে নাগরিকদের সম্মতির ফল হিসেবে দেখা হয়, যা তাদের অধিকার রক্ষা করে।
ফরাসি ও আমেরিকান বিপ্লব (১৭৭৬, ১৭৮৯): এই বিপ্লবগুলো গণতন্ত্র, নাগরিক অধিকার, এবং সংবিধানভিত্তিক শাসনের ধারণাকে প্রসারিত করে। ফরাসি বিপ্লব "স্বাধীনতা, সমতা, ভ্রাতৃত্ব" এবং আমেরিকান সংবিধান আধুনিক রাষ্ট্রের মডেল হিসেবে কাজ করে।
ঔপনিবেশিকতার পতন (২০ শতক): দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এশিয়া, আফ্রিকা, ও লাতিন আমেরিকায় ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটে, এবং নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রগুলো আধুনিক রাষ্ট্রের ধারণাকে গ্রহণ করে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়ে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বৈশ্বিকীকরণ ও সমসাময়িক যুগ: ২০ শতকের শেষভাগ থেকে বৈশ্বিকীকরণ, আন্তর্জাতিক সংগঠন (যেমন, জাতিসংঘ), এবং মানবাধিকারের ধারণা আধুনিক রাষ্ট্রের চরিত্রকে আরও জটিল ও বহুমাত্রিক করেছে।
সংক্ষেপে: আধুনিক রাষ্ট্র সার্বভৌমত্ব, আইনের শাসন, এবং নাগরিকদের অধিকারের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট মধ্যযুগীয় সামন্ততন্ত্রের পতন, ওয়েস্টফালিয়ার শান্তিচুক্তি, আলোকিত যুগের দর্শন, এবং বিপ্লব ও স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিকশিত হয়েছে। বর্তমানে, আধুনিক রাষ্ট্র বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নিজেদের ভূমিকা পুনর্নির্ধারণ করছে।
আধুনিক রাষ্ট্রের পরিভাষায় সংবিধান বলতে একটি নির্দিষ্ট লিখিত বা অলিখিত আইনি দলিল বোঝায়, যা রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা, নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য, এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রণ করে। এটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন, যা মানব-নির্মিত, সময়ের সাথে সংশোধনযোগ্য এবং সুনির্দিষ্ট ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক সীমানার মধ্যে প্রযোজ্য। এই প্রেক্ষিতে, কুরআনকে সংবিধান বলা সম্ভব নয়। এর কারণগুলো নিম্নরূপ:
১. উৎস ও প্রকৃতির পার্থক্য:
২. উদ্দেশ্য ও পরিধি:
৩. বিষয়বস্তু ও গঠন:
৪. প্রয়োগ ও ব্যাখ্যা:
৫. সংশোধনযোগ্যতা:
৬. ধর্মনিরপেক্ষতা বনাম ধর্মীয় ভিত্তি:
কিছু মুসলিম-প্রধান রাষ্ট্রে কুরআনকে আইনের উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সৌদি আরবের মৌলিক আইনে বলা আছে যে কুরআন এবং সুন্নাহ তাদের শাসনব্যবস্থার ভিত্তি। তবে, এমনকি এই ক্ষেত্রেও, কুরআন সরাসরি সংবিধান হিসেবে কাজ করে না; বরং এটি থেকে উদ্ভূত আইন এবং ফিকহের মাধ্যমে শাসন পরিচালিত হয়। কারণ, কুরআন রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বিশদ কাঠামো (যেমন, নির্বাচন, প্রশাসন, অর্থনীতির বিস্তারিত নীতি) প্রদান করে না।
কুরআনকে আধুনিক রাষ্ট্রের পরিভাষায় সংবিধান বলা যায় না, কারণ এটি একটি ঐশী ধর্মীয় গ্রন্থ, যা রাষ্ট্রীয় শাসনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট আইনি ও প্রশাসনিক কাঠামো প্রদান করে না। তবে, কুরআন কিছু রাষ্ট্রে আইনের মূল উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে, যেখানে এটি থেকে উদ্ভূত আইন ও নীতি রাষ্ট্রীয় শাসনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই দুটির উদ্দেশ্য, প্রকৃতি, এবং প্রয়োগের ধরন ভিন্ন।
..
থিসিস: কুরআন আধুনিক রাষ্ট্রের সংবিধান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না, কারণ এটি প্রধানত ব্যক্তিগত বিশ্বাসীদের জন্য একটি ধর্মীয় গাইড, নয় রাষ্ট্র শাসনের জন্য একটি আইনি ফ্রেমওয়ার্ক। তবে, কিছু ইসলামি রাষ্ট্রে এটি আইনের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বিষয়টি বিতর্কের মধ্যে রাখে।
কুরআন হলো একটি ধর্মীয় গ্রন্থ, যা মুসলিমদের জন্য আধ্যাত্মিক এবং নৈতিক নির্দেশনা প্রদান করে। তবে, এটি আধুনিক রাষ্ট্রের সংবিধানের মতো রাজনৈতিক এবং আইনি কাঠামো প্রদান করে না। উদাহরণস্বরূপ, কুরআনে নির্বাচন প্রক্রিয়া বা সরকারের গঠনের বিস্তারিত নির্দেশনা নেই। তবে, কিছু রাষ্ট্রে, যেমন সৌদি আরব, কুরআন শরিয়ার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, কিন্তু তাদের আলাদা সংবিধান রয়েছে।
এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ধর্ম এবং রাজনীতির মধ্যে সম্পর্ক বোঝার জন্য সাহায্য করে, বিশেষত ইসলামি রাষ্ট্রগুলোতে। এটি বিতর্কের বিষয়, কারণ কিছু গোষ্ঠী কুরআনকে সংবিধান হিসেবে দেখতে চায়, আর কিছু গোষ্ঠী এটিকে ধর্মীয় গাইড হিসেবে রাখতে চায়।
আধুনিক রাষ্ট্রের সংবিধানের প্রেক্ষিতে কুরআনকে সংবিধান হিসেবে বিবেচনা করা যায় কি, এই প্রশ্নটি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে হলে আমাদের প্রথমে আধুনিক সংবিধানের সংজ্ঞা এবং কুরআনের প্রকৃতি বোঝা প্রয়োজন। নিচে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা দেওয়া হলো, যা ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষিত।
আধুনিক রাষ্ট্রের সংবিধান হলো একটি মানব-নির্মিত দলিল, যা রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা, নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য, এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কার্যপ্রণালী নির্ধারণ করে। এটি সাধারণত লিখিত রূপে থাকে এবং সংশোধনযোগ্য, যা সময়ের সাথে সমাজের প্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তন করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের সংবিধান ১৯৭২ সালে প্রণীত হয়, যা দেশের শাসনব্যবস্থা এবং নাগরিক অধিকারের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এটি বারংবার সংশোধিত হয়েছে, যা এর সংশোধনযোগ্যতা প্রমাণ করে।
আধুনিক সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
কুরআন হলো ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা মুসলিমদের কাছে আল্লাহর বাণী হিসেবে বিবেচিত। এটি ধর্মীয়, নৈতিক, সামাজিক এবং কিছু আইনি নির্দেশনা প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, কুরআনে উত্তরাধিকার, দণ্ডবিধি, এবং সামাজিক ন্যায় সম্পর্কিত কিছু নীতি রয়েছে। তবে, এটি রাষ্ট্র শাসনের জন্য একটি বিস্তারিত আইনি ফ্রেমওয়ার্ক প্রদান করে না।
কুরআনের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
নিচের তালিকায় আধুনিক সংবিধান এবং কুরআনের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্টভাবে দেখানো হলো:
ক্ষেত্র | আধুনিক সংবিধান | কুরআন |
---|---|---|
উৎস | মানব-নির্মিত, রাজনৈতিক সম্মতির ভিত্তি | ঐশী, আল্লাহর বাণী হিসেবে বিবেচিত |
উদ্দেশ্য | রাষ্ট্র শাসন, নাগরিক অধিকার নির্ধারণ | ধর্মীয়, নৈতিক, সামাজিক নির্দেশনা প্রদান |
বিষয়বস্তু | রাজনৈতিক কাঠামো, সংশোধনযোগ্য | ধর্মীয় বিশ্বাস, অপরিবর্তনীয়, সর্বজনীন |
পরিধি | নির্দিষ্ট রাষ্ট্রের জন্য, আদালতের মাধ্যমে প্রযোজ্য | সকল মানুষের জন্য, ফিকহের মাধ্যমে ব্যাখ্যা |
উদাহরণ | বাংলাদেশের সংবিধান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান | শরিয়ার ভিত্তি, কিন্তু আলাদা সংবিধান রয়েছে |
ইতিহাসে ইসলামি রাষ্ট্রগুলো কুরআনকে সরাসরি সংবিধান হিসেবে ব্যবহার করেনি। উদাহরণস্বরূপ:
আধুনিক যুগে, কিছু ইসলামবাদী আন্দোলন, যেমন মুসলিম ব্রাদারহুড, "কুরআন আমাদের সংবিধান" এই নারা ব্যবহার করে। তবে, এটি ঔপনিবেশিক এবং ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া থেকে উদ্ভূত একটি আধুনিক ধারণা, যা ধর্ম এবং রাজনীতির মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ, মিশরে মোহাম্মদ মোর্সি এই নারা ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু গবেষকরা সুপারিশ করেন যে, ইসলামি রাষ্ট্রগুলো একটি গণতান্ত্রিক, বহুমতবাদী সংবিধান গ্রহণ করা উচিত, যেখানে কুরআন সদস্যদের জন্য একটি গাইড হিসেবে কাজ করবে, কিন্তু রাষ্ট্রের সংবিধান হিসেবে নয় (Is the Quran a ‘constitution’?).
পরিশেষে, কুরআন আধুনিক রাষ্ট্রের সংবিধান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না, কারণ এটি প্রধানত ব্যক্তিগত বিশ্বাসীদের জন্য একটি ধর্মীয় গাইড, রাষ্ট্র শাসনের জন্য একটি আইনি ফ্রেমওয়ার্ক নয়। তবে, কিছু ইসলামি রাষ্ট্রে, যেমন সৌদি আরব, কুরআন শরিয়ার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, কিন্তু তাদের আলাদা সংবিধান রয়েছে। এই বিষয়টি বিতর্কের মধ্যে রয়েছে, বিশেষত ইসলামবাদী আন্দোলন এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের মধ্যে।
শেষ জামানা বা আখিরুজ্জামান সম্পর্কে কুরআনে কি বলে? বিস্তারিত জানাচ্ছেন একজন কুরআনের স্কলার
প্রচলিত কুরবানিকে যদি আমরা কুরআন থেকে পর্যালোচনা করি, তাহলে কি পাই?
Introductory presentation for a series applying the intratextual approach to the exegesis of Surat al-An'am, here on CASQI's channel.
সাধারন ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে একটি কমন ধারনা হলো: ইসলামের সংবিধান হলো কুরআন এবং আধুনিক সময়ে যেসব সেকুলার সংবিধান করা হয় তা হলো "তাগুত"। বিষয়টি কি সত্যিই এরকম সাদা কালো? কুরআন কি সংবিধানি? একজন ইসলামে বিশ্বাসীর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে এই প্রশ্নের মিমাংসায় পৌছতে হলে আমাদের প্রথমে কয়েকটি কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে এগুতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে […]
মুসলিমদের জীবন বিধানের সকল মূলনীতি কোরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর তোমার ওপর যে কিতাব (কোরআন) নাজিল করা হয়েছে তাতে রয়েছে সকল বিষয়ের বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৮৯) দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ দেশের মুসলিমদের কোরআন দেখে শুদ্ধ করে পড়ার প্রতি গুরুত্ব থাকলেও ইসলামি জীবন বিধানের মৌলিক উৎস […]
১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে’ যে মূলনীতিসমূহ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য যে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ কর্তৃক পেশ করা হয়েছে তাতে অন্যতম তিনটি মূলনীতি হলো, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’। বস্তুত এই মূলনীতিসমূহ […]
নাসর হামিদ আবু যায়েদ - একজন আধুনিক কুরআন স্কলারের কর্ম-পরিচিতি ... তার কাজ ও জীবন সম্পর্কে
In this interview, the host discuss with Dr. Munther Younes of Cornell University to discuss his research on the transmission and evolution of the Qur'anic text. Dr. Younes is Reis Senior Lecturer of Arabic Language and Linguistics at Cornell University and a renowned expert in the Arabic language. They discuss the Arabic of the Qur'an, […]