ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।
উদ্দেশ্য
ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।
প্রকাশিত বইসমূহ
তাওরাত, ইনজীল, কুরআন – তিনটি স্বতন্ত্র আসমানী কিতাব
TorahAramaic GospelCopy of Quran
সম্প্রতি কেউ কেউ তাদের আলোচনায় বলছেন যে, আসমানী কিতাব একটিই ‘আল কুরআন’, যা প্রথম থেকে ছিল। তারা তাওরাত ও ইনজীলকে কুরআনের বিভিন্ন অংশ হিসেবে দেখছেন। এভাবে কুরআনের সাথে সম্পর্কিত যে কোনো আলোচনার সঠিকত্ব যাচাইয়ের উপায় হলো ঐ বিষয়ে কুরআনের প্রাসঙ্গিক আয়াতসমূহের সমন্বিত অধ্যয়ন। তাই নিম্নে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসার জন্য প্রাসঙ্গিক আয়াতসমূহ উল্লেখ করা হলো:
৯:১১১ :: নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে। অতএব তারা মারে ও মরে। তাওরাত, ইনজীল ও কুরআনে এ সম্পর্কে সত্য ওয়াদা রয়েছে। আর নিজ ওয়াদা পূরণে আল্লাহর চেয়ে অধিক কে হতে পারে? সুতরাং তোমরা (আল্লাহর সংগে) যে সওদা করেছ, সে সওদার জন্য আনন্দিত হও এবং সেটাই মহাসাফল্য।
৩:৩-৪ :: তিনি তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছেন যথাযথভাবে, এর পূর্বে যা এসেছে তার সত্যায়নকারী হিসেবে এবং নাযিল করেছেন তাওরাত ও ইনজীল; ইতঃপূর্বে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ। আর (এগুলোর মাধ্যমে) তিনি ফুরকান নাযিল করেছেন। নিশ্চয় যারা অস্বীকার করে আল্লাহর আয়াতসমূহ, তাদের জন্যই রয়েছে কঠিন আযাব। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধগ্রহণকারী।
৩:৬৫ :: হে আহলে কিতাব, তোমরা ইবরাহীমের ব্যাপারে কেন বিতর্ক কর? অথচ তাওরাত ও ইনজীল তো তার পরবর্তীতেই অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমরা কি বুঝবে না?
৩:৯৩ :: সকল খাবার বনী ইসরাঈলের জন্য হালাল ছিল। তবে ইসরাঈল তার নিজের উপর যা হারাম করেছিল তাওরাত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে। বল, ‘তাহলে তোমরা তাওরাত নিয়ে আস, অতঃপর তা তিলাওয়াত কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
৫:৪৩ :: আর কীভাবে তারা তোমাকে ফয়সালাকারী মানবে? অথচ তাদের কাছে রয়েছে তাওরাত, যাতে আছে আল্লাহর বিধান, তা সত্ত্বেও তারা এরপর মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তারা মুমিনও নয়।
২৮:৪৮-৪৯ :: অতঃপর যখন আমার নিকট থেকে তাদের কাছে সত্য আসল তখন তারা বলল, ‘মূসাকে যা দেয়া হয়েছিল তাকে (মুহাম্মাদকে) কেন সেরূপ দেয়া হল না’? ইতঃপূর্বে মূসাকে যা দেয়া হয়েছিল তারা কি তা অস্বীকার করেনি? তারা বললো, ‘দু’টিই যাদু, একটি অপরটিকে সাহায্য করে’। আর তারা বললো, ‘আমরা প্রত্যেকটিকে অস্বীকারকারী’। বলো, ‘তাহলে তোমরা আল্লাহর কাছ থেকে এমন একটি কিতাব নিয়ে আস যা এ দু’টো কিতাব থেকে উৎকৃষ্ট; আমি তারই অনুসরণ করব, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক’।
৭:১৫৭ :: যারা অনুসরণ করে রাসূলের, যে উম্মী (অইহুদি, Gentile) নবী; যার প্রসঙ্গ তারা নিজদের কাছে তাওরাত ও ইনজীলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে বোঝা ও শৃংখল- যা তাদের উপরে ছিল- অপসারণ করে। সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য করে এবং তার সাথে যে নূর নাযিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে তারাই সফলকাম।
৬১:৬ :: আর যখন মারইয়াম পুত্র ঈসা বলেছিল, ‘হে বনী ইসরাঈল, নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট আল্লাহর রাসূল। আমার পূর্ববর্তী তাওরাতের সত্যায়নকারী এবং একজন রাসূলের সুসংবাদদাতা যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম আহমদ’। অতঃপর সে যখন সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বলল, ‘এটাতো স্পষ্ট যাদু’।
৫:৪৬ :: আর আমি তাদের পেছনে মারইয়াম পুত্র ঈসাকে পাঠিয়েছিলাম তার সম্মুখে বিদ্যমান তাওরাতের সত্যায়নকারীরূপে এবং তাকে দিয়েছিলাম ইনজীল, এতে রয়েছে হিদায়াত ও আলো এবং তার সম্মুখে বিদ্যমান তাওরাতের সত্যায়নকারী, হিদায়াত ও মুত্তাকীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।
৫৭:২৭ :: তারপর তাদের পিছনে আমি আমার রাসূলদেরকে অনুগামী করেছিলাম এবং মারইয়াম পুত্র ঈসাকেও অনুগামী করেছিলাম। আর তাকে ইনজীল দিয়েছিলাম এবং যারা তার অনুসরণ করেছিল তাদের অন্তরসমূহে করুণা ও দয়ামায়া দিয়েছিলাম। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় তারাই বৈরাগ্যবাদের প্রবর্তন করেছিল। এটা আমি তাদের ওপর লিপিবদ্ধ করে দেইনি। তারপর তাও তারা যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করেনি। আর তাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমি তাদের প্রতিদান দিয়েছিলাম এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল ফাসিক।
সমন্বিত আয়াতসমূহ থেকে জানা যায় যে:
তাওরাত, ইনজীল ও কুরআন তিনটি স্বতন্ত্র কিতাব। (৯:১১১)
কুরআন নাযিলের আগে তাওরাত ও ইনজীল নাযিল হয়েছে। (৩:৩-৪)
তাওরাত ও ইনজীল নাযিল হয়েছে নবী ইবরাহীমের পরবর্তীকালে। (৩:৬৫)
ইসরাইল নিজের উপর কোনো খাদ্যকে হারাম করে নিয়েছিলেন, যা ছিলো তাওরাত নাযিলের আগের ব্যাপার। কিন্তু তাওরাতে সেটাকে বানী ইসরাইলের জন্য হারাম করা হয় নি। (৩:৯৩)
তাওরাত এবং কুরআন দুটো স্বতন্ত্র কিতাব। যাদের কাছে তাওরাত আছে কিন্তু তারা তা থেকে বিমুখ থাকে, তাদের কর্তৃক মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহকে ফয়সালাকারী মানা অস্বাভাবিক। (৫:৪৩)
প্রসঙ্গ অনুসারে দুটি কিতাব তথা তাওরাত ও কুরআন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, কেউ এ দুটি কিতাবের চেয়ে উৎকৃষ্ট কিতাব আল্লাহর পক্ষ থেকে আনতে পারলে রসূল তা অনুসরণ করবেন। বস্তুত এর মানে এ নয় যে, ইনজীলকে এ দুটির চেয়ে নিম্নমানের বলা হয়েছে। বরং এখানে তো কুরআন ও তাওরাতের মধ্যেও কোনো তুলনা করা হয় নি। আর ইনজীল এখানে প্রসঙ্গ বহির্ভুত। বস্তুত এখানে যারা তাওরাত ও কুরআন উভয়টিকে প্রত্যাখ্যান করেছে তাদের প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে যারা ইনজীলের অনুসারী, তারাও সেটাকে এ দুটো কিতাবের চেয়ে উৎকৃষ্ট দাবি করা সম্ভব নয়, কারণ তা তাওরাতের বিকল্প বা রহিতকারী হিসেবে নয়, বরং তাওরাতের সমর্থনকারী হিসেবেই নাযিল হয়েছে। আর যারা তাওরাত ও কুরআনসহ ইতোমধ্যে নাযিলকৃত প্রত্যেকটি কিতাবকে প্রত্যাখ্যানকারী তারা ইনজীলেরও প্রত্যাখ্যানকারী। সুতরাং তারা আহলে কিতাব বহির্ভুত, যাদেরকে বলা হয়েছে পাররে তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে নতুন করে কোনো কিতাব নিয়ে আসুক। সুতরাং এখানে ইনজীল বক্তব্য প্রসঙ্গ বহির্ভুত বিধায় সেটার কথা উল্লেখ করা হয় নি। তবুও যদি ইনজীলকে তাওরাত ও কুরআনের সাথে তুলনা করা হয়, তাহলে সেটাকে এ দুটোর চেয়ে উৎকৃষ্ট দাবি করার অবকাশ নেই, বরং তা এ দুটির সমজাতীয় বা সমভাবাপন্ন বলা যেতে পারে। (২৮:৪৮-৪৯)
মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহর প্রসঙ্গ তাওরাত ও ইনজীলে লিখিত ছিলো। (৭:১৫৭)
তাওরাত ছিলো রসূলুলল্লাহ ঈসার পূর্ববর্তী সময়ে নাযিলকৃত কিতাব। (৬১:৬)
ইনজীল নাযিল হয়েছিলো রসূলুল্লাহ ঈসার উপর। ইনজীল হলো তাওরাতের সত্যায়নকারী এবং ইনজীলের আগেই তাওরাত নাযিল হয়েছিলো। (৫:৪৬)
The Qur'an and the End of the World | What the Qur'an Really Says | Dr. Zishan Ghaffar From the Channel: https://www.youtube.com/@ExploringtheQuranandtheBible Transcript from the Video Professor Zishan Ghaffar from the University of Paderborn discusses whether the Quran predicted the end of the world. Here is the full transcript of the video: Introduction and Thesis […]
কুরআনের সরল বিধান ও ধর্মাচারবাদিদের জটিলতা কুরআনে সরলভাবে বিভিন্ন বিধান দেয়া হয়েছে, যা পালনের ক্ষেত্রে বিবেকবুদ্ধির প্রয়োগ অনুসারে যেভাবে উত্তম হয় সেভাবে সম্পাদন করাই স্বাভাবিক। কিন্তু ধর্মাচারবাদিরা কোনো বিধান পালনের সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয়কে সুনির্দিষ্ট করতে চেয়ে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি করে। কুরআনের শুরুর দিকে সূরা বাক্বারাহতেই এ বিষয়ে বানী ইসরাইলের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে শিক্ষা দেয়া […]
সাধারন ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে একটি কমন ধারনা হলো: ইসলামের সংবিধান হলো কুরআন এবং আধুনিক সময়ে যেসব সেকুলার সংবিধান করা হয় তা হলো "তাগুত"। বিষয়টি কি সত্যিই এরকম সাদা কালো? কুরআন কি সংবিধানি? একজন ইসলামে বিশ্বাসীর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে এই প্রশ্নের মিমাংসায় পৌছতে হলে আমাদের প্রথমে কয়েকটি কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে এগুতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে […]
মুসলিমদের জীবন বিধানের সকল মূলনীতি কোরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর তোমার ওপর যে কিতাব (কোরআন) নাজিল করা হয়েছে তাতে রয়েছে সকল বিষয়ের বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৮৯) দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ দেশের মুসলিমদের কোরআন দেখে শুদ্ধ করে পড়ার প্রতি গুরুত্ব থাকলেও ইসলামি জীবন বিধানের মৌলিক উৎস […]
১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে’ যে মূলনীতিসমূহ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য যে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ কর্তৃক পেশ করা হয়েছে তাতে অন্যতম তিনটি মূলনীতি হলো, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’। বস্তুত এই মূলনীতিসমূহ […]
নাসর হামিদ আবু যায়েদ: এক মুক্তচিন্তার কুরআন গবেষকের জীবনচিত্র পূর্ণ নাম: নাসর হামিদ আবু যায়েদ (Nasr Hamid Abu Zayd)জন্ম: ১০ জুলাই ১৯৪৩, তানতা, মিসরমৃত্যু: ৫ জুলাই ২০১০, কায়রো, মিসরপরিচয়: কুরআন গবেষক, সাহিত্য সমালোচক, ধর্মতাত্ত্বিক ও মুক্তচিন্তার ইসলামী চিন্তাবিদ 🎓 শিক্ষা ও পেশাজীবন নাসর হামিদ আবু যায়েদ কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও ইসলামি শিক্ষায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ […]
In this interview, the host discuss with Dr. Munther Younes of Cornell University to discuss his research on the transmission and evolution of the Qur'anic text. Dr. Younes is Reis Senior Lecturer of Arabic Language and Linguistics at Cornell University and a renowned expert in the Arabic language. They discuss the Arabic of the Qur'an, […]