দি  ইন্সটিটিউট ফর কুরআনিক রিসার্চ এন্ড এ্যাপ্লিকেশন (ইক্বরা)

লক্ষ্য

ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।

উদ্দেশ্য

ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।

প্রকাশিত বইসমূহ

বাংলা ভাষায় কুরআনের অনুবাদ ইতিহাস - কোন অনুবাদ কোন সালে প্রকাশিত?

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীন যুগের শেষ দিকে আবির্ভূত মুসলিম কবি শাহ মুহম্মদ সগীর সর্বপ্রথম কোরআনের সুরা কাব্যভাষায় অনুবাদ করেন। অনেকে উনিশ শতকে গিরিশচন্দ্র সেনকে প্রথম কোরআন অনুবাদক মনে করেন। তবে গিরিশচন্দ্র সেন প্রথম পূর্ণাঙ্গভাবে পবিত্র কোরআন অনুবাদ করলেও তাঁর আমলেই তাঁর আগে বিচ্ছিন্ন অনেক অনুবাদের ঘটনা ঘটেছে। ড. মোহাম্মাদ হাননানের গবেষণা থেকে এ তথ্য বেরিয়ে আসে।

১৩৮৯ খ্রিস্টাব্দ : শাহ মুহম্মদ সগীর। বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক কবি ছিলেন শাহ মুহম্মদ সগীর। তিনিই বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম পবিত্র কোরআনের সুরা অনুবাদ করেন। সগীর যুগপৎ বাংলা পয়ার ও ত্রিপদী ছন্দে কোরআন অনুবাদ করেছেন। পবিত্র কোরআন এমনিতে আরবি ভাষার কাব্য মাধ্যমে ছন্দোবন্ধে প্রকাশিত। আর উনিশ শতকে যখন বাংলা ভাষায় কোরআন অনুবাদ হতে শুরু করেছিল, তখন বেশির ভাগই কাব্য আকারে তা অনূদিত হয়েছে। (ড. মোহাম্মাদ হাননানের বিশেষ গবেষণাসূত্রে প্রাপ্ত তথ্য)

১৬২০ : আবদুল হাকিম (১৬২০-১৬৯০)। মধ্যযুগের বাঙালি কবিদের মধ্যে কট্টর ভাষাপ্রেমী ছিলেন আবদুল হাকিম। তাঁর ‘নূরনামা’ কাব্যে বাংলা ভাষায় কোরআন অনুবাদের বিশেষ তাগিদ প্রকাশিত হয়েছে।

১৮০৮ : আমির উদ্দিন বসুনিয়া। রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন আমির উদ্দিন বসুনিয়া। বাংলা গদ্যভাষায় তিনিই সবার আগে পবিত্র কোরআন অনুবাদ করেন। (মুহম্মদ মুজিবুর রহমান : বাংলা ভাষায় কোরআন চর্চা, ঢাকা, ১৯৮৬) কিন্তু বাংলা ভাষায় কোরআন অনুবাদের ইতিহাসবিষয়ক অন্য এক গবেষক বলেছেন, বসুনিয়ার ‘অনুবাদটি ছিল বাংলা পুঁথি সাহিত্যের ভাষায় আমপারার কাব্যানুবাদ। ’ (ড. মোহাম্মদ আবদুল অদুদ : বাংলা ভাষায় কোরআন চর্চা : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ, আল কোরআন ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ একাডেমি, ঢাকা, ২০০৯, পৃষ্ঠা ৯৫) আমির উদ্দিন বসুনিয়ার অনুবাদটি ছিল খণ্ডিত। প্রথম যুগের অন্যান্যের মধ্যে তিনিও পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারা আমপারা বাংলা পয়ার ছন্দে অনুবাদ করেন।

১৮৬৮ : আকবর আলী। কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন আকবর আলী। তিনি ‘তরজমা আমছেপারা’ নাম দিয়ে পবিত্র কোরআন অনুবাদ করেন এবং ১৮৬৮ সালে কলকাতা থেকেই তা প্রকাশ করেন।

পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদের বিশিষ্ট গবেষক মোফাখখার হুসেইন খান সরাসরি মন্তব্য না করলেও আকবর আলীকেই বাংলা ভাষায় প্রথম কোরআন অনুবাদক সাব্যস্ত করেছেন।

১৮৭৩ : পাদ্রি তারাচরণ মিত্র। হিন্দু থেকে খ্রিস্টান হয়েছিলেন তারাচরণ মিত্র। পবিত্র কোরআনের প্রথম ১২ পারা তিনি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন এবং ১৮৭৩ সাল থেকে কলকাতার বঙ্গমিহির নামক একটি পত্রিকায় তা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে থাকেন। পরে ১৮৮২ সালে পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করেন।

১৮৮১ : গিরিশচন্দ্র সেন (১৮৩৫-১৯১০)। তৎকালীন পূর্ব বাংলার বৃহত্তর ঢাকার বর্তমান নরসিংদী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন গিরিশচন্দ্র সেন। তিনি প্রথমে ছিলেন হিন্দু, পরে ব্রাহ্মধর্মের অনুসারী হন। বাংলা ভাষায় পবিত্র কোরআনের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ প্রথম তিনিই করতে সমর্থ হন। ১৮৮১ সালে তাঁর অনূদিত পবিত্র কোরআনের প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। ১৮৮৫ সালের মধ্যে কোরআন অনুবাদের সব খণ্ড প্রকাশিত হয়। তাঁর অনুবাদে সংস্কৃতজাত বাংলা শব্দের প্রাবল্যের কারণে তৎকালীন মুসলিমসমাজে তা জনপ্রিয়তা লাভ করেনি।

১৮৮৭ : মাওলানা নঈম উদ্দিন (রহ.) (১৮৩২-১৯০৮)। গিরিশচন্দ্র সেনের কোরআন অনুবাদের ঘটনা যে মুসলিমসমাজে বেশ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় পবিত্র কোরআন বাংলা ভাষায় অনুবাদে বাঙালি মুসলিম আলেমদের তাৎক্ষণিক আগমনের ঘটনায়। বাঙালি আলেমসমাজ এর আগে কোরআন বঙ্গানুবাদের বিষয়টিতে ততটা গুরুত্ব দেয়নি, কারণ সে সময় পবিত্র কোরআনের আরবি, ফারসি ও উর্দু অনুবাদ শিক্ষিতসমাজে সুলভ ছিল। সে সময় উচ্চশ্রেণির হিন্দু-মুসলিম এবং শিক্ষিত মুসলিম সমাজে ফারসি ও উর্দু ভাষা ভালোভাবেই প্রচলিত ছিল। এ প্রেক্ষাপটেই মাওলানা নঈম উদ্দিন সেই উষাকালে বঙ্গভাষায় পবিত্র কোরআন অনুবাদে এগিয়ে এসেছিলেন।

১৮৮৯ : আকবর উদ্দিন। তিনি উত্তর বাংলার দিনাজপুর থেকে ১৮৮৯ সালে পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করেন। অনুবাদ গ্রন্থটি পাওয়া না গেলেও বাংলা ভাষায় মুসলিম লেখক গ্রন্থপঞ্জিতে (মো. আবদুর রাজ্জাক, রাজশাহী : ১৯৮৮ প্রণীত) এই অনুবাদের কথা উল্লিখিত হয়েছে। তিনি তাঁর অনুবাদের নাম দিয়েছিলেন ‘কোরআন’।

১৮৯১ : ফিলিপ বিশ্বাস। বাঙালি (দেশীয়) খ্রিস্টানের হাতে এই প্রথম পবিত্র কোরআন অনূদিত হয়। কলকাতা থেকে ১৮৯১ সালে প্রকাশিত এই অনুবাদের আসল উদ্দেশ্য ছিল ইসলাম ধর্মকে হেয় করা। আর এ জন্য তা বিনা মূল্যে বিতরণ করা হতো। পরে মুসলিমদের আপত্তির কারণে ব্রিটিশ সরকার অনুবাদটি বাজেয়াপ্ত করে।

১৮৯১ থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছর এভাবে পত্রপত্রিকায় তাঁর অনূদিত পবিত্র কোরআন প্রকাশ অব্যাহত থাকে। ১৯০৭ সালে ২৯ সংখ্যক পারা সুরা তাবারাকাল্লাজি গ্রন্থাকারে কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন। এর পৃষ্ঠা সংখ্যা ছিল ১০১।

১৯০৫ : মাওলানা আব্বাছ আলী (১৮৫৯-১৯৩২)। গবেষকদের মতে, মাওলানা আব্বাছ আলী হলেন বাংলা ভাষায় কোরআনের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মুসলমান অনুবাদক। এর আগে মাওলানা মঈনুদ্দীন কোরআন অনুবাদের যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তা পূর্ণাঙ্গভাবে সফল হয়েছিল তাঁর সন্তানদের দ্বারা। কিন্তু মাওলানা আব্বাছ আলী নিজে পবিত্র কোরআনের প্রথম পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ সমাপ্ত করতে সমর্থ হন।

মওলানা আকরম খাঁ (১৮৬৮-১৯৬৮)। বাঙালি মুসলিম আলেমদের মধ্যে মওলানা আকরম খাঁ পবিত্র কোরআন অনুবাদের সঙ্গে নানাভাবে জড়িত ছিলেন। প্রথমত, গিরিশচন্দ্র সেনের অনুবাদকে অভিনন্দিত করে তিনি প্রথম এ বিষয়ে আলোচনায় আসেন। পরে মাওলানা আব্বাছ আলীর সঙ্গে যৌথভাবে ১৯০৫ সালে কোরআন অনুবাদে অংশগ্রহণ করেন। যৌথ অনুবাদটি ছিল তিন ভাষায় সমন্বিত। আরবি, বাংলা ও উর্দু ভাষায় এই কোরআন অনূদিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল।

১৯০৮ : রেভারেন্ড উইলিয়াম গোল্ডস্যাক (১৮৬১-১৯৫০)। সাউথ অস্ট্রেলিয়ান ব্যাপ্টিস্ট মিশনের পক্ষ থেকে রেভারেন্ড গোল্ডস্যাক ১৯০৮ সালে অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরআন অনুবাদ করে ফরিদপুর থেকে প্রকাশ করেন। মোট ১২ খণ্ডে তিনি পুরো কোরআন অনুবাদ করে প্রকাশ করেছিলেন। এ জন্য তাঁর সময় লেগেছিল মোট ১২ বছর।

শ্রী কিরণ গোপাল সিংহ (১৮৮৫-১৯৪২)। ইতিহাসে দেখা যায়, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে একমাত্র কিরণ গোপাল সিংহই পবিত্র কোরআন অনুবাদে এগিয়ে এসেছিলেন। ইসলাম ধর্মের প্রতি অনুরাগ থেকেই কিরণ গোপাল সিংহ পবিত্র কোরআন বাংলা ভাষায় অনুবাদে হাত দিয়েছিলেন।

১৯১১ : মুহাম্মদ মেহেরুল্লাহ সানী (১৮৫৬-১৯১৮)। সিরাজগঞ্জ জেলার সমাজকর্মী ও সাহিত্যিক মেহেরুল্লাহ সানী পবিত্র কোরআন বাংলায় অনুবাদ করেন এবং এর নাম দেন বাংলা কোরআন শরিফ। আলেমসমাজ কোরআন অনুবাদের এ রকম নাম গ্রহণ করেনি, কারণ ‘আরবি কোরআন’, ‘বাংলা কোরআন’—এ রকম কোরআনের নাম হতে পারে না। উলামা-হজরতরা বলেন, ‘পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদ’—এমন করে নামকরণে এই কার্যক্রম সহিহ হতে পারে।

১৯১৩ : আলাউদ্দীন আহমদ (১৮৫১-১৯১৫) ও হাফেজ মাহমুদ শাহ। সুসাহিত্যিক আলাউদ্দীন আহমদ সিরাজগঞ্জে পবিত্র কোরআন অনুবাদে হাত দেন। পরে তিনি হাফেজ মাহমুদ শাহর সাহায্য গ্রহণ করেন এবং যুগ্ম নামে এই অনুবাদ ১৯১৩ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন। বাংলা ভাষায় মুসলিম লেখক গ্রন্থপঞ্জি, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৩৬-৩৭ (মো. আবদুর রাজ্জাক প্রণীত)-এ তাঁর নাম কোরআন অনুবাদক হিসেবে উল্লিখিত আছে। তাঁর গ্রন্থের পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৬৬। বলা হয়েছে, তাফসির রুহুল বয়ান থেকে তিনি সুরা আল কদরের বঙ্গানুবাদ করেছিলেন। (ড. মোহাম্মদ আবদুল অদুদ : বাংলা ভাষায় কোরআন চর্চা : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ, পূর্বোক্ত, পৃষ্ঠা ১৬৭)

১৯১৪ : মাওলানা খোন্দকার আবুল ফজল আবদুল করিম (১৮৭৬-১৯৪৭)। টাঙ্গাইলে জন্মগ্রহণকারী খোন্দকার আবদুল করিম ১৯১৪ সালে ‘কোরআন’ নামে বাংলা ভাষায় পবিত্র কোরআন অনুবাদ করেন এবং টাঙ্গাইল থেকে মুদ্রণ করে প্রকাশ করেন। কোরআনের আমপারার অংশ তিনি কাব্যানুবাদও করেছিলেন। পরে ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয় কোরআন শরিফ প্রথম খণ্ড। পরে তাঁর অন্য খণ্ডগুলো কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল।

১৯১৬ : মুন্সী করিম বখশ। কলকাতার অধিবাসী মুন্সী করিম বখশ ১৯১৬ সালে পবিত্র কোরআনের প্রথম ও শেষ পারার বাংলা অনুবাদ কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন। বাংলা ভাষায় পবিত্র কোরআনের মূল আরবির বাংলা উচ্চারণের প্রথা তিনিই প্রথম চালু করেন। শুধু তা-ই নয়, তাঁর অনুবাদে প্রথম আরবি, পরে আরবির বাংলা উচ্চারণ এবং তারপর বাংলা অনুবাদ পর পর প্রদত্ত হয়েছে। যদিও আরবির বাংলা উচ্চারণ প্রদানকে আলেমসমাজ যথার্থ মনে করেন না, তার পরও আরবিতে অনভিজ্ঞ মুসলমানদের জন্য তা কার্যকর মনে করা হয়েছিল। এই ধারা তখন থেকে বাংলা সমাজে এখনো প্রচলিত আছে।

১৯১৭ : আবদুল ছাত্তার সুফী। কলকাতা থেকে ১৯০৭ সালে পবিত্র কোরআনের আয়াত কাব্য আকারে অনুবাদ করে প্রকাশ করেন তিনি। বাংলা কবিতার ত্রিপদী ছন্দে কোরআন অনুবাদে ছিলেন তিনিই প্রথম।

মাওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমিন (১৮৭৫-১৯৪৫)। পশ্চিম বাংলার চব্বিশ পরগনায় জন্মগ্রহণকারী মাওলানা রুহুল আমিন ১৯১৭ সালে পবিত্র কোরআন অনুবাদ করেন। কলকাতা আলিয়া মাদরাসা থেকে পাস করা আলেম হওয়ায় তাঁর অনুবাদের প্রতি তৎকালীন মুসলিমসমাজের আগ্রহ দেখা যায়।

১৯২০ : মাওলানা এয়ার আহমদ এলটি (-১৯৪৪)। ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণকারী মাওলানা এয়ার আহমদ ‘আমপারা বাঙ্গালা তফছির’ নামে কোরআন অনুবাদ করে ১৯২০ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশ করেন।

১৯২২ : মোহাম্মদ আবদুল হাকিম (১৮৮৭-১৯৫৭) ও মোহাম্মদ আলী হাসান। গোপালগঞ্জ নিবাসী মোহাম্মদ আবদুল হাকিম এবং মানিকগঞ্জ নিবাসী মোহাম্মদ আলী হাসান ‘কোরআন শরিফ’ নাম দিয়ে পবিত্র কোরআনের অনুবাদ যৌথভাবে সম্পাদন করেন এবং কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন। এর সঙ্গে তাঁরা তাফসিরও বর্ণনা করেছেন। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক থেকে শুরু করে অনেক মুসলমান নেতাই তাঁদের অনুবাদের প্রশংসা করে সনদ দিয়েছিলেন।

১৯২৩ : মাওলানা শেখ ইদ্রিস আহমদ। বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ১৮৯২ সালে মাওলানা শেখ ইদ্রিস আহমদ জন্মগ্রহণ করেন। ‘কোরআনের মহাশিক্ষা’ নামে তাঁর অনূদিত পবিত্র কোরআন ১৯২৩, ১৯২৭ ও ১৯৩৪ সালে মোট তিন খণ্ডে বিভক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়।

১৯২৪ : মাওলানা ফাজেল মকিমী। কলকাতার অধিবাসী মাওলানা ফাজেল মকিমী ১৯২৪ সালে পবিত্র কোরআনের দু-তিন পারা অনুবাদ করেছিলেন। কিন্তু গবেষকরা তাঁর অনুবাদের কোনো নমুনা বা কপির সন্ধান পাননি। (ড. মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান : বাংলা ভাষায় কোরআন চর্চা, পূর্বোক্ত, পৃষ্ঠা ২৭৪)

১৯২৫ : ফয়জুদ্দীন আহমেদ (১৮৯৯-১৯৩৫)। বরিশালে জন্মগ্রহণকারী ফয়জুদ্দীন আহমেদ সুরা ফাতিহা ও এর তাফসির অনুবাদ করেন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ঢাকা থেকে ১৯২৫ সালে তা প্রকাশ করেন। সুরা ফাতিহার অনুবাদ ও তাফসিরের এই খণ্ডটি ছিল ১৫৭ পৃষ্ঠার।

১৯২৬ : ফজলুর রহীম চৌধুরী (১৮৯৬-১৯২৯)। বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণকারী এবং শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের জামাতা ফজলুর রহীম চৌধুরী প্রথমে ‘কোরআনের সুবর্ণ পঞ্জিকা’ নামে বিশেষ বিশেষ সুরা ও সুরাংশ অনুবাদ করে ১৯২৬ সালে প্রকাশ করেন। পরে ‘কোরআন শরিফ’ নামে পবিত্র কোরআন অনুবাদ করেন, যা তাঁর মৃত্যুর পর ১৯৩০ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়।

মাওলানা খন্দকার গোলাম রসুল। ঝিনাইদহ জেলার আলেম ‘বাঙ্গালা পাঞ্জ সুরাহ’ নাম দিয়ে পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন সুরা অনুবাদ করেন। ১৯২৬ সালে তা নদিয়া থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। বাংলা ভাষায় মুসলিম লেখক গ্রন্থপঞ্জিতে (মো. আবদুর রাজ্জাক প্রণীত, রাজশাহী ১৯৮৮) তাঁর নাম পবিত্র কোরআনের একজন অনুবাদক হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে।

১৯২৭ : মোহাম্মদ আবদুর রশিদ ছিদ্দিকী। কক্সবাজার জেলায় জন্মগ্রহণকারী মোহাম্মদ আবদুর রশিদ ছিদ্দিকী ‘মহা কোরআন কাব্য’ নাম দিয়ে ১৯২৭ সালে পবিত্র কোরআন অনুবাদ করে কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন। গদ্য ও পদ্য—দুই রীতিতে তাঁর কোরআন অনূদিত হয়েছিল, আর এটা ছিল বঙ্গ ভাষায় কোরআন অনুবাদের একটি ব্যতিক্রম রীতি।

১৯২৮ : মাওলানা ওসমান গনি। পশ্চিম বাংলার বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতা আলিয়া মাদরাসা থেকে ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯১৪ সালে পাঞ্জ সুরা অনুবাদ করেন এবং এর নাম দেন ‘পঞ্চমণি’। কিন্তু এটি প্রকাশিত হয় ১৯২৮ সালে কলকাতা থেকে। পরে ‘পবিত্র কোরআন’ শিরোনামে কোরআন অনুবাদ করেন এবং ১৯৪৭ সালে তা প্রকাশিত হয়। তিনি এই অনুবাদে আরবি উচ্চারণের বাংলা অনুলিখন (প্রতিবর্ণায়ন) সংযোজন করেন।

মাওলানা আহমদ আলী (১৮৯৮-১৯৫৯)। যশোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং কলকাতা আলিয়া মাদরাসা থেকে দ্বিনি শিক্ষার প্রাথমিক ভিত গড়ে তোলেন। ১৯২৮ সালে সুরা ইয়াসিন অনুবাদ করে প্রকাশ করেন।

১৯২৯ : মাওলানা কফিলউদ্দিন আস সিদ্দিকী। টাঙ্গাইল জেলার অধিবাসী মাওলানা কফিলউদ্দিন ১৯২৯ সালে ‘তরজমা পাঞ্জে সুরা’ নাম দিয়ে পবিত্র কোরআনের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি সুরা অনুবাদ করেন। এটি প্রকাশিত হয় কলকাতা থেকে। তবে তাঁর অনূদিত এই তরজমা পাওয়া যায়নি।

অধ্যাপক আলী আহমদ লিখিত বাংলা মুসলিম গ্রন্থপঞ্জিতে (বাংলা একাডেমি, ঢাকা ১৯৮৫) মাওলানা কফিলউদ্দিন আস সিদ্দিকী (রহ.)-কে একজন কোরআন অনুবাদক হিসেবে দেখানো হয়েছে। (পৃষ্ঠা ৩৪৬)

১৯৩০ : মোরশেদ আলী। ‘কোরআন দর্পণ’ নামে পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করেন মোরশেদ আলী ১৯৩০ সালে। এটি প্রকাশিত হয়েছিল ঢাকা থেকে। অধ্যাপক আলী আহমদ লিখিত বাংলা মুসলিম গ্রন্থপঞ্জিতে কোরআন অনুবাদক হিসেবে তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনি তাঁর অনূদিত গ্রন্থের নাম দিয়েছিলেন ‘কোরআন দর্পণ’। এর প্রথম খণ্ডে ১৭টি সুরার বঙ্গানুবাদ স্থান পেয়েছিল।

মীর ফজলে আলী (১৮৯৮-১৯৩৯)। বরগুনা জেলার সন্তান মীর ফজলে আলী ১৯৩০ সালে ‘কোরআন কণিকা’ শিরোনামে পবিত্র কোরআনের অংশবিশেষ অনুবাদ করে প্রকাশ করেন। এটি প্রকাশিত হয় কলকাতা থেকে। ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এই অনুবাদের ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন।

১৯৩১ : মুহাম্মদ আজহার উদ্দীন। রাজবাড়ী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন মুহাম্মদ আজহার উদ্দীন। ‘কোরআনের আলো’ শিরোনামে পবিত্র কোরআনের দীর্ঘ সুরাগুলো অনুবাদ করে ১৯৩১ সালে তিনি কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন।

১৯৩২ : আবদুল আযীয হিন্দি (১৮৬৭-১৯২৬)। কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন আবদুল আযীয হিন্দি। ‘কোরআন শরিফ’ শিরোনামকৃত তাঁর অনূদিত পবিত্র কোরআন নোয়াখালী থেকে ১৯৩২ সালে প্রকাশিত হয়।

১৯৩৩ : কাজী নজরুল ইসলাম। পশ্চিম বাংলার বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণকারী বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি বলে পরিচিত কাজী নজরুল ইসলাম পবিত্র কোরআনের আমপারা অংশ কাব্যাকারে অনুবাদ করেন। তা ‘কাব্য আমপারা’ নামে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় ১৯৩৩ সালে। কবি নজরুলের অনুবাদের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল, তিনি কাব্যানুবাদ শেষে মার্জিনের নিচে আরবি সুরার বাংলা অর্থ পরিবেশন করেছেন।

১৯২০ সালে ‘আমপারা’ শীর্ষক অংশে পবিত্র কোরআনের অনুবাদের খণ্ডাংশ কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন। গদ্য ও কাব্য—এ দুই-ই বিচ্ছিন্নভাবে অনুবাদে তিনি কাজে লাগান।

১৯৩৪ : সৈয়দ আবুল খায়ের তাজুল আউলিয়া জাহাঙ্গীর। টাঙ্গাইল থেকে ১৯৩৪ সালে ‘বাংলা কোরআন শরিফ’ নাম দিয়ে পবিত্র কোরআনের অনুবাদ প্রকাশ করেন। তবে তা ছিল শুধু প্রথম পারার অনুবাদ।

১৯৩৫ : সৈয়দ আবুল মনসুর। সিলেটের অধিবাসী ছিলেন সৈয়দ আবুল মনসুর। কলকাতা থেকে ১৯৩৫ সালে ‘কোরআন কুসুমাঞ্জলি’ নামে পবিত্র কোরআন অনুবাদ করে প্রকাশ করেন। পরে ‘কোরআন মঞ্জরি’, ‘কোরআন মঙ্গল’ ইত্যাদি নামে আরো কিছু সুরার অনুবাদ প্রকাশিত হয়। মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমিত্রাক্ষর ছন্দের অনুসরণ করে তিনি কোরআনের কাব্যানুবাদের অনুশীলন করেছিলেন।

১৯৩৬ : আইয়ুব আলী চৌধুরী (১৮৭৭-১৯৩৬)। বাংলা পয়ার ছন্দে সুরা ফাতিহার কাব্যানুবাদ করে আইয়ুব আলী চৌধুরী ১৯৩৬ সালে কলকাতা থেকে তা প্রকাশ করেন। এর নাম দেন তিনি ‘স্বর্গীয় কানন’। কাব্যানুবাদে সুরা ফাতিহা বিষয়ে তাঁর মনগড়া অনেক শব্দও তিনি এতে প্রয়োগ করেন।

মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম আকবর (১৮৯২-১৯৫৬)। যশোর থেকে ১৯৩৬ সালে ‘আমপারার তফসির’ নাম দিয়ে তাঁর কোরআন অনুবাদের খণ্ড প্রকাশ করেন।

১৯৩৭ : বসন্তকুমার মুখোপাধ্যায়। হিন্দু ব্রাহ্মণদের মধ্যে বসন্তকুমার মুখোপাধ্যায়ই প্রথম কোরআন অনুবাদ করে প্রকাশ করেছিলেন। ‘পবিত্র কোরআন প্রবেশ’ নামে তাঁর অনুবাদ ১৯৩৭ সালে নারায়ণগঞ্জ থেকে মুদ্রিত হয়ে ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়েছে বলে গ্রন্থটিতে উল্লিখিত হয়।

১৯৩৯ : মুহাম্মদ ইসমাইল। চাঁদপুরে জন্মগ্রহণকারী মুহাম্মদ ইসমাইল পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারা অনুবাদ করে ১৯৩৯ সালে ত্রিপুরা থেকে প্রকাশ করেন। তিনি এর নাম দেন ‘আমপারার তরজমা’।

১৯৪০ : মুহাম্মদ শামসুল হুদা। গিরিশচন্দ্র সেনের পর নরসিংদীতে জন্মগ্রহণকারী মুহাম্মদ শামসুল হুদা নামের আরেক নরসিংদীবাসী কোরআন অনুবাদে এগিয়ে আসেন। ১৯৪০ সালে ‘নেয়ামুল কোরআন’ নামে পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন সুরার অনুবাদ, ফজিলতসহ তাঁর অনুবাদ প্রকাশিত হয় ঢাকা থেকে।

১৯৪১ : খানবাহাদুর আহসানউল্লা (১৮৭৩-১৯৬৫)। সাতক্ষীরায় জন্মগ্রহণকারী খানবাহাদুর আহসানউল্লা পবিত্র কোরআনের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি সুরা অনুবাদ করে ১৯৪০ সালে (মতান্তরে ১৯৪০-১৯৪৭-এর কোনো সময়ে) কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন। এর নাম দেন তিনি ‘পাঁচ ছুরা’। এর আগে এ রকম অন্যান্য অনুবাদে আমরা নাম পেয়েছি ‘পোঞ্জু সুরা’, তিনিই প্রথম ‘পোঞ্জু’র বাংলা করেন ‘পাঁচ’।

১৯৪৪ : মীজানুর রহমান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অধিবাসী মীজানুর রহমান তাঁর মায়ের নির্দেশে পবিত্র কোরআন অনুবাদ করে ‘নূরের ঝলক’ বা ‘কোরআনের আলো’ নাম দিয়ে ১৯৪৪ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন।

১৯৪৫ : মাওলানা যুলফিকার আলী। ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। পবিত্র কোরআনের আমপারার অংশ অনুবাদ করে ১৯৪৫ সালে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশ করেন। তাঁর অনুবাদের বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি আরবি অক্ষরে বাংলা অনুবাদ করেন। পবিত্র কোরআন অনুবাদে এই রীতিতে তিনিই প্রথম। তবে এই ধারার আর বেশি চর্চা হয়নি।

৯৪৬ : ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ (১৮৮৫-১৯৬৯)। পশ্চিম বাংলার চব্বিশ পরগনা জেলায় জন্মগ্রহণকারী বহুভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ থেকেও বাংলাভাষী মানুষ পবিত্র কোরআনের অনুবাদ লাভ করেছে। ‘মহাবাণী’ শিরোনামে তাঁর অনূদিত কোরআন প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৪৬ সালে বগুড়া থেকে। এতে সুরা ফাতিহা থেকে সুরা ফিল পর্যন্ত অনূদিত হয়েছিল। এ ছাড়া তিনি সুরা বাকারাও অনুবাদ করেছিলেন। তাঁর অনুবাদে সংস্কৃতজাত শব্দের অগ্রাধিকার ছিল। ‘ইমাম’কে ‘আচার্য’ ও ‘ধর্মাচার্য’, ‘মুক্তাদি’কে ‘অনুবর্তী’, ‘আয়াত’কে ‘প্রবচন’, ‘নবী’কে ‘সংবাদবাহক’, ‘নবুয়ত’কে ‘প্রেরিতত্ব’ শব্দ দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

১৯৪৭ : মাওলানা মুনীর উদ্দীন আহমদ। রংপুর নিবাসী মাওলানা মুনীর উদ্দীন আহমদ ‘হাফিজিল কাদেরী’ নামে তাফসিরসহ পবিত্র কোরআনের অনুবাদ করেন ১৯৪৭ সালে। এটি রংপুর থেকেই প্রকাশিত হয়েছিল।

১৯৬২ : ‘তাফসিরে আশরাফী’, এমদাদিয়া লাইব্রেরি। উর্দু বয়ানুল কোরআনের অনুবাদ। মূল : আল্লামা আশরাফ আলী থানভি (রহ.)।

১৯৬৩ : ‘সহজ পাক তফসির’, খন্দকার মোহাম্মদ হুছাইন। পাকুল্লা, টাঙ্গাইল, তফসির মঞ্জিল।

১৯৬৬-৬৭ : ‘পবিত্র কোরান’, কাজী আব্দুল ওদুদ। ফরিদপুর, পরে কলকাতা।

১৯৬৭ : ‘কোরআন শরিফ’, ঝিনুক প্রকাশনী, আলী হায়দার চৌধুরী।

‘কোরআনুল করিম’, ইসলামিক একাডেমি, ঢাকা (বর্তমানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন), অনুবাদক : শামসুল ওলামা বেলায়েত হোসেন ও অন্যান্য।

১৯৬৮ : ‘কোরআনের মুক্তাহার’, মাওলানা মোহাম্মদ ছায়ীদ ইব্রাহিমপুরী। ইব্রাহিমপুর, চাঁদপুর।

১৯৬৯ : ‘কোরআন শরিফ’, হাকিম আব্দুল মান্নান। সহজ-সরল কথা, ভাষায় প্রথম ও মূলানুগ অনুবাদ। তাজ কম্পানি, ঢাকা।

১৯৭০ : ‘তাফাসরুল কোরআন’। শব্দসহ তাফসির। মুহা. নূরুল ইসলাম, বগুড়া।

১৯৭০-৭২ : ‘আল-কোরআন : তরজমা ও তাফসির’। পাঁচ খণ্ড, অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মাদ তাহের, কলকাতা আলিয়া মাদরাসা।

১৯৭৪ : ‘তাফসিরে বয়ানুল কোরান’-এর বঙ্গানুবাদ, মাওলানা নূরুর রহমান, ১৯০৯, এমদাদিয়া লাইব্রেরি।

মূল : আল্লামা আশরাফ আলী থানভি (রহ.)।

কোরআন শরিফ’, টীকাসহ গোটা কোরআন শরিফের বঙ্গানুবাদ, মোবারক করিম জওহর। কলি. হরফ, প্রকাশনী।

১৯৭৫ : ‘তাফহিমুল কোরআন’, মাহবুব প্রকাশনী। মূল লেখক : মাওলানা মওদুদি (রহ.), অনুবাদক : অধ্যাপক গোলাম আযম।

১৯৭৭ : ‘পবিত্র কোরআন শরিফ’, মূল আরবিসহ বিশুদ্ধ বাংলা উচ্চারণ, অর্থ ও প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যাসংবলিত। এ কে এম ফজলুর রহমান মুন্সী, রাজামেহার, কুমিল্লা।

১৯৭৮-৭৯ : ‘তাফহিমুল কোরআন : কোরআন মজিদের বাংলা তাফসির’। ইসলামিক পাবলিকেশন্স, অন্য মুদ্রণ : আধুনিক প্রকাশনী।

১৯৮০ : ‘তাফসিরে মা‘রেফুল কোরআন’, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন। মূল : মুফতি মুহম্মদ শফি।

১৯৯৪ : ‘পবিত্র কোরআনুল করিম : বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসির’ (মা‘আরেফুল কোরআনের সংক্ষিপ্ত তাফসির), সৌদি দূতাবাস।

১৯৮২ : ‘তাফসিরে জালালাইন’ (অনুবাদ), মুহম্মদ খুরশীদ উদ্দীন।

১৯৮৭ : ‘বাংলা কোরান শরিফ’, আব্দুদ দাইয়্যান চিশতী (মাওলানা শাহ সুফী), ছারছীনা, বরিশাল, কথাকলি।

১৯৮৮ : ড. মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান, অধ্যাপক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

‘তাফসিরে ইবনে কাছির’, অধ্যাপক আখতার ফারুক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

১৯৯২ : ‘কোরআন শরিফ’, ড. ওসমান গনি, কলকাতা মল্লিক ব্রাদার্স।

১৯৯৩ : ‘তাফসির-ই জালালাইন’, ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। মূল : জালালুদ্দীন সুয়ুতি (রহ.), ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

১৯৯৪ : ‘তাফসিরে নূরুল কোরআন’, মাওলানা মো. আমিনুল ইসলাম, আলবালাগ পাবলিকেশন্স।

‘তাফসিরে মাজেদি শরিফ’, মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান মল্লিক (অনুবাদক)। মূল : মাওলানা আব্দুল মজিদ দরিয়াবাদি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

১৯৯১-৯৫ : ‘তাফসিরে তাবারি শরিফ’, মাওলানা মুহাম্মদ সাখাওয়াত উল্লাহ। মূল : আল্লামা আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে জারির তাবারি (রহ.), ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

১৯৯৫ : ‘তাফসির ফি যিলালিল কোরআন’, হাফিজ মুনির উদ্দীন আহমদ, আল কোরআন একাডেমি, লন্ডন। মূল : সাইয়েদ কুতুব শহীদ (রহ.)।

১৯৯৬ : ‘ছহীহ বঙ্গানুবাদ কোরআন শরিফ’, মাওলানা এম এ বশির উদ্দিন

১৯৯৬-৯৭ : ‘তাফসিরে উসমানী’ (অনূদিত), ইসলামিক ফাউন্ডেশন। মূল : মাওলানা মাহমুদুল হাসান ও মাওলানা শাব্বীর আহমদ উসমানী।

১৯৯৭ : ‘কোরান শরিফ’, ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান, খোশরোজ।

১৯৯৮ : ‘শাহনূর কোরআন শরিফ’, মাওলানা মাজহার উদ্দীন আহমদ, ছারছীনা।

মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

১৯৯৯ : ‘তাফসিরে কোরআন’, সদর উদ্দিন আহমদ চিশতী।

২০০০ : ‘কোরআন শরিফ : সরল বঙ্গানুবাদ’, বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

২০০২ : ‘কোরআন শরিফ : সহজ সরল বাংলা অনুবাদ’, হাফেজ মুনির উদ্দিন আহমদ, আল কোরআন একাডেমি, লন্ডন।

২০০৬ : ‘পবিত্র আল কোরআনের পুঁথি অনুবাদ’, মাওলানা আব্দুল হামিদ কাসেমী, নিউ হামিদিয়া প্রকাশনী।

২০১০ : ‘কোরআন শরিফ’, আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলী, মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ যাকারিয়া, মীনা বুক হাউস।

২০১১ : ‘নূর নূরানি বাংলা উচ্চারণ’, বঙ্গানুবাদ ও শানে নজুলসহ কোরআন শরিফ, মাওলানা মোহাম্মদ ওসমান গনি, সোলাইমানি বুক হাউজ।

২০১২ : ‘বঙ্গানুবাদ কোরআন শরিফ’, মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহিম (রহ), খায়রুন প্রকাশনী।

২০১৭ : ‘তাফসিরে তাওযিহুল কোরআন’, মূল : শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তাকী উসমানী। অনুবাদ : মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম। মাকতাবাতুল আশরাফ।

২০১৮ : ‘সহজ কোরআন’, আসিফ সিবগাত ভূঞা, আদর্শ লাইব্রেরি।


মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ / সূত্র: কালের কন্ঠ


অন্যান্য:

ট্যাগ / কী-ওয়ার্ড:

অন্যান্য প্রবন্ধ

April 22, 2024
গঠন রীতি ও শব্দের ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে কুরআনের সুরার ক্রম

কুরআনের ক্রম বের করার অনেক প্রচেষ্টা হয়েছে এবং বিভিন্ন মতামত রয়েছে। স্কলার মার্ক ডুরি কুরআনের শব্দ ও গঠন শৈলি ব্যবহার করে একটি ভিন্ন সুরার ক্রমে উপনিত হয়েছেন যা এই প্রবন্ধের বিষয়বস্ত

April 18, 2024
Quran Mistranslated Series - Ep 1: 36:40 "Each in an orbit, floating" - Major Mistranslation That Leads To A Geocentric Model of The Universe

In this series we will tackle Quranic verses which are repeatedly wrong translated across time in many different translation. The first in this series will focus on 36:40

April 16, 2024
The IQRA joins IQSA (International Quranic Studies Association)

We are happy to announce that The IQRA has joined the International Quranic Studies Association (IQSA). The International Qur’anic Studies Association (IQSA) is the first learned society dedicated to the study of the Qur’an. We hold conferences around the world and publish cutting-edge research and scholarship. The IQSA community and its partners include scholars, students, […]

April 15, 2024
আল কুরআনে তাগুতের পরিচয়

২:২৫৬ :: দীন গ্রহণের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। নিশ্চয় সত্যপথ স্পষ্ট হয়ে গেছে বিভ্রান্তি থেকে। সুতরাং যে ব্যক্তি তাগুতের প্রতি কুফর করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে সে এমন এক মজবুত হাতল আঁকড়ে ধরবে যা ভেঙ্গে যাবার নয়। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ২:২৫৭ :: আল্লাহ মু’মিনদের অভিভাবক, তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে […]

April 9, 2024
The Origin of Arabic Language & Its History

"And thus We have revealed to you an Arabic Qur'an" - Surah Ash-shuraa, verse 7 We explore the history and development of the Arabic language, as well as its connection to religion. Here are compilation of a few resources via YouTube. The Origins of Arabic - The Arabic Language How Arabia Got Its Name? What […]

April 8, 2024
Ghulam Ahmad Parwez - A Scholar of Islam

Among Muslim scholars, particularly who translated and interpreted the Quran in modern times, I am very fascinated and interested in the thoughts of late Ghulam Ahmad Parwez (1903-1985), also known as G A Parwez. Here is a summary as a way of introduction to this noteworthy scholar. Ghulam Ahmad Parwez was a prominent Islamic scholar, […]

April 6, 2024
The Qur'an and the Just Society - Ramon Harvey - Book Review

Main Topic or Theme The main theme of "The Qur'an and the Just Society" by Ramon Harvey revolves around exploring the ethical and moral framework provided by the Qur'an for creating a just society. Key Ideas or Arguments Chapter Titles or Main Sections Chapter Summaries Key Takeaways or Conclusions Author's Background and Qualifications Ramon Harvey […]

April 5, 2024
না বুঝে কুরআন পড়ে আমরা শয়তানকে যেভাবে সাহায্য করি

১.স্টারপিক ফ্যাক্টরির মালিক সোহান সাহেব। ফ্যাক্টরির বয়স প্রায় ২৫ বছরের বেশি, মালিকের বয়স ৬৭ বছর। তার ফ্যাক্টরির পুরনো এবং বিশ্বস্ত ম্যানেজার হলো ফারুক সাহেব। মালিক সোহান সাহেব এবার ঠিক করেছেন টানা ২ মাসের জন্য তিনি ফ্যাক্টরির নিয়মিত কাজ থেকে বিরতি নিয়ে আমেরিকায় তার মেয়ে, মেয়ে জামাই ও নাতিদের সাথে সময় কাটাবেন। দীর্ঘ ২ মাস তার […]