ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।
উদ্দেশ্য
ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।
বোধিচিত্তের আয়োজনে "ভাষাগত অভিব্যক্তির সেমান্টিক মানে ও 'প্র্যাগমেটিক মানে'র মধ্যে ফারাক করব ক্যামনে?'" প্রসঙ্গে আলাপ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক মোস্তফা নাজমুল মানছুর।
বিষয়টি দর্শন এবং বিশেষ করে ভাষার দর্শনের বিষয় হলেও, কুরআনের পাঠক ও ছাত্রদের জন্য যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ। এই আলোচনাটি যথেষ্ট চিন্তার খোরাক যোগ করবে তাদের জন্য যারা কুরআনের অর্থ বোঝা নিয়ে বুঝতে চান।
সেমান্টিক মিনিং (Semantic Meaning) হলো আক্ষরিক অর্থ, ডিকশনারীতে যে অর্থ পাওয়া যায় (যে কারনে এটিকে Lexicon meaning)-ও বলা হয়, বাক্যের শব্দগুলোর অর্থ এবং বিন্যাসে যে অর্থ ধরা পড়ে।
প্রাগমেটিক মিনিং (Pragmatic Meaning) হলো হলো ভাষাটি যে বলছে, সে কি বুঝাতে চাচ্ছে, যেটা অনেক সময় কনটেক্সট নির্ভর এবং সিম্যান্টিক মিনিং থেকে আলাদা হতে পারে।
খুব সহজে সেমান্টিক মিনিং এবং প্রাগমেটিক মিনিংয়ের উদাহরন বুঝতে হলে আমরা নীচের উদাহরনটি লক্ষ্য করতে পারি:
একজন শিক্ষক এবং তার এক ছাত্রের মধ্যে কথোপকথন:
একজন ছাত্র যে অনেকগুলো সাবজেক্টে ফেল করেছে সে তার স্যারের কাছে এসে বলছে যে স্যার আমার বা পরীক্ষা রিটেক করার সুযোগ দিন।
স্যার জিজ্ঞেস করলো কেন? সে বললো স্যার আমার বেশ কয়েকটা পরীক্ষা খারাপ হয়েছে তাই আবার দিতে হবে।
স্যার বললো কয়টা সাবজেক্ট?
ছাত্র বললো: ছয়টা।
স্যার জানতে চাইলো এই সেমিস্টারে কতগুলো সাবজেক্ট নিয়েছিলে।
ছাত্র কাচুমাচু হয়ে বললো: ছয়টা।
এই শুনে স্যার গম্ভীর হয়ে সংক্ষেপে বললো: খুব ভালো!
এই যে শেষের কথাটি, এর অর্থ ছাত্র কিন্তু বুঝলো যে স্যার বিরক্ত এবং রাগান্বিত এবং সিচুয়েশন ও কনটেক্সট বলে দিচ্ছে এর অর্থ কিন্তু ভালো নয়।
পৃথিবীর কোন ডিকশনারীতেই ভালো মানে 'খারাপ' লেখা নেই। এখানে স্যার যা অর্থ বুঝাচ্ছে তা ভালো যে না, সেটা বুঝতে হলে কনটেক্সট দেখতে হবে, কেবল আক্ষরিক অর্থ বা ডিকশনারী অর্থ নয়।
কুরআন যদি হয় স্রষ্টার কমিউনিকেশন, স্রষ্টার বক্তব্য; সেহেতু কুরআনে আমরা সিম্যানটিক মিনিংয়ের দিকে খেয়াল করলেও যদি কনটেক্সট ইগনোর করি সেক্ষেত্রে অনেক বিপদ হতে পারে। কুরআন পাঠ করার পরেও ভুল ভাল অর্থ বুঝে নেওয়া এবং সেই ভুলের উপর দাড়িয়ে ভুল ব্যাখ্যা ও থিওরী দাড় করানোর যে সমস্যা, সেটার ব্যাখ্যা হিসেবে সিম্যানটিক মিনিং এবং প্র্যাগমেটিক মিনিংয়ের মধ্যে গন্ডগোল করে ফেলা একটা বড় কারন হতে পারে।
একটি উদাহরন
সুরা মুনাফিকের (৬৩ নং সুরা) প্রথম আয়াতে আমরা সিম্যান্টিক মিনিং এবং প্রাগমাটিক মিনিংয়ের উদাহরন খুব ভালোভাবে পাওয়া যায় যেখানে বিষয়টা একদম ব্যাখ্যা করেই দেওয়া হয়েছে বলা যায়।
মুনাফিকরা যখন তোমার নিকট আসে তখন তারা বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল।
আর আল্লাহ জানেন যে, তুমি নিশ্চয়ই তাঁর রাসূল এবং আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
এখানে মুনাফিকদের বক্তব্যটি সেমান্টিক বা ডিকশনারী অর্থে যে সত্যকে ধারন করে, সেটিকে আল্লাহ সরাসরি নাকচ করে দিয়ে বলছেন যে এখানে বক্তা মুনাফিকদের ইনটেনশন বা উদ্দেশ্য অসৎ হওয়ায় তাদের এই কথার প্র্যাগমেটিক মিনিং বা বাস্তব অর্থ এই যে মুনাফিকরা মোটেও যা বলছে সেই মতে স্বাক্ষ্য দিচ্ছে না।
মুতাশাবিহ আয়াত ও প্রাগম্যাটিক মিনিং
সুরা আল ইমরানের ৭নং আয়াতে কুরআনে দুই ধরনের আয়াতের কথা বলা হয়েছে। মুহকাম বা আদেশ নিষেধ সম্বলিত যা কিতাবের ফাউন্ডেশন বা বুনিয়াদী অংশ। অন্য ধরনের আয়াতকে বলা হয়েছ মুতাশাবিহাত যাকে সাধারনত অনুবাদ করা হয় রূপক। তবে কোন কোন স্কলার এটিকে সাদৃশ্যপূর্ণ আয়াত হিসেবে অনুবাদ করার পক্ষে যার আরেকটি ব্যাখ্যা হয় কনটেক্সচুয়াল। এই কনটেক্সচুয়াল মিনিং যে সব আয়াতে প্রযোজ্য সেখানেই আমাদের সিম্যান্টিক বা আক্ষরিক অর্থের পরিবর্তে যেতে হবে প্র্য্যাগমেটিক বা প্রায়োগিক অর্থে।
On the Reinterpretation of Iman in Islam This video explores a provocative reinterpretation of one of Islam’s fundamental concepts: iman. The author Dr. Hal al-Sed Hassan argues that the traditional understanding of iman as “faith” or “belief” has been deliberately misconstrued over centuries, and that this misunderstanding has led to significant social and theological consequences within the Islamic […]
সাধারন ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে একটি কমন ধারনা হলো: ইসলামের সংবিধান হলো কুরআন এবং আধুনিক সময়ে যেসব সেকুলার সংবিধান করা হয় তা হলো "তাগুত"। বিষয়টি কি সত্যিই এরকম সাদা কালো? কুরআন কি সংবিধানি? একজন ইসলামে বিশ্বাসীর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে এই প্রশ্নের মিমাংসায় পৌছতে হলে আমাদের প্রথমে কয়েকটি কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে এগুতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে […]
মুসলিমদের জীবন বিধানের সকল মূলনীতি কোরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর তোমার ওপর যে কিতাব (কোরআন) নাজিল করা হয়েছে তাতে রয়েছে সকল বিষয়ের বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৮৯) দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ দেশের মুসলিমদের কোরআন দেখে শুদ্ধ করে পড়ার প্রতি গুরুত্ব থাকলেও ইসলামি জীবন বিধানের মৌলিক উৎস […]
১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে’ যে মূলনীতিসমূহ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য যে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ কর্তৃক পেশ করা হয়েছে তাতে অন্যতম তিনটি মূলনীতি হলো, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’। বস্তুত এই মূলনীতিসমূহ […]