দি  ইন্সটিটিউট ফর কুরআনিক রিসার্চ এন্ড এ্যাপ্লিকেশন (ইক্বরা)

লক্ষ্য

ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।

উদ্দেশ্য

ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।

প্রকাশিত বইসমূহ

প্রথম ঘর কাবা, মক্কা ও বাক্কা

আবদুল্লাহিল কাউছার, মুল লেখক : ড: কাশিফ খান


কাবাঘর নিয়ে অনেকগুলো মিথ প্রচলিত আছে যার মধ্যে অন্যতম হল এটিই প্রথম ঘর যেখান থেকে মানুষের জন্য দিকনির্দেশনা দেয়া হয়। এই দাবীর সমর্থনে তারা সূরা আল ইমরান এর ৯৬ নং আয়াতের ভুল অনুবাদ প্রমাণ হিসাবে পেশ করে। যা হল:

"নিঃসন্দেহে প্রথম ঘর যা মানুষের জন্য স্থাপন করা হয়েছিল, তাতো মক্কা্য়, যা বরকতমন্ডিত এবং সারা জাহানের জন্য পথপ্রদর্শক" (৩:৯৬ তাইসিরুল কুরান)।

চলুন দেখি ৩:৯৬ নং আয়াতের সঠিক অনুবাদে কি বলা আছে?

إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِي بِبَكَّةَ مُبَارَكًا وَهُدًى لِّلْعَالَمِينَ (৩:৯৬)

আরবী “إِنَّ” শব্দটি সংযোজক অব্যয় (conjunction), সর্বনাম (pronoun) এবং ক্রিয়া বিশেষন (adverb) হিসেবে ব্যাবহৃত হয়।

সংযোজক অব্যয় হিসেবে “إِنَّ” অর্থ : যে (that), যাতে ( in order to), এজন্য (so as to), এই প্রসংগে (with a view to) এবং যখন (while) ইত্যাদি।

সর্বনাম হিসেবে “إِنَّ” অর্থ : উহা/সেই/যেই (that), যেমনটি (such), ইহা (it), এটা (this one), ঐটা (that one), যাহা (which), যার (whose), কার (whom), কি/কিসে (what), এইগুলো (these) এবং সেগুলো (those) ইত্যাদি।

আর ক্রিয়া বিশেষন (adverb) হিসেবে “إِنَّ” অর্থ : ঐ পর্যন্ত (that), অতিমাত্রায় (exceedingly), সর্বাধিক (most), আরও (more), ঘনিষ্ঠভাবে (closely) এবং ব্যাপকভাবে (widely) ইত্যাদি।

এই আয়াতে “إِنَّ” শব্দটি পূর্ববর্তী ৩:৯৫ নং আয়াতে উল্লিখিত مِلَّۃَ اِبۡرٰہِیۡمَ এর সর্বনাম হিসেবে ওই/যেই/সেই অর্থে ব্যাবহৃত হয়েছে।

প্রচলিত ভুল অনুবাদে “إِنَّ” অর্থ করা হয় নিশ্চয়ই, অবশ্যই, নিঃসন্দেহে, সত্যিই ইত্যাদি।

কুরআনিক শব্দ "بَيْت" হল লিখিত সনদ (penned charter), কর্মসূচি (action), বা পরিকল্পনা (planning) এবং একটি অপার্থিব (ভাববাদী অর্থে) শামিয়ানা (virtual covering), অথবা আল্লাহর একটি আদর্শিক মঞ্চ (virtual platform), যা কাবা নামে পরিচিত, মক্কায় অবস্থিত, পাথরের তৈরি কথিত আল্লাহর ঘর নয়।


"بَيْت" (বাইত) শব্দের বিস্তারিত অর্থ সম্পর্কে পড়ুন: কাবা কি ইব্রাহীম (আঃ) নির্মিত বাইত / ঘর?



আরবি "وُضِعَ" শব্দটি পাথর বা কোনো নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কিছু তৈরি করা অর্থে ব্যবহৃত হয় না বরং কোন কিছু সম্পাদনা করা (composing), সংকলন করা (compiling), অবস্থানের পরিবর্তন করা (transposing), লেখানো (writing), নির্ধারণ করা (laying down) এবং উদ্ভাবন করা (devising) ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয় ।

কারণ আরবি “وُضِعَ” শব্দটি আরবি শব্দ “تَأْسِيس”, “تَألِيف” এবং “حَطّ” এর প্রতিশব্দ যার অর্থ সংকলন (compile), রচনা (compose), লেখা (writing), স্থানান্তর (transfer), পরিবর্তন (switch), প্রতিস্থাপন (transplant) এবং নথিভুক্ত করা (record)।

ধ্বনিগতভাবে অনুরূপ ফার্সি শব্দ "وضع" মানে শারীরিক আকৃতি বা বস্তুগত গঠন। অতএব, সেই সব পৌত্তলিক যারা আরবি কুরআনের অনুবাদে আরবি শব্দ “وُضِعَ” এর পরিবর্তে অনুরূপ ফারসি শব্দ “وضع” ব্যবহার করেছে, তাদের বুঝা উচিৎ যে কুরআন ফার্সি ভাষায় অবতীর্ণ হয়নি।

এই আয়াতের প্রচলিত অনুবাদে “لَلَّذِي” শব্দের অর্থ উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদ দেয়া হয়েছে। কারণ আমাদের আলেমরা জাল অনুবাদের সাবলীল বাক্য তৈরি করতে অক্ষম, যদি তাদের এই আয়াতের অনুবাদে “لَلَّذِي” অনুবাদ করা হয়।

তারা কুরানের প্রচলিত ভুল অনুবাদে الَّذِي শব্দের ব্যাকরণগত নিয়মের প্রয়োগ উপেক্ষা করে الَّذِي কে সম্বন্ধবাচক সর্বনাম হিসেবে কে (who)/যা (which)/ যে (that) ইত্যাদি অর্থে ব্যাবহার করতে অভ্যস্ত।

কিন্তু আরবি ব্যাকরন অনুসারে “الَّذِي” শব্দটি শুধুমাত্র তখনি কর্তৃবাচক সর্বনাম হিসাবে ব্যবহৃত হবে যখন এটি “ال” যুক্ত নির্দিষ্ট বাচক পদ অথবা কোন ব্যাক্তি নাম অনুসরন করে। অর্থাৎ الَّذِىْۤ শব্দটির পূর্বে যদি আলিফ লাম যুক্ত কোন শব্দ কিংবা কোন নাম বাচক শব্দ থাকে যাকে الَّذِىْۤ শব্দটি উপস্থাপন করে। যেমন ৫৯:২৩ ہُوَ اللّٰہُ الَّذِیۡ অর্থ তিনি আল্লাহ যিনি। যদি এই শর্ত পূরণ না করে তাহলে الَّذِىْۤ শব্দটি ক্রিয়া বা বিশেষন হিসেবে لذ অথবা “لذۃ” মূল শব্দের একটি রুপ হিসেবে এর অর্থ হবে: উৎফুল্ল হওয়া (to delight), উপভোগ করা( to enjoy), স্বাদ/মজা (taste), আনন্দ (pleasure), উপকার/সুবিধা (have the benifit of) ইত্যাদি।

আল্লাহ তাআলা কুরআনে الَّذِي শব্দটি ক্রিয়াবাচক বা বিশেষন হিসেবে বিভিন্ন আয়াতে ব্যাবহার করেছেন। যেভাবে আমরা বিভিন্ন দাপ্তরিক চিঠিপত্রে লিখি যেমন "আমি এটি ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত/উৎফুল্ল বোধ করছি …." বা "আমি আপনাকে এই বিষয়ে জানাতে পেরে আনন্দিত যে…" এবং ”মানুষের সুবিধার জন্য….” ইত্যাদি।

অনুরূপভাবে, “لَلَّذِي” বাক্যাংশটি এই ৩:৯৬ নং আয়াতে একই ভাষাগত শৈলীতে ব্যবহার করা হয়েছে যেখানে “لَلَّذِي”-এর শুরুতে “ل” অক্ষরটি একটি পদান্বয়ী অব্যয় যার অর্থ “জন্য (for)/প্রতি (to)/অনুযায়ী (in order to)” এবং لَّذِي " শব্দটি 'দয়া করে', 'উপভোগ করা' এবং এর উপকারিতা বোঝাতে অনুগ্রহের অভিবাদন হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে ।

এই আয়াতের গুরুত্বপূর্ণ শব্দ "بِبَكَّةَ" যার অর্থ সুচতুরভাবে বিকৃত করা হয়েছে যাতে কেন্দ্রীয় উপাসনালয় কাবা ও তার নিষিদ্ধ প্রথাসহ সমগ্র পৌত্তলিকতাকে রক্ষা করা যায়। কথিত মুসলিম পণ্ডিতরা মিথ্যাভাবে দাবি করেন যে "بَكَّةَ" হল ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র শহর মক্কার (مكَّةَ) একটি প্রাচীন নাম এবং তাদের অলিক বিশ্বাস যে কোরানের শব্দ "بَكَّةَ" দ্বারা কাবা এবং এর আশেপাশে অবস্থিত পবিত্র স্থানকে বোঝায়, যদিও কাবা যে শহরে অবস্থিত তার নাম "مكَّةَ"।

কিন্তু, তাদের মিথ্যা দাবির পক্ষে কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই বা প্রত্নতত্ত্ব তাদের এই মিথ্যাকে সমর্থন করে না যে “بَكَّةَ” কখনও “مكَّةَ” বা কাবার একটি প্রাচীন নাম ছিল। তদুপরি, এটি যদি আল্লাহর প্রথম ঘর হয়ে থাকে তবে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগে অন্য কোনো নবী কেন আল্লাহর তথাকথিত ঘরটিতে যাননি?

এটা বোধগম্য নয় যে আমাদের আলেমরা আল্লাহর ভয় কে উপেক্ষা করে কীভাবে আল্লাহর নিজের বাণী "بَكَّةَ" পরিবর্তন করার সাহস করেছেন এবং আল্লাহর বাণী পরিবর্তনে তাদের জঘন্য কর্মকাণ্ডকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য খোঁড়া অজুহাত উদ্ভাবন করেছেন এবং কীভাবে তাদের অনুসারীরা আল্লাহর বাণী পরিবর্তনে তাদের বেআইনি কাজকে মেনে নিচ্ছেন?

এমন নয় যে আল্লাহ প্রাচীন যুগে কুরআন অবতীর্ণ করেছেন যেখানে তিনি এর আধুনিক নাম “مكَّةَ” এর পরিবর্তে “بَكَّةَ” শব্দটি ব্যবহার করেছেন এবং তিনি যা বলতে চান তা বলার জন্য আল্লাহর কোন শব্দের অভাব আছে! এমনকি এটি এমনও নয় যে আল্লাহ এমন একজন পুরানো সত্ত্বা! যিনি তখনও প্রাচীন বিশ্বের পশ্চাৎপদ যুগে বসবাস করছিলেন! যার কারণে তিনি কুরআন নাযিলের সময় "بَكَّةَ" এর বর্তমান নামটি ব্যবহার করতে ভুলে গিয়েছিলেন!

আল্লাহ "مكَّةَ" এবং "بَكَّةَ" এর মধ্যে পার্থক্য জানেন কারণ তিনি নিশ্চিতভাবে কুরআনে "مكَّةَ" শব্দটি ব্যবহার করেছেন যেখানে "مكَّةَ" ও তার আশেপাশে মসজিদ আল হারাম (কাবা) উল্লেখ করার প্রয়োজন হয়েছে। অনুগ্রহ করে ৪৮:২৪ আয়াতটি দেখুন যেখানে "بِبَطْنِ مَكَّةَ" শব্দটি "মক্কার পেট বা কেন্দ্র" বোঝাতে ব্যাবহৃত হয়েছে এবং পরবর্তী আয়াত ৪৮:২৫-এ পূর্ববর্তী ৪৮:২৪ আয়াতের “بِبَطْنِ مَكَّةَ” শব্দের ধারাবাহিকতায় বেআইনি উপাসনার স্থান বুঝাতে "الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ" শব্দগুচ্ছ উল্লেখ করা হয়েছে। এই আয়াতগুলোর বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, পবিত্র / Sanctified প্রতিষ্ঠানটি "الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ" মক্কার মাঝখানে অবস্থিত। এটি সেই একই বক্তব্য যা আমাদের চতুর আলেমরা “بَكَّةَ” শব্দটি উদ্ভাবন করে মিথ্যাভাবে এটিকে “مكَّةَ” এবং এর আশেপাশে কাবার প্রাচীন নাম বানিয়েছে।

আমাদের পৌত্তলিক আলেমরা এবং তাদের অনুসারীরা শুধু আমাদের বোকা বানাচ্ছেন না বরং আল্লাহর উপর মিথ্যা চাপিয়ে দিচ্ছেন এবং আল্লাহর সুরক্ষিত বাণী পরিবর্তন করার গুরুতর অপরাধ করছেন। আল্লাহর কাছে তাঁর কথার সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত এবং তিনি কাউকে কোনো কারণে তাঁর কথা পরিবর্তন করার অধিকার দেননি।

অতএব, আমরা যদি ধরেও নিই যে “بَكَّةَ” ছিল “مكَّةَ”-এর পুরাতন নাম, তবুও আমরা “بَكَّةَ”-এর স্থলে “مكَّةَ” নিতে পারি না কারণ অবতীর্ণ হওয়ার পর যে কোন পরিবর্তনের জন্য আল্লাহ কুরআনের বাণী সিলমোহর করে দিয়েছেন।
অতএব, চতুর পণ্ডিত অনুসারীদের অবশ্যই বুঝতে হবে যে “بَكَّةَ” এর অর্থ আমাদের অজ্ঞ আলেমদের দ্বারা প্রদত্ত কোন সত্য বা মিথ্যা যুক্তি দিয়ে “مكَّةَ” করা যাবে না কারণ তারা আল্লাহর চেয়ে বেশি জ্ঞানী নন যিনি সচেতনভাবে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে মক্কা শহরকে বুঝাতে যার মাঝখানে "الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ" তথা হারাম পবিত্র প্রতিষ্ঠানে (sanctified institute / preserved institute) অবস্থিত (৪৮:২৪ - ২৫) مكَّةَ শব্দটি সঠিকভাবে ব্যাবহার করেছেন। এবং ৩:৯৬ নং আয়াতে "بَكَّةَ" শব্দটি একটি স্থান নয় বরং একটি বিশেষণযুক্ত বিশেষ্য (adjective noun) যা অব্যয় পদ “ب” এর সংমিশ্রণে এর পূর্ণ রূপ “بِبَكَّةَ” হিসেবে এসেছে।

যাইহোক, ৩:৯৬ নং আয়াতের “بَكَّةَ” শব্দের সঠিক অর্থ হল: মুগ্ধকরণ, মোহনীয় (Fascination), তাৎপর্যপূর্ণ (implication), গুণবাচকতা (Attribution), পরিপাটি (Grooming), আকর্ষণ (Interest), বক্তৃতা করা (Lecturing), উপদেশ (Advise), পরামর্শ দেয়া (Counseling), পার্থক্য করা (draw a line), দায়বদ্ধতা (Holding responsibility) , কোনো কিছুতে লেগে থাকা (Being stick to something), কোমলতা (Tenderness of heart), সমবেদনা (Compassion) এবং ন্যায়বিচার (Justice)।

তদুপরি, "بِبَكَّةَ" এর শুরুতে আসা "بِ" অব্যয়টিকে "মধ্যে (in)" বা "এতে (at)" অর্থে অনুবাদ করা যাবে না, যেমনটি মিথ্যাভাবে মক্কায়/মক্কাতে আল্লাহর প্রথম ঘর বানানোর জন্য এই ৩:৯৬ নং আয়াতের বিভ্রান্তিকর অনুবাদে দেখা যায়। অতএব, সঠিক ভাষাগত নিয়ম অনুসারে "بَكَّةَ" একটি স্থান বা শহর হতে পারে না যেটি মাটিতে কোথাও অবস্থিত কারণ এর সাথে একটি পদান্বয়ী অব্যয় "بِ" যুক্ত আছে যার সঠিক অর্থ হল সাথে/সহিত (with)।

পরবর্তী শব্দ “مُبَارَكًا” অর্থ আশীর্বাদ/অনুগ্রহ/কল্যাণকর /উপকারী (blessing)। শব্দটির শেষে আলিফ অক্ষরটি "এর (of)" অর্থে ব্যাবহৃত হবে।

“وَ” এর অর্থ ‘এবং’।

“هُدًى” বলতে নির্দেশিকা/ নির্দেশনা (instructions) বা পরিচালকের 'নির্দেশনা' (direction of the director) একটি নির্দিষ্ট পথ (a fixed path) ইত্যাদি বুঝায়।

“لِّلْعَالَمِينَ” এ অব্যয় “لِّ” এর অর্থ “জন্য (for)” এবং “عَالَمِين” শুধুমাত্র জগতই নয় বরং সবকিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং সঠিক অনুবাদ হল 'সমস্ত পরিস্থিতিতে (all situations)', 'সব সময় (all times)' এবং 'সব জায়গায় (all places)' বা ' সর্বত্র (everywhere)'।

3:96 إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِي بِبَكَّةَ مُبَارَكًا وَهُدًى لِّلْعَالَمِينَ

That first charter/plan/scheme devised/compiled for people to enjoy/benefit with compassionate justice, of blessing and an instruction/direction for all situations (3:96) (word to word correct translation)

যেই প্রথম সনদ/পরিকল্পনা/কর্মসূচি তৈরি/সংকলিত করা হয়েছিল মানুষের জন্য কল্যাণকর সহানুভূতিশীল ন্যায়বিচারের সাথে উপভোগ করতে, এবং সমস্ত পরিস্থিতিতে একটি নির্দেশিকা/নির্দেশনা হিসেবে। (৩:৯৬)

মুলত এই ৩:৯৬ নং আয়াতে আল্লাহ তা'আলা ইবরাহীম (আঃ) কর্তৃক প্রণীত প্রথম লিখিত সনদের কথা বলেছেন যার মধ্যে মানুষের জন্য কল্যাণকর আকর্ষণীয় দিকনির্দেশনা রয়েছে, যা ২:১২৭ এবং ১৪:৩৭ আয়াতেও উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কাবাঘর কেন্দ্রীক ইসলাম পূর্ব বিভিন্ন পৌত্তলিক প্রথা ইসলামে অভিযোজিত করতে পৌত্তলিক পন্ডিতরা ৩:৯৬ নং আয়াতের অর্থ বিকৃত করে কাবাঘর নিয়ে এইসব ভিত্তিহীন মিথ্যা বানোয়াট গল্পের প্রচলন করেছে। অতএব এই সকল ভুল অনুবাদ ও এর সমর্থনে রচিত বানোয়াট হাদিস দ্বারা গৃহীত আল্লাহর ঘোষিত মসজিদুল হারাম কাবাঘর কেন্দ্রিক সকল প্রথাই অগ্রহণযোগ্য।


সম্পাদকের নোট: আর্টিকেলটি সামান্য এডিট করে প্রকাশ করা হয়েছে। আর্টিকেলের সকল বক্তব্য ইক্বরার অফিসিয়াল অবস্থানের সাথে পুরোপুরি সহমত নাও হতে পারে। এখানে ব্যক্ত গবেষনা একান্তই মূল লেখকদের। তবে নতুন তথ্য উপস্থাপন এবং কুরআনের আয়াতের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ উপলব্ধি ইক্বরা সবসময় আমন্ত্রন জানায়।

মূল প্রবন্ধের উৎস ও অরিজিনাল: Actual Message of the Quran

ট্যাগ / কী-ওয়ার্ড:

অন্যান্য প্রবন্ধ

April 15, 2025
সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার : কুরআনে সামাজিক মূল্যবোধ

১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে’ যে মূলনীতিসমূহ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য যে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ কর্তৃক পেশ করা হয়েছে তাতে অন্যতম তিনটি মূলনীতি হলো, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’। বস্তুত এই মূলনীতিসমূহ […]

April 11, 2025
নাসর হামিদ আবু যায়েদ - একজন আধুনিক কুরআন স্কলারের কর্ম-পরিচিতি

নাসর হামিদ আবু যায়েদ: এক মুক্তচিন্তার কুরআন গবেষকের জীবনচিত্র পূর্ণ নাম: নাসর হামিদ আবু যায়েদ (Nasr Hamid Abu Zayd)জন্ম: ১০ জুলাই ১৯৪৩, তানতা, মিসরমৃত্যু: ৫ জুলাই ২০১০, কায়রো, মিসরপরিচয়: কুরআন গবেষক, সাহিত্য সমালোচক, ধর্মতাত্ত্বিক ও মুক্তচিন্তার ইসলামী চিন্তাবিদ 🎓 শিক্ষা ও পেশাজীবন নাসর হামিদ আবু যায়েদ কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও ইসলামি শিক্ষায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ […]

April 1, 2025
Recovering Orignal Qur’anic Vocabulary - How the Qur’an Evolved?

In this interview, the host discuss with Dr. Munther Younes of Cornell University to discuss his research on the transmission and evolution of the Qur'anic text. Dr. Younes is Reis Senior Lecturer of Arabic Language and Linguistics at Cornell University and a renowned expert in the Arabic language. They discuss the Arabic of the Qur'an, […]

March 30, 2025
রহমানের ভাষার নিয়ামত এবং নোম চমস্কির ইউনিভার্সাল ল্যাংগুয়েজ থিওরী

আর রহমান দয়াময় সত্তা আল্লামাল ক্বুরআন তিনি শিক্ষা দিয়েছেন পঠন ক্ষমতা খালাক্বাল ইনসান তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষ আল্লামাহুল বায়ান তিনি তাকে শিক্ষা দিয়েছেন স্পষ্টভাবে বিবৃত করার ভাষা। - সুরা আর-রাহমান, আয়াত ১-৪ সুরা আর-রাহমান কুরআনের ৫৫তম সুরা এবং মুসলিমদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি সুরা। এই সুরার সুচনায় আমরা মানুষের পাঠ করার ক্ষমতা এবং কথা বলার […]

March 24, 2025
Fractal Design of the Quran

The concept of fractals in the Quran can be explored through the lens of recurring patterns in nature, self-similarity, and divine order. While the Quran does not explicitly mention "fractals" (a term coined in modern mathematics), it frequently describes natural patterns that align with fractal geometry, reinforcing the idea of a unified and recursive design […]

March 19, 2025
Understand 85% of the Quran - Quranic Vocabulary Builder

These Lessons will help you master the 85% of the Quranic Vocabulary series

March 16, 2025
Who are the Believer in the Quran? In the Context of Siyam

Did you think Siyam صيام was only for "Muslims" who don't eat and drink for 30 days? Think again. This video explore 'Mominoon مؤمنون' and 'Al-lazina Amanoo الذين آمنوا'—and see how these terms fit in with Siyam. This is an exercise in understanding an action through knowing its doers. Major Take Away Siyam is an […]

March 15, 2025
Learn 50% of the Quran - Vocabulary Builder

Use this to learn 50% of the Words of the Quran