আল্লাহ প্রত্যেক রসূলের কাছে তার সম্প্রদায়ের ভাষাভাষী করে ওহী নাযিল করেছেন, যেন ঐ সম্প্রদায়ের সাথে তাদের মাতৃভাষায় যোগাযোগ করা যায়। মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ ও তাঁর সম্প্রদায়ের ভাষা আরবি হওয়ার কারণে কুরআন আরবি ভাষায় নাযিল করা হয়েছে। যদিও কুরআন সমগ্র বিশ্ববাসীর বা মানবজাতির জন্য পথনির্দেশ ও স্মারকগ্রন্থ (সংবিধান ও জীবনবিধান সম্বলিত গ্রন্থ) হিসেবে নাযিল হয়েছে, তবুও এটাকে তার প্রথম শ্রোতামণ্ডলীর ভাষায় (আরবি ভাষায়) নাযিল করা হয়েছে। অন্য ভাষাভাষীরা নিজ নিজ মাতৃভাষায় অনুবাদ করে নিয়ে এর বাণীর সাথে পরিচিত হতে পারবে। এটিকে এমন আরবিতে নাযিল করা হয়েছে, যাতে অন্য ভাষায় তা অনুবাদ করা খুব কঠিন না হয়, এবং এর ফলে সকলেই তা সহজে বুঝতে পারে। তবে কুরআন থেকে হিদায়াত লাভের ক্ষেত্রে ভাষাগত দূরত্বের কারণে অবশ্যই অনারবদের জন্য পরীক্ষাটা তুলনামূলক কিছুটা হলেও কঠিন। অনুরূপভাবে কুরআন নাযিলের সমকালে উপস্থিতদের তুলনায় পরবর্তীকালের লোকদের জন্য এর পরিবেশগত তাৎপর্য ধারণ করাও কিছুটা হলেও কঠিন। তাই সবার জন্য যেন মোটামুটি কাছাকাছি উপলব্ধির উপযোগী হতে পারে, কুরআনকে সেরূপ সহজ করা হয়েছে। কুরআনে বর্ণিত রসূলদেরকে স্বীয় সম্প্রদায়ের ভাষাভাষী করে পাঠানোর নীতি থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা অনুসারে কুরআন অনুধাবন প্রচেষ্টার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে একে নিজ নিজ মাতৃভাষায় অনুবাদ করে নেয়া প্রয়োজন।
অন্য সব রসূলকে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের ভাষাভাষী করে প্রেরণ করার মতো মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহকেও তাঁর সম্প্রদায়ের ভাষাভাষী করে প্রেরণ করা হয়েছে এবং তারা যেন সহজে বুঝতে পারে, সেজন্য কুরআনকে আরবি ভাষায় নাযিল করা হয়েছে। কিন্তু সেই সাথে তাঁর মাধ্যমে নবুওয়াতের ও কিতাব নাযিলের ধারাবাহিকতা সমাপ্ত করে দেয়া হয়েছে। সুতরাং কুরআন থেকেই অন্য সব ভাষাভাষীরা হিদায়াত গ্রহণ করতে হবে, যদিও কুরআন তাদের মাতৃভাষায় নাযিলকৃত নয়। এর মানে হলো, আরবি ভাষাভাষীরা ছাড়া অন্য ভাষাভাষীরা কুরআনের দ্বিতীয় পর্যায়ের শ্রোতা বা পাঠক, যাদেরকে আরবি ভাষা থেকে কুরআনকে নিজ মাতৃভাষায় অনুবাদ করে নিতে হবে। এটি প্রমাণ করে যে, কুরআন নাযিলের মাধ্যমে মানবজাতির অনুবাদ যোগ্যতা ও যোগাযোগের আধুনিক কালকে এ বিষয়ে উন্নত স্তর হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
আল কুরআন সহজ আরবিতে নাযিল হওয়ার কারণে তার অনুবাদ সহজ হওয়ার কথা হলেও প্রচলিত অনুবাদসমূহ অনেক ক্ষেত্রে কুরআনের বক্তব্যের সঠিক মর্ম প্রকাশ করে না। এর কারণ হলো শুধু অনুবাদ নয়, বরং যাদের ভাষায় কুরআন নাযিল হয়েছে তারাও অনেক ক্ষেত্রে কুরআনের অনেক আয়াতের সঠিক মর্ম থেকে দূরে অবস্থান করছে। আর এর দুটি কারণ হলো: (১) প্রচলিত হাদীসগ্রন্থের বক্তব্যের সাথে মিলাতে গিয়ে কুরআনের অনেক বক্তব্যের সঠিক তাৎপর্য থেকে সরে যাওয়া, (২) কুরআনে ব্যবহৃত কিছু শব্দ পরবর্তীতে আরো বিভিন্ন অর্থে প্রয়োগ হওয়ার কারণে অভিধানে সেরূপ অর্থের অন্তর্ভুক্তি এবং সেগুলোর ক্ষেত্রে কুরআনিক প্রয়োগরীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে এরূপ অন্য অর্থকে প্রাধান্য দেয়া। উদাহরণস্বরূপ ‘তাক্বদীর’ শব্দটি সম্পর্কে বলা যেতে পারে যে, এ শব্দটির মূল অর্থ ‘প্রাকৃতিক নিয়ম নির্ধারণ’ এবং কুরআনে শব্দটি এ অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে এ শব্দটি হাদীস এবং অভিধানের প্রভাবে ‘ভাগ্য’ অর্থে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে কুরআনের আয়াতের ক্ষেত্রেও শব্দটিকে ‘ভাগ্য’ অর্থে ধরে নেয়া হয়, যা কুরআনের সামগ্রিক বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক।
এই প্রেক্ষিতে যদিও বাংলা ভাষায়ও কুরআনের অনেক অনুবাদ প্রচলিত রয়েছে তবুও কুরআনের আয়াতসমূহকে যথাসম্ভব বিষয়ভিত্তিক বিন্যাস করে ‘সমন্বিত অধ্যয়ন’ এর মাধ্যমে কুরআনিক প্রয়োগ অনুসারে অনুবাদ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। এ প্রয়োজনীয়তাবোধ থেকেই এ অনুবাদকর্মের অবতারণা। এজন্য যেসব প্রসিদ্ধ অনুবাদ বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত হয় (যেমন: তাফহীমুল কুরআন, মাআরিফুল কুরআন, ফী যিলালিল কুরআন, তাফসীরে ইবনে কাসীর, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ প্রভৃতি) সেগুলোর পাশাপাশি আরবি শব্দের বিভিন্ন অভিধান ও ব্যাকরণগ্রন্থ দেখে এবং তুলনামূলক অধ্যয়ন পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে যথাসম্ভব যথোপযুক্ত শব্দ বাছাই করার চেষ্টা করা হয়েছে।
এ অনুবাদের সময় কোনো আয়াতের অর্থ নির্ণয়ে তা যেন অন্য কোনো আয়াতের বিপরীত না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই অনুবাদ করার চেষ্টা করা হয়েছে। একটি শব্দ যেসব স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে যথাসম্ভব তা খেয়াল রেখে প্রতিটি স্থানের পূর্বাপর বক্তব্যের ধারাবাহিকতায় যেসকল অর্থ হতে পারে এবং যেখানে যে অর্থটি অধিক যুক্তিসমৃদ্ধ তা বাছাই করার চেষ্টা করা হয়েছে।
যদি অনুবাদ করার সময় কুরআনের শব্দ বিন্যাসের অনুসরণ করা হয় তাহলে অনুবাদকে কুরআনের আরবি আয়াতের সাথে মিলিয়ে বুঝার বিষয়টি তুলনামূলক বেশি সহজ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এজন্য একেকটি আয়াতকে একাধিক বাক্যাংশের সমন্বয়রূপে হিসাব করে প্রতিটি বাক্যাংশের অনুবাদ বাক্যাংশের ক্রমধারা অনুসারে করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটি অনুবাদের একটি নতুন স্টাইল। প্রাথমিকভাবে এতে বাংলা বাক্য বিন্যাসের চেয়ে কিছু ব্যতিক্রম থাকার কারণে অনুবাদ পাঠে সামান্য অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু সামান্য কষ্ট স্বীকার করে এভাবে কিছু দিন আরবি আয়াতের সাথে মিলিয়ে অনুবাদ পড়ার চর্চা করলে আশা করা যায় ঐ অসুবিধা কেটে যাবে। অন্যদিকে এভাবে আরবি আয়াতের সাথে মিলিয়ে অনুবাদ পড়তে পড়তে পাঠকের এমন যোগ্যতা তৈরি হতে পারে যে, সে আর কোনো অনুবাদই পড়া লাগবে না, সরাসরি আরবি আয়াত পড়েই অনুবাদ বুঝে যাবে। এরূপ আশাবাদ থেকেই এ ধরনের ব্যতিক্রমধর্মী অনুবাদ করার প্রয়াস নেয়া হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি সূরার অনুবাদ কিছু পাঠককে পড়তে দেয়ার মাধ্যমে এ বিষয়ে একটি প্রাথমিক সমীক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং তাতে এ ধরনের উদ্দেশ্য অর্জনে ইতিবাচক ফলাফল জানা গিয়েছে।
একটি আয়াতের বক্তব্যকে ভালোভাবে হৃদয়ঙ্গম করার জন্য বিভিন্ন শব্দের একাধিক সমার্থবোধক শব্দার্থ (/) চিহ্ন দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে যেসব আরবি শব্দ বাংলায় পরিচিত হয়ে গেছে অথবা যেসব আরবি শব্দকে বাংলায় পরিচিত শব্দে পরিণত করা যেতে পারে সে ধরনের আরবি শব্দকে বাংলায় বাংলা উচ্চারণে রেখে দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক ক্ষেত্রে বাংলা অর্থটি মূল রেখে ব্রাকেটে আরবি শব্দটি লেখা অথবা আরবি শব্দটি মূল রেখে ব্রাকেটে বাংলা শব্দার্থ লেখার রীতি অবলম্বনের ইচ্ছা থাকলেও প্রথম সংস্করণে তা রক্ষা করা যায় নি। পরবর্তী সংস্করণে এ দুটি রীতির কোনো একটিকে সম্পূর্ণ অনুবাদে অবলম্বন করা যেতে পারে।
এ অনুবাদটির নামকরণ করা হয়েছে ‘কুরআনান আ’জাবান’ (বিস্ময়কর কুরআনের অনুবাদ)। কুরআনে কুরআনের বেশ কিছু গুণবাচক নাম রয়েছে যেমন: কুরআনুম মাজীদ, কুরআনুন কারীম, কুরআনুম মুবীন, কুরআনুল আযীম, কুরআনুল হাকীম, কুরআনান আ’জাবান। এর মধ্যে ‘কুরআনান আ’জাবান’ (বিস্ময়কর কুরআন) নামটি আমাদের জানামতে কোনো অনুবাদগ্রন্থে ব্যবহৃত হয়নি। এই প্রেক্ষিতে কুরআনের এ গুণবাচক নামটিকে পরিচিত করানো এবং একই সাথে একটি স্বতন্ত্র মৌলিক গবেষণা, সংস্করণ ও সমন্বয়মূলক অনুবাদগ্রন্থের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এ নামটিকে বাছাই করা হয়েছে।
অনুবাদের জন্য যে নীতিমালা অনুসরণের চেষ্টা প্রসঙ্গে উপরে উল্লেখ করা হয়েছে অনুবাদটিতে সম্পূর্ণরূপে তা যথানিয়মে অনুসরণ করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করা যায় না। বরং এক্ষেত্রে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে এবং প্রথম সংস্করণে তা কতটুকু রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে তার পর্যালোচনার মাধ্যমে পরবর্তী সংস্করণে আরো উন্নত করার ইচ্ছা রয়েছে।
ওয়ার্ল্ড আল কুরআন রিসার্চ সেন্টারের রিসার্চ ফেলো শওকত জাওহার বিভিন্ন আয়াতের অনুবাদের পরিমার্জন কাজে এবং সম্পূর্ণ অনুবাদকে কম্পোজ করার ক্ষেত্রে ২০১১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পূর্ণ এক বছর মূল অনুবাদকের (তৈয়াবুর রহমান গোপালগঞ্জী) সাথে থেকে সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করেছে।
যেহেতু অনুবাদ হচ্ছে কুরআনের বক্তব্যকে নিজ ভাষায় অনুধাবনের জন্য একটি মানবীয় প্রচেষ্টা, তাই তা কখনোই কুরআনের বক্তব্যের সম্পূর্ণ সঠিক ভাব প্রকাশ করতে পেরেছে বা অনুবাদের জন্য সঠিক শব্দ বাছাই ও শব্দ বিন্যাস করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করা যেতে পারে না। কোনো ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন শব্দার্থও বাছাই করা হতে পারে যা প্রকৃতপক্ষে সঠিক অর্থ প্রকাশ করে না। যদি অধিকতর যুক্তিভিত্তিক অধ্যয়নের মাধ্যমে এরূপ কোনো ত্রুটি চিহ্নিত হয়, ইনশাআল্লাহ তা পরবর্তী সংস্করণে অবশ্যই সংশোধন করে নেয়া হবে।
কুরআনান আ'জাবান শিরোনামের অনুবাদ গ্রন্থটির রচয়িতা তৈয়াবুর রহমান গোপালগঞ্জী। জনাব তৈয়াবুর রহমানের জন্ম ১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জ জেলার পুখরিয়া গ্রামে। তিনি ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৫৯ সালে বি. কম ডিগ্রি লাভ করেন। কৃষি ব্যাংকে তার কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৬০ সালে এবং ১৯৯৫ সালে অবসরে যাওয়ার আগে তিনি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (খুলনা), এডিশনাল ডাইরেক্টর ইন চার্জ, কমার্শিয়াল অপারেশন পদে উন্নীত হন।
তিনি ১৯৮১ সালে ‘ওয়ার্ল্ড আল কুরআন রিসার্চ সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করে ‘দ্বীনের দলীল কয়টি?’ সহ কুরআন গবেষণাভিত্তিক বই রচনা করেন। এই গবেষণাকর্মের পাশাপাশি তিনি ‘মুসলিমূন’ বা ‘মুসলিম উম্মাহ’ (উম্মাতাম মুসলিমাতান) নামে বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের ‘একক জাতিসত্তা’ (উম্মাতান ওয়াহিদাতান) ঐক্যবদ্ধ (জামিয়া) হয়ে সমষ্টিগত কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে বিশ্বজনীন কল্যাণমূলক খিলাফাহ রাষ্ট্র গঠনে পুন:সংগঠিত হওয়ার আহবান জানান এবং এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পরামর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ‘প্রধান উলিল আমর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
কুরআন গবেষণাভিত্তিক গ্রন্থসমূহ
জনাব তৈয়াবুর রহমান ৩০টির চেয়ে বেশি বই রচনা করেছেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
১। কুরআনান আ’জাবান (বিস্ময়কর কুরআনের অনুবাদ) (জীবদ্দশায় অপ্রকাশিত)
২। দ্বীনের দলীল কয়টি?
৩। আল কুরআনের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য
৪। রব, মালিক, ইলাহ হিসেবে মানুষের সাথে আল্লাহর সম্পর্ক ও আমাদের করণীয়
৫। আল কুরআন সর্বশেষ আসমানী কিতাব এবং নবী মুহাম্মাদ সর্বশেষ নবী ও রসূল
৬। নবী-রসূলদের নামে কোনো উম্মত নেই
৭। আমাদের রব! আমাদেরকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যুদান করুন
৮। প্রচলিত পীরপ্রথা কুরআন পরিপন্থী নয় কি?
৯। ওয়াজ নসিহত ও সালাতে ইমামতির বিনিময় না নিলে ধর্মীয় নেতারা খাবেন কী? - প্রশ্নের উত্তর
১০। কুরআনের কানুনে সালাত কায়েম
১১। কুরআনের কানুনে যাকাত আদায়
কুরআন প্রচার কার্যক্রম
জনাব তৈয়াবুর রহমান প্রকাশ্যে কুরআন প্রচারের নীতি অনুসরণ করতেন। তিনি ধর্মীয় বিষয়ে কুরআনকে একমাত্র দলীল হিসেবে বিশ্বাস ও প্রচার করতেন। এজন্য তিনি স্থানীয় বিভিন্ন আলেম-ওলামার সাথে বিতর্কেও অংশগ্রহণ করেন এবং আলেমরা সাধারণ জনতাকে উত্তেজিত করে বিভিন্ন সময়ে তাঁকে ও তাঁর সাথে কুরআন চর্চায় নিয়োজিত থাকা ব্যক্তিবর্গকে হামলা করে। এছাড়া বিভিন্ন সময় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নামে তাঁর নামে মামলা করা হয় এবং তাঁকে জেলেও নেয়া হয়, যদিও কোনো বিশৃঙ্খলা ও বিভ্রান্তির প্রমাণ করতে না পারায় বার বার তাঁকে মুক্তি দেয়া হয়।
তিনি ‘আমাদের রব! আমাদেরকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দিন’ বইটির সারসংক্ষেপকে ইংরেজি অনুবাদ করে মাহাথির মোহাম্মাদের নিকট প্রেরণের ব্যবস্থা করেছিলেন। এছাড়া তাঁর পক্ষ থেকে ‘দ্বীনের দলীল কয়টি?’ বইয়ের কিছু মূল অংশকে ইংরেজি অনুবাদ করে ডাক্তার জাকির নায়েকের কাছে ইমেইল করা হয়েছিল।
আরবি ভাষা ও ব্যাকরণ শিক্ষা
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সরকারের আমন্ত্রণে বিশ্ব ইসলামী কনফারেন্স (১৯৮৩ ইং) যোগদানকারী সদস্য, খুলনা নেসারিয়া আলিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল এবং খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ঠ মাদ্রাসা শিক্ষক (১৯৯০ ইং), মমতাজুল মুহাদ্দেসীন ফার্স্ট ক্লাস কামিল ‘এ কে এম আবদুল আউয়াল আনওয়ারী’ সাহেবের সহযোগিতায় ও তত্ত্বাবধানে জনাব তৈয়াবুর রহমান আরবি ভাষা ও ব্যাকরণ সম্পর্কে মৌলিক ধারণা অর্জন করেন যা তার অনুবাদ কর্মে বিশেষ নিয়ামক হিসাবে কাজ করে।
জনাব তৈয়াবুর রহমান ২০১৩ সালে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের হাতে তার এক পুত্র সহকারে শাহাদত বরণ করেন।