২৫:১
তাবারাকাল্লাযী = অত্যন্ত বরকতময় সেই সত্তা যিনি। নাযযালাল ফুরক্বানা = নাযিল করেছেন ফুরক্বান (সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী গ্রন্থ- আল কুরআন)। আলা আবদিহী = তাঁর এক বান্দার উপর। লিইয়াকূনা = যেন সে হয়। লিল আলামীনা নাযীরান = লিল আলামীনা নাযীর/ সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য সতর্ককারী।
অত্যন্ত বরকতময় সেই সত্তা যিনি নাযিল করেছেন ফুরক্বান (সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী গ্রন্থ- আল কুরআন) তাঁর এক বান্দার উপর, যেন সে হয় ‘লিল আলামীনা নাযীর’/ সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য সতর্ককারী।
২৫:২
আল্লাযী লাহু = তাঁরই জন্য। মুলকুছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি = আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আধিপত্য। ওয়া = আর। লাম ইয়াত্তাখিজ = তিনি গ্রহণ করেননি। ওয়ালাদান = কোন সন্তান। ওয়া = আর। লাম ইয়াকুল্লাহু শারীকুন ফিল মুলকি = আধিপত্যে তাঁর কোন শরিক/ অংশীদার নেই। ওয়া = আর। খালাক্বা = তিনি সৃষ্টি করেছেন। কুল্লা শাইয়িন = সবকিছুকে। ফাক্বাদ্দারাহু তাক্বদীরান = তারপর উহার প্রাকৃতিক আইন (natural law) নির্ধারণ করেছেন।
তাঁরই জন্য আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আধিপত্য। আর তিনি গ্রহণ করেননি কোন সন্তান। আর আধিপত্যে তাঁর কোন শরিক/ অংশীদার নেই। আর তিনি সৃষ্টি করেছেন সবকিছুকে। তারপর উহার প্রাকৃতিক আইন (natural law) নির্ধারণ করেছেন।
২৫:৩
ওয়াত্তাখাজূ = আর তারা গ্রহণ করেছে। মিন দূনিহী = তাঁকে বাদ দিয়ে। আলিহাতান = অন্যান্য ইলাহ। লা ইয়াখলুক্বূনা = যারা সৃষ্টি করেনি। শাইয়ান = কোন কিছুই। ওয়া = আর। হুম = তাদেরকেই। ইউখলাক্বূনা = সৃষ্টি করা হয়েছে। ওয়া = আর। লা ইয়ামলিকূনা = তারা ক্ষমতা রাখে না। লিআনফুসিহিম = তাদের নিজেদের জন্যও। দররান = কোন ক্ষতির। ওয়া = আর। লা নাফআন = কোন উপকারেরও না। ওয়া = আর। লা ইয়ামলিকূনা = তারা ক্ষমতা রাখে না। মাওতান = মৃত্যু দেয়ার। ওয়া = আর। লা হায়াতান = জীবন দেয়ারও না। ওয়া = আর। লা নুশূযান = পুনরুত্থানেরও না।
আর তারা গ্রহণ করেছে তাঁকে বাদ দিয়ে অন্যান্য ইলাহ, যারা সৃষ্টি করেনি কোন কিছুই, আর তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয়েছে। আর তারা ক্ষমতা রাখে না তাদের নিজেদের জন্যও কোন ক্ষতির আর কোন উপকারেরও না। আর তারা ক্ষমতা রাখে না মৃত্যু দেয়ার আর জীবন দেয়ারও না আর পুনরুত্থানেরও না।
২৫:৪
ওয়া = আর। ক্বলাল্লাযীনা কাফারূ = তারা বলে যারা কুফর করেছে। ইন হাযা = ইহা নয়। ইল্লা ইফকুনিফতারাহু = মনগড়া জিনিস ছাড়া কিছু, যা সে রচনা করেছে। ওয়া = আর। আআনাহু আলাইহি = তাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে। ক্বাওমুন আখারূনা = অন্য কিছু লোক। ফাক্বাদ = নিশ্চয় এভাবে। জাঊ = তারা উপনীত হয়েছে। যুলমান ওয়া যূরান = যুলুমে ও মিথ্যায়।
আর তারা বলে যারা কুফর করেছে, ‘ইহা নয় মনগড়া জিনিস ছাড়া কিছু, যা সে রচনা করেছে। আর তাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে অন্য কিছু লোক’। নিশ্চয় এভাবে তারা উপনীত হয়েছে যুলুমে ও মিথ্যায়।
২৫:৫
ওয়া = আর। ক্বলূ = তারা বলে। আছাত্বীরুল আওয়ালীনাকতাতাবাহা = ইহা (= কুরআন) আগের কালের উপকথা যা সে নিজের জন্য লিখে নিয়েছে। ফাহিয়া = পরন্তু তা। তুমলা আলাইহি = তাকে যোগান দেয়া হয়। বুকরাতান ওয়া আসীলান = সকালে ও বিকালে।
আর তারা বলে, ‘ইহা (= কুরআন) আগের কালের উপকথা যা সে নিজের জন্য লিখে নিয়েছে। তারপর তা (তার উপকরণ) তাকে যোগান দেয়া হয় সকালে ও বিকালে।
২৫:৬
ক্বুল = বলো। আনযালাহুল্লাযী = তিনিই উহা নাযিল করেছেন যিনি। ইয়া’লামুছ ছিররা ফিছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি = আকাশমন্ডলী ও পৃখিবীর গোপন রহস্য জানেন। ইন্নাহু কানা = নিশ্চয় তিনি হলেন। গাফূরার রাহীমান = গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল।
বলো, ‘তিনিই উহা নাযিল করেছেন যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃখিবীর গোপন রহস্য জানেন। নিশ্চয় তিনি হলেন গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল’।
২৫:৭
ওয়া = আর। ক্বলূ = তারা বলে। মালি হাযার রসূলি = এ কেমন রসূল। ইয়া’কুলুত তয়ামু = যে খাদ্য খায়। ওয়া = আর। ইয়ামশী ফিল আছওয়াক্বি = হাটে বাজারে চলাফেরা করে। লাও লা উনযিলা = কেন নাযিল করা হয়নি। ইলাইহি = তার কাছে। মালাকুন = কোন ফেরেশতা। ফাইয়াকূনা = যে হতো। মাআহু = তার সাথে। নাযীরান = ভয় প্রদর্শনকারী।
আর তারা বলে, ‘এ কেমন রসূল, যে খাদ্য খায় আর হাটে বাজারে চলাফেরা করে। কেন নাযিল করা হয়নি তার কাছে কোন ফেরেশতা, যে হতো তার সাথে ভয় প্রদর্শনকারী?’
২৫:৮
আও = অথবা। ইউলক্বা = প্রেরণ করা হতো। ইলাইহি = তার কাছে। কানযুন = কোন ধনভান্ডার। আও = অথবা। তাকূনু লাহু = তার থাকতো। জান্নাতুন = কোন বাগান। ইয়া’কুলু মিনহা = যা থেকে সে খেতো। ওয়া = আর। ক্বলায যলিমূনা = যালিমরা বলে। ইন তাত্তাবিঊনা = তোমরা ইত্তেবা/ অনুসরণ করছো না। ইল্লা রজূলাম মাছহূরান = একজন যাদুগ্রস্ত পুরুষকে ছাড়া অন্য কাউকে।
অথবা প্রেরণ করা হতো তার কাছে কোন ধনভান্ডার, অথবা তার থাকতো কোন বাগান, যা থেকে সে খেত। আর যালিমরা বলে, ‘তোমরা ইত্তেবা/ অনুসরণ করছো না একজন যাদুগ্রস্ত পুরুষকে ছাড়া অন্য কাউকে’।
২৫:৯
উনযুর = লক্ষ্য করো। কায়ফা দরাবূ লাকাল আমছালা = তারা তোমার জন্য কিরূপ দৃষ্টান্ত পেশ করছে। ফাদাল্লূ = এভাবে তারা বিভ্রান্ত হয়েছে। ফালা ইয়াছতাতিঊনা ছাবীলা = তাই তারা সঠিক পথ পেতে পারে না।
লক্ষ্য করো তারা তোমার জন্য কিরূপ দৃষ্টান্ত পেশ করছে। এভাবে তারা বিভ্রান্ত হয়েছে। তাই তারা সঠিক পথ পেতে পারে না।
২৫:১০
তাবারাকাল্লাযী = তিনিই সেই বরকতময় সত্তা, যিনি। ইন শাআ = যদি ইচ্ছা করেন। জাআলা লাকা = তোমাকে দিতে পারেন। খায়রুম মিন যালিকা = উহার চেয়েও উত্তম। জান্নাতিন = বাগানসমূহ। তাজরী = জারি হয়। মিন তাহতিহাল আনহারু = যার নিচ অংশে নদীসমূহ। ওয়া = আর। ইয়াজআল লাকা = তোমাকে দিতে পারেন। ক্বুসূরান = অনেক প্রাসাদ।
তিনিই সেই বরকতময় সত্তা, যিনি যদি ইচ্ছা করেন তোমাকে দিতে পারেন উহার চেয়েও উত্তম বাগানসমূহ, জারি হয় যার নিচ অংশে নদীসমূহ। আর তোমাকে দিতে পারেন অনেক প্রাসাদ।
২৫:১১
বাল = বরং। কাযযাবূ = তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। বিছ ছায়াতি = সায়াতকে/ প্রলয়-মুহুর্তকে। ওয়া = আর। আ’তাদনা = আমরা প্রস্তুত করে রেখেছি। লিমান কাযযাবা বিছ ছায়াতি = তার জন্য যে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে সায়াতকে/ প্রলয়-মুহুর্তকে। ছায়ীরা = ছায়ীর/ উত্তপ্ত আগুন।
বরং তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে সায়াতকে/ প্রলয়-মুহুর্তকে। আর আমরা প্রস্তুত করে রেখেছি তার জন্য যে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে সায়াতকে/ প্রলয়-মুহুর্তকে, (প্রস্তুত রেখেছি) ছায়ীর/ উত্তপ্ত আগুন।
২৫:১২
ইযা = যখন। রআতহুম = উহা তাদেরকে দেখবে। মিম মাকানিম বায়ীদিন = দূরবর্তী স্থান থেকে। ছামিঊ = তখন তারা শুনতে পাবে। লাহা তাগাইয়ুযান = উহার ক্রোধের গর্জন। ওয়া = ও। যাফীরান = চিৎকার।
যখন উহা তাদেরকে দেখবে দূরবর্তী স্থান থেকে, তখন তারা শুনতে পাবে উহার ক্রোধের গর্জন ও চিৎকার।
২৫:১৩
ওয়া = আর। ইযা = যখন। উলক্বূ = নিক্ষেপ করা হবে। মিনহা = উহার মধ্যে। মাকানান দইয়িক্বান = সংকীর্ণ স্থানে। মুক্বাররনীনা = শৃংখলিত অবস্থায়। দাঊ হুনালিকা = তখন তারা সেখানে ডাকবে। ছুবূরান = মৃত্যুকে।
আর যখন নিক্ষেপ করা হবে উহার মধ্যে সংকীর্ণ স্থানে শৃংখলিত অবস্থায় তখন তারা সেখানে ডাকবে মৃত্যুকে/ ধ্বংসকে।
২৫:১৪
লা তাদউল ইয়াওমা = আজ তোমরা ডেকো না। ছুবূরাওঁ ওয়াহিদান = একটিমাত্র মৃত্যুকে। ওয়াদঊ = আর (বরং) তোমরা ডাকো। ছুবূরান কাছীরান = অনেক মৃত্যুকে।
আজ তোমরা ডেকো না একটিমাত্র মৃত্যুকে/ ধ্বংসকে, আর (বরং) তোমরা ডাকো অনেক মৃত্যুকে/ ধ্বংসকে।
২৫:১৫
ক্বুল = বলো। আযালিকা = উহাই কি। খায়রুন = উত্তম। আম = নাকি। জান্নাতুল খুলদিল্লাতী = স্থায়ী জান্নাত, যার ব্যাপারে। উয়িদাল মুত্তাক্বূনা = ওয়াদা দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে/ আল্লাহভীরুদেরকে। কানাত লাহুম = উহা হবে তাদের জন্য। জাযাআওঁ ওয়া মাসীরান = পুরস্কার ও অবস্থানস্থল।
বলো, ‘উহাই কি উত্তম নাকি স্থায়ী জান্নাত, যার ব্যাপারে ওয়াদা দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে/ আল্লাহভীরুদেরকে? উহা হবে তাদের জন্য পুরস্কার ও অবস্থানস্থল’।
২৫:১৬
লাহুম = তাদের জন্য থাকবে। ফীহা = উহাতে। মা ইয়াশাঊনা = যা তারা পেতে চাইবে। খালিদূনা = তারা তাতে স্থায়ী হবে। কানা = ইহা হলো। আলা রব্বিকা = তোমার রবের উপর। ওয়া’দান মাছঊলান = অবশ্য পূরণীয় ওয়াদা।
তাদের জন্য থাকবে উহাতে যা তারা পেতে চাইবে। তারা তাতে স্থায়ী হবে। ইহা হলো তোমার রবের উপর অবশ্য পূরণীয় ওয়াদা।
২৫:১৭
ওয়া = আর। ইয়াওমা = যেদিন। ইয়াহশুরুহুম = তিনি তাদেরকে হাশর/ সমবেত করবেন। ওয়া = আর। মা ইয়া’বুদূনা = যাদের তারা ইবাদাত/ দাসত্ব করে। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে। ফাইয়াক্বুলু = তখন তিনি বলবেন। আআনতুম = তোমরাই কি। আদলালতুম = বিভ্রান্ত করেছিলে। ইবাদী হাউলায়ি = আমার এসব বান্দাদেরকে। আম = নাকি। হুম = তারা নিজেরাই। দল্লুছ ছাবীলা = পথভ্রষ্ট হয়েছিলো?
আর যেদিন তিনি তাদেরকে হাশর/ সমবেত করবেন, আর যাদের তারা ইবাদাত/ দাসত্ব করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে (তাদেরকেও সমবেত করবেন); তখন তিনি বলবেন, ‘তোমরাই কি বিভ্রান্ত করেছিলে আমার এসব বান্দাদেরকে, নাকি তারা নিজেরাই পথভ্রষ্ট হয়েছিলো?’
২৫:১৮
ক্বলূ = তারা বলবে। ছুবহানাকা = ছুবহানাকা/ আপনি পবিত্র। মা ইয়ামবাগী লানা = আমাদের জন্য সম্ভব ছিলো না। আন নাত্তাখিজা = যে, আমরা গ্রহণ করবো। মিন দূনিকা = আপনাকে ছাড়া। মিন আওলিয়াআ = কোন অভিভাবককে। ওয়ালাকিন = কিন্তু। মাত্তা’তাহুম = আপনি তাদেরকে ভোগসামগ্রী দিয়েছিলেন। ওয়া = আর। আবাআহুম = তাদের বাপদাদাকেও (ভোগসামগ্রী দিয়েছিলেন)। হাত্তা = যতক্ষণ না। নাছুয যিকরা = তারা যিকির/ স্মরণ/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান ভুলে গিয়েছিলো। ওয়া = আর। কানূ = তারা হয়েছিলো। ক্বাওমান বূরান = এক ধ্বংসপ্রাপ্ত ক্বওম।
তারা বলবে, ‘ছুবহানাকা/ আপনি পবিত্র। আমাদের জন্য সম্ভব ছিলো না যে, আমরা গ্রহণ করবো আপনাকে ছাড়া কোন অভিভাবককে। কিন্তু আপনি তাদেরকে ভোগসামগ্রী দিয়েছিলেন আর তাদের বাপদাদাকেও (ভোগসামগ্রী দিয়েছিলেন), যতক্ষণ না তারা যিকির/ স্মরণ/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান ভুলে গিয়েছিলো। আর তারা হয়েছিলো এক ধ্বংসপ্রাপ্ত ক্বওম’।
২৫:১৯
ফাক্বাদ = তখন নিশ্চয়। কাযযাবূকুম = তারা (= তোমাদের মা’বুদরা) তোমাদেরকে মিথ্যা সাব্যস্ত করবে। বিমা তাক্বুলূনা = ঐ বিষয়ে যা তোমরা বলছো। ফামা তাছতাত্বীঊনা = তখন তোমরা সক্ষম হবে না। দরফান = শাস্তিকে ফিরিয়ে দিতে। ওয়া = আর। লা নাসরান = সাহায্য পেতেও (সক্ষম হবে) না। ওয়া = আর। মাইঁ ইউযলিম মিনকুম = তোমাদের মধ্য থেকে যে যুলুম করবে। নুযিক্বহু = তাকে আমরা আস্বাদন করাবো। আযাবান কাবীরান = মহাশাস্তি।
তখন নিশ্চয় তারা (= তোমাদের মা’বুদরা) তোমাদেরকে মিথ্যা সাব্যস্ত করবে ঐ বিষয়ে যা তোমরা বলছো। তখন তোমরা সক্ষম হবে না শাস্তিকে ফিরিয়ে দিতে আর সাহায্য পেতেও (সক্ষম হবে) না। আর তোমাদের মধ্য থেকে যে যুলুম করবে তাকে আমরা আস্বাদন করাবো মহাশাস্তি।
২৫:২০
ওয়া = আর। মা আরছালনা = আমরা প্রেরণ করিনি। ক্বাবলাকা = তোমার আগেও। মিনাল মুরছালীনা = কোন রসূলকে। ইল্লা = এছাড়া যে। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। লাইয়া’কুলূনাত তয়ামা = খাদ্য খেতো। ওয়া = আর। ইয়ামশূনা ফিল আছওয়াক্বি = হাটে বাজারে চলাফেরা করতো। ওয়া= আর। জাআলনা = আমরা করেছি। বা’দুকুম লিবা’দিন = তোমাদের কাউকে অপর কারো জন্য। ফিতনাতুন = ফিতনা/ পরীক্ষাস্বরূপ। আতাসবিরূনা = তোমরা সবর করবে কি? ওয়া = আর। কানা রব্বুকা = তোমার রব হলেন। বাসীরান = বাসীর/ সর্বদ্রষ্টা (= যিনি সব দেখেন)।
আর আমরা প্রেরণ করিনি তোমার আগেও কোন রসূলকে, এছাড়া যে, নিশ্চয় তারা খাদ্য খেতো আর হাটে বাজারে চলাফেরা করতো। আর আমরা করেছি তোমাদের কাউকে অপর কারো জন্য ফিতনা/ পরীক্ষাস্বরূপ। তোমরা সবর করবে কি? আর তোমার রব হলেন বাসীর/ সর্বদ্রষ্টা (= যিনি সব দেখেন)।
২৫:২১
ওয়া = আর। ক্বলাল্লাযীনা = তারা বলবে, যারা। লা ইয়ারজূনা = আশা করে না। লিক্বাআনা = আমাদের মোলাক্বাত। লাও লা উনযিলা = কেন নাযিল করা হলো না। আলাইনাল মালাইকাতু = আমাদের উপর মালাইকা/ ফেরেশতা। আও = অথবা। নারা = আমরা দেখতাম। রব্বানা = আমাদের রবকে। লাক্বাদিছতাকবারূ = নিশ্চয় তারা অহংকার করেছে। ফী আনফুসিহিম = তাদের নিজেদের মধ্যে। ওয়া = আর। আতাও উতুওওয়ান কাবীরান = তারা বড় ধরনের অবাধ্যতায় অবাধ্য হয়েছে।
আর তারা বলবে, যারা আশা করে না আমাদের মোলাক্বাত, ‘কেন নাযিল করা হলো না আমাদের উপর মালাইকা/ ফেরেশতা অথবা আমরা দেখতাম আমাদের রবকে’। নিশ্চয় তারা অহংকার করেছে তাদের নিজেদের মধ্যে আর তারা বড় ধরনের অবাধ্যতায় অবাধ্য হয়েছে।
২৫:২২
ইয়াওমা = যেদিন। ইরাওনাল মালাইকাতা = তারা দেখবে মালাইকাকে/ ফেরেশতাদেরকে। লা বুশরা = কোন সুসংবাদ থাকবে না। ইয়াওমায়িযিন = সেদিন। লিল মুজরিমীনা = অপরাধীদের জন্য। ওয়া = আর। ইয়াক্বূলূনা = তারা বলবে। হিজরাম মাহজূরান = কোন দুর্ভেদ্য আড়াল (আছে কি?)
যেদিন তারা দেখবে মালাইকাকে/ ফেরেশতাদেরকে, কোন সুসংবাদ থাকবে না সেদিন অপরাধীদের জন্য। আর তারা বলবে, ‘কোন দুর্ভেদ্য আড়াল (আছে কি?)’
২৫:২৩
ওয়া = আর। ক্বাদিমনা = আমরা অগ্রসর হবো। ইলা মা আমিলূ মিন আমালিন = যা তারা আমল করেছে উহার দিকে। ফাজাআলনাহু = তারপর আমরা উহাকে পরিণত করবো। হাবাআম মানছূরান = বিক্ষিপ্ত ধুলিকণার ন্যায় অবস্থায়।
আর আমরা অগ্রসর হবো যা তারা আমল করেছে উহার দিকে। তারপর আমরা উহাকে পরিণত করবো বিক্ষিপ্ত ধুলিকণার ন্যায় অবস্থায়।
২৫:২৪
আসহাবুল জান্নাতি = আসহাবুল জান্নাত/ যারা জান্নাতে যাবে তারা। ইয়াওমায়িযিন = সেদিন। খায়রুম মুছতাক্বাররান = উত্তম অবস্থানস্থল পাবে। ওয়া = আর। আহছানু মাক্বীলান = (দুপুরবেলা কাটাবার) অধিক উত্তম বিশ্রামস্থল পাবে।
আসহাবুল জান্নাত/ যারা জান্নাতে যাবে তারা সেদিন উত্তম অবস্থানস্থল পাবে আর (দুপুরবেলা কাটাবার) অধিক উত্তম বিশ্রামস্থল পাবে।
২৫:২৫
ওয়া = আর। ইয়াওমা = সেদিন। তাশাক্বক্বাক্বুছ ছামাউ = আকাশ বিদীর্ণ হবে/ ফেটে যাবে। বিল গামায়ি = মেঘপিন্ডসহ। ওয়া = আর। নুযযিলাল মালাইকাতু তানযীলান = নাযিল করা হবে মালাইকাকে/ ফেরেশতাদেরকে।
আর সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে/ ফেটে যাবে মেঘপিন্ডসহ, আর নাযিল করা হবে মালাইকাকে/ ফেরেশতাদেরকে।
২৫:২৬
আল মুলকু = আধিপত্য। ইয়াওমায়িযিনিল হাক্বক্বু = সেদিন যথাযথভাবে হবে। লির রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের (= আল্লাহর) জন্য। ওয়া = আর। কানা ইয়াওমান = সেদিনটি হবে। আলাল কাফিরীনা = কাফিরদের উপর। আছীরান = খুব কঠিন।
আধিপত্য সেদিন যথাযথভাবে হবে রহমানের/ দয়াময়ের (= আল্লাহর) জন্য। আর সেদিনটি হবে কাফিরদের উপর খুব কঠিন।
২৫:২৭
ওয়া = আর। ইয়াওমা = সেদিন। ইয়াআদ্দুয যালিমু আলা ইয়াদায়হি = যালিম ব্যক্তি তার নিজের দুই হাত কামড়াবে। ইয়াক্বূলু = সে বলবে। ইয়া লায়তানিত তাখাযতু = হায়! আমার আফসোস! যদি আমি ধরতাম। মাআর রসূলি = রসূলের সাথে। ছাবীলান = সঠিক পথ।
আর সেদিন যালিম ব্যক্তি তার নিজের দুই হাত কামড়াবে। সে বলবে, ‘হায়! আমার আফসোস! যদি আমি ধরতাম রসূলের সাথে সঠিক পথ!’
২৫:২৮
ইয়া ওয়ালাতা লায়তানী = হায়! আমার দুর্ভোগ! আমার আফসোস! লাম আত্তাখিজ ফূলানান = যদি আমি গ্রহণ না করতাম অমুককে। খলীলান = খলীল/ ঘনিষ্ঠ বন্ধুরূপে।
হায়! আমার দুর্ভোগ! আমার আফসোস! যদি আমি গ্রহণ না করতাম অমুককে খলীল/ ঘনিষ্ঠ বন্ধুরূপে!
২৫:২৯
লাক্বাদ = নিশ্চয়। আদল্লানী = সে আমাকে বিভ্রান্ত করেছে। আনিয যিকরি = যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান থেকে। বা’দা ইয জাআনি = যখন উহা আমার কাছে এসেছে এরপরও। ওয়া = আর। কানাশ শয়তানু = শয়তান হলো। লিল ইনছানি = ইনসানের/ মানুষের জন্য। খাজূলান = মহাপ্রতারক।
নিশ্চয় সে আমাকে বিভ্রান্ত করেছে যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান থেকে, যখন উহা আমার কাছে এসেছে এরপরও। আর শয়তান হলো ইনসানের/ মানুষের জন্য মহাপ্রতারক।
২৫:৩০
ওয়া = আর। ক্বলার রসূলু = রসূল বলবে। ইয়া রব্বি = হে আমার রব। ইন্না ক্বাওমিত তাখাজূ = নিশ্চয় আমার কওম গ্রহণ করেছে। হাযাল ক্বুরআনা = এই আল কুরআনকে। মাহজূরান = পরিত্যাজ্যরূপে।
আর রসূল বলবে, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার কওম গ্রহণ করেছে এই আল কুরআনকে পরিত্যাজ্যরূপে’।
২৫:৩১
ওয়া = আর। কাযালিকা = এভাবে। জাআলনা = আমরা করেছি। লিকুল্লি নাবিয়্যিন = প্রত্যেক নবীর জন্য। আদুওওয়াম মিনাল মুজরিমীনা = অপরাধীদেরকে শত্রুস্বরূপ। ওয়া = আর। কাফা বিরব্বিকা = তোমার রবই যথেষ্ট। হাদিয়ান ওয়া নাসীরান = হিদায়াতকারী ও সাহায্যকারী হিসাবে।
আর এভাবে আমরা করেছি প্রত্যেক নবীর জন্য অপরাধীদেরকে শত্রুস্বরূপ। আর তোমার রবই যথেষ্ট হিদায়াতকারী ও সাহায্যকারী হিসাবে।
২৫:৩২
ওয়া = আর। ক্বলাল্লাযীনা = তারা বলে যারা। কাফারূ = কুফর করেছে। লাও = কেন। লা নুযযিলা = নাযিল করা হয়নি। আলাইহিল ক্বুরআনু = তার উপর আল কুরআন। জুমলাতান ওয়াহিদাতান = সমস্তটি একবারে। কাযালিকা = এভাবে করেছি। লিনুছাব্বিতা বিহী = আমরা সাবেত/ সুদৃঢ় করতে উহার মাধ্যমে। ফুয়াদাকা = তোমার ফুয়াদকে/ অন্তরকে। ওয়া = আর। রাত্তালনাহু তারতীলান = আমরা উহা যথাযথভাবে আবৃত্তি করেছি।
আর তারা বলে যারা কুফর করেছে, ‘কেন নাযিল করা হয়নি তার উপর আল কুরআন সমস্তটি একবারে?’ এভাবে করেছি আমরা সাবেত/ সুদৃঢ় করতে উহার মাধ্যমে তোমার ফুয়াদকে/ অন্তরকে। আর আমরা উহা যথাযথভাবে আবৃত্তি করেছি/ ক্রমে ক্রমে স্পষ্টভাবে আবৃত্তি করেছি।
২৫:৩৩
ওয়া = আর। ইয়া’তূনাকা = তারা তোমার কাছে আনে না। বিমিছালিন = (দ্বীন সম্পর্কিত) কোন সমস্যা। ইল্লা = এছাড়া যে। জি’নাকা = আমরা প্রদান করি। বিল হাক্বক্বি = উহার সঠিক সমাধান। ওয়া = আর। আহছানা তাফসীরান = ‘আহসান তাফসীর’/ অধিক উত্তম ব্যাখ্যা।
আর তারা তোমার কাছে আনে না (দ্বীন সম্পর্কিত) কোন সমস্যা, এছাড়া যে, আমরা প্রদান করি উহার সঠিক সমাধান আর ‘আহসান তাফসীর’/ অধিক উত্তম ব্যাখ্যা।
২৫:৩৪
আল্লাযীনা = যাদেরকে। ইউহশারূনা = হাশর/ সমবেত করা হবে। আলা উজূহিহিম = তাদের মুখমন্ডলের উপর ভর করিয়ে। ইলা জাহান্নামা = জাহান্নামের দিকে। উলায়িকা = উহারাই। শাররুম মাকানান = অবস্থানের দিক দিয়ে অতিনিকৃষ্ট। ওয়া = আর। আদাল্লুস সাবীলা = অত্যন্ত পথভ্রষ্ট।
যাদেরকে হাশর/ সমবেত করা হবে তাদের মুখমন্ডলের উপর ভর করিয়ে জাহান্নামের দিকে। উহারাই অবস্থানের দিক দিয়ে অতিনিকৃষ্ট আর অত্যন্ত পথভ্রষ্ট।
২৫:৩৫
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। আতায়নাল মুছাল কিতাবা = আমরা মূসাকে কিতাব দিয়েছি। ওয়া = আর। জাআলনা = আমরা করেছি। মাআহু = তার সাথে। আখাহু হারূনা = তার ভাই হারূনকে। ওয়াযীরান = উজির/ সহযোগী।
আর নিশ্চয় আমরা মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম। আর আমরা করেছিলাম তার সাথে তার ভাই হারূনকে উজির/ সহযোগী।
২৫:৩৬
ফাক্বলনাযহাবা = আমরা বলেছিলাম, ‘তোমরা দুজন যাও। ইলাল ক্বাওলিল্লাযীনা = সেই কওমের কাছে যারা। কাযযাবূ বিআয়াতিনা = মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে আমাদের আয়াতসমূহকে। ফাদাম্মারনাহুম তাদমীরান = তারপর আমরা তাদেরকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছি।
আমরা বলেছিলাম, ‘তোমরা দুজন যাও সেই কওমের কাছে যারা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে আমাদের আয়াতসমূহকে’। তারপর আমরা তাদেরকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছি।
২৫:৩৭
ওয়া = আর। ক্বাওমা নূহিন = নূহের কওম। লাম্মা = যখন। কাযযাবুর রুসুলা = মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিল রসূলদেরকে। আগরক্বনাহুম = আমরা তাদেরকে ডুবিয়ে দিয়েছিলাম। ওয়া = আর। জাআলনাহুম = আমরা তাদেরকে পরিণত করেছিলাম। লিন্নাছি = মানবজাতির জন্য। আয়াতান = আয়াতে/ নিদর্শনে। ওয়া’তাদনা = আর আমরা প্রস্তুত করে রেখেছিলাম। লিয যলিমীনা = যালিমদের জন্য। আযাবান আলীমান = কষ্টদায়ক শাস্তি।
আর নূহের কওম যখন মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিল রসূলদেরকে, তখন আমরা তাদেরকে ডুবিয়ে দিয়েছিলাম। আর আমরা তাদেরকে পরিণত করেছিলাম মানবজাতির জন্য আয়াতে/ নিদর্শনে। আর আমরা প্রস্তুত করে রেখেছিলাম যালিমদের জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি।
২৫:৩৮
ওয়া = আর। আদান = আদকে। ওয়া সামূদান = সামূদকে। ওয়া = ও। আসহাবার রাচ্ছি = ‘আসহাবুর রাস’কে। ওয়া = আর। ক্বুরূনাম বায়না যালিকা কাছীরান = উহাদের মধ্যবর্তী অনেক জনপদবাসীকে।
আর আদকে, সামূদকে ও ‘আসহাবুর রাস’কে, আর উহাদের মধ্যবর্তী অনেক জনপদবাসীকে।
২৫:৩৯
ওয়া = আর। কুল্লান দরাবনা লাহুল আমছালা = তাদের প্রত্যেকের জন্য আমরা উপস্থাপন করেছিলাম আমছাল/ দৃষ্টান্তসমূহ। ওয়া = আর। কুল্লান তাববারনা তাতবীরান = তাদের প্রত্যেককে আমরা ধ্বংস করেছিলাম।
আর তাদের প্রত্যেকের জন্য আমরা উপস্থাপন করেছিলাম আমছাল/ দৃষ্টান্তসমূহ আর তাদের প্রত্যেককে আমরা ধ্বংস করেছিলাম।
২৫:৪০
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। আতাও = তারা আসা যাওয়া করে। আলাল ক্বারইয়াতিল্লাতী = ঐ জনপদের উপর দিয়ে যার উপর। উমতিরাত মাতারাছ ছাওয়ি = বর্ষিত হয়েছিলো নিকৃষ্ট ধরনের বৃষ্টি (= পাথর বৃষ্টি)। আফালাম ইয়াকূনূ ইয়ারাওনাহা = তবে কি তারা উহা দেখে না? বাল = বরং। কানূ লা ইয়ারজূনা নুশূরান = তারা নুশুর/ (মৃত্যুর পর) পুনরুত্থানের আশা করে না।
আর নিশ্চয় তারা আসা যাওয়া করে ঐ জনপদের উপর দিয়ে যার উপর বর্ষিত হয়েছিলো নিকৃষ্ট ধরনের বৃষ্টি (= পাথর বৃষ্টি)। তবে কি তারা উহা দেখে না? বরং তারা নুশুর/ (মৃত্যুর পর) পুনরুত্থানের আশা করে না।
২৫:৪১
ওয়া = আর। ইযা = যখন। রআওকা = তারা তোমাকে দেখে। ইইঁ ইয়াত্তাখিজূনাকা = তখন তারা তোমাকে গ্রহণ করে না। ইল্লা হুযুওয়ান = ঠাট্টা বিদ্রুপের পাত্র হিসাবে ছাড়া। আহাযাল্লাযী = এ-ই কি সেই ব্যক্তি যাকে। বাআছাল্লাহু = আল্লাহ প্রেরণ করেছেন। রাসূলান = রসূলরূপে?
আর যখন তারা তোমাকে দেখে, তখন তারা তোমাকে গ্রহণ করে না ঠাট্টা বিদ্রুপের পাত্র হিসাবে ছাড়া। (তারা বলে), ‘এ-ই কি সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ প্রেরণ করেছেন রসূলরূপে?’
২৫:৪২
ইন কাদা = সেকি উপক্রম হয়নি। লাইউদিল্লুনা = আমাদেরকে বিভ্রান্ত করে দিতে। আন আলিহাতিনা = আমাদের ইলাহদের থেকে। লাও লা = যদি না। সবারনা = আমরা সবর করতাম/ দৃঢ়পদ হতাম। আলাইহা = উহার উপর। ওয়া = আর। ছাওফা = শীঘ্রই। ইয়া’লামূনা = তারা জানতে পারবে। হীনা ইয়ারাওনাল আযাবা = যখন তারা আযাব দেখবে। মান = কে। আদাল্লু ছাবীলা = পথভ্রষ্ট হয়েছে।
সেকি উপক্রম হয়নি আমাদেরকে বিভ্রান্ত করে দিতে আমাদের ইলাহদের থেকে, যদি না আমরা সবর করতাম/ দৃঢ়পদ হতাম উহার উপর? আর শীঘ্রই তারা জানতে পারবে যখন তারা আযাব দেখবে, (জানতে পারবে,) কে পথভ্রষ্ট হয়েছে?
২৫:৪৩
আরাআয়তা মানিত্তাখাজা = তুমি কি সেই লোকের অবস্থা ভেবে দেখেছো যে গ্রহণ করেছে। ইলাহাহু = তার ইলাহ হিসাবে। হাওয়াহু = তার হাওয়াকে/ প্রবৃত্তিকে। আফাআনতা তাকূনু আলাইহি ওয়াকীলা = তবে কি তুমি হও তার ব্যাপারে কোন উকিল/ কর্মবিধায়ক?
তুমি কি সেই লোকের অবস্থা ভেবে দেখেছো, যে গ্রহণ করেছে তার ইলাহ হিসাবে তার হাওয়াকে/ প্রবৃত্তিকে? তবে কি তুমি হও তার ব্যাপারে কোন উকিল/ কর্মবিধায়ক?
২৫:৪৪
আম = নাকি। তাহছাবু = তুমি হিসাব/ ধারণা করে নিয়েছো। আন্না = যে। আকছারাহুম = তাদের অধিকাংশ। ইয়াছমাঊনা = শুনে। আও = অথবা। ইয়া’ক্বিলূনা = আকল/ বিবেক-বুদ্ধি (common sense) প্রয়োগ করে? ইন হুম = তারা নয়। ইল্লা কাল আনআম = আনআমের/ গবাদি পশুর মতো ছাড়া অন্যরূপ। বাল = বরং। হুম = তারা। আদাল্লু ছাবীলান = আরো অধিকতর পথভ্রষ্ট।
নাকি তুমি হিসাব/ ধারণা করে নিয়েছো যে, তাদের অধিকাংশ শুনে অথবা আকল/ বিবেক-বুদ্ধি (common sense) প্রয়োগ করে? তারা নয় আনআমের/ গবাদি পশুর মতো ছাড়া অন্যরূপ। বরং তারা আরো অধিকতর পথভ্রষ্ট।
২৫:৪৫
আলা তারা = তুমি কি ভেবে দেখোনি। ইলা রব্বিকা = তোমার রবের ব্যাপারে। কায়ফা = কিরূপে। মাদ্দায যিল্লা = তিনি বিস্তৃত করেন ছায়াকে। ওয়া = আর। লাও = যদি। শাআ = তিনি ইচ্ছা করতেন। লাজাআলাহু = তাহলে উহাকে (= ছায়াকে) করে দিতেন। ছাকিনান = স্থির। ছুম্মা = সেই সাথে। জাআলনাশ শামসা = আমরা সূর্যকে করেছি। আলাইহি = উহার উপর (= ছায়ার উপর)। দলীলান = দলীল।
তুমি কি ভেবে দেখোনি তোমার রবের ব্যাপারে, কিরূপে তিনি বিস্তৃত করেন ছায়াকে? আর যদি তিনি ইচ্ছা করতেন, তাহলে উহাকে (= ছায়াকে) করে দিতেন স্থির। সেই সাথে আমরা সূর্যকে করেছি উহার উপর (= ছায়ার উপর) দলীল।
২৫:৪৬
ছুম্মা = তারপর। ক্বাবাদনাহু = আমরা উহাকে গুটিয়ে আনি। ইলাইনা = আমাদের দিকে। ক্বাবদাইঁ ইয়াছীরা = সহজভাবে গুটিয়ে।
তারপর আমরা উহাকে গুটিয়ে আনি আমাদের দিকে সহজভাবে গুটিয়ে।
২৫:৪৭
ওয়া = আর। হুয়াল্লাযী = তিনিই সেই সত্তা যিনি। জাআলা = করে দিয়েছেন। লাকুমুল্লাইলা = তোমাদের জন্য রাতকে। লিবাছান = লিবাস/ পোশাকস্বরূপ। ওয়ান নাওমা = আর ঘুমকে। ছুবাতান = বিশ্রামস্বরূপ। ওয়া = আর। জাআলান্নাহারা = করে দিয়েছেন দিনকে। নুশূরান = পুনরুত্থানস্বরূপ।
আর তিনিই সেই সত্তা যিনি করে দিয়েছেন তোমাদের জন্য রাতকে লিবাস/ পোশাকস্বরূপ আর ঘুমকে বিশ্রামস্বরূপ আর করে দিয়েছেন দিনকে পুনরুত্থানস্বরূপ।
২৫:৪৮
ওয়া = আর। হুয়াল্লাযী = তিনিই সেই সত্তা যিনি। আরছালার রিয়াহা = প্রেরণ করেন বাতাসকে। বুশরাম বায়না ইয়াদায় রহমাতিহী = সুসংবাদস্বরূপ, তাঁর রহমতের আগে। ওয়া = আর। আনযালনা = আমরা নাযিল করেছি। মিনাছ ছামায়ি = আকাশ থেকে। মাআন তহূরান = (বৃষ্টির) পবিত্র পানি।
আর তিনিই সেই সত্তা যিনি প্রেরণ করেন বাতাসকে সুসংবাদস্বরূপ, তাঁর রহমতের আগে। আর আমরা নাযিল করেছি আকাশ থেকে (বৃষ্টির) পবিত্র পানি।
২৫:৪৯
লিনুহয়িয়া বিহী = যেন আমরা সঞ্জীবিত করি উহার মাধ্যমে। বালদাতাম মাইতান = মৃত/ শুষ্ক ভূখন্ডকে। ওয়া = আর। নুছক্বিয়াহু = আমরা উহা পান করাই। মিম্মা খালাক্বনা = যাদেরকে আমরা সৃষ্টি করেছি তাদেরকে, যেমন। আনআমান ওয়া আনাছিয়্যা কাছীরান = অনেক গবাদি পশু ও মানুষকে।
যেন আমরা সঞ্জীবিত করি উহার মাধ্যমে মৃত/ শুষ্ক ভূখন্ডকে আর আমরা উহা পান করাই যাদেরকে আমরা সৃষ্টি করেছি তাদেরকে, যেমন অনেক গবাদি পশু ও মানুষকে।
২৫:৫০
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। সররাফনাহু = আমরা উহা তাসরীফ আকারে বিশদভাবে বর্ণনা করেছি। বায়নাহুম = তাদের মধ্যে। লিইয়াযযাক্কারূ = যেন তারা যিকির/ স্মরণ/ উপদেশগ্রহণ করতে পারে। ফাআবা আকছারুন্নাছি = কিন্তু অধিকাংশ লোক প্রত্যাখ্যান করে। ইল্লা কাফূরান = কুফর করাকে ছাড়া।
আর নিশ্চয় আমরা উহা তাসরীফ আকারে বিশদভাবে বর্ণনা করেছি তাদের মধ্যে, যেন তারা যিকির/ স্মরণ/ উপদেশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ লোক প্রত্যাখ্যান করে কুফর করাকে ছাড়া।
২৫:৫১
ওয়া = আর। লাও = যদি। শি’না = আমরা ইচ্ছা করতাম। লাবাআছনা = তাহলে আমরা সমুত্থিত/ প্রেরণ করতাম। ফী কুল্লি ক্বারইয়াতিন = প্রত্যেক জনপদে। নাযীরান = একজন করে নাজির/ সতর্ককারী।
আর যদি আমরা ইচ্ছা করতাম, তাহলে আমরা সমুত্থিত/ প্রেরণ করতাম প্রত্যেক জনপদে একজন করে নাজির/ সতর্ককারী।
২৫:৫২
ফালা তুত্বিয়িল কাফিরীনা = সুতরাং তুমি কাফিরদের ইতায়াত/ আনুগত্য করো না। ওয়া = আর। জাহিদহুম = তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ/ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাও। বিহী = উহার মাধ্যমে (= কুরআনের মাধ্যমে)। জিহাদান কাবীরান = জিহাদান কাবীরান/ সবচেয়ে বড় জিহাদরূপে।
সুতরাং তুমি কাফিরদের ইতায়াত/ আনুগত্য করো না। আর তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ/ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাও উহার মাধ্যমে (= কুরআনের মাধ্যমে), জিহাদান কাবীরান/ সবচেয়ে বড় জিহাদরূপে।
২৫:৫৩
ওয়া = আর। হুয়াল্লাযী = তিনিই সেই সত্তা, যিনি। মারজাল বাহরাইনি = দুই সাগরকে মিলিয়ে প্রবাহিত করেছেন। হাযা আযবুন ফুরাতুন = ইহা মিষ্টি সুপেয়। ওয়া = আর। হাযা মিলহুন উজাজুন = ইহা লোনা বিস্বাদ। ওয়া = আর। জাআলা বায়নাহুমা = তিনি উভয়ের মধ্যে স্থাপন করেছেন। বারযাখান = বারযাখ/ অন্তরায়। ওয়া হিজরাম মাহজূরান = ও দুর্ভেদ্য আড়াল।
আর তিনিই সেই সত্তা, যিনি দুই সাগরকে মিলিয়ে প্রবাহিত করেছেন। ইহা মিষ্টি সুপেয় আর ইহা লোনা বিস্বাদ। আর তিনি উভয়ের মধ্যে স্থাপন করেছেন বারযাখ/ অন্তরায় ও দুর্ভেদ্য আড়াল।
২৫:৫৪
ওয়া = আর। হুয়াল্লাযী = তিনিই। খালাক্বা মিনাল মায়ি বাশারান = মানুষকে পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন। ফাজাআলাহু = তারপর তাকে স্থাপন করেছেন। নাছাবান = বংশগত সম্পর্কের মধ্যে। ওয়া = ও। সিহরান = বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে। ওয়া = আর। কানা রব্বুকা = তোমার রব হলেন। ক্বাদীরান = ক্বাদীর/ প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী।
আর তিনিই মানুষকে পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তাকে স্থাপন করেছেন বংশগত সম্পর্কের মধ্যে ও বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে। আর তোমার রব হলেন ক্বাদীর/ প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী।
২৫:৫৫
ওয়া = আর। ইয়া’বুদূনা = তারা ইবাদাত/ দাসত্ব করে। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে। মা লা ইয়ানফাউহুম = তাদের (দাসত্ব), যারা তাদের কোন উপকার করতে পারে না। ওয়া = আর। লা ইয়াদুররুহুম = তাদের কোন ক্ষতিও করতে পারে না। ওয়া = আর। কানাল কাফূরা = কাফেররা হয়ে থাকে। আলা রব্বিহী = তার রবের বিরুদ্ধে (বিদ্রোহকারীদের)। যহীরান = সাহায্যকারী।
আর তারা ইবাদাত/ দাসত্ব করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের (দাসত্ব), যারা তাদের কোন উপকার করতে পারে না আর তাদের কোন ক্ষতিও করতে পারে না। আর কাফেররা হয়ে থাকে তার রবের বিরুদ্ধে (বিদ্রোহকারীদের) সাহায্যকারী।
২৫:৫৬
ওয়া = আর। মা আরছালনাকা = আমরা তোমাকে প্রেরণ করিনি। ইল্লা মুবাশশিরান ওয়া নাযীরান = সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে ছাড়া।
আর আমরা তোমাকে প্রেরণ করিনি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে ছাড়া।
২৫:৫৭
ক্বুল = বলো। মা আছআলুকুম = আমি তোমাদের কাছে চাই না। আলাইহি = উহার ব্যাপারে। মিন আজরিন = কোন বিনিময়। ইল্লা মা শাআ = (আমি কিছু চাই না) এছাড়া যে, যে ইচ্ছা করে। আইঁ ইয়াত্তাখিজা = সে গ্রহণ করুক। ইলা রব্বিহী ছাবীলা = তার রবের দিকে যাওয়ার পথ।
বলো, ‘আমি তোমাদের কাছে চাই না উহার ব্যাপারে কোন বিনিময়। (আমি কিছু চাই না) এছাড়া যে, যে ইচ্ছা করে সে গ্রহণ করুক তার রবের দিকে যাওয়ার পথ।
২৫:৫৮
ওয়া = আর। তাওয়াক্কাল = তুমি তাওয়াক্কুল/ ভরসা করো। আলাল হাইয়িল্লাযী লা ইয়ামূতু = সেই চিরজীবন্ত সত্তার উপর যিনি কখনো মৃত্যুবরণ করবেন না। ওয়া = আর। ছাব্বিহ বিহামদিহী = তাঁর তাসবীহ/ পবিত্রতা বর্ণনা করো তাঁর হামদ/ প্রশংসাজ্ঞাপনসহ। ওয়া = আর। কাফা বিহী = তিনিই যথেষ্ট। বিযুনূবি ইবাদিহী = তাঁর বান্দাদের যুনুব/ পাপসমূহ সম্পর্কে। খাবীর = খাবীর (= যিনি খবর রাখেন সেই সত্তা) হিসাবে।
আর তুমি তাওয়াক্কুল/ ভরসা করো সেই চিরজীবন্ত সত্তার উপর যিনি কখনো মৃত্যুবরণ করবেন না। আর তাঁর তাসবীহ/ পবিত্রতা বর্ণনা করো তাঁর হামদ/ প্রশংসাজ্ঞাপনসহ। আর তিনিই যথেষ্ট তাঁর বান্দাদের যুনুব/ পাপসমূহ সম্পর্কে খাবীর (= যিনি খবর রাখেন সেই সত্তা) হিসাবে।
২৫:৫৯
আল্লাযী = যিনি। খালাক্বাছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি = সৃষ্টি করেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী। ফী ছিত্তাতি আইয়ামিন = ছয় দিনে। ছুম্মাছতাওয়া = তারপর সমাসীন হয়েছেন। আলাল আরশি = আরশের উপর। আর রহমানি = তিনি রহমান/ দয়াময়। ফাছআল = সুতরাং জিজ্ঞাসা করো। বিহী = তাঁর সম্পর্কে। খাবীরান = যারা খবর রাখে তাদেরকে।
যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে। তারপর সমাসীন হয়েছেন আরশের উপর। তিনি রহমান/ দয়াময়। সুতরাং জিজ্ঞাসা করো তাঁর সম্পর্কে যারা খবর রাখে তাদেরকে।
২৫:৬০
ওয়া = আর। ইযা = যখন। ক্বীলা লাহুমুছজুদূ = তাদেরকে বলা হয়, ‘সিজদা করো। লির রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের (= আল্লাহর) উদ্দেশ্যে। ক্বলূ = তারা বলে। ওয়া মার রহমানু = রহমান/ দয়াময় আবার কে? আনাছজুদু লিমা তা’মুরূনা = আমরা কি সিজদা করবো যার জন্য তুমি বলবে। ওয়া = আর। যাদাহুম = উহা তাদের মধ্যে বাড়িয়ে দেয়। নুফূরান = বিমুখতা।
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘সিজদা করো রহমানের/ দয়াময়ের (= আল্লাহর) উদ্দেশ্যে’। তখন তারা বলে, ‘রহমান/ দয়াময় আবার কে? আমরা কি সিজদা করবো যার জন্য তুমি বলবে?’ আর উহা তাদের মধ্যে বাড়িয়ে দেয় বিমুখতা।
২৫:৬১
তাবারাকাল্লাযী = বরকতময় সেই সত্তা, যিনি। জাআলা ফিছ ছামায়ি = আকাশের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন। বুরূজান = বুরুজ/ দুর্গ। ওয়া = আর। জাআলা ফীহা = উহার মধ্যে সৃষ্টি করেছেন। সিরাজাওঁ ওয়া ক্বামারাম মুনীরা = একটি প্রদীপ ও আলোময় চাঁদ।
বরকতময় সেই সত্তা, যিনি আকাশের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন বুরুজ/ দুর্গ। আর উহার মধ্যে সৃষ্টি করেছেন একটি প্রদীপ ও আলোময় চাঁদ।
২৫:৬২
ওয়া = আর। হুয়াল্লাযী = তিনিই। জাআলাল্লাইলা ওয়ান্নাহারা = সৃষ্টি করেছেন রাতকে ও দিনকে। খিলফাতান = খিলফাত/ (পরস্পরের) অনুগামী বা স্থলাভিষিক্ত করে। লিমান = ইহা তার জন্য (নিদর্শনস্বরূপ) যে। আরাদা = এরাদা/ ইচ্ছা করে। আইঁ ইয়াযযাক্কারা = যিকির/ স্মরণ/ উপদেশ গ্রহণ করতে। আও = অথবা। আরাদা = ইচ্ছা করে। শুকূরান = শোকর/ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে।
আর তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাতকে ও দিনকে খিলফাত/ (পরস্পরের) অনুগামী বা স্থলাভিষিক্ত করে। ইহা তার জন্য (নিদর্শনস্বরূপ) যে এরাদা/ ইচ্ছা করে যিকির/ স্মরণ/ উপদেশ গ্রহণ করতে অথবা ইচ্ছা করে শোকর/ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে।
২৫:৬৩
ওয়া = আর। ইবাদুর রহমানিল্লাযীনা = তারাই ইবাদুর রহমান/ দয়াময়ের (= আল্লাহর) বান্দা যারা। ইয়ামশূনাল আলাল আরদি = পৃথিবীতে চলাফেরা করে। হাওনান = নম্রতাসহকারে। ওয়া = আর। ইযা = যখন। খাতাবাহুমুল জাহিলূনা = তাদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে জাহেল লোকেরা। ক্বলূ = তখন তারা বলে। ছালামান = ছালাম/ শান্তি।
আর তারাই ইবাদুর রহমান/ দয়াময়ের (= আল্লাহর) বান্দা যারা পৃথিবীতে চলাফেরা করে নম্রতাসহকারে। আর যখন তাদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে জাহেল লোকেরা, তখন তারা বলে, ছালাম/ শান্তি।
২৫:৬৪
ওয়াল্লাযীনা = আর যারা। ইয়াবিতূনা = রাত কাটায়। লিরব্বিহিম = তাদের রবের উদ্দেশ্যে। ছুজজাদান ওয়া ক্বিয়ামান = সিজদা অবস্থায় ও কিয়াম (= দাঁড়ানো) অবস্থায়।
আর যারা রাত কাটায় তাদের রবের উদ্দেশ্যে সিজদা অবস্থায় ও কিয়াম (= দাঁড়ানো) অবস্থায়।
২৫:৬৫
ওয়াল্লাযীনা = আর যারা। ইয়াক্বূলূনা = বলে। রব্বানাসরিপ = হে আমাদের রব, দূরে রাখো। আন্না = আমাদের থেকে। আযাবা জাহান্নামা = জাহান্নামের শাস্তি। ইন্না = নিশ্চয়। আযাবাহা = উহার আযাব। কানা গারামান = হলো প্রাণান্তকর।
আর যারা বলে, ‘হে আমাদের রব, দূরে রাখো আমাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তি। নিশ্চয় উহার আযাব হলো প্রাণান্তকর।
২৫:৬৬
ইন্নাহা = নিশ্চয় উহা। ছাআত = অত্যন্ত নিকৃষ্ট। মুছতাক্বাররাওঁ ওয়া মুক্বামান = অবস্থানস্থল হিসাবেও আর দাঁড়াবার স্থান হিসাবেও।
নিশ্চয় উহা অত্যন্ত নিকৃষ্ট, অবস্থানস্থল হিসাবেও আর দাঁড়াবার স্থান হিসাবেও।
২৫:৬৭
ওয়াল্লাযীনা = আর যারা এমন যে। ইযা = যখন। আনফাক্বূ = তারা ইনফাক/ ব্যয় করে। লাম ইউছরিফূ = তখন তারা অপব্যয়ও করে না। ওয়া = আর। লাম ইয়াক্বতুরূ = তারা কৃপণতাও করে না। ওয়া = আর। কানা = তারা থাকে। বায়না যালিকা = এ দুয়ের মধ্যম স্তরে। ক্বাওয়ামান = দন্ডায়মান/ প্রতিষ্ঠিত।
আর যারা এমন যে, যখন তারা ইনফাক/ ব্যয় করে তখন তারা অপব্যয়ও করে না আর তারা কৃপণতাও করে না, আর তারা থাকে এ দুয়ের মধ্যম স্তরে দন্ডায়মান/ প্রতিষ্ঠিত।
২৫:৬৮
ওয়াল্লাযীনা = আর তারা। লা ইয়াদঊনা = ডাকে না। মাআল্লাহি = আল্লাহর সাথে। ইলাহান আখারা = অন্য কোন ইলাহকে। ওয়া = আর। লা ইয়াক্বতুলূনান্নাফছাল্লাতী = তারা কতল/ হত্যা করে না কোন প্রাণকে, যাকে। হাররামাল্লাহু = আল্লাহ হারাম করেছেন। ইল্লা বিলহাক্বক্বি = হক/ যথার্থ কারণ ও আইনগত ব্যবস্থা ছাড়া। ওয়া = আর। লা ইয়াযনূনা = তারা যিনা/ ব্যভিচার করে না। ওয়া = আর। মাইঁ ইয়াফআল যালিকা = যে উহা করবে। ইয়ালক্বা আছামান = সে পাপ অর্জন করবে।
আর তারা ডাকে না আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহকে। আর তারা কতল/ হত্যা করে না কোন প্রাণকে, যাকে আল্লাহ হারাম করেছেন, হক/ যথার্থ কারণ ও আইনগত ব্যবস্থা ছাড়া। আর তারা যিনা/ ব্যভিচার করে না। আর যে উহা করবে, সে পাপ অর্জন করবে।
২৫:৬৯
ইউদাআফ লাহুল আযাবু = দ্বিগুণ করা হবে তার জন্য আযাব/ শাস্তি। ইয়াওমাল ক্বিয়ামাতি = ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে। ওয়া = আর। ইয়াখলুদ = সে স্থায়ী হবে। ফীহি = উহার মধ্যে। মুহানান = লাঞ্চিত অবস্থায়।
দ্বিগুণ করা হবে তার জন্য আযাব/ শাস্তি ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে। আর সে স্থায়ী হবে উহার মধ্যে লাঞ্চিত অবস্থায়।
২৫:৭০
ইল্লা মান তাবা = সে ছাড়া যে তাওবা করেছে। ওয়া আমানা = ও ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ওয়া আমিলা আমালান সলিহান = আর আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে। ফাউলায়িকা = তারাই ঐসব লোক। ইউবাদ্দিলুল্লাহু = আল্লাহ বদলে দিবেন। ছাইয়িয়াতিহিম = যাদের মন্দ কাজগুলোকে। হাছানাতিন = ভালো কাজে। ওয়া কানাল্লাহু = আর আল্লাহ হলেন। গাফূরার রাহীমান = গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল।
সে ছাড়া যে তাওবা করেছে ও ঈমান/ বিশ্বাস করেছে আর আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে। তারাই ঐসব লোক আল্লাহ বদলে দিবেন যাদের মন্দ কাজগুলোকে ভালো কাজ দ্বারা। আর আল্লাহ হলেন গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল।
২৫:৭১
ওয়া = আর। মান = যে। তাবা = তাওবা করে। ওয়া = ও। আমিলান সলিহান = আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করে। ফাইন্নাহু = তখন নিশ্চয় সে। ইয়াতূবু = তাওবা করে। ইলাল্লাহি = আল্লাহরই দিকে। মাতাবান = অনুতপ্ত হয়ে।
আর যে তাওবা করে ও আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করে, তখন নিশ্চয় সে তাওবা করে আল্লাহরই দিকে অনুতপ্ত হয়ে।
২৫:৭২
ওয়াল্লাযীনা = আর যারা। লা ইয়াশহাদূনায যূরা = মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না। ওয়া = আর। ইযা = যখন। মাররূ = তারা অতিক্রম করে। বিল্লাগভি = কোন বাজে বিষয়ের কাছ দিয়ে। মাররূ কিরামান = তখন তারা উহা অতিক্রম করে ভদ্রভাবে।
আর যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না আর যখন তারা অতিক্রম করে কোন বাজে বিষয়ের কাছ দিয়ে তখন তারা উহা অতিক্রম করে ভদ্রভাবে।
২৫:৭৩
ওয়াল্লাযীনা = আর যারা এমন যে। ইযা = যখন। যুককিরূ = তাদেরকে যিকির/ উপদেশ দেয়া হয়। বিআয়াতি রব্বিহিম = তাদের রবের আয়াতসমূহের মাধ্যমে। লাম ইয়াখিররূ = তারা ঝুঁকে পড়ে না। আলাইহা = উহার ব্যাপারে। ছুম্মান ওয়া উমইয়ান = অন্ধ হয়ে ও বধির হয়ে।
আর যারা এমন যে, যখন তাদেরকে যিকির/ উপদেশ দেয়া হয় তাদের রবের আয়াতসমূহের মাধ্যমে, তখন তারা ঝুঁকে পড়ে না উহার ব্যাপারে অন্ধ হয়ে ও বধির হয়ে।
২৫:৭৪
ওয়াল্লাযীনা = আর যারা। ইয়াক্বূলূনা = বলে। রব্বানা = হে আমাদের রব। হাবলানা = আমাদেরকে দান করুন। মিন আযওয়াজিনা = আমাদের এমন স্বামী/স্ত্রী। ওয়া = ও। যুররিয়াতিনা = আমাদের এমন যুররিয়াত বা বংশধর। ক্বুররাতা আ’ইউনিন = যাদেরকে দেখে আমাদের চোখ শীতল হবে। ওয়াজআলনা = আর আমাদেরকে পরিণত করুন। লিল মুত্তাক্বীনা = মুত্তাক্বীদের জন্য। ইমামান = ইমামে/ অগ্রণীতে।
আর যারা বলে, ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে দান করুন আমাদের এমন স্বামী/স্ত্রী ও আমাদের এমন যুররিয়াত বা বংশধর, যাদেরকে দেখে আমাদের চোখ শীতল হবে আর আমাদেরকে পরিণত করুন মুত্তাক্বীদের জন্য ইমামে/ অগ্রণীতে (= তাকওয়ার দিক থেকে অগ্রগামীতে)।
২৫:৭৫
উলায়িকা = তারাই এমন লোক যাদেরকে। ইউযজাওনাল গুরফাতা = প্রতিফল দেয়া হবে উচ্চতর দালান। বিমা সবারূ = তাদের সবরের কারণে। ওয়া = আর। ইউলাক্বক্বাওনা = তাদেরকে দেয়া হবে। ফীহা = উহাতে। তাহিয়্যাতান = তাহিয়্যাত/ শুভেচ্ছা। ওয়া = ও। ছালামান = সালাম/ শান্তি সম্ভাষণ।
তারাই এমন লোক যাদেরকে প্রতিফল দেয়া হবে উচ্চতর দালান তাদের সবরের কারণে। আর তাদেরকে দেয়া হবে উহাতে তাহিয়্যাত/ শুভেচ্ছা ও সালাম/ শান্তি সম্ভাষণ।
২৫:৭৬
খালিদীনা ফীহা = তারা তাতে স্থায়ী হবে। হাছুনাত মুছতাক্বাররাওঁ ওয়া মুক্বামান = নিশ্চয় উহা উত্তম, অবস্থানস্থল হিসাবেও আর দাঁড়াবার স্থান হিসাবেও।
তারা তাতে স্থায়ী হবে। নিশ্চয় উহা উত্তম, অবস্থানস্থল হিসাবেও আর দাঁড়াবার স্থান হিসাবেও।
২৫:৭৭
ক্বুল = বলো। মা ইয়া’বাউ বিকুম রব্বী = আমার রব তোমাদের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করেন না (= আগ্রহ দেখান না)। লাও লা = যদি না হয় (তাঁরই কাছে)। দুআউকুম = তোমাদের দোয়া। ফাক্বাদ = তাহলে সেক্ষেত্রে নিশ্চয়। কাযযাবতুম = তোমরা (সত্যকে) মিথ্যা সাব্যস্ত করেছো। ফাছাওফা = সুতরাং শীঘ্রই। ইয়াকূনু = হবেই হবে। লিযামান = অনিবার্য শাস্তি।
বলো, ‘আমার রব তোমাদের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করেন না (= আগ্রহ দেখান না), যদি না হয় (তাঁরই কাছে) তোমাদের দোয়া। তাহলে সেক্ষেত্রে নিশ্চয় তোমরা (সত্যকে) মিথ্যা সাব্যস্ত করেছো। সুতরাং শীঘ্রই হবেই হবে অনিবার্য ও অনিরুদ্ধ (যা রোধ করা যাবে না এমন) শাস্তি।