কুরআনান আ'জাবান

বিস্ময়কর কুরআন

শব্দার্থ ভিত্তিক বাংলা অনুবাদ, তৈয়াবুর রহমান গোপালগঞ্জী

Quranan Ajaban Cover

068. সূরা ক্বলম

হে আমার প্রভু, আপনার কাছে আশ্রয় চাই শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে, আশ্রয় চাই এর উপস্থিতি থেকে। পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু সর্বশক্তিমানের নামে।

৬৮:১
নূন = নূন। ওয়াল ক্বালামি = শপথ কলমের। ওয়া মা ইয়াছতুরূনা = ও উহার শপথ যা তারা (= লেখকরা) লিখছে।

নূন, শপথ কলমের ও উহার শপথ যা তারা (= লেখকরা) লিখছে।

৬৮:২
মা আনতা = তুমি নও। বিনি’মাতি রব্বিকা = তোমার রবের অনুগ্রহে। বিমাজনূনিন = জিনগ্রস্ত/ পাগল/ উন্মাদ।

তুমি নও তোমার রবের অনুগ্রহে উন্মাদ।

৬৮:৩
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। লাকা = তোমার জন্য আছে। লাআজরান গায়রা মামনূনিন = নিরবচ্ছিন্ন প্রতিফল/ পুরস্কার।

আর নিশ্চয় তোমার জন্য আছে নিরবচ্ছিন্ন প্রতিফল/ পুরস্কার।

৬৮:৪
ওয়া = আর। ইন্নাকা = নিশ্চয় তুমি। লাআলা খুলুক্বিন আযীমিন = মহান চরিত্রের উপর অধিষ্ঠিত।

আর নিশ্চয় তুমি মহান চরিত্রের উপর অধিষ্ঠিত।

৬৮:৫
ফাছাতুবসিরু = সুতরাং শীঘ্রই তুমি দেখবে। ওয়া = আর। ইউবসিরূনা = তারাও দেখবে।

সুতরাং শীঘ্রই তুমি দেখবে আর তারাও দেখবে।

৬৮:৬
বিআইয়িকুমুল মাফতূনি = তোমাদের মধ্যে কে বিকারগ্রস্ত?

তোমাদের মধ্যে কে বিকারগ্রস্ত?

৬৮:৭
ইন্না রব্বাকা হুয়া আ’লামু = নিশ্চয় তোমার রব জানেন। বিমান দল্লা = কে পথভ্রষ্ট হয়েছে। আন ছাবীলিহী = তাঁর পথ থেকে? ওয়া = ও। হুয়া = তিনিই। আ’লামু = জানেন। বিলমুহতাদীনা = হিদায়াতপ্রাপ্তদেরকে।

নিশ্চয় তোমার রব জানেন কে পথভ্রষ্ট হয়েছে তাঁর পথ থেকে? আর তিনিই জানেন হিদায়াতপ্রাপ্তদেরকে।

৬৮:৮
ফা লা তুতিয়= সুতরাং তুমি আনুগত্য করো না। আল মুকাযযিবীনা = মিথ্যাবাদীদের।

সুতরাং তুমি মিথ্যাবাদীদের আনুগত্য করো না।

৬৮:৯
ওয়াদ্দূ = তারা চায়। লাও = যদি। তুদহিনু = তুমি নমনীয় হও। ফাইউদহিনূনা = তবে তারা নমনীয় হবে।

তারা চায় যদি তুমি নমনীয় হও তবে তারা নমনীয় হবে।

৬৮:১০
ওয়া = আর। লা তুতি’ = ইতায়াত/ আনুগত্য করো না। কুল্লা হাল্লাফিন মাহীনিন = প্রত্যেক অধিক হলফকারীর/ কসমকারীর/ শপথকারীর (অথচ মিথ্যা বলার জন্য) লাঞ্চিত ব্যক্তির।

আর আনুগত্য করো না প্রত্যেক অধিক কসমকারীর/ শপথকারীর (অথচ মিথ্যা বলার জন্য) লাঞ্চিত ব্যক্তির।

৬৮:১১
হাম্মাযিম মাশায়িম বিনামীমিন = যে অযথা নিন্দা করে ও চোগলখুরি করে বেড়ায়।

যে অযথা নিন্দা করে ও চোগলখুরি করে বেড়ায়।

৬৮:১২
মানায়িল লিল খায়রি = খায়ের/ কল্যাণকর বিষয়ে মানা করে। মু’তাদিন আছীমিন = সীমালংঘনকারী ও পাপী।

কল্যাণকর বিষয়ে মানা করে, সীমালংঘনকারী ও পাপী।

৬৮:১৩
উতুল্লিম বা’দা যালিকা যানীমিন = স্বার্থপর, উহার পর গুণহীনও।

স্বার্থপর, উহার পর গুণহীনও।

৬৮:১৪
আন কানা যা মালিন ওয়া বানীনা = এ জন্য যে, তার অনেক মালসম্পদ ও সন্তানসন্ততি আছে।

এজন্য যে, তার অনেক মালসম্পদ ও সন্তান সন্ততি আছে।

৬৮:১৫
ইযা = যখন। তুতলা আলাইহি = তিলাওয়াত/ পাঠ করা হয় তার সামনে। আয়াতুনা = আমাদের আয়াতসমূহ। ক্বলা = তখন সে বলে। আছাতূরিল আওয়ালীনা = ইহা আগের কালের উপকথা।

যখন পাঠ করা হয় তার সামনে আমাদের আয়াতসমূহ, তখন সে বলে, ‘ইহা আগের কালের উপকথা’।

৬৮:১৬
ছানাছিমুহু = শীঘ্রই আমরা দাগ লাগিয়ে দেব তাকে। আলাল খুরতূমি = শুঁড়ের উপর।

শীঘ্রই আমরা দাগ লাগিয়ে দেব তাকে শুঁড়ের উপর।

৬৮:১৭
ইন্না = নিশ্চয়। বালাওনাহুম = তাদেরকে পরীক্ষা করছি। কামা = যেরূপ। বালাওনা আসহাবাল জান্নাতি = আমরা পরীক্ষা করেছিলাম আসহাবে জান্নাতকে/ বাগান মালিকদেরকে। ইয = যখন। আক্বছামূ = তারা কসম করেছিল। লাইয়াসরিমুন্নাহা = অবশ্যই তারা উহা কাটবে। মুসবিহীনা = সকাল হওয়া মাত্রই।

নিশ্চয় আমরা তাদেরকে পরীক্ষা করছি যেরূপ আমরা পরীক্ষা করেছিলাম বাগান মালিকদেরকে। যখন তারা কসম করেছিল, অবশ্যই তারা উহা কাটবে সকাল হওয়া মাত্রই।

৬৮:১৮
ওয়া লা ইয়াছতাছনূনা = আর তারা (তাদের এ কথার মধ্যে) কোন ব্যতিক্রম রাখেনি।

আর তারা (তাদের এ কথার মধ্যে) কোন ব্যতিক্রম রাখেনি।

৬৮:১৯
ফাতফা আলাইহা তয়িফুন = তারপর উহার উপর বিপদ এসেছিল। মির রব্বিকা = তোমার রবের পক্ষ থেকে। ওয়া = এ অবস্থায় যে। হুম = তারা ছিল। নায়িমূনা = ঘুমন্ত।

তারপর উহার উপর বিপদ এসেছিল তোমার রবের পক্ষ থেকে এ অবস্থায় যে, তারা ছিল ঘুমন্ত।

৬৮:২০
ফাআসবাহাত কাসসরীমি = সুতরাং উহা হয়ে গিয়েছিল কেটে ফেলা ফসলের মত।

সুতরাং উহা হয়ে গিয়েছিল কেটে ফেলা ফসলের মত।

৬৮:২১
ফাতানাদূ মুসবিহীনা = তারপর তারা পরস্পরকে ডেকেছিল সকাল হওয়া মাত্রই।

তারপর তারা পরস্পরকে ডেকেছিল সকাল হওয়া মাত্রই।

৬৮:২২
আনিগদূ = এ মর্মে যে, সকাল সকাল চলো। আলা হারছিকুম = তোমাদের ক্ষেতের দিকে। ইন কুনতুম সরিমীনা = যদি তোমরা ফসল কাটতে চাও।

এ মর্মে যে, সকাল সকাল চলো তোমাদের ক্ষেতের দিকে যদি তোমরা ফসল কাটতে চাও।

৬৮:২৩
ফানতলাক্বূ = তখন তারা চলছিল। ওয়া হুম ইয়াতাখাফাতূনা = এ অবস্থায় যে, তারা চুপে চুপে কথা বলছিল।

তখন তারা চলছিল এ অবস্থায় যে, তারা চুপে চুপে কথা বলছিল।

৬৮:২৪
আল্লা ইয়াদখুলান্নাহাল ইয়াওমা আলাইকুম মিসকীনুন = এ মর্মে যে, উহাতে দাখিল হবে না/ প্রবেশ করবে না আজ তোমাদের কাছে কোন মিসকীন।

এ মর্মে যে, উহাতে প্রবেশ করবে না আজ তোমাদের কাছে কোন মিসকীন।

৬৮:২৫
ওয়া = আর। গাদাও = তারা সকাল সকাল চলেছিল। আলা হারদিন ক্বাদীরিনা = যেন তারা সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে সক্ষম হয়।

আর তারা সকাল সকাল চলেছিল যেন তারা সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে সক্ষম হয়।

৬৮:২৬
ফালাম্মা = তারপর যখন। রাআওহা = তারা উহাকে দেখেছিল। ক্বলূ = তখন তারা বলেছিল। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। লাদল্লূনা = পথভ্রষ্ট (ভুল পথে চলে এসেছি)।

তারপর যখন তারা উহাকে দেখেছিল, তখন তারা বলেছিল, ‘নিশ্চয় আমরা পথভ্রষ্ট (ভুল পথে চলে এসেছি)।

৬৮:২৭
বাল = বরং। নাহনু = আমরা। মাহরূমূনা = মাহরুম/ বঞ্চিত।

বরং আমরা বঞ্চিত।

৬৮:২৮
ক্বলা আওছাতুহুম = তাদের মধ্যকার মধ্যমপন্থী ব্যক্তিটি বলেছিল। আওয়ালাম আক্বুল লাকুম = আমি কি তোমাদেরকে বলিনি। লাও লা তুছাব্বিহূনা = যদিও তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা জ্ঞাপন না করো (তবুও কি তোমাদের প্রয়াস ফলপ্রসূ হবে)?

তাদের মধ্যকার মধ্যমপন্থী ব্যক্তিটি বলেছিল, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলিনি, যদিও তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা জ্ঞাপন না করো (তবুও কি তোমাদের প্রয়াস ফলপ্রসূ হবে)?’

৬৮:২৯
ক্বলূ = তখন তারা বলেছিল। ছুবহানা রব্বিনা = আমাদের রব পবিত্র। ইন্না কুন্না যলিমীনা = নিশ্চয় আমরা ছিলাম যালিম।

তখন তারা বলেছিল, ‘আমাদের রব পবিত্র। নিশ্চয় আমরা ছিলাম যালিম’।

৬৮:৩০
ফাআক্ববালা বা’দুকুম আলা বা’দিন = তারপর তারা মুখোমুখি হয়েছিল পরস্পরে। ইয়াতালাওয়ামূনা = পরস্পরকে দোষারোপ করতে।

তারপর তারা মুখোমুখি হয়েছিল পরস্পরে পরস্পরকে দোষারোপ করতে।

৬৮:৩১
ক্বলূ = তারা বলেছিল। ইয়া ওয়ায়লানা = হায়! আমাদের দুর্ভোগ। ইন্না কুন্না তগীনা = নিশ্চয় আমরা ছিলাম সীমালংঘনকারী।

তারা বলেছিল, ‘হায়! আমাদের দুর্ভোগ, নিশ্চয় আমরা ছিলাম সীমালংঘনকারী।

৬৮:৩২
আছা = আশা করা যায়। রব্বুনা = আমাদের রব। আইঁ ইউবদিলানা = আমাদেরকে বদলস্বরূপ দিবেন। খায়রাম মিনহা = উহার চেয়ে উত্তম। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। ইলা রব্বিনা = আমাদের রবের দিকে। রগীবূনা = অভিমুখী হলাম।

আশা করা যায়, আমাদের রব আমাদেরকে বদলস্বরূপ দিবেন উহার চেয়ে উত্তম। নিশ্চয় আমরা আমাদের রবের দিকে অভিমুখী হলাম।

৬৮:৩৩
কাযালিকাল আযাবু = এরূপই (হয়ে থাকে) শাস্তি। ওয়াল আযাবুল আখিরাতি আকবারু = আর আখিরাতের/ পরকালের শাস্তিই বড় (শাস্তি)। লাও কানূ ইয়া’লামূনা = যদি তারা জানত!

এরূপই (হয়ে থাকে) শাস্তি। আর আখিরাতের শাস্তিই বড় (শাস্তি), যদি তারা জানত!

৬৮:৩৪
ইন্না = নিশ্চয়। লিল মুত্তাক্বীনা = মুত্তাকীদের জন্য আছে। ইনদা রব্বিহিম = তাদের রবের কাছে। জান্নাতিন নায়ীমি = নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত।

নিশ্চয় আল্লাহ সচেতনদের জন্য আছে তাদের রবের কাছে নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত।

৬৮:৩৫
আফানাজআলুল মুসলিমীনা কালমুজরিমীনা = আমরা কি মুসলিমদেরকে/ (আল্লাহর কাছে) আত্মসমর্পণকারীদেরকে করব অপরাধীদের মত (একই পরিণতির অধিকারী)?

আমরা কি মুসলিমদেরকে/ (আল্লাহর কাছে) আত্মসমর্পণকারীদেরকে করব অপরাধীদের মত (একই পরিণতির অধিকারী)?
৬৮:৩৬
মা লাকুম = তোমাদের কী হয়েছে। কায়ফা তাহকুমূনা = তোমরা কিরূপ ফায়সালা কর?

তোমাদের কী হয়েছে? তোমরা কিরূপ ফায়সালা কর?

৬৮:৩৭
আম = নাকি। লাকুম = তোমাদের কাছে আছে। কিতাবুন = কোন কিতাব। ফীহি তাদরুসূনা = যার মধ্যে তোমরা শিক্ষালাভ কর।

নাকি তোমাদের কাছে আছে কোন কিতাব যার মধ্যে তোমরা শিক্ষালাভ কর যে-

৬৮:৩৮
ইন্না = নিশ্চয়। লাকুম ফীহি = উহাতে তোমাদের জন্য আছে। লামা তাখাইয়ারূনা = যা তোমরা কল্যাণকর সাব্যস্ত কর।

নিশ্চয় উহাতে তোমাদের জন্য আছে যা তোমরা কল্যাণকর সাব্যস্ত কর।

৬৮:৩৯
আম = নাকি। লাকুম = তোমাদের জন্য আছে। আইমানুন আলাইনা = কোন আইমান/ শপথ, আমাদের উপর যার দায়িত্ব বর্তায়। বালিগাতুন ইলা ইয়াওমুল ক্বিয়ামাতি = যা কিয়ামত দিবস পর্যন্ত পৌঁছে যাবে/ বলবৎ থাকবে যে,। ইন্না = নিশ্চয়। লাকুম = তোমাদের জন্য আছে। লামা তাহকুমূনা = যা তোমরা ফায়সালা কর?

নাকি তোমাদের জন্য আছে কোন শপথ, আমাদের উপর যার দায়িত্ব বর্তায়, যা কিয়ামাত দিবস পর্যন্ত পৌঁছে যাবে/ বলবৎ থাকবে যে, নিশ্চয় তোমাদের জন্য আছে যা তোমরা ফায়সালা কর?

৬৮:৪০
ছালহুম = তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর। আইয়ুহুম = তাদের মধ্যে কে। বিযালিকা = উহার ব্যাপারে। যায়ীমুন = দায়বদ্ধ?

তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর, তাদের মধ্যে কে উহার ব্যাপারে দায়বদ্ধ?

৬৮:৪১
আম = নাকি। লাহুম = তাদের জন্য আছে। শুরাকাউ = তাদের শরিকগণ। ফালইয়া’তু = তাহলে তারা আনুক। বিশুরাকায়িহিম = তাদের শরিকদেরকে। ইন কানূ সদিক্বীনা = যদি তারা হয় সাদেকীন/ সত্যবাদী।

নাকি তাদের জন্য আছে তাদের শরিকগণ? তাহলে তারা আনুক তাদের শরিকগণকে, যদি তারা হয় সত্যবাদী।

৬৮:৪২
ইয়াওমা = যেদিন। ইউকশাফু আন ছাক্বিন = পায়ের গোছা উন্মোচিত হবে (কঠিন সময় উপস্থিত হবে)। ওয়া ইউদআউনা ইলাছ ছুজূদি = আর তাদেরকে সিজদাসমূহের দিকে/ সিজদা করতে আহবান করা হবে। ফালা ইয়াছতাত্বিঊনা = তখন তারা সক্ষম হবে না।

যেদিন পায়ের গোছা উন্মোচিত হবে আর তাদেরকে সিজদাসমূহের দিকে/ সিজদা করতে আহবান করা হবে, তখন তারা সক্ষম হবে না।

৬৮:৪৩
খাশিয়াতান আবসরুহুম = (দায়বদ্ধতার অনুভূতিতে) অবনমিত থাকবে তাদের দৃষ্টিসমূহ। তারহাক্বুহুম যিল্লাতুন = তাদেরকে আচ্ছাদিত করবে অপমান। ওয়া = আর। ক্বাদ = নিশ্চয়। কানূ ইউদআউনা = তাদেরকে (ইতিপূর্বেও) আহবান করা হয়েছিল। ইলাছ ছুজুদি = সিজদাসমূহের দিকে/ সিজদা করতে। ওয়া হুম ছালিমূনা = এ অবস্থায় যে, তারা ছিল সুস্থ।

(দায়বদ্ধতার অনুভূতিতে) অবনমিত থাকবে তাদের দৃষ্টিসমূহ, তাদেরকে আচ্ছাদিত করবে অপমান। আর নিশ্চয় তাদেরকে (ইতিপূর্বেও) আহবান করা হয়েছিল সিজদাসমূহের দিকে/ সিজদা করতে এ অবস্থায় যে, তারা ছিল সুস্থ।

৬৮:৪৪
ফাযারনী = সুতরাং ছেড়ে দাও আমাকে। ওয়া মাইঁ ইউকাযযিব বিহাযাল হাদীসি = আর তাকে যে এ হাদীসের (= আল কুরআনের) প্রতি মিথ্যা সাব্যস্ত করে। ছানাছতাদরিজুহুম = শীঘ্রই আমরা তাদেরকে ক্রমে ক্রমে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাব। মিন হাইছু = যেখান থেকে (= যে অবস্থানে থেকে)। লা ইয়া’লামূনা = তারা জানতে পারবে না।

সুতরাং ছেড়ে দাও আমাকে আর তাকে যে এ হাদীসের (= আল কুরআনের) প্রতি মিথ্যা সাব্যস্ত করে। শীঘ্রই আমরা তাদেরকে ক্রমে ক্রমে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবো, যেখান থেকে (= যে অবস্থানে থেকে) তারা জানতে পারবে না।

৬৮:৪৫
ওয়া উমলী লাহুম = আর আমি তাদেরকে অবকাশ দিচ্ছি। ইন্না কায়দী মাতীনুন = নিশ্চয় আমার কায়দা-কৌশল মজবুত।

আর আমি তাদেরকে অবকাশ দিচ্ছি। নিশ্চয় আমার কায়দা-কৌশল মজবুত।

৬৮:৪৬
আমা তাছআলুহুম = নাকি তুমি তাদের কাছে চাচ্ছো। আজরান = কোন প্রতিফল/ পারিশ্রমিক। ফাহুম = যার ফলে তারা। মিম মাগরামিন = জরিমানার দায়ে। মুছক্বালূনা = ভারাক্রান্ত।

নাকি তুমি তাদের কাছে চাচ্ছো কোন পারিশ্রমিক যার ফলে তারা জরিমানার দায়ে ভারাক্রান্ত?

৬৮:৪৭
আম = নাকি। ইনদাহুমুল গায়বু = তাদের কাছে আছে গায়েব (= অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান)। ফাহুম ইয়াকতুবূনা = যার ফলে তারা লিখছে।

নাকি তাদের কাছে আছে গায়েব (= অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান), যার ফলে তারা লিখছে?

৬৮:৪৮
ফাসবির = সুতরাং সবর কর। বিহুকমি রব্বিকা = তোমার রবের হুকুমের/ ফায়সালার জন্য। ওয়া লা তাকুন কাসাহিবিল হূতি = আর সাহেবে হূতের/ মাছওয়ালার মত হয়ো না। ইয = যখন। নাদা = সে ডেকেছিল। ওয়া হুয়া মাকজূমুন = এ অবস্থায় যে, সে বিষন্ন ছিল।

সুতরাং সবর কর তোমার রবের হুকুমের/ ফায়সালার জন্য আর মাছওয়ালার মত হয়ো না। যখন সে ডেকেছিল এ অবস্থায় যে, সে বিষন্ন ছিল।

৬৮:৪৯
লাও লা আন তাদারাকাহু নি’মাতুম মির রব্বিহী = যদি না তাকে পেতো তার রবের অনুগ্রহ। লানুবিযা বিল আরায়ি = তাহলে সে নিক্ষিপ্ত হত উন্মুক্ত প্রান্তরে। ওয়া হুয়া মাযমূমুন = এ অবস্থায় যে, সে হতো নিন্দিত।

যদি না তাকে পেতো তার রবের অনুগ্রহ, তাহলে সে নিক্ষিপ্ত হত উন্মুক্ত প্রান্তরে এ অবস্থায় যে, সে হতো নিন্দিত।

৬৮:৫০
ফাজতাবাহু রব্বুহু = তারপর তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন তার রব। ফাজাআলাহু মিনাস সলিহীনা = সুতরাং তিনি তাকে করেছিলেন সালেহীনদের/ সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।

তারপর তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন তার রব। সুতরাং তিনি তাকে করেছিলেন সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।

৬৮:৫১
ওয়া = আর। ইইঁ ইয়াকাদুল্লাযীনা কাফারূ = এমন নয় কি যেন যারা কুফর করেছে তারা। লাইউযলিক্বূনাকা = তোমাকে পদস্খলিত করবে। বিআবসারিহিম = তাদের দৃষ্টিগুলো দিয়ে। লাম্মা = যখন। ছামিউয যিকরা = যখন তারা যিকরা/ স্মরণিকা/ স্মরণীয় উপদেশ/ সংবিধান (= আল কুরআন) শুনে। ওয়া = আর। ইয়াক্বূলূনা = তারা বলে। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে (= কুরআন পাঠকারী)। লামাজনূনা = জিনগ্রস্ত।

আর এমন নয় কি যেন সত্য অস্বীকার করেছে তারা তোমাকে পদস্খলিত করবে তাদের দৃষ্টিগুলো দিয়ে যখন তারা স্মরণীয় উপদেশ (= আল কুরআন) শুনে। আর তারা বলে, ‘নিশ্চয় সে (= কুরআন পাঠকারী) জিনগ্রস্ত’।

৬৮:৫২
ওয়া = অথচ। মা হুয়া = উহা (= আল কুরআন) নয়। ইল্লা যিকরুল লিল আলামীনা = যিকরুল লিল আলামীন/ বিশ্ববাসীর জন্য স্মরণিকা বা সংবিধান ছাড়া অন্য কিছু।

অথচ উহা (= আল কুরআন) নয় বিশ্ববাসীর জন্য স্মরণিকা ছাড়া ভিন্ন কিছু।