৪৯:১
ইয়া আইয়ুহাল্লাযীনা আমানূ = হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছো। লা তুক্বাদ্দিমূ = তোমরা কোন বিষয়ে আগ বাড়িয়ো না। বায়না ইয়াদায়িল্লাহি ওয়া রাসূলিহী = আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সামনে (= আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা বলেন তদানুসারে চল)। ওয়াত্তাক্বুল্লাহা = আর আল্লাহকে ভয় কর। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। ছামীউন আলীমুন = সামী’/ সর্বশ্রোতা ও আলীম/ সর্বজ্ঞাতা।
হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছো, তোমরা কোন বিষয়ে আগ বাড়িয়ো না আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সামনে (= আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা বলেন তদানুসারে চল)। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সামী’/ সর্বশ্রোতা ও আলীম/ সর্বজ্ঞাতা।
৪৯:২
ইয়া আইয়ুহাল্লাযীনা আমানূ = হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছো। লা তারফাঊ = তোমরা উঁচু করো না। আসওয়াতাকুম = তোমাদের কন্ঠস্বরকে। ফাওক্বা সওতিন নাবিয়্যি = নবীর কন্ঠস্বরের উপরে। ওয়া = আর। লা তাজহারূ লাহু বিল ক্বাওলি = তোমরা তাঁর সামনে উঁচু স্বরে কথা বলো না। কাযাহরি বা’দুকুম লিবা’দিন = যেভাবে তোমরা একে অপরের সাথে কথা বল। আন = এমন যেন না হয় যে। তাহবাত্বা = নষ্ট হয়ে গেছে। আ’মালাকুম = তোমাদের আমলসমূহ। ওয়া = অথচ। আনতুম = তোমরা। লা তাশউরূনা = টেরও পেলে না।
হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছো তোমরা উঁচু করো না তোমাদের কন্ঠস্বরকে নবীর কন্ঠস্বরের উপরে। আর তোমরা তাঁর সামনে উঁচু স্বরে কথা বলো না যেভাবে তোমরা একে অপরের সাথে কথা বল। এমন যেন না হয় যে, নষ্ট হয়ে গেছে তোমাদের আমলসমূহ অথচ তোমরা টেরও পেলে না।
৪৯:৩
ইন্নাল্লাযীনা = নিশ্চয় যারা। ইয়াগুদ্দূনা = অনুচ্চ/ নিচু রাখে। আসওয়াতাহুম = তাদের কন্ঠস্বরকে। ইনদা রসূলিল্লাহি = রসূলুল্লাহর কাছে। উলায়িকাল্লাযীনামতাহানাল্লাহু = তারাই এমন লোক আল্লাহ যাচাই করে নিয়েছেন। ক্বুলূবুহুম = যাদের কলবসমূহকে। লিত তাকওয়া = তাকওয়ার/ আল্লাহভীরুতার জন্য। লাহুম = তাদের জন্য আছে। মাগফিরাতুন = মাগফিরাত/ ক্ষমা। ওয়া = আর। লাহুম = তাদের জন্য আছে। আজরুন আযীমুন = মহাপ্রতিফল।
নিশ্চয় যারা অনুচ্চ/ নিচু রাখে তাদের কন্ঠস্বরকে রসূলুল্লাহর কাছে, তারাই এমন লোক আল্লাহ যাচাই করে নিয়েছেন যাদের কলবসমূহকে তাকওয়ার/ আল্লাহভীরুতার জন্য। তাদের জন্য আছে মাগফিরাত/ ক্ষমা আর তাদের জন্য আছে মহাপ্রতিফল।
৪৯:৪
ইন্নাল্লাযীনা = নিশ্চয় যারা। ইউনাদূনাকা = তোমাকে ডাকাডাকি করে। মিওঁ ওয়ারায়িল হুজরাতি = হুজুরাতের/ হুজরাগুলোর/ কক্ষগুলোর পিছন থেকে। আকছারুহুম = তাদের অধিকাংশই। লা ইয়া’ক্বিলূনা = আকল/ বিবেক-বুদ্ধি/ সাধারণ জ্ঞান (common sense) প্রয়োগ করে না।
নিশ্চয় যারা তোমাকে ডাকাডাকি করে হুজুরাতের/ হুজরাগুলোর/ কক্ষগুলোর পিছন থেকে, তাদের অধিকাংশই আকল/ বিবেক-বুদ্ধি/ সাধারণ জ্ঞান (common sense) প্রয়োগ করে না।
৪৯:৫
ওয়া = আর। লাও = যদি। আন্নাহুম = এমন হতো যে, তারা। সবারূ = সবর করতো/ ধৈর্য ধরতো। হাত্তা = যতক্ষণ না। তাখরুজা = তুমি বের হতে। ইলাইহিম = তাদের কাছে। লাকানা = উহাই হতো। খায়রাল্লাহুম = তাদের জন্য কল্যাণকর। ওয়াল্লাহু = আর আল্লাহ। গাফূরুর রহীমুন = গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল।
আর যদি এমন হতো যে, তারা সবর করতো/ ধৈর্য ধরতো, যতক্ষণ না তুমি বের হতে তাদের কাছে, উহাই হতো তাদের জন্য কল্যাণকর। আর আল্লাহ গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল।
৪৯:৬
ইয়া আইয়ুহাল্লাযীনা আমানূ = হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছো। ইন = যদি। জাআকুম = তোমাদের কাছে আসে। ফাসিক্বুম বিনাবায়িন = কোন ফাসেক/ অবাধ্য/ পাপী কোন সংবাদ নিয়ে। ফাতাবাব্বানূ = তখন তোমরা উহাকে যাচাই করো। আন = এমন যেন না হয় যে। তুসীবূ = তোমরা ক্ষতি করে বস। ক্বাওমান = কোন কওমের/ গোষ্ঠীর। বিজাহালাতিন = জাহালতবশত/ মূর্খতাবশত। ফাতুসবিহূ = তারপর তোমরা হতে হয়। আলা মা ফাআলতুম = তোমরা যা করেছ তার ব্যাপারে। নাদিমীনা = অনুতাপকারী।
হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছো, যদি তোমাদের কাছে আসে কোন ফাসেক/ অবাধ্য/ পাপী কোন সংবাদ নিয়ে, তখন তোমরা উহাকে যাচাই করো। এমন যেন না হয় যে, তোমরা ক্ষতি করে বস কোন কওমের/ গোষ্ঠীর, জাহালতবশত/ মূর্খতাবশত; তারপর তোমরা হতে হয় তোমরা যা করেছ তার ব্যাপারে অনুতাপকারী।
৪৯:৭
ওয়া’লামূ = আর জেনে রাখ। আন্না = যে। ফীকুম = তোমাদের মধ্যে আছে। রসূলাল্লাহি = আল্লাহর রসূল। লাও = যদি। ইউত্বীউকুম = সে তোমাদের ইতায়াত করে/ তোমাদের কথা মেনে নেয়। ফী কাছীরিম মিনাল আমরি = অধিকাংশ ব্যাপারে। লাআনিত্তুম = তাহলে তোমরাই কষ্টে পড়বে। ওয়ালাকিন্নাল্লাহা = কিন্তু আল্লাহ। হাব্বাবা ইলাইকুমুল ঈমানা = পছন্দনীয় করে দিয়েছেন তোমাদের কাছে ঈমানকে। ওয়া = আর। যাইয়আনাহু = তিনি উহাকে শোভনীয় করে দিয়েছেন। ফী ক্বুলূবিকুম = তোমাদের কলবসমূহের মধ্যে। ওয়া = আর। কাররাহা ইলাইকুমুল কুফরা = তিনি অপছন্দনীয় করে দিয়েছেন তোমাদের কাছে কুফরকে। ওয়াল ফুসুক্বা = ও ফাসেকিকে/ পাপকাজকে। ওয়াল ইসইয়ানা = ও ইসইয়ানকে/ অমান্যতাকে। উলায়িকা হুমুর রাশিদূনা = এ ধরনের লোকেরাই রাশেদ/ সত্যপথগামী।
আর জেনে রাখ যে, তোমাদের মধ্যে আছে আল্লাহর রসূল। যদি সে তোমাদের ইতায়াত করে/ তোমাদের কথা মেনে নেয় অধিকাংশ ব্যাপারে, তাহলে তোমরাই কষ্টে পড়বে। কিন্তু আল্লাহ পছন্দনীয় করে দিয়েছেন তোমাদের কাছে ঈমানকে আর তিনি উহাকে শোভনীয় করে দিয়েছেন তোমাদের কলবসমূহের মধ্যে। আর তিনি অপছন্দনীয় করে দিয়েছেন তোমাদের কাছে কুফরকে ও ফাসেকিকে/ পাপকাজকে ও ইসইয়ানকে/ অমান্যতাকে। এ ধরনের লোকেরাই রাশেদ/ সত্যপথগামী।
৪৯:৮
ফাদলাম মিনাল্লাহি = আল্লাহর পক্ষ থেকে ফযল/ অনুগ্রহস্বরূপ। ওয়া নি’মাতান = ও নিয়ামতস্বরূপ। ওয়াল্লাহু আলীমুন হাকীমুন = আর আল্লাহ আলীম/ মহাজ্ঞানী ও হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।
আল্লাহর পক্ষ থেকে ফযল/ অনুগ্রহস্বরূপ ও নিয়ামতস্বরূপ। আর আল্লাহ আলীম/ মহাজ্ঞানী ও হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।
৪৯:৯
ওয়া = আর। ইন = যদি। তয়িফাতাইনি মিনাল মু’মিনীনাক্বতাতালূ = মু’মিনদের মধ্যকার দুটি দল পরস্পর কিতালে/ যুদ্ধ-সংঘাতে লিপ্ত হয়। ফাআসলিহূ বায়নাহুমা = তাহলে মীমাংসা করে দাও তাদের উভয়ের মধ্যে। ফাইম বাগাত = কিন্তু যদি সীমালংঘন করে। ইহদাহুমা = তাদের একটি দল। আলাল উখরা = অন্য দলটির উপর। ফাক্বাতিলুল্লাতী = তাহলে তোমরা কিতাল/ সশস্ত্র সংগ্রাম করো তার বিরুদ্ধে যে। তাবগী = সীমালংঘন করে। হাত্তা = যতক্ষণ না। তাফীআ = সে দল ফিরে আসে। ইলা আমরিল্লাহি = আল্লাহর আদেশের দিকে। ফাইন = তারপর যদি। ফাআত = ফিরে আসে। ফাআসলিহূ বায়নাহুমা = তাহলে মীমাংসা করে দাও তাদের উভয়ের মধ্যে। বিল আদলি = আদলের/ ন্যায়বিচারের মাধ্যমে। ওয়া = আর। আক্বছিতূ = তোমরা ন্যায়বিচার কর। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। ইউহিব্বুল মুক্বছিত্বীনা = ভালবাসেন ন্যায়বিচারকারীদেরকে।
আর যদি মু’মিনদের মধ্যকার দুটি দল পরস্পর কিতালে/ যুদ্ধ-সংঘাতে লিপ্ত হয়, তাহলে মীমাংসা করে দাও তাদের উভয়ের মধ্যে। কিন্তু যদি সীমালংঘন করে তাদের একটি দল অন্য দলটির উপর, তাহলে তোমরা কিতাল/ সশস্ত্র সংগ্রাম করো তার বিরুদ্ধে যে সীমালংঘন করে, যতক্ষণ না সে দল ফিরে আসে আল্লাহর আদেশের দিকে। তারপর যদি ফিরে আসে, তাহলে মীমাংসা করে দাও তাদের উভয়ের মধ্যে আদলের/ ন্যায়বিচারের মাধ্যমে। আর তোমরা ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ ভালবাসেন ন্যায়বিচারকারীদেরকে।
৪৯:১০
ইন্নামাল মু’মিনূনা ইখওয়াতুন = নিশ্চয় মু’মিনগণ ভাই-ভাই। ফাআসলিহূ = সুতরাং তোমরা মীমাংসা করে দাও। বায়না আখাওয়ায়কুম = তোমাদের ভাইদের মধ্যে। ওয়াত্তাক্বুল্লাহা = আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। লাআল্লাকুম তুরহামূনা = যাতে তোমাদেরকে রহম/ দয়া করা হয়।
নিশ্চয় মু’মিনগণ ভাই-ভাই। সুতরাং তোমরা মীমাংসা করে দাও তোমাদের ভাইদের মধ্যে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমাদেরকে রহম/ দয়া করা হয়।
৪৯:১১
ইয়া আইয়ুহাল্লাযীনা আমানূ = হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছ। লা ইয়াছখার = যেন উপহাস না করে। ক্বাওমুম মিন ক্বাওমিন = কোন (পুরুষ) কওম/ গোষ্ঠী অন্য কোন (পুরুষ) কওমকে/ গোষ্ঠীকে। আছা = হতে পারে। আন= যে। ইয়াকূনু খায়রাম মিনহুম = (যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে) তারা (যারা উপহাস করছে) তাদের চেয়ে উত্তম। ওয়া = আর। লা নিছাউম মিন নিছায়িন = নারীগণও অন্য নারীগণকে (উপহাস করা সঙ্গত) নয়। আছা = হতে পারে। আন = যে। ইয়াকুন্না খায়রাম মিনহুন্না = (যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে) তারা (যারা উপহাস করছে) তাদের চেয়ে উত্তম। ওয়া = আর। লা তালমিযূ আনফুসাকুম = তোমরা নিজেদেরকে/ একে অন্যকে অযথা দোষারোপ করো না। ওয়া = আর। লা তানাবাযূ বিল আলক্বাবি = তোমরা একে অপরকে মন্দ উপাধিতে/ উপনামে ডেকো না। বি’ছাল ইছমুল ফুছুক্বু বা’দাল ঈমানি = ইহা অত্যন্ত মন্দ যে কেউ খ্যাতিলাভ করে ফাসেকিতে/ অবাধ্যতায়/ পাপকাজে সে ঈমান/ বিশ্বাস করার পরও। ওয়া = আর। মাল্লাম ইয়াতুব = যে তাওবা করেনি। ফাউলায়িকা হুমুয যালিমূনা = তারাই যালিম।
হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছ, যেন উপহাস না করে কোন (পুরুষ) কওম/ গোষ্ঠী অন্য কোন (পুরুষ) কওমকে/ গোষ্ঠীকে। হতে পারে যে, (যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে) তারা (যারা উপহাস করছে) তাদের চেয়ে উত্তম। আর নারীগণও অন্য নারীগণকে (উপহাস করা সঙ্গত) নয়। হতে পারে যে, (যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে) তারা (যারা উপহাস করছে) তাদের চেয়ে উত্তম। আর তোমরা নিজেদেরকে/ একে অন্যকে অযথা দোষারোপ করো না। আর তোমরা একে অপরকে মন্দ উপাধিতে/ উপনামে ডেকো না। ইহা অত্যন্ত মন্দ যে, কেউ খ্যাতিলাভ করে ফাসেকিতে/ অবাধ্যতায়/ পাপকাজে সে ঈমান/ বিশ্বাস করার পরও। আর (এরূপ আচরণের পর) যে তাওবা করেনি, তারাই যালিম।
৪৯:১২
ইয়া আইয়ুহাল্লাযীনা আমানুজতানিবূ কাছীরাম মিনায যন্নি = হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছো, তোমরা বেশি বেশি অনুমান করা থেকে বিরত থাক। ইন্না = নিশ্চয়। বা’দুয যন্না = কিছু কিছু অনুমান। ইছমুন = পাপকাজ। ওয়া = আর। লা তাজাছছাছূ = তোমরা একে অন্যের গোপন বিষয় খুঁজো না (গুপ্তচরবৃত্তি/ গোয়েন্দাগিরি করো না)। ওয়া = আর। লা তাগতাব বা’দুকুম বা’দান = তোমরা একে অপরের গীবত করো না (= নিছক আত্মতুষ্টির জন্য কারো অনুপস্থিতিতে তাকে নিন্দনীয় সাব্যস্ত করো না)। আয়ুহিব্বু আহাদুকুম = তোমাদের কেউ কি পছন্দ করে। আইঁ ইয়াকুলা লাহমা আখীহি মাইতান = তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে। ফাকারিহতুমূহু = তোমরা তা অত্যন্ত অপছন্দ করবে। ওয়াল্লাহাহা = আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। তাওয়াবুর রহীমুন = তাওয়াব/ তাওবা কবুলকারী ও রহীম/ দয়াশীল।
হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছো, তোমরা বেশি বেশি অনুমান করা থেকে বিরত থাক। নিশ্চয় কিছু কিছু অনুমান পাপকাজ। আর তোমরা একে অন্যের গোপন বিষয় খুঁজো না (গুপ্তচরবৃত্তি/ গোয়েন্দাগিরি করো না)। আর তোমরা একে অপরের গীবত করো না (= নিছক আত্মতুষ্টির জন্য কারো অনুপস্থিতিতে তাকে নিন্দনীয় সাব্যস্ত করো না)। তোমাদের কেউ কি পছন্দ করে তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে? তোমরা তা অত্যন্ত অপছন্দ করবে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ তাওয়াব/ তাওবা কবুলকারী ও রহীম/ দয়াশীল।
৪৯:১৩
ইয়া আইয়ুহান্নাছু = হে মানুষ। ইন্না = নিশ্চয়। খালাক্বনাকুম = আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি। মিন যাকারিন ওয়া উনছা = একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে। ওয়া = আর। জাআলনাকুম = আমরা তোমাদেরকে পরিণত করেছি। শুয়ূবাওঁ ওয়া ক্বাবায়িলা = বিভিন্ন সম্প্রদায় ও গোত্রে। লিতাআরাফূ = যেন তোমরা একে অন্যকে চিনতে পারো। ইন্না = নিশ্চয়। আকরামাকুম ইনদাল্লাহি = আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সে-ই সবচেয়ে মর্যাদাবান যে। আতক্বাকুম = তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে মুত্তাকী/ আল্লাহভীরু। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। আলীমুন খাবীরুন = আলীম (= সব বিষয়ে জানেন) ও খাবীর (= সব বিষয়ে খবর রাখেন)।
হে মানুষ, নিশ্চয় আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে, আর আমরা তোমাদেরকে পরিণত করেছি বিভিন্ন সম্প্রদায় ও গোত্রে, যেন তোমরা একে অন্যকে চিনতে পারো। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সে-ই সবচেয়ে মর্যাদাবান যে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে মুত্তাকী/ আল্লাহভীরু। নিশ্চয় আল্লাহ আলীম (= সব বিষয়ে জানেন) ও খাবীর (= সব বিষয়ে খবর রাখেন)।
৪৯:১৪
ক্বলাতিল আ’রাবু = আ’রববাসীরা বলে। আমান্না = আমরা ঈমান/ বিশ্বাস করেছি। ক্বুল = বল। লাম তু’মিনূ = তোমরা ঈমান/ বিশ্বাস করনি। ওয়ালাকিন্না = কিন্তু। ক্বুলূ = তোমরা বল। আছলামনা = আমরা ইসলাম/ আত্মসমর্পণ করেছি। ওয়া = আর। লাম্মা ইয়াদখুলিল ঈমানু = এখনো ঈমান/ বিশ্বাস দাখিল হয়নি/ প্রবেশ করেনি। ফী ক্বুলূবিকুম = তোমাদের কলবে। ওয়া = আর। ইন = যদি। তুতীঊল্লাহা ওয়া রাসূলাহু = তোমরা আল্লাহর ও তাঁর রসূলের ইতায়াত/ আনুগত্য কর। লা ইয়ালিতকুম = তাহলে তিনি কমতি করবেন না। মিন আ’মালিকুম = তোমাদের আমলসমূহের (প্রতিফল দানের) ক্ষেত্রে। শাইয়ান = কিছুমাত্রও। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। গাফূরুর রহীমুন = গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল।
আ’রববাসীরা বলে, ‘আমরা ঈমান/ বিশ্বাস করেছি’। বল, ‘তোমরা ঈমান/ বিশ্বাস করনি। কিন্তু তোমরা বল, ‘আমরা ইসলাম/ আত্মসমর্পণ করেছি’। আর এখনো ঈমান/ বিশ্বাস দাখিল হয়নি/ প্রবেশ করেনি তোমাদের কলবে। আর যদি তোমরা আল্লাহর ও তাঁর রসূলের ইতায়াত/ আনুগত্য কর, তাহলে তিনি কমতি করবেন না তোমাদের আমলসমূহের (প্রতিফল দানের) ক্ষেত্রে, কিছুমাত্রও। নিশ্চয় আল্লাহ গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল।
৪৯:১৫
ইন্নামাল মু’মিনূনা = প্রকৃতপক্ষে তারাই মু’মিন। আল্লাযীনা = যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। বিল্লাহি = আল্লাহর প্রতি। ওয়া = ও। রাসূলিহী = তাঁর রসূলের প্রতি। ছুম্মা = তারপর। লাম ইয়ারতাবূ = তারা সন্দেহ করেনি। ওয়া = আর। জাহাদূ = তারা জিহাদ/ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করেছে। বিআমওয়ালিকুম ওয়া আনফুসিহিম = তাদের মালসম্পদ ও জানজীবন দিয়ে। ফী সাবীলিল্লাহি = আল্লাহর পথে। উলায়িকা হুমুস সদিক্বূনা = তারাই সাদেক্বীন/ সত্যবাদী।
প্রকৃতপক্ষে তারাই মু’মিন যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রসূলের প্রতি, তারপর তারা সন্দেহ করেনি, আর তারা জিহাদ/ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করেছে তাদের মালসম্পদ ও জানজীবন দিয়ে, আল্লাহর পথে। তারাই সাদেক্বীন/ সত্যবাদী।
৪৯:১৬
ক্বুল = বল। আতুআল্লিমূনাল্লাহা = তোমরা কি আল্লাহকে জানাচ্ছো। বিদ্বীনিকুম = তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে? ওয়াল্লাহু = অথচ আল্লাহ। ইয়া’লামু = জানেন। মা ফিছ ছামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদি = যা কিছু আছে আকাশমন্ডলীতে ও যা কিছু আছে পৃথিবীতে তার সবকিছু সম্পর্কে। ওয়াল্লাহু = আর আল্লাহ। বিকুল্লি শাইয়িন আলীমুন = সবকিছু সম্পর্কে আলীম/ পরিজ্ঞাত।
বল, ‘তোমরা কি আল্লাহকে জানাচ্ছো তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে? অথচ আল্লাহ জানেন যা কিছু আছে আকাশমন্ডলীতে ও যা কিছু আছে পৃথিবীতে তার সবকিছু সম্পর্কে। আর আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে আলীম/ পরিজ্ঞাত’।
৪৯:১৭
ইয়ামুন্নূনা আলাইকা = তারা তোমার উপর অনুগ্রহ প্রকাশ করে। আন = এ মর্মে যে। আছলামূ = তারা ইসলাম/ আত্মসমর্পণ করেছে। ক্বুল = বল। লা তামুন্নূ = তোমরা অনুগ্রহ করনি। আলাইয়া = আমার উপর। ইসলামাকুম = তোমাদের ইসলামের/ আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। বালিল্লাহু = বরং আল্লাহ। ইয়ামুন্নু = অনুগ্রহ করেছেন। আলাইকুম = তোমাদের উপর। আন = এ মর্মে যে। হাদাকুম = তিনি তোমাদেরকে হিদায়াত করেছেন। লিল ঈমানি = ঈমান/ বিশ্বাস করার জন্য। ইন = যদি। কুনতুম = তোমরা হও। সদিক্বীনা = সাদেক্বীন/ সত্যবাদী।
তারা তোমার উপর অনুগ্রহ প্রকাশ করে এ মর্মে যে, তারা ইসলাম/ আত্মসমর্পণ করেছে। বল, ‘তোমরা অনুগ্রহ করনি আমার উপর তোমাদের ইসলামের/ আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। বরং আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন তোমাদের উপর এ মর্মে যে, তিনি তোমাদেরকে হিদায়াত করেছেন ঈমান/ বিশ্বাস করার জন্য, যদি তোমরা হও সাদেক্বীন/ সত্যবাদী’।
৪৯:১৮
ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। ইয়া’লামু = জানেন। গায়বাছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি = আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর গায়েব/ অদৃশ্য সত্য। ওয়াল্লাহু বাসীরুম বিমা তা’মালূনা = আর আল্লাহ উহার প্রতি বাসীর/ দৃষ্টিবান যা কিছু আমল তোমরা করছো।
নিশ্চয় আল্লাহ জানেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর গায়েব/ অদৃশ্য সত্য। আর আল্লাহ উহার প্রতি বাসীর/ দৃষ্টিবান যা কিছু আমল তোমরা করছো।