কুরআনান আ'জাবান

বিস্ময়কর কুরআন

শব্দার্থ ভিত্তিক বাংলা অনুবাদ, তৈয়াবুর রহমান গোপালগঞ্জী

Quranan Ajaban Cover

038. সূরা সোয়াদ

হে আমার প্রভু, আপনার কাছে আশ্রয় চাই শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে, আশ্রয় চাই এর উপস্থিতি থেকে। পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু সর্বশক্তিমানের নামে।

৩৮:১
সদ = সদ। ওয়াল ক্বুরআনি যিয যিকরি = শপথ যিকিরে/ স্মরণীয় উপদেশে পূর্ণ আল কুরআনের।

সদ। শপথ যিকিরে/ স্মরণীয় উপদেশে পূর্ণ আল কুরআনের।

৩৮:২
বালিল্লাযীনা = বরং যারা। কাফারূ = কুফর করেছে তারাই। ফী ইযযাতিইঁ ওয়া শিক্বাক্বিন = আত্মম্ভরিতা ও বিরোধিতায় লিপ্ত।

বরং যারা কুফর করেছে তারাই আত্মম্ভরিতা ও বিরোধিতায় লিপ্ত।

৩৮:৩
কাম = কত যে। আহলাকনা = আমরা হালাক/ ধ্বংস করেছিলাম। মিন ক্বাবলিহিম = তাদের আগে। মিন ক্বারনিন = যুগ যুগান্তরের লোকদেরকে। ফানাদূ = তখন তারা আর্তনাদ/ আর্তচিৎকার করেছিলো। ওয়া = অথচ। লাতা হীনা মানাসিন = তখন তাদের পরিত্রাণের/ রক্ষা পাবার সময় ছিলো না।

কত যে আমরা হালাক/ ধ্বংস করেছিলাম তাদের আগে যুগ যুগান্তরের লোকদেরকে, তখন তারা আর্তনাদ/ আর্তচিৎকার করেছিলো। অথচ তখন তাদের পরিত্রাণের/ রক্ষা পাবার সময় ছিলো না।

৩৮:৪
ওয়া = আর। আজিবূ = তারা আশ্চর্য হয়েছে। আন = যে। জাআহুম = তাদের কাছে এসেছে। মুনযিরুম মিনহুম = একজন সতর্ককারী, তাদেরই মধ্য থেকে। ওয়া = আর। ক্বলাল কাফিরূনা = কাফেররা বলে। হাযা = এ ব্যক্তি। ছাহিরুন কাযযাবুন = মিথ্যাবাদী (কথার) যাদুকর।

আর তারা আশ্চর্য হয়েছে যে, তাদের কাছে এসেছে একজন সতর্ককারী, তাদেরই মধ্য থেকে। আর কাফেররা বলে, ‘এ ব্যক্তি মিথ্যাবাদী (কথার) যাদুকর’।

৩৮:৫
আজাআলাল আলিহাতা ইলাহাওঁ ওয়াহিদান = সে কি সাব্যস্ত করেছে সমস্ত ইলাহকে একই ইলাহ? ইন্না = নিশ্চয়। হাযা = ইহা। লাশাইয়ুন উজাবুন = আশ্চর্যজনক ব্যাপার।

সে কি সাব্যস্ত করেছে সমস্ত ইলাহকে একই ইলাহ? নিশ্চয় ইহা আশ্চর্যজনক ব্যাপার।

৩৮:৬
ওয়ানত্বলাক্বাল মালাউ মিনহুম = আর প্রস্থান করলো তাদের মধ্যকার মালাউ/ প্রশাসনিক প্রধানরা। আনিমশূ = এ বলে যে, ‘তোমরা চলো। ওয়াসবিরূ = আর তোমরা সবর করো/ অবিচল থাক। আলা আলিহাতিকুম = তোমাদের ইলাহদের উপর। ইন্না = নিশ্চয়। হাযা = ইহা। লাশাইউন ইউরাদু = উদ্দেশ্যমূলক ব্যাপার।

আর প্রস্থান করলো তাদের মধ্যকার মালাউ/ প্রশাসনিক প্রধানরা এ বলে যে, ‘তোমরা চলো আর তোমরা সবর করো/ অবিচল থাক তোমাদের ইলাহদের উপর। নিশ্চয় ইহা উদ্দেশ্যমূলক ব্যাপার’।

৩৮:৭
মা ছামি’না = আমরা শুনিনি। বিহাযা = এ সম্পর্কে। ফিল মিল্লাতিল আখিরাতি = অতীতের অন্যান্য মিল্লাতের/ ধর্মাচারের প্রকৃতি ও স্বরূপের মধ্যে। ইন হাযা = ইহা কিছু নয়। ইল্লাখতিলাক্বুন = মনগড়া কথা ছাড়া।

আমরা শুনিনি এ সম্পর্কে অতীতের অন্যান্য মিল্লাতের/ ধর্মাচারের প্রকৃতি ও স্বরূপের মধ্যে। ইহা কিছু নয় মনগড়া কথা ছাড়া।

৩৮:৮
আউনযিলা আলাইহিয যিকরু = তবে কি নাযিল করা হয়েছে তারই উপর যিকির/ স্মরণিকা/ সংবিধান। মিম বায়নিনা = আমাদের মধ্য থেকে? বাল = বরং। হুম = তারা। ফী শাককিম মিন যিকরী = সন্দেহের মধ্যে আছে আমার যিকিরের ব্যাপারে। বাল = বরং। লাম্মা ইয়াযুক্বূ আযাবি = তারা এখনো আমার আযাবের স্বাদ আস্বাদন করেনি।

তবে কি নাযিল করা হয়েছে তারই উপর যিকির/ স্মরণিকা/ সংবিধান আমাদের মধ্য থেকে? বরং তারা সন্দেহের মধ্যে আছে আমার যিকিরের ব্যাপারে। বরং তারা এখনো আমার আযাবের স্বাদ আস্বাদন করেনি।

৩৮:৯
আম = নাকি। ইনদাহুম = তাদের কাছে আছে। খাযায়িনু রহমাতি রব্বিকাল আযীযিল ওয়াহহাবি = তোমার রবের রহমতের ভান্ডারসমূহ, যিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও ওয়াহহাব/ মহান দাতা।

নাকি তাদের কাছে আছে তোমার রবের রহমতের ভান্ডারসমূহ, যিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও ওয়াহহাব/ মহান দাতা।

৩৮:১০
আম = নাকি। লাহুম = তাদের কর্তৃত্বাধীনে আছে। মুলকুছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া মা বায়নাহুমা = আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এবং এ উভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সেসবের আধিপত্য। ফাল ইয়ারতাক্বূ = সুতরাং তারা আরোহন করুক। ফিল আছবাবি = (ঊর্ধ্বজগতের) আসবাবের/ উপায় উপকরনের মধ্যে।

নাকি তাদের কর্তৃত্বাধীনে আছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এবং এ উভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সেসবের আধিপত্য? সুতরাং তারা আরোহন করুক (ঊর্ধ্বজগতের) আসবাবের/ উপায় উপকরনের মধ্যে।

৩৮:১১
জুনদুম মা হুনালিকা = এ একটা সেনাবাহিনী, যারা এখানেই। মাহযূমুন = পরাজিত হবে। মিনাল আহযাবি = (তারা একটি দল) অনেক দলের মধ্যে থেকে।

এ একটা সেনাবাহিনী, যারা এখানেই পরাজিত হবে, (তারা একটি দল) অনেক দলের মধ্য থেকে।

৩৮:১২
কাযযাবাত = মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো। ক্বাবলাহুম = তাদের আগে। ক্বাওমু নূহিন = নূহের কওম। ওয়া = ও। আদুন = আদ সম্প্রদায়। ওয়া ফিরআউনু যুল আওতাদি = এবং কীলকধারী/ পেরেকধারী ফেরাউন।

মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো তাদের আগে নূহের কওম ও আদ সম্প্রদায় এবং কীলকধারী/ পেরেকধারী ফেরাউন।

৩৮:১৩
ওয়া = আর। সামূদু = সামুদ সম্প্রদায়। ওয়া = ও। ক্বাওমু লূতিন = লূতের কওম। ওয়া = আর। আসহাবুল আইকাতি = আসহাবুল আইকা। উলায়িকাল আহযাবু = উহারা ছিলো কয়েকটি দল।

আর সামুদ সম্প্রদায় ও লূতের কওম আর আসহাবুল আইকা। উহারা ছিলো কয়েকটি দল।

৩৮:১৪
ইন কুল্লুন = কেউ ছিলো না। ইল্লা = এছাড়া যে। কাযযাবার রুসুলা = তারা রসূলদেরকে মিথ্যারোপ করতো। ফাহাক্বক্বা = তারপর হক্ব/ বাস্তব হয়েছিলো। ইক্বাবি = আমার দেয়া শাস্তি।

(এদের) কেউ ছিলো না এছাড়া যে, তারা রসূলদেরকে মিথ্যারোপ করতো। তারপর হক্ব/ বাস্তব হয়েছিলো আমার দেয়া শাস্তি।

৩৮:১৫
ওয়া = আর। মা ইয়ানযুর = অপেক্ষা করছে না। হাউলায়ি = ইহারা। ইল্লা সয়হাতাওঁ ওয়াহিদাতান = একটিমাত্র প্রচন্ড শব্দের জন্য ছাড়া। মা লাহা মিন ফাওয়াক্বিন = যার মধ্যে কোন বিরতি থাকবে না।

আর অপেক্ষা করছে না ইহারা একটিমাত্র প্রচন্ড শব্দের জন্য ছাড়া, যার মধ্যে কোন বিরতি থাকবে না।

৩৮:১৬
ওয়া = আর। ক্বলূ = তারা বলে। রব্বানা = হে আমাদের রব। আজ্জিল্লানা = শীঘ্রই আমাদেরকে দিয়ে দিন। ক্বিত্তানা = আমাদের অংশ। ক্বাবলা ইয়াওমিল হিসাবি = ইয়াওমুল হিসাবের/ হিসাব দিবসের আগেই।

আর তারা বলে, ‘হে আমাদের রব, শীঘ্রই আমাদেরকে দিয়ে দিন আমাদের অংশ ইয়াওমুল হিসাবের/ হিসাব দিবসের আগেই।

৩৮:১৭
ইসবির = তুমি সবর করো। আলা মা ইয়াক্বূলূনা = তারা যা বলে তার ব্যাপারে (তোমার প্রতিক্রিয়া হিসাবে)। ওয়াযকুর = আর আলোচনা কর। আবদানা দাঊদা = আমাদের বান্দা দাউদের ব্যাপারে। যাল আয়দি = যে ছিলো শক্তিশালী। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে ছিলো। আওয়াবুন = (আল্লাহর) অভিমুখী।

তুমি সবর করো তারা যা বলে তার ব্যাপারে (তোমার প্রতিক্রিয়া হিসাবে)। আর আলোচনা করো আমাদের বান্দা দাউদের ব্যাপারে, যে ছিলো শক্তিশালী। নিশ্চয় সে ছিলো (আল্লাহর) অভিমুখী।

৩৮:১৮
ইন্না ছাখখারনা = নিশ্চয় আমরা নিয়োজিত করেছিলাম। আল জিবালা = পাহাড়সমূহকে। মাআহু = তার সাথে। ইউছাব্বিহনা = সে তাসবীহ করতো। বিল আশিয়্যি ওয়াল ইশরাক্বি = ইশার সময় ও ইশরাকের/ সূর্যোদয়ের সময়।

নিশ্চয় আমরা নিয়োজিত করেছিলাম পাহাড়সমূহকে তার সাথে, সে তাসবীহ করতো ইশার সময় ও ইশরাকের/ সূর্যোদয়ের সময়।

৩৮:১৯
ওয়াত্তয়রু = আর অনেক পাখি। মাহশূরাতান = হাশর/ সমবেত হতো। কুল্লুল্লাহু = প্রত্যেকেই তাঁর উদ্দেশ্যে (= আল্লাহর উদ্দেশ্যে)। আওয়াবুন = অভিমুখী।

আর অনেক পাখি হাশর/ সমবেত হতো। প্রত্যেকেই তাঁর উদ্দেশ্যে (= আল্লাহর উদ্দেশ্যে) অভিমুখী।

৩৮:২০
ওয়া = আর। শাদাদনা = আমরা দৃঢ় করেছিলাম। মুলকাহু = তার আধিপত্যকে। ওয়া = আর। আতাইনাহুল হিকমাতা = আমরা তাকে দিয়েছিলাম হিকমত/ বিজ্ঞতা। ওয়া = আর। ফাসলাল খিতাবি = ফয়সালাকারী কথা বলার যোগ্যতা।

আর আমরা দৃঢ় করেছিলাম তার আধিপত্যকে। আর আমরা তাকে দিয়েছিলাম হিকমত/ বিজ্ঞতা আর ফয়সালাকারী কথা বলার যোগ্যতা।

৩৮:২১
ওয়া = আর। হাল আতাকা = তোমার কাছে কি পৌঁছেছে। নাবাউল খাসমি = মামলাকারীদের সংবাদ। ইয = যখন। তাছাওওয়ারুল মিহরাবা = তারা অস্ত্রাগারে টপকে এসেছিলো।

আর তোমার কাছে কি পৌঁছেছে মামলাকারীদের সংবাদ? যখন তারা অস্ত্রাগারে টপকে এসেছিলো।

৩৮:২২
ইয = যখন। দাখালূ = তারা প্রবেশ করেছিলো। আলা দাঊদা = দাউদের কাছে। ফাফাযিআ মিনহুম = তখন সে তাদের থেকে ঘাবড়ে গিয়েছিলো। ক্বলূ = তারা বলেছিলো। লা তাখাফ = ভয় করবেন না। খাসমানি = আমরা মামলার দুই পক্ষ। বাগা = বাড়াবাড়ি করেছে। বা’দুনা আলা বা’দিন = আমাদের একে অপরের প্রতি। ফাহকুম = সুতরাং বিচার করে দিন। বায়নানা = আমাদের মধ্যে। বিল হাক্বক্বি = সত্যের ভিত্তিতে। ওয়া = আর। লা তুশত্বিত = অবিচার করবেন না। ওয়াহদিনা = আর আমাদেরকে হিদায়াত/ পথনির্দেশ করুন। ইলা ছাওয়াউস সিরাত = সরল সঠিক পথে।

যখন তারা প্রবেশ করেছিলো দাউদের কাছে, তখন সে তাদের থেকে ঘাবড়ে গিয়েছিলো। তারা বলেছিলো, ‘ভয় করবেন না। আমরা মামলার দুই পক্ষ। বাড়াবাড়ি করেছে আমাদের একে অপরের প্রতি। সুতরাং বিচার করে দিন আমাদের মধ্যে সত্যের ভিত্তিতে। আর অবিচার করবেন না। আর আমাদেরকে হিদায়াত/ পথনির্দেশ করুন সরল সঠিক পথে।

৩৮:২৩
ইন্না = নিশ্চয়। হাযা = এ ব্যক্তি। আখী = আমার ভাই। লাহু তিছউন ওয়া তিছঊনা না’জাতান = তার আছে নিরানব্বইটি দুম্বী। ওয়া = আর। লী না’জাতুন ওয়াহিদাতুন = আমার আছে একটিমাত্র দুম্বী। ফাক্বলা = তবুও সে বললো। আকফিলনীহা = উহাকে আমার জিম্মায় দিয়ে দাও। ওয়া = আর। আযযানী = সে আমাকে দাবিয়ে দিলো। ফিল খিতাবি = কথাবার্তার ক্ষেত্রে।

নিশ্চয় এ ব্যক্তি আমার ভাই। তার আছে নিরানব্বইটি দুম্বী। আর আমার আছে একটিমাত্র দুম্বী। তবুও সে বললো, ‘উহাকে আমার জিম্মায় দিয়ে দাও’। আর সে আমাকে দাবিয়ে দিলো কথাবার্তার ক্ষেত্রে।

৩৮:২৪
ক্বলা = সে (= দাউদ) বলেছিলো। লাক্বাদ = নিশ্চয়। যলামাকা = সে তোমার উপর যুলুম করেছে। বিছুআলি না’জাতিকা ইলা নি’আজিহী = তার দুম্বীগুলোর সাথে তোমার দুম্বী দাবি করার মাধ্যমে। ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। কাছীরাম মিনাল খুলাত্বয়ি = পাশাপাশি বাসকারীদের অধিকাংশ। লাইয়াবগী = বাড়াবাড়ি করে। বা’দুহুম আলা বা’দিন = তাদের একে অপরের উপর। ইল্লাল্লাযীনা আমানূ = তারা ছাড়া যারা ঈমান/ বিশ্বাস করে। ওয়া = ও। আমিলুস সলিহাতি = আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করে। ওয়া = আর। ক্বালীলুম মা হুম = এমন লোক সংখ্যায় কমই হয়। ওয়া = আর। যন্না দাঊদা = দাউদ অনুমান করলো। আন্নামা = যে। ফাতান্নাহু = আমরা তাকে পরীক্ষা করেছি। ফাছতাগফারা = তখন সে ক্ষমা প্রার্থনা করলো। রব্বাহু = তার রবের কাছে। ওয়া = আর। খাররা = সে ঝুঁকে গেলো। রকিয়ান = রুকুতে। ওয়া = আর। আনাবা = সে (আল্লাহর) অভিমুখী হলো।

সে (= দাউদ) বলেছিলো, ‘নিশ্চয় সে তোমার উপর যুলুম করেছে তার দুম্বীগুলোর সাথে তোমার দুম্বী দাবি করার মাধ্যমে। আর নিশ্চয় পাশাপাশি বাসকারীদের অধিকাংশ বাড়াবাড়ি করে তাদের একে অপরের উপর। তারা ছাড়া যারা ঈমান/ বিশ্বাস করে ও আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করে। আর এমন লোক সংখ্যায় কমই হয়। আর দাউদ অনুমান করলো যে, আমরা তাকে পরীক্ষা করেছি। তখন সে ক্ষমা প্রার্থনা করলো তার রবের কাছে। আর সে ঝুঁকে গেলো রুকুতে আর সে (আল্লাহর) অভিমুখী হলো।

৩৮:২৫
ফাগাফারনা লাহু যালিকা = তখন আমরা তাকে উহা ক্ষমা করে দিয়েছিলাম। ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। লাহু ইনদানা লাযুলফা = সে আমাদের নৈকট্যলাভকারী ছিলো। ওয়া = আর। হুসনা মাআবিন = (তার জন্য আছে) উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল।

তখন আমরা তাকে উহা ক্ষমা করে দিয়েছিলাম। আর নিশ্চয় সে আমাদের নৈকট্যলাভকারী ছিলো। আর (তার জন্য আছে) উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল।

৩৮:২৬
ইয়া দাউদা = হে দাউদ। ইন্না জাআলনাকা = নিশ্চয় আমরা তোমাকে স্থাপন করেছি। খালীফাতান ফিল আরদি = পৃথিবীতে খলিফা/ (ক্ষমতায়) স্থলাভিষিক্ত হিসাবে। ফাহকুম = সুতরাং তুমি বিচার-ফায়সালা করো। বায়নান্নাছি = মানুষের মধ্যে। বিল হাক্বক্বি = হক্বের/ সত্যের ভিত্তিতে। ওয়া = আর। লা তাত্তাবিয়িল হাওয়া = হাওয়া/ প্রবৃত্তিপ্রসূত সংবিধানের অনুসরণ করো না। ফাইউদিল্লাকা = তাহলে উহা তোমাকে পথভ্রষ্ট করবে। আন ছাবীলিল্লাহি = আল্লাহর পথ থেকে। ইন্নাল্লাযীনা = নিশ্চয় যারা। ইয়াদ্বিল্লূনা = পথভ্রষ্ট হয়। আন ছাবীলিল্লাহি = আল্লাহর পথ থেকে। লাহুম = তাদের জন্য আছে। আযাবুন শাদীদুন = আযাবুন শাদীদ/ কঠোর শাস্তি। বিমা = এ কারণে যে। নাছূ = তারা ভুলে গেছে। ইয়াওমাল হিসাবি = ইয়াওমুল হিসাবকে/ হিসাব দিবসকে।

হে দাউদ, ‘নিশ্চয় আমরা তোমাকে স্থাপন করেছি পৃথিবীতে খলিফা/ (ক্ষমতায়) স্থলাভিষিক্ত হিসাবে। সুতরাং তুমি বিচার-ফায়সালা করো মানুষের মধ্যে হক্বের/ সত্যের ভিত্তিতে। আর হাওয়া/ প্রবৃত্তিপ্রসূত সংবিধানের অনুসরণ করো না। তাহলে উহা তোমাকে পথভ্রষ্ট করবে আল্লাহর পথ থেকে। নিশ্চয় যারা পথভ্রষ্ট হয় আল্লাহর পথ থেকে তাদের জন্য আছে আযাবুন শাদীদ/ কঠোর শাস্তি, এ কারণে যে, তারা ভুলে গেছে ইয়াওমুল হিসাবকে/ হিসাব দিবসকে।

৩৮:২৭
ওয়া = আর। মা খালাক্বনাছ ছামাআ = আমরা সৃষ্টি করিনি আকাশকে। ওয়াল আরদা = ও পৃথিবীকে। ওয়া = আর। মা বায়নাহুমা = যা কিছু এ উভয়ের মধ্যে আছে সেসবকে। বাতিলান = অর্থহীনভাবে/ উদ্দেশ্যহীনভাবে/ অযৌক্তিকভাবে। যালিকা = উহা (= এসবকে অর্থহীনভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে মর্মে ধারণা)। যন্নুল্লাযীনা = তাদের ধারণা যারা। কাফারূ = কুফর করেছে। ফাওয়ালুল্লিল্লাযীনা = সুতরাং তাদের জন্য দুর্ভোগ যারা। কাফারূ = কুফর করেছে। মিনান্নারি = (জাহান্নামের) আগুনে।

আর আমরা সৃষ্টি করিনি আকাশকে ও পৃথিবীকে আর যা কিছু এ উভয়ের মধ্যে আছে সেসবকে অর্থহীনভাবে/ উদ্দেশ্যহীনভাবে/ অযৌক্তিকভাবে। উহা (= এসবকে অর্থহীনভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে মর্মে ধারণা) তাদের ধারণা যারা কুফর করেছে। সুতরাং তাদের জন্য দুর্ভোগ যারা কুফর করেছে, (জাহান্নামের) আগুনে।

৩৮:২৮
আম = নাকি। নাজআলুল্লাযীনা আমানূ = আমরা সাব্যস্ত করবো তাদেরকে যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ওয়া = আর। আমিলুস সলিহাতি = আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে। কাল মুফসিদীনা ফিল আরদি = পৃথিবীতে ফাসাদকারীদের/ বিপর্যয়সৃষ্টিকারীদের মতো? আম = নাকি। নাজআলু = আমরা সাব্যস্ত করবো। মুত্তাক্বীনা = মুত্তাকীদেরকে/ আল্লাহভীরুদেরকে। কালফুজ্জারি = ফুজ্জারের/ পাপাচারীদের মতো?

নাকি আমরা সাব্যস্ত করবো তাদেরকে যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে আর আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে, পৃথিবীতে ফাসাদকারীদের/ বিপর্যয়সৃষ্টিকারীদের মতো? নাকি আমরা সাব্যস্ত করবো মুত্তাকীদেরকে/ আল্লাহভীরুদেরকে ফুজ্জারের/ পাপাচারীদের মতো?

৩৮:২৯
কিতাবুন = এ কিতাব। আনযালনাহু = আমরা নাযিল করেছি। ইলাইকা = তোমার প্রতি। মুবারাকুন = যা বরকতময়। লিইয়াদ্দাব্বারূ = যেন তারা তাদাব্বুর/ গবেষণা করে। আয়াতিহী = উহার আয়াতসমূহ সম্পর্কে। ওয়া = আর। লিইয়াতাযাক্কারা = যেন তাযাক্কুর/ উপদেশ গ্রহণ করে। উলুল আলবাবি = উলুল আলবাব/ চিন্তাশীল ব্যক্তিগণ।

এ কিতাব আমরা নাযিল করেছি তোমার প্রতি যা বরকতময়, যেন তারা তাদাব্বুর/ গবেষণা করে উহার আয়াতসমূহ সম্পর্কে আর যেন তাযাক্কুর/ উপদেশ গ্রহণ করে উলুল আলবাব/ চিন্তাশীল ব্যক্তিগণ।

৩৮:৩০
ওয়া = আর। ওয়াহাবনা লিদাউদা = দাউদকে আমরা দান করেছিলাম। সুলাইমানা = সুলাইমানকে (তার পুত্ররূপে)। নি’মাল আবদু = নেয়ামতলাভকারী বান্দা। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে। আওয়াবুন = (আল্লাহর) অভিমুখী।

আর দাউদকে আমরা দান করেছিলাম সুলাইমানকে (তার পুত্ররূপে)। নেয়ামতলাভকারী বান্দা। নিশ্চয় সে (আল্লাহর) অভিমুখী।

৩৮:৩১
ইয = (স্মরণ করো) যখন। উরিদা = পেশ করা হয়েছিলো। আলাইহি = তার সামনে। বিলআশিয়্যিস সফিনাতুল জিয়াদু = ইশার সময় উৎকৃষ্ট মানের দ্রুতগামী ঘোড়াসমূহ।

(স্মরণ করো) যখন পেশ করা হয়েছিলো তার সামনে ইশার সময় উৎকৃষ্ট মানের দ্রুতগামী ঘোড়াসমূহ।

৩৮:৩২
ফাক্বলা = তখন সে বলেছিলো। ইন্নী আহবাবতু = নিশ্চয় আমি ভালবেসেছি। হুব্বাল খায়রি = এই উত্তম সম্পদকে। আন যিকরী রব্বী = আমার রবের যিকিরের/ স্মরণের কারণে। হাত্তা = যতক্ষণ না। তাওয়ারাত = অদৃশ্য হয়ে গেলো। বিল হিজাবি = আড়ালে।

তখন সে বলেছিলো, ‘নিশ্চয় আমি ভালবেসেছি এই উত্তম সম্পদকে আমার রবের যিকিরের/ স্মরণের কারণে। যতক্ষণ না অদৃশ্য হয়ে গেলো আড়ালে।

৩৮:৩৩
রুদ্দূহা = উহাকে ফিরিয়ে আন। আলাইয়া = আমার সামনে। ফাত্বফিক্বা = তারপর সে শুরু করলো। মাছহাম বিছ ছূক্বি = হাত বুলাতে, ঘোড়াগুলোর পাগুলোর উপর। ওয়াল আ’নাক্বি = ও গলাগুলোর উপর।

উহাকে ফিরিয়ে আন আমার সামনে। তারপর সে শুরু করলো হাত বুলাতে, ঘোড়াগুলোর পাগুলোর উপর ও গলাগুলোর উপর।

৩৮:৩৪
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। ফাতান্না = আমরা পরীক্ষা করেছিলাম। সুলাইমানা = সুলাইমানকে। ওয়া = আর। আলক্বায়না = আমরা রেখে দিয়েছিলাম। আলা কুরছিয়্যিহি = তার কুরসির/ ক্ষমতার ব্যাপ্তির উপর। জাছাদান = একটি দেহ। ছুম্মা = তারপর। আনাবা = সে (আমার) অভিমুখী হয়েছিলো।

আর নিশ্চয় আমরা পরীক্ষা করেছিলাম সুলাইমানকে। আর রেখে দিয়েছিলাম তার কুরসির/ ক্ষমতার ব্যাপ্তির উপর একটি দেহ। তারপর সে (আমার) অভিমুখী হয়েছিলো।

৩৮:৩৫
ক্বলা = সে বলেছিলো। রব্বিগফিরলী = হে আমার রব, আমাকে ক্ষমা করুন। ওয়া = আর। হাবলী = আমাকে দান করুন। মুলকাল্লা ইয়ামবাগী লিআহাদিম মিম বা’দী = এমন আধিপত্য, যা শোভনীয় হবে না কারো জন্য আমার পরে। ইন্নাকা আনতাল ওয়াহহাবু = নিশ্চয় আপনি ওয়াহহাব/ মহাদাতা।

সে বলেছিলো, ‘হে আমার রব, আমাকে ক্ষমা করুন। আর আমাকে দান করুন এমন আধিপত্য, যা শোভনীয় হবে না কারো জন্য আমার পরে। নিশ্চয় আপনি ওয়াহহাব/ মহাদাতা।

৩৮:৩৬
ফাছাখখারনা = তারপর আমরা নিয়োজিত করে দিয়েছিলাম। লাহুর রীহা= তার জন্য বাতাসকে। তাজরী বিআমরিহী = উহা প্রবাহিত হতো তার আদেশক্রমে। রুজাআন = ধীরগতিতে। হাইছু আসাবা = যেখানে সে পৌঁছতে চাইতো।

তারপর আমরা নিয়োজিত করেছিলাম তার জন্য বাতাসকে। উহা প্রবাহিত হতো তার আদেশক্রমে ধীরগতিতে যেখানে সে পৌঁছতে চাইতো।

৩৮:৩৭
ওয়াশ শায়াতীনা = আর শয়তানগুলোকেও (তার জন্য নিয়োজিত করেছিলাম)। কুল্লা = (যাদের মধ্যে ছিলো) প্রত্যেক প্রকার। বান্নায়িন ওয়া গাওয়াসিন = নির্মাতা ও ডুবুরি।

আর শয়তানগুলোকেও (তার জন্য নিয়োজিত করেছিলাম), (যাদের মধ্যে ছিলো) প্রত্যেক প্রকার নির্মাতা ও ডুবুরি।

৩৮:৩৮
ওয়া = আর। আখারীনা = অন্যদেরকে। মুক্বাররনীনা ফিল আসফাদি = শিকলসমূহের মধ্যে আবদ্ধ করেছিলাম।

আর অন্যদেরকে (= অন্য শয়তানগুলোকে/ দুষ্ট প্রকৃতির লোকগুলোকে) শিকলসমূহের মধ্যে আবদ্ধ করেছিলাম (= কারারুদ্ধ করেছিলাম)।

৩৮:৩৯
হাযা = ইহা। আতাউনা = আমাদের দান। ফামনুন = সুতরাং তুমি অনুগ্রহ করো। আও = অথবা। আমছিক = আটকে রাখো। বিগায়রি হিসাবিন = হিসাব/ জবাবদিহিতা ছাড়া।

ইহা আমাদের দান। সুতরাং তুমি অনুগ্রহ করো অথবা আটকে রাখো, হিসাব/ জবাবদিহিতা ছাড়া। (৫৯:৭)।

৩৮:৪০
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। লাহু ইনদানা লাযুলফা = সে আমাদের নৈকট্যলাভকারী ছিলো। ওয়া = আর। হুসনা মাআবিন = (তার জন্য আছে) উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল।

আর নিশ্চয় সে আমাদের নৈকট্যলাভকারী ছিলো। আর (তার জন্য আছে) উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল।

৩৮:৪১
ওয়াযকুর = আর যিকির/ আলোচনা করো। আবদানা আইয়ুবু = আমাদের বান্দা আইয়ুবের ব্যাপারে। ইয = যখন। নাদা = সে ডেকে বলেছিলো। রব্বাহু = তার রবকে। আন্নী মাছছানিয়াশ শায়তানু = নিশ্চয় আমাকে স্পর্শ করেছে শয়তান। বিনুসবিওঁ ওয়া আযাবিন = হয়রানি/ পেরেশানি ও কষ্ট দিয়ে।

আর যিকির/ আলোচনা করো আমাদের বান্দা আইয়ুবের ব্যাপারে। যখন সে ডেকে বলেছিলো তার রবকে, ‘নিশ্চয় আমাকে স্পর্শ করেছে শয়তান হয়রানি/ পেরেশানি ও কষ্ট দিয়ে’।

৩৮:৪২
উরকুদ বিরিজলিকা = তোমার পা ফেলে দ্রুত পদে পালিয়ে যাও (২১:১২-১৩)। হাযা = এই যে (এখানে আছে)। মুগতাছালুন বারিদুন = গোছলের শীতল পানি। ওয়া = ও। শারাবুন = শরাব/ পানীয়।

‘তোমার পা ফেলে দ্রুত পদে পালিয়ে যাও’ (২১:১২-১৩)। ‘এই যে (এখানে আছে) গোসলের শীতল পানি ও শরাব/ পানীয়’।

৩৮:৪৩
ওয়া = আর। ওয়াহাবনা = আমরা (ফিরিয়ে) দিয়েছিলাম। লাহু = তার কাছে। আহলাহু = তার আহালকে/ পরিবার-পরিজনকে। ওয়া = আর। মিছলাহুম মাআহুম = তাদের সাথে তাদের মতো আরো অনেককে। রহমাতাম মিন্না = আমাদের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। ওয়া = আর। যিকরা লিউলিল আলবাবি = উলিল আলবাবের/ চিন্তাশীল ব্যক্তিদের জন্য যিকির/ স্মরণীয় উপদেশস্বরূপ।

আর আমরা (ফিরিয়ে) দিয়েছিলাম তার কাছে তার আহালকে/ পরিবার-পরিজনকে আর তাদের সাথে তাদের মতো আরো অনেককে, আমাদের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ আর উলিল আলবাবের/ চিন্তাশীল ব্যক্তিদের জন্য যিকির/ স্মরণীয় উপদেশস্বরূপ।

৩৮:৪৪
ওয়া = আর। খুয বিইয়াদিকা = তোমার হাতে নাও। দিগছান = একটা তৃণগুচ্ছ। ফাদ্বরিব বিহী = তারপর তা দিয়ে (ঘরদোর) ঝাড়ু দাও। ওয়া = আর। লা তাহনাছ = কোন পাপকর্ম করো না’ (৫৬:৪৬)। ইন্না = নিশ্চয় আমরা তাকে পেয়েছি। সবিরান = সবরকারী হিসাবে। নি’মাল আবদু = নেয়ামতলাভকারী বান্দা। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে। আওয়াবুন = (আল্লাহর) অভিমুখী।

‘আর তোমার হাতে নাও একটা তৃণগুচ্ছ তারপর তা দিয়ে (ঘরদোর) ঝাড়ু দাও। আর কোন পাপকর্ম করো না’ (৫৬:৪৬)। নিশ্চয় আমরা তাকে পেয়েছি সবরকারী হিসাবে, নেয়ামতলাভকারী বান্দা। নিশ্চয় সে (আল্লাহর) অভিমুখী।

৩৮:৪৫
ওয়াযকুর = আর যিকির/ স্মরণ করো। ইবাদানা = আমাদের বান্দা। ইবরাহীমা = ইবরাহীমকে। ওয়া ইসহাক্বা = ও ইসহাককে। ওয়া ইয়া’ক্বূবা = এবং ইয়া’কুবকে। উলিল আয়দি ওয়াল আবসারি = তারা ছিলো কর্মশক্তিসম্পন্ন ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।

আর যিকির/ আলোচনা করো আমাদের বান্দা ইবরাহীম, ইসহাক এবং ইয়া’কুবের ব্যাপারে, তারা ছিলো কর্মশক্তিসম্পন্ন ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন।

৩৮:৪৬
ইন্না = নিশ্চয় আমরা। আখলাসনাহুম = তাদেরকে খালেস/ খাঁটি করে নিয়েছিলাম। বিখালিসাতিন যিকরাদ্দারি = পরকালের ঘরের স্মরণের বিশেষ গুণের কারণে।

নিশ্চয় আমরা তাদেরকে খালেস/ খাঁটি করে নিয়েছিলাম, পরকালের ঘরের স্মরণের বিশেষ গুণের কারণে।

৩৮:৪৭
ওয়া = আর। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। ইনদানা = আমাদের কাছে। লামিনাল মুসতাফায়নিল আখইয়ারি = মনোনীত উত্তম ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত।

আর নিশ্চয় তারা আমাদের কাছে মনোনীত উত্তম ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত।

৩৮:৪৮
ওয়াযকুর = আর যিকির/ স্মরণ করো। ইসমাঈলা = ইসমাইলকে। ওয়াল ইয়াসাআ = ও আল ইয়াসাকে। ওয়া যালকিফলি = ও যুলকিফলকে। ওয়া = আর। কুল্লুম মিন আখইয়ারি = (তাদের) প্রত্যেকে উত্তম ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত।

আর যিকির/ আলোচনা করো ইসমাইল, আল ইয়াসা ও যুলকিফলের ব্যাপারে। আর (তাদের) প্রত্যেকে উত্তম ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত।

৩৮:৪৯
হাযা = ইহা। যিকরুন = যিকির/ স্মরণিকা/ সংবিধান (= আল কুরআন)। ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। লিলমুত্তাক্বীনা = মুত্তাকীদের/ আল্লাহভীরুদের জন্য আছে। লাহুছনা মাআবিন = উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল।

ইহা যিকির/ স্মরণিকা/ সংবিধান (= আল কুরআন)। আর নিশ্চয় মুত্তাকীদের/ আল্লাহভীরুদের জন্য আছে উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল।

৩৮:৫০
জান্নাতি আদনিন = স্থায়ী জান্নাত। মুফাত্তাহাতাল্লাহুমুল আবওয়াবু = খোলা রয়েছে তাদের জন্য দরজাসমূহ।

স্থায়ী জান্নাত। খোলা রয়েছে তাদের জন্য (উহার) দরজাসমূহ।

৩৮:৫১
মুত্তাকিয়ীনা ফীহা = উহাতে তারা হেলান দিয়ে বসবে। ইয়াদঊনা ফীহা = উহাতে তারা চাইবে। বিফাকিহাতিন কাছীরাতিন = অনেক ফলফলাদি। ওয়া = ও। শারাবিন = শরাব/ পানীয়।

উহাতে তারা হেলান দিয়ে বসবে। উহাতে তারা চাইবে অনেক ফলফলাদি ও শরাব/ পানীয়।

৩৮:৫২
ওয়া = আর। ইনদাহুম = তাদের কাছে থাকবে। ক্বাসিরাতুত তরফি = সংকুচিত নয়না। আতরাবুন = সমবয়সী (নারীরা)।

আর তাদের কাছে থাকবে সংকুচিত নয়না সমবয়সী (নারীরা)।

৩৮:৫৩
হাযা = এসব এমন জিনিস। মা তূআদূনা = যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেয়া হচ্ছে। লিইয়াওমিল হিসাবি = ইয়াওমুল হিসাবে/ হিসাব দিবসে।

এসব এমন জিনিস যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেয়া হচ্ছে, (যা তোমাদেরকে দেয়া হবে) ইয়াওমুল হিসাবে/ হিসাব দিবসে।

৩৮:৫৪
ইন্না = নিশ্চয়। হাযা = এসব হচ্ছে। লারিযক্বুনা = আমাদের দেয়া রিযিক। মা লাহু = যার নেই। মিন নাফাদিন = কোন ঘাটতি।

নিশ্চয় এসব হচ্ছে আমাদের দেয়া রিযিক, যার নেই কোন ঘাটতি।

৩৮:৫৫
হাযা = ইহাই। ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। লিত্তগীনা = সীমালংঘনকারীদের জন্য আছে। লাশাররা মাআবিন = নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।

ইহাই। আর নিশ্চয় সীমালংঘনকারীদের জন্য আছে নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।

৩৮:৫৬
জাহান্নামা = জাহান্নাম। ইয়াসলাওনাহা = তারা তাতে পুড়বে। ফাবি’ছাল মিহাদু = সুতরাং কত নিকৃষ্ট তাদের মিহাদ/ আবাস।

জাহান্নাম। তারা তাতে পুড়বে। সুতরাং কত নিকৃষ্ট তাদের মিহাদ/ আবাস।

৩৮:৫৭
হাযা = ইহাই। ফালইয়াযূক্বূহু = সুতরাং তারা তার স্বাদ আস্বাদন করুক। হামীমিন ওয়া গাচ্ছাক্বুন = ফুটন্ত পানি ও কুয়াশাচ্ছন্ন ঠান্ডা পানি।

ইহাই। সুতরাং তারা স্বাদ আস্বাদন করুক ফুটন্ত পানির ও কুয়াশাচ্ছন্ন ঠান্ডা পানির।

৩৮:৫৮
ওয়া = আর। আখারু = অন্যান্য জিনিস। মিন শাকলিহী = উহার সমপর্যায়ের। আযওয়াযুন = জোড়ায় জোড়ায়।

আর অন্যান্য জিনিস যা উহার সমপর্যায়ের জোড়ায় জোড়ায়।

৩৮:৫৯
হাযা = (তারা আরো দলকে আসতে দেখে বলবে) ‘এ হচ্ছে। ফাওজুম মুক্বতাহিমুন = দ্রুত বেগে প্রবেশকারী একটি দল। মাআকুম = তোমাদের সাথে থাকবে। লা মারহাবাম বিহিম = তাদের জন্য কোন মারহাবা/ অভিনন্দন নেই। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। সলুন্নারি = আগুনে পুড়বে।

(তারা আরো দলকে আসতে দেখে বলবে) ‘এ হচ্ছে দ্রুত বেগে প্রবেশকারী একটি দল, তোমাদের সাথে থাকবে। তাদের জন্য কোন মারহাবা/ অভিনন্দন নেই। নিশ্চয় তারা আগুনে পুড়বে।

৩৮:৬০
ক্বলূ = তারা (জবাবে) বলবে। বাল = বরং। আনতুম = তোমরাও (তাতে পুড়বে)। লা মারহাবাম বিকুম = তোমাদের প্রতিও কোন মারহাবা/ অভিনন্দন নেই। আনতুম = তোমরাই। ক্বাদ্দামতুমূহু = উহাকে (= অপরাধের সূত্রপাত) আগেই সম্পন্ন করেছিলে। লানা = আমাদের জন্য। ফাবি’ছাল ক্বারার = সুতরাং কত নিকৃষ্ট এ অবস্থানস্থল।

তারা (জবাবে) বলবে, ‘বরং তোমরাও (তাতে পুড়বে)। তোমাদের প্রতিও কোন মারহাবা/ অভিনন্দন নেই। তোমরাই উহাকে (= অপরাধের সূত্রপাত) আগেই সম্পন্ন করেছিলো আমাদের জন্য। সুতরাং কত নিকৃষ্ট এ অবস্থানস্থল।

৩৮:৬১
ক্বলূ = তারা বলবে। রব্বানা = হে আমাদের রব। মান = যে যে। ক্বাদ্দামা = আগেই (অপরাধের সূত্রপাত) সম্পন্ন করেছিলো। লানা = আমাদের জন্য। হাযা = ইহা। ফাযিদহু = তাকে বাড়িয়ে দিন। আযাবান দি’ফান = দ্বিগুণ আযাব হিসাবে। ফিন্নারি = (জাহান্নামের) আগুনের মধ্যে।

তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব, যে যে আগেই (অপরাধের সূত্রপাত) সম্পন্ন করেছিলো আমাদের জন্য, ইহা তাকে বাড়িয়ে দিন দ্বিগুণ আযাব হিসাবে, (জাহান্নামের) আগুনের মধ্যে।

৩৮:৬২
ওয়া = আর। ক্বলূ = তারা বলবে। মা লানা = আমাদের কী হলো যে। লা নারা = আমরা দেখছি না। রিজালান = সে লোকদেরকে। কুন্না নাউদ্দুহুম = যাদেরকে আমরা গণ্য করতাম। মিনাল আশরারি = অত্যন্ত মন্দদের অন্তর্ভুক্ত হিসাবে।

আর তারা বলবে, ‘আমাদের কী হলো যে, আমরা দেখছি না সে লোকদেরকে যাদেরকে আমরা গণ্য করতাম অত্যন্ত মন্দদের অন্তর্ভুক্ত হিসাবে’।

৩৮:৬৩
আত্তাখাজনাহুম = আমরা তাদেরকে গ্রহণ করতাম। ছিখরিয়্যান = ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্র হিসাবে। আম = নাকি। যাগাত = বিভ্রম হয়েছিলো। আনহুমুল আবসারু = তাদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিসমূহ।

আমরা তাদেরকে গ্রহণ করতাম ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্র হিসাবে। নাকি বিভ্রম হয়েছিলো তাদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিসমূহ।

৩৮:৬৪
ইন্না = নিশ্চয়। যালিকা = ইহা। লাহাক্বক্বুন = সত্য যে। তাখাসুমু = বাদানুবাদ করবে। আহলিন্নারি = (জাহান্নামের) আগুনের অধিবাসীরা।

নিশ্চয় ইহা সত্য যে, বাদানুবাদ করবে (জাহান্নামের) আগুনের অধিবাসীরা।

৩৮:৬৫
ক্বুল = বলো। ইন্নামা = বস্তুত। আনা = আমি। মুনযিরুন = একজন সতর্ককারী। ওয়া = আর। মা মিন ইলাহিন = কোন ইলাহ নেই। ইল্লাল্লাহুল ওয়াহিদুল ক্বাহহারু = আল্লাহ ছাড়া, যিনি ওয়াহিদ/ একজনই এবং ক্বাহহার/ একচ্ছত্র ক্ষমতাধর।

বলো, ‘বস্তুত আমি একজন সতর্ককারী। আর কোন ইলাহ নেই, আল্লাহ ছাড়া, যিনি ওয়াহিদ/ একজনই এবং ক্বাহহার/ একচ্ছত্র ক্ষমতাধর।

৩৮:৬৬
রব্বুছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া মা বায়নাহুমা = আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সেসবের রব। আল আযীযুল গাফফারু = আযীয/ মহাশক্তিমান ও গাফফার/ ক্ষমাশীল।

আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সেসবের রব, তিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও গাফফার/ ক্ষমাশীল।

৩৮:৬৭
ক্বুল = বলো। হুয়া = উহা। নাবাউন আযীমুন = একটি মহাসংবাদ।

বলো, ‘উহা একটি মহাসংবাদ।

৩৮:৬৮
আনতুম = তোমরা। আনহু = উহা থেকে। মু’রিদূনা = বিমুখ।

তোমরা উহা থেকে বিমুখ।

৩৮:৬৯
মা কানা লী = আমার কাছে ছিলো না। মিন ইলমিন = কোন জ্ঞান। বিলমালায়ির আ’লা = ঊর্ধ্বজগতের কর্মচারী প্রশাসনের সম্পর্কে। ইয = যখন। ইয়াখতাসিমূনা = তারা বাদানুবাদ করছিলো।

আমার কাছে ছিল না কোন জ্ঞান ঊর্ধ্বজগতের কর্মচারী প্রশাসনের সম্পর্কে, যখন তারা বাদানুবাদ করছিলো।

৩৮:৭০
ইইঁ ইউহা ইলাইয়া = আমার প্রতি ওহী করা হয় না। ইল্লা = এজন্য ছাড়া। আন্নামা = যে, বস্তুত। আনা নাযীরুম মুবীনুন = আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।

আমার প্রতি ওহী করা হয় না এজন্য ছাড়া যে, বস্তুত আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।

৩৮:৭১
ইয = যখন। ক্বলা রব্বুকা = তোমার রব বলেছিলেন। লিল মালায়িকাতি = মালায়েকাকে/ ফেরেশতাদেরকে উদ্দেশ্য করে। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। খালিক্বুম বাশারাম মিন তীনিন = সৃষ্টি করব মানুষকে মাটি থেকে।

যখন তোমার রব বলেছিলেন মালায়েকাকে/ ফেরেশতাদেরকে উদ্দেশ্য করে, ‘নিশ্চয় আমি সৃষ্টি করব মানুষকে মাটি থেকে।

৩৮:৭২
ফাইযা = তারপর যখন। ছাওয়ায়তুহূ = আমি তাকে সুবিন্যস্ত করবো। ওয়া = আর। নাফাখতু = আমি ফুঁকে দেবো। ফীহি = তার মধ্যে। মির রূহী = আমার রূহ থেকে। ফাক্বঊ লাহু = তখন তোমরা অবনত হবে তার প্রসঙ্গে। ছাজিদীনা = সিজদাকারী হয়ে।

তারপর যখন আমি তাকে সুবিন্যস্ত করবো আর আমি ফুঁকে দেবো তার মধ্যে আমার রূহ থেকে, তখন তোমরা অবনত হবে তার প্রসঙ্গে সিজদাকারী হয়ে।

৩৮:৭৩
ফাছাদাল মালাইকাতু = তারপর (যথাসময়ে নির্দেশ পেয়ে) সিজদা করেছিলো মালায়েকা/ ফেরেশতাগণ। কুল্লুহুম আজমাঊনা = তাদের প্রত্যেকে একত্রে।

তারপর (যথাসময়ে নির্দেশ পেয়ে) সিজদা করেছিলো মালায়েকা/ ফেরেশতাগণ তাদের প্রত্যেকে একত্রে।

৩৮:৭৪
ইল্লা ইবলীসা = ইবলিস ছাড়া। ইছতাকবারা = সে অহংকার করেছিলো। ওয়া = আর। কানা মিনাল কাফিরীনা = সে হয়ে গেলো কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত।

ইবলিস ছাড়া। সে অহংকার করেছিলো, আর সে হয়ে গেলো কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত।

৩৮:৭৫
ক্বলা = তিনি (= আল্লাহ) বলেছিলেন। ইয়া ইবলীসু = হে ইবলিস। মা মানাআকা = কে তোমাকে মানা/ বারণ করেছে। আন তাছজুদা = যেন না তুমি সিজদা করো। লিমা খালাক্বতু বিইয়াদাইয়া = তার প্রসঙ্গে যাকে আমি সৃষ্টি করেছি আমার দুহাত দ্বারা। আছতাকবারতা = তুমি কি অহংকার করেছো? আম = নাকি। কুনতা মিনাল আলীনা = তুমি উচ্চমর্যাদাসম্পন্নদের অন্তর্ভুক্ত?

তিনি (= আল্লাহ) বলেছিলেন, ‘হে ইবলিস, কে তোমাকে মানা/ বারণ করেছে যেন না তুমি সিজদা করো তার প্রসঙ্গে যাকে আমি সৃষ্টি করেছি আমার দুহাত দ্বারা? তুমি কি অহংকার করেছো নাকি তুমি উচ্চমর্যাদাসম্পন্নদের অন্তর্ভুক্ত?

৩৮:৭৬
ক্বলা = সে (জবাবে) বলেছিলো। আনা = আমি। খায়রুম মিনহু = তার চেয়ে উত্তম। খালাক্বতানী = আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। মিন নারিন = আগুন থেকে। ওয়া = আর। খালাক্বতাহু = আপনি তাকে সৃষ্টি করেছেন। মিন ত্বীনিন = মাটি থেকে।

সে (জবাবে) বলেছিলো, ‘আমি তার চেয়ে উত্তম। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন আগুন থেকে আর আপনি তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে’।

৩৮:৭৭
ক্বলা = তিনি (= আল্লাহ) বলেছিলেন। ফাখরুজ = সুতরাং বেরিয়ে যাও। মিনহা = উহা থেকে (= জান্নাত থেকে)। ফাইন্নাকা = নিশ্চয় তুমি। রাজীমুন = রজীম/ বিতাড়িত।

তিনি (= আল্লাহ) বলেছিলেন, ‘সুতরাং বেরিয়ে যাও উহা থেকে (= জান্নাত থেকে)। নিশ্চয় তুমি রাজীম/ বিতাড়িত।

৩৮:৭৮
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। আলাইকা = তোমার উপর। লা’নাতী = আমার লা’নত/ অভিশাপ। ইলা ইয়াওমিদ দ্বীনি = ইয়াওমুদ দ্বীন/ বিচার দিবস পর্যন্ত।

আর নিশ্চয় তোমার উপর আমার লা’নত/ অভিশাপ ইয়াওমুদ দ্বীন/ বিচার দিবস পর্যন্ত।

৩৮:৭৯
ক্বলা = সে বলেছিলো। রব্বী = হে আমার রব। ফানযিরনী = আমাকে অবকাশ দিন। ইলা ইয়াওমি ইউবআছূনা = পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।

সে বলেছিলো, ‘হে আমার রব, আমাকে অবকাশ দিন পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।

৩৮:৮০
ক্বলা = তিনি (= আল্লাহ) বলেছিলেন। ফাইন্নাকা = তাহলে নিশ্চয় তুমি। মিনাল মুনযরীনা = অবকাশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।

তিনি (= আল্লাহ) বলেছিলেন, ‘তাহলে নিশ্চয় তুমি অবকাশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত’।

৩৮:৮১
ইলা ইয়াওমাল ওয়াক্বতিল মা’লূমি = সেদিন পর্যন্ত যার ওয়াক্ত/ সময় সুপরিজ্ঞাত।

সেদিন পর্যন্ত যার ওয়াক্ত/ সময় সুপরিজ্ঞাত।

৩৮:৮২
ক্বলা = সে বলেছিলো। ফাবিইযযাতিকা = আপনার ইজ্জতের/ সম্মানের কসম। লাউগভিয়ান্নাহুম আজমাঈনা = অবশ্যই আমি তাদের সবাইকে বিভ্রান্ত করবো।

সে বলেছিলো, ‘আপনার ইজ্জতের/ সম্মানের কসম, অবশ্যই আমি তাদের সবাইকে বিভ্রান্ত করবো।

৩৮:৮৩
ইল্লা ইবাদাকা মিনহুমুল মুখলাসীনা = তাদের মধ্য থেকে আপনার খালেস/ খাঁটি বান্দাদেরকে ছাড়া।

তাদের মধ্য থেকে আপনার খালেস/ খাঁটি বান্দাদেরকে ছাড়া।

৩৮:৮৪
ক্বলা = তিনি (= আল্লাহ) বলেছিলেন। ফালহাক্বক্বু = তবে ইহাই হক্ব/ সত্য। ওয়াল হাক্বক্বা আক্বূলু = আর আমি সত্যই বলি।

তিনি (= আল্লাহ) বলেছিলেন, ‘তবে ইহাই হক্ব/ সত্য। আর আমি সত্যই বলি’।

৩৮:৮৫
লাআমলাআন্না = আমি অবশ্যই পূর্ণ করবো। জাহান্নামা = জাহান্নামকে। মিনকা = তোমাকে দ্বারা। ওয়া = আর। মিম্মান তাবিয়াকা মিনহুম আজমাঈনা = তাদের মধ্য থেকে যারা তোমাকে ইত্তেবা/ অনুসরণ করবে তাদের সবাইকে দ্বারা।

আমি অবশ্যই পূর্ণ করবো জাহান্নামকে তোমাকে দ্বারা এবং তাদের মধ্য থেকে যারা তোমাকে ইত্তেবা/ অনুসরণ করবে তাদের সবাইকে দ্বারা।

৩৮:৮৬
ক্বুল = বলো। মা আছআলুকুম = আমি চাই না। আলাইহি = উহার ব্যাপারে (= কুরআন প্রচারের ব্যাপারে)। মিন আজরিন = কোন মজুরি/ পারিশ্রমিক। ওয়া = আর। মা আনা = আমি নই। মিনাল মুতাকাল্লিফীনা = মিথ্যা দাবিদারদের অন্তর্ভুক্ত।
বলো, ‘আমি চাই না উহার ব্যাপারে (= কুরআন প্রচারের ব্যাপারে) কোন মজুরি/ পারিশ্রমিক আর আমি নই মিথ্যা দাবিদারদের অন্তর্ভুক্ত।

৩৮:৮৭
ইন হুয়া = উহা নয়। ইল্লা যিকরুল্লিল আলামীনা = বিশ্ববাসীর জন্য যিকির/ স্মরণিকা/ সংবিধান ছাড়া অন্য কিছু।
উহা (= আল কুরআন) নয় বিশ্ববাসীর জন্য যিকির/ স্মরণিকা/ সংবিধান ছাড়া অন্য কিছু।

৩৮:৮৮
ওয়া = আর। লাতা’লামুন্না = তোমরা অবশ্যই জানবে। নাবাআহু = উহার সংবাদ। বা’দা হীনিন = কিছুকাল পরেই।
আর তোমরা অবশ্যই জানবে উহার সংবাদ কিছুকাল পরেই।