কুরআনান আ'জাবান

বিস্ময়কর কুরআন

শব্দার্থ ভিত্তিক বাংলা অনুবাদ, তৈয়াবুর রহমান গোপালগঞ্জী

Quranan Ajaban Cover

035. সূরা ফাতির

হে আমার প্রভু, আপনার কাছে আশ্রয় চাই শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে, আশ্রয় চাই এর উপস্থিতি থেকে। পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু সর্বশক্তিমানের নামে।

৩৫:১ 

আলহামদুলিল্লাহি = আলহামদুলিল্লাহ/ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। ফাতিরিছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি = যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা। জায়িলিল মালায়িকাতি রুসুলান = তিনি মালাইকাকে/ ফেরেশতাদেরকে রসূল/ দূত হিসাবে নিয়োগকারী। ঊলী আজনিহাতিম মাছনা ওয়া ছুলাছা ওয়া রুবাআ = যারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার বাহু (= কর্মের মাত্রা উপযোগী শক্তি) বিশিষ্ট। ইয়াযীদুল ফিল খালক্বি = তিনি সৃষ্টিতে বাড়িয়ে দেন। মা ইয়াশাউ = যা তিনি ইচ্ছা করেন। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর = সকল সত্তা ও বিষয়ের উপর প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী। 

আলহামদুলিল্লাহ/ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা। তিনি মালাইকাকে/ ফেরেশতাদেরকে রসূল/ দূত হিসাবে নিয়োগকারী; যারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার বাহু (= কর্মের মাত্রা উপযোগী শক্তি) বিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টিতে বাড়িয়ে দেন যা তিনি ইচ্ছা করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সকল সত্তা ও বিষয়ের উপর প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী। 

৩৫:২ 

মা ইয়াফতাহিল্লাহু = যা কিছু আল্লাহ খুলে দেন। লিন্নাছি = মানুষের জন্য। মির রহমাতিন = তাঁর রহমত/ দয়া থেকে। ফালা মুমছিকা লাহা = তবে উহার জন্য কোন রোধকারী নেই। ওয়া = আর। মা ইউমছিকু = যা কিছু তিনি রোধ করে দেন। ফালা মুরছিলু লাহু মিম বা’দিহী = তবে উহার কোন প্রেরণকারী নেই তাঁর পরে (অর্থাৎ তিনি ছাড়া)। ওয়া = আর। হুয়াল আযীযুল হাকীমু = তিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও হাকীম/ মহাবিজ্ঞ। 

যা কিছু আল্লাহ খুলে দেন মানুষের জন্য তাঁর রহমত/ দয়া থেকে, তবে উহার জন্য কোন রোধকারী নেই। আর যা কিছু তিনি রোধ করে দেন, তবে উহার কোন প্রেরণকারী নেই তাঁর পরে (অর্থাৎ তিনি ছাড়া)। আর তিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও হাকীম/ মহাবিজ্ঞ। 

৩৫:৩ 

ইয়া আইয়ুহান্নাছুযকুরূ = হে মানুষ, তোমরা স্মরণ করো। নি’মাতাল্লাহি আলাইকুম = তোমাদের উপর দেয়া আল্লাহর নেয়ামতসমূহকে। হাল মিন খালিক্বিন = কোন খালেক/ স্রষ্টা আছে কি? গায়রুল্লাহি = আল্লাহ ছাড়া। ইয়ারযুক্বুকুম = তিনি তোমাদেরকে রিযিক দেন। মিনাছ ছামায়ি ওয়াল আরদি = আকাশ ও পৃথিবী থেকে। লা ইলাহা ইল্লা হুয়া = কোন ইলাহ নেই, তিনি ছাড়া। ফাআন্না তু’ফাকূনা = সুতরাং তোমাদেরকে কোথা থেকে ধোঁকা দেয়া হচ্ছে? 

হে মানুষ, তোমরা স্মরণ করো তোমাদের উপর দেয়া আল্লাহর নেয়ামতসমূহকে। কোন খালেক/ স্রষ্টা আছে কি, আল্লাহ ছাড়া? তিনি তোমাদেরকে রিযিক দেন আকাশ ও পৃথিবী থেকে। কোন ইলাহ নেই, তিনি ছাড়া। সুতরাং তোমাদেরকে কোথা থেকে ধোঁকা দেয়া হচ্ছে? 

৩৫:৪ 

ওয়া = আর। ইইঁ ইউকাযযিবূকা = যদি তারা তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে। ফাক্বাদ = তাহলে নিশ্চয়। কুযযিবাত = মিথ্যা সাব্যস্ত করা হয়েছিলো। রুসুলিম মিন ক্বাবলিকা = রসূলদেরকে, তোমার আগেও। ওয়া = আর। ইলাল্লাহি = আল্লাহরই দিকে। তুরজাউল উমূরু = ফিরিয়ে নেয়া হবে সমস্ত বিষয়াবলী/ কার্যাবলী। 

আর যদি তারা তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে, তাহলে নিশ্চয় মিথ্যা সাব্যস্ত করা হয়েছিলো রসূলদেরকে, তোমার আগেও। আর আল্লাহরই দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে সমস্ত বিষয়াবলী/ কার্যাবলী। 

৩৫:৫ 

ইয়া আইয়ুহান্নাছু = হে মানুষ। ইন্না = নিশ্চয়। ওয়া’দাল্লাহি = আল্লাহর ওয়াদা। হাক্বক্বুন = হক্ব/ সত্য। ফালা তাগুররান্নাকুমুল হায়াতুদ দুনইয়া = সুতরাং তোমাদেরকে যেন ধোঁকায় না ফেলে হায়াতুদ দুনিয়া/ পার্থিব জীবন। ওয়া = আর। লা ইয়াগুররান্নাকুম = তোমাদেরকে যেন ধোঁকায় না ফেলে। বিল্লাহিল গারূরু = আল্লাহর ব্যাপারে কোন ধোঁকাবাজ। 

হে মানুষ, ‘নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা হক্ব/ সত্য। সুতরাং তোমাদেরকে যেন ধোঁকায় না ফেলে হায়াতুদ দুনিয়া/ পার্থিব জীবন। আর তোমাদেরকে যেন ধোঁকায় না ফেলে আল্লাহর ব্যাপারে কোন ধোঁকাবাজ। 

৩৫:৬ 

ইন্নাশ শায়তানা = নিশ্চয় শয়তান। লাকুম = তোমাদের জন্য। আদুউউন = শত্রু। ফাত্তাখিজূহু = সুতরাং তাকে গ্রহণ করো। আদুউআন = শত্রু হিসাবে। ইন্নামা = নিশ্চয়। ইয়াদঊ = সে ডাকে। হিজবাহু = তার বাহিনীকে। লিইয়াকূনূ = যেন তারা হয়। মিন আসহাবিছ ছায়ীরি = আসহাবে সায়ীর (= যারা উত্তপ্ত আগুনে শাস্তি পাবে)। 

নিশ্চয় শয়তান তোমাদের জন্য শত্রু। সুতরাং তাকে গ্রহণ করো শত্রু হিসাবে। নিশ্চয় সে ডাকে তার বাহিনীকে, যেন তারা হয় আসহাবে সায়ীর (= যারা উত্তপ্ত আগুনে শাস্তি পাবে)। 

৩৫:৭ 

আল্লাযীনা = যারা। কাফারূ = কুফর করেছে। লাহুম = তাদের জন্য আছে। আযাবুন শাদীদুন = আযাবুন শাদীদ/ কঠোর শাস্তি। ওয়াল্লাযীনা = আর যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ওয়া = আর। আমিলুস সলিহাতি = আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে। লাহুম = তাদের জন্য আছে। মাগফিরাতুওঁ ওয়া আজরুন কাবীরুন = মাগফিরাত/ ক্ষমা ও বড় ধরনের পুরস্কার। 

যারা কুফর করেছে তাদের জন্য আছে আযাবুন শাদীদ/ কঠোর শাস্তি। আর যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে আর আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য আছে মাগফিরাত/ ক্ষমা ও বড় ধরনের পুরস্কার। 

৩৫:৮ 

আফামান যুইয়িনা লাহু ছূউ আমালিহী = তবে যার জন্য সুশোভিত করা হয়েছে তার মন্দ কাজকে। ফারাআহু হাছানান = তারপর সে উহাকে দেখে উত্তম কাজ হিসাবে (সে কি হিদায়াত পেতে পারে?)। ফাইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। ইউদিল্লু = বিভ্রান্ত করেন। মাইঁ ইয়াশাউ = যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। ওয়া = আর। ইয়াহদী = তিনি হিদায়াত করেন। মাইঁ ইয়াশাউ = যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। ফালা তাযহাব নাফসুকা = সুতরাং তোমার নাফস/ খোদ সত্তা যেন চলে না যায় (= তুমি যেন প্রাণ বিসর্জন না দাও)। আলাইহিম = তাদের জন্য। হাছারাতান = আফসোস করে। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। আলীমুম বিমা ইয়াসনাঊনা = উহা জানেন যা তারা তৈরি করছে। 

তবে যার জন্য সুশোভিত করা হয়েছে তার মন্দ কাজকে, তারপর সে উহাকে দেখে উত্তম কাজ হিসাবে (সে কি হিদায়াত পেতে পারে?)। নিশ্চয় আল্লাহ বিভ্রান্ত করেন যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। আর তিনি হিদায়াত করেন যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। সুতরাং তোমার নাফস/ খোদ সত্তা যেন চলে না যায় (= তুমি যেন প্রাণ বিসর্জন না দাও) তাদের জন্য আফসোস করে। নিশ্চয় আল্লাহ উহা জানেন যা তারা তৈরি করছে। 

৩৫:৯ 

ওয়াল্লাহুল্লাযী = আর আল্লাহই সেই সত্তা যিনি। আরছালার রীআহা = বাতাস প্রেরণ করেন। ফাতুছীরু = তারপর উহা উঠায়। ছাহাবান = মেঘমালাকে। ফাছুক্বনাহু = তারপর আমরা উহাকে চালিয়ে দিই। ইলা বালাদিম মাইয়িতিম = মৃত/ শুষ্ক ভূখন্ডের দিকে। ফাআহইয়ায়না = তারপর আমরা সঞ্জীবিত/ প্রাণবন্ত করি। বিহিল আরদি = উহা দ্বারা জমিনকে। বা’দা মাওতিহা = উহার মৃত্যুর/ শুষ্কতার পর। কাযালিকান নুশূরু = এভাবেই নশর/ পুনরুত্থান হবে। 

আর আল্লাহই সেই সত্তা যিনি বাতাস প্রেরণ করেন। তারপর উহা উঠায় মেঘমালাকে। তারপর আমরা (= আল্লাহ) উহাকে চালিয়ে দিই মৃত/ শুষ্ক ভূখন্ডের দিকে। তারপর আমরা (= আল্লাহ) সঞ্জীবিত/ প্রাণবন্ত করি উহা দ্বারা জমিনকে উহার মৃত্যুর/ শুষ্কতার পর। এভাবেই নশর/ পুনরুত্থান হবে। 

৩৫:১০ 

মান = যে। কানা ইউরীদুল ইজ্জাতা = এরাদা/ ইচ্ছা করে ইজ্জত/ সম্মান পেতে। ফালিল্লাহিল ইজ্জাতু জামীআ = তাহলে সমস্ত ইজ্জত তো আল্লাহরই কর্তৃত্বাধীন। ইলাইহি ইয়াসআদুল কালিমুত তইয়িবু = তাঁর দিকে উঠে যায় কালিমুত তইয়েব/ পবিত্র বাক্য। ওয়াল আমিলুস সলিহু = আর আমলে সালেহ/ সৎকর্ম। ইয়ারফাউহূ = তাকে মর্যাদায় সমুন্নত করে। ওয়াল্লাযীনা = আর যারা। ইয়ামকুরূনাছ ছাইয়িয়াতি = মন্দ মকর/ কৌশল করে। লাহুম = তাদের জন্য আছে। আযাবুন শাদীদুন = আযাবুন শাদীদ/ কঠোর শাস্তি। ওয়া = আর। মাকারু উলায়িকা = তাদের মকর/ কৌশল। হুয়া = উহা তো। ইয়াবূরু = ব্যর্থ হবে। 

যে এরাদা/ ইচ্ছা করে ইজ্জত/ সম্মান পেতে, তাহলে সমস্ত ইজ্জত তো আল্লাহরই কর্তৃত্বাধীন। তাঁর দিকে উঠে যায় কালিমুত তইয়েব/ পবিত্র বাক্য, আর আমলে সালেহ/ সৎকর্ম তাকে (= যিনি আমলে সালেহ করেন তাকে) মর্যাদায় সমুন্নত করে। আর যারা মন্দ মকর/ কৌশল করে, তাদের জন্য আছে আযাবুন শাদীদ/ কঠোর শাস্তি। আর তাদের মকর/ কৌশল, উহা তো ব্যর্থ হবে। 

৩৫:১১ 

ওয়াল্লাহু = আর আল্লাহ। খালাক্বাকুম = তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। মিন তুরাবিন = মাটি থেকে। ছুম্মা = তারপর। মিন নুতফাতিন = শুক্রবিন্দু থেকে। ছুম্মা = তারপর। জাআলাকুম = তোমাদেরকে পরিণত করেছেন। আযওয়াযান = জোড়ায়। ওয়া = আর। মা তাহমিলু = গর্ভধারণ করে না। মিন উনছা = কোন নারী। ওয়া = আর। লা তাদাউ = প্রসবও করে না (কোন নারী)। ইল্লা বিইলমিহী = তাঁর ইলম/ জ্ঞান অনুযায়ী ছাড়া। ওয়া = আর। মা ইউআম্মারু = আয়ু পায় না। মিম মুয়াম্মারিন = কোন আয়ুপ্রাপ্ত ব্যক্তি। ওয়া = আর। লা ইউনক্বাসু মিন উমরিহী = তার আয়ু থেকে আয়ু কমে না। ইল্লা ফী কিতাবিন = কিতাব অনুযায়ী ছাড়া। ইন্না = নিশ্চয়। যালিকা = উহা। আলাল্লাহি = আল্লাহর উপর। ইয়াছীরুন = সহজ। 

আর আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, তারপর শুক্রবিন্দু থেকে, তারপর তোমাদেরকে পরিণত করেছেন জোড়ায়। আর গর্ভধারণ করে না কোন নারী আর প্রসবও করে না (কোন নারী), তাঁর ইলম/ জ্ঞান অনুযায়ী ছাড়া। আর আয়ু পায় না কোন আয়ুপ্রাপ্ত ব্যক্তি আর তার আয়ু থেকে আয়ু কমে না, কিতাব অনুযায়ী ছাড়া। নিশ্চয় উহা আল্লাহর উপর সহজ। 

৩৫:১২ 

ওয়া = আর। মা ইয়াছতাভিল বাহরানি = সমান নয় দুই সাগর। হাযা = ইহা। আযবুন = সুমিষ্ট। ফুরাতুন = পিপাসা নিবারক। ছায়িগুন = সুপেয়। শারাবুহু = উহার পানীয়। ওয়া = আর। হাযা = ইহা। মিলহুন = লোনা। উজাজুন = তিক্ত। ওয়া = আর। মিন কুল্লিন = প্রত্যেকটি থেকে। তা’কুলূনা = তোমরা খেয়ে থাকো। লাহমান তরিয়্যান = তাজা/ টাটকা গোশত (= মাছ)। ওয়া = আর। তাছতাখরিজূনা = তোমরা বের করে থাক। হিলইয়াতান = অলংকার। তালবাছূনাহা = যা তোমরা লেবাসে/ পোশাকে পরে থাকো। ওয়া = আর। তারাল ফুলকা = তুমি দেখো যে, নৌযান/ জলযান/ জাহাজসমূহ। ফীহি = উহার মধ্যে। মাওয়াখিরা = পানি বিদীর্ণ করে চলে। লিতাবতাগূ = যেন তোমরা তালাশ করতে পার। মিন ফাদলিহী = তাঁর ফযল/ অনুগ্রহ থেকে। ওয়া = আর। লাআল্লাকুম = যেন তোমরা। তাশকুরূনা = শোকর/ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো। 

আর সমান নয় দুই সাগর। ইহা সুমিষ্ট, পিপাসা নিবারক, সুপেয় উহার পানীয়। আর ইহা লোনা, তিক্ত। আর প্রত্যেকটি থেকে তোমরা খেয়ে থাকো তাজা/ টাটকা গোশত (= মাছ), আর তোমরা বের করে থাক অলংকার, যা তোমরা লেবাসে/ পোশাকে পরে থাকো। আর তুমি দেখো যে, নৌযান/ জলযান/ জাহাজসমূহ উহার মধ্যে পানি বিদীর্ণ করে/ পানি চিরে চলে, যেন তোমরা তালাশ করতে পার তাঁর ফযল/ অনুগ্রহ থেকে আর যেন তোমরা শোকর/ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো। 

৩৫:১৩ 

ইউলিজুল্লাইলা = তিনি প্রবেশ করান রাতকে। ফিন্নাহারি = দিনের মধ্যে। ওয়া = আর। ইউলিজুন্নাহারা = তিনি প্রবেশ করান দিনকে। ফিল্লাইলি = রাতের মধ্যে। ওয়া = আর। ছাখখারাশ শামছা = তিনি নিয়োজিত করেছেন সূর্যকে। ওয়াল ক্বামারা = ও চন্দ্রকে। কুল্লুইঁ ইয়াজরী = প্রত্যেকেই চলছে। লিআজালিম মুসাম্মা = আজালুম মুসাম্মা/ সুনির্দিষ্ট শেষ সময়সীমার দিকে। যালিকুমুল্লাহু = আল্লাহই। রব্বুকুম = তোমাদের রব। লাহুল মুলকু = তাঁরই কর্তৃত্বাধীন সমস্ত মুলক/ আধিপত্য। ওয়াল্লাযী = আর যাকে যাকে। তাদঊনা = তোমরা ডাকো। মিন দূনিহী = তাঁকে ছাড়া। মা ইয়ামলিকূনা = তারা ক্ষমতা রাখে না। মিন ক্বিতমীরিন = খেজুরের আঁটির পর্দা পরিমাণও। 

তিনি প্রবেশ করান রাতকে দিনের মধ্যে আর তিনি প্রবেশ করান দিনকে রাতের মধ্যে। আর তিনি নিয়োজিত করেছেন সূর্যকে ও চন্দ্রকে। প্রত্যেকেই চলছে আজালুম মুসাম্মা/ সুনির্দিষ্ট শেষ সময়সীমার দিকে। আল্লাহই তোমাদের রব। তাঁরই কর্তৃত্বাধীন সমস্ত মুলক/ আধিপত্য। আর যাকে যাকে তোমরা ডাকো, তাঁকে ছাড়া; তারা ক্ষমতা রাখে না খেজুরের আঁটির পর্দা পরিমাণও। 

৩৫:১৪ 

ইন = যদি। তাদঊহুম = তোমরা তাদেরকে ডাকো। লা ইয়াছমাউ = তারা শুনবে না। দুআআকুম = তোমাদের দোয়া/ ডাক। ওয়া = আর। লাও = যদি। ছামিঊ = তারা শুনতো তবুও। মাছতাজাবূ = তারা জবাব দিতে পারতো না। লাকুম = তোমাদের ডাকে। ওয়া = আর। ইয়াওমাল ক্বিয়ামাতি = ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে। ইয়াকফুরূনা = তারা কুফর/ অস্বীকার করবে। বিশিরকিহিম = তাদের শিরককে। ওয়া = আর। লা ইউনাব্বিউকা = কেউ তোমাকে সংবাদ জানাতে পারে না। মিছলু খাবীরিন = যিনি সবকিছুর খবর রাখেন সেই সত্তার (= আল্লাহর) মতো। 

যদি তোমরা তাদেরকে ডাকো তবু তারা শুনবে না তোমাদের দোয়া/ ডাক। আর যদি তারা শুনতো তবুও তারা জবাব দিতে পারতো না তোমাদের ডাকে। আর ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে তারা (= যাদেরকে শরিক মনে করা হতো তারা) কুফর/ অস্বীকার করবে তাদের শিরককে (= যারা শরিক করতো তাদের শিরকপূর্ণ কাজকে)। আর কেউ তোমাকে সংবাদ জানাতে পারে না যিনি সবকিছুর খবর রাখেন সেই সত্তার (= আল্লাহর) মতো। 

৩৫:১৫ 

ইয়া আইয়ুহান্নাছু = হে মানুষ। আনতুমুল ফুক্বারাআ = তোমরাই ফকীর/ মুখাপেক্ষী। ইলাল্লাহি = আল্লাহর কাছে। ওয়াল্লাহু = আর আল্লাহ। হুয়াল গানিয়্যুল হামীদু = তিনিই গণি/ অভাবমুক্ত ও হামীদ/ প্রশংসিত। 

হে মানুষ, তোমরাই ফকীর/ মুখাপেক্ষী আল্লাহর কাছে। আর আল্লাহ, তিনিই গণি/ অভাবমুক্ত ও হামীদ/ প্রশংসিত। 

৩৫:১৬ 

ইইঁ ইয়াশা’ = যদি তিনি ইচ্ছা করেন। ইউযহিবকুম = তাহলে তিনি তোমাদেরকে সরিয়ে দিবেন। ওয়া = আর। ইয়া’তি = তিনি নিয়ে আসবেন। বিখালক্বিন জাদীদিন = নতুন কোন সৃষ্টিকে। 

যদি তিনি ইচ্ছা করেন তাহলে তিনি তোমাদেরকে সরিয়ে দিবেন আর তিনি নিয়ে আসবেন নতুন কোন সৃষ্টিকে। 

৩৫:১৭ 

ওয়া = আর। মা যালিকা = উহা নয়। আলাল্লাহি = আল্লাহর উপর। বিআযীযিন = কঠিন কিছু। 

আর উহা নয় আল্লাহর উপর কঠিন কিছু। 

৩৫:১৮ 

ওয়া = আর। লা তাযিরু = বোঝা বহন করবে না। ওয়াযিরাতুওঁ ওয়িযরা উখরা = কোন বোঝা বহনকারী অন্য কারো বোঝা। ওয়া = আর। ইন = যদি। তাদউ = ডাকে। মুছক্বালাতুন = কোন ভারাক্রান্ত ব্যক্তি। ইলা হিমলিহা = তার বোঝা বহনের দিকে। লা ইউহমাল = তবুও বহন করা হবে না। মিনহু = তার পক্ষ থেকে। শাইয়ুন = কিছুমাত্রও। ওয়া লাও = যদিও। কানা = হয়ে থাকুক। যা ক্বুরবা = কোন নিকট আত্মীয়। ইন্নামা = নিশ্চয়। তুনযিরুল্লাযীনা = তুমি তাদেরকেই সতর্ক করতে পারো যারা। ইয়াখশাওনা = ভয় করে। রব্বাহুম = তাদের রবকে। বিল গায়বি = অদেখা সত্ত্বেও। ওয়া = আর। আক্বামুস সালাতা = সালাত কায়েম/ প্রতিষ্ঠা করে। ওয়া = আর। মান = যে। তাযাক্কা = নিজেকে পরিশুদ্ধ করে। ফাইন্নামা = তবে নিশ্চয়। ইয়াতাযাক্কা = সে নিজেকে পরিশুদ্ধ হয়। লিনাফসিহী = তার নিজেরই কল্যাণের জন্য। ওয়া = আর। ইলাল্লাহিল মাসীরু = আল্লাহরই কাছে প্রত্যাবর্তন/ ফিরে আসা। 

আর বোঝা বহন করবে না কোন বোঝা বহনকারী অন্য কারো বোঝা। আর যদি ডাকে কোন ভারাক্রান্ত ব্যক্তি তার বোঝা বহনের দিকে, তবুও বহন করা হবে না তার পক্ষ থেকে কিছুমাত্রও, যদিও হয়ে থাকুক কোন নিকট আত্মীয়। নিশ্চয় তুমি তাদেরকেই সতর্ক করতে পারো যারা ভয় করে তাদের রবকে অদেখা সত্ত্বেও, আর সালাত কায়েম/ প্রতিষ্ঠা করে। আর যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, তবে নিশ্চয় সে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে তার নিজেরই কল্যাণের জন্য। আর আল্লাহরই কাছে প্রত্যাবর্তন/ ফিরে আসা। 

৩৫:১৯ 

ওয়া মা ইয়াছতাভিল আ’মা ওয়াল বাসীরু = আর সমান নয় অন্ধ ও চক্ষুষ্মান। 

আর সমান নয় অন্ধ ও চক্ষুষ্মান। 

৩৫:২০ 

ওয়া লায যুলুমাতু ওয়া লান্নূরু = আর না যুলুমাত/ অন্ধকারসমূহ ও না নূর/ আলো (একটি অন্যটির সমান)। 

আর না যুলুমাত/ অন্ধকারসমূহ আর না নূর/ আলো (একটি অন্যটির সমান)। 

৩৫:২১ 

ওয়া লায যিল্লু ওয়া লাল হারীরু = আর না ছায়া আর না রোদ (একটি অন্যটির সমান)। 

আর না ছায়া আর না রোদ (একটি অন্যটির সমান)। 

৩৫:২২ 

ওয়া মা ইয়াছতাভিল আহইয়াআ ওয়া লা আমূতু = আর না সমান জীবিতগণ ও না মৃতগণ (একে অপরের সমান)। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। ইউছমিউ = শুনান। মাইঁ ইয়াশাউ = যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। ওয়া = আর। মা আনতা = তুমি নও। বিমুছমিয়িন = শুনাতে সক্ষম। মান ফিল ক্বুবূরি = তাদেরকে যারা কবরে আছে। 

আর না সমান জীবিতগণ ও না মৃতগণ (একে অপরের সমান)। নিশ্চয় আল্লাহ শুনান, যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। আর তুমি নও শুনাতে সক্ষম তাদেরকে যারা কবরে আছে। 

৩৫:২৩ 

ইন আনতা ইল্লা নাযীরুন = তুমি তো কিছু নও একজন নাযীর/ সতর্ককারী ছাড়া। 

তুমি তো কিছু নও একজন নাযীর/ সতর্ককারী ছাড়া। 

৩৫:২৪ 

ইন্না আরছালনাকা = নিশ্চয় আমরা তোমাকে প্রেরণ করেছি। বিল হাক্বক্বি = সত্যসহ। বাশীরাওঁ ওয়া নাযীরান = বাশীর/ সুসংবাদদাতা ও নাযীর/ সতর্ককারীরূপে। ওয়া = আর। ইম মিন উম্মাতিন = কোন উম্মাত নেই। ইলা খালা ফীহা নাযীরুন = এছাড়া যে অতিক্রম করেছে তার মধ্যে নাযীর/ সতর্ককারী (= প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে সতর্ককারী ছিলো)। 

নিশ্চয় আমরা তোমাকে প্রেরণ করেছি সত্যসহ বাশীর/ সুসংবাদদাতা ও নাযীর/ সতর্ককারীরূপে। আর কোন উম্মাত নেই, এছাড়া যে, অতিক্রম করেছে তার মধ্যে নাযীর/ সতর্ককারী (= প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে সতর্ককারী ছিলো)। 

৩৫:২৫ 

ওয়া = আর। ইইঁ ইউকাযযিবূকা = যদি তারা তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে। ফাক্বাদ = তাহলে নিশ্চয়। কাযযাবাল্লাযীনা মিন ক্বাবলিহিম = তারাও মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো যারা ছিলো তাদের আগে। জাআতহুম = তাদের কাছে এসেছিলো। রুসুলুহুম = তাদের (জন্য প্রেরিত) রসূলগণ। বিল বাইয়িনাতি = বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণসহ। ওয়া = আর। বিয যুবুরি = যবূরসমূহ/ পুস্তিকাসমূহসহ। ওয়া = আর। বিল কিতাবিল মুনীরি = আলোময় কিতাবসহ। 

আর যদি তারা তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে, তাহলে নিশ্চয় তারাও মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো যারা ছিলো তাদের আগে। তাদের কাছে এসেছিলো তাদের (জন্য প্রেরিত) রসূলগণ বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণসহ, যবূরসমূহ/ পুস্তিকাসমূহসহ আর আলোময় কিতাবসহ। 

৩৫:২৬ 

ছুম্মা = তারপর। আখাযতুল্লাযীনা কাফারূ = আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছিলাম যারা কুফর/ অবিশ্বাস করেছিলো। ফাকায়ফা = সুতরাং কিরূপ। কান = হয়েছিলো। নাকীরি = (আমার দেয়া) শাস্তি। 

তারপর আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছিলাম যারা কুফর/ অবিশ্বাস করেছিলো। সুতরাং কিরূপ হয়েছিলো (আমার দেয়া) শাস্তি! 

৩৫:২৭ 

আলাম তারা = তুমি কি দেখনি। আন্নাল্লাহা = যে, আল্লাহ। আনযালা = নাযিল/ বর্ষণ করেন। মিনাছ ছামায়ি = আকাশ থেকে। মাআন = (বৃষ্টির) পানি। ফাআখরাজনা বিহী = তারপর আমরা বের করি উহার মাধ্যমে। ছামারাতিম মুখতালিফান আলওয়ানুহা = ফলফলাদি যার রং বিভিন্ন। ওয়া = আর। মিনাল জিবালি = পাহাড়সমূহেও আছে। জুদাদুম বীদুওঁ ওয়া হুমরুন = সাদা ও কালো রেখাসমূহ। মুখতালিফুন আলওয়ানুহা = যার রং বিভিন্ন। ওয়া = আর। গারাবীবু ছূদুন = গাঢ় কালো (রেখাও আছে)। 

তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহ নাযিল/ বর্ষণ করেন আকাশ থেকে (বৃষ্টির) পানি, তারপর আমরা বের করি উহার মাধ্যমে ফলফলাদি যার রং বিভিন্ন; আর পাহাড়সমূহেও আছে সাদা ও কালো রেখাসমূহ যার রং বিভিন্ন, আর গাঢ় কালো (রেখাও আছে)? 

৩৫:২৮ 

ওয়া = আর। মিনান্নাছি = মানুষের মধ্যে। ওয়াদ দাওয়াব্বি = আর জীবজন্তুর মধ্যে। ওয়াল আনআমি = আর আনআমের/ গবাদি পশুগুলোর মধ্যেও। মুখতালিফুন আলওয়ানুহু = বিভিন্ন রঙ্গের আছে। কাযালিকা = এরূপই। ইন্নামা = নিশ্চয়। ইয়াখশাল্লাহা = আল্লাহকে ভয় করে। মিন ইবাদিহিল উলামাউ = তাঁর এমন বান্দাদের মধ্য থেকে যারা উলামা/ জ্ঞানে সুস্থির। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। আযীযুন গাফূরুন = আযীয/ মহাশক্তিমান ও গফূর/ ক্ষমাশীল। 

আর মানুষের মধ্যে, জীবজন্তুর মধ্যে আর আনআমের/ গবাদি পশুগুলোর মধ্যেও বিভিন্ন রঙ্গের আছে। এরূপই। নিশ্চয় আল্লাহকে ভয় করে তাঁর এমন বান্দাদের মধ্য থেকে যারা উলামা/ জ্ঞানে সুস্থির। নিশ্চয় আল্লাহ আযীয/ মহাশক্তিমান ও গফূর/ ক্ষমাশীল। 

৩৫:২৯ 

ইন্নাল্লাযীনা = নিশ্চয় যারা। ইয়াতলূনা = তিলাওয়াত/ আবৃত্তি করে। কিতাবাল্লাহি = আল্লাহর কিতাব। ওয়া = আর। আক্বামুস সালাতা = সালাত কায়েম/ প্রতিষ্ঠা করে। ওয়ানফাক্বূ মিম্মা রযাক্বনাহুম = আর ইনফাক/ ব্যয় করে উহা থেকে যা আমরা তাদেরকে রিযিকস্বরূপ দিয়েছি। ছিররাওঁ ওয়া আলানিয়াতান = গোপনে ও প্রকাশ্যে। ইয়ারজূনা = তারাই আশা করতে পারে। তিজারাতাল্লান তাবূরা = এমন তিজারাতের/ ব্যবসায়ের যাতে কখনো লোকসান হবে না। 

নিশ্চয় যারা তিলাওয়াত/ আবৃত্তি করে আল্লাহর কিতাব আর সালাত কায়েম/ প্রতিষ্ঠা করে আর ইনফাক/ ব্যয় করে উহা থেকে যা আমরা তাদেরকে রিযিকস্বরূপ দিয়েছি, গোপনে ও প্রকাশ্যে; তারাই আশা করতে পারে এমন তিজারাতের/ ব্যবসায়ের যাতে কখনো লোকসান হবে না। 

৩৫:৩০ 

লিইউওয়াফফিয়াহুম = যেন তিনি তাদেরকে পূর্ণমাত্রায় দেন। উজূরাহুম = তাদের প্রতিফল। ওয়া = আর। ইয়াজীদাহুম = তাদেরকে বাড়িয়ে দেন। মিন ফাদলিহী = তাঁর ফযল/ অনুগ্রহ থেকে। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। গাফূরুন শাকূরুন = গফূর/ ক্ষমাশীল ও শাকূর/ কৃতজ্ঞতার মূল্যদানকারী। 

যেন তিনি তাদেরকে পূর্ণমাত্রায় দেন তাদের প্রতিফল আর তাদেরকে বাড়িয়ে দেন তাঁর ফযল/ অনুগ্রহ থেকে। নিশ্চয় তিনি গফূর/ ক্ষমাশীল ও শাকূর/ কৃতজ্ঞতার মূল্যদানকারী।  

৩৫:৩১ 

ওয়াল্লাযী = আর যা। আওহায়না = আমরা ওহী করেছি। ইলাইকা = তোমার প্রতি। মিনাল কিতাবি = কিতাব থেকে। হুয়াল হাক্বক্বু = উহা হক্ব/ সত্য। মুসাদ্দিক্বাল্লিমা বায়না ইয়াদায়হি = উহার সামনে যা আছে তার (= পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের) মুসাদ্দিক্ব/ সত্যতা প্রতিপাদনকারী। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। বিইবাদিহী = তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে। লাখাবীরুন বাসীরুন = খাবীর (= যিনি খবর রাখেন) ও বাসীর (= যিনি দৃষ্টি রাখেন)। 

আর যা আমরা ওহী করেছি তোমার প্রতি কিতাব থেকে উহা হক্ব/ সত্য, উহার সামনে যা আছে তার (= পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের) মুসাদ্দিক্ব/ সত্যতা প্রতিপাদনকারী। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে খাবীর (= যিনি খবর রাখেন) ও বাসীর (= যিনি দৃষ্টি রাখেন)। 

৩৫:৩২ 

ছুম্মা = তারপর। আওরাছনাল কিতাবা = আমরা কিতাবের ওয়ারিস করেছি। আল্লাযীনাসতাফায়না = যাদেরকে আমরা মনোনীত করেছি। মিন ইবাদিনা = আমাদের বান্দাদের মধ্য থেকে। ফামিনহুম = তারপর তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে। যালিমুল্লিনাফসিহী = তার নিজের প্রতি যালিম/ অত্যাচারী। ওয়া = আর। মিনহুম = তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে। মুক্বতাসিদুন = মধ্যম পন্থা অবলম্বনকারী। ওয়া = আর। মিনহুম = তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে। ছাবিক্বুম বিল খায়রাতি = কল্যাণকর কাজে সাবেক/ অগ্রগামী। বিইযনিল্লাহি = আল্লাহর অনুমতিক্রমে। যালিকা হুয়াল ফাদলুল কাবীরু = উহাই বড় অনুগ্রহ। 

তারপর আমরা কিতাবের ওয়ারিস করেছি যাদেরকে আমরা মনোনীত করেছি আমাদের বান্দাদের মধ্য থেকে। তারপর তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে তার নিজের প্রতি যালিম/ অত্যাচারী। আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে মধ্যম পন্থা অবলম্বনকারী। আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে কল্যাণকর কাজে সাবেক/ অগ্রগামী, আল্লাহর অনুমতিক্রমে। উহাই বড় অনুগ্রহ। 

৩৫:৩৩ 

জান্নাতু আদনিন = স্থায়ী জান্নাত। ইয়াদখুলূনাহা = তারা উহাতে প্রবেশ করবে। ইউহাল্লাওনা = তাদেরকে অলংকার পরানো হবে। ফীহা = উহাতে। মিন আছাভিরা মিন যাহাবিওঁ ওয়া লু’লুআন = স্বর্ণের ও মুক্তার চুড়ি। ওয়া = আর। লিবাসুহুম ফীহা = উহাতে তাদের লিবাস/ পোশাক হবে। হারীরুন = রেশমের। 

স্থায়ী জান্নাত, তারা উহাতে প্রবেশ করবে। তাদেরকে অলংকার পরানো হবে উহাতে স্বর্ণের ও মুক্তার চুড়ি। আর উহাতে তাদের লিবাস/ পোশাক হবে রেশমের। 

৩৫:৩৪ 

ওয়া = আর। ক্বলুল হামদুলিল্লাহিল্লাযী = তারা বলবে, ‘আলহামদুলিল্লাহ/ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি। আযহাবা = অপসারিত করেছেন/ দূর করে দিয়েছেন। আন্নাল হাযানা = আমাদের থেকে দু:খ-দুশ্চিন্তা। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বানা = আমাদের রব। লাগাফূরুন শাকূরুন = গফূর/ ক্ষমাশীল ও শাকূর/ কৃতজ্ঞতার মূল্যদানকারী। 

আর তারা বলবে, ‘আলহামদুলিল্লাহ/ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি অপসারিত করেছেন/ দূর করে দিয়েছেন আমাদের থেকে দু:খ-দুশ্চিন্তা। নিশ্চয় আমাদের রব গফূর/ ক্ষমাশীল ও শাকূর/ কৃতজ্ঞতার মূল্যদানকারী। 

৩৫:৩৫ 

আল্লাযী = যিনি। আহাল্লানা = আমাদের জন্য মঞ্জুর করেছেন। দারাল মুক্বামাতি = সুপ্রতিষ্ঠিত আবাস (= জান্নাত)। মিন ফাদলিহী = তাঁর অনুগ্রহে। লা ইয়ামাছছুনা = আমাদেরকে স্পর্শ করবে না। ফীহা = উহাতে। নাসাবুন = কোন কষ্ট ক্লেষ। ওয়া = আর। লা ইয়ামাছছুনা = আমাদেরকে স্পর্শ করবে না। ফীহা = উহাতে। লুগূবুন = কোন ক্লান্তি। 

যিনি আমাদের জন্য মঞ্জুর করেছেন সুপ্রতিষ্ঠিত আবাস (= জান্নাত) তাঁর অনুগ্রহে। আমাদেরকে স্পর্শ করবে না উহাতে কোন কষ্ট ক্লেষ আর আমাদেরকে স্পর্শ করবে না উহাতে কোন ক্লান্তি। 

৩৫:৩৬ 

ওয়াল্লাযীনা = আর যারা। কাফারূ = কুফর/ অবিশ্বাস করেছে। লাহুম = তাদের জন্য আছে। নারু জাহান্নামা = জাহান্নামের আগুন। লা ইউক্বদা আলাইহিম = সিদ্ধান্ত দেয়া হবে না তাদের উপর। ফামূতূ = এমন যে, তারা মৃত্যুবরণ করবে (= তারা সেখানে মরবে না)। ওয়া = আর। লা ইউখাফফাফু = হালকাও করা হবে না। আলাইহিম = তাদের উপর। মিন আযাবিহা = উহার শাস্তি। কাযালিকা = এভাবেই। নাজযী = আমরা প্রতিফল দেবো। কুল্লা = প্রত্যেক। কাফূরিন = কাফিরকে/ অবিশ্বাসীকে/ অকৃতজ্ঞকে। 

আর যারা কুফর/ অবিশ্বাস করেছে তাদের জন্য আছে জাহান্নামের আগুন। সিদ্ধান্ত দেয়া হবে না তাদের উপর এমন যে, তারা মৃত্যুবরণ করবে (= তারা সেখানে মরবে না); আর হালকাও করা হবে না তাদের উপর উহার শাস্তি। এভাবেই আমরা প্রতিফল দেবো প্রত্যেক কাফিরকে/ অবিশ্বাসীকে/ অকৃতজ্ঞকে। 

৩৫:৩৭ 

ওয়া = আর। হুম = তারা। ইয়াসত্বরিখূনা = চিৎকার করবে। ফীহা = উহাতে। রব্বানা = (তারা বলবে,) ‘হে আমাদের রব। আখরিজনা = আমাদেরকে বের করুন। না’মাল সলিহান = আমরা আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করবো। গায়রাল্লাযী কুন্না না’মালু = সে আমলের চেয়ে ভিন্ন, যা আমরা করছিলাম। আওয়ালাম নুআম্মিরকুম = আমরা কি তোমাদেরকে আয়ু দিইনি? মা = যাতে। ইয়াতাযাক্কারু = তাযাক্কুর/ উপদেশ গ্রহণ করতে পারতো। ফীহি = উহার মধ্যে। মান = যে। তাযাক্কারা = তাযাক্কুর/ উপদেশ গ্রহণ করতো। ওয়া = আর। জাআকুমুন্নাযীরু = তোমাদের কাছে এসেছিলো নাযীর/ সতর্ককারী। ফাযূক্বূ = সুতরাং তোমরা স্বাদ আস্বাদন করো। ফামা লিয যলিমীনা = সুতরাং যালিমদের জন্য নেই। মিন নাসীরিন = কোন সাহায্যকারী। 

আর তারা চিৎকার করবে উহাতে। (তারা বলবে,) ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে বের করুন। আমরা আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করবো, সে আমলের চেয়ে ভিন্ন, যা আমরা করছিলাম’। আমরা কি তোমাদেরকে আয়ু দিইনি, যাতে তাযাক্কুর/ উপদেশ গ্রহণ করতে পারতো উহার মধ্যে, যে তাযাক্কুর/ উপদেশ গ্রহণ করতো? আর তোমাদের কাছে এসেছিলো নাযীর/ সতর্ককারী। সুতরাং তোমরা স্বাদ আস্বাদন করো। সুতরাং যালিমদের জন্য নেই কোন সাহায্যকারী। 

৩৫:৩৮ 

ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। আলিমুল গায়বিছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি = আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর গায়েবের/ অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞানী। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। আলিমুম বিযাতিস সুদূরি = সদরসমূহের/ মস্তিষ্কসমূহের চিন্তাচেতনা ও ভাবধারা সম্পর্কে জানেন। 

নিশ্চয় আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর গায়েবের/ অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞানী। নিশ্চয় তিনি সদরসমূহের/ মস্তিষ্কসমূহের চিন্তাচেতনা ও ভাবধারা সম্পর্কে জানেন। 

৩৫:৩৯ 

হুয়াল্লাযী = তিনিই সেই সত্তা যিনি। জাআলাকুম = তোমাদেরকে স্থাপন করেছেন। খালায়িফা ফিল আরদি = পৃথিবীতে খলিফা/ (ক্ষমতায়) স্থলাভিষিক্ত হিসাবে। ফামান কাফারা = সুতরাং যে কুফর/ অবিশ্বাস করে। ফাআলাইহি = তারপর তার উপরই (পড়বে)। কুফরুহু = তার কুফর (এর শাস্তি)। ওয়া = আর। লা ইয়াযীদুল কাফিরীনা = কাফিরদেরক বাড়িয়ে দেবে না। কুফরুহুম = তাদের কুফর। ইনদা রব্বিহিম = তাদের রবের কাছে। ইল্লা মাক্বতান = ক্রোধ ছাড়া। ওয়া = আর। ইয়াযীদুল কাফিরীনা = কাফিরদেরকে বাড়িয়ে দেবে না। কুফরুহুম = তাদের কুফর। ইল্লা খাছারান = ক্ষতি ছাড়া। 

তিনিই সেই সত্তা যিনি তোমাদেরকে স্থাপন করেছেন পৃথিবীতে খলিফা/ (ক্ষমতায়) স্থলাভিষিক্ত হিসাবে। সুতরাং যে কুফর/ অবিশ্বাস করে, তারপর তার উপরই (পড়বে) তার কুফর (এর শাস্তি)। আর কাফিরদেরক বাড়িয়ে দেবে না তাদের কুফর তাদের রবের কাছে, ক্রোধ ছাড়া। আর কাফিরদেরকে বাড়িয়ে দেবে না তাদের কুফর, ক্ষতি ছাড়া। 

৩৫:৪০ 

ক্বুল = বলো। আরাআইতুম = তোমরা কি ভেবে দেখেছো। শুরাকাআকুমুল্লাযীনা = তোমাদের (কল্পিত) শরিকদেরকে, যাদেরকে। তাদঊনা = তোমরা ডেকে থাক। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে। আরূনী = আমাকে দেখাও। মা যা খালাক্বূ = তারা কী সৃষ্টি করেছে। মিনাল আরদি = পৃথিবী থেকে। আম = নাকি। লাহুম = তাদের জন্য আছে। শিরকুন = কোন শিরক/ অংশীদারিত্ব। ফিছ ছামাওয়াতি = আকাশমন্ডলীতে। আম = নাকি। আতাইনাহুম = আমরা তাদেরকে দিয়েছি। কিতাবান = কোন কিতাব। ফাহুম = তারপর তারা। আলা বাইয়িনাতিম মিনহু = উহা থেকে কোন বাইয়িনাতের/ স্পষ্ট প্রমাণের উপর আছে? বাল = বরং। ইইঁ ইয়ায়িদুয যলিমূনা = যালিমরা ওয়াদা দেয় না। বা’দুহুম বা’দান = তাদের একে অপরকে। ইল্লা গুরূরান = ধোঁকাবাজি/ প্রতারণা ছাড়া। 

বলো, ‘তোমরা কি ভেবে দেখেছো তোমাদের (কল্পিত) শরিকদেরকে, যাদেরকে তোমরা ডেকে থাক, আল্লাহকে বাদ দিয়ে। আমাকে দেখাও তারা কী সৃষ্টি করেছে পৃথিবী থেকে? নাকি তাদের জন্য আছে কোন শিরক/ অংশীদারিত্ব আকাশমন্ডলীতে? নাকি আমরা তাদেরকে দিয়েছি কোন কিতাব, তারপর তারা উহা থেকে কোন বাইয়িনাতের/ স্পষ্ট প্রমাণের উপর আছে? বরং যালিমরা ওয়াদা দেয় না তাদের একে অপরকে ধোঁকাবাজি/ প্রতারণা ছাড়া। 

৩৫:৪১ 

ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। ইউমছিকুছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদা = ধরে রেখেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে। আন = যেন না। তাযূলা = উহারা উভয়ে টলে যায়। ওয়া = আর। লায়িন = যদি। যালাতা = উহারা উভয়ে টলে যায়। ইন আমছাকাহুমা = উহাদের উভয়কে ধরে রাখতে পারবে না। মিন আহাদিম মিম বা’দিহী = তাঁর পরে আর কেউ। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। কানা হালীমান গাফূরান = হালীম/ সহনশীল ও গফূর/ ক্ষমাশীল। 

নিশ্চয় আল্লাহ ধরে রেখেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে, যেন না উহারা উভয়ে টলে যায়। আর যদি উহারা উভয়ে টলে যায় তবে উহাদের উভয়কে ধরে রাখতে পারবে না তাঁর পরে আর কেউ। নিশ্চয় তিনি হালীম/ সহনশীল ও গফূর/ ক্ষমাশীল। 

৩৫:৪২ 

ওয়া = আর। আক্বছামূ = তারা কসম করে। বিল্লাহি = আল্লাহর নামে। জাহাদা আইমানিহিম = তাদের আইমানকে/ শপথসমূহকে দৃঢ় করার চেষ্টায়। লাইন = (এ মর্মে যে) অবশ্যই যদি। জাআহুম = তাদের কাছে আসে। নাযীরুন = কোন নাযীর/ সতর্ককারী। লাইয়াকূনান্না = তাহলে তারা অবশ্যই হবে। আহদা = অধিক হিদায়াতপ্রাপ্ত। মিন ইহদাল উমামি = অন্যান্য উম্মাতসমূহের যে কোনটির চেয়ে। ফালাম্মা = তারপর যখন। জাআহুম = তাদের কাছে আসলো। নাযীরুন = একজন নাযীর/ সতর্ককারী। মা যাদাহুম = উহা তাদেরকে বাড়িয়ে দেয়নি। ইল্লা নুফূরানি = পলায়ন ছাড়া অন্য কিছু। 

আর তারা কসম করে আল্লাহর নামে, তাদের আইমানকে/ শপথসমূহকে দৃঢ় করার চেষ্টায়, (এ মর্মে যে,) ‘অবশ্যই যদি তাদের কাছে আসে কোন নাযীর/ সতর্ককারী, তাহলে তারা অবশ্যই হবে অধিক হিদায়াতপ্রাপ্ত অন্যান্য উম্মাতসমূহের যে কোনটির চেয়ে। তারপর যখন তাদের কাছে আসলো একজন নাযীর/ সতর্ককারী, তখন উহা তাদেরকে বাড়িয়ে দেয়নি, পলায়ন ছাড়া অন্য কিছু। 

৩৫:৪৩ 

ইছতিকবারান = তারা অহংকার করে। ফিল আরদি = পৃথিবীতে। ওয়া = আর। মাকরাছ ছাইয়িয়ি = নিকৃষ্ট কৌশল করে। ওয়া = আর (পরিণামে)। লা ইয়াহীক্বুল মাকরুছ ছাইয়িয়ু = নিকৃষ্ট কৌশল পরিবেষ্টন করে না/ ঘিরে ধরে না। ইল্লা বিআহলিহী = উহার আহালকে/ উদ্যোক্তাকে ছাড়া অন্য কাউকে। ফাহাল ইয়ানযুরূনা = তারা কি অপেক্ষা করছে? ইল্লা ছুন্নাতাল আওয়ালীনা = সুন্নাতুল আওয়ালীন/ পূর্ববর্তীদের ক্ষেত্রে আল্লাহর অবলম্বিত সুন্নাত বা শাস্তিনীতি কার্যকর হওয়া ছাড়া অন্য কোন পরিণতির জন্য? ফালান তাজিদা = সুতরাং তুমি পাবে না। লিসুন্নাতিল্লাহি = আল্লাহর সুন্নাতে। তাবদীলান = কোন বদল/ পরিবর্তন (= আল্লাহর সুন্নাত বদলে যায় না)। ওয়া = আর। লান তাজিদা = তুমি পাবে না। লিসুন্নাতিল্লাহি = আল্লাহর সুন্নাতে। তাহভীলা = কোন বিচ্যুতি। 

তারা অহংকার করে পৃথিবীতে আর নিকৃষ্ট কৌশল করে। আর (পরিণামে) নিকৃষ্ট কৌশল পরিবেষ্টন করে না/ ঘিরে ধরে না, উহার আহালকে/ উদ্যোক্তাকে ছাড়া অন্য কাউকে। তারা কি অপেক্ষা করছে সুন্নাতুল আওয়ালীন/ পূর্ববর্তীদের ক্ষেত্রে আল্লাহর অবলম্বিত সুন্নাত বা শাস্তিনীতি কার্যকর হওয়া ছাড়া অন্য কোন পরিণতির জন্য? সুতরাং তুমি পাবে না আল্লাহর সুন্নাতে কোন বদল/ পরিবর্তন (= আল্লাহর সুন্নাত বদলে যায় না)। আর তুমি পাবে না আল্লাহর সুন্নাতে কোন বিচ্যুতি (= আল্লাহর সুন্নাতে কোন বিচ্যুতি ঘটে না)। 

৩৫:৪৪

আওয়ালাম ইয়াছীরু = তারা কি ভ্রমণ করেনি। ফিল আরদি = পৃথিবীতে। ফাইয়ানযুরূ = ফলে তারা দেখবে। কায়ফা = কিরূপ। কানা = হয়েছিলো। আক্বিবাতুল্লাযীনা মিন ক্বাবলিহিম = তাদের পরিণাম যারা তাদের আগে ছিলো। ওয়া = আর। কানূ = তারা ছিলো। আশাদ্দা = অধিক শক্তিশালী। মিনহুম = তাদের চেয়েও। ক্বুওয়াতান = শক্তিসামর্থে। ওয়া = আর। মা কানাল্লাহু = আল্লাহ এমন নন যে। লিইউ’জিযাহু = তাঁকে অক্ষম করতে পারে। মিন শাইয়িন = কোন সত্তা/ কোন কিছু। ফিছ ছামাওয়াতি = আকাশমন্ডলীতে। ওয়া = আর। লা ফিল আরদি = পৃথিবীতেও (কেউ তাঁকে অক্ষম করতে পারবে) না। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। কানা আলীমান ক্বাদীরান = আলীম/ সর্বজ্ঞাতা ও ক্বাদীর/ প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী। 

তারা কি ভ্রমণ করেনি পৃথিবীতে, ফলে তারা দেখবে কিরূপ হয়েছিলো তাদের পরিণাম যারা তাদের আগে ছিলো? আর তারা ছিলো অধিক শক্তিশালী তাদের চেয়েও শক্তিসামর্থে। আর আল্লাহ এমন নন যে, তাঁকে অক্ষম করতে পারে কোন সত্তা/ কোন কিছু আকাশমন্ডলীতে আর পৃথিবীতেও (কেউ তাঁকে অক্ষম করতে পারবে) না। নিশ্চয় তিনি আলীম/ সর্বজ্ঞাতা ও ক্বাদীর/ প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী। 

৩৫:৪৫ 

ওয়া = আর। লাও = যদি। ইউআখিযুল্লাহুন্নাছা = আল্লাহ পাকড়াও করতেন লোকদেরকে। বিমা কাছাবূ = তারা যা (= যে পাপ) উপার্জন করে তার কারণে। মা তারাকা = তাহলে তিনি তরক করতেন না/ ছেড়ে দিতেন না। আলা যহরিহা = ভূপৃষ্ঠে। মিন দাব্বাতিন = কোন জীবজন্তুকে। ওয়ালাকিইঁ ইউআখখিরুহুম = কিন্তু তিনি তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। ইলা আজালিম মুসাম্মা = আজালুম মুসাম্মা/ নির্দিষ্ট শেষ সময়সীমা পর্যন্ত। ফাইযা = তারপর যখন। জাআ = এসে যায়। আজালুহুম = তাদের আজাল/ নির্দিষ্ট শেষ সময়সীমা। ফাইন্নাল্লাহা = সুতরাং নিশ্চয় আল্লাহ। কানা বিইবাদিহী = তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে। বাসীরান = দৃষ্টিবান। 

আর যদি আল্লাহ পাকড়াও করতেন লোকদেরকে তারা যা (= যে পাপ) উপার্জন করে তার কারণে, তাহলে তিনি তরক করতেন না/ ছেড়ে দিতেন না ভূপৃষ্ঠে কোন জীবজন্তুকে। কিন্তু তিনি তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন আজালুম মুসাম্মা/ নির্দিষ্ট শেষ সময়সীমা পর্যন্ত। তারপর যখন এসে যায় তাদের আজাল/ নির্দিষ্ট শেষ সময়সীমা। সুতরাং নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে দৃষ্টিবান।