৩০:১
আলিফ লাম মীম = আলিফ লাম মীম।
আলিফ লাম মীম।
৩০:২
গুলিবাত = গুলিবাতুর রূমু = রূম (= রোমানগণ) পরাজিত হয়েছে।
রূম (= রোমানগণ) পরাজিত হয়েছে।
৩০:৩
ফী আদনাল আরদি = পৃথিবীর সর্বনিম্ন অঞ্চলে। ওয়া = আর। হুম = তারা। মিম বা’দি গালাবিহিম = তাদের এ পরাজয়ের পর। ছাইয়াগলিবূনা = শীঘ্রই বিজয়ী হবে।
পৃথিবীর সর্বনিম্ন অঞ্চলে। আর তারা তাদের এ পরাজয়ের পর শীঘ্রই বিজয়ী হবে।
৩০:৪
ফী বিদয়ি ছিনীনা = কয়েক বছরের মধ্যেই। লিল্লাহিল আমরু = সিদ্ধান্ত আল্লাহরই। মিন ক্বাবলু ওয়া মিম বা’দু = আগেও এবং পরেও। ওয়া = আর। ইয়াওমায়িযিইঁ ইয়াফরাহুল মু’মিনূনা = সেদিন আনন্দিত হবে মু’মিনগণ।
কয়েক বছরের মধ্যেই। সিদ্ধান্ত আল্লাহরই, আগেও এবং পরেও। আর সেদিন আনন্দিত হবে মু’মিনগণ।
৩০:৫
বিনাসরিল্লাহি = আল্লাহর সাহায্যে। ইয়ানসুরু = তিনি সাহায্য করেন। মাইঁ ইয়াশাউ = যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। ওয়া = আর। হুয়াল আযীযুর রহীমু = তিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ মহাদয়াময়।
আল্লাহর সাহায্যে। তিনি সাহায্য করেন যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। আর তিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ মহাদয়াময়।
৩০:৬
ওয়া’দাল্লাহি = ইহা আল্লাহর ওয়াদা। লা ইউখলিফুল্লাহু = আল্লাহ খেলাফ করেন না। ওয়া’দাহু = তাঁর ওয়াদা। ওয়ালাকিন্না = কিন্তু। আকছারান্নাছি = অধিকাংশ মানুষ। লা ইয়া’লামূনা = জ্ঞান রাখে না।
ইহা আল্লাহর ওয়াদা। আল্লাহ খেলাফ করেন না তাঁর ওয়াদা। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জ্ঞান রাখে না।
৩০:৭
ইয়া’লামূনা = তারা জানে। যহীরাম মিনাল হায়াতিদ দুনইয়া = হায়াতুদ দুনিয়ার/ পার্থিব জীবনের বাহ্যিক দিক। ওয়া = আর। হুম = তারা। আনিল আখিরাতি = আখিরাতের (পরবর্তী অনিবার্য বাস্তবতার) ব্যাপারে। হুম গাফিলূনা = গাফেল/ উদাসীন।
তারা জানে হায়াতুদ দুনিয়ার/ পার্থিব জীবনের বাহ্যিক দিক। আর তারা আখিরাতের (পরবর্তী অনিবার্য বাস্তবতার) ব্যাপারে গাফেল/ উদাসীন।
৩০:৮
আওয়ালাম ইয়াতাফাক্কারূ = তারা কি তাফাক্কুর/ চিন্তা-গবেষণা করে না। ফী আনফুসিহিম = তাদের নিজেদের বিষয়ে। মা খালাক্বাল্লাহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা = আল্লাহ সৃষ্টি করেননি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী। ওয়া = আর। মা বায়নাহুমা = যা কিছু আছে এ উভয়ের মধ্যে। ইল্লা বিল হাক্বক্বি = যথাযথভাবে ছাড়া। ওয়া আজালিম মুসাম্মা = আর আজালিম মুসাম্মা/ নির্দিষ্ট সময়সীমাসহ ছাড়া। ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। কাছীরাম মিনান্নাছি = অধিকাংশ মানুষ। বিলিক্বায়ি রব্বিহিম = তাদের রবের মোলাকাতের প্রতি (= তাদের কর্মফলের জন্য পর্দার অন্তরাল থেকে তাদের রবের সন্মুখীন হওয়ার প্রতি)। লাকাফিরূনা = কাফের/ অবিশ্বাসী।
তারা কি তাফাক্কুর/ চিন্তা-গবেষণা করে না তাদের নিজেদের বিষয়ে? আল্লাহ সৃষ্টি করেননি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী আর যা কিছু আছে এ উভয়ের মধ্যে যথাযথভাবে ছাড়া আর আজালুম মুসাম্মা/ নির্দিষ্ট সময়সীমাসহ ছাড়া। আর নিশ্চয় অধিকাংশ মানুষ তাদের রবের মোলাকাতের প্রতি (= তাদের কর্মফলের জন্য পর্দার অন্তরাল থেকে তাদের রবের সম্মুখীন হওয়ার প্রতি) কাফের/ অবিশ্বাসী।
৩০:৯
আওয়ালাম ইয়াছীরূ = তারা কি ভ্রমণ করেনি পৃথিবীতে। ফাইয়ানযুরূ = তাহলে তারা দেখতে পেতো। কায়ফা = কিরূপ। কানা = হয়েছিলো। আক্বিবাতুল্লাযীনা মিন ক্বাবলিহিম = পূর্ববর্তীদের পরিণতি। কানূ = তারা ছিলো। আশাদ্দা মিনহুম ক্বুওয়াতান = শক্তিতে তাদের চেয়ে অধিক প্রবল। ওয়া = আর। আছারুল আরদা = তারা ভূমি কর্ষণ করতো। ওয়া = আর। আমারূহা = তারা উহাতে আবাদ করতো। আকছারা মিম্মা আমারূহা = এরা উহাতে যা আবাদ করে তার চেয়ে বেশি। ওয়া = আর। জাআতহুম = তাদের কাছে এসেছিলো। রুসুলুহুম = আমাদের রসূলগণ। বিলবাইয়িনাতি = বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণসহ। ফামা কানাল্লাহু লিইয়াযলিমাহুম = তারপর আল্লাহ তাদের উপর যুলুম করার ছিলেন না। ওয়ালাকিন্না = কিন্তু। কানূ আনফুসাহুম ইয়াযলিমূনা = তারাই নিজেদের উপর যুলুম করতো।
তারা কি ভ্রমণ করেনি পৃথিবীতে? তাহলে তারা দেখতে পেতো কিরূপ হয়েছিলো পূর্ববর্তীদের পরিণতি। তারা ছিলো শক্তিতে তাদের চেয়ে অধিক প্রবল, আর তারা ভূমি কর্ষণ করতো আর তারা উহাতে আবাদ করতো এরা উহাতে যা আবাদ করে তার চেয়ে বেশি। আর তাদের কাছে এসেছিলো আমাদের রসূলগণ বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণসহ। তারপর আল্লাহ তাদের উপর যুলুম করার ছিলেন না। কিন্তু তারাই নিজেদের উপর যুলুম করতো।
৩০:১০
ছুম্মা = তারপর। কানা আক্বিবাতাল্লাযীনা আছাউছ ছূআ = যারা মন্দকাজ করেছিলো তাদের পরিণাম মন্দ হয়েছিলো। আন = এ কারণে যে। কাযযাবু বিআয়াতিল্লাহি = তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিল আল্লাহর আয়াতসমূহকে। ওয়া = আর। কানূ বিহা ইয়াছতাহযিয়ূনা = তারা উহার প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতো।
তারপর যারা মন্দকাজ করেছিলো তাদের পরিণাম মন্দ হয়েছিলো, এ কারণে যে, তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিল আল্লাহর আয়াতসমূহকে আর তারা উহার প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতো।
৩০:১১
আল্লাহু = আল্লাহ। ইয়াবদাউল খালক্বা = সৃষ্টির সূচনা করেন। ছুম্মা = তারপর। ইউয়ীদুহু = উহাকে আবার সৃষ্টি করবেন। ছুম্মা = তারপর। ইলাইহি = তাঁরই দিকে। তুরজাঊনা = তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।
আল্লাহ সৃষ্টির সূচনা করেন তারপর উহাকে আবার সৃষ্টি করবেন। তারপর তাঁরই দিকে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।
৩০:১২
ওয়া = আর। ইয়াওমা = যেদিন। তাক্বূমাছ ছাআতু = ছায়াত/ প্রলয় কায়েম/ সংগঠিত হবে। ইউলিছুল মুজরিমূনা = সেদিন অপরাধীরা নিরাশ হয়ে যাবে।
আর যেদিন সায়াত/ প্রলয় কায়েম/ সংগঠিত হবে সেদিন অপরাধীরা নিরাশ হয়ে যাবে।
৩০:১৩
ওয়া = আর। লাম ইয়াকুল্লাহুম = তাদের জন্য হবে না। মিন শুরাকায়িহিম = তাদের শরিকদের মধ্য থেকে কেউ। শুফাআউ = শাফায়াতকারী/ সুপারিশকারী। ওয়া = আর। কানূ = তারাও হবে। বিশুরাকায়িহিম = তাদের শরিকদের প্রতি। কাফিরীনা = কাফের/ প্রত্যাখ্যানকারী।
আর তাদের জন্য হবে না তাদের শরিকদের মধ্য থেকে কেউ শাফায়াতকারী/ সুপারিশকারী। আর তারাও হবে তাদের শরিকদের প্রতি কাফের/ প্রত্যাখ্যানকারী।
৩০:১৪
ওয়া = আর। ইয়াওমা = যেদিন। তাক্বূমুস সায়াতু = সায়াত/ প্রলয় কায়েম/ সংগঠিত হবে। ইয়াওমায়িযিইঁ ইয়াতাফাররাক্বূনা = সেদিন তারা বিভক্ত হয়ে যাবে।
আর যেদিন সায়াত/ প্রলয় কায়েম/ সংগঠিত হবে সেদিন তারা বিভক্ত হয়ে যাবে।
৩০:১৫
ফাআম্মাল্লাযীনা = তারপর যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ওয়া = ও। আমিলুস সলিহাতি = আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে। ফাহুম = তখন তারা। ফী রওদাতিইঁ ইউহবারূনা = রওজাতে/ বাগবাগিচায় আনন্দ করবে।
তারপর যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে ও আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে, তখন তারা রওজাতে/ বাগবাগিচায় আনন্দ করবে।
৩০:১৬
ওয়া = আর। আম্মাল্লাযীনা = তাদের ব্যাপার যারা। কাফারূ = কুফর/ অবিশ্বাস করেছে। ওয়া = ও। কাযযাবূ = মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। বিআয়াতিনা = আমাদের আয়াতসমূহকে। ওয়া = ও। লিক্বায়িল আখিরাতি = আখিরাতের মোলাকাতকে/ আখিরাতের সম্মুখীন হওয়াকে। ফাউলায়িকা = উহাদেরকেই। ফী আযাবিল মুহদারূনা = আযাবের মধ্যে উপস্থিত করা হবে।
আর তাদের ব্যাপার যারা কুফর/ অবিশ্বাস করেছে ও মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে আমাদের আয়াতসমূহকে ও আখিরাতের মোলাকাতকে/ আখিরাতের সম্মুখীন হওয়াকে, উহাদেরকেই আযাবের মধ্যে উপস্থিত করা হবে।
৩০:১৭
ফাসুবহানাল্লাহি = সুতরাং আল্লাহর তাসবীহ/ পবিত্রতা বর্ণনা করো। হীনা তুমছূনা = যখন তোমরা সন্ধ্যায় উপনীত হও সেই সময়। ওয়া = আর। হীনা তুসবিহূনা = যখন তোমরা সোবহ/ প্রভাতে উপনীত হও সেই সময়।
সুতরাং আল্লাহর তাসবীহ/ পবিত্রতা বর্ণনা করো যখন তোমরা সন্ধ্যায় উপনীত হও সেই সময় আর যখন তোমরা সোবহ/ প্রভাতে উপনীত হও সেই সময়।
৩০:১৮
ওয়া = আর। লাহুল হামদু = তাঁরই জন্য সমস্ত প্রশংসা। ফিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি = আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে। ওয়া = আর আশিয়্যানে/ ইশার সময়। ওয়া = আর। হীনা তুযহিরূনা = যখন তোমরা যোহরে/ দুপুরে উপনীত হও সেই সময়।
আর তাঁরই জন্য প্রশংসা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে। আর আশিয়্যানে/ ইশার সময় আর যখন তোমরা যোহরে/ দুপুরে উপনীত হও সেই সময়।
৩০:১৯
ইউখরিজুল হাইয়া = তিনি বের করেন জীবিতকে। মিনাল মাইয়িতি = মৃত থেকে। ওয়া = আর। ইউখরিজুল মাইয়িতা = তিনি বের করেন মৃতকে। মিনাল হাইয়ি = জীবিত থেকে। ওয়া = আর। ইউহয়িল আরদা = তিনি সঞ্জীবিত করেন ভূমিকে/ জমিনকে। বা’দা মাওতিহা = উহার মৃত্যুর/ শুষ্কতার পর। ওয়া = আর। কাযালিকা = এভাবেই। তুখরিজূনা = তোমাদেরকে বের করা হবে।
তিনি বের করেন জীবিতকে মৃত থেকে আর তিনি বের করেন মৃতকে জীবিত থেকে। আর তিনি সঞ্জীবিত করেন ভূমিকে/ জমিনকে উহার মৃত্যুর/ শুষ্কতার পর। আর এভাবেই তোমাদেরকে বের করা হবে।
৩০:২০
ওয়া = আর। মিন আয়াতিহী = তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে। আন = এও যে। খালাক্বাকুম = তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। মিন তুরাবিন = মাটি থেকে। ছুম্মা = তারপর। ইযা = এখন। আনতুম = তোমরা। বাশারুন = মানুষ হয়ে। তানতাশিরূনা = ছড়িয়ে পড়ছো।
আর তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে এও যে, তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে। তারপর এখন তোমরা মানুষ হয়ে ছড়িয়ে পড়ছো।
৩০:২১
ওয়া = আর। মিন আয়াতিহী = তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে। আন = এও যে। খালাক্বা = তিনি সৃষ্টি করেছেন। লাকুম = তোমাদের জন্য। মিন আনফুসিকুম = তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকে (= সমজাতীয় উপাদান থেকে)। আযওয়াজান = তোমাদের জোড়াদেরকে (= স্বামী-স্ত্রীকে)। লিতাছকুনূ = যেন তোমরা প্রশান্তি পেতে পারো। ইলাইহা = তার কাছে। ওয়া = আর। জাআলা = তিনি স্থাপন করেছেন। বায়নাকুম = তোমাদের মধ্যে। মাওয়াদ্দাতান = ভালবাসা। ওয়া = ও। রহমাতান = দয়া। ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতিল লিক্বাওমিইঁ ইয়াতাফাক্কারূনা = আয়াত/ নিদর্শন সেই কওমের জন্য যারা তাফাক্কুর/ চিন্তা-গবেষণা করে।
আর তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে এও যে, তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকে (= সমজাতীয় উপাদান থেকে) তোমাদের জোড়াদেরকে (= স্বামী-স্ত্রীকে), যেন তোমরা প্রশান্তি পেতে পারো তার কাছে। আর তিনি স্থাপন করেছেন তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া। নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন সেই কওমের জন্য যারা তাফাক্কুর/ চিন্তা-গবেষণা করে।
৩০:২২
ওয়া = আর। মিন আয়াতিহী = তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে। খালক্বুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি = আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী। ওয়াখতিলাফু আলছিনাতিকুম = আর তোমাদের ভাষার ভিন্নতা। ওয়া = আর। আলওয়ানিকুম = তোমাদের বর্ণের ভিন্নতা। ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতিল্লিল আলিমীনা = আলেমদের/ জ্ঞানীদের জন্য আয়াত/ নিদর্শন।
আর তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী আর তোমাদের ভাষার ভিন্নতা আর তোমাদের বর্ণের ভিন্নতা। নিশ্চয় উহাতে আছে আলেমদের/ জ্ঞানীদের জন্য আয়াত/ নিদর্শন।
৩০:২৩
ওয়া = আর। মিন আয়াতিহী = তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে। মানামুকুম = তোমাদের ঘুম। বিল্লাইলি ওয়ান্নাহারি = রাতে ও দিনে। ওয়াবতিগাউকুম মিন ফাদলিহী = আর তোমাদের কর্তৃক তাঁর অনুগ্রহ (= হালাল জীবিকা) তালাশ করা। ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতিল লিক্বাওমিইঁ ইয়াছমাঊনা = আয়াত/ নিদর্শন, সেই কওমের জন্য যারা শুনে।
আর তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে তোমাদের ঘুম রাতে ও দিনে, আর তোমাদের কর্তৃক তাঁর অনুগ্রহ (= হালাল জীবিকা) তালাশ করা। নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন, সেই কওমের জন্য যারা শুনে।
৩০:২৪
ওয়া = আর। মিন আয়াতিহী = তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে। ইউরীকুমুল বারক্বা = (এই যে,) তিনি তোমাদেরকে দেখান বিদ্যুত/ বিজলি। খাওফান ওয়া তআমান = ভয় ও আশাস্বরূপ। ওয়া = আর। ইউনাযযিলা মিনাছ ছামায়ি = তিনি নাযিল করেন আকাশ থেকে। মাআন = (বৃষ্টির) পানি। ফাইউহয়ী = তারপর তিনি সঞ্জীবিত করেন। বিহিল আরদা = উহা দ্বারা ভূমিকে/ জমিনকে। বা’দা মাওতিহা = উহার মৃত্যুর/ শুষ্কতার পর। ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতিল লিক্বাওমিইঁ ইয়াক্বিলূনা = আয়াতসমূহ/ নিদর্শনসমূহ, সেই কওমের জন্য যারা আকল/ বিবেক-বুদ্ধি/ সাধারণ জ্ঞান/ common sense প্রয়োগ করে।
আর তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে (এই যে,) তিনি তোমাদেরকে দেখান বিদ্যুত/ বিজলি ভয় ও আশাস্বরূপ। আর তিনি নাযিল করেন আকাশ থেকে (বৃষ্টির) পানি, তারপর তিনি সঞ্জীবিত করেন উহা দ্বারা ভূমিকে/ জমিনকে উহার মৃত্যুর/ শুষ্কতার পর। নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াতসমূহ/ নিদর্শনসমূহ, সেই কওমের জন্য যারা আকল/ বিবেক-বুদ্ধি/ সাধারণ জ্ঞান/ common sense প্রয়োগ করে।
৩০:২৫
ওয়া = আর। মিন আয়াতিহী = তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে। আন = এও যে। তাক্বুমাছ ছামাউ = কায়েম/ প্রতিষ্ঠিত রয়েছে আকাশ। ওয়াল আরদু = ও পৃথিবী। বিআমরিহী = তাঁরই আদেশে। ছুম্মা = তারপর। ইযা = যখন। দাআকুম = তিনি তোমাদেরকে ডাক দিবেন। দাও’য়াতান = একটি ডাক। মিনাল আরদি = পৃথিবী/ জমিন থেকে। ইযা = তখন। আনতুম = তোমরা। তাখরুজূনা = বের হয়ে আসবে।
আর তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে এও যে, কায়েম/ প্রতিষ্ঠিত রয়েছে আকাশ ও পৃথিবী তাঁরই আদেশে। তারপর যখন তিনি তোমাদেরকে ডাক দিবেন, একটি ডাক; পৃথিবী/ জমিন থেকে তখন তোমরা বের হয়ে আসবে।
৩০:২৬
ওয়া = আর। লাহু = তাঁরই অধিকারভুক্ত। মান ফিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি = যারাই আছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে। কুল্লুল্লাহু = সবাই তাঁর জন্য। ক্বানিতূনা = কানিতূন/ বিনয়ী।
আর তাঁরই অধিকারভুক্ত যারাই আছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে। সবাই তাঁর জন্য কানিতূন/ বিনয়ী।
৩০:২৭
ওয়া = আর। হুয়াল্লাযী = তিনিই সেই সত্তা যিনি। ইয়াবদাউল খালক্বা = সৃষ্টির সূচনা করেন। ছুম্মা = তারপর। ইউয়ীদুহূ = উহাকে আবার সৃষ্টি করবেন। ওয়া = আর। হুয়া = উহা। আহওয়ানু আলাইহি = তাঁর জন্য সহজ। ওয়া = আর। লাহুল মাছালুল আ’লা = তাঁরই জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ মাছাল/ দৃষ্টান্ত/ গুণাবলী। ফিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি = আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে। ওয়া = আর। হুয়াল আযীযুল হাকীমু = তিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।
আর তিনিই সেই সত্তা যিনি সৃষ্টির সূচনা করেন তারপর উহাকে আবার সৃষ্টি করবেন। আর উহা তাঁর জন্য সহজ। আর তাঁরই জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ মাছাল/ দৃষ্টান্ত/ গুণাবলী, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে। আর তিনি আযীয/ মহাশক্তিমান ও হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।
৩০:২৮
দরাবা = তিনি পেশ করছেন। লাকুম = তোমাদের জন্য। মাছালাম মিন আনফুসিকুম = একটি মাছাল/ দৃষ্টান্ত তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকে। হাল লাকুম = তোমাদের জন্য আছে কি। মিম মা মালাকাত আইমানুকুম = ‘মা মালাকাত আইমানুকুম’ থেকে (= যারা তোমাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা লাভের চুক্তির আওতায় তোমাদের অধীনস্থ হয়েছে তাদের মধ্য থেকে) কেউ। মিন শুরাকাআ ফী মা রযাক্বনাকুম = উহাতে তোমাদের শরিক/ অংশীদার যা আমরা তোমাদের রিযিকস্বরূপ দিয়েছি। ফাআনতুম = যাতে তোমরা। ফীহি = উহার ক্ষেত্রে। ছাওয়াউন = সমান (অংশীদার হয়ে থাকো)। তাখাফূনাহুম = তোমরা কি তাদেরকে ভয় করো। কাখীফাতিকুম = যেমন তোমরা ভয় করে থাকো। আনফুসাকুম = তোমাদের নিজেদেরকে (= তোমাদের একে অপরকে)। কাযালিকা = এরূপে। নুফাসসিলুল আয়াতি = আমরা তফসীল আকারে বিস্তারিত বর্ণনা করি আয়াতসমূহ। লিক্বাওমিইঁ ইয়া’ক্বিলূনা = সেই কওমের জন্য যারা আকল/ বিবেক-বুদ্ধি/ সাধারণ জ্ঞান/ common sense প্রয়োগ করে।
তিনি পেশ করছেন তোমাদের জন্য একটি মাছাল/ দৃষ্টান্ত তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকে। তোমাদের জন্য আছে কি ‘মা মালাকাত আইমানুকুম’ থেকে (= যারা তোমাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা লাভের চুক্তির আওতায় তোমাদের অধীনস্থ হয়েছে তাদের মধ্য থেকে) কেউ উহাতে তোমাদের শরিক/ অংশীদার যা আমরা তোমাদের রিযিকস্বরূপ দিয়েছি, যাতে তোমরা উহার ক্ষেত্রে সমান (অংশীদার হয়ে থাকো)? তোমরা কি তাদেরকে ভয় করো যেমন তোমরা ভয় করে থাকো তোমাদের নিজেদেরকে (= তোমাদের একে অপরকে)? এরূপে আমরা তফসীল আকারে বিস্তারিত বর্ণনা করি আয়াতসমূহ, সেই কওমের জন্য যারা আকল/ বিবেক-বুদ্ধি/ সাধারণ জ্ঞান/ common sense প্রয়োগ করে।
৩০:২৯
বালিত্তাবাআল্লাযীনা যলামূ = বরং যারা যুলুম করেছে তারা ইত্তেবা/ অনুসরণ করে। আহওয়াআহুম = তাদের হাওয়াকে/ প্রবৃত্তিপ্রসূত মতবাদকে। বিগায়রি ইলমিন = জ্ঞান না থাকার কারণে। ফামাইঁ ইয়াহদী = সুতরাং কে তাকে হিদায়াত করবে। মান আদল্লাল্লাহু = যাকে আল্লাহ বিভ্রান্ত করে দিয়েছেন। ওয়া = আর। মা লাহুম = তাদের জন্য নেই। মিন নাসিরীনা = কোন সাহায্যকারী।
বরং যারা যুলুম করেছে তারা ইত্তেবা/ অনুসরণ করে তাদের হাওয়াকে/ প্রবৃত্তিপ্রসূত মতবাদকে, জ্ঞান না থাকার কারণে। সুতরাং কে তাকে হিদায়াত করবে যাকে আল্লাহ বিভ্রান্ত করে দিয়েছেন? আর তাদের জন্য নেই কোন সাহায্যকারী।
৩০:৩০
ফাআক্বিম ওয়াজহাকা = সুতরাং তোমার মুখমন্ডলকে/ সত্তাকে ক্বায়েম/ প্রতিষ্ঠিত রাখো। লিদ্দীনি = দ্বীনের/ (ইসলামী) জীবনব্যবস্থার জন্য। হানীফা = হানীফ/ সত্যনিষ্ঠ হয়ে। ফিতরাতাল্লাহিল্লাতী ফাতারান্নাছা আলাইহা = ইহাই আল্লাহর ফিতরাত (= আল্লাহর তৈরি প্রকৃতি, অর্থাৎ এই দ্বীন হচ্ছে ফিতরাতের বা স্বভাবসুন্দর প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যশীল দ্বীন), যার উপর (= যে ফিতরাতের সাথে সামঞ্জস্যশীল করে/ যে দ্বীন পালনের উপযোগী করে) তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। লা তাবদীলা লিখালক্বিল্লাহি = আল্লাহর সৃষ্টির জন্য বদল/ পরিবর্তন নেই। যালিকাদ দ্বীনুল ক্বাইয়েমু = ইহাই দ্বীনুল ক্বাইয়েম/ প্রতিষ্ঠিত দ্বীন/ প্রতিষ্ঠিত জীবনব্যবস্থা। ওয়ালাকিন্না = কিন্তু। আকছারান্নাছি = অধিকাংশ মানুষ। লা ইয়া’লামূনা = জ্ঞান রাখে না।
সুতরাং তোমার মুখমন্ডলকে/ সত্তাকে ক্বায়েম/ প্রতিষ্ঠিত রাখো দ্বীনের/ (ইসলামী) জীবনব্যবস্থার জন্য, হানীফ/ সত্যনিষ্ঠ হয়ে। ইহাই আল্লাহর ফিতরাত (= আল্লাহর তৈরি প্রকৃতি, অর্থাৎ এই দ্বীন হচ্ছে ফিতরাতের বা স্বভাবসুন্দর প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যশীল দ্বীন), যার উপর (= যে ফিতরাতের সাথে সামঞ্জস্যশীল করে/ যে দ্বীন পালনের উপযোগী করে) তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির জন্য বদল/ পরিবর্তন নেই। ইহাই দ্বীনুল ক্বাইয়েম/ প্রতিষ্ঠিত দ্বীন/ প্রতিষ্ঠিত জীবনব্যবস্থা। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জ্ঞান রাখে না।
৩০:৩১
মুনিবীনা ইলাইহি = তাঁর দিকে (= আল্লাহর দিকে) অভিমুখী থাকো। ওয়াত্তাক্বূহু = আর তাঁকে (= আল্লাহকে) ভয় করো। ওয়া = আর। আক্বিমিস সলাতা = সালাত কায়েম/ প্রতিষ্ঠা করো। ওয়া = আর। লা তাকূনূ মিনাল মুশরিকীনা = তুমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
তাঁর দিকে (= আল্লাহর দিকে) অভিমুখী থাকো আর তাঁকে (= আল্লাহকে) ভয় করো। আর সালাত কায়েম/ প্রতিষ্ঠা করো। আর তুমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
৩০:৩২
মিনাল্লাযীনা = যারা। ফাররাক্বূ = বিভক্ত করেছে। দ্বীনাহুম = তাদের দ্বীনকে/ জীবনব্যবস্থাকে। ওয়া = এ অবস্থায় যে। কানূ = তারা হয়ে গেছে। শিয়াআন = বিভিন্ন শিয়া/ দল (= যারা বিভিন্ন উপদলে ভাগ হয়ে একেক দল একেকভাবে দ্বীনকে পালন করে)। কুল্লু = প্রত্যেক। হিযবিম বিমা লাদায়হিম ফারিহূনা = হিযব/ দলই তাদের কাছে যা (= দ্বীনের যে রূপ বা খন্ড) আছে তা নিয়ে আনন্দিত।
যারা বিভক্ত করেছে তাদের দ্বীনকে/ জীবনব্যবস্থাকে, এ অবস্থায় যে, তারা হয়ে গেছে বিভিন্ন শিয়া/ দল (= যারা বিভিন্ন উপদলে ভাগ হয়ে একেক দল একেকভাবে দ্বীনকে পালন করে)। প্রত্যেক হিযব/ দলই তাদের কাছে যা (= দ্বীনের যে রূপ বা খন্ড) আছে তা নিয়ে আনন্দিত।
৩০:৩৩
ওয়া = আর। ইযা = যখন। মাছছান্নাছা = মানুষকে স্পর্শ করে। দুররুন = দু:খদুর্দশা। দাআও রব্বাহুম = তখন তারা তাদের রবকে ডাকে। মুনিবীনা ইলাইহি = তাঁর দিকে অভিমুখী হয়ে। ছুম্মা = তারপর। ইযা = যখন। আযাক্বাহুম মিনহু রহমাতান = তিনি তাদেরকে স্বাদ আস্বাদন করান তাঁর পক্ষ থেকে রহমতের/ দয়ার (স্বাদ)। ইযা = তখন। ফারীক্বুনম মিনহুম = তাদের মধ্য থেকে এক দল। বিরব্বিহিম = তাদের রবের সাথে। ইউশরিকূনা = শিরক করে।
আর যখন মানুষকে স্পর্শ করে দু:খদুর্দশা, তখন তারা তাদের রবকে ডাকে তাঁর দিকে অভিমুখী হয়ে। তারপর যখন তিনি তাদেরকে স্বাদ আস্বাদন করান তাঁর পক্ষ থেকে রহমতের/ দয়ার (স্বাদ), তখন তাদের মধ্য থেকে এক দল তাদের রবের সাথে শিরক করে।
৩০:৩৪
লিইয়াকফুরূ বিমা আতাইনাহুম = যেন আমরা তাদেরকে যা দিয়েছি উহার প্রতি কুফর/ অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারে। ফাতামাত্তাঊ = তাহলে তোমরা ভোগ করো। ফাছাওফা = তারপর শীঘ্রই তোমরা (এর পরিণতি) জানবে।
যেন আমরা তাদেরকে যা দিয়েছি উহার প্রতি কুফর/ অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারে। তাহলে তোমরা ভোগ করো, তারপর শীঘ্রই তোমরা (এর পরিণতি) জানবে।
৩০:৩৫
আম = নাকি। আনযালনা = আমরা নাযিল করেছি। আলাইহিম = তাদের উপর। ছুলতানান = কোন সুলতান/ প্রমাণপত্র। ফাহুয়া = যা। ইয়াতাকাল্লামু বিমা কানূ বিহী ইয়াশরিকূনা = তারা তাঁর সাথে যে শিরক করে উহা করতে বলে।
নাকি আমরা নাযিল করেছি তাদের উপর কোন সুলতান/ প্রমাণপত্র যা তারা তাঁর সাথে যে শিরক করে উহা করতে বলে।
৩০:৩৬
ওয়া = আর। ইযা = যখন। আযাক্বনান্নাছা রহমাতান = আমরা মানুষকে রহমতের স্বাদ আস্বাদন করাই। ফারিহূ বিহা = তখন সে উহা পেয়ে আনন্দিত হয়। ওয়া = আর। ইন = যদি। তুসিবহুম = তাদের কাছে পৌঁছে। ছাইয়িয়াতুম বিমা ক্বাদ্দামাত আইদীহিম = কোন মন্দ অবস্থা উহার কারণে যা আগেই করেছে তাদের হাতসমূহ (= তাদের কৃতকর্মের কারণে)। ইযা = তখন। হুম = তারা। ইয়াক্বনাত্বূনা = হতাশ হয়ে পড়ে।
আর যখন আমরা মানুষকে রহমতের স্বাদ আস্বাদন করাই, তখন সে উহা পেয়ে আনন্দিত হয়। আর যদি তাদের কাছে পৌঁছে কোন মন্দ অবস্থা উহার কারণে যা আগেই করেছে তাদের হাতসমূহ (= তাদের কৃতকর্মের কারণে), তখন তারা হতাশ হয়ে পড়ে।
৩০:৩৭
আওয়ালাম ইয়ারাও = তারা কি (ভেবে) দেখেনি। আন্নাল্লাহা = যে, আল্লাহ। ইয়াবছুতুর রিযক্বা = প্রশস্ত করে দেন রিযিককে। লিমাইঁ ইয়াশাউ = যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। ওয়া = আর। ইয়াক্বদুরু = তিনি প্রাকৃতিক আইন অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণমতো করে দেন (যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন)। ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতিন = আয়াতসমূহ/ নিদর্শনসমূহ। লিক্বাওমিইঁ ইউ’মিনূনা = সেই কওমের জন্য যারা ঈমান/ বিশ্বাস করে।
তারা কি (ভেবে) দেখেনি যে, আল্লাহ প্রশস্ত করে দেন রিযিককে যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন আর তিনি প্রাকৃতিক আইন অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণমতো করে দেন (যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন)। নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াতসমূহ/ নিদর্শনসমূহ সেই কওমের জন্য যারা ঈমান/ বিশ্বাস করে।
৩০:৩৮
ফাআতি = সুতরাং দিয়ে দাও। যাল ক্বুরবা = আত্মীয়-স্বজনকে। হাক্বক্বাহু = তার হক্ব/ অধিকার/ প্রাপ্য। ওয়াল মিসকীনা = আর মিসকীনকে। ওয়াবনাস সাবীলি = আর ইবনে সাবীলকে/ ছিন্নমূলদেরকে। যালিকা = উহাই। খায়রুল্লিল্লাযীনা = তাদের জন্য উত্তম যারা। ইউরীদূনা ওয়াজহাল্লাহি = আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে এরাদা/ ইচ্ছা করে। ওয়া = আর। উলায়িকা হুমুল মুফলিহূনা = উহারাই মুফলেহূন/ সফলতা লাভকারী।
সুতরাং দিয়ে দাও আত্মীয়-স্বজনকে তার হক্ব/ অধিকার/ প্রাপ্য আর মিসকীনকেও আর ইবনে সাবীলকেও/ ছিন্নমূলদেরকেও। উহাই তাদের জন্য উত্তম যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে এরাদা/ ইচ্ছা করে। আর উহারাই মুফলেহূন/ সফলতা লাভকারী।
৩০:৩৯
ওয়া = আর। মা আতাইতুম = যা কিছু তোমরা দাও। মির রিবা = সুদ হিসাবে। লিইয়ারবূ = যেন বৃদ্ধি পায়। ফী আমওয়ালিন্নাছি = মানুষের (= সুদগ্রহীতার) মালসম্পদে। ফালা ইয়ারবূ = প্রকৃতপক্ষে উহা বৃদ্ধি পায় না। ইনদাল্লাহি = আল্লাহর কাছে (= আল্লাহর হিসাব অনুসারে)। ওয়া = আর। মা আতাইতুম = যা কিছু তোমরা দাও। মিন যাকাতিন = যাকাত (= পরিশুদ্ধতামূলক প্রদেয়) হিসাবে। তুরীদূনা ওয়াজহাল্লাহি = আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে এরাদা/ ইচ্ছা করে। ফাউলায়িকা হুমুল মুদয়িফূনা = প্রকৃতপক্ষে তারাই (= এ যাকাত প্রদানকারীরাই) প্রবৃদ্ধিলাভকারী।
আর যা কিছু তোমরা দাও সুদ হিসাবে যেন বৃদ্ধি পায় মানুষের (= সুদগ্রহীতার) মালসম্পদে, প্রকৃতপক্ষে উহা বৃদ্ধি পায় না আল্লাহর কাছে (= আল্লাহর হিসাব অনুসারে)। আর যা কিছু তোমরা দাও যাকাত (= পরিশুদ্ধতামূলক প্রদেয়) হিসাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে এরাদা/ ইচ্ছা করে, প্রকৃতপক্ষে তারাই (= এ যাকাত প্রদানকারীরাই) প্রবৃদ্ধিলাভকারী।
৩০:৪০
আল্লাহুল্লাযী = আল্লাহই সেই সত্তা যিনি। খালাক্বাকুম = তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। ছুম্মা = তারপর। রযাক্বাকুম = তোমাদেরকে রিযিক দিয়েছেন। ছুম্মা = তারপর। ইউমীতুকুম = তোমাদেরকে মৃত্যু দিবেন। ছুম্মা = তারপর। ইউহয়ীকুম = তোমাদেরকে জীবিত করবেন। হাল মিন শুরাকায়িকুম = তোমাদের (কল্পিত) শরিকদের মধ্য থেকে কেউ আছে কি। মাইঁ ইয়াফআলু = যে করতে পারে। মিন যালিকুম মিন শাইয়িন = এসবের কোন কিছু। ছুবহানাহু = সুবহানাহু/ তিনি পবিত্র। ওয়া = আর। তায়ালা আম্মা ইউশরিকূনা = তারা যে শিরক করে তা থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে/ উপরে।
আল্লাহই সেই সত্তা যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তারপর তোমাদেরকে রিযিক দিয়েছেন তারপর তোমাদেরকে মৃত্যু দিবেন তারপর তোমাদেরকে জীবিত করবেন। তোমাদের (কল্পিত) শরিকদের মধ্য থেকে কেউ আছে কি যে করতে পারে এসবের কোন কিছু? সুবহানাহু/ তিনি পবিত্র আর তারা যে শিরক করে তা থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে/ উপরে।
৩০:৪১
যহারাল ফাছাদু = ছড়িয়ে পড়েছে ফাসাদ/ বিপর্যয়। ফিল বাররি ওয়াল বাহরি = স্থলভাগে ও জলভাগে। বিমা কাছাবাত আইদিন্নাছি = মানুষ যা উপার্জন করেছে তার কারণে (= মানুষের কৃতকর্মের কারণে)। লিইউযীক্বাহুম = যেন তিনি তাদেরকে স্বাদ আস্বাদন করান। বা’দাল্লাযী আমালূ = তারা যা কিছু আমল/ কাজ করেছে তার কিছু অংশের (প্রতিফলস্বরূপ)। লাআল্লাহুম ইয়ারজিঊনা = যেন তারা (সঠিক কাজের দিকে) ফিরে আসতে পারে।
ছড়িয়ে পড়েছে ফাসাদ/ বিপর্যয় স্থলভাগে ও জলভাগে মানুষ যা উপার্জন করেছে তার কারণে (= মানুষের কৃতকর্মের কারণে), যেন তিনি তাদেরকে স্বাদ আস্বাদন করান তারা যা কিছু আমল/ কাজ করেছে তার কিছু অংশের (প্রতিফলস্বরূপ); যেন তারা (সঠিক কাজের দিকে) ফিরে আসতে পারে।
৩০:৪২
ক্বুল = বলো। ছীরূ = ভ্রমণ করো। ফিল আরদি = পৃথিবীতে। ফানযুর = তারপর লক্ষ্য করো। কায়ফা = কিরূপ। কানা = হয়েছিলো। আক্বিবাতুল্লাযীনা মিন ক্বাবলু = পূর্ববর্তীদের পরিণতি। কানা আকছারুহুম = তাদের অধিকাংশই ছিলো। মুশরিকীনা = মুশরিক।
বলো, ‘ভ্রমণ করো পৃথিবীতে। তারপর লক্ষ্য করো, কিরূপ হয়েছিলো পূর্ববর্তীদের পরিণতি। তাদের অধিকাংশই ছিলো মুশরিক।
৩০:৪৩
ফাআক্বিম ওয়াজহাকা = সুতরাং তোমার মুখমন্ডলকে/ সত্তাকে কায়েম/ প্রতিষ্ঠিত করো। লিদ দ্বীনিল ক্বাইয়িমি = দ্বীনেল ক্বাইয়েমের/ (বিশ্বপ্রকৃতিতে) প্রতিষ্ঠিত দ্বীনের জন্য (= ইসলামের জন্য)। মিন ক্বাবলু = (নিজেকে দ্বীনে ক্বায়েম করো) উহার আগেই। আইঁ ইয়া’তিয়া ইয়াওমুন = যে, একদিন আসবে। লা মারাদ্দালাহু মিনাল্লাহি = আল্লাহর পক্ষ থেকে যা টলে যাওয়ার উপায় নেই। ইয়াওমায়িযিইঁ ইয়াসসদ্দাঊনা = সেদিন মানুষ পরস্পর থেকে আলাদা হয়ে যাবে।
সুতরাং তোমার মুখমন্ডলকে/ সত্তাকে কায়েম/ প্রতিষ্ঠিত করো দ্বীনেল ক্বাইয়েমের/ (বিশ্বপ্রকৃতিতে) প্রতিষ্ঠিত দ্বীনের জন্য (= ইসলামের জন্য); (নিজেকে দ্বীনে ক্বায়েম করো) উহার আগেই যে, একদিন আসবে আল্লাহর পক্ষ থেকে যা টলে যাওয়ার উপায় নেই, সেদিন মানুষ পরস্পর থেকে আলাদা হয়ে যাবে।
৩০:৪৪
মান = যে। কাফারা = কুফর করেছে। ফাআলাইহি কুফরুহু = তার উপরই বর্তাবে তার কুফর (= তার কুফরের শাস্তি সেই পাবে)। ওয়া = আর। মান = যে। আমিলা সলিহান = আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে। ফালিআনফুসিহিম = তাদের নিজেদের জন্যই। ইয়ামহাদূনা = তারা (সুখের) দোলনার ব্যবস্থা করে।
যে কুফর করেছে তার উপরই বর্তাবে তার কুফর (= তার কুফরের শাস্তি সেই পাবে)। আর যে আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে তাদের নিজেদের জন্যই তারা (সুখের) দোলনার ব্যবস্থা করে।
৩০:৪৫
লিইয়াযযিয়াল্লাযীনা = যেন আল্লাহ তাদেরকে প্রতিফল দেন যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ওয়া = আর। আমিলুস সলিহাতি = আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে। মিন ফাদলিহী = (প্রতিফল দেন) তাঁর অনুগ্রহ থেকে। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। লা ইউহিব্বুল কাফিরীনা = ভালবাসেন না কাফেরদেরকে।
যেন আল্লাহ তাদেরকে প্রতিফল দেন যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে আর আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে, (প্রতিফল দেন) তাঁর অনুগ্রহ থেকে। নিশ্চয় তিনি ভালবাসেন না কাফেরদেরকে।
৩০:৪৬
ওয়া = আর। মিন আয়াতিহী = তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে। আইঁ ইউরছিলার রীআহা = এও যে, তিনি প্রেরণ করেন বাতাস। মুবাশশিরাতিন = সুসংবাদস্বরূপ। ওয়া = আর। লিইউযীক্বাকুম = তোমাদেরকে স্বাদ আস্বাদন করানোর জন্য। মির রহমাতিহী = তাঁর রহমত থেকে। ওয়া = আর। লিতাযরিয়াল ফুলকু = যেন চলে নৌযান। বিআমরিহী = তাঁর আদেশে। ওয়া = আর। লিতাবতাগূ = যেন তোমরা তালাশ করো। মিন ফাদলিহী = তাঁর অনুগ্রহ থেকে (= হালাল জীবিকা)। ওয়া = আর। লাআল্লাকুম তাশকুরূনা = যেন তোমরা তাঁর শোকর/ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো।
আর তাঁর আয়াতসমূহের মধ্যে আছে এও যে, তিনি প্রেরণ করেন বাতাস সুসংবাদস্বরূপ আর তোমাদেরকে স্বাদ আস্বাদন করানোর জন্য তাঁর রহমত থেকে আর যেন চলে নৌযান তাঁর আদেশে আর যেন তোমরা তালাশ করো তাঁর অনুগ্রহ থেকে (= হালাল জীবিকা)। আর যেন তোমরা তাঁর শোকর/ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো।
৩০:৪৭
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। আরছালনা = আমরা প্রেরণ করেছিলাম। মিন ক্বাবলিকা = তোমার আগে। রুসুলান = অনেক রসূল। ইলা ক্বাওমিহিম = তাদের কওমের প্রতি। ফাজাউহুম = তখন তারা (= রসূলগণ) এসেছিলো। বিলবাইয়িনাতি = বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণসহ। ফানতাক্বামনা = তারপর আমরা প্রতিশোধ নিয়েছিলাম। মিনাল্লাযীনা = তাদের থেকে যারা। আজরামূ = অপরাধ করেছিলো। ওয়া = আর। কানা হাক্বক্বান আলাইনা = আমাদের উপর হক্ব/ দায়িত্ব ছিলো। নাসরুল মু’মিনীনা = মু’মিনদেরকে সাহায্য করা।
আর নিশ্চয় আমরা প্রেরণ করেছিলাম তোমার আগে অনেক রসূল তাদের কওমের প্রতি, তখন তারা (= রসূলগণ) এসেছিলো বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণসহ। তারপর আমরা প্রতিশোধ নিয়েছিলাম তাদের থেকে (= তার কওমের সেই লোকদের থেকে) যারা অপরাধ করেছিলো। আর আমাদের উপর হক্ব/ দায়িত্ব ছিলো মু’মিনদেরকে সাহায্য করা।
৩০:৪৮
আল্লাহুল্লাযী = আল্লাহ সেই সত্তা যিনি। ইউরছিলুর রীআহা = প্রেরণ করেন বাতাস। ফাতুছীরু ছাহাবান = ফলে তা সঞ্চালিত করে/ চালিয়ে দেয় মেঘমালাকে। ফাইয়াবছুতুহূ = তারপর তিনি তা ছড়িয়ে দেন। ফিস সামায়ি = আকাশে। কায়ফা = যেরূপে। ইয়াশাউ = তিনি ইচ্ছা করেন। ওয়া = আর। ইয়াজআলুহূ = তিনি উহাকে করেন। কিছাফান = খন্ড-বিখন্ড। ফাতারাল ওয়াদক্বা = তারপর তুমি দেখতে পাও বৃষ্টির ফোঁটা। ইয়াখরুজু = বের হয়। মিন খিলালিহী = উহার খিলাল/ ভিতর থেকে। ফাইযা = তারপর যখন। আসাবা বিহী = তিনি পৌঁছে দেন উহা। মাইঁ ইয়াশাউ মিন ইবাদিহী = তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা করেন। ইযা = তখন। হুম = তারা। ইয়াছতাবশিরূনা = আনন্দিত হয়ে যায়।
আল্লাহ সেই সত্তা যিনি প্রেরণ করেন বাতাস, ফলে তা সঞ্চালিত করে/ চালিয়ে দেয় মেঘমালাকে, তারপর তিনি তা ছড়িয়ে দেন আকাশে, যেরূপে তিনি ইচ্ছা করেন। আর তিনি উহাকে করেন খন্ড-বিখন্ড, তারপর তুমি দেখতে পাও বৃষ্টির ফোঁটা বের হয় উহার খিলাল/ ভিতর থেকে। তারপর যখন তিনি পৌঁছে দেন উহা তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা করেন, তখন তারা আনন্দিত হয়ে যায়।
৩০:৪৯
ওয়া = আর। ইন = যদিও। কানূ = তারা ছিলো। মিন ক্বাবলু আইঁ ইউনাযযালা আলাইহিম = তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণের আগে। মিন ক্বাবলিহী = ইতিপূর্বে। লামুবছিলীনা = (তারা ছিলো) নিরাশ।
আর যদিও তারা ছিলো তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণের আগে ইতিপূর্বে (তারা ছিলো) নিরাশ।
৩০:৫০
ফানযুর = সুতরাং লক্ষ্য করো। ইলা আছারি রহমাতিল্লাহি = আল্লাহর রহমতের প্রভাবের প্রতি। কায়ফা = কিরূপে। ইউহয়িল আরদা বা’দা মাওতিহা = তিনি সঞ্জীবিত করেন পৃথিবীকে/ ভূমিকে উহার মৃত্যুর/ শুষ্কতার পর। ইন্না = নিশ্চয়। যালিকা = এভাবে। লামুহয়িল মাওতা = তিনি মৃতকে জীবনদানকারী। ওয়া = আর। হুয়া = তিনি। আলা কুল্লি সাইয়িন ক্বাদীর = সকল সত্তা ও বিষয়ের উপর প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী।
সুতরাং লক্ষ্য করো আল্লাহর রহমতের প্রভাবের প্রতি। কিরূপে তিনি সঞ্জীবিত/ প্রাণবন্ত করেন পৃথিবীকে/ ভূমিকে উহার মৃত্যুর/ শুষ্কতার পর। নিশ্চয় এভাবে তিনি মৃতকে জীবনদানকারী। আর তিনি সকল সত্তা ও বিষয়ের উপর প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী।
৩০:৫১
ওয়া = আর (তারপর)। লায়িন = যদি। আরছালনা = তিনি প্রেরণ করেন। রীহান = এমন বাতাস। ফারাআওহু = যার ফলে তারা উহাকে (= ফসলকে) দেখে। মুসফাররান = হলুদবর্ণ। লাযল্লূ মিম বা’দিহী ইয়াকফুরূনা = তাহলে তারা উহার পর কুফর করতে থাকে।
আর (তারপর) যদি তিনি প্রেরণ করেন এমন বাতাস যার ফলে তারা উহাকে (= ফসলকে) দেখে হলুদবর্ণ, তাহলে তারা উহার পর কুফর(= অস্বীকার ও অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ) করতে থাকে।
৩০:৫২
ফাইন্নাকা = নিশ্চয় তুমি। লা তুছমিউল মাওতা = মৃতকে শুনাতে পারবে না। ওয়া = আর। তুছমিউছ সুম্মাদ দুআউ = বধিরকেও শুনাতে পারবে না কোন দোয়া/ আহবান। ইযা = যখন। ওয়াল্লাও = সে ফিরে যায়। মুদবিরীনা = পৃষ্ঠপ্রদর্শকারী হয়ে।
নিশ্চয় তুমি মৃতকে শুনাতে পারবে না আর বধিরকেও শুনাতে পারবে না কোন দোয়া/ আহবান, যখন সে ফিরে যায় পৃষ্ঠপ্রদর্শকারী হয়ে।
৩০:৫৩
ওয়া = আর। মা আনতা = তুমি হতে পারো না। বিহাদিল উময়ি = (যে সত্যবিমুখ সেই) অন্ধের পথ প্রদর্শক। আন দলালাতিহিম = তাদের বিভ্রান্তি থেকে। ইন = তুমি কাউকে শুনাতে পারবে না। ইল্লা মাইঁ ইউ’মিনু = তাকে ছাড়া যে ঈমান/ বিশ্বাস করে। বিআয়াতিনা = আমাদের আয়াতসমূহের প্রতি। ফাহুম = সেই সাথে তারা। মুসলিমূনা = মুসলিমূন/ (আল্লাহর কাছে) আত্মসমর্পণকারী।
আর তুমি হতে পারো না (যে সত্যবিমুখ সেই) অন্ধের পথ প্রদর্শক তাদের বিভ্রান্তি থেকে। তুমি কাউকে শুনাতে পারবে না তাকে ছাড়া যে ঈমান/ বিশ্বাস করে আমাদের আয়াতসমূহের প্রতি, সেই সাথে তারা মুসলিমূন/ (আল্লাহর কাছে) আত্মসমর্পণকারী।
৩০:৫৪
আল্লাহুল্লাযী = আল্লাহ সেই সত্তা যিনি। খালাক্বাকুম = তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। মিন দু’ফিন = দুর্বলতা থেকে। ছুম্মা = তারপর। জাআলা মিম বা’দি দু’ফিন = তিনি ব্যবস্থা করেছেন এ দুর্বলতার পর। ক্বুওওয়াতান = শক্তি সামর্থের। ছুম্মা = তারপর। জাআলা মিম বা’দি ক্বুওওয়াতিন = তিনি ব্যবস্থা করেছেন এ শক্তি সামর্থের পর। দু’ফান = দুর্বলতার। ওয়া = ও। শায়বাতান = বার্ধক্যের। ইয়াখলুক্বু = তিনি সৃষ্টি করেন। মা ইয়াশাউ = যা তিনি ইচ্ছা করেন। ওয়া = আর। হুয়াল আলীমুল ক্বাদীরু = তিনি আলীম/ সর্বজ্ঞানী ও ক্বাদীর/ প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী।
আল্লাহ সেই সত্তা যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন দুর্বলতা থেকে। তারপর তিনি ব্যবস্থা করেছেন এ দুর্বলতার পর শক্তি সামর্থের। তারপর তিনি ব্যবস্থা করেছেন এ শক্তি সামর্থের পর দুর্বলতার ও বার্ধক্যের। তিনি সৃষ্টি করেন যা তিনি ইচ্ছা করেন। আর তিনি আলীম/ সর্বজ্ঞানী ও ক্বাদীর/ প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী।
৩০:৫৫
ওয়া = আর। ইয়াওমা = যেদিন। তাক্বূমুছ ছায়াতু = সায়াত/ প্রলয় কায়েম/ সংগঠিত হবে। ইউক্বছিমুল মুজরিমূনা = (সেদিন) কসম করবে অপরাধীরা। মা লাবিছূ = (এ কথা বলতে যে,) আমরা অবস্থান করিনি। গায়রা ছায়াতিন = সায়াত/ মুহুর্তকাল ছাড়া। কাযালিকা = এভাবেই। কানূ ইউ’ফাকূনা = তারা ধোঁকা খেয়েছিলো।
আর যেদিন সায়াত/ প্রলয় কায়েম/ সংগঠিত হবে (সেদিন) কসম করবে অপরাধীরা (এ কথা বলতে যে,) ‘আমরা অবস্থান করিনি সায়াত/ মুহুর্তকাল ছাড়া’। এভাবেই তারা ধোঁকা খেয়েছিলো।
৩০:৫৬
ওয়া = আর। ক্বলাল্লাযীনা = তারা বলবে যাদেরকে। উতুল ইলমা ওয়াল ঈমানা = ইলম/ জ্ঞান ও ঈমান/ বিশ্বাস দেয়া হয়েছিলো। লাক্বাদ = নিশ্চয়। লাবিছতুম = তোমরা অবস্থান করেছিলে। ফী কিতাবিল্লাহি = আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী। ইলা ইয়াওমাল বা’ছি = পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত। ফাহাযা = এটাই তো হলো। ইয়াওমাল বা’ছু = পুনরুত্থান দিবস। ওয়ালাকিন্নাকুম কুনতুম লা তা’লামূনা = কিন্তু তোমরা জানতে না।
আর তারা বলবে যাদেরকে ইলম/ জ্ঞান ও ঈমান/ বিশ্বাস দেয়া হয়েছিলো, ‘নিশ্চয় তোমরা অবস্থান করেছিলে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত। এটাই তো হলো পুনরুত্থান দিবস। কিন্তু তোমরা জানতে না’।
৩০:৫৭
ফাইয়াওমায়িযিল্লা ইয়ানফাউল্লাযীনা যলামূ = সুতরাং সেদিন কোন উপকার দেবে না তাদের জন্য যারা যুলুম করেছে। মা’যিরাতাহুম = তাদের ওযর অজুহাত। ওয়া = আর। লা = না। হুম = তাদেরকে। ইউছতা’তাবূনা = ক্ষমাপ্রার্থনার মাধ্যমে সন্তুষ্টিলাভের/ সংশোধনের কোন সুযোগ দেয়া হবে।
সুতরাং সেদিন কোন উপকার দেবে না তাদের জন্য যারা যুলুম করেছে তাদের ওযর অজুহাত। আর না তাদেরকে ক্ষমাপ্রার্থনার মাধ্যমে সন্তুষ্টিলাভের/ সংশোধনের কোন সুযোগ দেয়া হবে।
৩০:৫৮
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। দরাবনা = আমরা পেশ করেছি। লিন্নাছি = মানবজাতির জন্য। ফী হাযাল ক্বুরআনি = এই আল কুরআনে। মিন কুল্লি মাছালিন = প্রত্যেক প্রকার মাছাল/ দৃষ্টান্ত। ওয়া = আর। লায়িন = যদি। জি’তাহুম = তুমি তাদের কাছে নিয়ে আসো। বিআয়াতিন = যে কোন আয়াত/ নিদর্শন। লাইয়াক্বূলান্নাল্লাযীনা = তাহলেও তারা বলবে যারা। কাফারূ = কুফর করেছে। ইন আনতুম = তোমরা নও। ইল্লা মুবতিলূনা = বাতিলপন্থী ছাড়া অন্যকিছু।
আর নিশ্চয় আমরা পেশ করেছি মানবজাতির জন্য এই আল কুরআনে প্রত্যেক প্রকার মাছাল/ দৃষ্টান্ত। আর যদি তুমি তাদের কাছে নিয়ে আসো যে কোন আয়াত/ নিদর্শন, তাহলেও তারা বলবে যারা কুফর করেছে, ‘তোমরা নও বাতিলপন্থী ছাড়া অন্য কিছু’।
৩০:৫৯
কাযালিকা = এরূপে। ইয়াতবাউল্লাহু = আল্লাহ মোহর করে দেন। আলা ক্বুলূবিল্লাযীনা = তাদের কলবসমূহের উপর যারা। লা ইয়া’লামূনা = জেনে নেয় না।
এরূপে আল্লাহ মোহর করে দেন তাদের কলবসমূহের উপর যারা জেনে নেয় না।
৩০:৬০
ফাসবির = সুতরাং সবর করো/ ধৈর্য ধরো। ইন্না = নিশ্চয়। ওয়া’দাল্লাহি = আল্লাহর ওয়াদা। হাক্বক্বুন = হক্ব/ সত্য। ওয়া = আর। লা ইয়াছতাখিফান্নাকাল্লাযীনা = তারা যেন তোমাকে হালকা হিসাবে না পায় যারা। লা ইউক্বিনূনা = ইয়াকীন/ নিশ্চিত ধারণা ও প্রত্যয় রাখে না।
সুতরাং সবর করো/ ধৈর্য ধরো। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা হক্ব/ সত্য। আর তারা যেন তোমাকে হালকা হিসাবে না পায় যারা ইয়াকীন/ নিশ্চিত ধারণা ও প্রত্যয় রাখে না।