২৬:১
তোয়া সীন মীম = তোয়া সীন মীম।
তোয়া সীন মীম।
২৬:২
তিলকা = ইহা। আয়াতুল কিতাবিল মুবীন = স্পষ্ট/ প্রকাশ্য কিতাবের আয়াতসমূহ।
ইহা স্পষ্ট/ প্রকাশ্য কিতাবের আয়াতসমূহ।
২৬:৩
লাআল্লাকা = সম্ভবত তুমি। বাখিউন নাফসাকা = তোমার নফসকে/ স্বীয় সত্তাকে বিনষ্টকারী হয়ে যাবে। আল্লা ইয়াকূনূ মু’মিনীনা = এজন্য যে, তারা মু’মিনীন/ বিশ্বাসী হচ্ছে না।
সম্ভবত তুমি তোমার নফসকে/ স্বীয় সত্তাকে বিনষ্টকারী হয়ে যাবে, এজন্য যে, তারা মু’মিনীন/ বিশ্বাসী হচ্ছে না।
২৬:৪
ইন্নাশা’ = যদি আমরা ইচ্ছা করতাম। নুনাযযিল আলাইহিম = তাদের উপর নাযিল করতাম। মিনাছ ছামায়ি = আকাশ থেকে। আয়াতান = এমন কোন আয়াত/ নিদর্শন। ফাযল্লাত = যার ফলে হয়ে পড়তো। আ’নাক্বুহুম = তাদের ঘাড়গুলো। লাহা = উহার জন্য। খাদিয়ীনা = নমনীয়।
যদি আমরা ইচ্ছা করতাম তাহলে তাদের উপর নাযিল করতাম আকাশ থেকে এমন কোন আয়াত/ নিদর্শন, যার ফলে হয়ে পড়তো তাদের ঘাড়গুলো উহার জন্য নমনীয়।
২৬:৫
ওয়া = আর। মা ইয়া’তীহিম = তাদের কাছে আসেনি। মিন যিকরিন = কোন যিকির/ স্মরণিকা/ সংবিধান। মিনার রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের (= আল্লাহর) পক্ষ থেকে। মুহদাছিন = নতুন করে পাঠানো বাণীরূপে। ইল্লা = এছাড়া যে। কানূ = তারা ছিলো। আনহু = উহা থেকে। মু’রিদীনা = বিমুখ।
আর তাদের কাছে আসেনি কোন যিকির/ স্মরণিকা/ সংবিধান, রহমানের/ দয়াময়ের (= আল্লাহর) পক্ষ থেকে নতুন করে পাঠানো বাণীরূপে, এছাড়া যে, তারা ছিলো উহা থেকে বিমুখ।
২৬:৬
ফাক্বাদ = নিশ্চয়। কাযযাবূ = তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। ফাছাইয়া’তীহিম = শীঘ্রই তাদের কাছে আসবে। আমবাউ মা কানূ বিহী ইয়াছতাহযিঊনা = তারা যা সম্পর্কে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতো তা সম্পর্কে নিগূঢ় তথ্যসমূহ/ অজানা সংবাদসমূহ।
নিশ্চয় তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। শীঘ্রই তাদের কাছে আসবে তারা যা সম্পর্কে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতো তা সম্পর্কে নিগূঢ় তথ্যসমূহ/ অজানা সংবাদসমূহ।
২৬:৭
আওয়ালাম ইয়ারাও = তারা কি লক্ষ্য করেনি। ইলাল আরদি = পৃথিবীর দিকে। কাম = কত বিপুল পরিমাণে। আমবাতনা = আমরা উদ্গত করেছি। ফীহা = উহাতে। মিন কুল্লি জাওযিন কারীমিন = প্রত্যেক মানসম্পন্ন/ উৎকৃষ্ট উদ্ভিদ-জোড়া।
তারা কি লক্ষ্য করেনি পৃথিবীর দিকে? কত বিপুল পরিমাণে আমরা উদ্গত করেছি উহাতে প্রত্যেক মানসম্পন্ন/ উৎকৃষ্ট উদ্ভিদ-জোড়া।
২৬:৮
ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতিন = আয়াত/ নিদর্শন। ওয়া = আর। মা কানা আকছারুহুম মু’মিনীনা = তাদের অধিকাংশ মু’মিনীন/ বিশ্বাসী নয়।
নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন। আর তাদের অধিকাংশ মু’মিনীন/ বিশ্বাসী নয়।
২৬:৯
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বাকা = তোমার রব। লাহুয়াল আযীযুর রহীমু = আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ অত্যন্ত দয়াশীল।
আর নিশ্চয় তোমার রব আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ অত্যন্ত দয়াশীল।
২৬:১০
ওয়া = আর। ইয = যখন। নাদা রব্বুকা মূসা = তোমার রব মূসাকে ডেকে বলেছিলেন। আনি’তিল ক্বাওমায যালিমীনা = যে, ‘তুমি যালিম কওমের কাছে যাও।
আর যখন তোমার রব মূসাকে ডেকে বলেছিলেন যে, ‘তুমি যালিম কওমের কাছে যাও।
২৬:১১
ক্বাওমা ফিরআউনা = ফেরাউনের কওমের কাছে। আলা ইয়াত্তাক্বূনা = তারা তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে কিনা।
ফেরাউনের কওমের কাছে। তারা তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে কিনা।
২৬:১২
ক্বলা = সে (= মূসা) বললো। রব্বী = হে আমার রব। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। আখাফু = ভয় করি। আইঁ ইউকাযযিবূনি = যে, তারা আমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করবে।
সে (= মূসা) বললো, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি ভয় করি যে, তারা আমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করবে।
২৬:১৩
ওয়া = আর। ইয়াদ্বীক্বু সদরী = আমার সদর/ মস্তিষ্ক সংকুচিত হচ্ছে। ওয়া = আর। লা ইয়ানতালিক্বু লিছানী = আমার জিহ্বা সহজভাবে সঞ্চালিত হয় না (= আমার কথায় জড়তা থাকে)। ফাআরছিল ইলা হারূনা = তাই আপনি হারূনকেও (আমার সাথে) প্রেরণ করুন।
আর আমার সদর/ মস্তিষ্ক সংকুচিত হচ্ছে, আর আমার জিহ্বা সহজভাবে সঞ্চালিত হয় না (= আমার কথায় জড়তা থাকে)। তাই আপনি হারূনকেও (আমার সাথে) প্রেরণ করুন।
২৬:১৪
ওয়া = আর। লাহুম আলাইয়া জামবুন = আমার উপর তাদের একটি অভিযোগ আছে। ফাআখাফু = তাই আমি ভয় করি। আইঁ ইয়াক্বতুলূনি = যে, তারা আমাকে কতল/ হত্যা করবে।
আর আমার উপর তাদের একটি অভিযোগ আছে। তাই আমি ভয় করি যে, তারা আমাকে কতল/ হত্যা করবে।
২৬:১৫
ক্বলা = তিনি (= আল্লাহ) বললেন। কাল্লা = কখনো না। ফাযহাবা = সুতরাং তোমরা দুজনেই যাও। বিআয়াতিনা = আমাদের আয়াতসমূহসহ। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। মাআকুম = তোমাদের সাথে আছি। মুছতামিঊনা = (প্রার্থনাসহ সকল কথা) শ্রবণকারী হিসাবে।
তিনি (= আল্লাহ) বললেন, ‘কখনো না। সুতরাং তোমরা দুজনেই যাও আমাদের আয়াতসমূহসহ। নিশ্চয় আমরা তোমাদের সাথে আছি (প্রার্থনাসহ সকল কথা) শ্রবণকারী হিসাবে।
২৬:১৬
ফা’তিয়া ফিরআউনা = তোমরা দুজনে ফেরাউনের কাছে যাও। ফাক্বুলা = তারপর তোমরা দুজন বলো। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। রাসূলু রব্বিল আলামীনা = রব্বুল আলামীনের রসূল।
তোমরা দুজনে ফেরাউনের কাছে যাও। তারপর তোমরা দুজন বলো, ‘নিশ্চয় আমরা রব্বুল আলামীনের রসূল।
২৬:১৭
আন = আরো বলো যে। আরছিল মাআনা বানী ইসরাইলা = পাঠিয়ে দাও আমাদের সাথে বনী ইসরাইলকে।
আরো বলো যে, ‘পাঠিয়ে দাও আমাদের সাথে বনী ইসরাইলকে।
২৬:১৮
ক্বলা = সে (= ফেরাউন) বলেছিলো। আলাম নুরব্বিকা = আমরা কি তোমাকে প্রতিপালন করিনি। ফীনা = আমাদের মধ্যে। ওয়ালীদান = তোমার শৈশবে। ওয়া = আর। লাবিছতা = তুমি কাটিয়েছো। ফীনা = আমাদের মধ্যে। মিন উমরিকা = তোমার বয়সের। ছিনীনা = কয়েকটি বছর।
সে (= ফেরাউন) বলেছিলো, ‘আমরা কি তোমাকে প্রতিপালন করিনি আমাদের মধ্যে তোমার শৈশবে? আর তুমি কাটিয়েছো আমাদের মধ্যে তোমার বয়সের কয়েকটি বছর।
২৬:১৯
ওয়া = আর। ফাআলতা ফাআলতাকাল্লাতী ফাআলতা = তুমি করেছিলে তোমার কর্ম যা তুমি করেছিলে। ওয়া = আর। আনতা = তুমি। মিনাল কাফিরীনা = কাফিরদের/ অকৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত।
আর তুমি করেছিলে তোমার কর্ম যা তুমি করেছিলে। আর তুমি কাফিরদের/ অকৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:২০
ক্বলা = সে (= মূসা) বলেছিলো। ফাআলতুহা = আমি উহা করেছিলাম। ইযাওঁ ওয়া আনা = যখন আমি ছিলাম। মিনাদ দল্লীনা = পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত।
সে (= মূসা) বলেছিলো, ‘আমি উহা করেছিলাম, যখন আমি ছিলাম পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:২১
ফাফারারতু = তারপর আমি পালিয়ে গিয়েছিলাম। মিনকুম = তোমাদের থেকে। লাম্মা = যখন। খিফতুকুম = আমি তোমাদেরকে ভয় করেছিলাম। ফাওয়াহাবা লী = তারপর আমাকে দান করলেন। রব্বী = আমার রব। হুকমাওঁ ওয়া জাআলনী = হুকমা/ বিচার-ক্ষমতা ও আমাকে করলেন। মিনাল মুরছালীনা = রসূলদের অন্তর্ভুক্ত।
তারপর আমি পালিয়ে গিয়েছিলাম তোমাদের থেকে, যখন আমি তোমাদেরকে ভয় করেছিলাম। তারপর আমাকে দান করলেন আমার রব হুকমা/ বিচার-ক্ষমতা ও আমাকে করলেন রসূলদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:২২
ওয়া = আর। তিলকা = এই। নি’মাতুন = অনুগ্রহ। তামুন্নুহা আলাইয়া = আমার উপর যে উপকার তুমি করেছো। আন = তার কারণ তো এই যে। আবাত্তা বানী ইসরাইলা = তুমি বনী ইসরাইলকে দাস বানিয়ে রেখেছো।
আর এই অনুগ্রহ, আমার উপর যে উপকার তুমি করেছো; তার কারণ তো এই যে, তুমি বনী ইসরাইলকে দাস বানিয়ে রেখেছো।
২৬:২৩
ক্বলা ফিরআউনা = ফেরাউন বললো। ওয়া মা রব্বুল আলামীনা = রব্বুল আলামীন আবার কে?
ফেরাউন বললো, ‘রব্বুল আলামীন আবার কে?’
২৬:২৪
ক্বলা = সে (= মূসা) বললো। রব্বুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া মা বায়নাহুমা = যিনি আকাশমন্ডলীর ও পৃথিবীর এবং এ দুয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর রব। ইন = যদি। কুনতুম = তোমরা হও। মূক্বীনীন = ইয়াকীনকারী (নিশ্চয়তাসম্পন্ন ধারণা অবলম্বনকারী)।
সে (= মূসা) বললো, ‘যিনি আকাশমন্ডলীর ও পৃথিবীর এবং এ দুয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর রব। যদি তোমরা হও ইয়াকীনকারী (নিশ্চয়তাসম্পন্ন ধারণা অবলম্বনকারী)।
২৬:২৫
ক্বলা লিমান হাওলাহু = সে (= ফেরাউন) তার চারপাশের লোকদেরকে বললো। আলা তাছতামিঊনা = তোমরা শুনছো কিনা?
সে (= ফেরাউন) তার চারপাশের লোকদেরকে বললো, ‘তোমরা শুনছো কিনা?’
২৬:২৬
ক্বলা = সে (= মূসা) বললো। রব্বুকুম = তিনি তোমাদেরও রব। ওয়া = আর। রব্বু আবায়িকুমুল আওয়ালীনা = তোমাদের পূর্ববর্তী বাপদাদারও রব।
সে (= মূসা) বললো, ‘তিনি তোমাদেরও রব আর তোমাদের পূর্ববর্তী বাপদাদারও রব।
২৬:২৭
ক্বলা = সে (= ফেরাউন) বললো। ইন্না = নিশ্চয়। রসূলাকুমুল্লাযী উরছিলা ইলাইকুম = তোমাদের প্রতি প্রেরিত রসূল তো। লামাজনূনা = মাজনূন/ জ্বিনগ্রস্ত।
সে (= ফেরাউন) বললো, ‘নিশ্চয় তোমাদের প্রতি প্রেরিত রসূল তো মাজনূন/ জ্বিনগ্রস্ত।
২৬:২৮
ক্বলা = সে (= মূসা) বললো। রব্বুল মাশরিক্বি ওয়াল মাগরিবি = তিনি পূর্ব দিগন্তেরও রব, পশ্চিম দিগন্তেরও রব। ওয়া মা বায়নাহুমা = আর এ দুয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুরও রব। ইন = যদি। কুনতুম তা’ক্বিলূনা = তোমরা আকল/ বিবেক-বুদ্ধি/ common sense প্রয়োগ করো।
সে (= মূসা) বললো, ‘তিনি পূর্ব দিগন্তেরও রব, পশ্চিম দিগন্তেরও রব, আর এ দুয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুরও রব। যদি তোমরা আকল/ বিবেক-বুদ্ধি/ common sense প্রয়োগ করো।
২৬:২৯
ক্বলা = সে (= ফেরাউন) বললো। লাইনিত্তাখাজা = যদি তুমি গ্রহণ করো। ইলাহান গায়রী = আমি ভিন্ন কোন ইলাহকে। লাজআলান্নাকা = তাহলে আমি তোমাকে করবো। মিনাল মাছজূনীনা = কারারুদ্ধদের অন্তর্ভুক্ত।
সে (= ফেরাউন) বললো, ‘যদি তুমি গ্রহণ করো আমি ভিন্ন কোন ইলাহকে, তাহলে আমি তোমাকে করবো কারারুদ্ধদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:৩০
ক্বলা = সে (= মূসা) বললো। আওয়ালাও জি’তুকা বিশাইয়িম মুবীনিন = যদিও আমি তোমার কাছে স্পষ্ট বিষয় এনে থাকি তবুও কি?
সে (= মূসা) বললো, ‘যদিও আমি তোমার কাছে স্পষ্ট বিষয় এনে থাকি তবুও কি?
২৬:৩১
ক্বলা = সে (= ফেরাউন) বললো। ফা’তি বিহী = তাহলে উহা নিয়ে আসো। ইন = যদি। কুনতা = তুমি হও। মিনাস সদিক্বীনা = সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
সে (= ফেরাউন) বললো, ‘তাহলে উহা নিয়ে আসো, যদি তুমি হও সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:৩২
ফাআলক্বা = সুতরাং সে (= মূসা) নিক্ষেপ/ উপস্থাপন করেছিলো। আসাহু = তার দৃঢ় প্রত্যয়ের লাঠি। ফাইযা = তারপর তখন। হিয়া = উহা (প্রতিভাত) হলো। ছু’বানুম মুবীনুন = স্পষ্ট অজগরস্বরূপ।
সুতরাং সে (= মূসা) নিক্ষেপ/ উপস্থাপন করেছিলো তার দৃঢ় প্রত্যয়ের লাঠি। তারপর তখন উহা (প্রতিভাত) হলো স্পষ্ট অজগরস্বরূপ।
২৬:৩৩
ওয়া = আর। নাযাআ = সে (= মূসা) টেনে বের করেছে। ইয়াদাহু = তার হাত। ফাইযা = তারপর তখন। হিয়া = উহা হয়েছে। বায়দাউ = ধবধবে সাদা/ শুভ্র সমুজ্জ্বল। লিন্নাযিরীনা = দর্শকদের জন্য।
আর সে (= মূসা) টেনে বের করেছে তার হাত (অত্যন্ত দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের সাথে)। সুতরাং তখন উহা হয়েছে (দুর্দম সাহসের আভায়) শুভ্র সমুজ্জল, দর্শকদের জন্য।
২৬:৩৪
ক্বলা লিল মালায়ি হাউলা-উ = সে (= ফেরাউন) তার চারপাশের মালায়েহীকে/ নির্বাহী পরিষদকে বলেছিলো। ইন্না হাযা = নিশ্চয় এই ব্যক্তি। লাছাহিরুন আলীমুন = একজন জ্ঞানী (কথার) যাদুকর।
সে (= ফেরাউন) তার চারপাশের মালায়েহীকে/ নির্বাহী পরিষদকে বলেছিলো, ‘নিশ্চয় এই ব্যক্তি একজন জ্ঞানী (কথার) যাদুকর’।
২৬:৩৫
ইউরীদু = সে এরাদা/ ইচ্ছা করে। আইঁ ইউখরিজাকুম = তোমাদেরকে বের করে দিতে। মিন আরদিকুম = তোমাদের দেশ থেকে। বিছিহরিহী = তার (কথার) যাদুর মাধ্যমে। ফামাযা তা’মুরূনা = সুতরাং তোমরা কী সিদ্ধান্ত দেবে?
সে এরাদা/ ইচ্ছা করে তোমাদেরকে বের করে দিতে তোমাদের দেশ থেকে তার (কথার) যাদুর মাধ্যমে। সুতরাং তোমরা কী সিদ্ধান্ত দেবে?’
২৬:৩৬
ক্বলূ = তারা বললো। আরজিহ ওয়া আখাহু = তার ও তার ভাইয়ের ব্যাপারটা স্থগিত রাখুন। ওয়াবআছ = আর প্রেরণ করুন। ফিল মাদায়িনি = মদীনাসমূহে/ শহরসমূহে। হাশিরীনা = লোক সংগ্রহকারীদেরকে।
তারা বললো, ‘তার ও তার ভাইয়ের ব্যাপারটা স্থগিত রাখুন। আর প্রেরণ করুন মদীনাসমূহে/ শহরসমূহে লোক সংগ্রহকারীদেরকে।
২৬:৩৭
ইয়া’তূকা = তারা নিয়ে আসবে। বিকুল্লি = প্রত্যেক। ছাহহারিন আলীমিন = জ্ঞানী (কথার) যাদুকরকে।
তারা নিয়ে আসবে প্রত্যেক জ্ঞানী (কথার) যাদুকরকে।
২৬:৩৮
ফাজুমিয়াছ ছাহারাতু = সুতরাং জমায়েত করা হলো যাদুকরদেরকে। লিমীক্বাতি = মীক্বাতে/ নির্দিষ্ট সময়ে। ইয়াওমিম মা’লূমিন = পরিজ্ঞাত/ নির্দিষ্ট দিবসে।
সুতরাং জমায়েত করা হলো যাদুকরদেরকে মীক্বাতে/ নির্দিষ্ট সময়ে পরিজ্ঞাত/ নির্দিষ্ট দিবসে।
২৬:৩৯
ওয়া = আর। ক্বীলা লিন্নাছি = গণমানুষকে বলা হলো। হাল আনতুম মুজতামিঊনা = তোমরা কি জমায়েত হচ্ছো?
আর গণমানুষকে বলা হলো, ‘তোমরা কি জমায়েত হচ্ছো?’
২৬:৪০
লাআল্লানা = যেন আমরা। নাত্তাবিউছ ছাহারাতা = ইত্তেবা/ অনুসরণ করতে পারি (ফেরাউনের পক্ষের) কথার যাদুকরদেরকে। ইন = যদি। কানূ হুমুল গালিবূনা = তারা হয় বিজয়ী।
যেন আমরা ইত্তেবা/ অনুসরণ করতে পারি (ফেরাউনের পক্ষের) যাদুকরদেরকে যদি তারা হয় বিজয়ী।
২৬:৪১
ফালাম্মা = তারপর যখন। জাআছ ছাহারাতু = (ফেরাউনের পক্ষে) যাদুকরগণ এসেছিলো। ক্বলূ = তারা বলেছিলো। লিফিরআউনা = ফেরাউনকে উদ্দেশ্য করে। আয়িন্না লানা লাআজরান = নিশ্চিতভাবে আমাদের জন্য নিশ্চিত পুরস্কার আছে কি? ইন = যদি। কুন্না নাহনুল গালিবূনা = আমরা হই বিজয়ী।
তারপর যখন (ফেরাউনের পক্ষে) যাদুকরগণ এসেছিলো, তখন তারা বলেছিলো ফেরাউনকে উদ্দেশ্য করে, ‘নিশ্চিতভাবে আমাদের জন্য নিশ্চিত পুরস্কার আছে কি, যদি আমরা হই বিজয়ী?
২৬:৪২
ক্বলূ = সে (= ফেরাউন) বললো। নাআম = হ্যাঁ। ওয়া = আর। ইন্নাকুম = নিশ্চয় তোমরা। ইযাল লামিনাল মুক্বাররবীনা = তখন হবে আমার নিকটবর্তীদের অন্তর্ভুক্ত।
সে (= ফেরাউন) বললো, ‘হ্যাঁ। আর নিশ্চয় তোমরা তখন হবে আমার নিকটবর্তীদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:৪৩
ক্বলা লাহুম মূসা = মূসা তাদেরকে বললো। আলক্বা = তোমরা উপস্থাপন করো। মা আনতুম মুলক্বূনা = যা তোমাদের উপস্থাপন করার আছে।
মূসা তাদেরকে বললো, ‘তোমরা উপস্থাপন করো যা তোমাদের উপস্থাপন করার আছে’।
২৬:৪৪
ফালক্বাও = সুতরাং তারা উপস্থাপন করলো। হিবালাহুম ওয়া ইসিয়্যাহুম = তাদের রশিগুলোকে ও লাঠিগুলোকে। ওয়া = আর। ক্বলূ = তারা বললো। বিইযযাতি ফিরআউনা = ফেরাউনের সম্মানে। ইন্না লানাহনুল গালিবূনা = নিশ্চয় আমরাই বিজয়ী হবো।
সুতরাং তারা উপস্থাপন করলো তাদের রশিগুলোকে ও লাঠিগুলোকে। আর তারা বললো, ‘ফেরাউনের সম্মানে নিশ্চয় আমরাই বিজয়ী হবো’।
২৬:৪৫
ফাআলক্বা মূসা = তারপর মূসা নিক্ষেপ করলো। আসাহু = তার লাঠি। ফাইযা = তখন। হিয়া = উহা। তালক্বাফু = গিলে ফেললো। মা ইয়া’ফিকূনা = যা কিছু মনগড়াভাবে তারা বলেছিলো।
তারপর মূসা নিক্ষেপ করলো তার লাঠি। তখন উহা গিলে ফেললো, যা কিছু মনগড়াভাবে তারা বলেছিলো।
২৬:৪৬
ফাউলক্বিয়াছ ছাহারাতু = তারপর (মূসার উপস্থাপনের পর) নত হয়ে গেলো ছাহারাত/ যাদুকরগণ। ছাজিদীনা = সিজদাকারী হয়ে।
তারপর (মূসার উপস্থাপনের পর) নত হয়ে গেলো ছাহারাত/ যাদুকরগণ সিজদাকারী হয়ে।
২৬:৪৭
ক্বলূ = তারা বললো। আমান্না = আমার ঈমান/ বিশ্বাস করলাম। বিরব্বিল আলামীনা = রব্বুল আলামীনের প্রতি।
তারা বললো, ‘আমরা ঈমান/ বিশ্বাস করলাম রব্বুল আলামীনের প্রতি।
২৬:৪৮
রব্বি মূসা ওয়া হারূনা = মূসার ও হারূনের রবের প্রতি।
মূসার ও হারূনের রবের প্রতি।
২৬:৪৯
ক্বলা = সে (= ফেরাউন) বললো। আমানতুম লাহু = তোমরা কি ঈমান/ বিশ্বাস করলে তাঁর প্রতি। ক্বাবলা আন আযানা লাকুম = আমি তোমাদেরকে অনুমতি দেয়ার আগেই। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে। লাকাবীরুকুম = তোমাদের কবীর/ বড় (গুরু)। আল্লাযী = যে। আল্লামাকুমুছ ছিহরা = তোমাদেরকে ছেহর/ যাদুবিদ্যা শিক্ষা দিয়েছে। ফালাছাওফা = সুতরাং শীঘ্রই। তা’লামূনা = তোমরা (ইহার পরিণাম) জানতে পারবে। লাউক্বাততিয়ান্না = নিশ্চয় আমি কেটে নেব। আয়দিয়াকুম ওয়া আরজুলাকুম = তোমাদের হাতসমূহ ও তোমাদের পাসমূহ। মিন খিলাফিন = বিপরীতক্রমে (ডান হাত বাম পা বা বাম হাত ডান পা)। ওয়া = আর। লাউসাল্লিবান্নাকুম আজমাঈনা = আমি তোমাদের সবাইকে ক্রুশবিদ্ধ করবো/ শূলে চড়াবো।
সে (= ফেরাউন) বললো, ‘তোমরা কি ঈমান/ বিশ্বাস করলে তাঁর প্রতি আমি তোমাদেরকে অনুমতি দেয়ার আগেই? নিশ্চয় সে তোমাদের কবীর/ বড় (গুরু), যে তোমাদেরকে ছেহর/ যাদুবিদ্যা শিক্ষা দিয়েছে। সুতরাং শীঘ্রই তোমরা (ইহার পরিণাম) জানতে পারবে। নিশ্চয় আমি কেটে নেব তোমাদের হাতসমূহ ও তোমাদের পাসমূহ বিপরীতক্রমে (ডান হাত বাম পা বা বাম হাত ডান পা), আর আমি তোমাদের সবাইকে ক্রুশবিদ্ধ করবো/ শূলে চড়াবো।
২৬:৫০
ক্বলূ = তারা (= যাদুকররা) বললো। লা দয়রা = কোন ক্ষতি নেই। ইন্না = নিশ্চয়। ইলা রব্বিনা = আমাদের রবের দিকেই। মুনক্বালিবূনা = আমরা ফিরে যাবো।
তারা (= যাদুকররা) বললো, ‘কোন ক্ষতি নেই। নিশ্চয় আমাদের রবের দিকেই আমরা ফিরে যাবো।
২৬:৫১
ইন্না = নিশ্চয় আমরা। নাতমাউ = আমরা আশা করি। আইঁ ইয়াগফিরা লানা রব্বানা = যে, ক্ষমা করে দিবেন আমাদের জন্য আমাদের রব। খাতাইয়াতানা = আমাদের যত গুনাহ খাতা। আন = এজন্য যে। কুন্না = আমরাই। আওয়ালাল মু’মিনীনা = প্রথম মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।
নিশ্চয় আমরা আমরা আশা করি যে, ক্ষমা করে দিবেন আমাদের জন্য আমাদের রব আমাদের যত গুনাহ খাতা, এজন্য যে, আমরাই প্রথম মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।
২৬:৫২
ওয়া = আর। আওহায়না ইলা মূসা = আমরা মূসার প্রতি ওহী করেছিলাম। আন = যে। আছরী বিইবাদী = (রাতেই) যাত্রা করো আমার বান্দাদেরকে নিয়ে। ইন্নাকুম মুত্তাবাঊনা = নিশ্চয় তোমাদের ইত্তেবা/ অনুসরণ করা/ পিছু নেয়া হবে।
আর আমরা মূসার প্রতি ওহী করেছিলাম যে, “(রাতেই) যাত্রা করো আমার বান্দাদেরকে নিয়ে। নিশ্চয় তোমাদের ইত্তেবা/ অনুসরণ করা/ পিছু নেয়া হবে”।
২৬:৫৩
ফাআরছালা ফিরআউনা = তারপর ফেরাউন পাঠালো। ফিল মাদায়িনি = মদীনাসমূহে/ শহরসমূহে। হাশিরীনা = লোক সমবেতকারীদেরকে।
তারপর ফেরাউন পাঠালো মদীনাসমূহে/ শহরসমূহে লোক সমবেতকারীদেরকে।
২৬:৫৪
ইন্না = নিশ্চয়। হাউলায়ি = এরা। লাশিরযিমাতুন ক্বালীলূনা = অল্পসংখ্যক লোক।
(তারা লোকদেরকে বললো,) ‘নিশ্চয় এরা অল্পসংখ্যক লোক।
২৬:৫৫
ওয়া = আর। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। লানা = আমাদের জন্য। লাগায়িযূনা = ক্রোধউদ্রেককারী।
আর নিশ্চয় তারা আমাদের জন্য ক্রোধউদ্রেককারী।
২৬:৫৬
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। লাজামীউন হাযিরূনা = সদা-সতর্ক থাকা লোকসমষ্টি।
আর নিশ্চয় আমরা সদা-সতর্ক থাকা লোকসমষ্টি’।
২৬:৫৭
ফাআখরাজনাহুম = তারপর আমরা তাদেরকে বের করেছিলাম। মিন জান্নাতিওঁ ওয়া উয়ূনিন = তাদের বাগানসমূহ ও ঝর্ণাসমূহ থেকে।
তারপর আমরা তাদেরকে বের করেছিলাম তাদের বাগানসমূহ ও ঝর্ণাসমূহ থেকে।
২৬:৫৮
ওয়া কুনূযিন ওয়া মাক্বামিন কারীমিন = আর তাদের ধনভান্ডারসমূহ ও উচ্চমানের বাসস্থান থেকে।
আর তাদের ধনভান্ডারসমূহ ও উচ্চমানের বাসস্থান থেকে।
২৬:৫৯
কাযালিকা = এরূপই হয়েছিলো। ওয়া = আর। আওরাছনাহা বানী ইসরাঈলা = আমরা বনী ইসরাইলকে উহার ওয়ারিস/ উত্তরাধিকারী করে দিয়েছিলাম।
এরূপই হয়েছিলো। আর আমরা বনী ইসরাইলকে উহার ওয়ারিস/ উত্তরাধিকারী করে দিয়েছিলাম।
২৬:৬০
ফাআতবাঊহুম = তারা (= ফেরাউন ও তার সেনাদল) তাদের (= বনী ইসরাইলের) ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছিলো/ পিছু নিয়েছিলো। মুশরিক্বীনা = ইশরাকের সময়/ সূর্যোদয়কালে।
তারা (= ফেরাউন ও তার সেনাদল) তাদের (= বনী ইসরাইলের) ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছিলো/ পিছু নিয়েছিলো ইশরাকের সময়/ সূর্যোদয়কালে।
২৬:৬১
ফালাম্মা = তারপর যখন। তারাআল জামআনি = উভয় দল উভয় দলকে দেখলো। ক্বলা আসহাবু মূসা = মূসার আসহাব/ সাথীগণ বলেছিলো। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। লামুদরাকূনা = ধরা পড়ে গেলাম।
তারপর যখন উভয় দল উভয় দলকে দেখলো, তখন মূসার আসহাব/ সাথীগণ বলেছিলো, ‘নিশ্চয় আমরা ধরা পড়ে গেলাম’।
২৬:৬২
ক্বলা = সে (= মূসা) বলেছিলো। কাল্লা = কখনো না। ইন্না = নিশ্চয়। মায়িআ = আমার সাথে আছেন। রব্বী = আমার রব। ছাইয়াহদীনি = শীঘ্রই তিনি আমাকে পথ দেখাবেন।
সে (= মূসা) বলেছিলো, ‘কখনো না। নিশ্চয় আমার সাথে আছেন আমার রব। শীঘ্রই তিনি আমাকে পথ দেখাবেন।
২৬:৬৩
ফাআওহায়না ইলা মূসা = সুতরাং আমরা মূসার প্রতি ওহী করেছিলাম। আনিদরিব বিআসাকাল বাহরা = যে, তুমি আঘাত করো তোমার লাঠি দিয়ে সাগরে (= যাত্রা করো একটা শুষ্ক পথ দেখে ২০:৭৭)। ফানফালাক্বা = তখন (চড়াভূমি) প্রকট হয়ে উঠলো। ফাকানা কুল্লু ফিরক্বিন = ফলে প্রতিটি চড়া প্রতীয়মান হলো। কাত্তাওদিল আযীমি = বৃহৎ বালুকাস্তুপের মতো।
সুতরাং আমরা মূসার প্রতি ওহী করেছিলাম যে, “তুমি আঘাত করো তোমার লাঠি দিয়ে সাগরে (= যাত্রা করো একটা শুষ্ক পথ দেখে ২০:৭৭)”। তখন (চড়াভূমি) প্রকট হয়ে উঠলো। ফলে প্রতিটি চড়া প্রতীয়মান হলো বৃহৎ বালুকাস্তুপের মতো।
২৬:৬৪
ওয়া = আর। আযলাফনা = আমরা নিকটবর্তী করেছিলাম। ছাম্মাল আখারীনা = সেখানে অন্যদেরকে (= ফেরাউনের লোকদেরকে)।
আর আমরা নিকটবর্তী করেছিলাম সেখানে অন্যদেরকে (= ফেরাউনের লোকদেরকে)।
২৬:৬৫
ওয়া = আর। আনজায়না = আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছিলাম। মূসা ওয়া মাম মাআহু আজমাঈনা = মূসাকে ও তার সাথে যারা ছিলো তাদের সবাইকে।
আর আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছিলাম মূসাকে ও তার সাথে যারা ছিলো তাদের সবাইকে।
২৬:৬৬
ছুম্মা = তারপর। আগরাক্বনাল আখারীনা = আমরা ডুবিয়ে দিয়েছিলাম অন্যদেরকে (= ফেরাউনের লোকদেরকে)।
তারপর আমরা ডুবিয়ে দিয়েছিলাম অন্যদেরকে (= ফেরাউনের লোকদেরকে)।
২৬:৬৭
ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতান = আয়াত/ নিদর্শন। ওয়া = আর। মা কানা আকছারুহুম মু’মিনীনা = তাদের অধিকাংশই মু’মিনীন/ বিশ্বাসী নয়।
নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন। আর তাদের অধিকাংশই মু’মিনীন/ বিশ্বাসী নয়।
২৬:৬৮
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বাকা = তোমার রব। লাহুয়াল আযীযুর রহীমু = আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
আর নিশ্চয় তোমার রব আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
২৬:৬৯
ওয়াতলূ আলাইহিম = আর তাদের কাছে তিলাওয়াত/ পাঠ করো। নাবাআ ইবরাহীমা = ইবরাহীমের সংবাদ।
আর তাদের কাছে তিলাওয়াত/ পাঠ করো ইবরাহীমের সংবাদ।
২৬:৭০
ইয = যখন। ক্বলা = সে বলেছিলো। লিআবীহি = তার পিতাকে। ওয়া = ও। ক্বাওমিহী = তার কওমকে। মা তা’বুদূনা = তোমরা কিসের ইবাদাত/ দাসত্ব করছো?
যখন সে বলেছিলো তার পিতাকে ও তার কওমকে, ‘তোমরা কিসের ইবাদাত/ দাসত্ব করছো?’
২৬:৭১
ক্বলূ = তারা বলেছিলো। না’বুদু = আমরা ইবাদাত/ উপাসনা করি। আসনামান = কতগুলো মূর্তির। ফানাযল্লু = সেই সাথে আমরা থাকি। লাহা = উহার জন্য। আকিফীনা = এতেকাফরত/ আত্মনিয়োজিত।
তারা বলেছিলো, ‘আমরা ইবাদাত/ উপাসনা করি কতগুলো মূর্তির। সেই সাথে আমরা থাকি উহার জন্য এতেকাফরত/ আত্মনিয়োজিত।
২৬:৭২
ক্বলা = সে (= ইবরাহীম) বলেছিলো। হাল ইয়াছমাঊনাকুম ইয তাদঊনা = তারা কি তোমাদের ডাক শুনে যখন তোমরা তাদেরকে ডাকো।
সে (= ইবরাহীম) বলেছিলো, ‘তারা কি তোমাদের ডাক শুনে যখন তোমরা তাদেরকে ডাকো?’
২৬:৭৩
আও = অথবা। ইয়ানফাঊনাকুম = তারা কি তোমাদের কোন উপকার করতে পারে। আও = অথবা। ইয়াদুররূনা = কোন ক্ষতি করতে পারে?
অথবা তারা কি তোমাদের কোন উপকার করতে পারে অথবা কোন ক্ষতি করতে পারে?
২৬:৭৪
ক্বলূ = তারা বলেছিলো। বাল = তা জানি না, বরং। ওয়াজাদনা আবাআনা = আমরা আমাদের বাপদাদাকে পেয়েছি। কাযালিকা = এরূপই যে। ইয়াফআলূনা = তাঁরা এটা (মূর্তিপূজা) করতেন।
তারা বলেছিলো, ‘তা জানি না, বরং আমরা আমাদের বাপদাদাকে পেয়েছি এরূপই যে, তাঁরা এটা (মূর্তিপূজা) করতেন।
২৬:৭৫
ক্বলা = সে (= ইবরাহীম) বলেছিলো। আফারআয়তুম = তবে কি তোমরা ভেবে দেখেছো। মা কুনতুম তা’বুদূনা = তাদের ব্যাপারে যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করে আসছো?
সে (= ইবরাহীম) বলেছিলো, ‘তবে কি তোমরা ভেবে দেখেছো তাদের ব্যাপারে যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করে আসছো?
২৬:৭৬
আনতুম = তোমরা। ওয়া = ও। আবাউকুম আক্বদামূনা = তোমাদের অতীত হয়ে যাওয়া বাপদাদা।
তোমরা ও তোমাদের অতীত হয়ে যাওয়া বাপদাদা?
২৬:৭৭
ফাইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা (= তোমাদের উপাস্যরা)। আদুউউল লী = আমার শত্রু। ইল্লা রব্বাল আলামীনা = রব্বুল আলামীন/ সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালক ছাড়া।
নিশ্চয় তারা (= তোমাদের উপাস্যরা) আমার শত্রু, রব্বুল আলামীন/ সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালক ছাড়া।
২৬:৭৮
আল্লাযী = যিনি। খালাক্বানী = আমাকে সৃষ্টি করেছেন। ফাহুয়া = তারপর তিনিই। ইযাহদীনি = আমাকে হিদায়াত/ সঠিক পথপ্রদর্শন করেন।
যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন তারপর তিনিই আমাকে হিদায়াত/ সঠিক পথপ্রদর্শন করেন।
২৬:৭৯
ওয়াল্লাযী হুয়া = আর তিনিই। ইউত্বইমনী = আমাকে খাদ্য খাওয়ান। ওয়া = আর। ইয়াছক্বীনি = আমাকে পানীয় পান করান।
আর তিনিই আমাকে খাদ্য খাওয়ান ও আমাকে পানীয় পান করান।
২৬:৮০
ওয়া = আর। ইযা = যখন। মারিদতু = আমি অসুস্থ হই। ফাহুয়া = তখন তিনিই। ইয়াশফীনি = আমাকে সুস্থ করেন।
আর যখন আমি অসুস্থ হই তখন তিনিই আমাকে সুস্থ করেন।
২৬:৮১
ওয়াল্লাযী = আর তিনিই। ইউমীতুনী = আমাকে মৃত্যু দেবেন। ছুম্মা = তারপর আবার। ইউহঈনি = আমাকে পুনর্জীবিত করবেন।
আর তিনিই আমাকে মৃত্যু দেবেন তারপর আবার আমাকে পুনর্জীবিত করবেন।
২৬:৮২
ওয়াল্লাযী = আর তাঁর কাছে। আতমাউ = আমি আশা করি। আইঁ ইয়াগফিরা লী = যে, তিনি আমার জন্য ক্ষমা করবেন। খাতীয়াতী = আমার গুনাহখাতা। ইয়াওমাদ দ্বীনি = ইয়াওমুদ দ্বীনে/ বিচার দিনে।
আর তাঁর কাছে আমি আশা করি যে, তিনি আমার জন্য ক্ষমা করবেন আমার গুনাহখাতা ইয়াওমুদ দ্বীনে/ বিচার দিনে।
২৬:৮৩
রব্বী = হে আমার রব। হাবলী = আমাকে দান করুন। হুকমাওঁ ওয়া = হুকমা/ বিচার-ক্ষমতা আর। আলহিক্বনী = আমাকে মিলিত করুন। বিস সলিহীনা = সৎকর্মশীলদের সাথে।
(ইবরাহীম আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলো,) হে আমার রব, আমাকে দান করুন হুকমা/ বিচার-ক্ষমতা আর আমাকে মিলিত করুন সৎকর্মশীলদের সাথে।
২৬:৮৪
ওয়াজআলনী = আর আমাকে দান করুন। লিসানা সিদক্বীন = সুনাম-সুখ্যাতি। ফিল আখিরীনা = পরবর্তীদের মধ্যে।
আর আমাকে দান করুন সুনাম-সুখ্যাতি পরবর্তীদের মধ্যে।
২৬:৮৫
ওয়াজআলনী = আর আমাকে করুন। মিওঁ ওয়ারাছাতি জান্নাতিন নায়ীমি = নেয়ামতপূর্ণ জান্নাতের ওয়ারিসদের/ উত্তরাধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
আর আমাকে করুন নেয়ামতপূর্ণ জান্নাতের ওয়ারিসদের/ উত্তরাধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:৮৬
ওয়াগফির লিআবী = আর আমার পিতাকে ক্ষমা করুন। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। কানা = ছিলেন। মিনাদ দল্লীনা = পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত।
আর আমার পিতাকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় তিনি ছিলেন পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:৮৭
ওয়া = আর। লা তুখযিনী = আমাকে লাঞ্চিত করবেন না। ইয়াওমা ইউবআছূনা = পুনরুত্থান দিবসে।
আর আমাকে লাঞ্চিত করবেন না পুনরুত্থান দিবসে।
২৬:৮৮
ইয়াওমা = সেদিন। লা ইয়ানফাউ মালুন = মালসম্পদ উপকারে আসবে না। ওয়া = আর। লা বানূনা = সন্তান-সন্ততিও না।
সেদিন মালসম্পদ উপকারে আসবে না আর সন্তান-সন্ততিও না।
২৬:৮৯
ইল্লা মান আতাল্লাহা = তার ক্ষেত্রে ছাড়া যে আল্লাহর কাছে আসবে। বিক্বালবিন সালীমিন = সুস্থ ও শান্তিময় মন নিয়ে।
তার ক্ষেত্রে ছাড়া যে আল্লাহর কাছে আসবে বলবে সলীম/ সুস্থ ও শান্তিময় মন নিয়ে।
২৬:৯০
ওয়া = আর। উযলিফাতুল জান্নাতু = জান্নাতকে নিকটবর্তী করা হবে। লিল মুত্তাক্বীনা = মুত্তাকীদের/ আল্লাহভীরুদের জন্য।
আর জান্নাতকে নিকটবর্তী করা হবে মুত্তাকীদের/ আল্লাহভীরুদের জন্য।
২৬:৯১
ওয়া = আর। বুররিযাতিল জাহীমু = জাহীমকে (= জাহান্নামকে) উন্মুক্ত করা হবে। লিল গাভীনা = বিভ্রান্তদের জন্য।
আর জাহীমকে (= জাহান্নামকে) উন্মুক্ত করা হবে বিভ্রান্তদের জন্য।
২৬:৯২
ওয়া = আর। ক্বীলা লাহুম = তাদেরকে বলা হবে। আয়নামা কুনতুম তা’বুদূনা = কোথায় তারা যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব তোমরা করতে?
আর তাদেরকে বলা হবে, ‘কোথায় তারা যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব তোমরা করতে?
২৬:৯৩
মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে। হাল ইয়ানসুরূনাকুম = তারা কি তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে? আও = অথবা। ইয়ানতাসিরূনা = তারা কি আত্মরক্ষাও করতে পারে?
আল্লাহকে বাদ দিয়ে। তারা কি তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে? অথবা তারা কি আত্মরক্ষাও করতে পারে?
২৬:৯৪
ফাকুবকিবূ = তারপর ঠেলে দেয়া হবে। ফীহা = উহাতে। হুম = তাদেরকে। ওয়াল গাভূনা = ও বিভ্রান্তদেরকে।
তারপর ঠেলে দেয়া হবে উহাতে তাদেরকে ও বিভ্রান্তদেরকে।
২৬:৯৫
ওয়া = আর। জুনূদু ইবলীসা আজমাঊনা = ইবলিসের সকল সেনাবাহিনীকে।
আর ইবলিসের সকল সেনাবাহিনীকে।
২৬:৯৬
ক্বলূ = তারা বলবে। ওয়া হুম = এ অবস্থায় যে, তারা। ফীহা = উহাতে। ইয়াখতাসিমূনা = পরস্পরের সমালোচনা করতে থাকবে।
তারা বলবে এ অবস্থায় যে, তারা উহাতে পরস্পরের সমালোচনা করতে থাকবে।
২৬:৯৭
তাল্লাহি = আল্লাহর কসম। ইন কুন্না = আমরা কি ছিলাম না। লাফী দলালিম মুবীনিন = প্রকাশ্য বিভ্রান্তির মধ্যে?
আল্লাহর কসম, আমরা কি ছিলাম না প্রকাশ্য বিভ্রান্তির মধ্যে?
২৬:৯৮
ইয = যখন। নুছাব্বীকুম = আমরা তোমাদেরকে সমান মর্যাদা দিতাম। বিরব্বিল আলামীনা = রব্বুল আলামীনের সাথে।
যখন আমরা তোমাদেরকে সমান মর্যাদা দিতাম রব্বুল আলামীনের সাথে।
২৬:৯৯
ওয়া = আর। মা আদাল্লানা = আমাদেরকে কেউ বিভ্রান্ত করেনি। ইল্লাল মুজরিমূনা = অপরাধীরা ছাড়া।
আর আমাদেরকে কেউ বিভ্রান্ত করেনি অপরাধীরা ছাড়া।
২৬:১০০
ফামা লানা = সুতরাং আজ নেই আমাদের জন্য। মিন শাফিয়ীনা = কোন শাফায়াতকারী/ সুপারিশকারী।
সুতরাং আজ নেই আমাদের জন্য কোন শাফায়াতকারী/ সুপারিশকারী।
২৬:১০১
ওয়া লা সদীক্বিন হামীমিন = আর কোন দরদী বন্ধুও নেই।
আর কোন দরদী বন্ধুও নেই।
২৬:১০২
ফালাও = সুতরাং যদি। আন্না লানা = আমাদের জন্য সম্ভব হতো। কাররাতান = একবার ফিরে যাওয়া। ফানাকূনা মিনাল মু’মিনীনা = তাহলে আমরা হতাম মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত।
সুতরাং যদি আমাদের জন্য সম্ভব হতো একবার ফিরে যাওয়া, তাহলে আমরা হতাম মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:১০৩
ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতান = আয়াত/ নিদর্শন। ওয়া = আর। মা কানা আকছারুহুম মু’মিনীনা = তাদের অধিকাংশ ছিলো না মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।
নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন। আর তাদের অধিকাংশ ছিলো না মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।
২৬:১০৪
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বাকা = তোমার রব। লাহুয়াল আযীযুর রহীমু = আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
আর নিশ্চয় তোমার রব আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
২৬:১০৫
কাযযাবাত ক্বাওমু নূহিনুল মুরছালীনা = মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো নূহের কওম রসূলদেরকে।
মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো নূহের কওম রসূলদেরকে।
২৬:১০৬
ইয = যখন। ক্বলা লাহুম আখূহুম নূহুন = বলেছিলো তাদেরকে তাদের ভাই নূহ। আলা তাত্তাক্বূনা = তোমরা কি তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে না?
যখন বলেছিলো তাদেরকে তাদের ভাই নূহ, ‘তোমরা কি তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে না?
২৬:১০৭
ইন্নী = নিশ্চয় আমি। লাকুম = তোমাদের জন্য। রাসূলুন আমীনুন = একজন বিশ্বস্ত রসূল।
নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল।
২৬:১০৮
ফাত্তাক্বুল্লাহা = সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো। ওয়া = আর। আত্বীঊনি = আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো আর আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
২৬:১০৯
ওয়া = আর। মা আছআলুকুম = আমি তোমাদের কাছে চাই না। আলাইহি = উহার ব্যাপারে। মিন আজরিন = কোন পারিশ্রমিক। ইন আজরিয়া = আমার পারিশ্রমিক নেই। ইল্লা আলা রব্বিল আলামীনা = রব্বুল আলামীনের কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে।
আর আমি তোমাদের কাছে চাই না উহার ব্যাপারে কোন পারিশ্রমিক। আমার পারিশ্রমিক নেই রব্বুল আলামীনের কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে।
২৬:১১০
ফাত্তাক্বুল্লাহা = সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো। ওয়া = আর। আতীঊনি = আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো আর আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
২৬:১১১
ক্বলূ = তারা বলেছিলো। আনু’মিনু লাকা = আমরা কি তোমার কথায় ঈমান/ বিশ্বাস করবো। ওয়াত্তাবায়াকাল আরযালূনা = অথচ তোমার ইত্তেবা/ অনুসরণ করছে নিম্নস্তরের মানুষেরা।
তারা বলেছিলো, ‘আমরা কি তোমার কথায় ঈমান/ বিশ্বাস করবো? অথচ তোমার ইত্তেবা/ অনুসরণ করছে নিম্নস্তরের মানুষেরা।
২৬:১১২
ক্বলূ = নূহ বলেছিলো। ওয়া মা ইলমী = আমার জানা নেই। বিমা কানূ ইয়া’মালূনা = তারা কী ধরনের কাজ করে।
নূহ বলেছিলো, ‘আমার জানা নেই তারা কী ধরনের কাজ করে?’
২৬:১১৩
ইন হিসাবুহুম = তাদের হিসাবগ্রহণের দায়িত্ব নেই। ইল্লা আলা রব্বী = আমার রবের উপর ছাড়া। লাও = যদি। তাশউরূনা = যদি তোমরা অনুভব করো।
তাদের হিসাবগ্রহণের দায়িত্ব নেই আমার রবের উপর ছাড়া, যদি তোমরা অনুভব করো।
২৬:১১৪
ওয়া = আর। মা আনা = আমি হতে পারি না। বিত্বরিদিল মু’মিনীনা = মু’মিনদেরকে বিতাড়নকারী।
আর আমি হতে পারি না মু’মিনদেরকে বিতাড়নকারী।
২৬:১১৫
ইন আনা = আমি নই। ইল্লা নাযীরুম মুবীনুন = একজন প্রকাশ্য সতর্ককারী ছাড়া অন্য কিছু।
আমি নই একজন প্রকাশ্য সতর্ককারী ছাড়া অন্য কিছু।
২৬:১১৬
ক্বলূ = তারা বলেছিলো। লাইল্লাম তানতাহি = যদি তুমি বিরত না হও। ইয়ানূহু = হে নূহ। লাতাকূনান্না = তাহলে অবশ্যই তুমি হবে। মিনাল মুরজূমীনা = পাথর নিক্ষেপে নিহতদের অন্তর্ভুক্ত।
তারা বলেছিলো, ‘যদি তুমি বিরত না হও, হে নূহ, তাহলে অবশ্যই তুমি হবে পাথর নিক্ষেপে নিহতদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:১১৭
ক্বলা = সে (= নূহ) বলেছিলো। রব্বি = হে আমার রব। ইন্না = নিশ্চয়। ক্বওমী = আমার কওম। কাযযাবূনি = আমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে।
সে (= নূহ) বলেছিলো, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার কওম আমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে।
২৬:১১৮
ফাফতাহ = সুতরাং আপনি ফায়সালা করে দিন। বায়নী ওয়া বায়নাহুম = আমার ও তাদের মধ্যে। ফাতহান = চূড়ান্ত ফায়সালা। ওয়া = আর। নাজজিনী = নাজাত/ মুক্তি দিন আমাকে। ওয়া = ও। মাম মায়িআ = যারা আমার সাথে আছে তাদেরকে। মিনাল মু’মিনীনা = মু’মিনদের মধ্য থেকে।
সুতরাং আপনি ফায়সালা করে দিন আমার ও তাদের মধ্যে, চূড়ান্ত ফায়সালা। আর নাজাত/ মুক্তি দিন আমাকে ও যারা আমার সাথে আছে তাদেরকে, মু’মিনদের মধ্য থেকে।
২৬:১১৯
ফাআনজায়নাহু = সুতরাং আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছিলাম তাকে। ওয়া = ও। মাম মাআহু = যারা তার সাথে ছিলো তাদেরকে। ফিল ফুলকিল মাশহূনি = বোঝাই করা নৌযানে।
সুতরাং আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছিলাম তাকে ও যারা তার সাথে ছিলো তাদেরকে বোঝাই করা নৌযানে।
২৬:১২০
ছুম্মা = তারপর। আগরাক্বনা = আমরা ডুবিয়ে দিয়েছিলাম। বা’দুল বাক্বীনা = বাদবাকিদেরকে।
তারপর আমরা ডুবিয়ে দিয়েছিলাম বাদবাকিদেরকে।
২৬:১২১
ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতান = আয়াত/ নিদর্শন। ওয়া = আর। মা কানা আকছারুহুম = তাদের অধিকাংশ ছিলো না। মু’মিনীনা = মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।
নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন। আর তাদের অধিকাংশ ছিলো না মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।
২৬:১২২
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বাকা = তোমার রব। লাহুয়াল আযীযুর রহীমু = আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
আর নিশ্চয় তোমার রব আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
২৬:১২৩
কাযযাবাত = মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো। আদুনিল মুরছালীনা = আদ সম্প্রদায় রসূলদেরকে।
মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো আদ সম্প্রদায় রসূলদেরকে।
২৬:১২৪
ইয = যখন। ক্বলা লাহুম আখূহুম হূদুন = বলেছিলো তাদেরকে তাদের ভাই হূদ। আলা তাত্তাক্বূনা = তোমরা কি তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে না?
যখন বলেছিলো তাদেরকে তাদের ভাই হূদ, ‘তোমরা কি তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে না?
২৬:১২৫
ইন্নী = নিশ্চয় আমি। লাকুম = তোমাদের জন্য। রসূলুন আমীনুন = একজন বিশ্বস্ত রসূল।
নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল।
২৬:১২৬
ফাত্তাক্বুল্লাহা = সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। ওয়া = ও। আতীঊনি = আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো ও আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
২৬:১২৭
ওয়া = আর। মা আছআলুকুম = আমি তোমাদের কাছে চাই না। আলাইহি = উহার ব্যাপারে। মিন আজরিন = কোন পারিশ্রমিক। ইন আজরিয়া = আমার পারিশ্রমিক নেই। ইল্লা আলা রব্বিল আলামীনা = রব্বুল আলামীনের কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে।
আর আমি তোমাদের কাছে চাই না উহার ব্যাপারে কোন পারিশ্রমিক। আমার পারিশ্রমিক নেই রব্বুল আলামীনের কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে।
২৬:১২৮
আতাবনূনা = তোমরা কি নির্মাণ করছো। বিকুল্লি রীহিন = প্রত্যেক উচ্চস্থানে। আয়াতান তা’বাছূনা = নিরর্থক স্মৃতিচিহ্ন।
তোমরা কি নির্মাণ করছো প্রত্যেক উচ্চস্থানে নিরর্থক স্মৃতিচিহ্ন?
২৬:১২৯
ওয়া = আর। তাত্তাখিজূনা = তোমরা তৈরি করছো। মাসানিআ = দালান-কোঠা। লাআল্লাকুম তাখলুদূনা = যেন তোমরা স্থায়ী হবে।
আর তোমরা তৈরি করছো দালান-কোঠা, যেন তোমরা স্থায়ী হবে।
২৬:১৩০
ওয়া = আর। ইযা = যখন। বাতাশতুম = তোমরা পাকড়াও করো। বাতাশতুম = তখন তোমরা পাকড়াও করো। জাব্বারীনা = কঠোর হয়ে।
আর যখন তোমরা পাকড়াও করো, তখন তোমরা পাকড়াও করো কঠোর হয়ে।
২৬:১৩১
ফাত্তাক্বুল্লাহা = সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। ওয়া = আর। আতীঊনি = আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো আর আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
২৬:১৩২
ওয়াত্তাক্বুল্লাযী = তোমরা ভয় করো সেই সত্তাকে যিনি। আমাদ্দাকুম = তোমাদেরকে ঐ বিষয়ে সাহায্য করেছেন। বিমা তা’লামূনা = যা তোমরা জানো।
তোমরা ভয় করো সেই সত্তাকে যিনি তোমাদেরকে ঐ বিষয়ে সাহায্য করেছেন যা তোমরা জানো।
২৬:১৩৩
আমাদ্দাকুম = তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন। বিআনআমিওঁ ওয়া বানীনা = গবাদি পশু দিয়ে ও সন্তান সন্ততি দিয়ে।
তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন গবাদি পশু দিয়ে ও সন্তান সন্ততি দিয়ে।
২৬:১৩৪
ওয়া জান্নাতিওঁ ওয়া উয়ূনিন = আর বাগানসমূহ ও ঝর্ণাসমূহ দিয়ে।
আর বাগানসমূহ ও ঝর্ণাসমূহ দিয়ে।
২৬:১৩৫
ইন্নী = নিশ্চয় আমি। আখাফু = ভয় করি। আলাইকুম = তোমাদের ব্যাপারে। আযাবা ইয়াওমিন আযীমিন = মহাদিবসের শাস্তির।
নিশ্চয় আমি ভয় করি তোমাদের ব্যাপারে মহাদিবসের শাস্তির।
২৬:১৩৬
ক্বলূ = তারা বলেছিলো। ছাওয়াউন আলাইনা = আমাদের উপর সমান। আওয়াআযতা = তুমি কি ওয়াজ/ উপদেশদান করেছো। আম = নাকি। লাম তাকুম মিনাল ওয়ায়িযীনা = তুমি ওয়াজকারীদের/ উপদেশদানকারীদের অন্তর্ভুক্ত হওনি?
তারা বলেছিলো, ‘আমাদের উপর সমান যে, তুমি কি ওয়াজ/ উপদেশদান করেছো নাকি তুমি ওয়াজকারীদের/ উপদেশদানকারীদের অন্তর্ভুক্ত হওনি?
২৬:১৩৭
ইন হাযা = ইহা তো নয়। ইল্লা খুলুক্বিন আওয়ালীনা = আগের কালের লোকদের স্বভাব ছাড়া কিছু।
ইহা (= আল কুরআন) তো নয় আগের কালের লোকদের স্বভাব ছাড়া কিছু।
২৬:১৩৮
ওয়া = আর। মা নাহনু বিমুআযযাবীনা = আমরা আযাবপ্রাপ্ত হবো না।
আর আমরা আযাবপ্রাপ্ত হবো না।
২৬:১৩৯
ফাকাযাবূহু = তারপর তারা তাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো। ফাআহলাকনাহুম = তারপর আমরা তাদেরকে হালাক/ ধ্বংস করে দিয়েছিলাম। ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতান = আয়াত/ নিদর্শন। ওয়া = আর। মা কানা আকছারুহুম মু’মিনীনা = তাদের অধিকাংশই মু’মিনীন/ বিশ্বাসী ছিলো না।
তারপর তারা তাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো। তারপর আমরা তাদেরকে হালাক/ ধ্বংস করে দিয়েছিলাম। নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন। আর তাদের অধিকাংশই মু’মিনীন/ বিশ্বাসী ছিলো না।
২৬:১৪০
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বাকা = তোমার রব। লাহুয়াল আযীযুর রহীমু = আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
আর নিশ্চয় তোমার রব আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
২৬:১৪১
কাযযাবাত সামূদু মুরসালীনা = মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো সামুদ সম্প্রদায় রসূলদেরকে।
মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো সামুদ সম্প্রদায় রসূলদেরকে।
২৬:১৪২
ইয = যখন। ক্বলা লাহুম = তাদেরকে বলেছিলো। আখূহুম = তাদের ভাই। সালিহুন = সালেহ। আল তাত্তাক্বূনা = তোমরা কি তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে না?
যখন তাদেরকে বলেছিলো তাদের ভাই সালেহ, ‘তোমরা কি তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে না?
২৬:১৪৩
ইন্নী = নিশ্চয় আমি। লাকুম = তোমাদের জন্য। রাসূলুন আমীনুন = একজন বিশ্বস্ত রসূল।
নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল।
২৬:১৪৪
ফাত্তাক্বুল্লাহা ওয়া আত্বীঊনি = সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
২৬:১৪৫
ওয়া = আর। মা আছআলুকুম = আমি তোমাদের কাছে চাই না। আলাইহি = উহার ব্যাপারে। মিন আজরিন = কোন পারিশ্রমিক। ইন আজরিয়া = আমার পারিশ্রমিক নেই। ইল্লা আলা রব্বুল আলামীনা = রব্বুল আলামীনের কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে।
আর আমি তোমাদের কাছে চাই না উহার ব্যাপারে কোন পারিশ্রমিক। নিশ্চয় আমার পারিশ্রমিক নেই রব্বুল আলামীনের কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে।
২৬:১৪৬
আতুতরাকূনা = তোমাদেরকে কি ছেড়ে রাখা হবে। ফী মা হাহুনা = এখানে যা আছে উহার মধ্যে। আমিনীনা = নিরাপদে নিশ্চিন্তে?
তোমাদেরকে কি ছেড়ে রাখা হবে এখানে যা আছে উহার মধ্যে নিরাপদে নিশ্চিন্তে?
২৬:১৪৭
ফী জান্নাতিন ওয়া ঊয়ূনিন = বাগানসমূহ ও ঝর্ণাসমূহের মধ্যে।
বাগানসমূহ ও ঝর্ণাসমূহের মধ্যে।
২৬:১৪৮
ওয়া = আর। যুরূয়িওঁ ওয়া নাখলিন = ক্ষেত খামারের মধ্যে ও খেজুর বাগানের মধ্যে। তলউহা = যার ছড়াগুলো। হাদীমিন = রসে ভরা।
আর ক্ষেত খামারের মধ্যে ও খেজুর বাগানের মধ্যে, যার ছড়াগুলো রসে ভরা।
২৬:১৪৯
ওয়া = আর। তানহিতূনা = তোমরা খোদাই করে নির্মাণ করছো। মিনাল জিবালি = কিছু পাহাড়ে। বুয়ূতান ফারিহীনা = ঘরসমূহ, সানন্দে।
আর তোমরা খোদাই করে নির্মাণ করছো কিছু পাহাড়ে ঘরসমূহ, সানন্দে।
২৬:১৫০
ফাত্তাক্বুল্লাহা = সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। ওয়া = আর। আত্বীঊনি = আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো আর আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
২৬:১৫১
ওয়া = আর। লা তুত্বীঊ = তোমরা ইতায়াত/ আনুগত্য করো না। আমরাল মুছরিফীনা = সীমালংঘনকারীদের আদেশের।
আর তোমরা ইতায়াত/ আনুগত্য করো না সীমালংঘনকারীদের আদেশের।
২৬:১৫২
আল্লাযীনা = যারা। ইউফসিদূনা ফিল আরদি = পৃথিবীতে ফাসাদ/ বিপর্যয় সৃষ্টি করে। ওয়া = আর। লা ইউসলিহূনা = ইসলাহ/ সংশোধনের কাজ/ সৎকর্ম করে না।
যারা পৃথিবীতে ফাসাদ/ বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং ইসলাহ/ সংশোধনের কাজ/ সৎকর্ম করে না।
২৬:১৫৩
ক্বলূ = তারা বলেছিলো। ইন্নামা = নিশ্চয়। আনতা = তুমি। মিনাল মুছাহহারীনা = (কথার) যাদুগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।
তারা বলেছিলো, ‘নিশ্চয় তুমি (কথার) যাদুগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত’।
২৬:১৫৪
মা আনতা = তুমি তো নও। ইল্লা বাশারাম মিছলুনা = আমাদের মতো মানুষ ছাড়া অন্য কিছু। ফা’তি বিআয়াতিন = সুতরাং কোন আয়াত/ নিদর্শন নিয়ে আসো। ইন কুনতা = যদি তুমি হয়ে থাকো। মিনাস সদিক্বীনা = সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
তুমি তো নও আমাদের মতো মানুষ ছাড়া অন্য কিছু। সুতরাং কোন আয়াত/ নিদর্শন নিয়ে আসো যদি তুমি হয়ে থাকো সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:১৫৫
ক্বলা = সে বলেছিলো। হাযিহী = এ হচ্ছে। নাক্বাতুন = একটি উটনী। লাহা শিরবুওঁ ওয়া লাকুম শিরবু = তার জন্য পানি পান করার আর তোমাদের জন্য পানি পান করার। ইয়াওমিম মা’লূমিন = দিন সুপরিজ্ঞাত থাকবে।
সে বলেছিলো, ‘এ হচ্ছে একটি উটনী। তার জন্য পানি পান করার আর তোমাদের জন্য পানি পান করার দিন সুপরিজ্ঞাত থাকবে।
২৬:১৫৬
ওয়া = আর। লা তামাছছূহা = তোমরা উহাকে স্পর্শ করো না। বিছূয়িন = মন্দভাবে। ফাইয়া’খুজাকুম = তা করলে তোমাদেরকে পাকড়াও করবে। আযাবু ইয়াওমিন আযীমিন = এক মহাদিবসের শাস্তি।
আর তোমরা উহাকে স্পর্শ করো না মন্দভাবে। তা করলে তোমাদেরকে পাকড়াও করবে এক মহাদিবসের শাস্তি।
২৬:১৫৭
ফাআক্বারূহা = তারপর তারা উহার পায়ের রগ কেটে দিলো। ফাআসবাহূ = তার ফলে তারা হলো। নাদিমীনা = অনুতপ্ত।
তারপর তারা উহার পায়ের রগ কেটে দিলো। তার ফলে তারা হলো অনুতপ্ত।
২৬:১৫৮
ফাআখাযাহুমুল আযাবা = তারপর তাদেরকে পাকড়াও করলো আযাব/ শাস্তি। ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতুন = আয়াত/ নিদর্শন। ওয়া = আর। মা কানা আকছারুহুম = তাদের অধিকাংশ ছিলো না। মু’মিনূনা = মু’মিনূন/ বিশ্বাসী।
তারপর তাদেরকে পাকড়াও করলো আযাব/ শাস্তি। নিশ্চয উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন। আর তাদের অধিকাংশ ছিলো না মু’মিনূন/ বিশ্বাসী।
২৬:১৫৯
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বাকা = তোমার রব। লাহুয়া আযীযুর রহীমু = আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
আর নিশ্চয় তোমার রব আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
২৬:১৬০
কাযযাবাত ক্বাওমা লূতিনিল মুরছালীনা = মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো লূতের কওম রসূলদেরকে।
মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো লূতের কওম রসূলদেরকে।
২৬:১৬১
ইয = যখন। ক্বলা লাহুম = তাদেরকে বলেছিলো। আখূহুম = তাদের ভাই। লূতুন = লূত। আলা তাত্তাক্বূনা = তোমরা কি তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে না?
যখন তাদেরকে বলেছিলো তাদের ভাই লূত, ‘তোমরা কি তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে না?
২৬:১৬২
ইন্নী = নিশ্চয় আমি। লাকুম = তোমাদের জন্য। রসূলুন আমীনুন = একজন বিশ্বস্ত রসূল।
নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল।
২৬:১৬৩
ফাত্তাক্বুল্লাহা = সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। ওয়া = আর। আত্বীঊনি = আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো আর আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
২৬:১৬৪
ওয়া = আর। মা আছআলুকুম = আমি তোমাদের কাছে চাই না। আলাইহি = উহার ব্যাপারে। মিন আজরিন = কোন পারিশ্রমিক। ইন আজরিয়া = আমার পারিশ্রমিক নেই। ইল্লা আলা রব্বিল আলামীনা = রব্বুল আলামীনের কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে।
আর আমি তোমাদের কাছে চাই না উহার ব্যাপারে কোন পারিশ্রমিক। আমার পারিশ্রমিক নেই রব্বুল আলামীনের কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে।
২৬:১৬৫
আতা’তূনায যুকরানা = তোমরা কি পুরুষদের নিকট গমন করো। মিনাল আলামীনা = সমগ্র বিশ্ববাসীর মধ্য থেকে (তোমরাই একাজ করে থাক)।
তোমরা কি পুরুষদের নিকট গমন করো? সমগ্র বিশ্ববাসীর মধ্য থেকে (তোমরাই এ কাজ করে থাক)।
২৬:১৬৬
ওয়া = আর। তাযারূনা = তোমরা পরিহার করছো। মা খালাক্বা = যা সৃষ্টি করেছেন। লাকুম = তোমাদের জন্য। রব্বুকুম = তোমাদের রব। মিন আযওয়াজিকুম = তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে। বাল = বরং। আনতুম = তোমরা। ক্বাওমুন আদূনা = সীমালংঘনকারী এক কওম।
আর তোমরা পরিহার করছো যা সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য তোমাদের রব তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে। বরং তোমরা সীমালংঘনকারী এক কওম।
২৬:১৬৭
ক্বলূ = তারা বলেছিলো। লায়িল্লাম তানতাহি = যদি তুমি (এসব কথা বলা থেকে) বিরত না হও। ইয়া লূতু = হে লূত। লাতাকূনান্না মিনাল মুখরাজীনা = তাহলে তুমি হবে বহি:ষ্কৃতদের অন্তর্ভুক্ত।
তারা বলেছিলো, ‘যদি তুমি (এসব কথা বলা থেকে) বিরত না হও, হে লূত, তাহলে তুমি হবে বহি:ষ্কৃতদের অন্তর্ভুক্ত’।
২৬:১৬৮
ক্বলা = সে (= লূত) বললো। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। লিআমিলাকুম = তোমাদের কাজের জন্য। মিনাল ক্বালীনা = যারা ঘৃণাপোষণকারী তাদের অন্তর্ভুক্ত।
সে (= লূত) বললো, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের কাজের জন্য যারা ঘৃণা পোষণকারী তাদের অন্তর্ভুক্ত’।
২৬:১৬৯
রব্বি = হে আমার রব। নাজজিনি = নাজাত/ মুক্তি দিন আমাকে। ওয়া = ও। আহলী = আমার আহালকে/ পরিবারকে। মিম্মা ইয়া’মালূনা = তাদের আমল থেকে।
হে আমার রব, নাজাত/ মুক্তি দিন আমাকে ও আমার আহালকে/ পরিবারকে তারে আমল থেকে।
২৬:১৭০
ফানাজ্জায়নাহু = তারপর আমরা নাজাত/ মুক্তি দিলাম তাকে। ওয়া = ও। আহলাহু = তার আহালের/ পরিবারের। আজমাঈনা = সবাইকে।
তারপর আমরা নাজাত/ মুক্তি দিলাম তাকে ও তার আহালের/ পরিবারের সবাইকে।
২৬:১৭১
ইল্লা আযূযান = তার বৃদ্ধা স্ত্রীকে ছাড়া। ফিল গাভিরীনা = যে ছিলো পিছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত (অর্থাৎ সে লূতের দাওয়াত গ্রহণ করেনি)।
তার বৃদ্ধা স্ত্রীকে ছাড়া, যে ছিলো পিছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত (অর্থাৎ সে লূতের দাওয়াত গ্রহণ করেনি)।
২৬:১৭২
ছু্ম্মা = তারপর। দাম্মারনাল আখারীনা = অন্যদেরকে আমরা ধ্বংস করে দিলাম।
তারপর অন্যদেরকে আমরা ধ্বংস করে দিলাম।
২৬:১৭৩
ওয়া = আর। আমতরনা = আমরা বর্ষণ করলাম। আলাইহিম = তাদের উপর। মাতারান = এক (শাস্তিমূলক প্রস্তর বৃষ্টি) বর্ষণ। ফাছাআ = অত্যন্ত নিকৃষ্ট। মাতারুল মুনযারীনা = সেই বর্ষণ তাদের উপর যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিলো।
আর আমরা বর্ষণ করলাম তাদের উপর এক (শাস্তিমূলক প্রস্তর বৃষ্টি) বর্ষণ। অত্যন্ত নিকৃষ্ট সেই বর্ষণ তাদের উপর যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিলো।
২৬:১৭৪
ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতান = আয়াত/ নিদর্শন। ওয়া = আর। মা কানা আকছারুহুম = তাদের অধিকাংশই ছিলো না। মু’মিনীনা = মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।
নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন। আর তাদের অধিকাংশই ছিলো না মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।
২৬:১৭৫
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বাকা = তোমার রব। লাহুয়াল আযীযুর রহীমু = আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
আর নিশ্চয় তোমার রব আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
২৬:১৭৬
কাযযাবা = মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো। আসহাবুল আইকাতিল মুরছালীনা = আসহাবুল আইকা রসূলদেরকে।
মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিলো আসহাবুল আইকা রসূলদেরকে।
২৬:১৭৭
ইয = যখন। ক্বলা লাহুম = তাদেরকে বলেছিলো। শুয়াইবু = শোয়ায়েব। আলা তাত্তাক্বূনা = তোমরা কি তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে না?
যখন তাদেরকে বলেছিলো শোয়ায়েব, ‘তোমরা কি তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করবে না?’
২৬:১৭৮
ইন্নী = নিশ্চয় আমি। লাকুম = তোমাদের জন্য। রাসূলুন আমীনুন = একজন বিশ্বস্ত রসূল।
নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রসূল।
২৬:১৭৯
ফাত্তাক্বুল্লাহা = সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো। ওয়া = আর। আত্বিঊনি = আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো আর আমার ইতায়াত/ আনুগত্য করো।
২৬:১৮০
ওয়া = আর। মা আছআলুকুম = আমি তোমাদের কাছে চাই না। আলাইহি = উহার ব্যাপারে। মিন আজরিন = কোন পারিশ্রমিক। ইন আজরিয়া = আমার পারিশ্রমিক নেই। ইল্লা আলা রব্বিল আলামীনা = রব্বুল আলামীনের কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে।
আর আমি তোমাদের কাছে চাই না উহার ব্যাপারে কোন পারিশ্রমিক। আমার পারিশ্রমিক নেই রব্বুল আলামীনের কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে।
২৬:১৮১
আওফুল কাওলা = তোমরা মাপ পূর্ণ করে দাও। ওয়া = আর। লা তাকূনূ মিনাল মুখছিরীনা = তোমরা হয়ো না (মাপে কম দিয়ে) ক্ষতিগ্রস্তকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
তোমরা মাপ পূর্ণ করে দাও আর তোমরা হয়ো না (মাপে কম দিয়ে) ক্ষতিগ্রস্তকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:১৮২
ওয়া = আর। যিনূ বিলক্বিছত্বছিল মুছতাক্বীমা = যথাযথ ন্যায়বিচারের সাথে ওজন করবে।
আর যথাযথ ন্যায়বিচারের সাথে ওজন করবে।
২৬:১৮৩
ওয়া = আর। লা তাবখাছুন্নাছা = তোমরা মানুষকে কম দিও না। আশইয়াআহুম = তাদের জিনিসসমূহ। ওয়া = আর। লা তা’ছাও ফিল আরদি = পৃথিবীতে বিচরন করো না। মুফসিদীনা = ফাসাদকারী হয়ে।
আর তোমরা মানুষকে কম দিও না তাদের জিনিসসমূহ। আর পৃথিবীতে বিচরন করো না ফাসাদকারী হয়ে।
২৬:১৮৪
ওয়াত্তাক্বুল্লাযী = আর ভয় করো সেই সত্তাকে যিনি। খালাক্বাকুম = সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে। ওয়াল জিবিল্লাতাল আওয়ালীনা = আর তোমাদের পূর্বসূরীদেরকে।
আর ভয় করো সেই সত্তাকে যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে আর তোমাদের পূর্বসূরীদেরকে।
২৬:১৮৫
ক্বুলূ = তারা বললো। ইন্নামা = নিশ্চয়। আনতা = তুমি। মিনাল মুছাহহারীনা = (কথার) যাদুগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।
তারা বললো, ‘নিশ্চয় তুমি (কথার) যাদুগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত’।
২৬:১৮৬
ওয়া = আর। মা আনতা = তুমি তো নও। ইল্লা বাশারুম মিছলুনা = আমাদের মতো মানুষ ছাড়া অন্য কিছু। ওয়া = আর। ইন নাজুন্নুকা = আমরা কি তোমাকে মনে করি না। লামিনাল কাযিবীনা = মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত?
আর তুমি তো নও আমাদের মতো মানুষ ছাড়া অন্য কিছু। আর আমরা কি তোমাকে মনে করি না মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত?
২৬:১৮৭
ফাআছক্বিত আলাইনা = সুতরাং তুমি ফেলে দাও আমাদের উপর। কিছাফাম মিনাছ ছামায়ি = আকাশের কোন টুকরা। ইন = যদি। কুনতা = তুমি হও। মিনাস সদিক্বীনা = সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
সুতরাং তুমি ফেলে দাও আমাদের উপর আকাশের কোন টুকরা যদি তুমি হও সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:১৮৮
ক্বলা = সে (= শোয়ায়েব) বললো। রব্বী = আমার রব। আ’লামু = জানেন। বিমা তা’মালূনা = যেসব আমল তোমরা করছো।
সে (= শোয়ায়েব) বললো, ‘আমার রব জানেন যেসব আমল তোমরা করছো’।
২৬:১৮৯
ফাকাযযাবূহু = তারপর তারা তাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করলো। ফাআখাজাহুম = তারপর তাদেরকে পাকড়াও করলো। আযাবু ইয়াওমিয যুল্লাতি = ছায়াসম্পন্ন/ মেঘাচ্ছন্ন দিনের শাস্তি। ইন্নাহু = নিশ্চয় উহা। কানা = ছিলো। আযাবা ইয়াওমিন আযীমিন = এক মহাদিনের শাস্তি।
তারপর তারা তাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করলো। তারপর তাদেরকে পাকড়াও করলো ছায়াসম্পন্ন/ মেঘাচ্ছন্ন দিনের শাস্তি। নিশ্চয় তা ছিলো এক মহাদিনের শাস্তি।
২৬:১৯০
ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতান = আয়াত/ নিদর্শন। ওয়া = আর। মা কানা আকছারুহুম = তাদের অধিকাংশই ছিলো না। মু’মিনীনা = মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।
নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন। আর তাদের অধিকাংশই ছিলো না মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।
২৬:১৯১
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বাকা = তোমার রব। লাহুয়াল আযীযুর রহীমু = আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
আর নিশ্চয় তোমার রব আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল।
২৬:১৯২
ওয়া = আর। ইন্নাহু = নিশ্চয় উহা (= আল কুরআন)। লাতানযীলু রব্বিল আলামীনা = রব্বুল আলামীনের নাযিলকৃত।
আর নিশ্চয় উহা (= আল কুরআন) রব্বুল আলামীনের নাযিলকৃত।
২৬:১৯৩
নাযালা বিহির রুহুল আমীনু = নাযিল হয়েছে উহা নিয়ে রুহুল আমীন (= জিবরীল)।
নাযিল হয়েছে উহা নিয়ে রুহুল আমীন (= জিবরীল)।
২৬:১৯৪
আলা ক্বালবিকা = তোমার কলবের উপর। লিতাকূনা মিনাল মুনযিরীনা = যেন তুমি হতে পারো সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত।
তোমার কলবের উপর, যেন তুমি হতে পারো সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:১৯৫
বিলিছানিন আরাবিয়্যিম মুবীনিন = স্পষ্ট আরবী ভাষায়।
স্পষ্ট আরবী ভাষায়।
২৬:১৯৬
ওয়া = আর। ইন্নাহু = নিশ্চয় উহা। লাফী যুবুরিল আওয়ালীনা = পূর্ববর্তী যবুরসমূহে বর্তমান ছিলো।
আর নিশ্চয় উহা (= কুরআন নাযিলের প্রসংগ) পূর্ববর্তী যবুরসমূহে বর্তমান ছিলো।
২৬:১৯৭
আওয়ালাম ইয়াকুল্লাহুম আয়াতান = তাদের জন্য কি ইহা একটি আয়াত/ নিদর্শন নয়। আইঁ ইয়া’লামাহু = যে, উহা জানে। উলামাউ বানী ইসরাইলা = বনী ইসরাইলের উলামা/ আলেমগণ।
তাদের জন্য কি ইহা একটি আয়াত/ নিদর্শন নয় যে, উহা জানে বনী ইসরাইলের উলামা/ আলেমগণ?
২৬:১৯৮
ওয়া = আর। লাও = যদি। নাযযালনাহু = আমরা উহাকে নাযিল করতাম। আলা বা’দিল আ’জামীনা = কোন আ’জমীর/ অনারবের উপর।
আর যদি আমরা উহাকে নাযিল করতাম কোন আ’জমী/ অনারবের উপর।
২৬:১৯৯
ফাক্বারাআহু = তারপর সে উহা পাঠ করতো। আলাইহিম = তাদের কাছে। মা কানূ বিহী মু’মিনীনা = তাহলে তারা উহার প্রতি মু’মিনীন/ বিশ্বাসী হতো না।
তারপর সে উহা পাঠ করতো তাদের কাছে তাহলে তারা উহার প্রতি মু’মিনীন/ বিশ্বাসী হতো না।
২৬:২০০
কাযালিকা = এভাবে। ছালাকনাহু = আমরা উহাকে বিদ্ধ করে দিয়েছি। ফী ক্বুলূবিল মুজরিমীনা = অপরাধীদের কলবসমূহে।
এভাবে আমরা উহাকে বিদ্ধ করে দিয়েছি অপরাধীদের কলবসমূহে।
২৬:২০১
লা ইউ’মিনূনা বিহী = তারা উহার প্রতি ঈমান/ বিশ্বাস করবে না। হাত্তা = যতক্ষণ না। ইয়ারাভুল আযাবাল আলীমা = তারা কষ্টদায়ক আযাব দেখবে।
তারা উহার প্রতি ঈমান/ বিশ্বাস করবে না যতক্ষণ না তারা কষ্টদায়ক আযাব দেখবে।
২৬:২০২
ফাইয়া’তিয়াহুম = তখন উহা তাদের উপর এসে পড়বে। বাগতাতান = হঠাৎ করে। ওয়া হুম = এ অবস্থায় যে, তারা। লা ইয়াশউরূনা = তারা টেরও পাবে না।
তখন উহা তাদের উপর এসে পড়বে হঠাৎ করে এ অবস্থায় যে, তারা টেরও পাবে না।
২৬:২০৩
ফাইয়াক্বূলূ = তখন তারা বলবে। হাল নাহনু = আমাদেরকে কি। মুনযারূনা = অবকাশ দেয়া হবে?
তখন তারা বলবে, ‘আমাদেরকে কি অবকাশ দেয়া হবে?’
২৬:২০৪
আফাবিআযাবিনা = তবে কি আমাদের আযাব সম্পর্কে। ইয়াছতা’জিলূনা = তারা তাড়াতাড়ি করছে?
তবে কি আমাদের আযাব সম্পর্কে তারা তাড়াতাড়ি করছে?
২৬:২০৫
আফারআয়তা = তুমি কি ভেবে দেখেছো যে। ইম মাত্তা’নাহুম = যদি আমরা তাদেরকে ভোগসামগ্রী দিই। ছিনীনা = অনেক বছর।
তুমি কি ভেবে দেখেছো যে, যদি আমরা তাদেরকে ভোগসামগ্রী দিই অনেক বছর।
২৬:২০৬
ছুম্মা = তারপর। জাআহুম = তাদের নিকট উহা আসলে। মা কানূ ইউআদূন = যার (যে শাস্তির) ওয়াদা তাদেরকে দেয়া হয়েছে।
তারপর তাদের নিকট উহা আসলে যার (= যে শাস্তির) ওয়াদা তাদেরকে দেয়া হয়েছে।
২৬:২০৭
মা আগনা আনহুম = কী কাজে আসবে তাদের ব্যাপারে। মা কানূ ইউমাত্তাঊনা = যা কিছু তারা উপভোগ করতো?
কী কাজে আসবে তাদের ব্যাপারে যা কিছু তারা উপভোগ করছে?
২৬:২০৮
ওয়া = আর। মা আহলাকনা = আমরা হালাক/ ধ্বংস করিনি। মিন ক্বারইয়াতিন = কোন জনপদবাসীকে। ইল্লা = এছাড়া যে। লাহা মুনযিরূনা = তার জন্য সতর্ককারীরা ছিলো।
আর আমরা হালাক/ ধ্বংস করিনি কোন জনপদকে এছাড়া যে, তার জন্য সতর্ককারীরা ছিলো।
২৬:২০৯
যিকরা = যিকরা/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। ওয়া = আর। মা কুন্না যালিমূনা = আমরা যালিম নই।
যিকরা/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। আর আমরা যালিম নই।
২৬:২১০
ওয়া = আর। মা তানাযযালাত বিহিশ শায়াতীনু = নাযিল হয়নি উহা নিয়ে (= কুরআন নিয়ে) শয়তানগণ।
আর নাযিল হয়নি উহা নিয়ে (= কুরআন নিয়ে) শয়তানগণ।
২৬:২১১
ওয়া = আর। মা ইয়ামবাগী লাহুম = উহা তাদের জন্য শোভা পায় না। ওয়া = আর। মা ইয়াছতাত্বীউনা = তারা উহার সামর্থও রাখে না।
আর উহা তাদের জন্য শোভা পায় না আর তারা উহার সামর্থও রাখে না।
২৬:২১২
ইন্নাহুম = নিশ্চয় তাদেরকে। আনিছ ছাময়ি = উহা শ্রবণ করা থেকেও। লামা’জুলূনা = দূরে রাখা হয়েছে।
নিশ্চয় তাদেরকে উহা শ্রবণ করা থেকেও দূরে রাখা হয়েছে।
২৬:২১৩
ফালা তাদউ মায়াল্লাহু = সুতরাং তুমি ডেকো না আল্লাহর সাথে। ইলাহান আখারা = অন্য ইলাহকে। ফাতাকূনা = অন্যথায় তুমি হয়ে যাবে। মিনাল মুয়াযযাবীনা = আযাবপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।
সুতরাং তুমি ডেকো না আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে। অন্যথায় তুমি হয়ে যাবে আযাবপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।
২৬:২১৪
ওয়ানযির = আর তুমি সতর্ক করো। আশীরাতাকাল আক্বরাবীনা = তোমার নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজনদেরকে।
আর তুমি সতর্ক করো তোমার নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজনকে।
২৬:২১৫
ওয়াখফিদ জানাহাকা = তোমার বাহু অবনত করো (= কোমল আচরন করো)। লিমানিত্তাবায়াকা = তাদের জন্য যারা তোমার ইত্তেবা/ অনুসরণ করে। মিনাল মু’মিনীনা = মু’মিনদের মধ্য থেকে।
তোমার বাহু অবনত করো (= কোমল আচরন করো) তাদের জন্য যারা তোমার ইত্তেবা/ অনুসরণ করে, মু’মিনদের মধ্য থেকে।
২৬:২১৬
ফাইন আসাওকা = যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়। ফাক্বুল = তাহলে বলো। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। বারীউম মিম্মা তা’মালূনা = তোমাদের আমল/ কর্মকান্ড থেকে দায়মুক্ত।
যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বলো, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের আমল/ কর্মকান্ড থেকে দায়মুক্ত’।
২৬:২১৭
ওয়া = আর। তাওয়াক্কাল = তাওয়াক্কুল/ ভরসা করো। আলাল আযীযির রহীমি = আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল সত্তার (= আল্লাহর) উপর।
আর তাওয়াক্কুল/ ভরসা করো আযীয/ মহাশক্তিমান ও রহীম/ দয়াশীল সত্তার (= আল্লাহর) উপর।
২৬:২১৮
আল্লাযী = যিনি। ইয়ারাকা = তোমাকে দেখেন। হীনা তাক্বূমু = যখন তুমি কিয়াম করো/ দাঁড়াও।
যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি কিয়াম করো/ দাঁড়াও।
২৬:২১৯
ওয়া = আর। তাক্বাল্লুবাকা = (তিনি দেখেন) তোমার নড়াচড়া। ফিছ ছাজিদীনা = সিজদাকারীদের মধ্যে।
আর (তিনি দেখেন) তোমার নড়াচড়া সিজদাকারীদের মধ্যে।
২৬:২২০
ইন্নাহু হুয়াছ ছামিউল আলীমু = নিশ্চয় তিনি সামী’/ সর্বশ্রোতা ও আলীম/ সর্বজ্ঞাতা।
নিশ্চয় তিনি সামী’/ সর্বশ্রোতা ও আলীম/ সর্বজ্ঞাতা।
২৬:২২১
হাল আনিব্বুউকুম = আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দেবো। আলা মান = কার উপর। তানাযযালুশ শায়ত্বীনু = নাযিল হয় শয়তানেরা?
আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দেবো কার উপর নাযিল হয় শয়তানেরা?
২৬:২২২
তানাযযালু = তারা নাযিল হয়। আলা কুল্লি আফাকিন আছীমিন = প্রত্যেক জালিয়াত পাপাচারীর উপর।
তারা নাযিল হয় প্রত্যেক জালিয়াত পাপাচারীর উপর।
২৬:২২৩
ইউলক্বূনাছ ছামআ = তারা কানকথা কানে লাগায়। ওয়া = আর। আকছারুহুম = তাদের অধিকাংশই। কাযিবূনা = মিথ্যাবাদী।
তারা কান কথা কানে লাগায়। আর তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
২৬:২২৪
ওয়াশ শুয়ারাউ = আর কবিরা হচ্ছে এমন যে। ইয়াত্তাবিউহুমুল গাভূনা = তাদের ইত্তেবা/ অনুসরণ করে বিভ্রান্ত লোকেরা।
আর কবিরা হচ্ছে এমন যে, তাদের ইত্তেবা/ অনুসরণ করে বিভ্রান্ত লোকেরা।
২৬:২২৫
আলাম তারা = তুমি কি ভেবে দেখোনি। আন্নাহুম = যে, তারা। ফী কুল্লি ওয়াদিইঁ ইয়াহীমূনা = প্রত্যেক উপত্যকায় উদ্ভ্রান্ত/ দিশাহারা হয়ে ঘুরছে।
তুমি কি ভেবে দেখোনি যে, তারা প্রত্যেক উপত্যকায় উদ্ভ্রান্ত/ দিশাহারা হয়ে ঘুরছে।
২৬:২২৬
ওয়া = আর। আন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। ইয়াক্বূলূনা = এমন কথা বলে। মা লা ইয়াফআলূনা = যা তারা করে না।
আর নিশ্চয় তারা এমন কথা বলে যা তারা করে না।
২৬:২২৭
ইল্লাল্লাযীনা আমানূ = ঐ কবিরা ছাড়া যারা ঈমান/ বিশ্বাস করে। ওয়া = আর। আমিলুস সলিহাতি = আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করে। ওয়া = আর। যাকারুল্লাহা কাছীরান = বেশি বেশি করে আল্লাহর যিকির/ স্মরণ করে। ওয়ানতাসারূ = আর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। মিম বা’দি মা যুলিমু = তারা যুলুমের শিকার হওয়ার পর। ওয়া = আর। ছাইয়া’লামুল্লাযীনা যলামু = শীঘ্রই তারা জানবে যারা যুলুম করেছে। আইয়া মুনক্বালাবিন = কোন প্রত্যাবর্তনস্থলে। ইয়ানক্বালিবূনা = তারা প্রত্যাবর্তন করছে?
ঐ কবিরা ছাড়া যারা ঈমান/ বিশ্বাস করে আর আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করে আর বেশি বেশি করে আল্লাহর যিকির/ স্মরণ করে আর প্রতিশোধ গ্রহণ করে তারা যুলুমের শিকার হওয়ার পর। আর শীঘ্রই তারা জানবে যারা যুলুম করেছে, কোন প্রত্যাবর্তনস্থলে তারা প্রত্যাবর্তন করছে?