কুরআনান আ'জাবান

বিস্ময়কর কুরআন

শব্দার্থ ভিত্তিক বাংলা অনুবাদ, তৈয়াবুর রহমান গোপালগঞ্জী

Quranan Ajaban Cover

021. সূরা আম্বিয়া

হে আমার প্রভু, আপনার কাছে আশ্রয় চাই শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে, আশ্রয় চাই এর উপস্থিতি থেকে। পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু সর্বশক্তিমানের নামে।

২১:১
ইক্বাতারাবা = নিকটে এসে গেছে। লিন্নাছি = মানুষের জন্য। হিসাবুহুম = তাদের হিসাব (নেয়ার সময়)। ওয়া = অথচ। হুম = তারা। ফী গাফলাতিম মু’রিদূনা = গাফলতির মধ্যে বিমুখ হয়ে পড়ে আছে।

নিকটে এসে গেছে মানুষের জন্য তাদের হিসাব (নেয়ার সময়)। অথচ তারা গাফলতির মধ্যে বিমুখ হয়ে পড়ে আছে।

২১:২
মা ইয়া’তিহিম = তাদের কাছে আসেনি। মিন যিকরিম মির রব্বিহিম = তাদের রবের পক্ষ থেকে কোন যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। মুহাদ্দিসান = নতুন করে। ইল্লাছতামাউহু ওয়া হুম ইয়ালআবূনা = এছাড়া যে, তারা তা শুনেছে অথচ তারা খেলায় মগ্ন থেকেছে।

তাদের কাছে আসেনি তাদের রবের পক্ষ থেকে কোন যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান নতুন করে, এছাড়া যে, তারা তা শুনেছে অথচ তারা খেলায় মগ্ন থেকেছে।

২১:৩
লাহিয়াতান ক্বুলূবুহুম = তাদের কলবসমূহ অন্য চিন্তায় মশগুল থাকে। আছাররুন্নাজওয়া = তারা গোপন রাখে তাদের গোপন পরামর্শ। আল্লাযীনা যলামূ = যারা যুলুম করেছে। হাল হাযা = (তারা বলে) এই ব্যক্তি কি। ইল্লা বাশারুম মিছলুকুম = তোমাদের মতো মানুষ ছাড়া অন্য কিছু? আফাতা’তূনাছ ছিহরা = তবে কি তোমরা এসে পড়বে (কথার) যাদুর কবলে। ওয়া = অথচ। আনতুম = তোমরা। তুবসিরূনা = দেখছো।

তাদের কলবসমূহ অন্য চিন্তায় মশগুল থাকে। তারা গোপন রাখে তাদের গোপন পরামর্শ। যারা যুলুম করেছে (তারা বলে,) ‘এই ব্যক্তি কি তোমাদের মতো মানুষ ছাড়া অন্য কিছু? তবে কি তোমরা এসে পড়বে (কথার) যাদুর কবলে, অথচ তোমরা দেখছো?’

২১:৪
ক্বুল = বলো। রব্বী = আমার রব। ইয়া’লামুল ক্বাওলা = সেই সব কথা জানেন। ফিছ ছামায়ি = যা হয় আকাশে। ওয়াল আরদি = ও পৃথিবীতে। ওয়া = আর। হুয়াছ ছামীউল আলীম = তিনি ছামী/ সর্বশ্রোতা, আলীম/ সর্বজ্ঞাতা।

বলো, ‘আমার রব সেই সব কথা জানেন যা হয় আকাশে ও পৃথিবীতে। আর তিনি ছামী/ সর্বশ্রোতা, আলীম/ সর্বজ্ঞাতা’।

২১:৫
বাল = বরং। ক্বলূ = তারা বলে। আদগাছু আহলামিন = এগুলো অলিক কল্পনাসমূহ। বালিফতারাহু = বরং সে (নিজেই) এগুলো রচনা করেছে। বাল = বরং। হুয়া = সে। শায়িরুন = একজন শায়ের/ কবি। ফালইয়াতিনা = তাহলে সে আমাদের কাছে আনুক। বিআয়াতিন = কোন আয়াত/ নিদর্শন। কামা = যেমন। উরছিলাল আওয়ালূনা = প্রেরিত হয়েছিলো পূর্ববর্তীগণ।

বরং তারা বলে, ‘এগুলো অলিক কল্পনাসমূহ। বরং সে (নিজেই) এগুলো রচনা করেছে। বরং সে একজন শায়ের/ কবি। তাহলে সে আমাদের কাছে আনুক কোন আয়াত/ নিদর্শন যেমন প্রেরিত হয়েছিলো পূর্ববর্তীগণ’।

২১:৬
মা আমানতু = ঈমান/ বিশ্বাস করেনি। ক্বাবলাহুম = তাদের আগে। মিন ক্বারইয়াতিন = কোন জনপদবাসী। আহলাকনাহা = যাকে আমরা ধ্বংস করেছি। আফাহুম = তবে কি তারা। ইউ’মিনূনা = ঈমান/ বিশ্বাস করবে?

ঈমান/ বিশ্বাস করেনি তাদের আগে কোন জনপদবাসী, যাকে আমরা ধ্বংস করেছি। তবে কি তারা ঈমান/ বিশ্বাস করবে?

২১:৭
ওয়া = আর। মা আরছালনা = আমরা প্রেরণ করিনি। ক্বাবলাকা = তোমার আগে। ইল্লা রিজালান = পুরুষ মানুষকে ছাড়া। নূহী ইলাইহিম = যাদের কাছে আমরা ওহী করেছি। ফাছআলূ = সুতরাং তোমরা জিজ্ঞাসা করো। আহলায যিকরি = আহলে যিকিরকে/ আসমানী স্মারকের চর্চাকারী ব্যক্তিদেরকে। ইন = যদি। কুনতুম = তোমরা। লা তা’লামূনা = না জানো।

আর আমরা (নবী-রসূল হিসেবে) প্রেরণ করিনি তোমার আগে পুরুষ মানুষকে ছাড়া, যাদের কাছে আমরা ওহী করেছি। সুতরাং তোমরা জিজ্ঞাসা করো আহলে যিকিরকে/ আসমানী স্মারকের চর্চাকারী ব্যক্তিদেরকে যদি তোমরা না জানো।

২১:৮
ওয়া = আর। মা জাআলনাহুম = আমরা তাদেরকে করিনি। জাছাদান = এমন দেহবিশিষ্ট। লা ইয়া’কুলূনাত তআমা = যে, তারা খাদ্য খেতো না। ওয়া = আর। মা কানূ = তারা ছিলো না। খালিদীনা = চিরস্থায়ী।

আর আমরা তাদেরকে করিনি এমন দেহবিশিষ্ট যে, তারা খাদ্য খেতো না। আর তারা ছিলো না চিরস্থায়ী।

২১:৯
ছুম্মা = তারপর। ছদাক্বনাহুমুল ওয়াদা = আমরা তাদের প্রতি সত্যে পরিণত করেছি (আমাদের) ওয়াদা। ফাআনজায়নাকুম = সুতরাং আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি তাদেরকে। ওয়া = আর (সেই সাথে)। মান = যাদেরকে। নাশাউ = আমরা ইচ্ছা করেছি। ওয়া = আর। আহলাকনাল মুছরিফীনা = আমরা হালাক/ ধ্বংস করেছি সীমালংঘনকারীদেরকে/ (সময়, সম্পদ ও যোগ্যতার) অপচয়কারীদেরকে।

তারপর আমরা তাদের প্রতি সত্যে পরিণত করেছি (আমাদের) ওয়াদা। সুতরাং আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি তাদেরকে আর (সেই সাথে) যাদেরকে আমরা ইচ্ছা করেছি। আর আমরা হালাক/ ধ্বংস করেছি সীমালংঘনকারীদেরকে/ (সময়, সম্পদ ও যোগ্যতার) অপচয়কারীদেরকে।

২১:১০
লাক্বাদ = নিশ্চয়। আনযালনা = আমরা নাযিল করেছি। ইলাইকুম = তোমাদের প্রতি। কিতাবান = একটি কিতাব। ফীহি = যাতে আছে। যিকরুকুম = তোমাদের (জন্য প্রদত্ত) যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। আফালা তা’ক্বিলূনা = তোমরা কি আকল/ বিবেক-বুদ্ধি (Common sense) প্রয়োগ করবে না?

নিশ্চয় আমরা নাযিল করেছি তোমাদের প্রতি একটি কিতাব, যাতে আছে তোমাদের (জন্য প্রদত্ত) যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। তোমরা কি আকল/ বিবেক-বুদ্ধি (Common sense) প্রয়োগ করবে না?

২১:১১
ওয়া = আর। কাম = কত যে। ক্বাসামনা = আমরা বিধ্বস্ত করেছি। মিন ক্বারইয়াতিন = জনপদবাসীকে। কাম = যা ছিলো। যালিমাতান = যালিম/ অত্যাচারী। ওয়া = আর। আনশা’না = আমরা উদ্ভব ঘটিয়েছি। বা’দানা = তাদের পরে। ক্বাওমান আখারীনা = পরবর্তী অন্য ক্বওমগুলোকে।

আর কত যে আমরা বিধ্বস্ত করেছি জনপদবাসীকে, যা ছিলো যালিম/ অত্যাচারী। আর আমরা উদ্ভব ঘটিয়েছি তাদের পরে পরবর্তী অন্য ক্বওমগুলোকে।

২১:১২
ফালাম্মা = সুতরাং যখন। আহাচ্ছু = তারা অনুভব করেছে। বা’ছানা = আমাদের শাস্তি। ইযা = তখন। হুম = তারা। মিনহা = তা থেকে। ইয়ারকুদূনা = পালাচ্ছিলো।

সুতরাং যখন তারা অনুভব করেছে আমাদের শাস্তি তখন তারা তা থেকে পালাচ্ছিলো/ তা থেকে বাঁচার জন্য দৌড়াদৌড়ি করছিলো।

২১:১৩
লা তারকুদূ = তোমরা পলায়ন করো না। ওয়ারজিউ = আর তোমরা ফিরে যাও। ইলা মা উতরিফতুম ফীহি = তোমাদেরকে যে শোষণের সুযোগ দেয়া হয়েছে তার মধ্যে। ওয়া = আর। মাছাকিনিকুম = আর তোমাদের ঘরবাড়িগুলোতে। লাআল্লাকুম তুছআলূনা = যাতে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে।

তোমরা পলায়ন করো না। আর তোমরা ফিরে যাও (শাস্তির সম্মুখীন হওয়ার অন্তর্বর্তীকালে) তোমাদেরকে যে শোষণের সুযোগ দেয়া হয়েছে তার মধ্যে আর আর তোমাদের ঘরবাড়িগুলোতে। যাতে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে।

২১:১৪
ক্বলূ = তারা বলেছে। ইয়া ওয়ায়লানা = হায়, আমাদের আফসোস। ইন্না = নিশ্চয়। কুন্না = আমরা ছিলাম। যালিমূনা = যালিম।

তারা বলেছে, ‘হায়, আমাদের আফসোস। নিশ্চয় আমরা ছিলাম যালিম’।

২১:১৫
ফামা = তারপর। যালাত = চলতে থাকলো। তিলকা দা’ওয়াহুম = তাদের এই আর্তনাদ/ আহাজারি। হাত্তা = যতক্ষণ না। জাআলনাহুম হাসীদান = আমরা তাদেরকে পরিণত করেছি কেটে ফেলা শস্যে। খামিদীনা = ও আগুনে পুড়ে যাওয়া ভষ্মে/ ছাইতে।

তারপর চলতে থাকলো তাদের এই আর্তনাদ/ আহাজারি, যতক্ষণ না আমরা তাদেরকে পরিণত করেছি কেটে ফেলা শস্যে ও আগুনে পুড়ে যাওয়া ভষ্মে/ ছাইতে।

২১:১৬
ওয়া = আর। মা খালাক্বনাছ ছামাআ = আমরা সৃষ্টি করিনি আকাশ। ওয়াল আরদা = ও পৃথিবী। ওয়া = আর। মা বায়নাহুমা = যা কিছু এ দুয়ের মধ্যে আছে সেসবকিছু। লায়িবীনা = খেলার ছলে।

আর আমরা সৃষ্টি করিনি আকাশ ও পৃথিবী আর যা কিছু এ দুয়ের মধ্যে আছে সেসবকিছু খেলার ছলে।
[দেখুন ২১:১৬-১৭, ৩৮:২৭, ৪৪:৩৮]

২১:১৭
লাও = যদি। আরাদনা = আমরা এরাদা/ ইচ্ছা করতাম। আন্নাত্তাখিজা = যে, আমরা গ্রহণ করবো। লাহওয়ান = (এসব সৃষ্টিকে) কৌতুকরূপে। লাত্তাখাজনাহু = তাহলে আমরা উহাকে (খেলা হিসাবে) গ্রহণ করতাম। মিল্লাদুন্না = আমাদের পক্ষ থেকে (= আমাদের কাছে সীমাবদ্ধ রেখে; তাহলে অনুভূতিশীল চেতনাসম্পন্ন ও দায়িত্বশীল জীব সৃষ্টি করে তাদেরকে কষ্টে ফেলতাম না)। ইন = যদি। কুন্না = আমরা হতামই। ফায়িলীনা = এরূপ কার্য সম্পাদনকারী।

যদি আমরা এরাদা/ ইচ্ছা করতাম যে, আমরা গ্রহণ করবো (এসব সৃষ্টিকে) কৌতুকরূপে, তাহলে আমরা উহাকে (খেলা হিসাবে) গ্রহণ করতাম আমাদের পক্ষ থেকে (= আমাদের কাছে সীমাবদ্ধ রেখে; তাহলে অনুভূতিশীল চেতনাসম্পন্ন ও দায়িত্বশীল জীব সৃষ্টি করে তাদেরকে কষ্টে ফেলতাম না); যদি আমরা হতামই এরূপ কার্য সম্পাদনকারী।

২১:১৮
বাল = বরং। নাক্বযিফু = আমরা আঘাত হানি। বিল হাক্বক্বি = সত্য দ্বারা। আলাল বাতিলি = মিথ্যার উপর। ফাইয়াদমাগাহু = সুতরাং তা তাকে চুর্ণবিচূর্ণ করে দেয়। ফাইযা = সুতরাং তখন। হুয়া = তা। যাহিক্বুন = নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ওয়ালাকুমুল ওয়ায়লু = আর তোমাদের জন্য দুর্ভোগ। মিম্মা = সে কারণে যা। তাসিফূনা = তোমরা রচনা করেছো।

বরং আমরা আঘাত হানি সত্য দ্বারা মিথ্যার উপর। সুতরাং তা তাকে চুর্ণবিচূর্ণ করে দেয়। সুতরাং তখন তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। আর তোমাদের জন্য দুর্ভোগ সে কারণে যা তোমরা রচনা করেছো।

২১:১৯
ওয়া = আর। লাহু = তাঁরই অধিকারভুক্ত। মান ফিস সামাওয়াতি = যারা আছে আকাশমন্ডলীতে। ওয়া = ও। আরদি = পৃথিবীতে। ওয়া = আর। মান = যারা। ইনদাহু = তাঁর নৈকট্যশীল হয়ে আছে। লা ইয়াছতাকবিরূনা = তারা বড়াই/ অহংকার করে না। আন ইবাদাতিহী = তাঁর ইবাদাত/ দাসত্ব করা থেকে। ওয়া = আর। লা ইয়াছতাহছিরূনা = তারা তাতে ক্লান্ত হয় না।

আর তাঁরই অধিকারভুক্ত যারা আছে আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে। আর যারা তাঁর নৈকট্যশীল হয়ে আছে তারা বড়াই/ অহংকার করে না তাঁর ইবাদাত/ দাসত্ব করা থেকে আর তারা তাতে ক্লান্ত হয় না।

২১:২০
ইউছাব্বিহূনাল্লায়লা ওয়ান্নাহারা = তারা তাঁর তাসবীহ/ পবিত্রতা বর্ণনা করে রাতে ও দিনে। ওয়া = আর। লা ইয়াফতারূনা = তারা তাতে অলসতা করে না।

তারা তাঁর তাসবীহ/ পবিত্রতা বর্ণনা করে রাতে ও দিনে। আর তারা তাতে অলসতা করে না।

২১:২১
আমিত্তাখাজূ = তারা কি গ্রহণ করেছে। আলিহাতাম মিনাল আরদি = জমিনের/ পার্থিব ইলাহদেরকে। হুম = তারা কি। ইউনশিরূনা = মৃতকে পুনরুত্থিত করতে পারে?

তারা কি গ্রহণ করেছে জমিনের/ পার্থিব ইলাহদেরকে। তারা কি (তাদের এ ইলাহেরা কি) মৃতকে পুনরুত্থিত করতে পারে?

২১:২২
লাও = যদি। কানা = থাকতো। ফীহিমা = তাদের উভয়ের মধ্যে (= আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে)। আলিহাতান ইল্লাল্লাহা = আল্লাহ ছাড়া আরো ইলাহ। লাফাছাদাতা = তাহলে উভয়ের শৃংখলা ব্যবস্থা বিনষ্ট হয়ে যেতো। ফাছুবহানাল্লাহি রব্বিল আরশি = সুতরাং আল্লাহ রব্বুল আরশ (= আরশের রব আল্লাহ) পবিত্র। আম্মা = তা থেকে যা। ইয়াসিফূনা = তারা বর্ণনা করে।

যদি থাকতো তাদের উভয়ের মধ্যে (= আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে) আল্লাহ ছাড়া আরো ইলাহ, তাহলে উভয়ের শৃংখলা ব্যবস্থা বিনষ্ট হয়ে যেতো। সুতরাং আল্লাহ রব্বুল আরশ (= আরশের রব আল্লাহ) পবিত্র তা থেকে যা তারা বর্ণনা করে।

২১:২৩
লা ইউছআলু = তাঁকে জিজ্ঞাসা করা যাবে না। আম্মা ইয়াফআলু = যা তিনি করেন তা সম্পর্কে। ওয়া = আর। হুম = তাদেরকে। ইউছআলূনা = জিজ্ঞাসা করা হবে (তারা যা করে তা সম্পর্কে)।

তাঁকে জিজ্ঞাসা করা যাবে না যা তিনি করেন তা সম্পর্কে। আর তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে (তারা যা করে তা সম্পর্কে)।

২১:২৪
আমিত্তাখাজূ = তারা কি গ্রহণ করেছে। মিন দূনিহী = তাঁকে বাদ দিয়ে। আলিহাতান = অন্য ইলাহদেরকে। ক্বুল = বলো। হাতূ = তোমরা পেশ করো। বুরহানাকুম = তোমাদের বুরহান/ প্রমাণ। হাযা যিকরু মাম মায়িআ = ইহা যারা আমার সাথে আছে তাদের যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। ওয়া = আর (আরো আছে)। যিকরু মান ক্বাবলী = যারা আমার আগে ছিলো তাদের যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। বাল = বরং। আকছারুহুম = তাদের অধিকাংশই। লা ইয়া’লামূনাল হাক্বক্বা = সত্যকে জানে না। ফাহুম = সুতরাং তারা। মু’রিদূনা = বিমুখ হয়েই আছে।

তারা কি গ্রহণ করেছে তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য ইলাহদেরকে? বলো, ‘তোমরা পেশ করো তোমাদের বুরহান/ প্রমাণ। ইহা (= এই কুরআন) যারা আমার সাথে আছে তাদের যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। আর (আরো আছে) যারা আমার আগে ছিলো তাদের যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। বরং তাদের অধিকাংশই সত্যকে জানে না। সুতরাং তারা বিমুখ হয়েই আছে।

২১:২৫
ওয়া = আর। মা আরছালনা = আমরা প্রেরণ করিনি। মিন ক্বাবলিকা = তোমার আগে। মির রাসূলিন = কোন রসূলকে। ইল্লা = এছাড়া যে। নূহিয়া = আমরা ওহী করেছি। ইলাইহি = তার কাছে। আন্নাহু = এই যে,। লা ইলাহা ইল্লা আনা = ‘কোন ইলাহ নেই, আমি ছাড়া। ফা’বুদুনী = সুতরাং তোমরা আমার ইবাদাত/ দাসত্ব করো।

আর আমরা প্রেরণ করিনি তোমার আগে কোন রসূলকে, এছাড়া যে, আমরা ওহী করেছি তার কাছে এই যে, “কোন ইলাহ নেই, আমি ছাড়া। সুতরাং তোমরা আমার ইবাদাত/ দাসত্ব করো”।

২১:২৬
ওয়া = আর। ক্বলুত্তাখাজার রহমানু ওয়ালাদান = তারা বলে, ‘রহমান/ দয়াময় (আল্লাহ) সন্তান গ্রহণ করেছেন। ছুবহানাহু = ছুবহানাহু/ তিনি পবিত্র। বাল = বরং (তারা যাদেরকে আল্লাহর সন্তান আখ্যায়িত করে সেই ফেরেশতারা তো)। ইবাদুম মুকরামূনা = সম্মানিত বান্দা।

আর তারা বলে, ‘রহমান/ দয়াময় (আল্লাহ) সন্তান গ্রহণ করেছেন। ছুবহানাহু/ তিনি পবিত্র। বরং (তারা যাদেরকে আল্লাহর সন্তান আখ্যায়িত করে সেই ফেরেশতারা তো) সম্মানিত বান্দা।

২১:২৭
লা ইয়াছবিক্বূনাহু বিল ক্বাওলি = তারা তাঁর আগে বেড়ে কথা বলে না। ওয়া = আর। হুম = তারা। বিআমরিহী = তাঁর আদেশে। ইয়া’মালূনা = কাজ করে।

তারা তাঁর আগে বেড়ে কথা বলে না। আর তারা তাঁর আদেশে কাজ করে।

২১:২৮
ইয়া’লামু = তিনি জানেন। মা বায়না আয়দীহিম = যা তাদের সামনে আছে। ওয়া = আর। মা খালফাহুম = যা তাদের পিছনে আছে। ওয়া = আর। লা ইয়াশফাঊনা = তারা শাফায়াত/ সুপারিশ করবে না। ইল্লা লিমানিরতাদা = তার জন্য ছাড়া যার প্রতি আল্লাহ রাজি/ সন্তুষ্ট থাকেন। ওয়া = আর। হুম = তারা। মিন খাশইয়াতিহী = তাঁর ভয়ে। মুশফিক্বূনা = ভীতসন্ত্রস্ত থাকে।

তিনি জানেন যা তাদের সামনে আছে আর যা তাদের পিছনে আছে। আর তারা (= ফেরেশতারা) শাফায়াত/ সুপারিশ করবে না, তার জন্য ছাড়া যার প্রতি আল্লাহ রাজি/ সন্তুষ্ট থাকেন। আর তারা তাঁর ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত থাকে।

২১:২৯
ওয়া = আর। মাইঁ ইয়াক্বুল মিনহুম = তাদের মধ্য থেকে যে বলে বসবে। ইন্নী = নিশ্চয় আমিও। ইলাহুম মিন দূনিহী = তিনি (= আল্লাহ) ছাড়া আরেক ইলাহ। ফাযালিকা = তাহলে এ কারণে। নাজযীহি = আমরা তাকে প্রতিফল দেবো। জাহান্নামু = জাহান্নাম। কাযালিকা = এভাবেই। নাজযিয যালিমীনা = আমরা যালিমদেরকে প্রতিফল দেবো।

আর তাদের মধ্য থেকে যে বলে বসবে, ‘নিশ্চয় আমিও তিনি (= আল্লাহ) ছাড়া আরেক ইলাহ’। তাহলে এ কারণে আমরা তাকে প্রতিফল দেবো জাহান্নাম। এভাবেই আমরা যালিমদেরকে প্রতিফল দেবো।

২১:৩০
আওয়ালাম ইয়ারাল্লাযীনা কাফারূ = যারা কুফর করেছে তারা কি ভেবে দেখে না। আন্নাছছামাওয়াতি ওয়াল আরদা = যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী। কানাতা = উভয়ে ছিলো। রাতক্বান = মিলিত অবস্থায়। ফাফাতাক্বনাহুমা = তারপর আমরা উভয়কে পৃথক করে দিয়েছি। ওয়া = আর। জাআলনা = আমরা সৃষ্টি করেছি। মিনাল মায়ি = (সাগরের) পানি থেকে। কুল্লা সাইয়িন হাইয়িন = প্রত্যেক জীবন্ত সত্তাকে। আফালা ইউ’মিনূনা = তবে কি তারা ঈমান/ বিশ্বাস করবে না?

যারা কুফর করেছে তারা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী উভয়ে ছিলো মিলিত অবস্থায়। তারপর আমরা উভয়কে পৃথক করে দিয়েছি। আর আমরা সৃষ্টি করেছি (সাগরের) পানি থেকে প্রত্যেক জীবন্ত সত্তাকে। তবে কি তারা ঈমান/ বিশ্বাস করবে না?

২১:৩১
ওয়া = আর। জাআলনা = আমরা স্থাপন করেছি। ফিল আরদি = পৃথিবীতে। রাওয়াছিআ = পর্বতসমূহ। আন = যেন না। তামীদা = উহা টলে যায়। বিহিম = তাদেরকে নিয়ে। ওয়া = আর। জাআলনা = আমরা স্থাপন করেছি। ফীহা = উহাতে। ফিজাজান ছুবুলান = প্রশস্ত রাস্তাসমূহ। লাআল্লাহুম = যেন তারা। ইয়াহতাদূনা = পথের দিশা পেতে পারে।

আর আমরা স্থাপন করেছি পৃথিবীতে পর্বতসমূহ, যেন না উহা টলে যায় তাদেরকে নিয়ে। আর আমরা স্থাপন করেছি উহাতে প্রশস্ত রাস্তাসমূহ, যেন তারা পথের দিশা পেতে পারে।

২১:৩২
ওয়া = আর। জাআলনাছ ছামাআ = আমরা আকাশকে করেছি। ছাক্বফাম মাহফূযান = সুরক্ষিত সামিয়ানাস্বরূপ। ওয়া = আর। হুম = তারা। আন আয়াতিহা = উহার আয়াতসমূহ/ নিদর্শনসমূহ থেকে। মু’রিদূনা = বিমুখ হয়েই আছে।

আর আমরা আকাশকে করেছি সুরক্ষিত সামিয়ানাস্বরূপ। আর তারা উহার আয়াতসমূহ/ নিদর্শনসমূহ থেকে বিমুখ হয়েই আছে।

২১:৩৩
ওয়া = আর। হুয়াল্লাযী = তিনিই সেই সত্তা যিনি। খালাক্বাল লাইলা = সৃষ্টি করেছেন রাত। ওয়ান্নাহারা = ও দিন। ওয়াশশামছা = এবং সূর্য। ওয়াল ক্বামারা = ও চন্দ্র। কুল্লুন ফী ফালাকিইঁ ইয়াছবাহূনা = প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে সাঁতার কাটছে।

আর তিনিই সেই সত্তা যিনি সৃষ্টি করেছেন রাত ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। (মহাশূন্যে) প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে সাঁতার কাটছে।

২১:৩৪
: ওয়া = আর। মা জাআলনা = আমরা ব্যবস্থা করিনি। লিবাশারিম মিন ক্বাবলিকাল খুলদ = তোমার আগর মানুষের জন্যও চিরকালের স্থায়ীত্ব। আফা’য়িন = তবে কি যদি। মিত্তা = তুমি মৃত্যুবরণ করো। ফাহুমুল খালিদূনা = তাহলে তারা চিরস্থায়ী হয়ে যাবে?

আর আমরা ব্যবস্থা করিনি তোমার আগর মানুষের জন্যও চিরকালের স্থায়ীত্ব। তবে কি যদি তুমি মৃত্যুবরণ করো তাহলে তারা চিরস্থায়ী হয়ে যাবে?

২১:৩৫
কুল্লু নাফসিন = প্রত্যেক নফসই। যায়িক্বাতুল মাওতি = মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। ওয়া = আর। নাবলূকুম = আমরা তোমাদেরকে পরীক্ষা করি। বিশ শাররি ওয়াল খায়রি = মন্দ ও উত্তম অবস্থা দিয়ে। ফিতনাতুন = (যা তোমাদেরকে দেয়া হয়) ফিতনা/ পরীক্ষাস্বরূপ। ওয়া = আর। ইলাইনা = আমাদের কাছেই। তুরজাঊনা = তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।

প্রত্যেক নফসই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর আমরা তোমাদেরকে পরীক্ষা করি মন্দ ও উত্তম অবস্থা দিয়ে, (যা তোমাদেরকে দেয়া হয়) ফিতনা/ পরীক্ষাস্বরূপ। আর আমাদের কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।

২১:৩৬
ওয়া = আর। ইযা = যখন। রআকাল্লাযীনা কাফারূ = যারা কুফর করেছে তারা তোমাকে দেখে। ইইঁ ইয়াত্তাখিজূনাকা = তারা তোমাকে গ্রহণ করে না। ইল্লা হুযুওয়ান = ঠাট্রা-বিদ্রুপের পাত্র হিসাবে ছাড়া। আহাযাল্লাযী = (তারা বলে,) এ-ই কি সেই ব্যক্তি যে। ইয়াযকুরু = সমালোচনা করে। আলিহাতাকুম = তোমাদের ইলাহদের ব্যাপারে। ওয়া = আর। হুম = তারা। বিযিকরির রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের (= আল্লাহর) যিকির/ স্মরণ/ আলোচনার প্রতি। হুম কাফিরূনা = কাফির/ অবিশ্বাসী।

আর যখন যারা কুফর করেছে তারা তোমাকে দেখে তখন তারা তোমাকে গ্রহণ করে না ঠাট্রা-বিদ্রুপের পাত্র হিসাবে ছাড়া। (তারা বলে,) ‘এ-ই কি সেই ব্যক্তি যে সমালোচনা করে তোমাদের ইলাহদের ব্যাপারে?’ আর তারা রহমানের/ দয়াময়ের (= আল্লাহর) যিকির/ স্মরণ/ আলোচনার প্রতি কাফির/ অবিশ্বাসী।

২১:৩৭
খুলিক্বাল ইনসানু = সৃষ্টি করা হয়েছে ইনসানকে/ মানুষকে। মিন আজালিন = ত্বরাপ্রবণতা দিয়ে। ছাউরীকুম = শীঘ্রই আমি তোমাদেরকে দেখাবো। আয়াতী = আমার আয়াতসমূহ/ নিদর্শনসমূহ। ফালা তাছতা’জিলূনি = সুতরাং আমার কাছে তোমরা তাড়াহুড়া করো না।

সৃষ্টি করা হয়েছে ইনসানকে/ মানুষকে ত্বরাপ্রবণতা (= সঙ্গে সঙ্গে ফলাফল চাওয়ার প্রবণতা) দিয়ে। শীঘ্রই আমি তোমাদেরকে দেখাবো আমার আয়াতসমূহ/ নিদর্শনসমূহ। সুতরাং আমার কাছে তোমরা তাড়াহুড়া করো না।

২১:৩৮
ওয়া = আর। ইয়াক্বুলূনা = তারা বলে। মাতা = কখন পূর্ণ হবে। হাযাল ওয়া’দু = এই ওয়াদা। ইন = যদি। কুনতুম = তোমরা হও। সাদিক্বীনা = সত্যবাদী।

আর তারা বলে, ‘কখন পূর্ণ হবে এই ওয়াদা, যদি তোমরা হও সত্যবাদী?’

২১:৩৯
লাও = যদি। ইয়া’লামুল্লাযীনা = তারা জানতো যারা। কাফারূ = কুফর করেছে। হীনা = সে সময়। লা ইয়াকুফফূনা = তারা না প্রতিরোধ করতে পারবে। আওঁ উজূহিহিমুন্নারা = তাদের মুখমন্ডলসমূহ থেকে (জাহান্নামের) আগুনকে। ওয়া = আর। লা আন যুহুরিহিম = না তাদের পিঠসমূহ থেকে। ওয়া = আর। লা হুম ইউনসরূনা = তাদেরকে সাহায্য করা হবে না।

যদি তারা জানতো যারা কুফর করেছে, সে সময় তারা না প্রতিরোধ করতে পারবে তাদের মুখমন্ডলসমূহ থেকে (জাহান্নামের) আগুনকে আর না তাদের পিঠসমূহ থেকে। আর তাদেরকে সাহায্য করা হবে না।

২১:৪০
বাল = বরং। তা’তীহিম = উহা তাদের কাছে আসবে। বাগতাতান = হঠাৎ করেই। ফাতাবহাতুহুম = সুতরাং উহা তাদেরকে হতভম্ব করে দিবে। ফালা ইয়াছতাত্বিঊনা = তারপর তারা পারবে না। রদ্দাহা = উহাকে রোধ করতে। ওয়া = আর। লা হুম ইউনযরূনা = তাদেরকে অবকাশও দেয়া হবে না।

বরং উহা তাদের কাছে আসবে হঠাৎ করেই। সুতরাং উহা তাদেরকে হতভম্ব করে দিবে। তারপর তারা পারবে না উহাকে রোধ করতে। আর তাদেরকে অবকাশও দেয়া হবে না।

২১:৪১
ওয়া = আর। লাক্বাদিছতুহযিয়া = ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হয়েছে। বিরুসুলিম মিন ক্বাবলিকা = তোমার আগের রসূলদেরকেও। ফাহাক্বা = তারপর ঘিরে নিয়েছিলো। বিল্লাযীনা = তাদেরকে যারা। ছাখিরূ = ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে। মিনহুম = তাদের মধ্য থেকে। মা কানূ বিহী = উহাই যা নিয়ে। ইযাছতাহযিঊনা = তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে।

আর ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হয়েছে তোমার আগের রসূলদেরকেও। তারপর ঘিরে নিয়েছিলো তাদেরকে যারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে তাদের মধ্য থেকে, উহাই যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে।

২১:৪২
ক্বুল = বলো। মাইঁ ইয়াকলাউকুম = কে তোমাদেরকে রক্ষা করতে পারে। বিল্লাইলি ওয়ান্নাহারি = রাতে ও দিনে। মিনার রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের (শাস্তি) থেকে। বাল = বরং। হুম = তারা। আন যিকরি রব্বিহিম = তাদের রবের যিকির/ স্মরণ/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান থেকে। মু’রিদূনা = বিমুখ হয়েই আছে।

বলো, ‘কে তোমাদেরকে রক্ষা করতে পারে রাতে ও দিনে রহমানের/ দয়াময়ের (শাস্তি) থেকে? বরং তারা তাদের রবের যিকির/ স্মরণ/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান থেকে বিমুখ হয়েই আছে।

২১:৪৩
আম = নাকি। লাহুম আলিহাতুন তামনাউহুম মিন দূনিনা = আমরা ছাড়া তাদের এমন ইলাহগণ আছে যারা তাদেরকে রক্ষা করতে পারে। লা ইয়াছতাতীঊনা = তারা পারবে না। নাসরা আনফুসিহিম = তাদের নিজেদেরকে সাহায্য করতে। ওয়া = আর। লা হুম = না তাদেরকে। মিন্না = আমাদের পক্ষ থেকে। ইউসহাবূনা = কোন সহযোগিতা দেয়া হবে।

নাকি আমরা ছাড়া তাদের এমন ইলাহগণ আছে যারা তাদেরকে রক্ষা করতে পারে? তারা পারবে না তাদের নিজেদেরকে সাহায্য করতে আর না তাদেরকে আমাদের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা দেয়া হবে।

২১:৪৪
বাল = বরং। মাত্তা’না = আমরা ভোগসামগ্রী দিয়েছি। হাউলায়ি = তাদেরকে। ওয়া = আর। আবাআহুমা = তাদের বাপদাদাকে। হাত্তা = যতক্ষণ না। ত্বলা = দীর্ঘ হয়েছিল। আলাইহিমুল উমুরু = তাদের আয়ু। আফালা ইয়ারাওনা = তারা কি দেখে না। আন্না = যে, আমরা। না’তিল আরদা = পৃথিবীকে আনছি। নানক্বুদূহা = আমরা উহাকে সংকুচিত করে। মিন আতরফিহা = উহার অংশসমূহ থেকে। আফাহুমুল গালিবূনা = তবুও কি তারা বিজয়ী হবে?

বরং আমরা ভোগসামগ্রী দিয়েছি তাদেরকে আর তাদের বাপদাদাকে। যতক্ষণ না দীর্ঘ হয়েছিল তাদের আয়ু। তারা কি দেখে না যে, আমরা পৃথিবীকে আনছি আমরা উহাকে সংকুচিত করে উহার অংশসমূহ থেকে? তবুও কি তারা বিজয়ী হবে?

২১:৪৫
ক্বুল = বলো। ইন্নামা = নিশ্চয়। উনযিরুকুম = আমি তোমাদেরকে সতর্ক করছি। বিল ওয়াহয়ি = ওহী দ্বারা। ওয়া = আর। লা ইয়াছমাউস সুম্মুদ্দুআআ = বধির শুনে না কোন আহবান। ইযা মা = যখন। ইউযারূনা = তাদেরকে আহবান করা হয়।

বলো, “নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে সতর্ক করছি ওহী দ্বারা”। আর বধির শুনে না কোন আহবান যখন তাদেরকে আহবান করা হয়।

২১:৪৬
ওয়া = আর। লায়িম মাছছাতহুম = যদি তাদেরকে স্পর্শ করে। নাফহাতুন = কিছুমাত্রও। মিন আযাবি রব্বিকা = তোমার রবের কোন আযাব। লা ইয়াক্বূলুন্না = তাহলে তারা অবশ্যই বলবে। ইয়া ওয়ায়লানা = হায়! আমাদের আফসোস। ইন্না = নিশ্চয়। কুন্না = আমরা ছিলাম। যালিমীনা = যালিম।

আর যদি তাদেরকে স্পর্শ করে কিছুমাত্রও তোমার রবের কোন আযাব, তাহলে তারা অবশ্যই বলবে, ‘হায়! আমাদের আফসোস, নিশ্চয় আমরা ছিলাম যালিম’।

২১:৪৭
ওয়া = আর। নাদাউল মাওয়াযীনাল ক্বিছতা = আমরা স্থাপন করবো ন্যায়বিচারের পাল্লাসমূহ। লিইয়াওমিল ক্বিয়ামাতি = ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে। ফালা তুযলামু = সুতরাং যুলুম করা হবে না। নাফসান = কোন ব্যক্তির প্রতি। সাইয়ান = কিছুমাত্রও। ওয়া = আর। ইন = যদি। কানা = হয় (কোন আমল)। মিছক্বালা হাব্বাতিম মিন খারদালিন = একটি শস্য দানার সমপরিমাণও। আতায়নাবিহা = আমরা উহাকে নিয়ে আসবো। ওয়া = আর। কাফা বিনা হাছিবীনা = হিসাবকারীরূপে আমরাই যথেষ্ট।

আর আমরা স্থাপন করবো ন্যায়বিচারের পাল্লাসমূহ ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে। সুতরাং যুলুম করা হবে না কোন ব্যক্তির প্রতি কিছুমাত্রও। আর যদি হয় (কোন আমল) একটি শস্য দানার সমপরিমাণও, আমরা উহাকে নিয়ে আসবো। আর হিসাবকারীরূপে আমরাই যথেষ্ট।

২১:৪৮
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। আতাইনা = আমরা দিয়েছি। মূসা ওয়া হারূনা = মূসাকে ও হারূনকে। আল ফুরক্বানা = ফুরকান/ সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী। ওয়া = আর। দিয়াআন = দিয়াআন/ আলো। ওয়া = আর। যিকরাল্লিল মুত্তাক্বীনা = মুত্তাকীদের জন্য যিকরা/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান।

আর নিশ্চয় আমরা দিয়েছি মূসাকে ও হারূনকে ফুরকান/ সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী আর দিয়াআন/ আলো আর মুত্তাকীদের জন্য যিকরা/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান।

২১:৪৯
আল্লাযীনা = যারা। ইয়াখশাওনা = ভয় করে। রব্বাহুম = তাদের রবকে। বিল গায়বি = না দেখা সত্ত্বেও। ওয়া = আর। হুম = তারা। মিনাছ ছায়াতি = সায়াতের/ প্রলয়-মুহুর্তের ব্যাপারে। মুশফিক্বূনা = ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে।

যারা ভয় করে তাদের রবকে না দেখা সত্ত্বেও আর তারা সায়াতের/ প্রলয়-মুহুর্তের ব্যাপারে ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে।

২১:৫০
ওয়া = আর। হাযা = ইহা হচ্ছে। যিকরুম মুবারাকুন = যিকরুম মুবারাকুন/ বরকতময় যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। আনযালনাহু = আমরাই উহা নাযিল করেছি। আফাআনতুম = তবুও কি তোমরা। লাহু = উহাকে। মুনকিরূনা = এনকার/ অস্বীকার করবে?

আর ইহা হচ্ছে যিকরুম মুবারাকুন/ বরকতময় যিকির/ স্মরণিকা/ উপদেশ/ সংবিধান। আমরাই উহা নাযিল করেছি। তবুও কি তোমরা উহাকে এনকার/ অস্বীকার করবে?

২১:৫১
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। আতাইনা = আমরা দিয়েছি। ইবরাহীমা = ইবরাহীমকে। রুশদাহু = সঠিক পথের জ্ঞান। মিন ক্বাবলু = ইতিপূর্বে। ওয়া = আর। কুন্না = আমরা। বিহী = তার সম্পর্কে। আলিমীনা = পরিজ্ঞাত।

আর নিশ্চয় আমরা দিয়েছি ইবরাহীমকে সঠিক পথের জ্ঞান ইতিপূর্বে। আর আমরা তার সম্পর্কে পরিজ্ঞাত।

২১:৫২
ইয = যখন। ক্বলা = সে (= ইবরাহীম) বলেছে। লিআবীহি = তার পিতাকে। ওয়া = ও। ক্বাওমিহী = তার কওমকে। মা হাযিহিত তামাছীলুল্লাতী আনতুম লাহা আকিফূনা = এ মূর্তিগুলো কিরূপ তোমরা যার জন্য এতেকাফরত/ আত্মনিয়োজিত?

যখন সে (= ইবরাহীম) বলেছে তার পিতাকে ও তার কওমকে, ‘এ মূর্তিগুলো কিরূপ তোমরা যার জন্য এতেকাফরত/ আত্মনিয়োজিত?

২১:৫৩
ক্বলূ = তারা বলেছে। ওয়াজাদনা = আমরা পেয়েছি। আবাআনা = আমাদের বাপদাদাকে। লাহা আবিদীনা = উহার ইবাদাতকারী/ উপাসনাকারীরূপে।

তারা বলেছে, ‘আমরা পেয়েছি আমাদের বাপদাদাকে উহার ইবাদাতকারী/ উপাসনাকারীরূপে।

২১:৫৪
ক্বলা = সে (= ইবরাহীম) বলেছে। লাক্বাদ = নিশ্চয়। কুনতুম আনতুম = তোমরা আছো। ওয়া আবাউকুম = আর তোমাদের বাপদাদা ছিলো। ফী দলালিম মুবীনিন = প্রকাশ্য বিভ্রান্তির মধ্যে।

সে (= ইবরাহীম) বলেছে, ‘নিশ্চয় তোমরা আছো আর তোমাদের বাপদাদা ছিলো প্রকাশ্য বিভ্রান্তির মধ্যে’।

২১:৫৫
ক্বলূ = তারা বলেছে। আজি’তানা = তুমি কি আমাদের কাছে এসেছো। বিল হাক্বক্বি = সত্য নিয়ে। আম = নাকি। আনতা = তুমি। মিনাল লায়িবীনা = কৌতুককারীদের অন্তর্ভুক্ত?

তারা বলেছে, ‘তুমি কি আমাদের কাছে এসেছো সত্য নিয়ে নাকি তুমি কৌতুককারীদের অন্তর্ভুক্ত?’

২১:৫৬
ক্বলা = সে (= ইবরাহীম) বলেছে। বার রব্বুকুম = বরং তিনিই তোমাদের রব। রব্বুছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি = আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রব। আল্লাযী = যিনি। ফাতারাহুন্না = উহাদের সৃষ্টি করেছেন। ওয়া = আর। আনা = আমি। আলা যালিকুম = এই বিষয়ে। মিনাশ শাহিদীনা = অন্যতম স্বাক্ষী (= ইবরাহীমের আনিত সত্য হচ্ছে, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা তিনিই মানুষের রব/ বিধানদাতা। ইবরাহীম এ সত্যের/ বিধানের একজন স্বাক্ষ্যদাতা।)

সে (= ইবরাহীম) বলেছে, ‘বরং তিনিই তোমাদের রব, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রব, যিনি উহাদের সৃষ্টি করেছেন। আর আমি এই বিষয়ে অন্যতম স্বাক্ষী’ (= ইবরাহীমের আনিত সত্য হচ্ছে, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা তিনিই মানুষের রব/ বিধানদাতা। ইবরাহীম এ সত্যের/ বিধানের একজন স্বাক্ষ্যদাতা।)

২১:৫৭
ওয়া = আর। তাল্লাহি = আল্লাহর কসম। লাআকীদান্না = আমি কায়দা-কৌশল অবলম্বন করবোই। আসনামাকুম = তোমাদের পূজনীয় মূর্তিগুলোর বিষয়ে। বা’দা আন তুওয়াল্লূ মুদবিরীনা = তোমরা প্রস্থান করার পর।

আর আল্লাহর কসম, আমি কায়দা-কৌশল অবলম্বন করবোই তোমাদের পূজনীয় মূর্তিগুলোর বিষয়ে তোমরা প্রস্থান করার পর।

২১:৫৮
ফাজাআলাহুম = তারপর সে (= ইবরাহীম) সেগুলোকে (= তাদের পূজনীয় মূর্তিগুলোকে) করে দিয়েছে। জুযাযান = টুকরো টুকরো। ইল্লা কাবীরাল্লাহুম = সেগুলোর বড়টিকে ছাড়া। লাআল্লাহুম = যাতে তারা। ইলাইহি ইয়ারজিঊনা = তার কাছে ফিরে আসতে পারে।

তারপর সে (= ইবরাহীম) সেগুলোকে (= তাদের পূজনীয় মূর্তিগুলোকে) করে দিয়েছে টুকরো টুকরো, সেগুলোর বড়টিকে ছাড়া। যাতে তারা তার কাছে ফিরে আসতে পারে।

২১:৫৯
ক্বলূ = তারা বলেছে। মান = কে। ফাআলা হাযা = করেছে এই কাজ। বিআলিহাতিনা = আমাদের ইলাহগুলোর সাথে। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে। লামিনায যালিমীনা = যালিমদের/ অত্যাচারীদের অন্তর্ভুক্ত।

তারা (কয়েকজন) বলেছে, ‘কে করেছে এই কাজ আমাদের ইলাহগুলোর সাথে? নিশ্চয় সে যালিমদের/ অত্যাচারীদের অন্তর্ভুক্ত।

২১:৬০
ক্বলূ = ক্বলূ = তারা (কয়েকজন) বলেছে। ছামি’না = আমরা শুনেছি। ফাতাইঁ ইয়াযকুরুহুম = একজন যুবককে সেগুলোর ব্যাপারে সমালোচনা করতে। ইউক্বালূ লাহু = তাকে (= সেই যুবকটির নাম) বলা হয়। ইবরাহীমু = ইবরাহীম।

তারা (কয়েকজন) বলেছে, ‘আমরা শুনেছি একজন যুবককে সেগুলোর ব্যাপারে সমালোচনা করতে। তাকে (= সেই যুবকটির নাম) বলা হয় ইবরাহীম।

২১:৬১
ক্বলূ = তারা বলেছে। ফা’তূ বিহী = তাহলে তাকে নিয়ে আসো। আলা আ’ইউনিন্নাছি = লোকজনের চোখের সামনে। লাআল্লাহুম = যেন তারা। ইয়াশহাদূনা = স্বাক্ষী থাকতে পারে।

তারা বলেছে, ‘তাহলে তাকে (= ইবরাহীমকে) নিয়ে আসো লোকজনের চোখের সামনে যেন তারা স্বাক্ষী থাকতে পারে।

২১:৬২
ক্বলূ = তারা বলেছে। আআনতা = তুমিই কি। ফাআলতা হাযা = করেছো এটি। বিআলিহাতিনা = আমাদের ইলাহগুলোর সাথে। ইয়া ইবরাহীমু = হে ইবরাহীম।

তারা বলেছে, ‘তুমিই কি করেছো এটি আমাদের ইলাহগুলোর সাথে, হে ইবরাহীম?

২১:৬৩
ক্বলা = সে (= ইবরাহীম) বলেছে। বাল = বরং। ফাআলাহু = উহা যে করার সে করেছে। কাবীরুহুম হাযা = এই যে তাদের বড়টি। ফাছআলূহুম = সেগুলোকেই জিজ্ঞাসা করো। ইন = যদি। কানূ ইয়ানতিক্বূনা = তারা কথা বলতে পারে।

সে (= ইবরাহীম) বলেছে, ‘বরং উহা যে করার সে করেছে। এই যে তাদের বড়টি। সেগুলোকেই জিজ্ঞাসা করো, যদি তারা কথা বলতে পারে’।

২১:৬৪
ফারজাঊ = তারপর তারা ফিরে গেছে। ইলা আনফুসিহিম = তাদের নিজেদের কাছে (যুক্তি পরামর্শ আঁটার জন্য)। ফাক্বুলূ = তারপর তারা (নিজেদের মধ্যে) বলেছে,। ইন্নাকুম আনতুমুয যালিমূনা = নিশ্চয় তোমরাই যালিম।

তারপর তারা ফিরে গেছে তাদের নিজেদের কাছে (যুক্তি পরামর্শ আঁটার জন্য)। তারপর তারা (নিজেদের মধ্যে) বলেছে, ‘নিশ্চয় তোমরাই যালিম’।

২১:৬৫
ছুম্মা = তারপর। নুকিছূ আলা রুউছিকুম = তারা মাথা নত করে নিয়েছে। লাক্বাদ = (এবং বলেছে,) ‘নিশ্চয়। আলিমতা = তুমি তো জানোই। মা হাউলায়ি ইয়ানতিক্বূনা = এগুলি কোন কথা বলতে পারে না।

তারপর তারা মাথা নত করে নিয়েছে। (এবং বলেছে,) ‘নিশ্চয় তুমি তো জানোই এগুলি কথা বলতে পারে না’।

২১:৬৬
ক্বলা = সে (= ইবরাহীম) বলেছে। আফাতা’বুদূনা = তাহলে কি তোমরা উহার ইবাদাত/ উপাসনা করো। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে। মা = যা। লা ইয়ানফাউকুম = তোমাদের উপকার করতে পারে না। শাইয়ান = কিছুমাত্রও। ওয়া = আর। লা ইয়াদুররুকুম = কোন ক্ষতিও করতে পারে না।

সে (= ইবরাহীম) বলেছে, ‘তাহলে কি তোমরা উহার ইবাদাত/ উপাসনা করো, আল্লাহকে বাদ দিয়ে, যা তোমাদের উপকার করতে পারে না কিছুমাত্রও, আর কোন ক্ষতিও করতে পারে না?’

২১:৬৭
উফফিল লাকুম = উফ! আফসোস! তোমাদের জন্য। ওয়া = আর। লিমা = সেগুলোর জন্যও যেগুলোর। তা’বুদূনা = তোমরা ইবাদাত/ উপাসনা করো। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে। আফালা তা’ক্বিলূনা = তোমরা কি আকল/ বিবেক-বুদ্ধি (common sense) প্রয়োগ করো না?

উফ! আফসোস! তোমাদের জন্য আর সেগুলোর জন্যও যেগুলোর তোমরা ইবাদাত/ উপাসনা করো, আল্লাহকে বাদ দিয়ে। তোমরা কি আকল/ বিবেক-বুদ্ধি (common sense) প্রয়োগ করো না?

২১:৬৮
ক্বলূ = তারা বলেছে। হাররিক্বূহু = তাকে (= ইবরাহীমকে) আগুনে পুড়ে ফেলো। ওয়ানসুরূ = আর তোমরা সাহায্য করো। আলিহাতাকুম = তোমাদের ইলাহদেরকে। ইন = যদি। কুনতুম = তোমরা হও। ফায়িলূনা = এ কার্যসম্পাদনকারী (= যদি তোমরা ইবরাহীমকে শাস্তি দিয়ে তোমাদের ইলাহদেরকে সাহায্য করার কাজে সাহায্যকারী হতে চাও)।

তারা বলেছে, ‘তাকে (= ইবরাহীমকে) আগুনে পুড়ে ফেলো। আর তোমরা সাহায্য করো তোমাদের ইলাহদেরকে। যদি তোমরা হও এ কার্যসম্পাদনকারী’ (= যদি তোমরা ইবরাহীমকে শাস্তি দিয়ে তোমাদের ইলাহদেরকে সাহায্য করার কাজে সাহায্যকারী হতে চাও)।

২১:৬৯
ক্বুলনা = আমরা বলেছি। ইয়া নারু = হে আগুন। কূনী = হয়ে যাও। বারদাওঁ ওয়া ছালামান = ঠান্ডা ও শান্তিময়/ শান্তিদায়ক ঠান্ডা/ নাতিশীতোষ্ণ। আলা ইবরাহীমা = ইবরাহীমের উপর।

আমরা বলেছি, ‘হে আগুন, হয়ে যাও ঠান্ডা ও শান্তিময়/ শান্তিদায়ক ঠান্ডা/ নাতিশীতোষ্ণ, ইবরাহীমের উপর’।

২১:৭০
ওয়া = আর। আরাদূ = তারা এরাদা/ ইচ্ছা করেছে। বিহী = তার সাথে। কায়দান = কায়দা-কৌশল করতে। ফাজাআলনাহুমুল আখছারীনা = তাই আমি তাদেরকে করে দিয়েছি সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত।

আর তারা এরাদা/ ইচ্ছা করেছে তার সাথে কায়দা-কৌশল করতে। তাই আমি তাদেরকে করে দিয়েছি সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত।

২১:৭১
ওয়া = আর। নাজ্জায়নাহু = আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি তাকে। ওয়া = ও। লূতান = লূতকে। ইলাল আরদিল্লাতী বারাকনা ফীহ = ঐ ভূমিতে নিয়ে গিয়ে যাতে আমরা বরকত দিয়েছি। লিল আলামীনা = সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য।

আর আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি তাকে ও লূতকে ঐ ভূমিতে নিয়ে গিয়ে যাতে আমরা বরকত দিয়েছি সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য (বাক্কাতা মুবারাকাতা ০৩:৯৬-৯৭)।

২১:৭২
ওয়া = আর। ওয়াহাবনা = আমরা তাকে দিয়েছি। ইসহাক্বা = ইসহাককে (পুত্র হিসাবে)। ওয়া = আর। ইয়া’ক্বূবা = ইয়াকুবকে। নাফিলাতান = নফল/ পৌত্র হিসাবে। ওয়া = আর। কুল্লান = (তাদের) প্রত্যেককে। জাআলনা = আমরা বানিয়েছি। সলিহীনা = সালেহীন/ সৎকর্মশীল।

আর আমরা তাকে দিয়েছি ইসহাককে (পুত্র হিসাবে) আর ইয়াকুবকে নফল/ পৌত্র হিসাবে। আর (তাদের) প্রত্যেককে আমরা বানিয়েছি সালেহীন/ সৎকর্মশীল।

২১:৭৩
ওয়া = আর। জাআলনাহুম = আমরা তাদেরকে বানিয়েছি। আয়িম্মাতান = ইমাম/ অগ্রগামী। ইয়াহদূনা = তারা হিদায়াত/ প্রথপ্রদর্শন করতো। বিআমরিনা = আমাদের আদেশক্রমে। ওয়া = আর। আওহায়না = আমরা ওহী করেছি। ইলাইহিম = তাদের প্রতি। ফি’লাল খায়রাতি = খায়রাত/ উত্তম কার্যনির্বাহ করতে। ওয়া = আর। ইক্বামাস সালাতি = সালাত কায়েম/ প্রতিষ্ঠা করতে। ওয়া = আর। ইতায়িয যাকাতি = যাকাত (= পরিশুদ্ধতামূলক প্রদেয়)প্রদান করতে। ওয়া = আর। কানূ লানা আবিদীনা = তারা ছিলা আমাদের ইবাদাতকারী।

আর আমরা তাদেরকে বানিয়েছি ইমাম/ অগ্রগামী। তারা হিদায়াত/ প্রথপ্রদর্শন করতো আমাদের আদেশক্রমে। আর আমরা ওহী করেছি তাদের প্রতি, খায়রাত/ উত্তম কার্যনির্বাহ করতে, সালাত কায়েম/ প্রতিষ্ঠা করতে, যাকাত (= পরিশুদ্ধতামূলক প্রদেয়) প্রদান করতে; আর তারা ছিলো আমাদের ইবাদাতকারী।

২১:৭৪
ওয়া = আর। লূতান আতায়নাহু = লূতকে আমরা দিয়েছি। হুকমান ওয়া ইলমান = হুকুম/ বিচার-ক্ষমতা ও ইলম/ (আসমানী কিতাবের) জ্ঞান। ওয়া = আর। নাজ্জায়নাহু = আমরা তাকে নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি। মিনাল ক্বারইয়াতিল্লাতী = ঐ জনপদবাসী থেকে যে। কানাত = ছিলো। তা’মালুল খাবায়িছা = অপবিত্র কর্মকান্ডে লিপ্ত। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। কানূ = ছিলো। ক্বাওমা ছাওয়িন ফাসিক্বীনা = ফাসিক ও নিকৃষ্ট কওম।

আর লূতকে আমরা দিয়েছি হুকুম/ বিচার-ক্ষমতা ও ইলম/ (আসমানী কিতাবের) জ্ঞান। আর আমরা তাকে নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি ঐ জনপদবাসী থেকে যে ছিলো অপবিত্র কর্মকান্ডে লিপ্ত। নিশ্চয় তারা ছিলো ফাসিক ও নিকৃষ্ট কওম।

২১:৭৫
ওয়া = আর। আদখালনাহু = আমরা তাকে দাখিল/ প্রবেশ করিয়েছি। ফী রহমাতিনা = আমাদের রহমতের/ অনুগ্রহের মধ্যে। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে ছিলো। মিনাস সলিহীনা = সৎকর্মশীল।

আর আমরা তাকে দাখিল/ প্রবেশ করিয়েছি আমাদের রহমতের/ অনুগ্রহের মধ্যে। নিশ্চয় সে ছিলো সৎকর্মশীল।

২১:৭৬
ওয়া = আর। নূহান = নূহকেও। ইয = যখন। নাদা = সে ডেকেছিলো। মিন ক্বাবলু = ইতিপূর্বে। ফাছতাজাবনা = তখন আমরা জবাব/ সাড়া দিয়েছি। লাহু = তার ডাকে। ফানাজ্জায়নাহু = সুতরাং আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি তাকে। ওয়া = ও। আহলাহু = তার আহালকে/ পরিবারকে। মিনাল ক্বারবিল আযীমি = মহাসংকট থেকে।

আর নূহকেও। যখন সে ডেকেছিলো ইতিপূর্বে। তখন আমরা জবাব/ সাড়া দিয়েছি তার ডাকে। তখন আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি তাকে ও তার আহালকে/ পরিবারকে মহাসংকট থেকে।

২১:৭৭
ওয়া = আর। নাসারনাহু = আমরা তাকে সাহায্য করেছি। মিনাল ক্বাওমিল্লাযীনা কাযযাবূ = সেই কওম থেকে যারা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। বিআয়াতিনা = আমাদের আয়াতসমূহকে। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। কানূ = ছিলো। ক্বাওমা ছাওয়িন = নিকৃষ্ট কওম। ফাআগরাক্বনাহুম আজমায়ীনা = সুতরাং আমরা তাদের সবাইকে ডুবিয়ে দিয়েছি।

আর আমরা তাকে সাহায্য করেছি সেই কওম থেকে যারা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে আমাদের আয়াতসমূহকে। নিশ্চয় তারা ছিলো নিকৃষ্ট কওম। সুতরাং আমরা তাদের সবাইকে ডুবিয়ে দিয়েছি।

২১:৭৮
ওয়া = আর। দাউদা ওয়া সুলাইমানা = দাউদকে ও সুলাইমানকে। ইয = যখন। ইয়াহকুমানি = তারা উভয়ে বিচার করছিলো। ফিল হারছি = এক ক্ষেতের মামলায়। ইয = যখন। নাফাসাত ফীহি = উহাতে রাতের বেলায় ছড়িয়ে পড়েছিলো। গানামুল ক্বাওমি = এক কওমের মেষপাল। ওয়া = আর। কুন্না = আমরা ছিলাম। লিহুকমিহিম = তাদের বিচারের ব্যাপারে। শাহিদীনা = স্বাক্ষী।

আর দাউদকে ও সুলাইমানকেও (সাহায্য করেছি)। যখন তারা উভয়ে বিচার করছিলো (= উভয়ে একসাথে বিচার করছিলো তথা একজন অন্যজনের পরামর্শ নিয়ে বিচার করছিলো) এক ক্ষেতের মামলায়। যখন উহাতে রাতের বেলায় ছড়িয়ে পড়েছিলো এক কওমের মেষপাল। আর আমরা ছিলাম তাদের বিচারের ব্যাপারে স্বাক্ষী।

২১:৭৯
ফাফাহহামনাহা সুলাইমানা = তখন আমরা সুলাইমানকে এ বিষয়ের (সমাধানের) যথাযথ বুঝ দান করেছি। ওয়া = আর। কুল্লান = (তাদের) প্রত্যেককেই। আতায়না = আমরা দিয়েছি। হুকমান ওয়া ইলমান = হুকুম/ বিচার-ক্ষমতা ও ইলম/ (আসমানী কিতাবের) জ্ঞান। ওয়া = আর। ছাখখারনা = আমরা নিয়োজিত করেছি। মাআ দাউদাল জিবালা= দাউদের সাথে পাহাড়সমূহকে। ইউসাব্বিহনা = সেগুলি তাসবীহ করতো। ওয়াত তয়রা = আর পাখীদেরকেও (তার সাথে নিয়োজিত করেছি)। ওয়া = আর। কুন্না = আমারাই ছিলাম। ফায়িলীনা = এসবের সম্পাদনকারী।

তখন আমরা সুলাইমানকে এ বিষয়ের (সমাধানের) যথাযথ বুঝ দান করেছি। আর (তাদের) প্রত্যেককেই আমরা দিয়েছি হুকুম/ বিচার-ক্ষমতা ও ইলম/ (আসমানী কিতাবের) জ্ঞান। আর আমরা নিয়োজিত করেছি দাউদের সাথে পাহাড়সমূহকে, সেগুলি (তার সাথে) তাসবীহ করতো (= সেগুলোতে তার তাসবীহের প্রতিধ্বনি তৈরি হতো); আর পাখীদেরকেও (তার সাথে নিয়োজিত করেছি)। আর আমারাই ছিলাম এসবের সম্পাদনকারী।

২১:৮০
ওয়া = আর। আল্লামনাহু = আমরা তাকে (= দাউদকে) শিক্ষা দিয়েছি। সানআতা লাবূছিন = বর্মনির্মাণ শিল্প। লাকুম = তোমাদেরই কল্যাণের জন্য। লিতুহসিনাকুম = যেন তোমাদেরকে রক্ষা করতে পারে। মিন বা’ছিকুম = তোমাদের যুদ্ধের আঘাত থেকে। ফাহাল = তবে কি। আনতুম = তোমরা। শাকিরূনা = কৃতজ্ঞ হবে?

আর আমরা তাকে (= দাউদকে) শিক্ষা দিয়েছি বর্মনির্মাণ শিল্প তোমাদেরই কল্যাণের জন্য। যেন উহা তোমাদেরকে রক্ষ করতে পারে তোমাদের যুদ্ধের আঘাত থেকে। তবে কি তোমরা কৃতজ্ঞ হবে?

২১:৮১
ওয়া = আর। লিছুলাইমানাররীহা আসিফাতান = সুলাইমানের জন্য তীব্র বায়ুকে নিয়ন্ত্রিত করেছি। তাজরী = উহা প্রবাহিত হতো। বিআমরিহী = তার আদেশক্রমে। ইলাল আরদিল্লাতী বারাকনা ফীহা = সেই দেশের দিকে যাতে আমরা বরকত দিয়েছি। ওয়া = আর। কুন্না = আমরা। বিকুল্লি সাইয়িন = সব বিষয়ে। আলিমীনা = জ্ঞানবান/ জ্ঞানী।

আর সুলাইমানের জন্য তীব্র বায়ুকে নিয়ন্ত্রিত করেছি। উহা প্রবাহিত হতো তার আদেশক্রমে সেই দেশের দিকে যাতে আমরা বরকত দিয়েছি। আর আমরা সব বিষয়ে জ্ঞানবান/ জ্ঞানী।

২১:৮২
ওয়া = আর (তার নিয়ন্ত্রিত করে দিয়েছি)। মিনাশ শায়াতীনি = কিছু শয়তানকে। মাইঁ ইয়াগূছূনা লাহু = যারা তার জন্য ডুবুরির কাজ করতো। ওয়া = আর। ইয়া’মালূনা আমালান দূনা যালিকা = এছাড়াও কিছু কাজ করতো। ওয়া = আর। কুন্না = আমরাই ছিলাম। লাহুম = তাদের জন্য। হাফিযীনা = হেফাযতকারী/ সংরক্ষনকারী (= তাদের দুষ্টমতির নিয়ন্ত্রণকারী)।

আর (তার নিয়ন্ত্রিত করে দিয়েছি) কিছু শয়তানকে, যারা তার জন্য ডুবুরির কাজ করতো, আর এছাড়াও কিছু কাজ করতো। আর আমরাই ছিলাম তাদের জন্য হেফাযতকারী/ সংরক্ষনকারী (= তাদের দুষ্টমতির নিয়ন্ত্রণকারী)।

২১:৮৩
ওয়া = আর। আইয়ুবা = আইয়ুবকেও (সাহায্য করেছি)। ইয = যখন। নাদা = সে ডেকেছে। রব্বাহু = তার রবকে। আন্নী মাছছানিয়াদ দুররু = নিশ্চয় আমাকে স্পর্শ করেছে রোগের কষ্ট। ওয়া = আর। আনতা = আপনি। আরহামুর রাহিমীনা = আরহামুর রাহিমীন/ সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াময়।

আর আইয়ুবকেও (সাহায্য করেছি)। যখন সে ডেকেছে তার রবকে। ‘নিশ্চয় আমাকে স্পর্শ করেছে রোগের কষ্ট। আর আপনি আরহামুর রাহিমীন/ সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াময়’।

২১:৮৪
ফাছতাজাবনা লাহু = তখন আমরা তার ডাকে সাড়া দিয়েছি। ফাকাশাফনা = আমরা দূর করে দিয়েছি। মা বিহী মিন দুররিন = তার দু:খ-কষ্ট। ওয়া = আর। আতায়নাহু = আমরা তাকে এনে দিয়েছি। আহলাহু = তার আহালকে/ পরিবার-পরিজনকে। ওয়া = আর। মিছলাহুম মাআহুম = তাদের সাথে তাদের মতো আরো অনেককে। রহমাতাম মিন ইনদিনা = আমাদের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। ওয়া = আর। যিকরা লিল আবিদীনা = ইবাদাতকারীদের জন্য যিকির/ স্মরণীয় উপদেশস্বরূপ।

তখন আমরা তার ডাকে সাড়া দিয়েছি। আমরা দূর করে দিয়েছি তার দু:খ-কষ্ট। আর আমরা তাকে এনে দিয়েছি তার আহালকে/ পরিবার-পরিজনকে, আর তাদের সাথে তাদের মতো আরো অনেককে। আমাদের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ আর ইবাদাতকারীদের জন্য যিকির/ স্মরণীয় উপদেশস্বরূপ।

২১:৮৫
ওয়া ইসমাঈলা ওয়া ইদরীসা ওয়া যালকিফলি = আর ইসমাইল, ইসহাক ও যুলকিফলকে। কুল্লুম মিনাস সাবিরীনা = তাদের প্রত্যেকে ছিলো সবরকারীদের/ ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত।

আর ইসমাইল, ইসহাক ও যুলকিফলকে। তাদের প্রত্যেকে ছিলো সবরকারীদের/ ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত।

২১:৮৬
ওয়া = আর। আদখালনাহুম = আমরা তাদেরকে দাখিল/ প্রবেশ করিয়েছি। ফী রহমাতিনা = আমাদের রহমতের মধ্যে। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা ছিলো। মিনাস সালিহীনা = সালেহীনদের/ সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।

আর আমরা তাদেরকে দাখিল/ প্রবেশ করিয়েছি আমাদের রহমতের মধ্যে। নিশ্চয় তারা ছিলো সালেহীনদের/ সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।

২১:৮৭
ওয়া = আর। যান নূনি = যূন নূনকেও/ ইউনুসকেও (সাহায্য করেছি)। ইয = যখন। যাহাবা = সে চলে গিয়েছে। মুগাদিবান = ক্রুদ্ধ হয়ে। ফাযাযননা = তখন সে ধারণা করেছে। আল্লান্নাক্বদিরা = যে, আমরা সক্ষম হবো না। আলাইহি = তাকে দায়ী করতে। ফানাদা = তারপর (= স্বীয় ভুল বুঝতে পারার পর) সে ডেকেছে। ফিয যুলুমাতি = অন্ধকারের মধ্যে। আল্লা লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুহানাকা ইন্নী কুনতু মিনায যালিমীনা = এ কথা বলে যে, ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা, সুবহানাকা, ইন্নী কুনতু মিনায যালিমীন’/ ‘নেই কোন ইলাহ আপনি ছাড়া, আপনি পবিত্র, আর নিশ্চয় আমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত’।

আর যূন নূনকেও/ ইউনুসকেও (সাহায্য করেছি)। যখন সে চলে গিয়েছে ক্রুদ্ধ হয়ে। তখন সে ধারণা করেছে যে, আমরা সক্ষম হবো না তাকে দায়ী করতে। তারপর (= স্বীয় ভুল বুঝতে পারার পর) সে ডেকেছে অন্ধকারের মধ্যে এ কথা বলে যে, ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা, সুবহানাকা, ইন্নী কুনতু মিনায যালিমীন’/ ‘নেই কোন ইলাহ আপনি ছাড়া, আপনি পবিত্র, আর নিশ্চয় আমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত’।

২১:৮৮
ফাছতাজাবনা লাহু = তখন আমরা তার ডাকে সাড়া দিয়েছি। ওয়া = আর। নাজ্জায়নাহু = আমরা তাকে নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি। মিনাল গাম্মি = দুশ্চিন্তা থেকে। ওয়া = আর। কাযালিকা = এরূপেই। নুনজিল মু’মিনীনা = আমরা নাজাত/ মুক্তি দিই মু’মিনদেরকে।

তখন আমরা তার ডাকে সাড়া দিয়েছি আর আমরা তাকে নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি দুশ্চিন্তা থেকে। আর এরূপেই আমরা নাজাত/ মুক্তি দিই মু’মিনদেরকে।

২১:৮৯
ওয়া = আর। যাকারিয়্যা = যাকারিয়্যাকেও (সাহায্য করেছি)। ইয = যখন। নাদা = সে ডেকেছে। রব্বাহু = তার রবকে। ‘রব্বী লা তাযানী ফারদাওঁ ওয়া আনতা খায়রুল ওয়ারিসীনা’ = ‘রব্বী লা তাযানী ফারদাওঁ ওয়া আনতা খায়রুল ওয়ারিসীনা’/ ‘হে আমার রব, আমাকে ছেড়ে দিবেন না একাকী (= লা ওয়ারিস) অবস্থায়। ওয়া = আর। আনতা = আপনিই। খায়রুল ওয়ারিসীনা = খায়রুল ওয়ারিসীন/ সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়ারিস।

আর যাকারিয়্যাকেও (সাহায্য করেছি)। যখন সে ডেকেছে তার রবকে। (এ কথা বলে যে,) ‘রব্বী লা তাযানী ফারদাওঁ ওয়া আনতা খায়রুল ওয়ারিসীনা’/ ‘হে আমার রব, আমাকে ছেড়ে দিবেন না একাকী (= লা ওয়ারিস) অবস্থায়। আর আপনিই খায়রুল ওয়ারিসীন/ সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়ারিস’।

২১:৯০
ফাছতাজাবনা লাহু = তখন আমরা তার ডাকে সাড়া দিয়েছি। ওয়া = আর। ওয়াহাবনা লাহু = তাকে (পুত্র হিসাবে) দিয়েছি। ইয়াহইয়া = ইয়াহইয়াকে। ওয়া = আর। আসলাহনা লাহু যাওজাহু = তার স্ত্রীকে (বন্ধ্যাত্ব) নিরাময় করে উহার জন্য উপযোগী করে দিয়েছি। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। কানূ ইউছারিঊনা = প্রচেষ্টা করতো। ফিল খায়রাতি = খায়রাতের/ কল্যাণকর কাজের/ নির্বাহী দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে। ওয়া = আর। ইয়াদঊনানা = তারা আমাদেরকে ডাকতো। রগাদান = আগ্রহের সাথে। ওয়া = ও। রাহাবান = ভীতির সাথে। ওয়া = আর। কানূ লানা = তারা ছিলো আমাদের জন্য। খাশিয়ীনা = খাশেয়ীন/ (দায়বদ্ধতার অনুভূতিতে) অবনমিত।

তখন আমরা তার ডাকে সাড়া দিয়েছি। আর তাকে (পুত্র হিসাবে) দিয়েছি ইয়াহইয়াকে। আর তার স্ত্রীকে (বন্ধ্যাত্ব ০৩:৪০) নিরাময় করে উহার জন্য উপযোগী করে দিয়েছি। নিশ্চয় তারা প্রচেষ্টা করতো খায়রাতের/ কল্যাণকর কাজের/ নির্বাহী দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে। আর তারা আমাদেরকে ডাকতো আগ্রহের সাথে ও ভীতির সাথে। আর তারা ছিলো আমাদের জন্য খাশেয়ীন/ (দায়বদ্ধতার অনুভূতিতে) অবনমিত।

২১:৯১
ওয়াল্লাতী = আর তাকেও (সাহায্য করেছি) যে। আহসানাত ফারজাহা = রক্ষা করেছিলো তার সতীত্বকে। ফানাফাখনা = তারপর আমরা ফুঁকে দিলাম। ফীহা = তার মধ্যে (= মারইয়ামের মধ্যে)। মির রূহিনা = আমাদের রুহ। ওয়া = আর। জাআলনাহা ওয়াবনাহা = বানিয়েছি তাকে ও তার পুত্রকে (= মারইয়াম ও ঈসাকে)। আয়াতাল লিল আলামীনা = বিশ্ববাসীর জন্য আয়াত/ নিদর্শন (যে, বানী ইসরাইল তাদের উপর মিথ্যা আরোপ করা সত্ত্বেও কিভাবে আল্লাহ তাদেরকে মর্যাদায় সমুচ্চ করেছেন)।

আর তাকেও (সাহায্য করেছি) যে রক্ষা করেছিলো তার সতীত্বকে। তারপর আমরা ফুঁকে দিলাম তার মধ্যে (= মারইয়ামের মধ্যে) আমাদের রুহ। আর বানিয়েছি তাকে ও তার পুত্রকে (= মারইয়াম ও ঈসাকে) বিশ্ববাসীর জন্য আয়াত/ নিদর্শন (যে, বানী ইসরাইল তাদের উপর মিথ্যা আরোপ করা সত্ত্বেও কিভাবে আল্লাহ তাদেরকে মর্যাদায় সমুচ্চ করেছেন)।

২১:৯২
ইন্না = নিশ্চয়। হাযিহি উম্মাতুকুম = তোমাদের এ উম্মাত। উম্মাতান ওয়াহিদাতান = একই উম্মাত। ওয়া = আর। আনা = আমি। রব্বুকুম = তোমাদের রব। ফা’বুদূনি = সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদাত/ দাসত্ব করো।

নিশ্চয় তোমাদের এ উম্মাত একই উম্মাত। আর আমি তোমাদের রব। সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদাত/ দাসত্ব করো।

২১:৯৩
ওয়া = অথচ। তাক্বাত্তাঊ = তারা কেটে ফেলেছে/ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে/ বিভক্ত করে ফেলেছে। আমরাহুম বায়নাহুম = তাদের কর্মকান্ডকে তাদের মধ্যে। কুল্লুন = প্রত্যেককেই। ইলাইনা = আমাদের কাছেই। রজিঊনা = প্রত্যাবর্তনকারী হতে হবে/ ফিরে আসতে হবে।

অথচ তারা কেটে ফেলেছে/ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে/ বিভক্ত করে ফেলেছে তাদের কর্মকান্ডকে তাদের মধ্যে। প্রত্যেককেই আমাদের কাছেই ফিরে আসতে হবে।

২১:৯৪
ফামাইঁ ইয়া’মাল মিনাস সালেহাতি = যে আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করে। ওয়া = এ অবস্থায় যে। হুয়া = সে। মু’মিনুন = একজন মু’মিন। ফালা কুফরানা = তাহলে অগ্রাহ্য করা হবে না। লিছা’য়িহী = তার প্রচেষ্টাকে। ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। লাহু কাতিবূনা = তা লিখে রাখছি।

যে আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করে এ অবস্থায় যে, সে একজন মু’মিন; তাহলে অগ্রাহ্য করা হবে না তার প্রচেষ্টাকে। আর নিশ্চয় আমরা তা লিখে রাখছি।

২১:৯৫
ওয়া = আর। হারামুন = হারাম/ নিষিদ্ধ (করা হয়েছে)। আলা ক্বারইয়াতিন = সে-ই জনপদবাসীদের উপর। আহলাকনাহা = যে জনপদবাসীদেরকে আমরা হালাক/ ধ্বংস করে দিয়েছি। আন্নাহুম = এই মর্মে যে, তারা। লা ইয়ারজিঊনা = ফিরে আসবে না।

আর হারাম/ নিষিদ্ধ (করা হয়েছে) সে-ই জনপদবাসীদের উপর যে জনপদবাসীদেরকে আমরা হালাক/ ধ্বংস করে দিয়েছি, এই মর্মে যে, তারা ফিরে আসবে না।

২১:৯৬
হাত্তা = ততক্ষণ পর্যন্ত। ইযা = যখন। ফুতিহাত = ছেড়ে দেয়া হবে। ইয়া’জূজু ওয়া মা’জূজু = ইয়া’জূজ ও মা’জূজক। ওয়া = আর। হুম = তারা। মিন কুল্লি হাদাবিন = (তাদের অবস্থানের) প্রত্যেক উঁচু ভূমি থেকে। ইয়ানছিলূনা = বংশানুক্রমে ছুটে আসবে।

ততক্ষন পর্যন্ত যখন ছেড়ে দেয়া হবে ইয়া’জূজ ও মা’জূজকে আর তারা (তাদের অবস্থানের) প্রত্যেক উঁচু ভূমি থেকে বংশানুক্রমে ছুটে আসবে।

২১:৯৭
ওয়াক্বতারাবাল = আর (যখন) নিকটবর্তী হবে। ওয়া’দুল হাক্বক্বু = যথাযথ ওয়াদা (১৯:৭৫)। ফাইযা হিয়া = তারপর তখন। শাখিসাতুন = বিস্ফোরিত হবে। আবসারুল্লাযীনা = তাদের চোখসমূহ যারা। কাফারূ = কুফর করেছে। ইয়া ওয়ায়লানা = (তারা বলবে) হায়, আমাদের আফসোস। ক্বাদ = নিশ্চয়। কুন্না = আমরা ছিলাম। ফী গাফলাতিন মিন হাযা = এ ব্যাপারে গাফলতির/ উদাসীনতার মধ্যে। বাল = বরং। কুন্না = আমরা ছিলাম। যালিমীনা = যালিম (২১:১১-১৪)।

আর (যখন) নিকটবর্তী হবে যথাযথ ওয়াদা (শাস্তি বা কেয়ামত ১৯:৭৫)। তারপর তখন বিস্ফোরিত হবে তাদের চোখসমূহ যারা কুফর করেছে। (তারা বলবে) ‘হায়, আমাদের আফসোস! নিশ্চয় আমরা ছিলাম এ ব্যাপারে গাফলতির/ উদাসীনতার মধ্যে। বরং আমরা ছিলাম যালিম’ (২১:১১-১৪, ২১:৪৬)।

২১:৯৮
ইন্নাকুম = নিশ্চয় তোমরা। ওয়া = আর। মা তা’বুদূনা মিন দূনিল্লাহি = তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করেছো তারা। হাবাবু জাহান্নামা = জাহান্নামের ইন্ধন হবে। আনতুম = তোমরা। লাহা ওয়ারিদূনা = তাতে প্রবেশকারী হবে।

নিশ্চয় তোমরা আর তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করেছো তারা জাহান্নামের ইন্ধন হবে (ব্যতিক্রম ২১:১০১)। তোমরা তাতে প্রবেশকারী হবে।

২১:৯৯
লাও = যদি। কানা হাউলায়ি আলিহাতান = এরা ইলাহ/ উপাস্য হতো। মা ওয়ারাদূহা = তাহলে তাদেরকে তাতে হাঁকাইয়া নেয়া হতো না। ওয়া = আর। কুল্লুন = প্রত্যেকেই। ফীহা খালিদীনা = তাতে স্থায়ী হবে।

যদি এরা ইলাহ/ উপাস্য হতো, তাহলে তাদেরকে তাতে হাঁকাইয়া নেয়া হতো না। আর প্রত্যেকেই তাতে স্থায়ী হবে।

২১:১০০
লাহুম = তাদের জন্য। ফীহা = তাতে থাকবে। যাফীরুন = আর্তনাদ। ওয়া = কিন্তু। হুম = তারা। ফীহা = তাতে। লা ইয়াছমাঊনা = শুনবে না।

তাদের জন্য তাতে থাকবে আর্তনাদ। কিন্তু তারা তাতে শুনবে না।

২১:১০১
ইন্নাল্লাযীনা ছাবাক্বাত লাহুম = নিশ্চয় যাদের জন্য থাকবে। মিন্নাল হুছনা = আমাদের পক্ষ থেকে উত্তম প্রতিফল। উলায়িকা = তারা হবে। আনহা = তা থেকে। মুবআদূনা = দূরে অবস্থানকারী।

নিশ্চয় যাদের জন্য থাকবে আমাদের পক্ষ থেকে উত্তম প্রতিফল, তারা হবে তা থেকে দূরে অবস্থানকারী।

২১:১০২
লা ইয়াছমাঊনা = তারা শুনবে না। হাছীছাহা = তার ক্ষীণ শব্দও। ওয়া = আর। হুম = তারা থাকবে। ফী মাশতাহাত = এমন অবস্থার মধ্যে যে, তারা তা-ই পাবে, যা চাইবে। আনফুসুহুম = তাদের নফস। খালিদূনা = তারা তারা স্থায়ী হবে।

তারা শুনবে না তার ক্ষীণ শব্দও। আর তারা থাকবে এমন অবস্থার মধ্যে যে, তারা তা-ই পাবে, যা চাইবে তাদের নফস। তারা তারা স্থায়ী হবে।

২১:১০৩
লা ইয়াহযুনুহুমুল ফাযউল আকবারু = তাদেরকে বিচলিত করবে না মহা বিভীষিকাও। ওয়া = আর। তাতালাক্বাহুমুল মালাইকাতু = তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবে মালাইকা/ ফেরেশতাগণ।

তাদেরকে বিচলিত করবে না মহা বিভীষিকাও। আর তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবে মালাইকা/ ফেরেশতাগণ।

২১:১০৪
ইয়াওমা = সেদিন। নাতভিস ছামায়া = আমরা গুটিয়ে ফেলবো আকাশকে। কাতইয়িছ ছিজিল্লি লিলকুতুবি = যেরূপে গুটিয়ে ফেলা হয় লেখার জন্য (প্রস্তুতকৃত) দলীল-দস্তাবেজের কাগজ। কামা = যেরূপে। বাদা’না = আমরা উদ্ভাবন করেছি। আওয়ালা খালক্বিন = প্রথম সৃষ্টি। নুয়ীদুহু = তেমনি আমরা উহাকে আবার সৃষ্টি করবো। ওয়া’দান আলাইনা = এটা একটি ওয়াদা, আমাদের দায়িত্বে রইলো। ইন্না = নিশ্চয়। কুন্না = আমরা হবো। ফায়িলীনা = উহার সম্পাদনকারী।

সেদিন আমরা গুটিয়ে ফেলবো আকাশকে, যেরূপে গুটিয়ে ফেলা হয় লেখার জন্য (প্রস্তুতকৃত) দলীল-দস্তাবেজের কাগজ। যেরূপে আমরা উদ্ভাবন করেছি প্রথম সৃষ্টি, তেমনি আমরা উহাকে আবার সৃষ্টি করবো। এটা একটি ওয়াদা, আমাদের দায়িত্বে রইলো। নিশ্চয় আমরা হবো উহার সম্পাদনকারী।

২১:১০৫
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। কাতাবনা = আমরা লিখে দিয়েছি। ফিয যাবূরি = ‘যাবূর’ নামক কিতাবে। মিম বা’দিয যিকরি = যিকিরের/ স্মরণীয় উপদেশের পর। আন্নাল আরদা = এ কথাটি যে, নিশ্চয় পৃথিবীর। ইয়ারিছাহা = ওয়ারিস হবে। ইবাদিয়াস সালিহূনা = আমার সালেহ/ সৎকর্মশীল বান্দারা।

আর নিশ্চয় আমরা লিখে দিয়েছি ‘যাবূর’ নামক কিতাবে যিকিরের/ স্মরণীয় উপদেশের পর এ কথাটি যে, ‘নিশ্চয় পৃথিবীর ওয়ারিস হবে আমার সালেহ/ সৎকর্মশীল বান্দারা’। (পৃথিবীর ওয়ারিস ০৭:১২৮, ২৩:০১-১১, ৩৯:৭৩-৭৪, পৃথিবীর খেলাফত ২৪:৫৫)

২১:১০৬
ইন্না = নিশ্চয়। ফী হাযা = ইহার মধ্যে আছে। লাবালাগান = বালাগ/ পৌঁছে দেয়ার মতো বিষয়। লিক্বাওমিন আবিদীনা = আল্লাহর ইবাদাতকারী কওমের জন্য।

নিশ্চয় ইহার মধ্যে (কথাটির মধ্যে) আছে এমন বালাগ/ পৌঁছে দেয়ার বিষয়, যা আল্লাহর ইবাদাতকারী কওমের জন্য প্রযোজ্য।

২১:১০৭
ওয়া = আর। মা আরছালনাকা = আমরা তোমাকে প্রেরণ করিনি। ইল্লা রহমাতুল্লিল আলামীনা = রহমাতুল্লিল আলামীন/ বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ (প্রেরণ করা) ছাড়া।

আর আমরা তোমাকে প্রেরণ করিনি রহমাতুল্লিল আলামীন/ বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ (প্রেরণ করা) ছাড়া।

২১:১০৮
ক্বুল = বলো। ইন্নামা = নিশ্চয়। ইউহা = ওহী করা হয়েছে। ইলাইয়া = আমার কাছে। আন্নামা = এ মর্মে যে। ইলাহুকুম = তোমাদের ইলাহ। ইলাহুন ওয়াহিদুন = একই ইলাহ। ফাহাল = তবে কি। আনতুম = তোমরা। মুসলিমূনা = মুসলিমূন/ (আল্লাহর প্রতি) আত্মসমর্পণকারী হবে?

বলো, “নিশ্চয় ওহী করা হয়েছে আমার কাছে এ মর্মে যে, ‘তোমাদের ইলাহ একই ইলাহ। তবে কি তোমরা মুসলিমূন/ (আল্লাহর প্রতি) আত্মসমর্পণকারী হবে’?”

২১:১০৯
ফাইন = তারপর যদি। তাওয়াল্লাও = তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। ফাক্বুল = তখন বলো। আযানতুকুম = আমি তোমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছি। আলা ছাওয়ায়িন = সবাইকে সমানভাবে। ওয়া = আর। ইন আদরী = আমি জানি না। আক্বারীবুন = উহা কি অত্যন্ত নিকটবর্তী। আম = নাকি। বায়ীদুন = কিছুটা দূরবর্তী। মা = যে ব্যাপারে। তূআদূনা = তোমাদেরকে ওয়াদা দেয়া হয়েছে (১৯:৭৫)।

তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তখন বলো, ‘আমি তোমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছি সবাইকে সমানভাবে। আর আমি জানি না উহা কি অত্যন্ত নিকটবর্তী নাকি কিছুটা দূরবর্তী যে ব্যাপারে তোমাদেরকে ওয়াদা দেয়া হয়েছে।’ (১৯:৭৫)

২১:১১০
ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি (= আল্লাহ)। ইয়া’লামুল জাহরা মিনাল ক্বাওলি = উচ্চস্বরের কথাও জানেন। ওয়া = আর। ইয়া’লামু মা তাকতুমূনা = যা তোমরা গোপন করো তাও জানেন।

নিশ্চয় তিনি (= আল্লাহ) উচ্চস্বরের কথাও জানেন আর যা তোমরা গোপন করো তাও জানেন।

২১:১১১
ওয়া = আর। ইন আদরী = আমি জানি না। লাআল্লাহু = যেন তা হতে পারে। ফিতনাতুল্লাকুম = তোমাদের জন্য ফিতনা/ পরীক্ষা। ওয়া = আর। মাতাউন = ভোগসামগ্রী। ইলা হীনা = কিছুকালের জন্য।

আর আমি জানি না, যেন তা হতে পারে তোমাদের জন্য ফিতনা/ পরীক্ষা আর ভোগসামগ্রী, কিছুকালের জন্য।

২১:১১২
ক্বুল = বলো। রব্বিহকুম বিল হাক্বক্বি = হে আমার রব, ফায়সালা করে দিন যথাযথভাবে। ওয়া = আর। রব্বুনার রহমানুল মুছতায়ানু = আমাদের রহমান/ দয়াময় রবই মুসতায়ান/ সাহায্যকারী। আলা মা তাসিফূনা = যা তোমরা রচনা করছো তার বিপরীতে।

বলো, ‘হে আমার রব, ফায়সালা করে দিন যথাযথভাবে। আর আমাদের রহমান/ দয়াময় রবই মুসতায়ান/ সাহায্যকারী, যা তোমরা রচনা করছো তার বিপরীতে’।