১৯:১
কাফ হা ইয়া আইন সদ = কাফ হা ইয়া আইন সদ।
কাফ হা ইয়া আইন সদ।
১৯:২
যিকরু = যিকির/ আলোচনা করা হচ্ছে। রহমাতি রব্বিকা = তোমার রবের রহমতের বিবরন। আবদাহু যাকারিয়্যা = তাঁর বান্দা যাকারিয়ার প্রতি।
যিকির/ আলোচনা করা হচ্ছে তোমার রবের রহমতের বিবরন তাঁর বান্দা যাকারিয়ার প্রতি।
১৯:৩
ইয = যখন। নাদা = সে ডেকেছে। রব্বাহু = তার রবকে। নিদাআন খাফিয়্যান = গোপনে।
যখন সে ডেকেছে তার রবকে গোপনে।
১৯:৪
ক্বলা = সে বলেছে। রব্বী = হে আমার রব। ইন্নী = নিশ্চয় আমি এ অবস্থায় আছি যে। ওয়াহানাল আযমু মিন্নী = দুর্বল হয়ে গেছে আমার অস্থি। ওয়াশতাআলার র’ছু = আর সাদা হয়ে গেছে আমার মাথা (= মাথার চুল)। শায়বান = বার্ধক্যজনিত কারণে। ওয়া = আর। লাম আকুম বিদুআয়িকা = আমি হইনি তোমার কাছে দোয়া করে। শাক্বিয়্যান = ব্যর্থকাম।
সে বলেছে, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি এ অবস্থায় আছি যে, দুর্বল হয়ে গেছে আমার অস্থি আর সাদা হয়ে গেছে আমার মাথা (= মাথার চুল) বার্ধক্যজনিত কারণে। আর আমি হইনি তোমার কাছে দোয়া করে ব্যর্থকাম।
১৯:৫
ওয়া = আর। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। খিফতুল মাওয়ালিয়া = আশংকা করি আমার মাওয়ালি/ আত্মীয়দের সম্পর্কে। মিওঁ ওয়ারায়ী = আমার পিছনে। ওয়া = আর। কানাতিমরাআতী আক্বিরান = আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। ফাহাবলী = তবুও আমাকে দান করুন। মিল্লাদুনকা = আপনার পক্ষ থেকে। ওয়ালিয়্যান = একজন ওলি/ উত্তরাধিকারী (সন্তান)।
আর নিশ্চয় আমি আশংকা করি আমার মাওয়ালি/ আত্মীয়দের সম্পর্কে, আমার পিছনে। আর আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। তবুও আমাকে দান করুন আপনার পক্ষ থেকে একজন ওলি/ উত্তরাধিকারী (সন্তান)।
১৯:৬
ইয়ারিছুনী = সে ওয়ারিস হবে আমার। ওয়া = আর। ইয়ারিছু = সে ওয়ারিশ হবে। মিন আলি ইয়া’ক্বূবা = আলে ইয়াকুবের/ ইয়াকুবের বংশধারার। ওয়াজআলহু = আর আপনি তাকে বানান। রব্বি = হে আমার রব। রদিয়্যান = পছন্দনীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন।
সে ওয়ারিস হবে আমার আর সে ওয়ারিশ হবে আলে ইয়াকুবের/ ইয়াকুবের বংশধারার। আর আপনি তাকে বানান, হে আমার রব, পছন্দনীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন’।
১৯:৭
ইয়া যাকারিয়্যা = হে যাকারিয়া। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। নুবাশশিরুকা = তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছি। বিগুলামিছমুহূ ইয়াহইয়া = একটি পুত্র সন্তানের, যার নাম হবে ইয়াহইয়া। লাম নাজআল লাহু = আমরা করিনি উহাকে। মিন ক্বাবলু = ইতিপূর্বে। ছামিয়্যান = কারো নাম।
‘হে যাকারিয়া, নিশ্চয় আমরা তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছি একটি পুত্র সন্তানের, যার নাম হবে ইয়াহইয়া। আমরা করিনি উহাকে ইতিপূর্বে কারো নাম’।
১৯:৮
ক্বলা = সে বলেছে। রব্বি = হে আমার রব। আন্না = কিরূপে। ইয়াকূনু লী = আমার হবে। গুলামুন = কোন পুত্র। ওয়া = অথচ। কানাতিমরাআতী = আমার স্ত্রী। আক্বিরান = বন্ধ্যা। ওয়া = আর। ক্বাদ = নিশ্চয়। বালাগতু = আমি পৌঁছে গেছি। মিনাল কিবারি = বার্ধক্যে। ইতিয়্যান = চরম পর্যায়ে।
সে বলেছে, ‘হে আমার রব, কিরূপে আমার হবে কোন পুত্র; অথচ আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। আর নিশ্চয় আমি পৌঁছে গেছি বার্ধক্যে চরম পর্যায়ে?’
১৯:৯
ক্বলা = তিনি (= আল্লাহ) বলেছেন। কাযালিকা = ঐরূপেই হবে (= তুমি যেরূপ অবস্থায় সন্তান হওয়ার বিষয়কে স্বাভাবিক হিসাবে জানো সেরূপ অবস্থায়ই হবে)। ক্বলা রব্বুকা = তোমার রব বলেছেন। হুয়া = উহা (= তোমার স্ত্রীর বন্ধ্যাত্বের প্রতিকার করে তাকে সন্তান গর্ভধারণের উপযোগী করা)। আলাইয়া = আমার জন্য। হাইয়িনুন = সহজ। ওয়া = আর। ক্বাদ = নিশ্চয়। খালাক্বতুকা = তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। মিন ক্বাবলূ = ইতিপূর্বে। ওয়া = অথচ। লাম তাকু = তুমি ছিলে না। শাইয়ান = কোন কিছুই (= শূন্যতা থেকে সৃষ্টি)।
তিনি (= আল্লাহ) বলেছেন, ‘ঐরূপেই হবে (= তুমি যেরূপ অবস্থায় সন্তান হওয়ার বিষয়কে স্বাভাবিক হিসাবে জানো সেরূপ অবস্থায়ই হবে)’। তোমার রব বলেছেন, ‘উহা (= তোমার স্ত্রীর বন্ধ্যাত্বের প্রতিকার করে তাকে সন্তান গর্ভধারণের উপযোগী করা- ২১:৯০) আমার জন্য সহজ। আর নিশ্চয় তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন ইতিপূর্বে অথচ তুমি ছিলে না কোন কিছুই (= শূন্যতা থেকে সৃষ্টি)’।
১৯:১০
ক্বলা = সে বলেছে। রব্বিজআললী = ‘হে আমার রব, আমাকে নির্ধারণ করে দিন। আয়াতান = কোন আয়াত/ নিদর্শন। ক্বলা = তিনি (= আল্লাহ) বলেছেন। আয়াতুকা = তোমার জন্য আয়াত/ নিদর্শন হচ্ছে। আল্লা তুকাল্লিমান্নাছা = এই যে, (তোমার কাছে নির্দেশ পাঠানো হবে ০৩:৪০-৪১, ১৯:২৬), ‘তুমি কথা বলবে না মানুষের সাথে। ছালাছা লায়ালিন = তিনটি রাত। ছাভিয়্যান = ক্রমাগতভাবে/ ধারাবাহিকভাবে।
সে বলেছে, ‘হে আমার রব, আমাকে নির্ধারণ করে দিন কোন আয়াত/ নিদর্শন’। তিনি (= আল্লাহ) বলেছেন, ‘তোমার জন্য আয়াত/ নিদর্শন হচ্ছে এই যে, (তোমার কাছে নির্দেশ পাঠানো হবে ০৩:৪০-৪১, ১৯:২৬), ‘তুমি (ইঙ্গিতে ছাড়া) কথা বলবে না মানুষের সাথে তিনটি রাত, ক্রমাগতভাবে/ ধারাবাহিকভাবে’ (= তখন বুঝবে যে, তোমার স্ত্রী গর্ভবতী হয়েছে)।
১৯:১১
ফাখারাজা = তারপর (যথাসময়ে ওহী প্রাপ্ত হয়ে) সে বের হয়ে এসেছে। আলা ক্বাওমিহী = তার কওমের কাছে। মিনাল মিহরাবি = মেহরাব (ব্যক্তিগত উপাসনাকক্ষ) থেকে। ফাআওহা ইলাইহিম = তারপর সে তাদেরকে ওহী/ ইঙ্গিত করেছে (= ইঙ্গিতে বলেছে)। আন ছাব্বিহূ = তোমরা তাসবীহ (= আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা) করো। বুকরাতান ওয়া আশিয়্যান = বুকরাতানে/ দিনের প্রথমাংশে ও ইশার সময়/ রাতের প্রথমাংশে।
তারপর (যথাসময়ে ওহী প্রাপ্ত হয়ে) সে বের হয়ে এসেছে তার কওমের কাছে, মেহরাব (ব্যক্তিগত উপাসনাকক্ষ) থেকে। তারপর সে তাদেরকে ওহী/ ইঙ্গিত করেছে (= ইঙ্গিতে বলেছে), “তোমরা তাসবীহ (= আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা) করো বুকরাতানে/ দিনের প্রথমাংশে ও ইশার সময়/ রাতের প্রথমাংশে”।
১৯:১২
ইয়া ইয়াহইয়া = হে ইয়াহইয়া। খুযিল কিতাবা = গ্রহণ করো এই কিতাব। বিক্বুওয়্যাতিন = দৃঢ়ভাবে। ওয়া = আর। আতাইনাহুল হুকমা = আমরা তাকে হুকুম/ বিচার-ক্ষমতা দিয়েছি। সাবিয়্যান = তার বাল্যবয়সেই।
হে ইয়াহইয়া, গ্রহণ করো এই কিতাব দৃঢ়ভাবে’। আর আমরা তাকে (= ইয়াহইয়াকে) হুকুম/ বিচার-ক্ষমতা দিয়েছি তার বাল্যবয়সেই।
১৯:১৩
ওয়া = আর (দিয়েছি)। হানানাম মিল্লাদুন্না = আমাদের পক্ষ থেকে অন্তরের কোমলতা। ওয়া = আর। যাকাতান = যাকাত/ পরিশুদ্ধতা। ওয়া = আর। কানা = সে ছিলো। তাক্বিয়্যান = তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বনকারী।
আর (দিয়েছি) আমাদের পক্ষ থেকে অন্তরের কোমলতা আর যাকাত/ পরিশুদ্ধতা। আর সে ছিলো তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বনকারী।
১৯:১৪
ওয়া = আর (সে ছিলো)। বাররাম বিওয়ালিদায়হি = তার পিতামাতার সদাচারী/ অনুগত। ওয়া = আর। লাম ইয়াকুন = সে ছিলো না। জাব্বারান = স্বেচ্ছাচারী। আসিয়্যান = অবাধ্য।
আর (সে ছিলো) তার পিতামাতার সদাচারী/ অনুগত। আর সে ছিলো না স্বেচ্ছাচারী ও অবাধ্য।
১৯:১৫
ওয়া = আর। ছালামুন আলাইহি = তার উপর সালাম/ শান্তি। ইয়াওমা উলিদা = যেদিন সে জন্মগ্রহণ করেছে। ওয়া = আর। ইয়াওমা ইয়ামূতু = যেদিন সে মৃত্যুবরণ করেছে। ওয়া = আর। ইয়াওমা ইউবআছু হাইয়ান = যেদিন তাকে জীবিত করে পুনরুত্থিত করা হবে।
আর তার উপর সালাম/ শান্তি, যেদিন সে জন্মগ্রহণ করেছে আর যেদিন সে মৃত্যুবরণ করেছে আর যেদিন তাকে জীবিত করে পুনরুত্থিত করা হবে।
১৯:১৬
ওয়াযকুর = আর যিকির/ আলোচনা করো। ফিল কিতাবি = এই কিতাবে যা বলা হয়েছে। মারইয়ামা = মারিয়াম সম্পর্কে। ইযিনতাবাযাত = যখন সে পৃথক হয়ে গেছে। মিন আহলিহা = তার আহল/ পরিবারবর্গ থেকে। মাকানান শারক্বিয়্যান = পূর্বাঞ্চলের কোন (দূরবর্তী) স্থানবিশেষে।
আর যিকির/ আলোচনা করো এই কিতাবে যা বলা হয়েছে মারিয়াম সম্পর্কে। যখন সে পৃথক হয়ে গেছে তার আহল/ পরিবারবর্গ থেকে পূর্বাঞ্চলের কোন (দূরবর্তী) স্থানবিশেষে।
১৯:১৭
ফাত্তাখাজাত = তখন সে গ্রহণ করেছে। মিন দূনিহিম = তাদের ছেড়ে। হিজাবান = একটা অন্তরাল/ আড়ালে অবস্থান। ফাআরছালনা = তারপর আমরা প্রেরণ করেছি। ইলাইহা = তার প্রতি। রূহানা = আমাদের রূহকে (= জিবরীলকে)। ফাতামাছছালা = তখন সে (= রূহ/ জিবরীল) আকৃতি ধারণ করেছে। লাহা = তার কাছে (= মারিয়ামের কাছে)। বাশারান ছাভিয়্যান = একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষরূপে।
তখন সে গ্রহণ করেছে তাদের ছেড়ে একটা অন্তরাল/ আড়ালে অবস্থান। তারপর আমরা প্রেরণ করেছি তার প্রতি আমাদের রূহকে (= জিবরীলকে)। তখন সে (= রূহ/ জিবরীল) আকৃতি ধারণ করেছে তার কাছে (= মারিয়ামের কাছে) একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষরূপে।
১৯:১৮
ক্বলাত = সে (= মারিয়াম) বলেছে। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। আউযু = আশ্রয় চাই। বিররহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের কাছে। মিনকা = তোমার থেকে। ইন = যদি। কুনতা = তুমি হও। তাক্বিয়্যান = মুত্তাকী/ আল্লাহভীরু।
সে (= মারিয়াম) বলেছে, ‘নিশ্চয় আমি আশ্রয় চাই রহমানের/ দয়াময়ের কাছে তোমার থেকে যদি তুমি হও মুত্তাকী/ আল্লাহভীরু’।
১৯:১৯
ক্বলা = সে (= রূহ/ জিবরীল) বলেছে। ইন্নামা = প্রকৃতপক্ষে। আনা = আমি। রসূলু রব্বিকি = তোমার রবের রসূল। লিআহাবা = যেন আমি দিতে পারি। লাকি = তোমাকে। গুলামান যাকিয়্যান = এক পরিশুদ্ধ পুত্রসন্তান।
সে (= রূহ/ জিবরীল) বলেছে, "প্রকৃতপক্ষে আমি তোমার রবের রসূল, যেন আমি দিতে পারি তোমাকে এক পরিশুদ্ধ পুত্রসন্তান"।
১৯:২০
ক্বলাত = সে (= মারিয়াম) বলেছে। আন্না = কিরূপে। ইয়াকূনু লী গুলামুন = আমার পুত্র হবে। ওয়া = অথচ। লাম ইয়ামছাছনী = আমাকে স্পর্শ করেনি। বাশারুন = কোনো মানুষ। ওয়া = আর। লাম আকু = আমি নই। বাগিয়্যান = সীমালংঘনকারী (সতীত্ব বর্জনকারী)।
সে (= মারিয়াম) বলেছে, "কিরূপে আমার পুত্র হবে, অথচ আমাকে স্পর্শ করেনি কোনো মানুষ, আর আমি নই সীমালংঘনকারী (সতীত্ব বর্জনকারী)"।
১৯:২১
ক্বলা = সে (= রূহ/ জিবরীল) বলেছে। কাযালিকি = ঐরূপেই হবে। ক্বলা রব্বুকি = তোমার রব বলেছেন। হুয়া = উহা। আলাইয়া = আমার জন্য। হাইয়িনুন = সহজ। ওয়া = আর। লিনাজআলাহূ = এজন্য যে, আমরা তাকে (= তোমার পুত্রকে) করবো। আয়াতাল্লিন্নাছি = মানুষের জন্য আয়াতস্বরূপ/ নিদর্শনস্বরূপ। ওয়া = আর। রহমাতাম মিন্না = আমাদের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। ওয়া = আর। কানা = উহা হয়েছে। আমরাম মাক্বদিয়্যান = স্থিরিকৃত সিদ্ধান্ত।
সে (= রূহ/ জিবরীল) বলেছে, “ঐরূপেই হবে। তোমার রব বলেছেন, ‘উহা আমার জন্য সহজ’। আর এজন্য যে, আমরা তাকে (= তোমার পুত্রকে) করবো মানুষের জন্য আয়াতস্বরূপ/ নিদর্শনস্বরূপ আর আমাদের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। আর উহা হয়েছে (প্রাকৃতিক নিয়ম ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণমূলক) স্থিরিকৃত সিদ্ধান্ত”।
১৯:২২
ফাহামালাতহু = তারপর (যথাসময়ে) সে (= মারইয়াম) তাকে (= ঈসাকে) গর্ভধারণ করেছে। ফানতাবাযাত = তারপর সে পৃথক হয়ে চলে গেছে। বিহী = তাকে (= গর্ভস্থ সন্তানকে) নিয়ে। মাকানান ক্বাসিয়্যান = এক দূরবর্তী স্থানে।
তারপর (যথাসময়ে) সে (= মারইয়াম) তাকে (= ঈসাকে) গর্ভধারণ করেছে। তারপর সে পৃথক হয়ে চলে গেছে তাকে (= গর্ভস্থ সন্তানকে) নিয়ে এক দূরবর্তী স্থানে।
১৯:২৩
ফাজাআহাল মাখাদু = তারপর (যথাসময়ে) প্রসববেদনার ফলে সে আসতে বাধ্য হলো। ইলা খিজয়িন নাখলাতি = এক খেজুর গাছের কান্ডের কাছে। ক্বলাত = (তখন প্রসববেদনার ফলে) সে বলেছে। ইয়া লায়তানী = হায়! আমার আফসোস! মিত্তু = আমি যদি মরে যেতাম! ক্বাবলা হাযা = ইহার (= প্রসবের) আগেই। ওয়া = আর। কুনতু = আমি যদি হয়ে যেতাম। নাছইয়াম মানছিয়্যান = বিস্মৃত, স্মৃতি-বিলুপ্ত।
তারপর (যথাসময়ে) প্রসববেদনার ফলে সে আসতে বাধ্য হলো এক খেজুর গাছের কান্ডের কাছে। (তখন প্রসববেদনার ফলে) সে বলেছে, ‘হায়! আমার আফসোস! আমি যদি মরে যেতাম ইহার (= প্রসবের) আগেই! আর আমি যদি হয়ে যেতাম বিস্মৃত, স্মৃতি-বিলুপ্ত!
১৯:২৪
ফানাদাহা = তখন সে (= রূহ/ জিবরীল) তাকে ডেকে বলেছে। মিন তাহতিহা = উহার (= খেজুর গাছের) নিম্নভূমি থেকে। আল্লা তাহযানি = তুমি দু:খিত হয়ো না। ক্বাদ = নিশ্চয়। জাআলা = সৃষ্টি করেছেন। রব্বুকা = তোমার রব। তাহতিকা = তোমার অবস্থানস্থলের নিম্নভূমিতে। ছারিয়্যান = একটি ছোট নদী।
তখন সে (= রূহ/ জিবরীল) তাকে ডেকে বলেছে উহার (= খেজুর গাছের) নিম্নভূমি থেকে, ‘তুমি দু:খিত হয়ো না। নিশ্চয় সৃষ্টি করেছেন তোমার রব তোমার অবস্থানস্থলের নিম্নভূমিতে একটি ছোট নদী।
১৯:২৫
ওয়া = আর। হুযযী = তুমি নাড়া দাও। ইলাইকি = তোমার দিকে। বিখিযয়িন নাখলাতি = খেজুর গাছের কান্ডকে। তুছাক্বিত = তখন ঝরে পড়বে। আলাইকি = তোমার উপর। রুতাবান জানিয়্যান = পাকা খেজুর।
আর তুমি নাড়া দাও তোমার দিকে খেজুর গাছের কান্ডকে। তখন ঝরে পড়বে তোমার উপর পাকা খেজুর।
১৯:২৬
ফাকুলী = সুতরাং তুমি খাও। ওয়াশরাবী = আর পান করো। ওয়া = আর। ক্বাররী আয়নান = চোখকে শীতল কর। ফাইম্মা = তারপর যদি। তারায়িন্না = তুমি দেখো। মিনাল বাশারি আহাদান = কোন মানুষকে। ফাক্বুলী = তখন তাকে (ইঙ্গিতে) বলো। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। নাযারতু = নযর/ মানত করেছি। লিররহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের উদ্দেশ্যে। সওমান = সওম/ মৌনব্রত। ফালান উকাল্লিমাল ইয়াওমা = সুতরাং আমি বাক্যালাপ/ কথোপকথন করবো না আজ। ইনছিয়্যান = কোন মানুষের সাথে।
সুতরাং তুমি খাও ও পান করো আর চোখকে শীতল কর। তারপর যদি তুমি দেখো কোন মানুষকে, তখন তাকে (ইঙ্গিতে) বলো, ‘নিশ্চয় আমি নযর/ মানত করেছি রহমানের/ দয়াময়ের উদ্দেশ্যে সওম/ মৌনব্রত। সুতরাং আমি বাক্যালাপ/ কথোপকথন করবো না আজ কোন মানুষের সাথে’।
১৯:২৭
ফাআতাত = তারপর (= দীর্ঘকাল পর) সে (= মারিয়াম) এসেছে। বিহী = তাকে নিয়ে (= তার সন্তানকে তথা ঈসাকে নিয়ে)। ক্বাওমাহা = তার কওমের কাছে। তাহমিলুহূ = তাকে বাহনে করে। ক্বলূ = তারা বলেছে। ইয়া মারইয়ামু = হে মারিয়াম। লাক্বাদ = নিশ্চয়। জি’তি = তুমি করে এসেছো। শাইয়ান = এমন কিছু যা। ফারিয়্যান = অপ্রত্যাশিত (= তুমি গীর্জার নিয়ম ভঙ্গ করলে!)
তারপর (= দীর্ঘকাল পর) সে (= মারিয়াম) এসেছে তাকে নিয়ে (= তার সন্তানকে তথা ঈসাকে নিয়ে) তার কওমের কাছে তাকে বাহনে করে। তারা বলেছে, ‘হে মারিয়াম, নিশ্চয় তুমি করে এসেছো এমন কিছু যা অপ্রত্যাশিত (= তুমি গীর্জার নিয়ম ভঙ্গ করলে!)’
১৯:২৮
ইয়া উখতা হারূনা = হে হারুনের বোন। মা কানা আবূকিমরাআ ছাওয়িন = তোমার পিতা ছিলো না অসৎ ব্যক্তি। ওয়া = আর। মা কানাত = তোমার মা ছিলো না। বাগিয়্যান = সীমালংঘনকারী (সতীত্ব বর্জনকারী)।
হে হারুনের বোন, তোমার পিতা ছিলো না অসৎ ব্যক্তি আর তোমার মা ছিলো না সীমালংঘনকারী (সতীত্ব বর্জনকারী)।
১৯:২৯
ফাআশারাত = তখন সে (= মারিয়াম) ইশারা/ ইঙ্গিত করেছে। ইলাইহি = তার দিকে (= ঈসার দিকে)। ক্বলূ = তখন তারা বলেছে। কায়ফা = কিরূপে। নুকাল্লিমু = আমরা কথা বলবো। মান কানা = (সেদিন পর্যন্ত) যে ছিলো। ফিল মাহদি সাবিয়্যান = দোলনায় চড়া বালক।
তখন সে (= মারিয়াম) ইশারা/ ইঙ্গিত করেছে তার দিকে (= ঈসার দিকে)। তখন তারা বলেছে, ‘কিরূপে আমরা কথা বলবো (সেদিন পর্যন্ত) যে ছিলো দোলনায় চড়া বালক?’
১৯:৩০
ক্বলা = তখন সে (= ঈসা) বলেছে। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। আবদুল্লাহি = আবদুল্লাহ/ আল্লাহর বান্দা। আতানিল কিতাবা = তিনি আমাকে দিয়েছেন কিতাব। ওয়া = আর। জাআলনী = তিনি আমাকে করেছেন। নাবিয়্যান = নবী।
তখন সে (= ঈসা) বলেছে, ‘নিশ্চয় আমি আবদুল্লাহ/ আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে দিয়েছেন কিতাব। আর তিনি আমাকে করেছেন নবী।
১৯:৩১
ওয়া = আর। জাআলনী = আমাকে করেছেন। মুবারাকান = বরকতময়। আয়না মা কুনতু = যেখানেই আমি থাকি। ওয়া = আর। আওসনী = আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিস সালাতি ওয়ায যাকাতি = সালাতের ও যাকাতের (= পরিশুদ্ধতামূলক প্রদেয়ের) প্রতি। মা = যতদিন। দুমতু হাইয়ান = আমি জীবিত থাকি।
আর আমাকে করেছেন বরকতময় যেখানেই আমি থাকি, আর আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন সালাতের ও যাকাতের (= পরিশুদ্ধতামূলক প্রদেয়ের) প্রতি যতদিন আমি জীবিত থাকি।
১৯:৩২
ওয়া = আর। বাররাম বিওয়ালিদাতী = আমাকে করেছেন আমার মায়ের প্রতি সদাচারী। ওয়া = আর। লাম ইয়াজআলনী = আমাকে করেননি। জাব্বারান শাক্বিয়্যান = স্বেচ্ছাচারী ও বিষাদগ্রস্ত।
আর আমাকে করেছেন আমার মায়ের প্রতি সদাচারী। আর আমাকে করেননি স্বেচ্ছাচারী ও বিষাদগ্রস্ত।
১৯:৩৩
ওয়াছছালামু আলাইয়া = আর ‘আস সালামু আলাইয়া’/ ‘আমার উপর শান্তি’। ইয়াওমাল উলিত্তু = যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি। ওয়া = আর। ইয়াওমা আমূতু = যেদিন আমি মৃত্যুবরণ করবো। ওয়া = আর। ইয়াওমা উবআছু হাইয়ান = যেদিন আমাকে জীবিত করে পুনরুত্থিত করা হবে।
আর ‘আস সালামু আলাইয়া’/ ‘আমার উপর শান্তি’, যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি আর যেদিন আমি মৃত্যুবরণ করবো আর যেদিন আমাকে জীবিত করে পুনরুত্থিত করা হবে’।
১৯:৩৪
যালিকা = এ-ই হচ্ছে। ঈসা ইবনু মারইয়াম = ঈসা ইবনে মারিয়াম/ মারিয়ামের পুত্র ঈসা (এর সঠিক বৃত্তান্ত)। ক্বাওলাল হাক্বক্বিল্লাযী ফীহি = ইহাই সত্য কথা যে বিষয়ে। ইয়ামতারূনা = তারা সন্দেহ পোষণ করছে।
এ-ই হচ্ছে ঈসা ইবনে মারিয়াম/ মারিয়ামের পুত্র ঈসা (এর সঠিক বৃত্তান্ত)। ইহাই সত্য কথা যে বিষয়ে তারা সন্দেহ পোষণ করছে।
১৯:৩৫
মা কানা লিল্লাহি = আল্লাহর জন্য শোভনীয় নয়। আইঁ ইয়াত্তাখিজা = যে, তিনি গ্রহণ করবেন। মিওঁ ওয়ালাদিন = কোন সন্তান। সুবহানাহু = সুবহানাহু/ তিনি পবিত্র। ইযা = যখন। ক্বদা = তিনি সিদ্ধান্ত করেন। আমরান = কোন কাজের জন্য। ফাইন্নামা = তখন প্রকৃতপক্ষে। ইয়াক্বূলু = তিনি বলেন। লাহু = উহার উদ্দেশ্যে। কুন ফাইয়াকূনু = ‘হও’, সুতরাং তা হয়।
আল্লাহর জন্য শোভনীয় নয় যে, তিনি গ্রহণ করবেন কোন সন্তান। সুবহানাহু/ তিনি পবিত্র। যখন তিনি সিদ্ধান্ত করেন কোন কাজের জন্য, তখন প্রকৃতপক্ষে তিনি বলেন উহার উদ্দেশ্যে, ‘হও’, সুতরাং তা হয়।
১৯:৩৬
ওয়া = (ঈসা আরো বলেছে) আর। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। রব্বী = আমারও রব। ওয়া = আর। রব্বুকুম = তোমাদেরও রব। ফা’বুদূহু = সুতরাং তোমরা তাঁরই ইবাদাত/ দাসত্ব করো। হাযা = ইহাই। সিরাতুম মুসতাক্বীমুন = সিরাতুল মুসতাকীম/ সরল-সঠিক পথ।
(ঈসা আরো বলেছে) ‘আর নিশ্চয় আল্লাহ আমারও রব আর তোমাদেরও রব। সুতরাং তোমরা তাঁরই ইবাদাত/ দাসত্ব করো। ইহাই সিরাতুল মুসতাকীম/ সরল-সঠিক পথ’।
১৯:৩৭
ফাখতালাফাল আহযাবু = কিন্তু তারপর ইখতিলাফ/ মতপার্থক্য করেছে বিভিন্ন দল। মিম বায়নিহিম = তাদের পরস্পরের মধ্যে। ফাওয়াইলুল্লিল্লাযীনা = সুতরাং তাদের জন্য দুর্ভোগ যারা। কাফারূ = কুফর করেছে। মিম মাশহাদি ইয়াওমিন আযীমিন = মহাদিবসের (ক্বিয়ামাত) প্রত্যক্ষকাল থেকে।
কিন্তু তারপর ইখতিলাফ/ মতপার্থক্য করেছে বিভিন্ন দল তাদের পরস্পরের মধ্যে। সুতরাং তাদের জন্য দুর্ভোগ যারা কুফর করেছে মহাদিবসের (ক্বিয়ামাত) প্রত্যক্ষকাল থেকে।
১৯:৩৮
আসমি’ বিহিম = (সেদিন) তারা অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই শুনবে। ওয়া = আর। আবসির = অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই দেখবে। ইয়াওমা = যেদিন। ইয়া’তূনানা = তারা আমাদের কাছে আসবে। লাকিনিয যালিমূনাল ইয়াওমা = কিন্তু যালিমগণ আজ। ফী দলালিম মুবীন = স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে আছে।
(সেদিন) তারা অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই শুনবে আর অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই দেখবে, যেদিন তারা আমাদের কাছে আসবে। কিন্তু যালিমগণ আজ স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে আছে।
১৯:৩৯
ওয়া = আর। আনযিরহুম = তাদেরকে সতর্ক করো। ইয়াওমাল হাছরাতি = পরিতাপের দিন (= কিয়ামাত দিবস) সম্পর্কে। ইয = যখন। ক্বুদিয়াল আমরু = বিষয়সমূহের ফায়সালা করে দেয়া হবে। ওয়া = আর। হুম = তারা। ফী গাফলাতিন = উদাসীনতার মধ্যে আছে। ওয়া = আর। হুম = তারা। লা ইউ’মিনূনা = ঈমান/ বিশ্বাস করছে না।
আর তাদেরকে সতর্ক করো পরিতাপের দিন (= কিয়ামাত দিবস) সম্পর্কে। যখন বিষয়সমূহের ফায়সালা করে দেয়া হবে। আর তারা তো উদাসীনতার মধ্যে আছে আর তারা ঈমান/ বিশ্বাস করছে না।
১৯:৪০
ইন্না = নিশ্চয়। নাহনু = আমরাই। নুরিছুল আরদা = ওয়ারিস হবো পৃথিবীর। ওয়া = আর। মান আলাইহা = যাকিছু উহার উপর আছে সেই সবকিছুর। ওয়া = আর। ইলাইনা = আমাদেরই কাছে। ইউরজাঊনা = তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।
নিশ্চয় আমরাই ওয়ারিস হবো পৃথিবীর আর যাকিছু উহার উপর আছে সেই সবকিছুর। আর আমাদেরই কাছে তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।
১৯:৪১
ওয়াযকুর = আর যিকির/ আলোচনা করো। ফিল কিতাবি = এই কিতাবে যা বলা হয়েছে। ইবরাহীমা = ইবরাহীম সম্পর্কে। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে। কানা = ছিলো। সিদ্দীক্বান নাবীয়্যান = সিদ্দিক/ সত্যবাদী ও নবী।
আর যিকির/ আলোচনা করো এই কিতাবে যা বলা হয়েছে ইবরাহীম সম্পর্কে। নিশ্চয় সে ছিলো সিদ্দিক/ সত্যবাদী ও নবী।
১৯:৪২
ইয = যখন। ক্বলা = সে বলেছে। লিআবীহি = তার পিতাকে। ইয়া আবাতি = হে আমার আব্বা। লিমা = কেন। তা’বুদু = আপনি উহার ইবাদাত/ দাসত্ব করেন। মা = যা। লা ইয়াছমাউ = শুনে না। ওয়া = আর। লা ইউবসিরু = দেখে না। ওয়া = আর। লা ইউগনী = কাজে আসে না। আনকা = আপনার ব্যাপারে। শাইয়ান = কিছুমাত্রও।
যখন সে বলেছে তার পিতাকে, ‘হে আমার আব্বা, কেন আপনি উহার ইবাদাত/ দাসত্ব করেন যা শুনে না আর দেখে না, আর কাজে আসে না আপনার ব্যাপারে কিছুমাত্রও?
১৯:৪৩
ইয়া আবাতী = হে আমার আব্বা। ইন্নী ক্বাদ জাআনী = নিশ্চয় আমার কাছে এসেছে। মিনাল ইলমি = এমন কিছু ইলম/ জ্ঞান। মা লাম ইয়া’তিকা = যা আপনার কাছে আসেনি। ফাত্তাবি’নী = সুতরাং আপনি আমার ইত্তেবা/ অনুসরণ করুন। আহদিকা = আমি আপনাকে হিদায়াত/ পথনির্দেশ করবো। সিরাতান সাভিয়্যান = সরল সঠিক পথ।
হে আমার আব্বা, নিশ্চয় আমার কাছে এসেছে এমন কিছু ইলম/ জ্ঞান, যা আপনার কাছে আসেনি। সুতরাং আপনি আমার ইত্তেবা/ অনুসরণ করুন। আমি আপনাকে হিদায়াত/ পথনির্দেশ করবো সরল সঠিক পথ।
১৯:৪৪
ইয়া আবাতী = হে আমার আব্বা। লা তা’বুদিশ শায়তানা = শয়তানের ইবাদাত/ দাসত্ব করবেন না। ইন্নাশ শায়তানা = নিশ্চয় শয়তান। কানা = হলো। লিররহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের প্রতি। আসিয়্যান = অবাধ্য।
হে আমার আব্বা, শয়তানের ইবাদাত/ দাসত্ব করবেন না। নিশ্চয় শয়তান হলো রহমানের/ দয়াময়ের প্রতি অবাধ্য।
১৯:৪৫
ইয়া আবাতী = হে আমার আব্বা। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। আখাফু = ভয় করি। আইঁ ইয়ামাছছাকা = যে, আপনাকে স্পর্শ করবে। আযাবুম মিনার রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের আযাব/ শাস্তি। ফাতাকূনা = ফলত: আপনি হয়ে থাকবেন। লিশ শয়তানি = শয়তানের জন্য। ওয়ালিয়্যান = ওলি/ বন্ধু।
হে আমার আব্বা, ‘নিশ্চয় আমি ভয় করি যে, আপনাকে স্পর্শ করবে রহমানের/ দয়াময়ের আযাব/ শাস্তি। ফলত: আপনি হয়ে থাকবেন শয়তানের জন্য ওলি/ বন্ধু’।
১৯:৪৬
ক্বলা = সে (= ইবরাহীমের পিতা) বলেছে। আরাগিবুন আনতা = তুমি কি বিমুখ হয়ে আছো। আন আলিহাতী = আমার ইলাহগুলো থেকে। ইয়া ইবরাহীমু = হে ইবরাহীম। লাইল্লাম তানতাহি = যদি তুমি বিরত না হও। লাআরজুমান্নাকা = তাহলে, অবশ্যই আমি তোমাকে রজম/ পাথর নিক্ষেপে হত্যা করবো। ওয়া = আর। হুজুরনী = (তা থেকে বাঁচতে হলে) তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাও। মালিয়্যান = চিরতরে।
সে (= ইবরাহীমের পিতা) বলেছে, ‘তুমি কি বিমুখ হয়ে আছো আমার ইলাহগুলো থেকে? হে ইবরাহীম। যদি তুমি বিরত না হও, তাহলে অবশ্যই আমি তোমাকে রজম/ পাথর নিক্ষেপে হত্যা করবো। আর (তা থেকে বাঁচতে হলে) তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাও চিরতরে’।
১৯:৪৭
ক্বলা = সে (= ইবরাহীম) বলেছে। সালামুন আলাইকা = ‘সালামুন আলাইকা’/ আপনার উপর শান্তি। ছাআছতাগফিরুলাকা = শীঘ্রই আমি আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবো। রব্বী = আমার রবের কাছে। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। কানা = হলেন। বী = আমার প্রতি। হাফিয়্যান = অনুগ্রহশীল।
সে (= ইবরাহীম) বলেছে, ‘সালামুন আলাইকা’/ আপনার উপর শান্তি। শীঘ্রই আমি আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবো আমার রবের কাছে। নিশ্চয় তিনি হলেন আমার প্রতি অনুগ্রহশীল।
১৯:৪৮
ওয়া = আর। আ’তাযিলুকুম = আমি আপনার থেকে পৃথক হয়ে গেলাম। ওয়া = আর। মা তাদঊনা = তাদের থেকেও যাদেরকে আপনারা ডাকেন। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে। ওয়া = আর। আদঊ = আমি ডাকবো। রব্বী = আমার রবকে। আছা = আশা করি। আল্লা আকূনা = যে, আমি হবো না। বিদুআয়ি রব্বী = আমার রবকে ডেকে। শাক্বিয়্যান = ব্যার্থকাম।
আর আমি আপনার থেকে পৃথক হয়ে গেলাম আর তাদের থেকেও যাদেরকে আপনারা ডাকেন, আল্লাহকে বাদ দিয়ে। আর আমি ডাকবো আমার রবকে। আশা করি যে, আমি হবো না আমার রবকে ডেকে ব্যার্থকাম’।
১৯:৪৯
ফালাম্মা’তাযালাহুম = তারপর যখন সে তাদের থেকে পৃথক হয়ে গেছে। ওয়া = আর। মা ইয়া’বুদূনা = তাদের থেকেও তারা যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করতো। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে। ওয়াহাবনা লাহু = তখন আমরা তাকে দিয়েছি। ইসহাক্বা ওয়া ইয়া’ক্বূবা = ইসহাক ও ইয়াকুবকে। ওয়া = আর। কুল্লান = এদের প্রত্যেককে। জাআলনা = আমরা নিযুক্ত করেছি। নাবিয়্যান = নবী হিসাবে।
তারপর যখন সে তাদের থেকে পৃথক হয়ে গেছে আর তাদের থেকেও তারা যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করতো, আল্লাহকে বাদ দিয়ে। তখন আমরা তাকে দিয়েছি ইসহাক ও ইয়াকুবকে। আর এদের প্রত্যেককে আমরা নিযুক্ত করেছি নবী হিসাবে।
১৯:৫০
ওয়া = আর। ওয়াহাবনা লাহুম = আমরা তাদেরকে দিয়েছি। মির রহমাতিনা = আমাদের রহমত/ দয়া। ওয়া = আর। জাআলনা লাহুম = আমরা তাদেরকে দিয়েছি। লিছানা ছিদক্বিন আলিয়্যান = সত্যবাদিতার সমুচ্চ সুখ্যাতি।
আর আমরা তাদেরকে দিয়েছি আমাদের রহমত/ দয়া। আর আমরা তাদেরকে দিয়েছি সত্যবাদিতার সমুচ্চ সুখ্যাতি।
১৯:৫১
ওয়াযকুর = আর যিকির/ আলোচনা করো। ফিল কিতাবি = এই কিতাবে যা বলা হয়েছে। মূসা = মূসা সম্পর্কে। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে। কানা = ছিলো। মুখলিসান = মুখলিস/ খাঁটি। ওয়া = আর। কানা = সে ছিলো। রাসূলান নাবিয়্যান = রাসূলান নবী।
আর যিকির/ আলোচনা করো এই কিতাবে যা বলা হয়েছে মূসা সম্পর্কে। নিশ্চয় সে ছিলো মুখলিস/ খাঁটি। আর সে ছিলো রাসূলান নবী।
১৯:৫২
ওয়া = আর। নাদায়নাহু = আমরা তাকে ডেকেছি। মিন জানিবিত তূরিল আয়মানি = তূর পাহাড়ের ডান দিক থেকে। ওয়া = আর। ক্বাররাবনাহু = আমরা তাকে নৈকট্য দান করেছি। নাজিয়্যান = একান্ত কথাবার্তার মাধ্যমে।
আর আমরা তাকে ডেকেছি (মূসার অবস্থানের সাপেক্ষে) তূর পাহাড়ের ডান দিক থেকে। আর আমরা তাকে নৈকট্য দান করেছি একান্ত কথাবার্তার মাধ্যমে।
১৯:৫৩
ওয়া = আর। ওয়াহাবনা লাহু = আমরা তার জন্য (সহযোগী করে) দিয়েছি। মির রহমাতিনা = আমাদের রহমত/ দয়াস্বরূপ। আখাহু হারূনা = তার ভাই হারূনকে। নাবিয়্যান = নবীরূপে।
আর আমরা তার জন্য (সহযোগী করে) দিয়েছি আমাদের রহমত/ দয়াস্বরূপ তার ভাই হারূনকে নবীরূপে।
১৯:৫৪
ওয়াযকুর = আর যিকির/ আলোচন করো। ফিল কিতাবি = এই কিতাবে যা বলা হয়েছে। ইসমাঈলা = ইসমাইল সম্পর্কে। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে। কানা = ছিলো। সদিক্বাল ওয়া’দি = ওয়াদার সত্যতা রক্ষাকারী/ ওয়াদা পালনকারী। ওয়া = আর। কানা = সে ছিলো। রসূলান নাবিয়্যান = রসূলান নবী।
আর যিকির/ আলোচন করো এই কিতাবে যা বলা হয়েছে ইসমাইল সম্পর্কে। নিশ্চয় সে ছিলো ওয়াদার সত্যতা রক্ষাকারী/ ওয়াদা পালনকারী আর সে ছিলো রসূলান নবী।
১৯:৫৫
ওয়া = আর। কানা ইয়া’মুরু = সে আদেশ দিতো। আহলাহু = তার আহালকে/ পরিবার-পরিজনকে/ প্রভাব বলয়ে থাকা লোকদেরকে। বিস সলাতি ওয়ায যাকাতি = সালাতের ও যাকাতের (= পরিশুদ্ধতামূলক প্রদেয়ের) প্রতি। ওয়া = আর। কানা = সে ছিলো। ইনদা রব্বিহী = তার রবের কাছে (= আল্লাহর কাছে)। মারদিয়্যান = পছন্দনীয় ব্যক্তি।
আর সে আদেশ দিতো তার আহালকে/ পরিবার-পরিজনকে/ প্রভাব বলয়ে থাকা লোকদেরকে সালাতের ও যাকাতের (= পরিশুদ্ধতামূলক প্রদেয়ের) প্রতি। আর সে ছিলো তার রবের কাছে (= আল্লাহর কাছে) পছন্দনীয় ব্যক্তি।
১৯:৫৬
ওয়াযকুর = আর যিকির/ আলোচনা করো। ফিল কিতাবি = এই কিতাবে যা বলা হয়েছে। ইদরীসা = ইদরীস সম্পর্কে। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে। কানা = ছিলো। সিদ্দিক্বান নাবিয়্যান = সিদ্দিক/ সত্যবাদী ও নবী।
আর যিকির/ আলোচনা করো এই কিতাবে যা বলা হয়েছে ইদরীস সম্পর্কে। নিশ্চয় সে ছিলো সিদ্দিক/ সত্যবাদী ও নবী।
১৯:৫৭
ওয়া = আর। রফা’নাহু = আমরা তাকে সমুন্নত করেছি। মাকানান আলিয়্যান = উচ্চতর স্থানে।
আর আমরা তাকে সমুন্নত করেছি উচ্চতর স্থানে।
১৯:৫৮
উলায়িকাল্লাযীনা = তারাই ঐসব লোক। আনআমাল্লাহু আলাইহিম = যাদের উপর আল্লাহ নিয়ামত/ অনুগ্রহদান করেছেন। মিনান্নাবিয়্যীনা = যারা ছিলো নবী। মিন যুররিয়াতি আদামা = যারা আদমের বংশধর। ওয়া = আর। মিম্মান = তাদের মধ্যকার ব্যক্তি যাদেরকে। হামালনা = আমরা আরোহন করিয়েছি। মাআ নূহিন = নূহের সাথে (= নূহের নৌকায়)। ওয়া = আর। মিন যুররিয়াতি ইবরাহীমা ওয়া ইসরাঈলা = ইবরাহীমের ও ইসরাইলের বংশধর। ওয়া = আর। মিম্মান = যাদেরকে। হাদায়না = আমরা হিদায়াত করেছি। ওয়াজতাবায়না = আর আমরা মনোনীত করেছি। ইযা = যখন। তুতলা = তিলাওয়াত করা হতো। আলাইহিম = তাদের কাছে। আয়াতুর রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের আয়াতসমূহ। খাররূ = তখন তারা নুয়ে পড়তো। ছুজজাদান = সিজদায়। ওয়া = আর। বুকিয়্যান = কাঁদতে থাকতো।
তারাই ঐসব লোক যাদের উপর আল্লাহ নিয়ামত/ অনুগ্রহদান করেছেন, যারা ছিলো নবী, যারা আদমের বংশধর, আর তাদের মধ্যকার ব্যক্তি যাদেরকে আমরা আরোহন করিয়েছি নূহের সাথে (= নূহের নৌকায়), আর ইবরাহীমের ও ইসরাইলের বংশধর, আর যাদেরকে আমরা হিদায়াত করেছি, আর আমরা মনোনীত করেছি। যখন তিলাওয়াত করা হতো তাদের কাছে রহমানের/ দয়াময়ের আয়াতসমূহ, তখন তারা নুয়ে পড়তো সিজদায় আর কাঁদতে থাকতো।
১৯:৫৯
ফাখালাফা = তারপর স্থলাভিষিক্ত হয়েছে। মিম বা’দিহিম = তাদের পরে। খালফুন = পরবর্তীরা। আদাউস সালাতা = তারা সালাতকে নষ্ট করেছে। ওয়াত্তাবাউশ শাহাওয়াতি = আর কামনা বাসনার ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছে। ফাছাওফা = তারপর শীঘ্রই। ইয়ালক্বাওনা = তারা মোলাকাতরূপে পাবে। গাইয়ান = তাদের বিপথগামিতার শাস্তি।
তারপর স্থলাভিষিক্ত হয়েছে তাদের পরে পরবর্তীরা। তারা সালাতকে নষ্ট করেছে। আর কামনা বাসনার ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছে। তারপর শীঘ্রই তারা মোলাকাতরূপে পাবে তাদের বিপথগামিতার শাস্তি।
১৯:৬০
ইল্লা মান তাবা = তারা ছাড়া যারা তাওবা করেছে। ওয়া = আর। আমানা = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ওয়া = আর। আমিলা সলিহান = আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে। ফাউলায়িকা = তারাই ঐসব লোক যারা। ইয়াদখুলূনাল জান্নাতা = জান্নাতে দাখিল হবে। ওয়া = আর। লা ইউযলামূনা = তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না। শাইয়ান = কিছুমাত্রও।
তারা ছাড়া যারা তাওবা করেছে আর ঈমান/ বিশ্বাস করেছে আর আমলে সালেহ/ সৎকর্ম করেছে। তারাই ঐসব লোক যারা জান্নাতে দাখিল হবে। আর তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না কিছুমাত্রও।
১৯:৬১
জান্নাতি আদনিল্লাতী = স্থায়ী জান্নাত, যার। ওয়াআদার রহমানু = ওয়াদা করেছেন রহমান/ দয়াময় (= আল্লাহ)। ইবাদাহু = তাঁর বান্দাদের কাছে। বিল গায়বি = গায়েব সম্পর্কে। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি এমন যে। কানা ওয়া’দাহু = তাঁর ওয়াদা। মা’তিইয়্যান = অবশ্যই বাস্তবায়িত হবেই।
স্থায়ী জান্নাত, যার ওয়াদা করেছেন রহমান/ দয়াময় (= আল্লাহ) তাঁর বান্দাদের কাছে গায়েব সম্পর্কে। নিশ্চয় তিনি এমন যে, তাঁর ওয়াদা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবেই।
১৯:৬২
লা ইয়াছমাঊনা = তারা শুনবে না। ফীহা = উহাতে। লাগওয়ান = অর্থহীন কথাবার্তা। ইল্লা ছালামান = ছালাম/ শান্তিময় কথা ছাড়া। ওয়া = আর। লাহুম = তাদের জন্য থাকবে। রিযক্বুহুম = তাদের রিযিক। ফীহা = উহাতে। বুকরাতান ওয়া আশিয়্যান = বুকরাতানে/ দিনের প্রথমাংশে ও ইশার সময়।
তারা শুনবে না উহাতে অর্থহীন কথাবার্তা, ছালাম/ শান্তিময় কথা ছাড়া। আর তাদের জন্য থাকবে তাদের রিযিক উহাতে বুকরাতানে/ দিনের প্রথমাংশে ও ইশার সময়।
১৯:৬৩
তিলকাল জান্নাতুল্লাতী = এই হচ্ছে জান্নাত যার। নূরিছু = ওয়ারিস আমরা করবো। মিন ইবাদিনা = আমাদের বান্দাদের মধ্য থেকে। মান কানা তাক্বিয়্যান = তাকে তাকে যে যে হবে তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বনকারী।
এই হচ্ছে জান্নাত যার ওয়ারিস আমরা করবো আমাদের বান্দাদের মধ্য থেকে তাকে তাকে যে যে হবে তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বনকারী।
১৯:৬৪
ওয়া = আর। মা নাতানাযযালু = আমরা নাযিল হই না/ অবতরণ করি না। ইল্লা বিআমরি রব্বিকা = তোমার রবের আদেশে ছাড়া। লাহু = তাঁরই অধিকারভুক্ত। মা = যা কিছু আছে। বায়না আয়দীনা = আমাদের সামনে। ওয়া = আর। মা = যা কিছু আছে। খালফানা = আমাদের পিছনে। ওয়া = আর। মা = যা কিছু আছে। বায়না যালিকা = এ দুয়ের মধ্যে। ওয়া = আর। মা কানা রব্বুকা নাছিয়্যান = আপনার রব ভুলে যান না।
আর আমরা (= ফেরেশতারা) নাযিল হই না/ অবতরণ করি না তোমার রবের আদেশে ছাড়া। তাঁরই অধিকারভুক্ত যা কিছু আছে আমাদের সামনে আর যা কিছু আছে আমাদের পিছনে আর যা কিছু আছে এ দুয়ের মধ্যে। আর আপনার রব ভুলে যান না।
১৯:৬৫
রব্বুছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি = তিনিই স্রষ্টা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর। ওয়া = আর। মা বায়নাহুমা = যা কিছু এ দুয়ের মধ্যে আছে সেই সবকিছুর। ফা’বুদহু = সুতরাং তুমি তাঁরই ইবাদাত/ দাসত্ব করো। ওয়াসতবির = আর সবর করো। লিইবাদাতিহী = তাঁর ইবাদাতের/ দাসত্বের উপর। হাল তা’লামু = তুমি কি জানো। লাহু ছামিয়্যান = তাঁর সমগুণসম্পন্ন/ সমক্ষমতাসম্পন্ন কাউকে।
তিনিই স্রষ্টা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর আর যা কিছু এ দুয়ের মধ্যে আছে সেই সবকিছুর। সুতরাং তুমি তাঁরই ইবাদাত/ দাসত্ব করো আর সবর করো তাঁর ইবাদাতের/ দাসত্বের উপর। তুমি কি জানো তাঁর সমগুণসম্পন্ন/ সমক্ষমতাসম্পন্ন কাউকে?
১৯:৬৬
ওয়া = আর। ইয়াক্বূলুল ইনছানু = ইনসান/ মানুষ বলে। আয়িযা = এটাই কি যে, যখন। মামিত্তু = আমি মরে যাবো। লাছাওফা = তারপর শীঘ্রই। উখরাজু হাইয়ান = আমি পুনর্জীবিত হয়ে বের হবো?
আর (এক শ্রেণীর) ইনসান/ মানুষ বলে, ‘এটাই কি যে, যখন আমি মরে যাবো, তারপর শীঘ্রই আমি পুনর্জীবিত হয়ে বের হবো?
১৯:৬৭
আওয়া লা ইয়াযকুরুল ইনছানু = তবে কি ইনসান/ মানুষ যিকির/ স্মরণ করে না। আন্না = যে, আমরা। খালাক্বনাহু = তাকে সৃষ্টি করেছি। মিন ক্বাবলূ = ইতিপূর্বে। ওয়া = আর। লাম ইয়াকু = (তার আগে) সে ছিলো না। শাইয়ান = কোন কিছুই (= শূন্যতা থেকে সৃষ্টি)।
তবে কি ইনসান/ মানুষ যিকির/ স্মরণ করে না যে, আমরা তাকে সৃষ্টি করেছি ইতিপূর্বে। আর (তার আগে) সে ছিলো না কোন কিছুই (= শূন্যতা থেকে সৃষ্টি)।
১৯:৬৮
ফাওয়ারব্বিকা = সুতরাং তোমার রবের কসম। লানাহশুরান্নাহুম = অবশ্যই আমরা তাদেরকে হাশর/ সমবেত করবো। ওয়াশ শায়াতীনা = আর শয়তানদেরকেও (সমবেত করবো)। ছুম্মা = তারপর। লানুহদিরান্নাহুম = অবশ্যই আমরা তাদেরকে হাজির/ হুজুর/ উপস্থিত করবো। হাওলা জাহান্নামা = জাহান্নামের চারপাশে। জিছিয়্যান = নতজানু অবস্থায়।
সুতরাং তোমার রবের কসম, অবশ্যই আমরা তাদেরকে হাশর/ সমবেত করবো। আর শয়তানদেরকেও (সমবেত করবো)। তারপর অবশ্যই আমরা তাদেরকে হাজির/ হুজুর/ উপস্থিত করবো জাহান্নামের চারপাশে নতজানু অবস্থায়।
১৯:৬৯
ছুম্মা = তারপর। লানানযিয়ান্না = অবশ্যই আমরা বেছে/ টেনে বের করবো। মিন কুল্লি শিয়াতিন = প্রত্যেক শিয়া/ দল থেকে। আইয়ুহুম = তাদের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তি। আশাদ্দু = সবচেয়ে কঠিন। আলার রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের বিরুদ্ধে। ইতিয়্যান = অবাধ্য আচরণে।
তারপর অবশ্যই আমরা বেছে/ টেনে বের করবো প্রত্যেক শিয়া/ দল থেকে তাদের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তি সবচেয়ে কঠিন, রহমানের/ দয়াময়ের বিরুদ্ধে অবাধ্য আচরণে।
১৯:৭০
ছুম্মা = পরন্তু। লানাহনু = অবশ্যই আমরা। আ’লামু বিল্লাযীনা = তাদের ব্যাপারে। হুম = যারা। আওলা = অধিকতর যোগ্য। বিহা = উহাতে (= জাহান্নামে)। সিলিয়্যান = নিক্ষিপ্ত হবার জন্য।
পরন্তু অবশ্যই আমরা তাদের ব্যাপারে জানি যারা অধিকতর যোগ্য উহাতে (= জাহান্নামে) নিক্ষিপ্ত হবার জন্য।
১৯:৭১
ওয়া = আর। ইম মিনকুম = তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই। ইল্লা ওয়ারিদুহা = যাকে উহাতে (জাহান্নামে) হাঁকাইয়া নেয়া হবে না। কানা = ইহা হলো। আলা রব্বিকা = তোমার রবের কাছে। হাতমান = চূড়ান্ত। মাক্বদিয়্যান = সিদ্ধান্তকৃত বিষয়।
আর (অপরাধীদেরকে বলা হবে,) ‘তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যাকে উহাতে (= জাহান্নামে) হাঁকাইয়া নেয়া হবে না। ইহা হলো তোমার রবের কাছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকৃত বিষয়’।
১৯:৭২
ছুম্মা = পক্ষান্তরে/ সেই সাথে। নুনাযযিল্লাযীনাত তাক্বাও = আমরা তাদেরকে নাজাত/ মুক্তি দেবো যারা তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করেছে। ওয়া = আর। নাযারুয যলিমীনা = আমরা রেখে দেবো যালিমদেরকে। ফীহা = উহাতে। জিছিয়্যান = নতজানু অবস্থায়।
পক্ষান্তরে/ সেই সাথে (এরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া থেকে) আমরা তাদেরকে নাজাত/ মুক্তি দেবো যারা তাকওয়া/ আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করেছে। আর আমরা রেখে দেবো যালিমদেরকে উহাতে নতজানু অবস্থায়।
১৯:৭৩
ওয়া = আর। ইযা = যখন। তুতলা = তিলাওয়াত/ পাঠ করা হয়। আলাইহিম = তাদের কাছে। আয়াতুনা বাইয়িনাতিন = আমাদের ষ্পষ্ট আয়াতসমূহ। ক্বলাল্লাযীনা = তখন তারা বলে যারা। কাফারূ = কুফর করেছে। লিল্লাযীনা আমানূ = তাদেরকে উদ্দেশ্য করে যারা ঈমান/ বিশ্বাস করে। আইয়ুল ফারিক্বাইনি = দুইদলের কোন দলটি (= মু’মিন দল ও কাফির দলের কোন দলটি)। খায়রাম মাক্বামান = (পৃথিবীতে) দৃঢ়-প্রতিষ্ঠিত থাকার দিক থেকে উত্তম। ওয়া = আর। আহসানু নাদিয়্যান = মজলিশের দিক থেকে অধিক উত্তম?
আর যখন তিলাওয়াত/ পাঠ করা হয় তাদের কাছে আমাদের ষ্পষ্ট আয়াতসমূহ, তখন তারা বলে যারা কুফর করেছে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে যারা ঈমান/ বিশ্বাস করে, ‘দুইদলের কোন দলটি (= মু’মিন দল ও কাফির দলের কোন দলটি) (পৃথিবীতে) দৃঢ়-প্রতিষ্ঠিত থাকার দিক থেকে উত্তম আর মজলিশের দিক থেকে অধিক উত্তম?
১৯:৭৪
ওয়া = আর। কাম = কত যে। আহলাকনা = আমরা হালাক/ ধ্বংস করেছি। ক্বাবলাহুম = তাদের আগে। মিন ক্বারনিন = জনপদসমূহকে। হুম = তারা। আহছানু = (সমকালে) অধিক উত্তম ছিলো। আছাছান = সাজ-সরঞ্জামে। ওয়া = আর। রি’ইয়ান = চাকচিক্যে।
আর কত যে আমরা হালাক/ ধ্বংস করেছি তাদের আগে জনপদসমূহকে। তারা (সমকালে) অধিক উত্তম ছিলো সাজ-সরঞ্জামে আর চাকচিক্যে।
১৯:৭৫
ক্বুল = বলো। মান = যে। কানা = হবে। ফিদ দলালাতি = বিভ্রান্তিতে পতিত। ফালইয়ামদুদ লাহুর রহমানু= সে ক্ষেত্রে রহমান/ দয়াময় তাকে ঢিল দিবেন। মাদ্দান = যথাযথ ঢিল। হাত্তা = শেষ পর্যন্ত। ইযা = যখন। রআও = তারা দেখবে। মা ইউআদূনা = ঐ বিষয়ে যার ওয়াদা তাদেরকে দেয়া হয়েছে। ইম্মাল আযাবা = তা হয় আযাব/ শাস্তি হোক। ওয়া = আর। ইম্মাছ ছায়াতা = না হয় সায়াত/ প্রলয়মুহুর্ত হোক। ফাছাইয়া’লামূনা = তখন তারা জানবে। মান হুয়া = কে। শাররুম মাকানান = অবস্থানে নিকৃষ্ট। ওয়া = আর। আদআফু জুনদান = জনশক্তিতে দুর্বলতর।
বলো, ‘যে হবে বিভ্রান্তিতে পতিত, সে ক্ষেত্রে রহমান/ দয়াময় তাকে ঢিল দিবেন, যথাযথ ঢিল। শেষ পর্যন্ত যখন তারা দেখবে ঐ বিষয়ে যার ওয়াদা তাদেরকে দেয়া হয়েছে। তা হয় আযাব/ শাস্তি হোক আর না হয় সায়াত/ প্রলয়মুহুর্ত হোক। তখন তারা জানবে- কে অবস্থানে নিকৃষ্ট আর জনশক্তিতে দুর্বলতর?
১৯:৭৬
ওয়া = আর। ইয়াযীদুল্লাহুল্লাযীনাহতাদাও হুদান = আল্লাহ তাদেরকে বাড়িয়ে দিবেন যারা সঠিক পথে চলে, (বাড়িয়ে দিবেন) হুদা/ হিদায়াত। ওয়াল বাক্বিইয়াতুস সলিহাতু = আর স্থায়ী সালিহাত/ সৎকর্মসমূহই। খায়রুন ইনদা রব্বিকা = তোমার রবের কাছে উত্তম। ছাওয়াবান = প্রতিফলের বিষয় হিসাবেও। ওয়া = আর। খায়রুম মারাদ্দান = উত্তম, পরিণতির বিষয় হিসাবেও।
আর আল্লাহ তাদেরকে বাড়িয়ে দিবেন যারা সঠিক পথে চলে, (বাড়িয়ে দিবেন) হুদা/ হিদায়াত। আর স্থায়ী সালিহাত/ সৎকর্মসমূহই তোমার রবের কাছে উত্তম, প্রতিফলের বিষয় হিসাবেও আর উত্তম, পরিণতির বিষয় হিসাবেও।
১৯:৭৭
আফারআইতাল্লাযী = তুমি কি তার অবস্থা ভেবে দেখোনি যে। কাফারা = কুফর করেছে। বিআয়াতিনা = আমাদের আয়াতসমূহের প্রতি। ওয়া = আর। ক্বলা = বলেছে। লাঊতাইয়ান্না = অবশ্যই আমাকে দেয়া হবে। মালান = মালসম্পদ। ওয়া = আর। ওয়ালাদান = সন্তানসন্ততি।
তুমি কি তার অবস্থা ভেবে দেখোনি যে কুফর করেছে আমাদের আয়াতসমূহের প্রতি আর বলেছে, ‘অবশ্যই আমাকে দেয়া হবে মালসম্পদ আর সন্তানসন্ততি’।
১৯:৭৮
আত্তলাআলগায়বি = সে কি উদিত/ পরিজ্ঞাত হয়েছে গায়েব/ অদৃশ্য সম্পর্কে। আমিত্তাখাজা = নাকি সে গ্রহণ করেছে। ইনদার রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের কাছ থেকে। আহদান = কোন আহদ/ প্রতিশ্রুতি।
সে কি উদিত/ পরিজ্ঞাত হয়েছে গায়েব/ অদৃশ্য সম্পর্কে, নাকি সে গ্রহণ করেছে রহমানের/ দয়াময়ের কাছ থেকে কোন আহদ/ প্রতিশ্রুতি?
১৯:৭৯
কাল্লা = কখনো না। ছানাকতুবু = শীঘ্রই আমরা লিখে নেবো। মা ইয়াক্বূলু = যা সে বলেছে তা। ওয়া = আর। নামুদ্দু লাহু মিনাল আযাবি = আমরা তাকে আযাব/ শাস্তি বাড়িয়ে দিবো। মাদ্দান = অধিক মাত্রায় বাড়িয়ে।
কখনো না। শীঘ্রই আমরা লিখে নেবো যা সে বলেছে তা। আর আমরা তাকে আযাব/ শাস্তি বাড়িয়ে দিবো, অধিক মাত্রায় বাড়িয়ে।
১৯:৮০
ওয়া = আর। নারিছুহু = আমরাই উহার ওয়ারিস/ স্বত্বাধিকারী হবো। মা ইয়াক্বূলু = যা কিছু সম্পর্কে সে বলছে। ওয়া = আর। ইয়া’তীনা = সে আমার কাছে আসবে। ফারদান = একাকী।
আর আমরাই উহার ওয়ারিস/ স্বত্বাধিকারী হবো যা কিছু সম্পর্কে সে বলছে। আর সে আমার কাছে আসবে একাকী।
১৯:৮১
ওয়াত্তাখাজূ = আর তারা গ্রহণ করেছে। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে ছেড়ে। আলিহাতান = (তাদের কল্পিত) অন্য ইলাহদেরকে। লিইয়াকূনূ = যেন তারা হয়। লাহুম = তাদের জন্য। ইযযান = সহায়/ সাহায্যকারী।
আর তারা গ্রহণ করেছে আল্লাহকে ছেড়ে (তাদের কল্পিত) অন্য ইলাহদেরকে, যেন তারা হয় তাদের জন্য সহায়/ সাহায্যকারী।
১৯:৮২
কাল্লা = কখনো না। ছাইয়াকফুরূনা = শীঘ্রই তারা কুফর/ অস্বীকার করবে। বিইবাদাতিহিম = তাদের ইবাদাতকে/ দাসত্বকে (অর্থাৎ তারা এর দায়ভার নেবে না)। ওয়া = আর। ইয়াকূনু = তারা হবে। আলাইকুম = তাদের ব্যাপারে। দিদ্দান = প্রতিপক্ষ।
কখনো না। শীঘ্রই তারা কুফর/ অস্বীকার করবে তাদের ইবাদাতকে/ দাসত্বকে (অর্থাৎ তারা এর দায়ভার নেবে না)। আর তারা হবে তাদের ব্যাপারে প্রতিপক্ষ।
১৯:৮৩
আলাম তারা = তুমি কি লক্ষ্য করনি। আন্না = যে, আমরা। আরছালনাশ শায়াতীনা = প্রেরণ করি শয়তানগুলোকে। আলাল কাফিরীনা = কাফিরদের উপর। তাউযযুহুম = যারা তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে। আযযান = বেশি বেশি উদ্বুদ্ধকরনে।
তুমি কি লক্ষ্য করনি যে, আমরা প্রেরণ করি শয়তানগুলোকে কাফিরদের উপর, যারা তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে, বেশি বেশি উদ্বুদ্ধকরনে।
১৯:৮৪
ফালা তা’যাল = সুতরাং তাড়াতাড়ি (আযাব) চেয়ো না। আলাইহিম = তাদের ব্যাপারে। ইন্নামা = নিশ্চয়। নাউদ্দু = আমরা গণনা করছি। লাহুম = তাদের জন্য। আদ্দান = যথাযথ গণনা।
সুতরাং তাড়াতাড়ি (আযাব) চেয়ো না তাদের ব্যাপারে। নিশ্চয় আমরা গণনা করছি তাদের জন্য যথাযথ গণনা।
১৯:৮৫
ইয়াওমা = সেদিন। নাহশুরুল মুত্তাক্বীনা = আমরা হাশর/ সমবেত করবো মুত্তাকীদেরকে। ইলার রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের কাছে। ওয়াফদান = মেহমান হিসাবে।
সেদিন আমরা হাশর/ সমবেত করবো মুত্তাকীদেরকে রহমানের/ দয়াময়ের কাছে মেহমান হিসাবে।
১৯:৮৬
ওয়া = আর। নাছূক্বুল মুজরিমীনা = আমরা তাড়িয়ে নেবো অপরাধীদেরকে। ইলা জাহান্নামা = জাহান্নামের দিকে। ভিরদান = পিপাসার্ত অপস্থায়।
আর আমরা তাড়িয়ে নেবো অপরাধীদেরকে জাহান্নামের দিকে পিপাসার্ত অপস্থায়।
১৯:৮৭
লা ইয়ামলিকূনাশ শাফায়াতা = তারা শাফায়াত করতে সক্ষম হবে না। ইল্লা মানিত্তাখাজা = সে ছাড়া যে লাভ করেছে। ইনদার রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের কাছ থেকে। আহদান = আহদ/ প্রতিশ্রুতি।
তারা শাফায়াত করতে সক্ষম হবে না, সে ছাড়া যে লাভ করেছে রহমানের/ দয়াময়ের কাছ থেকে আহদ/ প্রতিশ্রুতি।
১৯:৮৮
ওয়া = আর। ক্বলুত্তাখাজার রহমানু ওয়ালাদান = তারা বলে, ‘রহমান/ দয়াময় কাউকে সন্তানরূপে গ্রহণ করেছেন।
আর তারা বলে, ‘রহমান/ দয়াময় কাউকে সন্তানরূপে গ্রহণ করেছেন’।
১৯:৮৯
লাক্বাদ = নিশ্চয়। জি’তুম = তোমরা নিয়ে এসেছো। শাইয়ান = এমন কিছু যা। ইদ্দান = সাংঘাতিক বেহুদা কথা।
নিশ্চয় তোমরা নিয়ে এসেছো এমন কিছু যা সাংঘাতিক বেহুদা কথা।
১৯:৯০
তাকাদুছ ছামাওয়াতি = উপক্রম হয় আকাশমন্ডলী। ইয়াতাফাত্তারনা = ফেটে পড়ার। মিনহু = তা থেকে। ওয়া = আর। তানশাক্বক্বুল আরদু = পৃথিবী খন্ডবিখন্ড হওয়ার। ওয়া = আর। তাখিররুল জিবালু = পাহাড়সমূহ পতিত হওয়ার। হাদ্দান = চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে।
(যাতে) উপক্রম হয় আকাশমন্ডলী ফেটে পড়ার তা থেকে আর পৃথিবী খন্ডবিখন্ড হওয়ার আর পাহাড়সমূহ পতিত হওয়ার চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে।
১৯:৯১
আন = এ কারণে যে। দাআও = তারা দাবি করছে। লির রহমানি ওয়ালাদান = রহমানের/ দয়াময়ের সন্তান থাকার কথা।
এ কারণে যে, তারা দাবি করছে রহমানের/ দয়াময়ের সন্তান থাকার কথা।
১৯:৯২
ওয়া = আর। মা ইয়ামবাগী = শোভনীয় নয়। লির রহমানি = রহমানের/ দয়াময়ের জন্য। আইঁ ইয়াত্তাখিজা = যে, তিনি গ্রহণ করবেন। ওয়ালাদান = কোন সন্তান।
আর শোভনীয় নয় রহমানের/ দয়াময়ের জন্য যে, তিনি গ্রহণ করবেন কোন সন্তান।
১৯:৯৩
ইন কুল্লু মান = তাদের মধ্য থেকে কেউই নেই যারা আছে। ফিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি = আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে। ইল্লা = এছাড়া যে, তারা। আতির রহমানি = উপস্থিত হবে রহমানের/ দয়াময়ের কাছে। আবদান = বান্দারূপে।
তাদের মধ্য থেকে কেউই নেই যারা আছে আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে, এছাড়া যে, তারা উপস্থিত হবে রহমানের/ দয়াময়ের কাছে বান্দারূপে।
১৯:৯৪
লাক্বাদ = নিশ্চয়। আহসাহুম = তিনি তাদেরকে পরিবেষ্টিত করে রেখেছেন। ওয়া = আর। আদ্দাহুম আদ্দান = তাদেরকে গণনা করে রেখেছেন যথাযথ গণনায়।
নিশ্চয় তিনি তাদেরকে পরিবেষ্টিত করে রেখেছেন আর তাদেরকে গণনা করে রেখেছেন যথাযথ গণনায়।
১৯:৯৫
ওয়া = আর। কুল্লুহুম = তাদের প্রত্যেকেই। আতিহি = তাঁর কাছে আসবে। ইয়াওমাল ক্বিয়ামাতি = ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে। ফারদান = (নিজের হিসাব নিজে দেয়ার দায়বদ্ধ) ব্যক্তি হিসাবে।
আর তাদের প্রত্যেকেই তাঁর কাছে আসবে ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে (নিজের হিসাব নিজে দেয়ার দায়বদ্ধ) ব্যক্তি হিসাবে।
১৯:৯৬
ইন্নাল্লাযীনা = নিশ্চয় যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ওয়া = আর। আমিলুস সালিহাতি = আমলে সালিহাত/ সৎকর্ম করেছে। ছাইয়াজআলু লাহুমুর রহমানু = সৃষ্টি করে দেবেন তাদের জন্য রহমান/ দয়াময়। উদ্দান = মানুষের ভালবাসা।
নিশ্চয় যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে আর আমলে সালিহাত/ সৎকর্ম করেছে, সৃষ্টি করে দেবেন তাদের জন্য রহমান/ দয়াময়, মানুষের ভালবাসা।
১৯:৯৭
ফাইন্নামা = নিশ্চয়। ইয়াছছারনাহু = আমরা উহাকে (= কুরআনকে) সহজ করেছি। বিলিছানিকা = তোমার ভাষায়। লিতুবাশশিরা = যেন তুমি সুসংবাদ দিতে পারো। বিহির মুত্তাক্বীনা = উহা দ্বারা (= কুরআন দ্বারা) মুত্তাকীদেরকে/ আল্লাহভীরুদেরকে। ওয়া = আর। তুনযিরা = তুমি সতর্ক করতে পারো। বিহী = উহা দ্বারা (= কুরআন দ্বারা)। ক্বাওমাল্লুদ্দান = জেদী কওমকে।
নিশ্চয় আমরা উহাকে (= কুরআনকে) সহজ করেছি তোমার ভাষায়; যেন তুমি সুসংবাদ দিতে পারো উহা দ্বারা (= কুরআন দ্বারা) মুত্তাকীদেরকে/ আল্লাহভীরুদেরকে, আর তুমি সতর্ক করতে পারো উহা দ্বারা (= কুরআন দ্বারা) জেদী কওমকে।
১৯:৯৮
ওয়া = আর। কাম = কত যে। আহলাকনা = আমরা হালাক/ ধ্বংস করেছি। ক্বাবলাহুম = তাদের আগে। মিন ক্বারনিন = জনপদসমূহ। হাল তুহিছছু = তোমরা কি অনুভব করো। মিনহুম মিন আহাদিন = তাদের মধ্য থেকে কাউকে। আও = অথবা। তাছমাউ = তোমরা কি শুনতে পাও। লাহুম রিকযান = তাদের কোন ক্ষীণতম শব্দও।
আর কত যে আমরা হালাক/ ধ্বংস করেছি তাদের আগে জনপদসমূহ। তোমরা কি অনুভব করো তাদের মধ্য থেকে কাউকে অথবা তোমরা কি শুনতে পাও তাদের কোন ক্ষীণতম শব্দও?