দি  ইন্সটিটিউট ফর কুরআনিক রিসার্চ এন্ড এ্যাপ্লিকেশন (ইক্বরা)

লক্ষ্য

ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।

উদ্দেশ্য

ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।

প্রকাশিত বইসমূহ

011. সূরা হুদ

১১:১
আলিফ লাম রা = আলিফ লাম রা। কিতাবুন উহকিমাত আয়াতুহু = ইহা একটি কিতাব, মুহকাম/ সুপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে (/মানসুখ হওয়া থেকে রক্ষা করা হয়েছে) ইহার আয়াতসমূহ। ছুম্মা = তাছাড়া। ফুসসিলাত = উহাকে তফসীল আকারে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। মিল্লাদুন হাকীমিন খাবীরিন = সেই সত্তার পক্ষ থেকে যিনি হাকীম (= যিনি বিজ্ঞতার অধিকারী) ও খাবীর (= যিনি খবর রাখেন)।

আলিফ লাম রা। ইহা একটি কিতাব, মুহকাম/ সুপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে (/মানসুখ হওয়া থেকে রক্ষা করা হয়েছে) ইহার আয়াতসমূহ, তাছাড়া উহাকে তফসীল আকারে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে; সেই সত্তার পক্ষ থেকে যিনি হাকীম (= যিনি বিজ্ঞতার অধিকারী) ও খাবীর (= যিনি খবর রাখেন)।

১১:২
আল্লা তা’বুদু ইল্লাল্লাহা = কারো ইবাদাত/ দাসত্ব করো না, আল্লাহর ছাড়া। ইন্নানী = নিশ্চয় আমি। লাকুম = তোমাদের জন্য। মিনহু = তাঁর পক্ষ থেকে। নাযীরুন ওয়া বাশীরুন = নাজির/ সতর্ককারী ও বাশীর/ সুসংবাদদাতা।

কারো ইবাদাত/ দাসত্ব করো না, আল্লাহর ছাড়া। নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য তাঁর পক্ষ থেকে (= আল্লাহর পক্ষ থেকে) নাজির/ সতর্ককারী ও বাশীর/ সুসংবাদদাতা।

১১:৩
ওয়া = আর। আনিছতাগফিরূ = তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো। রব্বাকুম = তোমাদের রবের কাছে। ছুম্মা = তারপর। তূবূ = তাওবা করো। ইলাইহি = তাঁর দিকে। ইউমাত্তিউকুম = তিনি তোমাদেরকে উপভোগ করতে দিবেন। মাতাআন হাসানান = উত্তম ভোগসামগ্রী। ইলা আজালিম মুসাম্মা = আজালিম মুসাম্মা/ নির্ধারিত শেষ সময়সীমা পর্যন্ত। ওয়া = আর। ইউ’তি = তিনি দিবেন। কুল্লা যী ফাদলিন = প্রত্যেক অনুগ্রহ পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিকে। ফাদলাহু = তাঁর অনুগ্রহ। ওয়া = আর। ইন = যদি। তাওয়াল্লাও = তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। ফাইন্নী = তাহলে নিশ্চয়। আখাফু = আমি ভয় করি। আলাইকুম = তোমাদের উপর। আযাবা ইয়াওমিন কাবীরিন = ইয়াওমুন কাবীরের/ বড় দিবসের আযাবের/ শাস্তির ব্যাপারে।

আর তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো তোমাদের রবের কাছে তারপর তাওবা করো তাঁর দিকে। তিনি তোমাদেরকে উপভোগ করতে দিবেন উত্তম ভোগসামগ্রী আজালিম মুসাম্মা/ নির্ধারিত শেষ সময়সীমা পর্যন্ত। আর তিনি দিবেন প্রত্যেক অনুগ্রহ পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিকে তাঁর অনুগ্রহ। আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তাহলে নিশ্চয় আমি ভয় করি তোমাদের উপর ইয়াওমুন কাবীরের/ বড় দিবসের আযাবের/ শাস্তির ব্যাপারে।

১১:৪
ইলাল্লাহি = আল্লাহরই কাছে। মারজিউকুম = তোমাদের ফিরে যাবার স্থান। ওয়া = আর। হুয়া = তিনি। আলা কুল্লি সাইয়িন ক্বাদীরিন = সকল সত্তা ও বিষয়ের উপর প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী।

আল্লাহরই কাছে তোমাদের ফিরে যাবার স্থান। আর তিনি সকল সত্তা ও বিষয়ের উপর প্রাকৃতিক আইন নির্ধারণকারী ও সর্বশক্তিমান নিয়ন্ত্রণকারী।

১১:৫
আলা = জেনে রাখো। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। ইয়াছনূনা সুদূরাহুম = তাদের ‘মস্তিষ্ককে দ্বিভাঁজ করে’/ মস্তিষ্কে বিদ্বেষ সংরক্ষিত রাখে। লিইয়াছতাখফূ = যেন তা গোপন করতে পারে। মিনহু = তাঁর থেকে। আলা = জেনে রাখো। হীনা = যখন। ইয়াছতাগশূনা = তারা নিজেদেরকে আচ্ছাদিত করে। ছিয়াবাহুম = তাদের বাড়তি পোশাক দিয়ে। ইয়া’লামু = তখনও তিনি জানেন দেখেন। মা = যা। ইউছিররূনা = তারা গোপন করে রাখে। ওয়া = আর। মা = যা। ইউ’লিনূনা = তারা প্রকাশ করে রাখে। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। আলীমুম বিযাতিছ ছুদূরি = পরিজ্ঞাত আছেন সদরসমূহের/ মস্তিষ্কসমূহের ভাবধারা সম্পর্কে।

জেনে রাখো, নিশ্চয় তারা তাদের ‘মস্তিষ্ককে দ্বিভাঁজ করে’/ মস্তিষ্কে বিদ্বেষ সংরক্ষিত রাখে যেন তা গোপন করতে পারে তাঁর থেকে। জেনে রাখো, যখন তারা নিজেদেরকে আচ্ছাদিত করে তাদের বাড়তি পোশাক দিয়ে, তখনও তিনি জানেন দেখেন যা তারা গোপন করে রাখে আর যা তারা প্রকাশ করে রাখে। নিশ্চয় তিনি পরিজ্ঞাত আছেন সদরসমূহের/ মস্তিষ্কসমূহের ভাবধারা সম্পর্কে।

১১:৬
ওয়া = আর। মা মিন দাব্বাতিন = কোন দাব্বাত/ জীব নেই। ফিল আরদি = পৃথিবীতে। ইল্লা = এছাড়া যে। আলাল্লাহি = আল্লাহরই উপর আছে। রিযক্বুহা = উহার রিযিকের দায়িত্ব। ওয়া = আর। ইয়া’লামু = তিনি জানেন। মুছতাক্বাররাহা = তার চূড়ান্ত অবস্থান। ওয়া = আর। মুছতাওদাআহা = তার অচূড়ান্ত অবস্থান। কুল্লুন ফী কিতাবিম মুবীনিন = সবই ‘কিতাবুম মুবীনে’/ স্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ।

আর কোন দাব্বাত/ জীব নেই পৃথিবীতে, এছাড়া যে, আল্লাহরই উপর আছে উহার রিযিকের দায়িত্ব। আর তিনি জানেন তার চূড়ান্ত অবস্থান আর তার অচূড়ান্ত অবস্থান। সবই ‘কিতাবুম মুবীনে’/ স্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ।

১১:৭
ওয়া = আর। হুয়াল্লাযী = তিনিই সেই সত্তা যিনি। খালাক্বাছ ছামাওয়াতি = সৃষ্টি করেছেন আকাশমন্ডলী। ওয়াল আরদি = আর পৃথিবী। ফী ছিত্তাতিন আইয়ামিন = ছয় দিবসে (= ছয় মহাকালে)। ওয়া = আর। কানা আরশুহু = এর আগে তাঁর আরশ ছিলো। আলাল মায়ি = পানির উপর। লিইয়াবলুআকুম = যেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন। আইয়ুকুম = তোমাদের মধ্যে কে। আহছানু আমালা = কাজকর্মে অধিক উত্তম। ওয়া = আর। লাইন = নিশ্চয় যদি। ক্বুলতা = তুমি বলো। ইন্নাকুম = নিশ্চয় তোমরা। মাবউছূনা = পুনরুত্থিত হবে। মিম বা’দিল মাওতি = মৃত্যুর পরে। লাইয়াক্বূলান্নাল্লাযীনা = তাহলে তারা বলবে যারা। কাফারূ = কুফর করেছে। ইন হাযা = (বলবে) ইহা কিছু নয়। ইল্লা ছিহরুম মুবীনুন = প্রকাশ্য যাদু/ ভেল্কিবাজি ছাড়া।

আর তিনিই সেই সত্তা যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশমন্ডলী আর পৃথিবী ছয় দিবসে (= ছয় মহাকালে)। আর এর আগে তাঁর আরশ (= ক্ষমতার আসন) ছিলো পানির উপর। যেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, তোমাদের মধ্যে কে কাজকর্মে অধিক উত্তম। আর নিশ্চয় যদি তুমি বলো, ‘নিশ্চয় তোমরা পুনরুত্থিত হবে মৃত্যুর পরে’, তাহলে তারা বলবে যারা কুফর করেছে (বলবে,) ‘ইহা (= কুরআন) কিছু নয় প্রকাশ্য যাদু/ ভেল্কিবাজি ছাড়া’।

১১:৮
ওয়া = আর। লাইন = নিশ্চয় যদি। আখখারনা = আমরা বিলম্বিত করি। আনহুমুল আযাবা = তাদের থেকে আযাব/ শাস্তি। ইলা উম্মাতিম মা’দূদাতিন = গণাগণতির একটি উম্মাত/ সময়কাল পর্যন্ত। লাইয়াক্বূলান্না = তাহলে তারা বলবে। মা ইয়াহবিছূহু = কে উহাকে আটকে রেখেছে? আলা = জেনে রাখো। ইয়াওমা = যেদিন। ইয়া’তীহিম = উহা তাদের কাছে আসবে। লাইছা মাছরূফান = তখন উহা ফেরানো যাবে না। আনহুম = তাদের থেকে। ওয়া = আর। হাক্বাবিহিম = তাদেরকে উহাই ঘিরে ধরবে। মা কানূ বিহী ইয়াছতাহযিঊনা = যে ব্যাপারে তারা ঠাট্টা করতো।

আর নিশ্চয় যদি আমরা বিলম্বিত করি তাদের থেকে আযাব/ শাস্তি গণাগণতির একটি উম্মাত/ সময়কাল পর্যন্ত; তাহলে তারা বলবে, ‘কে উহাকে আটকে রেখেছে?’ জেনে রাখো, যেদিন উহা তাদের কাছে আসবে, তখন উহা ফেরানো যাবে না তাদের থেকে। আর তাদেরকে উহাই ঘিরে ধরবে যে ব্যাপারে তারা ঠাট্টা করতো।

১১:৯
ওয়া = আর। লাইন = যদি। আযাক্বনাল ইনছানা = আমরা আস্বাদন করাই মানুষকে। মিন্না = আমাদের পক্ষ থেকে। রহমাতান = রহমত/ দয়া। ছুম্মা = তারপর। নাযা’না = আমরা উহা প্রত্যাহার করি। মিনহু = তার থেকে। ইন্নাহু = তাহলে নিশ্চয় সে হয়। লাইয়াঊছুন কাফূরুন = হতাশ ও অকৃতজ্ঞ।

আর যদি আমরা আস্বাদন করাই মানুষকে আমাদের পক্ষ থেকে রহমত/ দয়া তারপর আমরা উহা প্রত্যাহার করি তার থেকে, তাহলে নিশ্চয় সে হয় হতাশ ও অকৃতজ্ঞ।

১১:১০
ওয়া = আর। লাইন = যদি। আযাক্বনাহু = আমরা তাকে আস্বাদন করাই। না’মা বা’দা দররান = নেয়ামত, ঐ দু:খ-কষ্টের পর। মাছছাতহু = যা তাকে স্পর্শ করেছিলো। লাইয়াক্বূলান্না = তাহলে সে বলবে। যাহাবাছ ছাইয়িয়াতি = চলে গেছে বিপদসমূহ। আন্নী = আমার থেকে। ইন্নাহু = নিশ্চয় তখন সে হবে। লাফারিহুন ফাখুরুন = উৎফুল্ল/ আনন্দিত ও অহংকারী।

আর যদি আমরা তাকে আস্বাদন করাই নেয়ামত, ঐ দু:খ-কষ্টের পর যা তাকে স্পর্শ করেছিলো; তাহলে সে বলবে, ‘চলে গেছে বিপদসমূহ আমার থেকে’। নিশ্চয় তখন সে হবে উৎফুল্ল/ আনন্দিত ও অহংকারী।

১১:১১
ইল্লাল্লাযীনা = তারা ছাড়া যারা। সবারূ = সবর করেছে। ওয়া = আর। আমিলূস সালিহাতি = সালিহাত/ সৎকর্ম করেছে। উলায়িকা = তারাই এমন লোক। লাহুম = যাদের জন্য আছে। মাগফিরাতুন = ক্ষমা। ওয়া = আর। আজরুন কাবীরুন = মহাপুরস্কার।

তারা ছাড়া যারা সবর করেছে আর সালিহাত/ সৎকর্ম করেছে। তারাই এমন লোক, যাদের জন্য আছে ক্ষমা আর মহাপুরস্কার।

১১:১২
ফালাআল্লাকা তারিকুন = সুতরাং তুমি যেন পরিত্যাগকারী না হও। বা’দা মা ইউহা ইলাইকা = উহার কোন অংশকে যা ওহী করা হয়েছে তোমার প্রতি। ওয়া = আর। দয়িক্বুম বিহী = যেন সংকুচিত না করো উহার প্রতি। সদরুকা = তোমার সদর/ মস্তিষ্ক। আন = এজন্য যে। ইয়াক্বূলূ = তারা বলে। লাও লা উনযিলা = কেন নাযিল হয়নি। আলাইহি = তার উপর। কানযুন = ধনভান্ডার। আও = অথবা। জাআ = আসেনি। মাআহু = তার সাথে। মালাকুন = কোন মালাক/ ফেরেশতা। ইন্নামা = নিশ্চয়। আনতা = তুমি। নাযীরুন = নাযীর/ সতর্ককারী। ওয়াল্লাহু = আর আল্লাহ। আলা কুল্লি সাইয়িন = সকল বিষয়ের উপর। ওয়াকীলুন = উকিল/ কর্মবিধায়ক।

সুতরাং তুমি যেন পরিত্যাগকারী না হও উহার কোন অংশকে যা ওহী করা হয়েছে তোমার প্রতি, আর যেন সংকুচিত না করো উহার প্রতি তোমার সদর/ মস্তিষ্ক এজন্য যে, তারা বলে, ‘কেন নাযিল হয়নি তার উপর ধনভান্ডার অথবা আসেনি তার সাথে কোন মালাক/ ফেরেশতা?’ নিশ্চয় তুমি নাযীর/ সতর্ককারী। আর আল্লাহ সকল বিষয়ের উপর উকিল/ কর্মবিধায়ক।

১১:১৩
আম = নাকি। ইয়াক্বূলূনাফতারাহু = তারা বলে, ‘সে (= মুহাম্মাদ) ইহা রচনা করেছে’। ক্বুল = বলো। ফা’তূ = তাহলে তোমরা নিয়ে এসো। বিআশরি সূরিম মিছলিহী মুফতারাইয়াতিন = দশটি সূরা উহার অনুরূপ, যা হবে তোমাদের স্বরচিত। ওয়াদঊ = আর তোমরা আহবান করো। মানিছতাতা’তুম = যাদেরকে তোমরা (আহবান করতে) পার। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে। ইন = যদি। কুনতুম = তোমরা হও। সদিক্বীনা = সত্যবাদী।

নাকি তারা বলে, ‘সে (= মুহাম্মাদ) ইহা রচনা করেছে’। বলো, ‘তাহলে তোমরা নিয়ে এসো দশটি সূরা উহার অনুরূপ, যা হবে তোমাদের স্বরচিত। আর তোমরা আহবান করো যাদেরকে তোমরা (আহবান করতে) পার, আল্লাহকে বাদ দিয়ে; যদি তোমরা হও সত্যবাদী’।

১১:১৪
ফাইল্লাম ইয়াছতাজীবূ লাকুম = তারপর যদি তারা তোমাদের ডাকে সাড়া না দেয়। ফা’লামূ = তাহলে জেনে রাখো। আন্নামা = নিশ্চয়। উনযিলা = উহা নাযিল করা হয়েছে। বিইলমিল্লাহি = আল্লাহর জ্ঞানের ভিত্তিতে। ওয়া আন = আরো এই যে। লা ইলাহা ইল্লা হুয়া = কোন ইলাহ নেই তিনি ছাড়া। ফাহাল আনতুম = সুতরাং তোমরা কি। মুসলিমূনা = মুসলিম হবে?

তারপর যদি তারা তোমাদের ডাকে সাড়া না দেয়, তাহলে জেনে রাখো, নিশ্চয় উহা নাযিল করা হয়েছে আল্লাহর জ্ঞানের ভিত্তিতে; আরো এই যে, কোন ইলাহ নেই তিনি ছাড়া। সুতরাং তোমরা কি মুসলিম হবে?

১১:১৫
মান কানা = যে কেউ। ইউরীদুল হায়াতাদ দুনইয়া= এরাদা/ ইচ্ছা করে হায়াতুদ দুনিয়া/ পার্থিব জীবন পেতে। ওয়া = আর। যীনাতাহা = উহার যীনাত/ চাকচিক্যতা পেতে। নুওয়াফফি = আমরা পূর্ণ করে দেবো। ইলাইহিম = তাদেরকে। আ’মালাহুম ফীহা = উহাতে তাদের আমলসমূহ। ওয়া = আর। হুম = তাদেরকে। ফীহা = উহাতে। লা ইউবখাছূনা = কম দেয়া হবে না।

যে কেউ এরাদা/ ইচ্ছা করে হায়াতুদ দুনিয়া/ পার্থিব জীবন পেতে আর উহার যীনাত/ চাকচিক্যতা পেতে, আমরা পূর্ণ করে দেবো তাদেরকে উহাতে তাদের আমলসমূহ আর তাদেরকে উহাতে কম দেয়া হবে না।

১১:১৬
উলায়িকাল্লাযীনা = তারাই এমন লোক। লাইছা লাহুম = যাদের জন্য নেই। ফিল আখিরাতি = আখিরাতে কোন কিছু। ইল্লান্নারা = (জাহান্নামের) আগুন ছাড়া। ওয়া = আর। হাবিতা = বরবাদ হয়ে গেছে। মা = যা। সনাউ ফীহা = তারা উহাতে বানিয়েছে। ওয়া = আর। বাতিলুম মা কানূ ইয়া’মালূনা = বাতিল হয়ে গেছে যেসব আমল তারা করতো।

তারাই এমন লোক যাদের জন্য নেই আখিরাতে কোন কিছু, (জাহান্নামের) আগুন ছাড়া। আর বরবাদ হয়ে গেছে যা তারা উহাতে বানিয়েছে। আর বাতিল হয়ে গেছে যেসব আমল তারা করতো।

১১:১৭
আফামান = তবে কি যে। কানা = থাকে। আলা বাইয়িনাতিম মির রব্বিহী = তার রবের পক্ষ থেকে আসা বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণের (= কুরআনের) উপর প্রতিষ্ঠিত। ওয়া = আর। ইয়াতলূহু = উহা (= কুরআন) তিলাওয়াত করে। সাহিদুম মিনহু = তাঁর পক্ষ থেকে এক সাক্ষী (= মুহাম্মাদ)। ওয়া = আর। মিন ক্বাবলিহী = তার আগে এসেছে। কিতাবু মূসা = মূসার কিতাব। ইমামান = ইমাম (= যা সামনে রাখা হয় এমন)। ওয়া = ও। রহমাতান = রহমত হিসাবে। উলায়িকা = তারাই। ইউ’মিনূনা = ঈমান/ বিশ্বাস করে। বিহী = উহার প্রতি। ওয়া = আর। মান = যে। ইয়াকফুর = কুফর করে। বিহী = উহার প্রতি। মিনাল আহযাবি = দলসমূহের/ মানবসমাজের মধ্য থেকে। ফান্নারু = সুতরাং (জাহান্নামের) আগুনই। মাওয়িদুহু = তার জন্য প্রতিশ্রুত স্থান। ফালা তাকু = সুতরাং তুমি থেকো না। ফী মিরইয়াতিন = সন্দেহের মধ্যে। মিনহু = উহার ব্যাপারে। ইন্নাহুল হাক্বক্বু = নিশ্চয় উহা সত্য। মির রব্বিকা = তোমার রবের পক্ষ থেকে। ওয়ালাকিন্না = কিন্তু। আকছারান্নাছি = অধিকাংশ মানুষ। লা ইউ’মিনূনা = ঈমান/ বিশ্বাস করে না।

তবে কি যে থাকে তার রবের পক্ষ থেকে আসা বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণের (= কুরআনের) উপর প্রতিষ্ঠিত আর উহা (= কুরআন) তিলাওয়াত করে তাঁর পক্ষ থেকে এক সাক্ষী (= মুহাম্মাদ) আর তার আগে এসেছে মূসার কিতাব ইমাম (= যা সামনে রাখা হয় এমন) ও রহমত হিসাবে, (ফলত:) তারাই ঈমান/ বিশ্বাস করে উহার প্রতি; আর যে কুফর করে উহার প্রতি, দলসমূহের/ মানবসমাজের মধ্য থেকে, সুতরাং (জাহান্নামের) আগুনই (হয়ে যায়) তার জন্য প্রতিশ্রুত স্থান; (এ দুজন কি সমান হতে পারে?) সুতরাং তুমি থেকো না সন্দেহের মধ্যে উহার ব্যাপারে। নিশ্চয় উহা সত্য তোমার রবের পক্ষ থেকে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ ঈমান/ বিশ্বাস করে না।

১১:১৮
ওয়া = আর। মান আযলামু মিম্মানিফতারা আলাল্লাহি কাযিবান = তার চেয়ে বড় জালিম কে হতে পারে যে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে। উলায়িকা = ঐসব লোককে। ইউ’রদূনা = হাযির করা হবে। আলা রব্বিহিম = তাদের রবের কাছে। ওয়া = আর। ইয়াক্বুর আশহাদু = সাক্ষীরা বলবে। হাউলায়িল্লাযীনা = তারাই ঐসব লোক যারা। কাযাবূ আলা রব্বিহিম = তাদের রবের উপর মিথ্যা আরোপ করেছে। আলা = জেনে রাখো। লা’নাতুল্লাহি = আল্লাহর লা’নত পড়বে। আলায যলিমীনা = যালিমদের উপর।

আর তার চেয়ে বড় জালিম কে হতে পারে যে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে? ঐসব লোককে হাযির করা হবে তাদের রবের কাছে। আর সাক্ষীরা বলবে, ‘তারাই ঐসব লোক যারা তাদের রবের উপর মিথ্যা আরোপ করেছে’। জেনে রাখো, আল্লাহর লা’নত পড়বে যালিমদের উপর।

১১:১৯
আল্লাযীনা = যারা। ইয়াসুদ্দূনা = বাধা দেয়। আন সাবীলিল্লাহি = সাবীলিল্লাহ/ আল্লাহর পথ থেকে। ওয়া = আর। ইয়াবগূনাহা = উহাতে তালাশ করে। ইওয়াজা = বক্রতা। ওয়া = আর। হুম = তারা। বিল আখিরাতি = আখিরাতের প্রতি। হুম কাফিরূনা = কাফির/ অবিশ্বাসী।

যারা বাধা দেয় সাবীলিল্লাহ/ আল্লাহর পথ থেকে আর উহাতে তালাশ করে বক্রতা। আর তারা আখিরাতের প্রতি কাফির/ অবিশ্বাসী।

১১:২০
উলায়িকা = ঐসব লোক। লাম ইয়াকূনূ = সক্ষম ছিলো না। মু’জিযীনা ফিল আরদি = পৃথিবীতে আল্লাহকে অক্ষম করতে। ওয়া = আর। মা কানা লাহুম = তাদের জন্য ছিলো না। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহ ছাড়া। মিন আওলিয়াআ = কোন ওলি/ অভিভাবক। ইউদআফু = দ্বিগুণ করা হবে। লাহুমুল আযাবু = তাদের জন্য আযাব/ শাস্তি। মা কানূ ইয়াছতাতিঊনাছ ছামআ = তারা সক্ষম ছিলো না শুনতে। ওয়া = আর। মা কানূ = তারা সক্ষম ছিলো না। ইউবসিরূনা = দেখতে।

ঐসব লোক সক্ষম ছিলো না পৃথিবীতে আল্লাহকে অক্ষম করতে। আর তাদের জন্য ছিলো না আল্লাহ ছাড়া কোন ওলি/ অভিভাবক। দ্বিগুণ করা হবে তাদের জন্য আযাব/ শাস্তি। তারা সক্ষম ছিলো না শুনতে আর তারা সক্ষম ছিলো না দেখতে।

১১:২১
উলায়িকাল্লাযীনা = তারাই ঐসব লোক যারা। খাছিরূ = ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আনফুসাহুম = তাদের নিজেদেরকে। ওয়া = আর। দল্লা = উধাও হয়ে গেছে। আনহুম = তাদের থেকে। মা কানূ ইয়াফতারূনা = যা তারা রচনা করতো।

তারাই ঐসব লোক যারা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তাদের নিজেদেরকে আর উধাও হয়ে গেছে তাদের থেকে যা তারা রচনা করতো।

১১:২২
লা জারামা = কোন সন্দেহ নেই। আন্নাহুম = যে, তারাই। ফিল আখিরাতি = আখিরাতে। হুমুল খাছিরূনা = ক্ষতিগ্রস্ত।

কোন সন্দেহ নেই যে, তারাই আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত।

১১:২৩
ইন্নাল্লাযীনা = নিশ্চয় যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ওয়া = আর। আমিলুস সালিহাতি = সালিহাত/ সৎকর্ম করেছে। ওয়া = আর। আখবাতূ ইলা রব্বিহিম = তারা বিনয়ী হয়েছে তাদের রবের প্রতি। উলায়িকা = ঐসব লোকই। আসহাবুল জান্নাতি = আসহাবুল জান্নাত (= যারা জান্নাতের পুরস্কার পাবে)। হুম = তারা। ফীহা = তাতে। খালিদূনা = স্থায়ী হবে।

নিশ্চয় যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে আর সালিহাত/ সৎকর্ম করেছে আর তারা বিনয়ী হয়েছে তাদের রবের প্রতি, ঐসব লোকই ‘আসহাবুল জান্নাত’ (= যারা জান্নাতের পুরস্কার পাবে)। তারা তাতে স্থায়ী হবে।

১১:২৪
মাছালুল ফারিক্বাইনি = দুপক্ষের দৃষ্টান্ত। কালআ’মা = যেমন একজন অন্ধ। ওয়াল আসাম্মি = ও বধির। ওয়াল বাসীরি = আরেকজন দৃষ্টিমান। ওয়াছ ছামীয়ি = ও শ্রবণশীল। হাল ইয়াছতাভিয়ানি মাছালান = এ দুপক্ষের দৃষ্টান্ত কি সমান হয়? আফালা তাযাক্কারূনা = তোমরা কি যিকির/ শিক্ষাগ্রহণ করবে না?

দুপক্ষের দৃষ্টান্ত যেমন একজন অন্ধ ও বধির আরেকজন দৃষ্টিমান ও শ্রবণশীল। এ দুপক্ষের দৃষ্টান্ত কি সমান হয়? তোমরা কি যিকির/ শিক্ষাগ্রহণ করবে না?

১১:২৫
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। আরছালনা = আমরা প্রেরণ করেছি। নূহান = নূহকে। ইলা ক্বাওমিহী = তার কওমের কাছে। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। লাকুম = তোমাদের জন্য। নাযীরুম মুবীন = নাযীরুম মুবীন/ প্রকাশ্য সতর্ককারী।

আর নিশ্চয় আমরা প্রেরণ করেছি নূহকে তার কওমের কাছে। (সে বলেছে), ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য নাযীরুম মুবীন/ প্রকাশ্য সতর্ককারী’।

১১:২৬
আল্লা তা’বুদূ ইল্লাল্লাহা = তোমরা কারো ইবাদাত/ দাসত্ব করো না, আল্লাহর ছাড়া। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। আখাফূ = ভয় করি। আলাইকুম = তোমাদের উপর। আযাবা ইয়াওমিন আলীমিন = ইয়াওমুন আলীমের/ কষ্টদায়ক দিনের শাস্তির ব্যাপারে।

তোমরা কারো ইবাদাত/ দাসত্ব করো না, আল্লাহর ছাড়া। নিশ্চয় আমি ভয় করি তোমাদের উপর ‘ইয়াওমুন আলীমের’/ কষ্টদায়ক দিনের শাস্তির ব্যাপারে।

১১:২৭
ফাক্বালাল মালাউল্লাযীনা কাফারূ মিন ক্বাওমিহী = তারপর তার কওমের মধ্য থেকে যারা কুফর করেছে তাদের প্রধানগণ বলেছে। মা নারাকা = আমরা তোমাকে দেখছি না। ইল্লা বাশারাম মিছলানা = আমাদের মতো একজন মানুষ ছাড়া অন্য কিছু। ওয়া = আর। মা নারাকাত্তাবাআকা = আমরা তোমার ইত্তেবা/ অনুসরণ করতে দেখছি না। ইল্লাল্লাযীনা হুম আরাযিলুনা = তাদেরকে ছাড়া যারা আমাদের নিম্নশ্রেণীর লোক। বাদিয়ার র’য়ি = যারা অপরিপক্ক মতের অধিকারী। ওয়া = আর। মা নারা লাকুম = আমরা তোমাদেরকে দেখছি না। আলাইনা = আমাদের উপর। মিন ফাদলিন = কোন শ্রেষ্ঠত্বে। বাল = বরং। নাযুন্নুকুম = আমরা তোমাদেরকে মনে করি। কাযিবীনা = মিথ্যাবাদী।

তারপর তার কওমের মধ্য থেকে যারা কুফর করেছে তাদের প্রধানগণ বলেছে, ‘আমরা তোমাকে দেখছি না আমাদের মতো একজন মানুষ ছাড়া অন্য কিছু। আর আমরা তোমার ইত্তেবা/ অনুসরণ করতে দেখছি না তাদেরকে ছাড়া যারা আমাদের নিম্নশ্রেণীর লোক, যারা অপরিপক্ক মতের অধিকারী। আর আমরা তোমাদেরকে দেখছি না আমাদের উপর কোন শ্রেষ্ঠত্বে। বরং আমরা তোমাদেরকে মনে করি মিথ্যাবাদী।

১১:২৮
ক্বলা = সে (= নূহ) বলেছে। ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। আরাআইতুম = তোমরা কি ভেবে দেখেছো। ইন = যদি। কুনতু = আমি হই। আলা বাইয়িনাতিম মির রব্বী = আমার রবের পক্ষ থেকে আসা বাইয়িনাতের/ স্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত। ওয়া = আর। আতানী = তিনি আমাকে দিয়েছেন। রহমাতাম মিন ইনদিহি = তাঁর নিজের পক্ষ থেকে রহমত/ অনুগ্রহ। ফাউম্মিয়াত = আর অন্ধত্ব চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আলাইকুম = তোমাদের উপর। আনুলযিমুকুমূহা = আমরা কি তোমাদেরকে উহা চাপিয়ে দিতে পারি। ওয়া = এ সত্ত্বেও যে। আনতুম = তোমরা। লাহা = উহাকে। কারিহূনা = অপছন্দকারী।

সে (= নূহ) বলেছে, ‘হে আমার কওম, তোমরা কি ভেবে দেখেছো, যদি আমি হই আমার রবের পক্ষ থেকে আসা বাইয়িনাতের/ স্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত আর তিনি আমাকে দিয়েছেন তাঁর নিজের পক্ষ থেকে রহমত/ অনুগ্রহ, আর অন্ধত্ব চাপিয়ে দেয়া হয়েছে তোমাদের উপর। আমরা কি তোমাদেরকে উহা চাপিয়ে দিতে পারি, এ সত্ত্বেও যে, তোমরা উহাকে অপছন্দকারী?’

১১:২৯
ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। লা আছআলুকুম = আমি তোমাদের কাছে চাই না। আলাইহি = উহার ব্যাপারে/ বিনিময়ে। মালান = কোন মালসম্পদ। ইন আজরিয়া = আমার পারিশ্রমিক নেই। ইল্লা আলাল্লাহি = আল্লাহর কাছে ছাড়া। ওয়া = আর। মা আনা = আমি নই। বিতরিদিল্লাযীনা = তাদেরকে বিতাড়নকারী যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। মুলাক্বূ = (পর্দার আড়াল থেকে) মোলাকাত করবে। রব্বিহিম = তাদের রবের সাথে। ওয়ালাকিন্নী = কিন্তু আমি। আরাকুম = তোমাদেরকে দেখছি। ক্বাওমান তাজহালূনা = জাহেল কওম হিসাবে।

হে আমার কওম, আমি তোমাদের কাছে চাই না উহার ব্যাপারে/ বিনিময়ে কোন মালসম্পদ। আমার পারিশ্রমিক নেই আল্লাহর কাছে ছাড়া। আর আমি নই তাদেরকে বিতাড়নকারী যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। নিশ্চয় তারা (পর্দার আড়াল থেকে) মোলাকাত করবে তাদের রবের সাথে। কিন্তু আমি তোমাদেরকে দেখছি জাহেল কওম হিসাবে।

১১:৩০
ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। মাইঁ ইয়ানসুরুনী = কে আমাকে সাহায্য করবে। মিনাল্লাহি = আল্লাহর শাস্তি থেকে। ইন = যদি। তরাত্তুহুম = আমি তাদেরকে তাড়িয়ে দিই। আফালা তাযাক্কারূনা = তোমরা কি যিকির/ শিক্ষাগ্রহণ করবে না?

হে আমার কওম, কে আমাকে সাহায্য করবে আল্লাহর শাস্তি থেকে যদি আমি তাদেরকে তাড়িয়ে দিই? তোমরা কি যিকির/ শিক্ষাগ্রহণ করবে না?

১১:৩১
ওয়া = আর। লা আক্বূলু লাকুম = আমি তোমাদেরকে বলি না। ইনদী = আমার কাছে আছে। খাজায়িনুল্লাহি = আল্লাহর ধনভান্ডার। ওয়া = আর। লা আ’লামুল গায়বা = আমি গায়েবও জানি না। ওয়া = আর। লা আক্বূলু = আমি বলি না। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। মালাকুন = মালাক/ ফেরেশতা। ওয়া = আর। লা আক্বূলু = আমি বলি না। লিল্লাযীনা = তাদের প্রসঙ্গে যাদেরকে। তাযদারী = নিম্নশ্রেণী হিসাবে দেখে। আ’ইউনুকুম = তোমাদের চোখগুলো। লাইঁ ইউ’তিয়াহুমুল্লাহু খায়রান = (এ কথা যে,) আল্লাহ তাদেরকে দেবেন না কোন কল্যাণ। আল্লাহু আ’লামু = আল্লাহ জানেন। বিমা = ঐ ব্যাপার যা আছে। ফী আনফুসিহিম = তাদের নফসসমূহের মধ্যে। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। ইযাল লামিনায যলিমীনা = (তা বললে) তখন যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবো।

“আর আমি তোমাদেরকে বলি না আমার কাছে আছে আল্লাহর ধনভান্ডার আর আমি গায়েবও জানি না আর আমি বলি না, ‘নিশ্চয় আমি মালাক/ ফেরেশতা’, আর আমি বলি না তাদের প্রসঙ্গে যাদেরকে নিম্নশ্রেণী হিসাবে দেখে তোমাদের চোখগুলো, (এ কথা যে,) ‘আল্লাহ তাদেরকে দেবেন না কোন কল্যাণ’, আল্লাহ জানেন ঐ ব্যাপার যা আছে তাদের নফসসমূহের মধ্যে, নিশ্চয় আমি (তা বললে) তখন যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবো”।

১১:৩২
ক্বলূ = তারা বলেছে। ইয়া নূহু = হে নূহ। ক্বাদ = নিশ্চয়। জাদালতানা = তুমি আমাদের সাথে বিতর্ক করছো। ফাআকছারতা = তারপর তুমি অনেক বেশি করেছো। জিদালানা = আমাদের সাথে বিতর্ক করেছো। ফা’তিনা = সুতরাং তুমি উহা নিয়ে এসো। বিমা = যা সম্পর্কে। তায়িদুনা = তুমি আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছো। ইন = যদি। কুনতা = তুমি হও। মিনাস সদিক্বীনা = সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।

তারা বলেছে, ‘হে নূহ, নিশ্চয় তুমি আমাদের সাথে বিতর্ক করছো। তারপর তুমি অনেক বেশি করেছো। আমাদের সাথে বিতর্ক করেছো। সুতরাং তুমি উহা নিয়ে এসো যা সম্পর্কে তুমি আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছো, যদি তুমি হও সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত’।

১১:৩৩
ক্বলা = সে (= নূহ) বলেছে। ইন্নামা = নিশ্চয়। ইয়া’তীকুম বিহিল্লাহু = উহা দেবেন আল্লাহ। ইন = যদি। শাআ = তিনি ইচ্ছা করেন। ওয়া = আর। মা আনতুম বিমু’জিযীনা = তোমরা উহা ঠেকাতে পারবে না।

সে (= নূহ) বলেছে, ‘নিশ্চয় উহা দেবেন আল্লাহ, যদি তিনি ইচ্ছা করেন। আর তোমরা উহা ঠেকাতে পারবে না।

১১:৩৪
ওয়া = আর। লা ইয়ানফাউকুম = তোমাদেরকে উপকার দেবে না। নুসহী = আমার কল্যাণ কামনা। ইন = যদি। আরাত্তু = আমি এরাদা/ ইচ্ছা করি। আন = যে। আনসাহা = আমি কল্যাণ কামনা করবো। লাকুম = তোমাদের জন্য। ইন = যদি। কানাল্লাহু ইউরীদু = আল্লাহ এরাদা/ ইচ্ছা করেন। আইঁ ইউগভিয়াকুম = তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে। হুয়া = তিনিই। রব্বুকুম = তোমাদের রব। ওয়া = আর। ইলাইহি = তাঁরই কাছে। তুরজাঊনা = তোমরা ফিরে যাবে।

আর তোমাদেরকে উপকার দেবে না আমার কল্যাণ কামনা যদি আমি এরাদা/ ইচ্ছা করি যে, আমি কল্যাণ কামনা করবো তোমাদের জন্য; যদি আল্লাহ এরাদা/ ইচ্ছা করেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে। তিনিই তোমাদের রব। আর তাঁরই কাছে তোমরা ফিরে যাবে’।

১১:৩৫
আম = নাকি। ইয়াক্বূলূনাফতারাহু = তারা বলে, ‘সে (= মুহাম্মাদ) ইহা রচনা করেছে’?। ক্বুল = বলো। ইনিফতারাইতুহু = যদি আমি উহা রচনা করি। ফাআলাইয়া = তাহলে আমারই উপর বর্তাবে। ইজরামী = আমার অপরাধ। ওয়া = আর। আনা = আমি। বারীউম মিম্মা = দায়মুক্ত তা থেকে। তুজরিমূনা = যে অপরাধ তোমরা করছো।

নাকি তারা বলে, ‘সে (= মুহাম্মাদ) ইহা রচনা করেছে’?। বলো, ‘যদি আমি উহা রচনা করি তাহলে আমারই উপর বর্তাবে আমার অপরাধ। আর আমি দায়মুক্ত তা থেকে যে অপরাধ তোমরা করছো’।

১১:৩৬
ওয়া = আর। ঊহিয়া = ওহী করা হয়েছে। ইলা নূহিন = নূহের প্রতি। আন্নাহু = এই যে। লাইঁ ইউ’মিনা = কখনো কেউ ঈমান/ বিশ্বাস করবে না। মিন ক্বাওমিকা = তোমার কওম থেকে। ইল্লা মান = সে সে ছাড়া, যে যে। ক্বাদ আমানা = ইতোপূর্বে ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ফালা তাবতায়িছ = সুতরাং তুমি মনোকষ্ট পেয়ো না। বিমা কানূ ইয়াফআলূনা = তারা যা করে তার কারণে।

আর ওহী করা হয়েছে নূহের প্রতি, এই যে, “কখনো কেউ ঈমান/ বিশ্বাস করবে না তোমার কওম থেকে, সে সে ছাড়া, যে যে ইতোপূর্বে ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। সুতরাং তুমি মনোকষ্ট পেয়ো না তারা যা করে তার কারণে”।

১১:৩৭
ওয়াসনায়িল ফুলকা = সুতরাং নির্মাণ করো একটি নৌযান। বিআ’ইউনিনা = আমাদের চোখের সামনে। ওয়া = আর। ওয়াহইয়া = আমাদের ওহী অনুসারে। ওয়া = আর। লা তুখাতিবনী = আমাকে কোন অনুরোধ করো না। ফিল্লাযীনা = তাদের পক্ষে যারা। যলামূ = যুলুম করেছে। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। মাগরক্বূনা = ডুবে যাবে।

“সুতরাং নির্মাণ করো একটি নৌযান আমাদের চোখের সামনে আর আমাদের ওহী অনুসারে। আর আমাকে কোন অনুরোধ করো না তাদের পক্ষে যারা যুলুম করেছে। নিশ্চয় তারা ডুবে যাবে”।

১১:৩৮
ওয়া = আর। ইয়াসনাউল ফুলকা = সে নির্মাণ করে একটি নৌযান। ওয়া = আর। কুল্লামা = যখনই। মাররা আলাইহি = তার পাশ দিয়ে যেতো। মালাউম মিন ক্বাওমিহী = তার কওমের প্রধানগণ। ছাখিরূ = তারা ঠাট্টা করতো। মিনহু = উহার ব্যাপারে। ক্বলা = সে বলেছে। ইন = যদি। তাছখারু = তোমরা ঠাট্টা করো। মিন্না = আমাদেরকে। ফাইন্না = তাহলে আমরাও। নাছখারু = ঠাট্টা করছি। মিনকুম = তোমাদেরকে। কামা = যেমন। তাছখারূনা = তোমরা ঠাট্টা করছো।

আর সে নির্মাণ করে একটি নৌযান। আর যখনই তার পাশ দিয়ে যেতো তার কওমের প্রধানগণ, তারা ঠাট্টা করতো উহার ব্যাপারে। সে বলেছে, ‘যদি তোমরা ঠাট্টা করো আমাদেরকে, তাহলে আমরাও ঠাট্টা করছি তোমাদেরকে, যেমন তোমরা ঠাট্টা করছো’।

১১:৩৯
ফাছাওফা = সুতরাং শীঘ্রই। তা’লামূনা = তোমরা জানবে। মান = কে সে। ইয়া’তীহি = যার উপর আসবে। আযাবুই ইউখযীহি = এমন আযাব/ শাস্তি যা তাকে লাঞ্চিত করবে। ওয়া = আর। ইয়াহিল্লু = আপতিত হবে। আলাইহি = তার উপর। আযাবুম মুক্বীমুন = আযাবুম মুক্বীম/ স্থায়ী শাস্তি।
সুতরাং শীঘ্রই তোমরা জানবে কে সে যার উপর আসবে এমন আযাব/ শাস্তি যা তাকে লাঞ্চিত করবে আর আপতিত হবে তার উপর আযাবুম মুক্বীম/ স্থায়ী শাস্তি।

১১:৪০
হাত্তা = শেষ পর্যন্ত। ইযা = যখন। জাআ = এসেছে। আমরুনা = আমাদের আদেশ। ওয়া = আর। ফারাত তানূরু = চুলা উথলে উঠেছে। ক্বুলনাহমিল = আমরা বলেছি, ‘বহন করাও/ উঠিয়ে নাও। ফীহা = উহাতে (= নৌযানে)। মিন কুল্লি যাওজায়নিছনাইনি = প্রত্যেক (প্রাণীর) দুই জোড়া (নর ও নারী)। ওয়া = আর। আহলাকা = তোমার আহলকে/ পরিবারকে। ইল্লা মান ছাবাকা = তাকে তাকে ছাড়া। ছাবাক্বা আলাইহিল ক্বাওলু = আগেই স্থিরিকৃত হয়েছে যার যার বিপক্ষে হুঁশিয়ারী বাণী। ওয়া মান = আরো নাও তাদেরকে যারা। আমানা = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। ওয়া = আর। মা আমানা = ঈমান/ বিশ্বাস করেনি। মাআহু = তার সাথে। ইল্লা ক্বালীলুন = অল্পসংখ্যক ব্যক্তি ছাড়া।

শেষ পর্যন্ত যখন এসেছে আমাদের আদেশ আর চুলা উথলে উঠেছে, তখন আমরা বলেছি, ‘বহন করাও/ উঠিয়ে নাও উহাতে (= নৌযানে) প্রত্যেক (প্রাণীর) দুই জোড়া (নর ও নারী), আর তোমার আহলকে/ পরিবারকে, তাকে তাকে ছাড়া আগেই স্থিরিকৃত হয়েছে যার যার বিপক্ষে হুঁশিয়ারী বাণী, আরো নাও তাদেরকে যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে’। আর ঈমান/ বিশ্বাস করেনি তার সাথে অল্পসংখ্যক ব্যক্তি ছাড়া।

১১:৪১
ওয়া = আর। ক্বলারকাবূ = সে (= নূহ) বলেছে, ‘তোমরা আরোহন করো। ফীহা = উহাতে (= নৌযানে)। বিসমিল্লাহি মাজরিহা ওয়া মুরছাহা = ‘বিসমিল্লাহি মাজরিহা ওয়া মুরছাহা’ (আল্লাহর নামে এর গতি ও স্থিতি)। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বী = আমার রব। লাগাফূরুর রহীমুন = গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল।

আর সে (= নূহ) বলেছে, ‘তোমরা আরোহন করো উহাতে (= নৌযানে)। ‘বিসমিল্লাহি মাজরিহা ওয়া মুরছাহা’ (আল্লাহর নামে এর গতি ও স্থিতি)। নিশ্চয় আমার রব গফূর/ ক্ষমাশীল ও রহীম/ দয়াশীল’।

১১:৪২
ওয়া = আর। হিয়া = উহা। তাজরী = বয়ে যায়। বিহিম = তাদেরকে নিয়ে। ফী মাওজিন কাল জিবালি = পাহাড়সমান ঢেউয়ের মধ্যে। ওয়া = আর। নাদা = ডেকে বলেছে। নূহুনিবনাহু = নূহ তার পুত্রকে। ওয়া = আর। কানা = সে ছিলো। ফী মা’জিলিন = দূরবর্তী স্থানে। ইয়া বুনাইয়াকাব = হে আমার পুত্র, আরোহন করো। মাআনা = আমাদের সাথে। ওয়া = আর। লা তাকুন = তুমি থেকো না। মাআল কাফিরীনা = কাফিরদের সাথে।

আর উহা বয়ে যায় তাদেরকে নিয়ে পাহাড়সমান ঢেউয়ের মধ্যে। আর ডেকে বলেছে নূহ তার পুত্রকে আর সে (= নূহের পুত্র) ছিলো দূরবর্তী স্থানে; ‘হে আমার পুত্র, আরোহন করো আমাদের সাথে। আর তুমি থেকো না কাফিরদের সাথে’।

১১:৪৩
ক্বলা = সে (= নূহের পুত্র) বলেছে। ছাআভী = শীঘ্রই আমি আশ্রয় নিবো। ইলা জাবালিন = এক পাহাড়ে। ইয়া’সিমুনী = উহা আমাকে রক্ষা করবে। মিনাল মায়ি = পানি থেকে। ক্বলা = সে (= নূহ) বলেছে। লা আসিমাল ইয়াওমা = আজ কোন রক্ষাকারী/ ত্রাণকর্তা নেই। মিন আমরিল্লাহি = আল্লাহর আদেশ থেকে বাঁচাতে। ইল্লা মান = সে ছাড়া যাকে। রহিমা = তিনি রহম/ দয়া করেন। ওয়া = আর। হালা = আড়াল করে দিয়েছে। বায়নাহুমাল মাওজু = তাদের দুজনের মধ্যে। একটি ঢেউ। ফাকানা = সুতরাং সে হয়ে গেছে। মিনাল মুগরাক্বীনা = নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত।

সে (= নূহের পুত্র) বলেছে, ‘শীঘ্রই আমি আশ্রয় নিবো এক পাহাড়ে, উহা আমাকে রক্ষা করবে পানি থেকে’। সে (= নূহ) বলেছে, ‘আজ কোন রক্ষাকারী/ ত্রাণকর্তা নেই আল্লাহর আদেশ থেকে বাঁচাতে, সে ছাড়া যাকে তিনি রহম/ দয়া করেন, (অন্য কেউ রক্ষা পাবে না)। আর আড়াল করে দিয়েছে তাদের দুজনের মধ্যে একটি ঢেউ। সুতরাং সে হয়ে গেছে নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত’।

১১:৪৪
ওয়া = আর। ক্বীলা = বলা হয়েছে। ইয়া আরদুবলায়ী = ‘হে পৃথিবী, গিলে ফেলো। মাআকি = তোমার পানি। ওয়া = আর। ইয়া ছামাউ = হে আকাশ। আক্বলিয়ি = ক্ষান্ত হও। ওয়া = আর। গীদাল মাউ = পানি শুষে নেয়া হয়েছে। ওয়া = আর। ক্বুদিয়াল আমরু = ‘আমর’/ বিষয় সম্পন্ন হয়েছে। ওয়াছতাওয়াত = আর (নৌযান) স্থির হয়েছে। আলাল জূদিয়্যি = জূদি পাহাড়ের উপর। ওয়া = আর। ক্বীলা = বলা হয়েছে। বু’দান = দূর হোক। লিল ক্বাওমিয যলিমীনা = জালিম কওম।

আর বলা হয়েছে ‘হে পৃথিবী, গিলে ফেলো তোমার পানি। আর হে আকাশ, ক্ষান্ত হও’। আর পানি শুষে নেয়া হয়েছে আর ‘আমর’/ বিষয় সম্পন্ন হয়েছে। আর (নৌযান) স্থির হয়েছে জূদি পাহাড়ের উপর। আর বলা হয়েছে, ‘দূর হোক জালিম কওম’।

১১:৪৫
ওয়া = আর (তার আগে)। নাদা = ডেকেছে। নূহুর রব্বাহু = নূহ তার রবকে। ফাক্বালা = তখন সে বলেছে। রব্বি = হে আমার রব। ইন্নাবনী = নিশ্চয় আমার পুত্র। মিন আহলী = আমার আহলের/ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। ওয়া’দাকাল হাক্বক্বু = আপনার ওয়াদা সত্য। ওয়া = আর। আনতা = আপনি। আহকামুল হাকিমীনা = আহকামুল হাকিমীন/ সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক।

আর (তার আগে) ডেকেছে নূহ তার রবকে। তখন সে বলেছে, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার পুত্র আমার আহলের/ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। আর নিশ্চয় আপনার ওয়াদা সত্য। আর আপনি আহকামুল হাকিমীন/ সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক’।

১১:৪৬
ক্বলা = তিনি (= আল্লাহ) বলেছেন। ইয়া নূহু = হে নূহ। ইন্নাহু = নিশ্চয় সে। লাইছা মিন আহলিকা = তোমার আহালের/ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত নয়। ইন্নাহু = কারণ, নিশ্চয় সে। আমিলা গায়রু সালিহিন = মন্দ কাজ করেছে। ফালা তাছআলনি = সুতরাং আমার কাছে প্রার্থনা করো না। মা লাইছা লাকা বিহী ইলমুন = যে ব্যাপারে তোমার জ্ঞান নেই এমন বিষয় সম্পর্কে। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। আয়িযুকা = তোমাকে ওয়াজ/ উপদেশদান করছি। আন তাকূনা মিনাল জাহিলীনা = যেন না তুমি হও জাহিলদের অন্তর্ভুক্ত।

তিনি (= আল্লাহ) বলেছেন, ‘হে নূহ, নিশ্চয় সে তোমার আহালের/ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত নয়। কারণ, নিশ্চয় সে মন্দ কাজ করেছে। সুতরাং আমার কাছে প্রার্থনা করো না যে ব্যাপারে তোমার জ্ঞান নেই এমন বিষয় সম্পর্কে। নিশ্চয় আমি তোমাকে ওয়াজ/ উপদেশদান করছি যেন না তুমি হও জাহিলদের অন্তর্ভুক্ত’।

১১:৪৭
ক্বলা = সে (= নূহ) বলেছে। রব্বি = হে আমার রব। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। আঊযুবিকা = আপনার কাছে আশ্রয় চাই। আন = এ ব্যাপারে যে। আছআলাকা = আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করবো। মা লাইছা লী বিহী ইলমুন = যে ব্যাপারে আমার জ্ঞান নেই এমন বিষয় সম্পর্কে। ওয়া = আর। ইল্লা = যদি না। তাগফির লী = আপনি আমাকে ক্ষমা করেন। ওয়া = আর। তারহামনী = আমাকে রহমত করেন। আকুম মিনাল খাছিরীনা = তাহলে আমি হয়ে যাবো ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত।

সে (= নূহ) বলেছে, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই এ ব্যাপারে যে, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করবো যে ব্যাপারে আমার জ্ঞান নেই এমন বিষয় সম্পর্কে। আর যদি না আপনি আমাকে ক্ষমা করেন আর আমাকে রহমত করেন, তাহলে আমি হয়ে যাবো ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত’।

১১:৪৮
ক্বীলা = (প্লাবন শেষে) বলা হয়েছে। ইয়া নূহু’বিত = হে নূহ, নেমে যাও। বিছালামিম মিন্না = আমাদের পক্ষ থেকে শান্তিসহ। ওয়া = আর। বারাকাতিন আলাইকা = আর বরকত তোমার উপর। ওয়া = আর। আলা উমামিম মিম্মাম মাআকা = সে উম্মাতসমূহের উপর যারা তোমার সাথে আছে। ওয়া = আর। উমামুন = কিছু উম্মাত এমনও আছে যে। ছানুমাততিউহুম = আমরা তাদেরকে ভোগ সামগ্রী দেবো। ছুম্মা = তারপর। ইয়ামাছছুহুম = তাদেরকে স্পর্শ করবে। মিন্না = আমাদের পক্ষ থেকে। আযাবুন আলীমুন = আযাবুন আলীম/ কষ্টদায়ক শাস্তি।

(প্লাবন শেষে) বলা হয়েছে, ‘হে নূহ, নেমে যাও আমাদের পক্ষ থেকে শান্তিসহ আর আর বরকত তোমার উপর আর সে উম্মাতসমূহের উপর যারা তোমার সাথে আছে। আর কিছু উম্মাত এমনও আছে যে, আমরা তাদেরকে ভোগ সামগ্রী দেবো, তারপর তাদেরকে স্পর্শ করবে আমাদের পক্ষ থেকে আযাবুন আলীম/ কষ্টদায়ক শাস্তি’।

১১:৪৯
তিলকা = ইহা। মিন আম্বায়িল গায়বি = গায়েবের সংবাদসমূহের অন্তর্ভুক্ত। নূহিহা = আমরা উহা ওহী করেছি। ইলাইকা = তোমার প্রতি। মা কুনতা তা’লামূহা = উহা না জানতে। আনতা = তুমি। ওয়া = আর। লা = না। ক্বাওমুকা = তোমার কওম। মিন ক্বাবলু হাযা = ইহার (= এই কুরআন নাযিলের) আগে। ফাসবির = সুতরাং তুমি সবর করো। ইন্নাল আক্বিবাতা লিল মুত্তাক্বীনা = শুভ পরিণতি মুত্তাকীদেরই জন্য।

ইহা গায়েবের সংবাদসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আমরা উহা ওহী করেছি তোমার প্রতি। উহা না জানতে তুমি আর না তোমার কওম ইহার (= এই কুরআন নাযিলের) আগে। সুতরাং তুমি সবর করো। শুভ পরিণতি মুত্তাকীদেরই জন্য।

১১:৫০
ওয়া = আর। ইলা আদিন = আদের কাছ (প্রেরণ করেছি)। আখাহুম = তাদের ভাই। হূদান = হূদকে। ক্বলা = সে বলেছে। ইয়া ক্বাওমি’বুদুল্লাহা = হে আমার কওম, তোমরা ইবাদাত/ দাসত্ব করো আল্লাহর। মা লাকুম = তোমাদের জন্য নেই। মিন ইলাহিন = কোন ইলাহ। গায়রুহু = তিনি ছাড়া। ইন আনতুম ইল্লা মুফতারূনা = তোমরা নও মিথ্যা রচনাকারী ছাড়া অন্য কিছু।

আর আদের কাছ (প্রেরণ করেছি) তাদের ভাই হূদকে। সে বলেছে, ‘হে আমার কওম, তোমরা ইবাদাত/ দাসত্ব করো আল্লাহর। তোমাদের জন্য নেই কোন ইলাহ, তিনি ছাড়া। তোমরা নও মিথ্যা রচনাকারী ছাড়া অন্য কিছু।

১১:৫১
ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। লা আছআলুকুম = আমি তোমাদের কাছে চাই না। আলাইহি = উহার ব্যাপারে। আজরান = কোন পারিশ্রমিক। ইন আজরিয়া = আমার পারিশ্রমিক নেই। ইল্লা আলাল্লাযী = তাঁর কাছে ছাড়া যিনি। ফাতারানী = আমাকে সৃষ্টি করেছেন। আফালা তা’ক্বিলূনা = তোমরা কি আকল/ বিবেক-বুদ্ধি (common sense) প্রয়োগ করো না?

হে আমার কওম, আমি তোমাদের কাছে চাই না উহার ব্যাপারে কোন পারিশ্রমিক। আমার পারিশ্রমিক নেই তাঁর কাছে ছাড়া যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তোমরা কি আকল/ বিবেক-বুদ্ধি (common sense) প্রয়োগ করো না?

১১:৫২
ওয়া = আর। ইয়া ক্বাওমিছতাগফিরূ = হে আমার কওম, তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো। রব্বাকুম = তোমাদের রবের কাছে। ছুম্মা = তারপর। তূবূ = তোমরা তাওবা করো। ইলাইহি = তাঁর দিকে। ইউরছিলিছ ছামাআ = তিনিই প্রেরণ/ বর্ষণ করবেন বৃষ্টি। আলাইকুম = তোমাদের উপর। মিদরারান = মুষলধারে। ওয়া = আর। ইয়াযিদকুম = তোমাদেরকে বাড়িয়ে দিবেন। ক্বুওয়াতান = ক্বুওয়ত/ শক্তি। ইলা ক্বুওয়াতিকুম = তোমাদের ক্বুওয়তের/ শক্তির সাথে। ওয়া = আর। লা তাতাওয়াল্লাও = তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিও না। মুজরিমীনা = অপরাধী হিসাবে।

আর হে আমার কওম, তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো তোমাদের রবের কাছে। তারপর তোমরা তাওবা করো তাঁর দিকে। তিনিই প্রেরণ/ বর্ষণ করবেন বৃষ্টি তোমাদের উপর মুষলধারে। আর তোমাদেরকে বাড়িয়ে দিবেন ক্বুওয়ত/ শক্তি তোমাদের ক্বুওয়তের/ শক্তির সাথে। আর তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিও না অপরাধী হিসাবে।

১১:৫৩
ক্বলূ = তারা বলেছে। ইয়া হূদা = হে হূদ। মা জি’তানা = তুমি আমাদের কাছে আসোনি। বিবাইয়িনাতিন = বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণ সহকারে। ওয়া = আর। মা নাহনু বিতারিকী = আমরা পরিত্যাগকারী নই। আলিহাতিনা = আমাদের ইলাহদেরকে। আন ক্বাওলিকা = তোমার কথায়। ওয়া = আর। মা নাহনু = আমরা নই। লাকা = তোমার প্রতি। বিমু’মিনীনা = মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।

তারা বলেছে, ‘হে হূদ, তুমি আমাদের কাছে আসোনি বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণ সহকারে। আর আমরা পরিত্যাগকারী নই আমাদের ইলাহদেরকে তোমার কথায়। আর আমরা নই তোমার প্রতি মু’মিনীন/ বিশ্বাসী।

১১:৫৪
ইন নাক্বূলু = আমরা বলি না। ইল্লা’তারাকা = এছাড়া যে, তোমাকে আবিষ্ট করেছে। বা’দু আলিহাতিনা = আমাদের ইলাহদের মধ্য থেকে কেউ। বিছূয়িন = মন্দ দিয়ে। ক্বলা = সে বলেছে। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। উশহিদুল্লাহা = আল্লাহকে সাক্ষী রাখছি। ওয়াশহাদূ = আর তোমরাও সাক্ষী থাকো। আন্নী = নিশ্চয় আমি। বারীউম মিম্মা তুশরিকূনা = সম্পর্ক ছিন্নকারী তাদের থেকে যাদেরকে তোমরা শরিক করো।

আমরা বলি না এছাড়া যে, ‘তোমাকে আবিষ্ট করেছে আমাদের ইলাহদের মধ্য থেকে কেউ মন্দ দিয়ে’। সে বলেছে, ‘নিশ্চয় আমি আল্লাহকে সাক্ষী রাখছি আর তোমরাও সাক্ষী থাকো। নিশ্চয় আমি সম্পর্ক ছিন্নকারী তাদের থেকে যাদেরকে তোমরা শরিক করো’।

১১:৫৫
মিন দূনিহী = তাঁকে বাদ দিয়ে। ফাকীদূনী = সুতরাং তোমরা আমার বিরুদ্ধে কায়দাকৌশল করো। জামীআ = সবাই মিলে। ছুম্মা = তারপর। লা তুনযিরূনি = তোমরা আমাকে অবকাশ দিও না।

তাঁকে বাদ দিয়ে। সুতরাং তোমরা আমার বিরুদ্ধে কায়দাকৌশল করো সবাই মিলে। তারপর তোমরা আমাকে অবকাশ দিও না।

১১:৫৬
ইন্নী = নিশ্চয় আমি। তাওয়াক্কালতু = তাওয়াক্কুল/ ভরসা করছি। আলাল্লাহি = আল্লাহর উপর। রব্বী = যিনি আমার রব। ওয়া = আর। রব্বিকুম = তোমাদেরও রব। মা মিন দাব্বাতিন = কোন জীব নেই। ইল্লা = এছাড়া যে। হুয়া = তিনি। আখিযুম বিনাসিয়াতিহা = উহার সামনের কেশগুচ্ছকে ধারণকারী/ উহা তাঁর করায়ত্ত। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বী = আমার রব। আলা সিরাতিম মুসতাক্বীমা = সিরাতুল মুসতাকীমের/ সহজ সরল পথের উপর আছেন।

নিশ্চয় আমি তাওয়াক্কুল/ ভরসা করছি আল্লাহর উপর যিনি আমার রব আর তোমাদেরও রব। কোন জীব নেই এছাড়া যে, তিনি উহার সামনের কেশগুচ্ছকে ধারণকারী/ উহা তাঁর করায়ত্ত। নিশ্চয় আমার রব সিরাতুল মুসতাকীমের/ সহজ সরল পথের উপর আছেন।

১১:৫৭
ফাইন = তারপর যদি। তাওয়াল্লাও = তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। ফাক্বাদ = তাহলে নিশ্চয়। আবলাগতুকুম = আমি তোমাদের কাছে তাবলীগ করেছি/ পৌঁছে দিয়েছি। মা = তা-ই। উরসিলতু = আমি প্রেরিত হয়েছি। বিহী = যা নিয়ে। ইলাইকুম = তোমাদের প্রতি। ওয়া = আর। ইয়াছতাখলিফু = খেলাফত দিবেন/ স্থলাভিষিক্ত করবেন। রব্বী = আমার রব। ক্বাওমান গায়রাকুম = তোমাদেরকে ছাড়া অন্য কওমকে। ওয়া = আর। লা তাদুররূনাহু = তোমরা তাঁর ক্ষতি করতে পারবে না। সাইয়ান = কিছুমাত্রও। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বী = আমার রব। আলা কুল্লি সাইয়িন = সবকিছুর উপর। হাফীযান = হাফিয/ হেফাযতকারী/ তত্ত্বাবধায়ক।

তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তাহলে নিশ্চয় আমি তোমাদের কাছে তাবলীগ করেছি/ পৌঁছে দিয়েছি তা-ই, আমি প্রেরিত হয়েছি যা নিয়ে তোমাদের প্রতি। আর খেলাফত দিবেন/ স্থলাভিষিক্ত করবেন আমার রব তোমাদেরকে ছাড়া অন্য কওমকে। আর তোমরা তাঁর ক্ষতি করতে পারবে না কিছুমাত্রও। নিশ্চয় আমার রব সবকিছুর উপর হাফিয/ হেফাযতকারী/ তত্ত্বাবধায়ক।

১১;৫৮
ওয়া = আর। লাম্মা = যখন। জাআ = এসেছে। আমরুনা = আমাদের আদেশ। নাজজায়না = আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি। হূদান = হূদকে। ওয়াল্লাযীনা = আর তাদেরকে যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। মাআহু = তার সাথে। বিরহমাতিম মিন্না = আমাদের পক্ষ থেকে রহমত দিয়ে। ওয়া = আর। নাজজাইনাহুম = আমরা তাদেরকে নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি। মিন আযাবিন গালীযিন = আযাবুন গালীয/ কঠিন শাস্তি থেকে।

আর যখন এসেছে আমাদের আদেশ, তখন আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি হূদকে আর তাদেরকে যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে তার সাথে, আমাদের পক্ষ থেকে রহমত দিয়ে। আর আমরা তাদেরকে নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি আযাবুন গালীয/ কঠিন শাস্তি থেকে।

১১:৫৯
ওয়া = আর। তিলকা আদুন = এ-ই ছিলো আদ। জাহাদূ = তারা অস্বীকার করেছে। বিআয়াতি রব্বিহিম = তাদের রবের আয়াতসমূহকে। ওয়া = আর। আসাও = তারা অস্বীকার করেছে। রুসুলাহু = তাঁর রসূলগণকে। ওয়াত্তাবাঊ = আর তারা ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছে। আমরা কুল্লি জাব্বারিন আনীদিন = প্রত্যেক স্বৈরাচারী উদ্ধত শাসকের।

আর এ-ই ছিলো আদ। তারা অস্বীকার করেছে তাদের রবের আয়াতসমূহকে। আর তারা অস্বীকার করেছে তাঁর রসূলগণকে। আর তারা ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছে প্রত্যেক স্বৈরাচারী উদ্ধত শাসকের।

১১:৬০
ওয়া = আর। উতবিঊ = তাদের ইত্তেবা/ অনুসরণ করানো হয়েছে (= তাদেরকে দেয়া হয়েছে)। ফী হাযিহিদ দুনইয়া = এই দুনিয়ায়। লা’নাতুন = লা’নত/ অভিশাপ। ওয়া = আর। ইয়াওমাল ক্বিয়ামাতি = ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসেও। আলা = জেনে রাখো। ইন্না = নিশ্চয়। আদান = আদ। কাফারূ = কুফর করেছে। রব্বাহুম = তাদের রবের প্রতি। আলা = জেনে রাখো। বু’দাল লিআদিন = দূরে নিক্ষেপ করা হয়েছে আদকে। ক্বাওমি হূদিন = যারা ছিলো কওমে হূদ/ হূদের কওম।

আর তাদের ইত্তেবা/ অনুসরণ করানো হয়েছে (= তাদেরকে দেয়া হয়েছে) এই দুনিয়ায় লা’নত/ অভিশাপ আর ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসেও। জেনে রাখো নিশ্চয় আদ কুফর করেছে তাদের রবের প্রতি। জেনে রাখো দূরে নিক্ষেপ করা হয়েছে আদকে, যারা ছিলো কওমে হূদ/ হূদের কওম।

১১:৬১
ওয়া = আর। ইলা সামূদা = সামূদের কাছে (প্রেরণ করেছি)। আখাহুম = তাদের ভাই। সলিহান = সালেহকে। ক্বলা = সে বলেছে। ইয়া ক্বাওমি’বুদুল্লাহা = হে আমার কওম, ‘ইবাদাত/ দাসত্ব করো আল্লাহর। মা লাকুম = তোমাদের জন্য নেই। মিন ইলাহিন = কোন ইলাহ। গায়রুহু = তিনি ছাড়া। হুয়া = তিনি। আনশাআকুম = তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। মিনাল আরদি = পৃথিবী থেকে। ওয়াছতা’মারাকুম = আর তিনি তোমাদেরকে বসবাস করিয়েছেন। ফীহা = উহাতে। ফাছতাগফিরূহু = সুতরাং তোমরা তাঁর কাছে ক্ষমা চাও। ছুম্মা = তারপর। তূবূ = তোমরা তাওবা করো। ইলাইহি = তাঁর দিকে। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বী = আমার রব। ক্বারীবুম মুজীবুন = কারীব/ নিকটবর্তী ও মুজীব/ প্রার্থনার সাড়াদানকারী।

আর সামূদের কাছে (প্রেরণ করেছি) তাদের ভাই সালেহকে। সে বলেছে, ‘হে আমার কওম, ‘ইবাদাত/ দাসত্ব করো আল্লাহর। তোমাদের জন্য নেই কোন ইলাহ তিনি ছাড়া। তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন পৃথিবী থেকে আর তিনি তোমাদেরকে বসবাস করিয়েছেন উহাতে। সুতরাং তোমরা তাঁর কাছে ক্ষমা চাও। তারপর তোমরা তাওবা করো তাঁর দিকে। নিশ্চয় আমার রব কারীব/ নিকটবর্তী ও মুজীব/ প্রার্থনার সাড়াদানকারী।

১১:৬২
ক্বলূ = তারা বলেছে। ইয়া সালিহু = হে সালেহ। ক্বাদ = নিশ্চয়। কুনতা = তুমি ছিলে। ফীনা = আমাদের মধ্যে। মারজুওওয়ান = আশার পাত্র। ক্বাবলা হাযা = ইহার আগে। আতানহানা = তুমি কি আমাদেরকে নিষেধ করছো। আন না’বুদা = আমরা তাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করতে। মা ইয়াবুদু = যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করতো। আবাউনা = আমাদের বাপদাদা। ওয়া = আর। ইন্নানা = নিশ্চয় আমরা। লাফী শাক্কিন = সন্দেহে আছি। মিম্মা = উহা সম্পর্কে। তাদঊনা = তুমি আমাদেরকে দাওয়াত/ আহবান করছো। ইলাইহি = যার দিকে। মুরীবিন = যা সন্দেহপূর্ণ।

তারা বলেছে, ‘হে সালেহ, নিশ্চয় তুমি ছিলে আমাদের মধ্যে আশার পাত্র ইহার আগে। তুমি কি আমাদেরকে নিষেধ করছো আমরা তাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করতে যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করতো আমাদের বাপদাদা? আর নিশ্চয় আমরা সন্দেহে আছি উহা সম্পর্কে তুমি আমাদেরকে দাওয়াত/ আহবান করছো যার দিকে, যা সন্দেহপূর্ণ’।

১১:৬৩
ক্বলা = সে (= সালেহ) বলেছে। ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। আরাআইতুম = তোমরা কি ভেবে দেখেছো। ইন = যদি। কুনতু = আমি হই। আলা বাইয়িনাতিন মির রব্বী = আমার রবের পক্ষ থেকে আসা বাইয়িনাতের/ স্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত। ওয়া = আর। আতানী = তিনি আমাকে দিয়েছেন। মিনহু = তাঁর পক্ষ থেকে। রহমাতান = রহমত। ফামাইঁ ইয়ানসুরনী = সুতরাং কে আমাকে সাহায্য করবে। মিনাল্লাহি = আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচাতে। ইন = যদি। আসাইতুহু = আমি তাঁর অবাধ্য হই। ফামা তাযীদূনানী = সুতরাং তোমরা আমাকে বাড়িয়ে দিবে না। গায়রা তাখছীরিন = ক্ষতি ছাড়া অন্য কিছু।

সে (= সালেহ) বলেছে, ‘হে আমার কওম, তোমরা কি ভেবে দেখেছো, যদি আমি হই আমার রবের পক্ষ থেকে আসা বাইয়িনাতের/ স্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত আর তিনি আমাকে দিয়েছেন তাঁর পক্ষ থেকে রহমত; সুতরাং কে আমাকে সাহায্য করবে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচাতে যদি আমি তাঁর অবাধ্য হই? সুতরাং তোমরা আমাকে বাড়িয়ে দিবে না ক্ষতি ছাড়া অন্য কিছু’।

১১:৬৪
ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। হাযিহি নাক্বাতুল্লাহি = এই হচ্ছে আল্লাহর নির্ধারিত উটনী। লাকুম = তোমাদের জন্য। আয়াতান = একটি আয়াত/ নিদর্শন। ফাযারূহা = সুতরাং তোমরা উহাকে ছেড়ে দাও। তা’কুল = উহা খাবে। ফী আরদিল্লাহি = আল্লাহর পৃথিবীতে। ওয়া = আর। লা তামাচ্ছূহা = তোমরা উহাকে স্পর্শ করো না। বিছুয়িন = মন্দভাবে। ফাইয়া’খুজাকুম = তা করলে তোমাদেরকে ধরবে। আযাবুন ক্বারীবুন = আযাবুন কারীব/ নিকটবর্তী শাস্তি।

হে আমার কওম, এই হচ্ছে আল্লাহর নির্ধারিত উটনী। তোমাদের জন্য একটি আয়াত/ নিদর্শন। সুতরাং তোমরা উহাকে ছেড়ে দাও। উহা খাবে আল্লাহর পৃথিবীতে। আর তোমরা উহাকে স্পর্শ করো না মন্দভাবে। তা করলে তোমাদেরকে ধরবে আযাবুন কারীব/ নিকটবর্তী শাস্তি।

১১:৬৫
ফাআক্বারূহা = তারপর তারা উহাকে হত্যা করেছে। ফাক্বালা = তখন সে (= সালেহ) বলেছে। তামাত্তাঊ = তোমরা ভোগসামগ্রী ভোগ করো। ফী দারিকুম = তোমাদের বাড়িঘরে। ছালাছাতা আইয়ামিন = তিন দিন পর্যন্ত। যালিকা = ইহা। ওয়া’দুন = একটি ওয়াদা। গায়রু মাকযূবিন = যা মিথ্যা হওয়ার নয়।

তারপর তারা উহাকে হত্যা করেছে। তখন সে (= সালেহ) বলেছে, তোমরা ভোগসামগ্রী ভোগ করো তোমাদের বাড়িঘরে তিন দিন পর্যন্ত। ইহা একটি ওয়াদা যা মিথ্যা হওয়ার নয়।

১১:৬৬
ফালাম্মা = তারপর যখন। জাআ = এসেছে। আমরুনা = আমাদের আদেশ। নাজজায়না = তখন আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি। সলিহান = সালেহকে। ওয়াল্লাযীনা = আর তাদেরকে যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। মাআহু = তার সাথে। বিরহমাতিম মিন্না = আমাদের পক্ষ থেকে রহমত দিয়ে। ওয়া মিন খিযয়ি ইয়াওমায়িযিন = সেদিনের লাঞ্চনা থেকে। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বাকা = তোমার রব। হুয়াল ক্বাভিইয়ুল আযীযু = তিনি কাভিয়্যুল আযীয/ মহাশক্তিমান।

তারপর যখন এসেছে আমাদের আদেশ, তখন আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি সালেহকে আর তাদেরকে যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে তার সাথে, আমাদের পক্ষ থেকে রহমত দিয়ে, সেদিনের লাঞ্চনা থেকে। নিশ্চয় তোমার রব এমন যে, তিনি কাভিয়্যুল আযীয/ মহাশক্তিমান।

১১:৬৭
ওয়া = আর। আখাযাল্লাযীনা = তাদেরকে পাকড়াও করেছে যারা। যলামুস সয়হাতু = যুলুম করেছে, (পাকড়াও করেছে) প্রচন্ড শব্দ। ফাআসবাহূ = সুতরাং তাদের প্রভাত হয়েছে। ফী দারিহিম = তাদের ঘরবাড়ির মধ্যে। খাছিমীনা = তারা উপুড় হয়ে মৃত পড়ে থাকা অবস্থায়।

আর তাদেরকে পাকড়াও করেছে যারা যুলুম করেছে, (পাকড়াও করেছে) প্রচন্ড শব্দ। সুতরাং তাদের প্রভাত হয়েছে তাদের ঘরবাড়ির মধ্যে তারা উপুড় হয়ে মৃত পড়ে থাকা অবস্থায়।

১১:৬৮
কাআল্লাম ইয়াগনাও ফীহা = তারা এমন হয়ে গেছে যেন তারা বসবাস করেইনি উহাতে। আলা = জেনে রাখো। ইন্না = নিশ্চয়। ছামূদা = সামূদ। কাফারূ = কুফর করেছে। রব্বাহুম = তাদের রবের প্রতি। আলা = জেনে রাখো। বু’দাল লিছামূদা = দূরে নিক্ষেপ করা হয়েছে সামূদকে।

তারা এমন হয়ে গেছে যেন তারা বসবাস করেইনি উহাতে। জেনে রাখো, নিশ্চয় সামূদ কুফর করেছে তাদের রবের প্রতি। জেনে রাখো, দূরে নিক্ষেপ করা হয়েছে সামূদকে।

১১:৬৯
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। জাআত = এসেছিলো। রুসুলানা = আমাদের রসূলগণ/ ফেরেশতাগণ। ইবরাহীমা = ইবরাহীমের কাছে। বিল বুশরা = সুসংবাদ নিয়ে। ক্বলূ = তারা বলেছে। সালামান = ‘সালামান’/ শান্তি। ক্বলা = সে (= ইবরাহীম) বলেছে। সালামুন = ‘সালামুন’/ শান্তি। ফামা লাবিছা = তারপর দেরি হয়নি। আন জাআ = নিয়ে আসতে। বিইজলিন হানীযিন = একটি কষানো বাছুর (মেহমানদারীর জন্য)।

আর নিশ্চয় এসেছিলো আমাদের রসূলগণ/ ফেরেশতাগণ ইবরাহীমের কাছে সুসংবাদ নিয়ে। তারা বলেছে, ‘সালামান’/ শান্তি। সে (= ইবরাহীম) বলেছে, ‘সালামুন’/ শান্তি। তারপর দেরি হয়নি নিয়ে আসতে একটি কষানো বাছুর (মেহমানদারীর জন্য)।

১১:৭০
ফালাম্মা = তারপর যখন। রআ = সে দেখেছে। আইদিয়াহুম = তাদের হাতসমূহ। লা তাসিলু = প্রসারিত হচ্ছে না। ইলাইহি = উহার দিকে (= খাদ্যের দিকে)। নাকিরাহুম = তখন সে (= ইবরাহীম) তাদেরকে সন্দেহ করেছে। ওয়া = আর। আওজাছা = তার মনে সঞ্চার হয়েছে। মিনহুম = তাদের ব্যাপারে। খীফাতান = ভয়ভীতি। ক্বলূ = তারা বলেছে। লা তাখাফ = তুমি ভয় করো না। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। উরছিলনা = প্রেরিত হয়েছি। ইলা ক্বাওমি লূতি = কওমে লূতের/ লূতের কওমের প্রতি।

তারপর যখন সে দেখেছে তাদের হাতসমূহ প্রসারিত হচ্ছে না উহার দিকে (= খাদ্যের দিকে)। তখন সে (= ইবরাহীম) তাদেরকে সন্দেহ করেছে আর তার মনে সঞ্চার হয়েছে তাদের ব্যাপারে ভয়ভীতি। তারা বলেছে, ‘তুমি ভয় করো না। নিশ্চয় আমরা প্রেরিত হয়েছি কওমে লূতের/ লূতের কওমের প্রতি’।

১১:৭১
ওয়ামরাআতুহু = আর তার স্ত্রী। ক্বায়িমাতুন = দন্ডায়মান/ দাঁড়ানো ছিলো। ফাদাহিকাত = তখন সে হেসেছে। ফাবাশশারনাহা = তখন তাকে সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। বিইসহাকা = ইসহাকের। ওয়া মিঁও ওরায়ি ইসহাক্বা = আর ইসহাকের পরবর্তীতে দিয়েছি। ইয়া’ক্বূবা = ইয়াকুবের সংবাদ।

আর তার স্ত্রী দন্ডায়মান/ দাঁড়ানো ছিলো। তখন সে হেসেছে। তখন তাকে সুসংবাদ দেয়া হয়েছে ইসহাকের আর ইসহাকের পরবর্তীতে দিয়েছি ইয়াকুবের সংবাদ।

১১:৭২
ক্বালাত = সে (= ইবরাহীমের স্ত্রী) বলেছে। ইয়া ওয়াইলাতা = হায়! আমার আফসোস। আআলিদু = আমি কি সন্তান প্রসব করবো। ওয়া = অথচ। আনা = আমি। আজূযুন = বৃদ্ধা। ওয়া = আর। হাযা = এই যে। বা’লী = আমার স্বামী। শাইখান = বৃদ্ধ। ইন্না = নিশ্চয়। হাযা = ইহা। লাসাইয়ুন আযীবুন = আশ্চর্য ব্যাপার।

সে (= ইবরাহীমের স্ত্রী) বলেছে, ‘হায়! আমার আফসোস! আমি কি সন্তান প্রসব করবো অথচ আমি বৃদ্ধা। আরএই যে আমার স্বামী বৃদ্ধ। নিশ্চয় ইহা আশ্চর্য ব্যাপার’।

১১:৭৩
ক্বলূ = তারা বলেছে। আতা’জাবীনা = তুমি কি আশ্চয়ান্বিত হচ্ছো। মিন আমরিল্লাহি = আল্লাহর আদেশের ব্যাপারে? রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু আলাইকুম আহলাল বাইতি = ‘রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু আলাইকুম আহলাল বাইতি’ (আল্লাহর রহমত ও তাঁর বরকত তোমাদের উপর হে আহলে বাইত/ গৃহবাসী)। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। হামীদুন = হামীদ/ প্রশংসিত। মাজীদুন = মাজীদ/ মহিমান্বিত।

তারা বলেছে, ‘তুমি কি আশ্চয়ান্বিত হচ্ছো আল্লাহর আদেশের ব্যাপারে? ‘রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু আলাইকুম আহলাল বাইতি’ (আল্লাহর রহমত ও তাঁর বরকত তোমাদের উপর হে আহলে বাইত/ গৃহবাসী)। নিশ্চয় তিনি হামীদ/ প্রশংসিত ও মাজীদ/ মহিমান্বিত’।

১১:৭৪
ফালাম্মা = তারপর যখন। যাহাবা = দূর হয়েছে। আন ইবরাহীমার রওউ = ইবরাহীমের মন থেকে ভয় ভীতি। ওয়া = আর। জাআতহুল বুশরা = তার কাছে এসেছে বুশরা/ সুসংবাদ। ইউজাদিলূনা = সে আমাদের সাথে বাদানুবাদ করতে লাগলো। ফী ক্বাওমি লূতিন = কওমে লূতের ব্যাপারে।

তারপর যখন দূর হয়েছে ইবরাহীমের মন থেকে ভয় ভীতি আর তার কাছে এসেছে বুশরা/ সুসংবাদ, (তখন) সে আমাদের সাথে বাদানুবাদ করতে লাগলো কওমে লূতের ব্যাপারে।

১১:৭৫
ইন্না = নিশ্চয়। ইবরাহীমা = ইবরাহীম ছিলো। লাহালীমুন = সহনশীল। আওয়াহুম মুনীবুন = কোমলমন ও আল্লাহর অভিমুখী।

নিশ্চয় ইবরাহীম ছিলো সহনশীল, কোমলমন ও আল্লাহর অভিমুখী।

১১:৭৬
ইয়া ইবরাহীমু = (বলা হয়েছে,) ‘হে ইবরাহীম। আ’রিদ আন হাযা = বিরত হও ইহা থেকে। ইন্নাহু = নিশ্চয়। ক্বাদ জাআ = এসে গেছে। আমরু রব্বিকা = তোমার রবের আদেশ। ওয়া = আর। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা এমন যে। আতীহিম = তাদের উপর আসছে। আযাবুন গায়রু মারদূদিন = অপ্রতিরোধ্য শাস্তি।

(বলা হয়েছে,) ‘হে ইবরাহীম, বিরত হও ইহা থেকে। নিশ্চয় এসে গেছে তোমার রবের আদেশ। আর নিশ্চয় তারা এমন যে, তাদের উপর আসছে অপ্রতিরোধ্য শাস্তি।

১১:৭৭
ওয়া = আর। লাম্মা = যখন। জাআত = এসেছে। রুসুলুনা = আমাদের রসূলগণ/ ফেরেশতাগণ। লূতান = লূতের কাছে। ছীআ = সে বিষন্ন হয়েছে। বিহিম = তাদের ব্যাপারে। ওয়া = আর। দক্বা = সংকুচিত হয়ে এসেছে। বিহিম = তাদের ব্যাপারে। যারআন = (তার) বাহু (অর্থাৎ সে নিজ শক্তির অভাব অনুভব করেছে)। ওয়া = আর। ক্বলা = সে বলেছে। হাযা = এটা হচ্ছে। ইয়াওমুন আসীবুন = ভয়ানক দিন।

আর যখন এসেছে আমাদের রসূলগণ/ ফেরেশতাগণ লূতের কাছে। সে বিষন্ন হয়েছে তাদের ব্যাপারে (অর্থাৎ মেহমানদের নিরাপত্তা রক্ষার চিন্তায়) আর সংকুচিত হয়ে এসেছে তাদের ব্যাপারে (তার) বাহু (অর্থাৎ সে নিজ শক্তির অভাব অনুভব করেছে)। আর সে বলেছে, ‘এটা হচ্ছে ভয়ানক দিন’।

১১:৭৮
ওয়া = আর। জাআহু = তার কাছে এসেছে। ক্বাওমুহু = তার কওম। ইউহরাঊনা ইলাইহি = তার দিকে দ্রুত দৌড় দিয়ে। ওয়া = আর। মিন ক্বাবলু = আগে। কানূ ইয়া’মালূনাছ ছাইয়িআতি = তারা কুকর্ম করতে অভ্যস্ত ছিলো। ক্বলা = সে (লূত) বলেছে। ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। হাউলায়ি = এই যে আছে। বানাতী = আমার (কওমের) কন্যাগণ। হুন্না = তারা। আতহারু লাকুম = অত্যন্ত পবিত্র তোমাদের জন্য (যে, তোমরা তাদেরকে বিবাহ করবে)। ফাত্তাক্বুল্লাহা = সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো। ওয়া = আর। লা তুখযূনা = আমাকে লাঞ্চিত করো না। ফী দয়ফী = আমার মেহমানদের ব্যাপারে। আলাইছা মিনকুম রজুলুর রশীদুন = তোমাদের মধ্যে কি সুস্থ চিন্তার একজন পুরুষও নেই?

আর তার কাছে এসেছে তার কওম তার দিকে দ্রুত দৌড় দিয়ে। আর আগে তারা কুকর্ম করতে অভ্যস্ত ছিলো। সে (লূত) বলেছে, ‘হে আমার কওম, এই যে আছে আমার (কওমের) কন্যাগণ। তারা অত্যন্ত পবিত্র তোমাদের জন্য (যে, তোমরা তাদেরকে বিবাহ করবে)। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো। আর আমাকে লাঞ্চিত করো না আমার মেহমানদের ব্যাপারে। তোমাদের মধ্যে কি সুস্থ চিন্তার একজন পুরুষও নেই?

১১:৭৯
ক্বলূ = তারা বলেছে। লাক্বাদ = নিশ্চয়। আলিমতা = তুমি জেনেছো। মা লানা = আমাদের নেই। ফী বানাতিকা = তোমার (কওমের) কন্যাদের ব্যাপারে। মিন হাক্বক্বিন = কোন আগ্রহ। ওয়া = আর। ইন্নাকা = নিশ্চয় তুমি। লাতা’লামু = জানো। মা নুরীদু = আমরা কী এরাদা/ ইচ্ছা করি।

তারা বলেছে, ‘নিশ্চয় তুমি জেনেছো আমাদের নেই তোমার (কওমের) কন্যাদের ব্যাপারে কোন আগ্রহ। আর নিশ্চয় তুমি জানো, আমরা কী এরাদা/ ইচ্ছা করি?

১১:৮০
ক্বলা = সে (= লূত) বলেছে। লাও = যদি। আন্না লী = আমার থাকতো। বিকুম = তোমাদের উপর। ক্বুওয়্যাতান = ক্বুওয়্যত/ শক্তি। আও = অথবা। আভী = আমি আশ্রয় পেতাম। ইলা রুকনিন শাদীদিন = কোন শক্তিশালী রুকনের/ স্তম্ভের।

সে (= লূত) বলেছে, ‘যদি আমার থাকতো তোমাদের উপর ক্বুওয়্যত/ শক্তি অথবা আমি আশ্রয় পেতাম কোন শক্তিশালী রুকনের/ স্তম্ভের!’

১১:৮১
ক্বলা = তারা (= আগমনকারীগণ) বলেছে। ইয়া লূতু = হে লূত। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। রুসুলু রব্বিকা = তোমার রবের রসূল/ ফেরেশতা। লাইঁ ইয়াসিলূ = তারা পৌঁছতে পারবে না। ইলাইকা = তোমার কাছে। ফাআছরি = সুতরাং তুমি ভ্রমণ করো। বিআহলিকা = তোমার আহাল/ পরিবার সহকারে। বিক্বিতয়িম মিনাল লাইলি = রাতের একাংশে। ওয়া = আর। লা ইয়ালতাফিত = পিছনে তাকাবে না। মিনকুম = তোমাদের মধ্য থেকে। আহাদুন = কেউই। ইল্লাম রাআতাকা = (তোমরা যাও) তোমার স্ত্রী ছাড়া। ইন্নাহু = নিশ্চয়। মুসীবুহা = তার উপর তা-ই আপতিত হবে। মা = যা। আসাবাহুম = তাদের উপর আপতিত হবে। ইন্না = নিশ্চয়। মাওয়িদাহুমুস সুবহু = তাদের ব্যাপারে ওয়াদাকৃত/ নির্ধারিত সময় হচ্ছে সোবহ/ প্রভাতবেলা। আলাইছাস সুবহু বিক্বারীবিন = সোবহ/ প্রভাত কি নিকটবর্তী নয়?

তারা (= আগমনকারীগণ) বলেছে, ‘হে লূত, নিশ্চয় আমরা তোমার রবের রসূল/ ফেরেশতা। তারা পৌঁছতে পারবে না তোমার কাছে। সুতরাং তুমি ভ্রমণ করো তোমার আহাল/ পরিবার সহকারে রাতের একাংশে, আর পিছনে তাকাবে না তোমাদের মধ্য থেকে কেউই; (তোমরা যাও) তোমার স্ত্রী ছাড়া। নিশ্চয় তার উপর তা-ই আপতিত হবে যা তাদের উপর আপতিত হবে। নিশ্চয় তাদের ব্যাপারে ওয়াদাকৃত/ নির্ধারিত সময় হচ্ছে সোবহ/ প্রভাতবেলা। সোবহ/ প্রভাত কি নিকটবর্তী নয়?

১১:৮২
ফালাম্মা = তারপর যখন। জাআ = এসেছে। আমরুনা = আমাদের আদেশ। জাআলনা = আমরা করেছি। আলিয়াহা = উহার উপর দিককে। ছাফিলাহা = উহার নিচের দিক (অর্থাৎ জনপদটিকে উল্টে দিয়েছি)। ওয়া = আর। আমতরনা = আমরা বর্ষণ করেছি। আলাইহা = উহার উপর। হিজারাতুম মিন ছিজজীলিন = কংকর ধরনের পাথর। মানদূদিন = ক্রমাগতভাবে।

তারপর যখন এসেছে আমাদের আদেশ, তখন আমরা করেছি উহার উপর দিককে উহার নিচের দিক (অর্থাৎ জনপদটিকে উল্টে দিয়েছি)। আর আমরা বর্ষণ করেছি উহার উপর কংকর ধরনের পাথর, ক্রমাগতভাবে।

১১:৮৩
মুছাওওয়ামাতান ইনদা রব্বিকা = (যার প্রত্যেকটি ছিলো) চিহ্নিত, তোমার রবের কাছে। ওয়া = আর। মা হিয়া = উহা ছিলো না। মিনায যলিমীনা = যালিমদের থেকে। বিবায়ীদিন = বহুদূরে।

(যার প্রত্যেকটি ছিলো) চিহ্নিত, তোমার রবের কাছে। আর উহা ছিলো না যালিমদের থেকে বহুদূরে।

১১:৮৪
ওয়া = আর। ইলা মাদইয়ানা = মাদিয়ানবাসীদের প্রতি (প্রেরণ করেছি)। আখাহুম = তাদের ভাই। শুআইবা = শোয়ায়েবকে। ক্বলা = সে বলেছে। ইয়া ক্বাওমি’বুদুল্লাহা = হে আমার কওম, তোমরা ইবাদাত/ দাসত্ব করো আল্লাহর। মা লাকুম = তোমাদের জন্য নেই। মিন ইলাহিন = কোন ইলাহ। গায়রুহু = তিনি ছাড়া। ওয়া = আর। লা তানক্বুসুল মীকালা ওয়া মীযানা = তোমরা পরিমাপে ও দাড়িপাল্লায় কম করো না। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। আরাকুম = তোমাদেরকে দেখছি। বিখায়রিন = পুঁজিপতি অবস্থায়। ওয়া = কিন্তু। ইন্নী = নিশ্চয় আমি। আখাফু = ভয় করছি। আলাইকুম = তোমাদের উপর। আযাবা ইয়াওমিম মুহীতিন = পরিবেষ্টনকারী দিনের শাস্তির ব্যাপারে।

আর মাদিয়ানবাসীদের প্রতি (প্রেরণ করেছি) তাদের ভাই শোয়ায়েবকে। সে বলেছে, ‘হে আমার কওম, তোমরা ইবাদাত/ দাসত্ব করো আল্লাহর। তোমাদের জন্য নেই কোন ইলাহ, তিনি ছাড়া। আর তোমরা পরিমাপে ও দাড়িপাল্লায় কম করো না। নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে দেখছি পুঁজিপতি অবস্থায়। কিন্তু নিশ্চয় আমি ভয় করছি তোমাদের উপর পরিবেষ্টনকারী দিনের শাস্তির ব্যাপারে’।

১১:৮৫
ওয়া = আর। ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। আওফুল মীকইয়ালা ওয়াল মীযানা = পূর্ণ করো পরিমাপ উপকরণে ও দাড়িপাল্লায়। বিল ক্বিসতি = ন্যায়সঙ্গতভাবে। ওয়া = আর। লা তাবখাছুন্নাছা = মানুষের ক্ষতি করো না। আশইয়াআহুম = তাদের জিনিসগুলোর ক্ষতি করে। ওয়া = আর। লা তা’ছাও = তোমরা বিচরন করো না। ফিল আরদি = পৃথিবীতে। মুফসিদীনা = ফাসাদকারী হয়ে।

‘আর হে আমার কওম, পূর্ণ করো পরিমাপ উপকরণে ও দাড়িপাল্লায় ন্যায়সঙ্গতভাবে। আর মানুষের ক্ষতি করো না তাদের জিনিসগুলোর ক্ষতি করে। আর তোমরা বিচরন করো না পৃথিবীতে ফাসাদকারী হয়ে’।

১১:৮৬
বাক্বিয়্যাতুল্লাহি = আল্লাহর কাছে থাকা বাকি/ বকেয়া (যা আখিরাতে পাওয়া যাবে)। খায়রুল্লাকুম = তোমাদের জন্য উত্তম/ কল্যাণকর। ইন = যদি। কুনতুম = তোমরা হও। মু’মিনীনা = মু’মিনীন/ বিশ্বাসী। ওয়া = আর। মা আনা = আমি নই। আলাইকুম = তোমাদের উপর। বিহাফীযিন = হাফিয/ সংরক্ষক।

আল্লাহর কাছে থাকা বাকি/ বকেয়া (যা আখিরাতে পাওয়া যাবে) তোমাদের জন্য উত্তম/ কল্যাণকর, যদি তোমরা হও মু’মিনীন/ বিশ্বাসী। আর আমি নই তোমাদের উপর হাফিয/ সংরক্ষক।

১১:৮৭
ক্বুলূ = তারা বলেছে। ইয়া শুআইবু = হে শোয়ায়েব। আসালাতুকা = তোমার সালাত কি। তা’মুরুকা = তোমাকে নির্দেশনা দেয়। আন নাতরুকা = যে, আমরা তরক করবো/ ছেড়ে দেবো। মা ইয়াবুদু = তাদের ইবাদাত/ দাসত্ব, যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করতো। আবাউনা = আমাদের বাপদাদা। আও = অথবা। আন নাফআলা = যেন না আমরা করি। ফী আমওয়ালিনা = আমাদের মালসম্পদের ব্যাপারে। মা নাশাউ = যা আমরা ইচ্ছা করি সেরূপ কর্মনীতির অনুসরণ। ইন্নাকা = নিশ্চয় তুমি। লাআনতাল হালীমুর রাশীদু = নিশ্চয় তুমিই সহনশীল, সদাচারী!

তারা বলেছে, ‘হে শোয়ায়েব, তোমার সালাত কি তোমাকে নির্দেশনা দেয় যে, আমরা তরক করবো/ ছেড়ে দেবো তাদের ইবাদাত/ দাসত্ব, যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব করতো আমাদের বাপদাদা? অথবা যেন না আমরা করি আমাদের মালসম্পদের ব্যাপারে যা আমরা ইচ্ছা করি সেরূপ কর্মনীতির অনুসরণ? নিশ্চয় তুমি, নিশ্চয় তুমিই সহনশীল, সদাচারী!

১১:৮৮
ক্বলা = সে (= শোয়ায়েব) বলেছে। ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। আরাআইতুম = তোমরা কি ভেবে দেখেছো। ইন = যদি। কুনতু = আমি হই। আলা বাইয়িনাতিম মির রব্বী = আমার রবের পক্ষ থেকে আসা বাইয়িনাতের/ স্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত। ওয়া = আর। রযাক্বানী = তিনি আমাকে রিযিক দেন। মিনহু = তাঁর পক্ষ থেকে। রিযক্বান হাসানান = রিযকান হাসানা/ উত্তম রিযিক। ওয়া = আর। মা উরীদু = আমি এরাদা/ ইচ্ছা করি না। আন উখালিফাকুম = আমি তোমাদের খেলাফ/ ব্যতিক্রম করতে। ইলা মা আনহাকুম আনহু = উহার ক্ষেত্রে আমিই তোমাদেরকে নিষেধ করি যা করতে (অর্থাৎ আমি তোমাদেরকে যা করতে নিষেধ করি, আমি নিজেই তা করতে পারি না)। ইন উরীদু = আমি কিছু এরাদা/ ইচ্ছা করি না। ইল্লাল ইসলাহা = ইসলাহ/ সংস্কার সংশোধন করা ছাড়া। মাছতাতা’তু = যতটুকু আমি করতে পারি। ওয়া মা তাওফীক্বী ইল্লা বিল্লাহি, আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া ইলাইহি উনীবু = ‘ওয়া মা তাওফীক্বী ইল্লা বিল্লাহি, আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া ইলাইহি উনীব’ (আর আমার কোন তাওফীক/ সামর্থ নেই, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া; তাঁরই উপর আমি তাওয়াক্কুল/ ভরসা করি, আর তাঁরই কাছে আমি তাওবা করি/ ফিরে যাই)।

সে (= শোয়ায়েব) বলেছে, ‘হে আমার কওম, তোমরা কি ভেবে দেখেছো, যদি আমি হই আমার রবের পক্ষ থেকে আসা বাইয়িনাতের/ স্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত আর তিনি আমাকে রিযিক দেন তাঁর পক্ষ থেকে, রিযকান হাসানা/ উত্তম রিযিক। আর আমি এরাদা/ ইচ্ছা করি না আমি তোমাদের খেলাফ/ ব্যতিক্রম করতে উহার ক্ষেত্রে আমিই তোমাদেরকে নিষেধ করি যা করতে (অর্থাৎ আমি তোমাদেরকে যা করতে নিষেধ করি, আমি নিজেই তা করতে পারি না)। আমি কিছু এরাদা/ ইচ্ছা করি না ইসলাহ/ সংস্কার সংশোধন করা ছাড়া, যতটুকু আমি করতে পারি। ‘ওয়া মা তাওফীক্বী ইল্লা বিল্লাহি, আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া ইলাইহি উনীব’ (আর আমার কোন তাওফীক/ সামর্থ নেই, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া; তাঁরই উপর আমি তাওয়াক্কুল/ ভরসা করি, আর তাঁরই কাছে আমি তাওবা করি/ ফিরে যাই)।

১১:৮৯
ওয়া = আর। ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। লা ইয়াজরিমান্নাকুম = যেন তোমাদেরকে অপরাধ করতে উদ্বুদ্ধ না করে। শিক্বাক্বী = আমার সাথে বিরোধ। আইঁ ইয়ুসীবাকুম = এতদূর যে, তোমাদের উপর আপতিত হবে। মিছলু = তেমন শাস্তি। মা আসাবা = যেমন আপতিত হয়েছে। ক্বাওমা নূহিন = কওমে নূহের উপর। আও = অথবা। ক্বাওমা হূদিন = কওমে হূদের উপর। আও = অথবা। ক্বাওমা সলিহান = কওমে সালেহের উপর। ওয়া = আর। মা ক্বাওমি লূতিন = কওমে লূত নয়। মিনকুম = তোমাদের থেকে। বিবায়ীদিন = দূরবর্তী।

আর হে আমার কওম, যেন তোমাদেরকে অপরাধ করতে উদ্বুদ্ধ না করে আমার সাথে বিরোধ, এতদূর যে, তোমাদের উপর আপতিত হবে তেমন শাস্তি যেমন আপতিত হয়েছে কওমে নূহের উপর অথবা কওমে হূদের উপর অথবা কওমে সালেহের উপর, আর কওমে লূত নয় তোমাদের থেকে দূরবর্তী।

১১:৯০
ওয়াছতাগফিরূ = আর তোমরা ক্ষমা চাও। রব্বাকুম = তোমাদের রবের কাছে। ছুম্মা = তারপর। তূবূ = তোমরা তাওবা করো। ইলাইহি = তাঁরই দিকে। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বী = আমার রব। রহীমুন ওয়াদূদুন = রহীম/ দয়াময় ও ওয়াদূদ/ প্রেমময়।

আর তোমরা ক্ষমা চাও তোমাদের রবের কাছে। তারপর তোমরা তাওবা করো তাঁরই দিকে। নিশ্চয় আমার রব রহীম/ দয়াময় ও ওয়াদূদ/ প্রেমময়।

১১:৯১
ক্বলূ = তারা বলেছে। ইয়া শুআইবু = হে শোয়ায়েব। মা নাফক্বাহু = আমরা ফিকহ করি না/ বুঝি না। কাছীরাম মিম্মা তাক্বূলু = উহার অনেক অংশ, যা তুমি বলো। ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। লানারাকা = তোমাকে দেখছি। ফীনা = আমাদের মধ্যে। দয়ীফান = জয়ীফ/ দুর্বল হিসাবে। ওয়া = আর। লাও = যদি। লা রহতুবা = তোমার আত্মীয়গোষ্ঠী না থাকতো। লারজমানাকা = তাহলে আমরা তোমাকে রজম/ পাথর নিক্ষেপে হত্যা করতাম। ওয়া = আর। মা আনতা = তুমি নও। আলাইনা = আমাদের উপর। বিআযীযিন = শক্তিমান।

তারা বলেছে, ‘হে শোয়ায়েব, আমরা ফিকহ করি না/ বুঝি না উহার অনেক অংশ, যা তুমি বলো। আর নিশ্চয় আমরা তোমাকে দেখছি আমাদের মধ্যে জয়ীফ/ দুর্বল হিসাবে। আর যদি তোমার আত্মীয়গোষ্ঠী না থাকতো, তাহলে আমরা তোমাকে রজম/ পাথর নিক্ষেপে হত্যা করতাম। আর তুমি নও আমাদের উপর শক্তিমান’।

১১:৯২
ক্বলা = সে (= শোয়ায়েব) বলেছে। ইয়া ক্বাওমি = হে আমার কওম। আরাহতী = আমার আত্মীয় গোষ্ঠী কি। আআযযু = অধিক শক্তিমান। আলাইকুম = তোমাদের কাছে। মিনাল্লাহি = আল্লাহর চেয়েও? ওয়াত্তাখাজতুমূহু = অথচ তোমরা তাঁকে গ্রহণ করেছো। ওয়ারাআকুম যিহরিয়্যান = তোমাদের পিঠের পিছনে। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বী = আমার রব। বিমা তা’মালূনা মুহীতুন = যা কিছু তোমরা করো উহাকে পরিবেষ্টনকারী হয়ে আছেন।

সে (= শোয়ায়েব) বলেছে, ‘হে আমার কওম, আমার আত্মীয় গোষ্ঠী কি অধিক শক্তিমান তোমাদের কাছে আল্লাহর চেয়েও? অথচ তোমরা তাঁকে গ্রহণ করেছো তোমাদের পিঠের পিছনে। নিশ্চয় আমার রব যা কিছু তোমরা করো উহাকে পরিবেষ্টনকারী হয়ে আছেন।

১১:৯৩
ওয়া = আর। ইয়া ক্বাওমি’মালূ = হে আমার কওম, তোমরা আমল করো। আলা মাকানাতিকুম = তোমাদের মাকানে/ অবস্থানে থেকে। ইন্নী = নিশ্চয় আমিও। আমিলুন = (আমার) কার্যসম্পাদনকারী। ছাওফা = শীঘ্রই। তা’লামূনা = তোমরা জানবে। মান = যে, কে সে। ইয়া’তীহি = যার উপর আসবে। আযাবুন = আযাব/ শাস্তি। ইউখযীহি = যা তাকে লাঞ্চিত করবে। ওয়া = আর। মান হুয়া কাযিবুন = কে মিথ্যাবাদী? ওয়ারতাক্বিবূ = আর তোমরা পরিদর্শন করো। ইন্নী = নিশ্চয় আমিও। মাআকুম = তোমাদের সাথে। রক্বীবুন = একজন পরিদর্শনকারী।

আর হে আমার কওম, তোমরা আমল করো তোমাদের মাকানে/ অবস্থানে থেকে, নিশ্চয় আমিও (আমার) কার্যসম্পাদনকারী। শীঘ্রই তোমরা জানবে যে, কে সে যার উপর আসবে আযাব/ শাস্তি, যা তাকে লাঞ্চিত করবে আর কে মিথ্যাবাদী? আর তোমরা পরিদর্শন করো, নিশ্চয় আমিও তোমাদের সাথে একজন পরিদর্শনকারী।

১১:৯৪
ওয়া = আর। লাম্মা = যখন। জাআ = এসেছে। আমরুনা = আমাদের আদেশ। নাজজায়না = আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি। শুআইবান = শোয়ায়েবকে। ওয়াল্লাযীনা = আর তাদেরকে যারা। আমানূ = ঈমান/ বিশ্বাস করেছে। মাআহু = তার সাথে। বিরহমাতিম মিন্না = আমাদের পক্ষ থেকে রহমত দিয়ে। ওয়া = আর। আখাযাতিল্লাযীনা = তাদেরকে পাকড়াও করেছে যারা। যলামুস সয়হাতু = যুলুম করেছে, (পাকড়াও করেছে) প্রচন্ড শব্দ। ফাআসবাহূ = সুতরাং তাদের সোবহ/ প্রভাত হয়েছে। ফী দিয়ারিহিম = তাদের ঘরবাড়িতে। খাছিমীনা = তারা উপুড় হয়ে মৃত পড়ে থাকা অবস্থায়।

আর যখন এসেছে আমাদের আদেশ আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি শোয়ায়েবকে আর তাদেরকে যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছে তার সাথে, আমাদের পক্ষ থেকে রহমত দিয়ে। আর তাদেরকে পাকড়াও করেছে যারা যুলুম করেছে, (পাকড়াও করেছে) প্রচন্ড শব্দ। সুতরাং তাদের সোবহ/ প্রভাত হয়েছে তাদের ঘরবাড়িতে তারা উপুড় হয়ে মৃত পড়ে থাকা অবস্থায়।

১১:৯৫
কাআল্লাম ইয়াগনাও = যেন সে কখনো বসবাসই করেনি। ফীহা = উহাতে। আলা = জেনে রাখো। বু’দাল্লিমাদইয়ানা = দূরে নিক্ষেপ করা হয়েছে মাদিয়ানবাসীকে। কামা = যেমন। বায়িদাত = দূরে নিক্ষেপ করা হয়েছিলো। সামূদা = সামূদকে।

যেন সে কখনো বসবাসই করেনি উহাতে। জেনে রাখো, দূরে নিক্ষেপ করা হয়েছে মাদিয়ানবাসীকে, যেমন দূরে নিক্ষেপ করা হয়েছিলো সামূদকে।

১১:৯৬
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। আরছালনা = আমরা প্রেরণ করেছি। মূসা = মূসাকে। বিআয়াতিনা = আমাদের আয়াতসমূহ সহকারে। ওয়া = আর। সুলতানাম মুবীনা = প্রকাশ্য সুলতান/ প্রমাণ সহকারে।

আর নিশ্চয় আমরা প্রেরণ করেছি মূসাকে আমাদের আয়াতসমূহ সহকারে আর প্রকাশ্য সুলতান/ প্রমাণ সহকারে।

১১:৯৭
ইলা ফিরআউনা ওয়া মালায়িহী = ফেরাউন ও মালায়েহীর/ ফেরাউন ও তার নির্বাহী পরিষদের কাছে। ফাত্তাবাঊ = তারপর তারা ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছে। আমরা ফিরআউনা = ফেরাউনের আদেশের। ওয়া = আর। মা আমরু ফিরআউনা = ফেরাউনের আদেশ ছিলো না। বিরাশীদিন = সঠিক/ ন্যায়সঙ্গত।

ফেরাউন ও মালায়েহীর/ ফেরাউন ও তার নির্বাহী পরিষদের কাছে। তারপর তারা ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছে ফেরাউনের আদেশের। আর ফেরাউনের আদেশ ছিলো না সঠিক/ ন্যায়সঙ্গত।

১১:৯৮
ইয়াক্বদুমু ক্বাওমুহু = সে তার কওমের সামনে থাকবে। ইয়াওমাল ক্বিয়ামাতি = ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে। ফাআওরাদাহুমুন্নারা = তারপর সে তাদেরকে নিয়ে যাবে (জাহান্নামের) আগুনে। ওয়া = আর। বি’ছাল ভিরদুল মাওরূদু = অত্যন্ত মন্দ তাদের উপস্থিত হবার স্থান, যেখানে তারা উপস্থিত হবে।

সে তার কওমের সামনে থাকবে ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে। তারপর সে তাদেরকে নিয়ে যাবে (জাহান্নামের) আগুনে। আর অত্যন্ত মন্দ তাদের উপস্থিত হবার স্থান, যেখানে তারা উপস্থিত হবে।

১১:৯৯
ওয়া = আর। উতবিঊ = তাদেরকে ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছে। ফী হাযিহি = ইহাতে (= দুনিয়াতে)। লা’নাতান = লা’নত/ অভিশাপ। ওয়া = আর। ইয়াওমাল ক্বিয়ামাতি = ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে। বি’ছার রিফদুল মারফূদু = অত্যন্ত মন্দ সে প্রতিফল, যা তাদেরকে প্রতিফলস্বরূপ দেয়া হবে।

আর তাদেরকে ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছে ইহাতে (= দুনিয়াতে) লা’নত/ অভিশাপ। আর ইয়াওমুল কিয়ামাতে/ কিয়ামাত দিবসে অত্যন্ত মন্দ সে প্রতিফল, যা তাদেরকে প্রতিফলস্বরূপ দেয়া হবে।

১১:১০০ শব্দার্থ: যালিকা = ইহা। মিন আম্বায়িল ক্বুরা = জনপদসমূহের সংবাদের কিছু অংশ। নাক্বুসসুহু = আমরা উহা বর্ণনা করছি। আলাইকা = তোমার কাছে। মিনহা = উহার মধ্য থেকে। ক্বায়িমুন = কিছু কায়েম/ প্রতিষ্ঠিত আছে। ওয়া = আর। হাসীদুন = কিছু কর্তিত/ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।

ইহা জনপদসমূহের সংবাদের কিছু অংশ। আমরা উহা বর্ণনা করছি তোমার কাছে। উহার মধ্য থেকে কিছু কায়েম/ প্রতিষ্ঠিত আছে আর কিছু কর্তিত/ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।

১১:১০১
ওয়া = আর। মা যলামনাহুম = আমরা তাদের উপর যুলুম করিনি। ওয়ালাকিন = কিন্তু। যলামূ = তারাই যুলুম করেছে। আনফুসাহুম = তাদের নিজেদের উপর। ফামা আগনাত = সুতরাং কাজে আসেনি। আনহুম = তাদের ব্যাপারে। আলিহাতুহুমুল্লাতী = তাদের ইলাহসমূহ, যাকে যাকে। ইয়াদঊনা = তারা ডাকে। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহকে বাদ দিয়ে। মিন শাইয়িন = কিছুমাত্রও। লাম্মা = যখন। জাআ = এসেছে। আমরু রব্বিকা = তোমার রবের আমার। ওয়া = আর। মা যাদুহুম = উহারা তাদেরকে কিছুই বাড়িয়ে দেয়নি। গায়রা তাতবীবিন = ধ্বংস ছাড়া।

আর আমরা তাদের উপর যুলুম করিনি কিন্তু তারাই যুলুম করেছে তাদের নিজেদের উপর। সুতরাং কাজে আসেনি তাদের ব্যাপারে তাদের ইলাহসমূহ, যাকে যাকে তারা ডাকে, আল্লাহকে বাদ দিয়ে, কিছুমাত্রও; যখন এসেছে তোমার রবের আদেশ; আর উহারা তাদেরকে কিছুই বাড়িয়ে দেয়নি ধ্বংস ছাড়া।

১১:১০২
ওয়া = আর। কাযালিকা = এভাবেই। আখযু রব্বিকা = তোমার রবের পাকড়াও আসে। ইযা = যখন। আখাযাল ক্বুরা = তিনি পাকড়াও করেন কোন জনপদকে। ওয়া = আর। হিয়া = উহা ছিলো। যলামাতুন = যালিম। ইন্না = নিশ্চয়। আখাযাহু = তাঁর পাকড়াও। আলীমুন শাদীদুন = কঠিন কষ্টদায়ক।

আর এভাবেই তোমার রবের পাকড়াও আসে যখন তিনি পাকড়াও করেন কোন জনপদকে। আর উহা (= ঐ জনপদ) ছিলো যালিম। নিশ্চয় তাঁর পাকড়াও কঠিন কষ্টদায়ক।

১১:১০৩
ইন্না = নিশ্চয়। ফী যালিকা = উহাতে আছে। লাআয়াতুন = আয়াত/ নিদর্শন। লিমান = তার জন্য যে। খাফা = ভয় করে। আযাবাল আখিরাতা = আখিরাতের আযাবকে/ শাস্তিকে। যালিকা = উহা। ইয়াওমাম মাজমূউন লাহুন্নাছা = সব মানুষকে একত্রিত করার দিন। ওয়া = আর। যালিকা = উহা। ইয়াওমুমমাশহূদুন = সাক্ষাতের/ উপস্থিতির দিন।

নিশ্চয় উহাতে আছে আয়াত/ নিদর্শন তার জন্য যে ভয় করে আখিরাতের আযাবকে/ শাস্তিকে। উহা সব মানুষকে একত্রিত করার দিন। আর উহা সাক্ষাতের/ উপস্থিতির দিন।

১১:১০৪
ওয়া = আর। মা নুআখখিরুহু = আমরা উহাকে বিলম্বিত করবো না। ইল্লা লিআজালিম মা’দূদিন = গণনাকৃত একটি আজাল/ সময়সীমা পর্যন্ত ছাড়া।

আর আমরা উহাকে বিলম্বিত করবো না, গণনাকৃত একটি আজাল/ সময়সীমা পর্যন্ত ছাড়া।

১১:১০৫
ইয়াওমা = সেদিন। ইয়া’তি = যখন আসবে। লা তাকাল্লামু = তখন কথা বলতে পারবে না। নাফসুন = কোন ব্যক্তি। ইল্লা বিইযনিহী = তাঁর অনুমতি ছাড়া। ফামিনহুম = তখন (দেখা যাবে) তাদের মধ্যকার। শাক্বিয়্যুন ওয়া ছায়ীদুন = কেউ কেউ দু:খিত আর কেউ কেউ আনন্দিত।

সেদিন যখন আসবে তখন কথা বলতে পারবে না কোন ব্যক্তি, তাঁর অনুমতি ছাড়া। তখন (দেখা যাবে) তাদের মধ্যকার কেউ কেউ দু:খিত আর কেউ কেউ আনন্দিত।

১১:১০৬
ফাআম্মাল্লাযীনা = তারপর যারা। শাক্বূ = দু:খিত হবে। ফাফিন্নারি লাহুম = তখন তারা (জাহান্নামের) আগুনে যাবে। ফীহা = উহাতে থাকবে। যাফীরুন = আর্তনাদ। ওয়া = আর। শাহীক্বুন = চিৎকার।

তারপর যারা দু:খিত হবে তখন তারা (জাহান্নামের) আগুনে যাবে, উহাতে থাকবে আর্তনাদ আর চিৎকার।

১১:১০৭
খালিদীনা ফীহা = তারা তাতে স্থায়ী হবে। মা দামাতিস সামাওয়াতু ওয়াল আরদু = যতদিন দায়েম/ প্রতিষ্ঠিত থাকবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী। ইল্লা মা শাআ রব্বুকা = (কিছুই হয় না) তোমার রবের ইচ্ছা ছাড়া। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বুকা = তোমার রব। ফাআলুন = উহার সম্পাদনকারী। লিমা ইউরীদু = যা তিনি এরাদা/ ইচ্ছা করেন।

তারা তাতে স্থায়ী হবে যতদিন দায়েম/ প্রতিষ্ঠিত থাকবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী। (কিছুই হয় না) তোমার রবের ইচ্ছা ছাড়া। নিশ্চয় তোমার রব উহার সম্পাদনকারী যা তিনি এরাদা/ ইচ্ছা করেন।

১১:১০৮
ওয়া = আর। আম্মাল্লাযীনা = যারা। ছাআদূ = আনন্দিত হবে। ফাফিল জান্নাতি = তারা যাবে জান্নাতে। খালিদীনা ফীহা = তারা তাতে স্থায়ী হবে। মা দামাতুস সামাওয়াতু ওয়াল আরদু = যতদিন দায়েম/ প্রতিষ্ঠিত থাকবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী। ইল্লা মা শাআ রব্বুকা = (কিছুই হয় না) তোমার রবের ইচ্ছা ছাড়া। আতাআন গায়রা মাখযূদিন = (তারা পাবে এরূপ) পুরস্কার যা অবিচ্ছিন্ন।

আর যারা আনন্দিত হবে তারা যাবে জান্নাতে। তারা তাতে স্থায়ী হবে যতদিন দায়েম/ প্রতিষ্ঠিত থাকবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী। (কিছুই হয় না) তোমার রবের ইচ্ছা ছাড়া। (তারা পাবে এরূপ) পুরস্কার যা অবিচ্ছিন্ন।

১১:১০৯
ফালা তাকু মিন মিরইয়াতিন = সুতরাং তুমি কোন সন্দেহে থেকো না। মিম্মা ইয়া’বুদু হাউলায়ি = তাদের ব্যাপারে যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব ইহারা করে। মা ইয়া’বুদূনা = ইহারা ইবাদাত/ দাসত্ব করে না। ইল্লা কামা ইয়া’বুদু আবাউহুম মিন ক্বাবলু = তাদের বাপদাদা আগে যেমন ইবাদাত/ দাসত্ব করেছে সেরূপ ছাড়া। ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয় আমরা। লামুওয়াফফূহুম = তাদেরকে পূর্ণ করে দেবো। নাসীবুহুম = তাদের নসীব/ প্রাপ্য অংশ। গায়রা মানক্বূসিন = কোনরূপ কম করা ছাড়াই।

সুতরাং তুমি কোন সন্দেহে থেকো না তাদের ব্যাপারে, যাদের ইবাদাত/ দাসত্ব ইহারা করে। ইহারা ইবাদাত/ দাসত্ব করে না তাদের বাপদাদা আগে যেমন ইবাদাত/ দাসত্ব করেছে সেরূপ ছাড়া। আর নিশ্চয় আমরা তাদেরকে পূর্ণ করে দেবো তাদের নসীব/ প্রাপ্য অংশ কোনরূপ কম করা ছাড়াই।

১১:১১০
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। আতাইনাল মূসাল কিতাবা = আমরা মূসাকে দিয়েছি কিতাব। ফাখতুলিফা ফীহি = তারপর ইখতিলাফ/ মতপার্থক্য করা হয়েছে উহার ব্যাপারে। ওয়া = আর। লাও লা = যদি না। কালিমাতুন ছাবাক্বাত = একটি বাণী আগেই নির্ধারিত হতো। মির রব্বিকা = তোমার রবের পক্ষ থেকে। লাক্বুদিয়া বায়নাহুম = তাহলে কবেই ফায়সালা করে দেয়া হতো তাদের মধ্যে। ওয়া = আর। ইন্নাহুম = নিশ্চয় তারা। লাফী শাক্কিন = সংশয়ের মধ্যে আছে। মিনহু = উহার ব্যাপারে। মুরীবিন = সন্দেহপূর্ণ অবস্থায়।

আর নিশ্চয় আমরা মূসাকে দিয়েছি কিতাব। তারপর ইখতিলাফ/ মতপার্থক্য করা হয়েছে উহার ব্যাপারে। আর যদি না একটি বাণী আগেই নির্ধারিত হতো তোমার রবের পক্ষ থেকে; তাহলে কবেই ফায়সালা করে দেয়া হতো তাদের মধ্যে। আর নিশ্চয় তারা সংশয়ের মধ্যে আছে উহার ব্যাপারে সন্দেহপূর্ণ অবস্থায়।

১১:১১১
ওয়া = আর। ইন্না = নিশ্চয়। কুল্লান = প্রত্যেকের ক্ষেত্রে। লাম্মা = যখন সময় আসবে তখন। লাইউওয়াফফিয়ান্নাহুম = তাদেরকে পূর্ণ করে দিবেন। রব্বুকা = তোমার রব। আ’মালাহুম = তাদের আমলসমূহের প্রতিফল। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। বিমা ইয়া’মালূনা খাবীরুন = তারা যে আমল করে উহার ব্যাপারে খাবীর (= যিনি খবর রাখেন)।

আর নিশ্চয় প্রত্যেকের ক্ষেত্রে যখন সময় আসবে তখন তাদেরকে পূর্ণ করে দিবেন তোমার রব তাদের আমলসমূহের প্রতিফল। নিশ্চয় তিনি তারা যে আমল করে উহার ব্যাপারে খাবীর (= যিনি খবর রাখেন)।

১১:১১২
ফাছতাক্বিম = সুতরাং কায়েম/ প্রতিষ্ঠিত থাকো। কামা = যেমন। উমিরতু = তুমি আদেশপ্রাপ্ত হয়েছো। ওয়া = আর। মান = যে। তাবা = তাওবা করেছে। মাআকা = তোমার সাথে। ওয়া = আর। লা তাতগাও = তোমরা সীমালংঘন করো না। ইন্নাহু = নিশ্চয় তিনি। বিমা তা’মালূনা বাসীরুন = তোমরা যে কাজ করো উহার ব্যাপারে বাসীর/ দ্রষ্টা (= যিনি দেখেন)।

সুতরাং কায়েম/ প্রতিষ্ঠিত থাকো যেমন তুমি আদেশপ্রাপ্ত হয়েছো আর সে, যে তাওবা করেছে তোমার সাথে। আর তোমরা সীমালংঘন করো না। নিশ্চয় তিনি তোমরা যে কাজ করো উহার ব্যাপারে বাসীর/ দ্রষ্টা (= যিনি দেখেন)।

১১:১১৩
ওয়া = আর। লা তারকানূ = ঝূঁকে যেও না। ইলাল্লাযীনা = তাদের দিকে যারা। যলামূ = যুলুম করেছে। ফাতামাছছাকুমুন্নারু = তা করলে তোমাদেরকে স্পর্শ করবে (জাহান্নামের) আগুন। ওয়া = আর। মা লাকুম = তোমাদের জন্য নেই। মিন দূনিল্লাহি = আল্লাহ ছাড়া। মিন আওলিয়াআ = কোন আওলিয়া/ অভিভাবক। ছুম্মা = তাছাড়া। লা তুনসরূনা = তাদেরকে কোন সাহায্যও করা হবে না।

আর ঝূঁকে যেও না তাদের দিকে যারা যুলুম করেছে। তা করলে তোমাদেরকে স্পর্শ করবে (জাহান্নামের) আগুন। আর তোমাদের জন্য নেই আল্লাহ ছাড়া কোন আওলিয়া/ অভিভাবক। তাছাড়া তাদেরকে কোন সাহায্যও করা হবে না।

১১:১১৪
ওয়া = আর। আক্বিমিস সালাতা = একটি করে সালাত কায়েম/ প্রতিষ্ঠা করো। তরাফায়িন্নাহারি = দিনের দুই তরফে/ ভাগে। ওয়া = আর। যুলাফাম মিনাল লাইলি = রাতের মধ্য থেকে যুলাফায়/ নিকটবর্তী সময়সমূহে। ইন্নাল হাছানাতু = নিশ্চয় উত্তম কাজ। ইউযহিবনাছ ছাইয়িয়াতি = সরিয়ে দেয় মন্দ কাজকে। যালিকা = ইহা। যিকরা লিয যাকিরীনা = যিকিরকারীদের/ স্মরণকারীদের জন্য যিকির/ স্মরণিকা।

আর একটি করে সালাত কায়েম/ প্রতিষ্ঠা করো দিনের দুই তরফে/ ভাগে, আর রাতের মধ্য থেকে যুলাফায়/ নিকটবর্তী সময়সমূহে। নিশ্চয় উত্তম কাজ সরিয়ে দেয় মন্দ কাজকে। ইহা যিকিরকারীদের/ স্মরণকারীদের জন্য যিকির/ স্মরণিকা (= যা স্মরণ রাখতে হয়)।

১১:১১৫
ওয়াসবির = আর সবর করো। ফাইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। লা ইউদীউ = নষ্ট করেন না। আজরাল মুহসিনীনা = মুহসিনদের/ উত্তম আচরণকারীদের পুরস্কার।

আর সবর করো। নিশ্চয় আল্লাহ নষ্ট করেন না মুহসিনদের/ উত্তম আচরণকারীদের পুরস্কার।

১১:১১৬
ফালাও লা কানা = সুতরাং কেন হয়নি। মিনাল ক্বুরূনি মিন ক্বাবলিকুম = তোমাদের আগের জনপদবাসীদের মধ্যে। উলূ বাক্বিয়্যাতিন = উলূ বাক্বিয়্যাত/ আখিরাতে পাবার প্রত্যাশী ব্যক্তিগণ। ইয়ানহাওনা = যারা নিষেধ করতো। আনিল ফাসাদি ফিল আরদি = পৃথিবীতে ফাসাদ/ বিপর্যয় সৃষ্টি করা থেকে। ইল্লা ক্বালীলান মিম্মান = তাদের মধ্যকার অল্পসংখ্যক ছাড়া। আনজায়না মিনহুম = আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি তাদেরকে (= ঐ অল্পসংখ্যককে)। ওয়াত্তাবাবায়াল্লাযীনা = আর তারা ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছে যারা। যলামূ = যুলুম করেছে। মা উতরিফূ ফীহি = উহারই যে ধনঐশ্বর্য তাদেরকে দেয়া হয়েছে। ওয়া = আর। কানূ = তারা ছিলো। মুজরিমূনা = অপরাধী।

সুতরাং কেন হয়নি তোমাদের আগের জনপদবাসীদের মধ্যে উলূ বাক্বিয়্যাত/ আখিরাতে পাবার প্রত্যাশী ব্যক্তিগণ, যারা নিষেধ করতো পৃথিবীতে ফাসাদ/ বিপর্যয় সৃষ্টি করা থেকে; তাদের মধ্যকার অল্পসংখ্যক ছাড়া, আমরা নাজাত/ মুক্তি দিয়েছি তাদেরকে (= ঐ অল্পসংখ্যককে)। আর তারা ইত্তেবা/ অনুসরণ করেছে যারা যুলুম করেছে, (অনুসরণ করেছে) উহারই যে ধনঐশ্বর্য তাদেরকে দেয়া হয়েছে; আর তারা ছিলো অপরাধী।

১১:১১৭
ওয়া = আর। মা কানা রব্বুকা = তোমার রব এমন নন যে। লিইউহলিকাল ক্বুরা = হালাক/ ধ্বংস করে দেবেন কোন জনপদকে। বিযুলমিন = যুলুম করে। ওয়া = এ সত্ত্বেও যে। আহলুহা = উহার আহাল/ অধিবাসীরা ছিলো। মুসলিহূনা = মুসলিহূন/ সৎকর্মশীল ও সংশোধনকারী।

আর তোমার রব এমন নন যে, হালাক/ ধ্বংস করে দেবেন কোন জনপদকে যুলুম করে; এ সত্ত্বেও যে, উহার আহাল/ অধিবাসীরা ছিলো মুসলিহূন/ সৎকর্মশীল ও সংশোধনকারী।

১১:১১৮
ওয়া = আর। লাও = যদি। শাআ = ইচ্ছা করতেন। রব্বুকা = তোমার রব। লাজাআলান্নাছা = তাহলে বানাতে পারতেন সমস্ত মানুষকে। উম্মাতান ওয়াহিদাতান = একই উম্মাত (= তাওহীদপন্থী উম্মাত)। ওয়া = আর। লা ইয়াযালূনা = তারা হতো না। মুখতালিফূনা = ইখতিলাফকারী/ মতপার্থক্যকারী।

আর যদি ইচ্ছা করতেন তোমার রব তাহলে বানাতে পারতেন সমস্ত মানুষকে একই উম্মাত (= তাওহীদপন্থী উম্মাত), আর তারা হতো না ইখতিলাফকারী/ মতপার্থক্যকারী।
[দ্র: ১১:১১৮, ৩২:১৩, ১০:৯৯, ০৬:১০৭, ৪২:৮, ১৩:৩১]

১১:১১৯
ইল্লা মার রহিমা রব্বুকা = যাকে যাকে রহমত/ অনুগ্রহ করেছেন তোমার রব তারা ছাড়া (অন্যরা ইখতিলাফে রত)। ওয়া = আর। লিযালিকা = এজন্যই (= পরীক্ষার জন্যই)। খালাক্বাকুম = তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। ওয়া = আর। তাম্মাত = পূর্ণ হয়ে গেছে। কালিমাতু রব্বিকা = তোমার রবের এই কালেমা/ বাণী। লাআমলাআন্না = আমি অবশ্যই ভরে দেবো। জাহান্নামা = জাহান্নামকে। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাছি = জ্বিন ও নাছ (দানব ও মানব) দিয়ে। আজমাঈনা = একত্রে।

যাকে যাকে রহমত/ অনুগ্রহ করেছেন তোমার রব তারা ছাড়া (অন্যরা ইখতিলাফে রত)। আর এজন্যই (= পরীক্ষার জন্যই) তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আর পূর্ণ হয়ে গেছে তোমার রবের এই কালেমা/ বাণী, ‘আমি অবশ্যই ভরে দেবো জাহান্নামকে জ্বিন ও নাছ (দানব ও মানব) দিয়ে একত্রে’।

১১:১২০
ওয়া = আর। কুল্লান = সবকিছুই। নাক্বুসসু = আমরা বর্ণনা করছি। আলাইকা = তোমার কাছে। মিন আম্বায়ির রুসুলি = রসূলদের সংবাদসমূহ থেকে। মা নুসাব্বিতু বিহি = যা এমন যে আমরা সাবেত/ সুদৃঢ় করছি উহার মাধ্যমে। ফুয়াদাকা = তোমার ফুয়াদকে/ মনকে। ওয়া = আর। জাআকা = তোমার কাছে এসেছে। ফী হাযিহিল হাক্বক্বি = ইহার মাধ্যমে সত্য তথ্য। ওয়া = আর। মাওয়িযাতুন = মাওয়িযাত/ ওয়াজ/ উপদেশ। ওয়া = আর। যিকরা লিল মু’মিনীনা = যিকরা লিল মু’মিনীন/ মু’মিনদের স্মরণিকা বা সংবিধান।

আর সবকিছুই আমরা বর্ণনা করছি তোমার কাছে রসূলদের সংবাদসমূহ থেকে, যা এমন যে, আমরা সাবেত/ সুদৃঢ় করছি উহার মাধ্যমে তোমার ফুয়াদকে/ মনকে। আর তোমার কাছে এসেছে ইহার মাধ্যমে সত্য তথ্য আর মাওয়িযাত/ ওয়াজ/ উপদেশ আর যিকরা লিল মু’মিনীন/ মু’মিনদের জন্য স্মরণিকা বা সংবিধান।

১১:১২১
ওয়া = আর। ক্বুল লিল্লাযীনা = বলো তাদের উদ্দেশ্যে যারা। লা ইউ’মিনূনা’মালূ = ঈমান/ বিশ্বাস করে না, ‘তোমরা আমল করো। আলা মাকানাতিকুম = তোমাদের মাকানে/ অবস্থানে থেকে। ইন্না = নিশ্চয় আমরাও। আমিলূনা = (আমাদের) কার্যসম্পাদনকারী।

আর বলো তাদের উদ্দেশ্যে যারা ঈমান/ বিশ্বাস করে না, ‘তোমরা আমল করো তোমাদের মাকানে/ অবস্থানে থেকে। নিশ্চয় আমরাও (আমাদের) কার্যসম্পাদনকারী’।

১১:১২২
ওয়ানতাযিরূ = আর তোমরা অপেক্ষা করো। ইন্না = নিশ্চয় আমরাও। মুনতাযিরূনা = অপেক্ষাকারী।

আর তোমরা অপেক্ষা করো। নিশ্চয় আমরাও অপেক্ষাকারী।

১১:১২৩
ওয়া = আর। লিল্লাহি = আল্লাহরই আয়ত্তে আছে। গায়বুছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদি = আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর গায়েব/ অদৃশ্য বিষয়সমূহ। ওয়া = আর। ইলাইহি = তাঁরই কাছে। ইউরজাউল আমরু কুল্লুহু = ফিরিয়ে নেয়া হয় সকল বিষয়। ফা’বুদূহু = সুতরাং তাঁরই ইবাদাত/ দাসত্ব করো। ওয়া = আর। তাওয়াক্কাল = তাওয়াক্কুল/ ভরসা করো। আলাইহি = তাঁরই উপর। ওয়া = আর। মা রব্বুকা = তোমার রব নন। বিগাফিলিন আম্মা তা’মালূনা = উহার ব্যাপারে গাফেল/ উদাসীন যা তোমরা করো।

আর আল্লাহরই আয়ত্তে আছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর গায়েব/ অদৃশ্য বিষয়সমূহ। আর তাঁরই কাছে ফিরিয়ে নেয়া হয় সকল বিষয়। সুতরাং তাঁরই ইবাদাত/ দাসত্ব করো আর তাওয়াক্কুল/ ভরসা করো তাঁরই উপর। আর তোমার রব নন উহার ব্যাপারে গাফেল/ উদাসীন যা তোমরা করো।

ট্যাগ / কী-ওয়ার্ড:

অন্যান্য প্রবন্ধ

April 22, 2024
গঠন রীতি ও শব্দের ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে কুরআনের সুরার ক্রম

কুরআনের ক্রম বের করার অনেক প্রচেষ্টা হয়েছে এবং বিভিন্ন মতামত রয়েছে। স্কলার মার্ক ডুরি কুরআনের শব্দ ও গঠন শৈলি ব্যবহার করে একটি ভিন্ন সুরার ক্রমে উপনিত হয়েছেন যা এই প্রবন্ধের বিষয়বস্ত

April 18, 2024
Quran Mistranslated Series - Ep 1: 36:40 "Each in an orbit, floating" - Major Mistranslation That Leads To A Geocentric Model of The Universe

In this series we will tackle Quranic verses which are repeatedly wrong translated across time in many different translation. The first in this series will focus on 36:40

April 16, 2024
The IQRA joins IQSA (International Quranic Studies Association)

We are happy to announce that The IQRA has joined the International Quranic Studies Association (IQSA). The International Qur’anic Studies Association (IQSA) is the first learned society dedicated to the study of the Qur’an. We hold conferences around the world and publish cutting-edge research and scholarship. The IQSA community and its partners include scholars, students, […]

April 15, 2024
আল কুরআনে তাগুতের পরিচয়

২:২৫৬ :: দীন গ্রহণের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। নিশ্চয় সত্যপথ স্পষ্ট হয়ে গেছে বিভ্রান্তি থেকে। সুতরাং যে ব্যক্তি তাগুতের প্রতি কুফর করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে সে এমন এক মজবুত হাতল আঁকড়ে ধরবে যা ভেঙ্গে যাবার নয়। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ২:২৫৭ :: আল্লাহ মু’মিনদের অভিভাবক, তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে […]

April 9, 2024
The Origin of Arabic Language & Its History

"And thus We have revealed to you an Arabic Qur'an" - Surah Ash-shuraa, verse 7 We explore the history and development of the Arabic language, as well as its connection to religion. Here are compilation of a few resources via YouTube. The Origins of Arabic - The Arabic Language How Arabia Got Its Name? What […]

April 8, 2024
Ghulam Ahmad Parwez - A Scholar of Islam

Among Muslim scholars, particularly who translated and interpreted the Quran in modern times, I am very fascinated and interested in the thoughts of late Ghulam Ahmad Parwez (1903-1985), also known as G A Parwez. Here is a summary as a way of introduction to this noteworthy scholar. Ghulam Ahmad Parwez was a prominent Islamic scholar, […]

April 6, 2024
The Qur'an and the Just Society - Ramon Harvey - Book Review

Main Topic or Theme The main theme of "The Qur'an and the Just Society" by Ramon Harvey revolves around exploring the ethical and moral framework provided by the Qur'an for creating a just society. Key Ideas or Arguments Chapter Titles or Main Sections Chapter Summaries Key Takeaways or Conclusions Author's Background and Qualifications Ramon Harvey […]

April 5, 2024
না বুঝে কুরআন পড়ে আমরা শয়তানকে যেভাবে সাহায্য করি

১.স্টারপিক ফ্যাক্টরির মালিক সোহান সাহেব। ফ্যাক্টরির বয়স প্রায় ২৫ বছরের বেশি, মালিকের বয়স ৬৭ বছর। তার ফ্যাক্টরির পুরনো এবং বিশ্বস্ত ম্যানেজার হলো ফারুক সাহেব। মালিক সোহান সাহেব এবার ঠিক করেছেন টানা ২ মাসের জন্য তিনি ফ্যাক্টরির নিয়মিত কাজ থেকে বিরতি নিয়ে আমেরিকায় তার মেয়ে, মেয়ে জামাই ও নাতিদের সাথে সময় কাটাবেন। দীর্ঘ ২ মাস তার […]