ইক্বরার লক্ষ্য হলো বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য স্রষ্টার ঐশী বাণীর সমন্বিত অধ্যয়ন ও সার্বজনীন প্রয়োগের জন্য জ্ঞানদীপ্ত অনুশীলন।
উদ্দেশ্য
ইক্বরার উদ্দেশ্য হলো কুরআনের বাণীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অনুধাবনের জন্য টেকসই ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জীবন ও সমাজের প্রায়োগিকতার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক বা কাঠামো নির্মাণ।
যেমন: সুরা নাহালের ১২৫ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান কর প্রজ্ঞা ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাতে তর্ক করবে উত্তম পন্থায় ।
এ আয়াতে প্রজ্ঞা বা হেকমত অবলম্বন করে এবং সৎ উপদেশের মাধ্যমে আল্লাহর পরে আহ্বান করার আদেশ দেয়া হয়েছে ।
পারিভাষিক অর্থ
যাবতীয় বিষয়বস্তুকে সঠিক জ্ঞান দ্বারা জানাকে হিকমাহ বলে অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা নবী-রাসুলদেরকে যে কিতাব দিয়েছেন, সে কিতাবের আয়াতগুলোকে তারা কিভাবে প্রয়োগ বা বাস্তবায়ন করবেন সেই জ্ঞানকেই (Applied Knowledge) হিকমাহ বলে ।
সুরা বাকারার ২৬৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ তিনি যাকে ইচ্ছা হিকমাহ প্রদান করেন এবং যাকে হিকমাহ প্রদান করা হয় তাকে প্রভূত কল্যাণ দান করা হয়; এবং বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরাই শুধু শিক্ষা গ্রহণ করে ।
সুরা আহজাবের ৩৪ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ আল্লাহর আয়াত ও জ্ঞানের কথা যা তোমাদের গৃহে পঠিত হয়, তা তোমরা স্মরণ রাখবে; আল্লাহ অতি সূক্ষ্ণদর্শী, সর্ববিষয়ে অবহিত ।
এ আয়াতে হিকমাহ দ্বারা জ্ঞানের কথাকে বুঝানো হয়েছে । অর্থাৎ আয়াত এবং আয়াতের বাস্তব প্রয়োগ বা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের যে সকল কথা তোমাদের গৃহে আলোচনা করা হয় তা তোমরা স্মরণ রাখবে ।
সুরা বাকারার ২৫১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ সুতরাং তারা আল্লাহর হুকুমে তাদেরকে পরাভূত করল; দাউদ জালূতকে হত্যা করল, আল্লাহ তাকে রাজত্ব ও হিকমাহ দান করলেন এবং যা তিনি ইচ্ছা করলেন তা তাকে শিক্ষা দিলেন ।
কোথাও কোথাও হিকমাহ দ্বারা সরাসরি কুরআনের আয়াত বা কুরআনের বিধিবিধানকে বুঝানো হয়েছে ।
যেমনঃ সুরা বনিইসরাইলের ২৩ নং আয়াত থেকে ৩৮ নং আয়াত পর্যন্ত আমাদের জন্য বিভিন্ন ধরণের বিধিবিধান বর্ননা করার পর ফাইনাললি আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ তোমার প্রতিপালক ওহীর দ্বারা তোমাকে যে হিকমাহ দান করেছেন এইগুলি তার অন্তর্ভূক্ত । তুমি আল্লাহ সাথে অপর ইলাহ স্থির করিওনা, করলে তুমি নিন্দিত ও বিতাড়িত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে ।
এ আয়াতে ’’এইগুলি’’ দ্বারা ২৩ নং আয়াত থেকে ৩৮ নং আয়াত পর্যন্ত যে বিধিবিধানগুলো বর্ননা করা হয়েছে সেগুলোকে বুঝানো হয়েছে ।
সুরা কামারের ৪ ও ৫ নং আয়াতে হিকমাহ দ্বারা সরাসরি কুরআনকে বুঝানো হয়েছে ।
৪: উহাদের নিকট আসিয়াছে সুসংবাদ, যাহাতে আছে সাবধান বানী; ৫: ইহা পরিপূর্ণ জ্ঞান, তবে এই সতর্কবাণী উহাদের কোন উপকারে আসে নাই।
৫ নং আয়াতে ’’হিকমাতুন বালিগাতুন’’ দ্বারা ৪ নং আয়াতের ’’মিনাল আমবাই’’ (সুসংবাদ) বা কুরআনকে বুঝানো হয়েছে।
কুরআনে হিকমাহ শব্দটি ২০ বার এসেছে । নিচে হিকমাহ সংক্রান্ত আয়াতগুলো দেয়া হলোঃ
২:১২৯
রব্বানা = আমাদের রব। ওয়াবআছ = সমুত্থিত (প্ররণ) করুন। ফীহিম = তাদের মধ্যে। রসূলান = একজন রসূল। মিনহুম = তাদের মধ্য থেকে। ইয়াতলূ আলাইহিম আয়াতিকা = যে তিলাওয়াত করবে তাদের সামনে আপনার আয়াতসমূহ। ওয়া ইউআল্লিমুহুমুল কিতাবা ওয়াল হিকমাতা = আর তাদেরকে শিক্ষাদান করবে কিতাব ও হিকমাত (কিতাব ও হিকমাত কুরআনের দুটি বিশেষত্ব প্রকাশক পরিচয়)। ওয়া ইউযাক্কিহিম = আর তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবে। ইন্নাকা আনতাল আযীযুল হাকীম = নিশ্চয় আপনি আল আযীয/ মহাশক্তিমান, আল হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।
আমাদের রব, সমুত্থিত (প্রেরণ) করুন তাদের মধ্যে একজন রসূল তাদের মধ্য থেকে যে তিলাওয়াত করবে তাদের সামনে আপনার আয়াতসমূহ আর তাদেরকে শিক্ষাদান করবে কিতাব ও হিকমাত (কিতাব ও হিকমাত কুরআনের দুটি বিশেষত্ব প্রকাশক পরিচয়), আর তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবে। নিশ্চয় আপনি আল আযীয/ মহাশক্তিমান, আল হাকীম/ মহাবিজ্ঞ।
2:151
কামা = যেমন। আরছালনা ফীকুম রসূলাম মিনকুম = আমি প্রেরণ করেছি তোমাদের মধ্যে একজন রসূল তোমাদের মধ্য থেকে। ইয়াতলূ আলাইকুম আয়াতিনা = যে তিলাওয়াত করে তোমাদের সামনে আমার আয়াতসমূহ। ওয়া ইউযাক্কিকুম = আর তোমাদেরকে পরিশুদ্ধ করে। ওয়া ইউআল্লিমুকুমুল কিতাবা ওয়াল হিকমাতা = আর তোমাদেরকে শিক্ষাদান করে কিতাব ও হিকমাত (কিতাব ও হিকমাত কুরআনের দুটি বিশেষত্ব প্রকাশক পরিচয়)। ওয়া ইউআল্লিমুকুম মা লাম তাকূনু তা’লামূন = আর তোমাদেরকে শিক্ষাদান করে যা তোমরা জানতে না।
যেমন আমি প্রেরণ করেছি তোমাদের মধ্যে একজন রসূল তোমাদের মধ্য থেকে, যে তিলাওয়াত করে তোমাদের সামনে আমার আয়াতসমূহ। আর তোমাদেরকে পরিশুদ্ধ করে। আর তোমাদেরকে শিক্ষাদান করে কিতাব ও হিকমাত (কিতাব ও হিকমাত কুরআনের দুটি বিশেষত্ব প্রকাশক পরিচয়)। আর তোমাদেরকে শিক্ষাদান করে যা তোমরা জানতে না।
২:২৩১
ওয়া = আর। ইযা = যখন। তল্লাক্বতুমুন্নিছাআ = তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও। ফাবালাগনা আজালাহুন্না = তারপর তারা পৌঁছে তাদের আজালে/ ইদ্দাতের শেষসীমায়। ফাআমছিকূহুন্না বিমা’রূফিন = তখন হয় তাদেরকে রেখে দাও ন্যায়পরায়নতার সাথে। আও ছাররিহূহুন্না বিমা’রূফিন = না হয় তাদেরকে বিদায় দাও ন্যায়পরায়নতার সাথে। ওয়া লা তুমছিকূহুন্না দিরারান = আর তাদেরকে (ফিরিয়ে নিয়ে) আটকে রেখ না যাতনা দেয়ার উদ্দেশ্যে। লিতা’তাদূ = কেননা তাতে বাড়াবাড়ি করা হয়। ওয়া মাইঁ ইয়াফআল যালিকা = আর যে এরূপ করে। ফাক্বাদ যলামা নাফছাহু = সে অবশ্যই যুলুম/ অত্যাচার করে তার নিজের জীবনসত্তার প্রতি। ওয়া = আর। লা তাত্তাখিজূ = তোমরা গ্রহণ করো না। আয়াতিল্লাহি = আল্লাহর আয়াতসমূহকে। হুযুওয়ান = হাসি তামাশার বিষয় হিসাবে। ওয়াযকুরু = আর যিকর/ স্মরণ রাখো। নি’মাতাল্লাহি আলাইকুম = আল্লাহ তোমাদের উপর যে নিয়ামাত/ অনুগ্রহ করেছেন তা। ওয়া = আর (স্মরণ রাখ)। মা = যা। আনযালা = তিনি নাযিল করেছেন। আলাইকুম = তোমাদের উপর। মিনাল কিতাবি ওয়াল হিকমাতি = (তাঁর) কিতাব ও হিকমাত থেকে। ইউয়িযুকুম বিহী = তিনি তোমাদেরকে ওয়াজ করেন/ উপদেশ দেন উহা দ্বারা। ওয়াত্তাক্বুল্লাহা = আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। ওয়া’লামু = আর জেনে রাখো। আন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। বিকুল্লি সাইয়িন আলীম = সব বিষয়ে আলীম/ জ্ঞানী।
আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও (প্রথমবার বা দ্বিতীয়বার) তারপর তারা পৌঁছে তাদের আজালে/ ইদ্দাতের শেষসীমায়, তখন হয় তাদেরকে রেখে দাও ন্যায়পরায়নতার সাথে, না হয় তাদেরকে বিদায় দাও ন্যায়পরায়নতার সাথে। আর তাদেরকে (ফিরিয়ে নিয়ে) আটকে রেখ না যাতনা দেয়ার উদ্দেশ্যে, কেননা তাতে বাড়াবাড়ি করা হয়। আর যে এরূপ করে সে অবশ্যই যুলুম/ অত্যাচার করে তার নিজের জীবনসত্তার প্রতি। আর তোমরা গ্রহণ করো না আল্লাহর আয়াতসমূহকে হাসি তামাশার বিষয় হিসাবে। আর যিকর/ স্মরণ রাখো আল্লাহ তোমাদের উপর যে নিয়ামাত/ অনুগ্রহ করেছেন তা। আর (স্মরণ রাখ) যা তিনি নাযিল করেছেন তোমাদের উপর (তাঁর) কিতাব ও হিকমাত থেকে, তিনি তোমাদেরকে ওয়াজ করেন/ উপদেশ দেন উহা দ্বারা। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আর জেনে রাখো, নিশ্চয় আল্লাহ সব বিষয়ে আলীম/ জ্ঞানী।
২:২৫১
ফাহাযামূহুম = সুতরাং তারা (তালুত ও তার সেনাবাহিনী) তাদেরকে (জালুত ও তার সেনাবাহিনীকে) পরাজিত করেছে। বিইযনিল্লাহি = আল্লাহর অনুমতিক্রমে। ওয়া = আর। কাতালা = কাতল/ হত্যা করেছে। দাউদা জালূতা = দাউদ জালুতকে। ওয়া = আর। আতাহুল্লাহু = আল্লাহ তাকে (দাউদকে) দান করেছেন। আল মুলকু ওয়াল হিকমাতা = অধিনায়কত্ব ও হিকমাত/ বিজ্ঞতা। ওয়া = আর। আল্লামাহু = তাকে শিক্ষা দিয়েছেন। মিম মা ইয়াশাউ = যা (তাকে শিক্ষা দেয়ার) ইচ্ছা করেছেন। ওয়া = আর। লাও লা = যদি না করা হতো। দাফউল্লাহি = আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিহত। আন্নাছা বা’দুহুম লিবা’দিন = মানুষের একটি দলকে অপর একটি দল দ্বারা। লাফাসাদাতিল আরদি = পৃথিবী ফাসাদগ্রস্ত/ বিপর্যস্ত হয়ে যেত। ওয়ালাকিন্নাল্লাহা = কিন্তু আল্লাহ। যূ ফাদলিন = যূ ফাদলিন/ অনুগ্রহশীল। আলাল আলামীন = সমগ্র বিশ্ববাসীর উপর।
সুতরাং তারা (তালুত ও তার সেনাবাহিনী) তাদেরকে (জালুত ও তার সেনাবাহিনীকে) পরাজিত করেছে আল্লাহর অনুমতিক্রমে। আর কাতল/ হত্যা করেছে দাউদ জালুতকে। আর আল্লাহ তাকে (দাউদকে) দান করেছেন অধিনায়কত্ব ও হিকমাত/ বিজ্ঞতা। আর তাকে (দাউদকে) শিক্ষা দিয়েছেন যা (তাকে শিক্ষা দেয়ার) ইচ্ছা করেছেন। আর যদি না করা হতো আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিহত মানুষের একটি দলকে অপর একটি দল দ্বারা, তাহলে পৃথিবী ফাসাদগ্রস্ত/ বিপর্যস্ত হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ যূ ফাদলিন/ অনুগ্রহশীল সমগ্র বিশ্ববাসীর উপর।
২:২৬৯
ইউ’তিল হিকমাতা = তিনি দান করেন হিকমাত/ বিজ্ঞতা/ প্রজ্ঞা। মাইঁ ইয়াশাউ = যাকে তিনি (হিকমাতদানের) ইচ্ছা করেন। ওয়া = আর। মাইঁ ইয়ুতাল হিকমাতা = যাকে হিকমাত দেয়া হয়েছে। ফাক্বাদ উতিয়া = নিশ্চয় তাকে দেয়া হয়েছে। খায়রান কাছীরান = অনেক কল্যাণকর একটি বিষয়। ওয়া = আর। মা ইয়াযযাক্কারু = কেউ যিকর/ বুঝলাভ ও স্মরণ করে না। ইল্লা উলুল আলবাব = উলুল আলবাব/ চিন্তাশীল ব্যক্তিগণ ছাড়া।
তিনি দান করেন হিকমাত/ বিজ্ঞতা/ প্রজ্ঞা যাকে তিনি (হিকমাতদানের) ইচ্ছা করেন। আর যাকে হিকমাত দেয়া হয়েছে নিশ্চয় তাকে দেয়া হয়েছে অনেক কল্যাণকর একটি বিষয়। আর কেউ যিকর/ বুঝলাভ ও স্মরণ করে না উলুল আলবাব/ চিন্তাশীল ব্যক্তিগণ ছাড়া।
৩:৪৮
ওয়া = আর। ইয়ুআল্লিমুহুমুল কিতাবা = তাকে শিক্ষা দিবেন কিতাব। ওয়াল হিকমাতা = ও হিকমাত। ওয়াত তাওরাতা = আর তাওরাত। ওয়াল ইনজীলা = ও ইনজীল।
আর তাকে শিক্ষা দিবেন কিতাব ও হিকমাত, আর তাওরাত ও ইনজীল।
৩:৮১
ওয়া ইয = আর (সেই সময়ের কথা উল্লেখ্য) যখন। আখাজাল্লাহু = আল্লাহ গ্রহণ করেছেন। মীছাক্বান্নাবিয়্যীনা = নবীদের মীছাক্ব/ প্রতিশ্রুতি। লামা আতাইতুকুম = যা আমি তোমাদেরকে দিয়েছি। মিন কিতাবিওঁ ওয়া হিকমাতিন = কিতাব ও হিকমাত থেকে। ছুম্মা = তারপর (যখন)। জাআকুম = তোমাদের কাছে আসবে। রসূলুন = কোন রসূল (০৫: ১২)/ (শেষপর্যায়ে) একজন রসূল (= মুহাম্মাদ/ আহমাদ ০৭: ১৫৭, ৬১: ০৬, ০২: ১০১)। মুসাদ্দিক্বাল লিমা মাআকুম = তোমাদের সাথে যা আছে তার মুসাদ্দিক/ সত্যতা প্রতিপাদনকারী। লাতু’মিনুন্না বিহী = (তখন) তোমরা (যারা তখন থাকবে) অবশ্যই তার প্রতি ঈমান রাখবে। ওয়া = আর। লাতানছুরান্নাহু = তাকে সাহায্য করবে। ক্বলা = তিনি বলেছেন। আআক্বরারতুম = তোমরা কি সম্মতি প্রকাশ করলে? ওয়া = আর। আখাজতুম = তোমরা কি গ্রহণ করলে। আলা যালিকুম = এ সম্পর্কে। ইসরী = আমার দেয়া দায়িত্বভার? ক্বলূ = তারা বলেছে। আক্বরারনা = আমরা সম্মতি প্রকাশ করলাম। ক্বলা = তিনি বলেছেন। ফাশহাদূ = তোমরা সাক্ষী থাকো। ওয়া = আর। আনা = আমিও। মাআকুম = তোমাদের সাথে। মিনাশ শাহিদীন = সাক্ষীদের অন্তর্ভুক্ত।
আর (সেই সময়ের কথা উল্লেখ্য) যখন আল্লাহ গ্রহণ করেছেন নবীদের মীছাক্ব/ প্রতিশ্রুতি। ‘যা আমি তোমাদেরকে দিয়েছি কিতাব ও হিকমাত থেকে তারপর (যখন) তোমাদের কাছে আসবে কোন রসূল (০৫: ১২)/ (শেষপর্যায়ে) একজন রসূল (= মুহাম্মাদ/ আহমাদ ০৭: ১৫৭, ৬১: ০৬, ০২: ১০১) তোমাদের সাথে যা আছে তার মুসাদ্দিক/ সত্যতা প্রতিপাদনকারী (তখন) তোমরা (যারা তখন থাকবে) অবশ্যই তার প্রতি ঈমান রাখবে আর তাকে সাহায্য করবে’। তিনি (আল্লাহ) বলেছেন, ‘তোমরা কি সম্মতি প্রকাশ করলে? আর তোমরা কি গ্রহণ করলে এ সম্পর্কে আমার দেয়া দায়িত্বভার?’ তারা বলেছে, ‘আমরা সম্মতি প্রকাশ করলাম’। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা সাক্ষী থাকো। আর আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষীদের অন্তর্ভুক্ত।
৩:১৬৪
লাক্বাদ = নিশ্চয়। মান্নাল্লাহা = আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। আলাল মু’মিনীনা = মু’মিনদের উপর। ইয = যখন। বাআছা = তিনি সমুত্থিত (প্রেরণ) করেছেন। ফীহিম = তাদের মধ্যে। রসূলান = একজন রসূল। মিন আনফুসিহিম = তাদের নিজেদের মধ্য থেকে। ইয়াতলূ আলাইহিম আয়াতিহী = যে তিলাওয়াত করে তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ। ওয়া ইউযাক্কিহিম = আর তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে। ওয়া ইউআল্লিমুহুমুল কিতাবা ওয়াল হিকমাতা = আর তাদেরকে শিক্ষাদান করে কিতাব ও হিকমাত (কিতাব ও হিকমাত কুরআনের দুটি বিশেষত্ব প্রকাশক পরিচয়)। ওয়া ইন = যদিও। কানূ = তারা ছিলো। মিন ক্বাবলু = এর আগে। লাফী দলালিম মুবীন = প্রকাশ্য বিভ্রান্তির মধ্যে।
নিশ্চয় আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন মু’মিনদের উপর যখন তিনি সমুত্থিত (প্রেরণ) করেছেন তাদের মধ্যে একজন রসূল তাদের নিজেদের মধ্য থেকে। যে তিলাওয়াত করে তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ, আর তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে, আর তাদেরকে শিক্ষাদান করে কিতাব ও হিকমাত (কিতাব ও হিকমাত কুরআনের দুটি বিশেষত্ব প্রকাশক পরিচয়)। যদিও তারা ছিলো এর আগে প্রকাশ্য বিভ্রান্তির মধ্যে।
৪:৫৪
আম = নাকি। ইয়াহছুদূনান্নাছা = তারা মানুষকে হিংসা করে। আলা মা = উহার উপর ভিত্তি করে যা। আতাহুমুল্লাহু = আল্লাহ তাদেরকে দিয়েছেন। মিন ফাদলিহী = তাঁর ফদল/ অনুগ্রহ থেকে। ফাক্বাদ = তাহলে তারা জেনে রাখুক নিশ্চয়। আতাইনা = আমরা দিয়েছি। আলা ইবরাহীমাল কিতাবা ওয়াল হিকামাতা = আলে ইবরাহীমকে/ ইবরাহীমের বংশধরদেরকে কিতাব ও হিকমাত (দ্র: কিতাব ও হিকমাত আল কুরআনের দুটি বিশেষত্ব প্রকাশক পরিচয়)। ওয়া = আর। আতাইনাহুম = আমরা তাদেরকে দিয়েছি। মুলকান আযীমা = মহাআধিপত্য।
নাকি তারা মানুষকে হিংসা করে উহার উপর ভিত্তি করে যা আল্লাহ তাদেরকে দিয়েছেন তাঁর ফদল/ অনুগ্রহ থেকে? তাহলে তারা জেনে রাখুক নিশ্চয় ইতোপূর্বে আমরেই দিয়েছিলাম আলে ইবরাহীমকে/ ইবরাহীমের বংশধরদেরকে কিতাব ও হিকমাত (দ্র: কিতাব ও হিকমাত আল কুরআনের দুটি বিশেষত্ব প্রকাশক পরিচয়), আর আমরাই তাদেরকে দিয়েছিলাম মহাআধিপত্য।
৪:১১৩
ওয়া = আর। লাও লা = যদি না হতো। লা ফাদলুল্লাহি = আল্লাহর ফযল/ অনুগ্রহ। আলাইকা = তোমার উপর। ওয়া = আর। রাহমাতুহূ = (না হতো) তাঁর রহমত/ দয়া। লাহাম্মাত = তাহলে তো হিম্মত করেই ফেলেছিলো। তয়িফাতুম মিনহুম = তাদের মধ্যকার একদল। আইঁ ইউদিল্লূকা = তোমাকে বিভ্রান্ত করতে। ওয়া = আর। মা ইউদিল্লূকা = তারা তো বিভ্রান্ত করবে না। ইল্লা আনফুছাহুম = তাদের নিজেদেরকে ছাড়া অন্যদেরকে। ওয়া = আর। মা ইয়াদুররূনাকা = তারা তোমার ক্ষতি করতে পারবে না। মিন শাইয়িন = কিছুমাত্রও। ওয়া = আর। আনযালাল্লাহু = আল্লাহ নাযিল করেছেন। আলাইকাল কিতাবা = তোমার উপর কিতাব। ওয়াল হিকমাতা = ও হেকমত {কিতাব ও হিকমাত কুরআনের দুটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশক নাম}। ওয়া = আর। আল্লামাকা = তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন। মা লাম তাকুন তা’লাম = (এমন বিষয়) যা তুমি জানতে না। ওয়া কানা ফাদলুল্লাহি আলাইকা আযীমা = আর আল্লাহর ফযল/ অনুগ্রহ তোমার উপর অনেক বড়।
আর যদি না হতো আল্লাহর ফযল/ অনুগ্রহ তোমার উপর আর (না হতো) তাঁর রহমত/ দয়া. তাহলে তো হিম্মত করেই ফেলেছিলো তাদের মধ্যকার একদল তোমাকে বিভ্রান্ত করতে। আর তারা তো বিভ্রান্ত করবে না তাদের নিজেদেরকে ছাড়া অন্যদেরকে। আর তারা তোমার ক্ষতি করতে পারবে না, কিছুমাত্রও। আর আল্লাহ নাযিল করেছেন তোমার উপর কিতাব ও হেকমত {কিতাব ও হেকমত কুরআনের দুটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশক নাম}। আর (আল কুরআনের মাধ্যমে) তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন (এমন বিষয়) যা তুমি জানতে না। আর আল্লাহর ফযল/ অনুগ্রহ তোমার উপর অনেক বড়।
৫:১১০
ইয = যখন। ক্বলাল্লাহু = আল্লাহ বলবেন। ইয়া ঈসাবনা মারইয়ামা = হে ঈসা ইবনে মারইয়াম। উযকুরূ নি’মাতী আলাইকা = যিকর/ স্মরণ করো আমার নিয়ামত যা আমি তোমার উপর করেছি। ওয়া আলা ওয়ালিদাতিকা = আর তোমার মায়ের উপর করেছি। ইয = যখন। আইয়াত্তুকা = তোমাকে সাহায্য করেছি। বিরূহিল কুদুস = রুহুল কুদুস/ পবিত্র আত্মা (= জিবরীল) এর মাধ্যমে। তুকাল্লিমুন্নাছা = তুমি মানুষের সাথে যথাযথভাবে কথা বলেছো। ফিল মাহদি ওয়াল কাহলান = দোলনায় চড়া বাল্যবয়সে এবং পরিণত প্রৌঢ় বয়সে। ওয়া = আর। ইয = যখন। আল্লামতুকাল কিতাবা ওয়াল হিকমাতা = তোমাকে শিক্ষা দিয়েছি কিতাব ও হিকমাত। ওয়াত্তাওরাতা ওয়াল ইনজীলা = আর তাওরাত ও ইনজীল। ওয়া = আর। ইয = যখন। তাখলুক্বু = তুমি গঠন করতে। মিনাত তীনি = কাদামাটি থেকে। কাহায়আতিত তয়রি = পাখির কাঠামোসদৃশ। বিইযনী = আমার অনুমতিক্রমে। ফাতানফুখু ফীহা = তারপর উহার মধ্যে ফুঁকে দিতে। ফাতাকূনু তয়রান = যার ফলে উহা হয়ে যেতো পাখি। বিইযনী = আমার অনুমতিক্রমে। ওয়া = আর। তুবরিয়ু = তুমি সুস্থ করতে। আল আকমাহা ওয়াল আবরাসা = অন্ধকে ও কুষ্ঠ রোগগ্রস্তকে। বিইযনী = আমার অনুমতিক্রমে। ওয়া = আর। ইয = যখন। তুখরিজুল মাওতা = তুমি মৃতকে (জীবিত করে) বের করতে। বিইযনী = আমার অনুমতিক্রমে। ওয়া = আর। ইয = যখন। কাফাফতু = আমি নিবৃত্ত করেছি। বানী ইসরাইলা = বানী ইসরাইলকে। আনকা = তোমার (ক্ষতি করা) থেকে। ইয = যখন। জি’তাহুম = তুমি তাদের কাছে পৌঁছেছো। বিল বাইয়িনাতি = বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণসমূহসহ। ফাক্বালাল্লাযীনা কাফারূ মিনহুম = তখন তাদের মধ্যকার যারা কুফর করেছে তারা বলেছে। ইন হাযা = ইহা কিছু নয়। ইল্লা সিহরুম মুবীন = প্রকাশ্য যাদু ছাড়া।
যখন আল্লাহ বলবেন, ‘হে ঈসা ইবনে মারইয়াম, যিকর/ স্মরণ করো আমার নিয়ামত যা আমি তোমার উপর করেছি আর তোমার মায়ের উপর করেছি। যখন তোমাকে সাহায্য করেছি রুহুল কুদুস/ পবিত্র আত্মা (= জিবরীল) এর মাধ্যমে। তুমি মানুষের সাথে যথাযথভাবে কথা বলেছো দোলনায় চড়া বাল্যবয়সে এবং পরিণত প্রৌঢ় বয়সে। আর যখন তোমাকে শিক্ষা দিয়েছি কিতাব ও হিকমাত, আর তাওরাত ও ইনজীল। আর যখন তুমি গঠন করতে কাদামাটি থেকে পাখির কাঠামোসদৃশ আমার অনুমতিক্রমে। তারপর উহার মধ্যে ফুঁকে দিতে, যার ফলে উহা হয়ে যেতো পাখি আমার অনুমতিক্রমে। তুমি সুস্থ করতে অন্ধকে ও কুষ্ঠ রোগগ্রস্তকে আমার অনুমতিক্রমে। আর যখন তুমি মৃতকে (জীবিত করে) বের করতে আমার অনুমতিক্রমে। আর যখন আমি নিবৃত্ত করেছি বানী ইসরাইলকে তোমার (ক্ষতি করা) থেকে, যখন তুমি তাদের কাছে পৌঁছেছো বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণসমূহসহ। তখন তাদের মধ্যকার যারা কুফর করেছে তারা বলেছে, ‘ইহা কিছু নয় প্রকাশ্য যাদু ছাড়া’।
১৬:১২৫
উদঊ = দাওয়াত দাও/ আহবান করো/ ডাকো। ইলা সাবীলি রব্বিকা = তোমার রবের পথের দিকে। বিল হিকমাতি = হিকমাতের/ বিচক্ষণতার/ বিজ্ঞতাপূর্ণ বাণীর (= কুরআনের) মাধ্যমে। ওয়াল মাওয়িযাতিল হাসানাতি = আর মাওয়িযাতিল হাছানা/ উত্তম উপদেশের (= কুরআনের) মাধ্যমে। ওয়া = আর। জাদিলহুম = তাদের সাথে বিতর্ক করো। বিল্লাতী হিয়া আহসানু = ঐ পদ্ধতি অবলম্বন ও যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে যা অধিক উত্তম (= কুরআন বর্ণিত পদ্ধতি ও যুক্তিধারা)। ইন্না = নিশ্চয়। রব্বাকা হুয়া আ’লামু = তোমার রবই জানেন। বিমান = তার সম্পর্কে যে। দল্লা = বিভ্রান্ত হয়েছে। আন ছাবীলিহী = তাঁর পথ থেকে। ওয়া = আর। হুয়া = তিনিই। আ’লামু = জানেন। বিল মুহতাদীনা = হিদায়াতপ্রাপ্তদের সম্পর্কে।
দাওয়াত দাও/ আহবান করো/ ডাকো তোমার রবের পথের দিকে হিকমাতের/ বিচক্ষণতার/ বিজ্ঞতাপূর্ণ বাণীর (= কুরআনের) মাধ্যমে, আর মাওয়িযাতিল হাছানা/ উত্তম উপদেশের (= কুরআনের) মাধ্যমে, আর তাদের সাথে বিতর্ক করো ঐ পদ্ধতি অবলম্বন ও যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে যা অধিক উত্তম (= কুরআন বর্ণিত পদ্ধতি ও যুক্তিধারা)। নিশ্চয় তোমার রবই জানেন তার সম্পর্কে যে বিভ্রান্ত হয়েছে তাঁর পথ থেকে, আর তিনিই জানেন হিদায়াতপ্রাপ্তদের সম্পর্কে।
১৭:৩৯
যালিকা = ইহা (= এই আদেশ-নিষেধগুলি) হচ্ছে। মিম্মা = উহার অন্তর্ভুক্ত যা। আওহা = ওহী করেছেন। ইলাইকা = তোমার প্রতি। রব্বুকা = তোমার রব। মিনাল হিকমাতা = হিকমাতের/ বিজ্ঞতাপূর্ণ বাণীর বা বিধানের (= কুরআনের) মধ্য থেকে। ওয়া = আর। লা তাজআল = নির্ধারণ করো না। মাআল্লাহি = আল্লাহর সাথে। ইলাহান আখারা = অন্য ইলাহ। ফাতুলক্বা = কারণ তা করলে, নিক্ষিপ্ত হবে। ফী জাহান্নামা = জাহান্নামে। মালূমাম মাদহূরান = নিন্দিত অবস্থায় ও রহমত থেকে বঞ্চিত অবস্থায়।
ইহা (= এই আদেশ-নিষেধগুলি) হচ্ছে উহার অন্তর্ভুক্ত যা ওহী করেছেন তোমার প্রতি তোমার রব হিকমাতের/ বিজ্ঞতাপূর্ণ বাণীর বা বিধানের (= কুরআনের) মধ্য থেকে। আর নির্ধারণ করো না আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহ। কারণ তা করলে, নিক্ষিপ্ত হবে জাহান্নামে নিন্দিত অবস্থায় ও রহমত থেকে বঞ্চিত অবস্থায়।
৩১:১২
ওয়া = আর। লাক্বাদ = নিশ্চয়। আতাইনা = আমরা দিয়েছিলাম। লুক্বমানাল হিকমাতা = লুকমানকে হিকমাত/ বিজ্ঞতা। আনিশকুর লিল্লাহি = যেন আল্লাহর শোকর/ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ওয়া = আর। মাইঁ ইয়াশকুর = যে শোকর/ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ফাইন্নামা = নিশ্চয়। ইয়াশকুর = সে শোকর/ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। লিনাফসিহী = তার নিজেরই জন্য। ওয়া = আর। মান = যে। কাফারা = কুফর/ অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ফাইন্নাল্লাহা = তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ। গানিয়্যুন হামীদুন = গণি/ অমুখাপেক্ষী ও হামীদ/ প্রশংসিত।
আর নিশ্চয় আমরা দিয়েছিলাম লুকমানকে বিজ্ঞতা, যেন আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আর যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, নিশ্চয় সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তার নিজেরই জন্য। আর যে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ অমুখাপেক্ষী ও (সদা) প্রশংসিত।
৩৩:৩৪
ওয়াযকুরনা = আর তোমরা স্মরণ করো। মা ইউতলা = যা তিলাওয়াত করা হয়। ফী বুয়ূতিকুন্না = তোমাদের ঘরসমূহে। মিন আয়াতিল্লাহি ওয়াল হিকমাতা = আল্লাহর আয়াত ও হিকমাত (= আল কুরআন) থেকে। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। কানা লাতীফান খাবীরান = লতীফ/ সূক্ষদর্শী (= যিনি ক্ষুদ্র জিনিসও দেখেন) ও খবীর (= যিনি খবর রাখেন)।
আর তোমরা স্মরণ করো যা তিলাওয়াত করা হয় তোমাদের ঘরসমূহে আল্লাহর আয়াত ও হিকমাত (= আল কুরআন) থেকে। নিশ্চয় আল্লাহ লতীফ/ সূক্ষদর্শী (= যিনি ক্ষুদ্র জিনিসও দেখেন) ও খবীর (= যিনি খবর রাখেন)।
৩৮:২০
ওয়া = আর। শাদাদনা = আমরা দৃঢ় করেছিলাম। মুলকাহু = তার আধিপত্যকে। ওয়া = আর। আতাইনাহুল হিকমাতা = আমরা তাকে দিয়েছিলাম হিকমত/ বিজ্ঞতা। ওয়া = আর। ফাসলাল খিতাবি = ফয়সালাকারী কথা বলার যোগ্যতা।
আর আমরা দৃঢ় করেছিলাম তার আধিপত্যকে। আর আমরা তাকে দিয়েছিলাম হিকমত/ বিজ্ঞতা আর ফয়সালাকারী কথা বলার যোগ্যতা।
৪৩:৬৩
ওয়া = আর। লাম্মা = যখন। জাআ ঈসা = ঈসা এসেছিল। বিল বাইয়িনাতি = বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণসহ। ক্বলা = তখন সে বলেছিল। ক্বাদ = নিশ্চয়। জি’তুকুম = আমি তোমাদের কাছে এসেছি। বিল হিকমাতি = হিকমত/ বিজ্ঞতাসহ। ওয়া = আর। লিউবাইয়িনা = বয়ান/ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে। লাকুম = তোমাদের জন্য। বা’দাল্লাযী তাখতালিফূনা ফীহি = এমন কিছু যাতে তোমরা ইখতিলাফ/ মতভেদ করো। ফাত্তাক্বুল্লাহা = সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। ওয়া = ও। আত্বিঊনি = আমার ইতায়াত/ আনুগত্য কর।
আর যখন ঈসা এসেছিল বাইয়িনাত/ স্পষ্ট প্রমাণসহ, তখন সে বলেছিল, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের কাছে এসেছি হিকমত/ বিজ্ঞতাসহ, আর বয়ান/ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে তোমাদের জন্য এমন কিছু যাতে তোমরা ইখতিলাফ/ মতভেদ করো। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো ও আমার ইতায়াত/ আনুগত্য কর।
৫৪:৫
হিকমাতুন বালিগাতুন = যা পরিপূর্ণ বিজ্ঞানময়/ বিজ্ঞতাপূর্ণ বাণী। ফামা তুগনিন নুযুরু = কিন্তু সতর্কবাণীসমূহ ফলপ্রসূ হয়নি।
যা পরিপূর্ণ বিজ্ঞানময়/ বিজ্ঞতাপূর্ণ বাণী। কিন্তু (তাদের ক্ষেত্রে) সতর্কবাণীসমূহ ফলপ্রসূ হয়নি/ কাজে লাগেনি।
৬২:২ হুয়াল্লাযী = তিনিই সেই সত্তা যিনি। বাআছা ফিল উম্মীয়্যীনা = উম্মীদের মধ্যে সমুত্থিত/ প্রেরণ করেছেন। রসূলাম মিনহুম = একজন রসূলকে তাদেরই মধ্য থেকে। ইয়াতলূ = সে তিলাওয়াত/ পাঠ করে। আলাইহিম = তাদের কাছে। আয়াতিহী = তাঁর আয়াতসমূহ। ওয়া = আর। ইউযাক্কীহিম = সে তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে। ওয়া = আর। ইউআল্লিমুহুমুল কিতাবা ওয়াল হিকমাতা = সে তাদেরকে শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমাত (= আল কুরআন)। ওয়া ইন = যদিও। কানূ = তারা ছিল। মিন ক্বাবলু = ইতিপূর্বে। লাফী দলালিম মুবীনিন = প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতার মধ্যে।
তিনিই সেই সত্তা যিনি উম্মীদের মধ্যে সমুত্থিত/ প্রেরণ করেছেন একজন রসূলকে তাদেরই মধ্য থেকে। সে তিলাওয়াত/ পাঠ করে তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ আর সে তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে আর সে তাদেরকে শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমাত (= আল কুরআন), যদিও তারা ছিল ইতিপূর্বে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতার মধ্যে।
কুরআন গবেষক ড. সিরাজ ইসলামের গবেষণা ও লেখনী থেকে অনুবাদ জিব্রাইল হলেন আমাদের ভেতরে অনুপ্রেরণার শক্তি জিব্রাইল হলেন একটি কুরআনের রূপক (নোট ১) যা আমাদের মনের ভেতরে অনুপ্রেরণার প্রাকৃতিক শক্তিকে প্রতিনিধিত্ব করে। আমাদের গভীর চিন্তাভাবনার সময় এটি কার্যকর হয়ে ওঠে যখন এটি আমাদের কাছে সচেতনতা এবং অন্তর্দৃষ্টির ঝলক প্রকাশ করে। কুরআনে এই নামটি তিনবার এসেছে […]
সাধারন ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে একটি কমন ধারনা হলো: ইসলামের সংবিধান হলো কুরআন এবং আধুনিক সময়ে যেসব সেকুলার সংবিধান করা হয় তা হলো "তাগুত"। বিষয়টি কি সত্যিই এরকম সাদা কালো? কুরআন কি সংবিধানি? একজন ইসলামে বিশ্বাসীর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে এই প্রশ্নের মিমাংসায় পৌছতে হলে আমাদের প্রথমে কয়েকটি কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে এগুতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে […]
মুসলিমদের জীবন বিধানের সকল মূলনীতি কোরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর তোমার ওপর যে কিতাব (কোরআন) নাজিল করা হয়েছে তাতে রয়েছে সকল বিষয়ের বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৮৯) দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ দেশের মুসলিমদের কোরআন দেখে শুদ্ধ করে পড়ার প্রতি গুরুত্ব থাকলেও ইসলামি জীবন বিধানের মৌলিক উৎস […]
১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের জন্য ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে’ যে মূলনীতিসমূহ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য যে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ কর্তৃক পেশ করা হয়েছে তাতে অন্যতম তিনটি মূলনীতি হলো, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার’। বস্তুত এই মূলনীতিসমূহ […]