আপনি কি জানেন কোরানে কাদেরকে (আলেম) উলামা বলা হয়েছে? যারা আল্লাহর নিদর্শন (আয়াত) নিয়ে গবেষনা করে তারাই উলামা। দাড়ি ওয়ালা, টাখনুর ওপরে পায়জামা পরা, ফতোয়া দিয়ে, ইমামতি করে বা মিলাদ পড়িয়ে পয়সা লেনে ওয়ালা বা কুরবানির পশুর চামড়া নিয়ে জীবিকা অর্জনকারীরা উলামা নয়।
সূরা ফাতির ৩৫:২৭
আলাম তারা = তুমি কি দেখনি। আন্নাল্লাহা = যে, আল্লাহ। আনযালা = নাযিল/ বর্ষণ করেন। মিনাছ ছামায়ি = আকাশ থেকে। মাআন = (বৃষ্টির) পানি। ফাআখরাজনা বিহী = তারপর আমরা বের করি উহার মাধ্যমে। ছামারাতিম মুখতালিফান আলওয়ানুহা = ফলফলাদি যার রং বিভিন্ন। ওয়া = আর। মিনাল জিবালি = পাহাড়সমূহেও আছে। জুদাদুম বীদুওঁ ওয়া হুমরুন = সাদা ও কালো রেখাসমূহ। মুখতালিফুন আলওয়ানুহা = যার রং বিভিন্ন। ওয়া = আর। গারাবীবু ছূদুন = গাঢ় কালো (রেখাও আছে)।
তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহ নাযিল/ বর্ষণ করেন আকাশ থেকে (বৃষ্টির) পানি, তারপর আমরা বের করি উহার মাধ্যমে ফলফলাদি যার রং বিভিন্ন; আর পাহাড়সমূহেও আছে সাদা ও কালো রেখাসমূহ যার রং বিভিন্ন, আর গাঢ় কালো (রেখাও আছে)?
সূরা ফাতির ৩৫:২৮
ওয়া = আর। মিনান্নাছি = মানুষের মধ্যে। ওয়াদ দাওয়াব্বি = আর জীবজন্তুর মধ্যে। ওয়াল আনআমি = আর আনআমের/ গবাদি পশুগুলোর মধ্যেও। মুখতালিফুন আলওয়ানুহু = বিভিন্ন রঙ্গের আছে। কাযালিকা = এরূপই। ইন্নামা = নিশ্চয়। ইয়াখশাল্লাহা = আল্লাহকে ভয় করে। মিন ইবাদিহিল উলামাউ = তাঁর এমন বান্দাদের মধ্য থেকে যারা উলামা/ জ্ঞানে সুস্থির। ইন্নাল্লাহা = নিশ্চয় আল্লাহ। আযীযুন গাফূরুন = আযীয/ মহাশক্তিমান ও গফূর/ ক্ষমাশীল।
আর মানুষের মধ্যে, জীবজন্তুর মধ্যে আর আনআমের/ গবাদি পশুগুলোর মধ্যেও বিভিন্ন রঙ্গের আছে। এরূপই। নিশ্চয় আল্লাহকে ভয় করে তাঁর এমন বান্দাদের মধ্য থেকে যারা উলামা/ জ্ঞানে সুস্থির। নিশ্চয় আল্লাহ আযীয/ মহাশক্তিমান ও গফূর/ ক্ষমাশীল।
উপরের আয়াতদুটি ভাল করে পড়ুন ও জানুন কাদেরকে উলামা বলা হয়েছে। জীববিজ্ঞানী , ভূবিজ্ঞানী, স্রষ্টার সৃষ্টি প্রকৃতি নিয়ে যারা গবেষণা করে, সেই বিজ্ঞানীদেরকেই উলামা বলা হয়েছে।
আচার-অনুষ্ঠানে স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞরা উলামা নয়। জ্ঞানীরাই উলামা।
যারা ধর্মীয় উপদেশের বিনিময়ে পয়সা নেয় , তাদের থেকে সাবধান।
সূরা ইয়া সীন ৩৬:২১
ইত্তাবিঊ = তোমরা ইত্তেবা/ অনুসরণ করো। মাল্লা ইয়াছআলুকুম = এমন ব্যক্তির যে তোমাদের কাছে চায় না। আজরান = কোন প্রতিফল/ পারিশ্রমিক/ মজুরি। ওয়া = আর। হুম = তারা। মুহতাদূনা = হিদায়াতপ্রাপ্ত।
তোমরা অনুসরণ করো এমন ব্যক্তির যে তোমাদের কাছে চায় না কোন প্রতিফল/ পারিশ্রমিক/ মজুরি। আর তারা হিদায়াতপ্রাপ্ত।
সূরা তালাক ৯:৩৪
ইয়া আইয়ুহাল্লাযীনা আমানূ = হে ঐসব লোক যারা ঈমান/ বিশ্বাস করেছো। ইন্না কাছীরাম মিনাল আহবারি ওয়া রুহবানি = (জেনে রাখো যে,) নিশ্চয় বেশিরভাগ আহবার ও রুহবান/ ধর্মগুরু এমন যে। লাইয়া’কুলূনা = তারা খেয়ে থাকে। আমওয়ালান্নাছি = মানুষের মালসমূহ। বিল বাতিলি = বাতিলপন্থায়/ অন্যায়ভাবে। ওয়া = আর। ইয়াসুদ্দূনা = তারা বাধা দেয়। আন সাবীলিল্লাহি = সাবীলিল্লাহ/ আল্লাহর পথ থেকে। ওয়াল্লাযীনা = আর যারা। ইয়াকনিযূনা = জমা করে রাখে। আয যাহাবা ওয়াল ফিদ্দাতা = সোনা ও রূপা। ওয়া = আর। লা ইউনফিক্বূনাহা = উহা ইনফাক/ ব্যয় করে না। ফী সাবীলিল্লাহি = সাবীলিল্লাহে/ আল্লাহর পথে। ফাবাশশিরহুম = সুতরাং তাদেরকে সংবাদ দাও। বিআযাবিন আলীমিন = আযাবুন আলীমের/ কষ্টদায়ক শাস্তির।
হে ঐসব লোক যারা বিশ্বাস করেছো, (জেনে রাখো যে,) নিশ্চয় বেশিরভাগ আহবার ও রুহবান/ ধর্মগুরু ও ধর্ম-বিষয়ে-পন্ডিতরা এমন যে, তারা খেয়ে থাকে মানুষের মালসমূহ বাতিলপন্থায়/ অন্যায়ভাবে; আর তারা বাধা দেয় আল্লাহর পথ থেকে। আর যারা জমা করে রাখে সোনা ও রূপা, আর উহা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে। সুতরাং তাদেরকে সংবাদ দাও কষ্টদায়ক শাস্তির।
অনুবাদ সহায়িকা: কুরআনান আ'জাবান (বিস্ময়কর কুরআন) শব্দার্থ ভিত্তিক বাংলা অনুবাদ, তৈয়াবুর রহমান গোপালগঞ্জী
ক্রেডিট: ফারুক হোসেনের ফেসবুক থেকে